#ক্রাশ
#পর্ব_২২
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
সাগরের চোখের পানি দেখে মোহনা দূর্বল হলেও নিজেকে অনেক কষ্টে সামলিয়ে নিলো।
কারন সাগর যে তাকে ঠকিয়েছে।
এর শাস্তি তাকে পেতেই হবে।
এতো সহজে সাগর কে সে মাফ করবে না।
সেজন্য মোহনা আর একটা কথাও বললো না।
তার কপালে যা আছে তাই হবে।
কারন সাগরের ফ্যামিলির কোন মেম্বারই ভালো না।
তারচেয়ে বড় কথা হলো তাদের ফ্যামিলিতে মেয়েদের মতামতের কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না।
তারা পুরুষ রা যেটা বলবে সেটাই হবে।
সেই আগে থেকেই তাদের পরিবারে এই নিয়ম চলে আসছে।।
সাগরের দাদী,মা এখনো তাদের স্বামীদের সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারে না।
ভীষণ ভয় করে তাদের।
কিন্তু মোহনা তো সেরকম মেয়ে নয়।
সে কিছুতেই সাগরের মা আর দাদীর মতো চলতে পারবে না।
সে একজন ভার্সিটির স্টুডেন্ট।
যথেষ্ট বুদ্ধি আছে তার।
এবং তার নিজস্ব মতামত প্রকাশের অধিকার আছে।
কিন্তু তার মতামতের কোন গুরুত্ব দেই নি সাগরের বাবা।
তিনি উলটা মোহনাকে অভদ্র মেয়ে বলে গালিগালাজ করে।
সাগর মোহনাকে যথেষ্ট ভালোবাসে।
তাকে ছাড়া সে সত্যি থাকতে পারবে না।
মোহনা এটা নিজেও জানে।
কিন্তু সাগর মুখ ফুটে তার ভালোবাসার কথা পরিবার কে জীবনেও বলতে পারবে না।
নিজে কষ্ট পাবে তবুও কাউকে জানাবে না।
তার পরিবার যেটা সিদ্ধান্ত নেবে সে চুপচাপ করে সেটাই মেনে নেবে।
মোহনাকে সে ভালোবাসে,তাকে বিয়ে করতে চায় এই কথা টা বলার সাহস জীবনেও হয় নি তার।
সেজন্য নিজেই কৌশল করে তাকে বিয়ে করে।
তার পরিবার সেটা এখন পর্যন্ত জানে না।
কিন্তু এবার তো তার পরিবার মোহনার সাথে তার ডিভোর্স চাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে সাগর কি করবে সে নিজেও জানে না।
তবে মোহনা একদম দূর্বল নয়।
সে কখনোই সাগর কে রিকুয়েষ্ট করবে না যে আমাকে প্লিজ ডিভোর্স দাও না।
আমাদের সম্পর্ক টা আগের মতোই চলতে দাও।
তবে সে অপেক্ষা করবে সাগরের।
সাগর নিজের মুখে কোনদিন তার পরিবারের সবার সামনে বলবে যে আমার মোহনাকেই চাই।
ওকে ছাড়া আমার পক্ষে আর অন্য কাউকে বিয়ে করা সম্ভব না।
আমি জীবনেও ওকে ডিভোর্স দিতে পারবো না।
সাগর কি এই কথা টা সবার সামনে বলতে পারবে?
না নিজের কষ্ট চেপে রেখে,নিজের ভালোবাসা কে বিসর্জন দিয়ে চুপচাপ পরিবারের সিদ্ধান্ত কে মেনে নিবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সামিরা আর মোহনা দুইজনই বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকলো।
সাগর ও আছে তাদের সাথে।
হঠাৎ সাগরের বাবা আবার আসলো সেখানে।
আর সাগর কে বললো তুই এখনো এখানেই দাঁড়িয়ে আছিস?
তোকে ঘরে যেতে বলেছি না?
তখন সাগর বললো বাবা সামিরা আর মোহনা এই রাতের বেলা একা একা কই যাবে?
তুমি প্লিজ ওদের কেও ঘরে যেতে বলো।
রাত টা পার হোক।
ওরা যাই করুক না কেনো তবুও তো ওরা আমাদের ফ্যামিলিরই মেম্বার।
প্লিজ বাবা, অন্তত আমার এই কথা টা শোন।
মোহনা সে কথা শুনে বললো তোমাকে আমাদের নিয়ে ভাবতে হবে না।
আর তোমাদের রুমে যাওয়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই আমার।
তুমি তোমার বাবার সাথে ঘরে চলে যাও।
আজাইরে দরদ দেখাতে হবে না।
তুমি যে একটা মেরুদন্ডহীন ছেলে সেটার প্রমাণ আবার পেলাম।
নিজে সাহস করে বউ আর বোনের হাত ধরে ঘরে নিয়ে গেলে কি হতো?
কে কি বল তো?
ছিঃ তুমি এতো দূর্বল?
সাগরের বাবা সে কথা শুনে সাগর কে বললো তোর সমস্যা টা কি সাগর?
না মানে আমি বুঝতে পারছি না তুই চাচ্ছিস টা কি?
ক্লিয়ার করে বল দেখি?
তুই এখনো এখানে দাঁড়িয়ে এই অভদ্র মেয়ের বকবকানি শুনছিস।
না আমি ধরে নিবো মোহনা যা করেছে ঠিক করেছে।
আমার মানসম্মান নষ্ট হওয়াতে তোর একটুও খারাপ লাগছে না।
আমার অপমানে তোর একটুও কষ্ট হচ্ছে না।
সাগর সে কথা শুনে বললো,বাবা আমাকে কি করতে বলছো?
আমি কি করে এদের বাহিরে রেখে ঘরে যায়?
আমি পারবো না যেতে।
আমার অবশ্যয় খারাপ লাগছে।
এরা দুইজনই তোমার মানসম্মানের ক্ষতি করেছে।
কিন্তু তাই বলে এদের এভাবে বাহিরে রেখে আমি কিছুতেই ঘরে যাবো না।
সাগরের বাবা সে কথা শুনে সাগরের হাত ধরে বললো চল রুমে চল।
তোকে আমি আর এক মুহুর্ত ও বাহিরে থাকতে দিবো না।
আর এই মেয়ের সাথে মিশতেও দেবো না।
এই বলে সাগরের বাবা সাগর কে নিয়ে রুমে চলে গেলো।
সামিরা তখন মোহনাকে বললো, ভাবি আমি কখনোই চাই নি আমার কারনে তোমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাক।
বাবা তো আর জীবনেও তোমাকে মেনে নিবে না।
আর আমার ভাইয়ের এতো সাহস নেই যে বাবার কথার উপর কথা বলবে।
সে চুপচাপ তাই করবে যা বাবা বলবে।
তোমাদের যদি সত্যি সত্যি ডিভোর্স হয় আমি নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না।
প্লিজ ভাবি তুমি কিছু একটা করো।
মোহনা তখন বললো আমাকে নিয়ে তুমি ভেবো না।
তুমি তোমার চিন্তা করো।
আমার যা হবার হবে।
তোমার রনিকে তুমি খবর দিয়েছো?
ওর পরিবার কি তোমাদের সম্পর্কে রাজি আছে?
সামিরা বললো হ্যাঁ।
ওনাদের কোন আপত্তি নাই।
মোহনা তখন বললো তাহলে তো আর কোন ঝামেলায় নাই।
রনি আসলে ওর সাথে চলে যেও।
আর একটুও তোমার এই পরিবারের জন্য চিন্তা করবে না।
এরা আসলে মানুষ ই নয়।
এই পরিবারে মানুষের ভালোবাসার কোন দাম নেই।
কিছুক্ষন পর রনি এলো সামিরাকে নিতে।
কিন্তু সামিরা মোহনাকেও যেতে বললো তাদের সাথে।
কারন কালকেই রনির সাথে তার বিয়ে হবে।
তাদের পরিবারের কেউ তো আর থাকবে না সেজন্য যদি মোহনা থাকে খুব ভালো হতো।
মোহনা তখন বললো তোমরা যাও আজ।
কারন বাবাকে এনারা খবর দিয়েছে।
দেখি আর কি কি নাটক হয় এখানে।
তবে কথা দিচ্ছি কাল তোমাদের বিয়ে তে অবশ্যয় যাবো।
সেই কথা শুনে সামিরা মোহনাকে জড়িয়ে ধরলো।
আর বললো ভাবি যাই করবে বুঝেশুনে করবে।
তবে আগেই ডিভোর্স এর সিদ্ধান্ত নিও না।
এই বলে সামিরা চলে গেলো।
মোহনা বাহিরে একা একাই দাঁড়িয়ে থাকলো।
এই পরিবারের লোকজন যে এতো খারাপ সে স্বপ্নেও ভাবে নি।
এই পরিবারে থাকা তার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব না।
মোহনা তার বাবাকে ফোন দিলো।
তার আসতে কেনো এতো দেরী হচ্ছে।
কিন্তু তার বাবা তো এসবের কিছুই জানে না।
মোহনার বাবা বললো কেউ তো আমাকে আসতে বলে নি।
কেনো কি হয়েছে?
মোহনা বললো কিছু না।
তুমি ঘুমাও বাবা।
এই বলে সে ফোন কেটে দিলো।
মোহনা বুঝে গেলো এটা সাগরের কাজ।
তার বাবাকে সে হয় তো মিথ্যে বলেছে যে সে মোহনার বাবাকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে।
এদিকে সাগর বাবাকে ফোনই করে নি।
মোহনা একা একাই দাঁড়িয়ে থাকলো।
হঠাৎ সেখানে সাগরের খালাতো বোন লিমা এলো।
আর বললো, ভাবি এভাবে এখানে দাঁড়িয়ে না থেকে রুমে চলো।
মোহনা বললো না,আমি কোথাও যাবো না।
এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবো।
সকাল হলেই রওনা দিবো।
লিমা তখন বললো তা কি করে হয়?
এভাবে সারাক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় নাকি?
তুমি প্লিজ আমার রুমে এসো।
এই বলে লিমা জোর করেই মোহনাকে তার রুমে নিয়ে গেলো।
মোহনা যাবেই না তবুও টেনেই নিয়ে গেলো।
লিমা মোহনাকে তার বিছানায় বসালো আর বললো ভাবি তোমাদের সত্যি ডিভোর্স হবে?
মোহনা বললো হ্যাঁ।
আমি নিজেও আর এই রকম একটা পরিবারে থাকতে চাই না।
যে পরিবারের লোকজনের মনে একটুও দয়ামায়া নাই।
একটা মেয়েকে কি করে এরা এতো রাতে একা একা বাহিরে দাঁড় করিয়ে রেখেছে?
আবার বলছে রাতেই চলে যেতে।
তুমি বলো এগুলো কোন মানুষের কথা।
আর আমি যাকে বিয়ে করেছি সে তো আরেক পাষাণ।
মুখে সারাক্ষন শুধু ভালোবাসার কথা বলে।
আর আজ মুখ ফিরিয়ে বাবার কোলে শুয়ে আছে।।
আসলে দুনিয়ার কাউকেই বিশ্বাস করা যায় না।
শুধু একবার বাড়িতে যাই জীবনেও আর ফিরে আসবো না।
তখন ঠিক বুঝবে।
এখন দেখে বুঝতে পারছে না।
যখন থাকবো না তখন কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয়ে যাবে।
লিমা তখন বললো সে তো এখনি কাঁদতে কাঁদতে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
পরে যে কি করে থাকবে সে চিন্তা আমিও করছি।
মোহনা তখন বললো বাদ দাও তো ওর কথা।
যে ছেলে বাবার কথায় ওঠে আর বসে, বাবার সামনে একটা কথা বলার সাহস পায় না তাকে নিয়ে আমি আর ভাববো না।
তাছাড়া ও যতই কাঁদুক যতই ভালোবাসা দেখাক না কেনো আমাকে আর কিছুতেই গলাতে পারবে না।
ও আমার সাথে কি করে এতো বড় একটা প্রতারণা করলো সত্যি আমি ভাবতে পারছি না।
লিমা তখন বললো, ভাবি সাগর ভাইয়া আসলে তোমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে।
আবার সে তার বাবা মাকেও ভালোবাসে।
এজন্য সে কি করবে এখন কিছুই বুঝতে পারছে না।
তুমি প্লিজ একটু তোমার রাগ টা কমাও।
হ্যাঁ মানলাম সাগর ভাই তোমার সাথে চালাকি করে সামিরা কে ধরে এনেছে।
সে কিন্তু তার বোনের ভালোর জন্যই এনেছিলো।
এভাবে কর্মহীন ছেলের হাতে সে কি করে তার বোন কে তুলে দেয়?
মোহনা তখন বললো তাই বলে আমার সাথে প্রতারনা করবে?
আর তুমি সাগরের হয়ে ওকালতি করার জন্য তোমার রুমে আনলে?
আমি আর ওর একটা কথাও শুনতে চাই না।
আমি ওর মুখ পর্যন্তও দেখতে চাই না।
আজকেই ওর সাথে আমার শেষ দেখা।
লিমা তখন বললো ভাবি আমি একটু বাহিরে গেলাম।
তুমি রুমেই থাকো।
মোহনা তখন বললো কই যাবে?
আমি একা একা থাকতে পারবো না।
তাড়াতাড়ি এসো।
লিমা তখন বললো তাহলে বাহিরে অন্ধকারে কিভাবে দাঁড়িয়ে ছিলে?
সেখানে তো আরো বেশি ভয় পাওয়ার কথা ছিলো।
মোহনা তখন বললো সেখানে কি আমি একাই ছিলাম নাকি?
তোমার ভাই তো জানালার কাছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলো আমাকে।
লিমা তখন বললো তুমি সেটাও খেয়াল করেছো?
এই বললে ওর দিকে আর জীবনেও তাকাবে না।
মোহনা তখন বললো প্লিজ বাদ দাও তো ওর কথা।
ওর কথা শুনতে আর ভালো লাগছে না।
লিমা তখন বললো ভাবি, সাগর ভাইয়া নিজেই আমাকে পাঠিয়েছিলো এই ঘরে তোমাকে আনতে।
ও যদিও বলতে বারণ করেছে কিন্তু না বলে আর থাকতে পারলাম না।
ও নিজেও এই ঘরে থাকবে আজ।
আর আমাকে ওর ঘরে থাকতে বলেছে।
মোহনা সে কথা শুনে বললো লিমা তুমিও আমার সাথে প্রতারনা করলে?
আমি থাকবো না এ ঘরে।
এই বলে মোহনা বের হয়ে গেলো।
লিমা মোহনার পিছু পিছু গেলো আর বললো ভাবি কই যাচ্ছো?
প্লিজ রুমে যাও।
আমি খালুকে বলেছি তুমি বাড়ি চলে গেছো।
এখন যদি তোমাকে বাহিরে দেখে তাহলে মিথ্যে কথা বলার জন্য আমাকে আবার বকবে।
প্লিজ রুমে চলো।
মোহনা বললো জীবনেও না।
ওর সাথে এক ঘরে কিছুতেই আমি থাকবো না।
ঠিক সেই সময় সাগর এলো সেখানে।
লিমাকে বললো, আমার ঘরে যা।
আর অবশ্যয় ভিতর দিক দিয়ে লাগিয়ে রাখবি।
কেউ ডাকলে খবরদার ডাকবি না।
লিমা তখন বললো ভাই,যদি ধরা পড়ে যাই?
খালু কিন্তু আমাকে মেরে ফেলবে।
সাগর বললো কিছু হবে না।
আমি তার আগেই রুমে চলে যাবো।
মোহনা তখন বললো তুমি কি করতে চাচ্ছো?
আমি কিন্তু এবার নিজেই তোমার বাবাকে ডাক দিবো।
সাগর সে কথা শুনে মোহনাকে জোর করে কোলে তুলে নিলো।
আর তার মুখ শক্ত করে চেপে ধরলো।
এবং লিমার রুমে নিয়ে গেলো।
আর অন্যদিকে লিমা সাগরের রুমে গেলো।
সাগর মোহনাকে রুমে নিয়ে গিয়ে কোল থেকে নামালো তারপর দরজা লাগিয়ে দিয়ে বললো,
এখন বলো কি বলবে?
যা বলবে ভেবেচিন্তে বলবে।
কারন তোমার কথার উপরই আমি ডিসিশন নিবো।
মোহনা বললো,
তোমার সাথে আমার কোন কথা নাই।
আমি কিছু বলতে চাই না।
আর তোমার ডিসিশনই সব হবে নাকি?
আমারও তো নিজস্ব কোন মতামত আছে।
সাগর তখন বললো আমি তো সেটাই জানতে চাচ্ছি।
তুমি কি চাচ্ছো?
তুমি কি সত্যি আমাকে ডিভোর্স দিতে চাও?
মোহনা তখন বললো তুমি এই কথা টা আমাকে জিজ্ঞেস করছো কেনো?
ডিভোর্স এর কথা কি আমি আগে বলেছি?
না তোমার বাবা বলেছে।
তুমি নিজে আগে বলো তুমি কি চাও?
তুমি কি আমাকে ডিভোর্স দিতে চাও?
সাগর তখন বললো জীবনেও না।
আমি ডিভোর্স দিবো তোমাকে এটা ভাবলে কি করে?
মোহনা তখন বললো তাহলে তোমার বাবা যখন বললো তুমি চুপ করে ছিলে কেনো?
কিছু বললে না কেনো?
সাগর তখন বললো তুমি তো জানো আমি বড়দের মুখে মুখে তর্ক করি না।
বড়রা যা বলে সেটাই করি।
মোহনা তখন বললো তোমার বাবা তো আমাদের ডিভোর্স চাচ্ছে তুমি সেটা এখন আটকাবে কি করে?
সাগর তখন বললো সেটা আমার উপরই ছেড়ে দাও।
—তুমি যা মন চায় করো।
কিন্তু আমি আর তোমার সাথে থাকবো না,থাকবো না।
তুমি একটা মিথ্যাবাদী, প্রতারক।
সাগর তখন বললো sorry.
আমার ভুল হয়ে গেছে।
আর হবে না এমন।
তুমি যে এতো সিরিয়াস একটা মেয়ে আমার জানা ছিলো না।
তুমি আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করতেও দ্বিধাবোধ করছো না।
এখন বলো কি করতে হবে আমাকে?
কি করলে তুমি মাফ করবে আমাকে?
মোহনা তখন বললো তুমি আমার সাথে যে অন্যায় করেছো তার জন্য তুমি কখনোই ক্ষমা পাবে না।
এটার কোন ক্ষমা নাই।
সাগর তখন মোহনার হাত ধরে বললো বার বার এক কথা শুনতে ভালো লাগছে না কিন্তু।
বললাম তো ভুল হয়ে গেছে।
কান ধরে ক্ষমা চাচ্ছি।
Sorry,Sorry,Sorry.
হইছে?
আচ্ছা যাও সামিরা আর রনিকে মেনে নিলাম।
মোহনা তখন বললো তুমি একাই মেনে নিলে হবে নাকি?
তোমার পরিবারকেও মেনে নিতে হবে।
সাগর তখন মোহনার হাত ধরে বললো এর মধ্যে আবার পরিবার আসলো কেনো?
আমি তো আমার অপরাধের ক্ষমা চাচ্ছি।
মোহনা তখন বললো এইটুকুতেই ক্ষমা পাবে না তুমি?
সাগর তখন বললো,
আর কি করতে হবে?
মোহনা তখন বললো তোমার পরিবারের সামনে বলতে হবে যে তুমি আমাকে ডিভোর্স দিতে পারবে না।
তুমি আমাকে ভালোবাসো।
—-আবার পরিবার?
পরিবার বাদ দিয়ে কথা বলো।
—-সবসময় নিজেই তো পরিবার পরিবার করো।
তাহলে আজ পরিবার কে বাদ দিতে বলছো কেনো?
— অবশ্যয় পরিবার এর সামনে বলবো।
কিন্তু এখন না।
কারন এখন আমি নিজে প্রতিষ্ঠিত নই।
পরিবারের উপর দিয়ে কথা বলার সামর্থ্য আমার নাই।
যেদিন নিজে প্রতিষ্ঠিত হবো সেদিন অবশ্যয় বলবো।
—তাহলে তুমি যেদিন প্রতিষ্ঠিত হবে সেদিনই তোমার অপরাধ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।
— পাগল হইছো তুমি?
এতোদিন ধরে আমি আমার শাস্তি ভোগ করবো?
–হ্যাঁ।।
সাগর তখন বললো আচ্ছা ঠিক আছে।
মোহনা বললো দাঁড়াও দাঁড়াও।
আরো কথা আছে।
সাগর তখন বললো আর কি?
–এতোদিন তুমি আমার সাথে দেখা করতে পারবে না।
আমার সাথে কথা বলতেও পারবে না।
আর আমার কাছেও আসতে পারবে না।
সাগর তখন মোহনাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
কি বলছো এসব?
আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
এরকম শর্ত দিও না।
–এসব মানতে হবে তোমাকে।
অপরাধ করেছো তুমি,সেজন্য এটুকু শাস্তি অবশ্যয় পেতে হবে তোমাকে।
আর এভাবে যখন তখন ধরবে না।
এখন ছাড়ো আমাকে।
— এতোগুলো শর্ত মানতে পারবো না।
মোহনা তখন বললো তাহলে ক্ষমাও পাবে না।
সাগর তখন বললো যদি হঠাৎ করে দেখা হয় তখন কি হবে?
–হঠাৎ করে দেখা সেটা আলাদা বিষয়।
তবে কোন কথা বলা যাবে না।
কাছে তো আসাই যাবে না।
সাগর তখন বললো তুমি এভাবে থাকতে পারবে?
— হ্যাঁ।
আমাকে থাকতে হবেই।
কারন তোমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য এটুকু আমাকে করতেই হবে।
সাগর তখন বললো এতোদিন অপেক্ষা করতে হবে না।
আমি কালকেই আমার সাহস দেখাবো।
সবার সামনে চিৎকার করে বলবো I love you Mohona.
আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
এই বলে সাগর মোহনাকে আবার জড়িয়ে ধরলো।
মোহনা তখন বললো আবার জড়িয়ে ধরছো?
সাগর তখন বললো কাল তো বলবোই সবার সামনে।
মোহনা তখন সাগর কে সরিয়ে দিয়ে বললো,
তাহলে কালকেই জড়িয়ে ধরিও।
সাগর তখন বললো তুমি আমাকে এ কোন বিপদের মধ্যে ঠেলে দিচ্ছো?
চলবে,,,,,,
কেমন হলো অবশ্যয় জানাবে।