কিডন্যাপার পর্ব ৩

কিডন্যাপার (পর্ব :৩)
#S_A_Priya

মেয়েটা চলে গেলো।লোকটা লেটেষ্ট আই,ফোন হাতে নিয়ে কি যেনো ঘাটাঘাটি করছে।কিছু বলছে না।অস্বস্তিকর নিরবতা।লোকটা বলল আজ রাতেই বিয়ে হবে।বিয়ে করা পসিবল না।এটলিষ্ট আমার পক্ষ থেকে।আচ্ছা যদি বিয়ে না করি?জিজ্ঞেস করেই দেখি ব্যাটাকে।বললাম,
_যদি বিয়ে না করি?
ফোন ঘাটাঘাটি করছিলো।প্রশ্নটা শুনে চোঁখ তুলে তাকালো।তারপর আবারো ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে বলল,
_’আদারওয়াইজ আই উইল কিল ইউ।
লোকটার দিকে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।ব্যাটাকে এই মুহূর্তে সাইলেন্ট কিলার ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারছি না।তবে মৃত্যু ভয় আমার নেই।বললাম,
_আই অ্যাম রেডি ফর ডেথ।
লোকটা চোঁখের দিকে তাকিয়ে পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলল,
_’ম্যাম মৃত্যু ভয় আপনার থাকলে সুইসাইড এটেন্ড নিতেন না।তবে সাইকোদের দুর্বল পয়েন্ট সম্পর্কে একজন সাইক্রিয়াটিস্ট এর ভালো করেই জানা আছে।
লোকটা সাইক্রিয়াটিস্ট? আর কি বলল, আমি সাইকো? আবার বলল আমার দুর্বল পয়েন্ট?কি করবে লোকটা? আই অ্যাম ট্রাইয়িং টু আন্ডারস্ট্যান্ড হিম।ইতস্তত ভাবে বললাম,
_’দুর্বল পয়েন্ট মানে?
চোঁখের দিকে তাকিয়েই বলল,
_’ব্ল্যাকমিল।
লোকটাকে সারাজীবনে ও বুঝে ওটা সম্ভব না।অন মাই পার্ট।বুঝতে পারছি লোকটা প্লেন করেই খেলতে নেমেছে।ফাঁকা মাটে ব্যাটা একাই গোল দিয়ে যাচ্ছে। একটা কথা ভাবাচ্ছে,লোকটা বলল ব্ল্যাকমিল করবে?কি নিয়ে?অঝথা ব্রেইনকে প্রেশার না দিয়ে ব্যাটাকে জিজ্ঞেস করাই শ্রেয়। টাইম লেস বা সময় নষ্ট করার মত মেয়ে আমি না।বললাম,
_’অ্যান্সার টু দ্যা পয়েন্ট।
লোকটা কিছু না বলে ইঙ্গিত করলো ফোনের দিকে তাকাতে।ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই চোঁখ দুটি বড় হয়ে গেলো। লোকটা চাচার পিছনে গোন্ডা লাগিয়ে দিয়েছে।ভিডিওটা এমনি ছিলো যে,কয়েকটা গোন্ডা চাচাকে ফলো করছে।রিভলভার হাতে। ব্যাস এই পর্যন্ত।একটা কথা স্পষ্ট।বিয়েতে রাজি না হলে চাচার লাইফ শেষ।আর বিবাহিত লোককে বিয়ে করা মানে আমার লাইফ শেষ। আচ্ছা সত্যিই কি চাচাকে খুন করবে?নাকি ভয় দেখাচ্ছে?যাইহোক, চাচার কিছু হতে দিচ্ছি না।আমার আপন বলতে একমাত্র চাচা।আচ্ছা চাচা তো ২-১ দিন পর পর ফোন করেন।খোঁজ খবর না পেয়ে চাচা হয়তো দুশ্চিন্তায় আছেন।আপাততঃ লোকটাকে বিয়ে করা ছাড়া সেকেন্ড কোনো অপশন দেখছি না।লোকটার দিকে চোঁখ তুলে তাকালাম।ফোনের স্ক্রিনের দিকে মনোযোগ। কি বলবো?আই হ্যাভ লস্ট মাই ওয়ার্ডস। বুঝতে পেরেছে আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি।বলল,
_’ম্যাম অ্যান্সার পাবো?
_লেট মি থিংক।
_’স্যরি ম্যাম।বিয়েটা আজ’ই হবে।
_এতো নোংরা মেন্টালিটি কেন আপনার?
অ্যান্সার না দিয়ে চলে গেলো।লোকটার বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং স্মার্টনেস দেখে যে কেউ ওর প্রেমে পড়বে।ভেতরের অতিমাত্রার ভয়ংকর রূপ দেখলে কোনো মেয়ে ধারে কাছেও আসবে না।আমি নিজেকে সেইফ মনে করছি না।লোকটা আবারো আসছে।হাতে লাকেজ।বলল,
_’ম্যাম রেডি হয়ে নিন।ঘন্টা খানেকের মধ্যে বিয়ে হবে।এবার আর নিজেকে টিক রাখতে পারিনি।মেজাজ চরমে।লাকেজ বেডের উপর রেখে যেই না বাহিরের দিকে পা বাড়ালো, মুহূর্তেই লাকেজটা বেডের উপর থেকে নিচে ফেলে দিলাম।শব্দ শুনে পিছন ফিরে তাকালো।চোঁখের দিকে তাকিয়ে রইলাম।সত্যি বলছি ব্যাটাকে ভয় পাচ্ছি না।

লোকটা শান্ত রিয়্যাকশান দিচ্ছে। বলল,
_ভিডিওটার কথা আশা করি মনে আছে?
কথা না বলে লোকটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।আবারো বলল,
_দুজন সার্ভেন্ট পাঠিয়ে দিচ্ছি।সাজগোজের ব্যাপার।
মেজাজ আবারো চরমে।বললাম,
_জোর করে বিয়ে তার উপর সাজগোজ?কিভাবে আশা করলেন?পসিবল এটা?
চোঁখের দিকে তাকিয়েই বলল,
_’ম্যাম ফটোগ্রাফার কিছু ছবি তুলবে।সো সাজগোজের ব্যাপার আছে।ব্যাস এটুকুই।

কথামতো দুজন সার্ভেন্ট পাঠিয়ে দিলো।স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমের দেশে গাঁ ভাসিয়ে দিলে ভালো হতো।এভাবে ব্রেইনকে প্রেশার দিতে থাকলে পাগলাগারদ নিশ্চিত। এভাবে কতোদিন?লোকটার সাথে আন্ডারস্ট্যান্ডিং, ম্যাচ,পজিশন, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড, এডুকেশন ইত্যাদি কোনা কিছুর মিল নেই।তাছাড়া লোকটা বেস্ট ক্রিমিনাল। কিভাবে মেনে নিবো?ঘোর কাটলো সার্ভেন্ট এর ডাকে। বিয়ের শাড়িটা হাতে দিয়ে বলল,
_’ম্যাম শাড়িটা পরে আসুন।
ওদের সাথে রাগ দেখানোর কোনো মানে হয় না।সার্ভেন্ট এর হাত থেকে শাড়িটা নিতে নিতে বললাম,
_’প্রয়োজন নেই আপনাদের।যেতে পারেন।
_’ম্যাম স্যারের অর্ডার।
কথা না বাড়িয়ে থ্রি-পিচের উপর শাড়িটা কুনো রকম পেঁচিয়ে নিলাম।অর্নামেন্টস দেখে আবারো বড় ধরনের শক খেলাম।চ্যালেঞ্জের বিয়ে তার উপর এতো দামী গয়নাগাটি? গয়নার উপর হাত ভুলাতে লাগলাম।সবগুলাই গোল্ড।লোভী টাইপ মেয়ে আমি। বাট নিজের জিনিসের উপর।গয়নাগাটি পড়ার মোড নেই এখন।তাছাড়া আমার মেকাপ সেন্স জিরো।শাড়িতেই এনাফ।
ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে নিজেকে দেখছি।নীলা চৌধুরীর আগের রূপ,ফিগার সবকিছুই ফ্যাকাসে। যত্নের অভাবে সিল্কি চুলগুলো ও আগের মতো নেই।

লিভিং রুমে বসে আছি।কয়েকজন সার্ভেন্ট ছাড়া অন্য কাউকে দেখছি না।সিড়িঁর দিকে তাকাতেই চোঁখ আটকে গেলো।লোকটা পাঞ্জাবী পরেছে।ডার্ক গ্রীন কালারটায় ফর্সা ত্বকের সাথে বেস মানিয়েছে। পাঞ্জাবীর জন্য এই কালারটা মনে হয় বেস্ট। আই কন্ট্রাক্ট হওয়া মাত্রই মৃদু হাসলো।হার্ট কিলিং স্মাইল।পাগল করে দেয়ার মতো।অ্যাট দিজ মোমেন্ট আই’ম ক্রাশেড অন হিম।এতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম খেয়াল করে নি তো?অস্বস্তি নিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলাম।এরই মধ্যে কলিং বেল বেজে উঠলো। লোকটা এগিয়ে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলো।কাজি সাহেব,ফটোগ্রাফার ছাড়া আরও কয়েকজন লোক।এদের মধ্যে সাদিক স্যারকে দেখে চমকে উঠলাম।ঐ লোকটার জন্যই তো এতকিছু।
আচ্ছা যদি সবার সামনে ব্যাটা কিডন্যাপার কে ইনসাল্ট করি?যদি বলি লোকটা ব্ল্যাকমিল করছে?কাজি বিয়ে পড়াবে?ভি,আই,পি পার্সন।ব্যাটা কিডন্যাপার টাকা দিয়ে সব কিনতে পারবে বাট সম্মান না।চাচার ক্ষতি হলে হোক।লোকটাকে আজ ইনসাল্ট করেই ছাড়বো।
কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করলেন।লোকটাকে নাম জিজ্ঞেস করাতে বলল,
_আরহান চৌধুরী।
এই প্রথম কুমিরটার নাম শুনলাম, আরহান চৌধুরী।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here