#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:৮
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)
তার কিছুদিন পর আমাদের কোম্পানি অনেক বড় ডিল সাইন করে।
তার জন্য একটা বড় করে পার্টির আয়োজন করা হয় শহর থেকে অনেক দূরে।
সে অনুষ্ঠানে আমাদের পরিবার সহ অফিসের সবাউ উপস্থিত ছিলাম।
ভাবী ও তার পরিবার ও আমাদের সাথে সেখানে ছিলো।
ঐ রাতে সবাই এতো মজা করছি যে,,,
সবাই এতো ক্লান্ত ছিলো তার জন্য কেউ বাড়িতে আসে না।
আমারাও না।
অনেক মজা করি সেখানে।।।
বলে জাবিন থেমে যায়।
সবাই সেখানে রেষ্টহাউজে থেকে যায়।
তারপর হঠাৎ কোন কাজের জন্য ভাইয়া সেখান থেকে বাড়িতে চলে আসে।।
সে আর ফিরে যায় না সে জন্য আমিও কাউকে কিছু না বলে বাড়িতে চলে আসি।।
দেখি টেবিলের উপর পানির বোতল অর্ধেক পানি খাওয়া।।
আমার ও তৃষ্ণা লাগে আমিও খেয়ে ভাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি সে বিছানায় ঘুম।
আমার মাথাটা খুব ঝিম ধরে আসছিল কোথা থেকে হঠাৎ এতো ঘুম আসলো।
জানি না মাতালের মতো নিজে রুমে কোনো রকম গিয়ে ঘুমিয়ে যায়।
কিন্তু সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো অবস্থা।
পুরাবাড়ি রক্তাক্ত বাড়ির হল রুমে মেঘা আপুর লাশ পড়ে আছে,,,
কেউ এতোটা নৃশংস ভাবে তাকে খুন করছে যে তার চেহারাটাও চেনা যাচ্ছে না।
পাশে দেখি ভাইয়ার সারা শরীল রক্তে মাখা।
সে মুক্তির মতো দাড়িয়ে আছে।
হল রুমের এক কোণে দাদাভাই পড়ে আছে,,
কেউ দাদাভাই কে আঘাত করছে।
বাড়ির সবাই চলে আসছে।।
মেঘা আপুর মা বাবা আমার পরিবার সেখানে এসে এসব দেখে কান্নাকাটি শুরু করে।
ভাইয়া মেঘা আপুর লাশ টা কে জড়িয়ে ধরে চিৎকার দিয়ে কান্নাকাটি করে।।
ঠিক তখনি বড় চাচাজি এসে ভাইয়া কে দাড় করিয়ে জোড়ে থাপ্পড় দিয়ে বলে তুই খুনি।
এভাবে নিজের ভালবাসা কে খুন করতে পাড়লি???
পুলিশ এসে জুরাইন কে নিয়ে যায়।
এদিকে মেঘা আপুর লাশ কে তাড়াতাড়ি কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।।
চাচাজি সবাই কে বলে জুরাইন যখন অপরাধ করছে সে শাস্তি পাবে।
তাকে বাচাতে আমরা কোনো কিছু করবো না।তার কথা শুনে মেঘা আপুর পরিবার চলে যায়।
এদিকে দাদাভাই কোমাতে চলে যায়।
সে ঐ ঘরের মাঝে বন্দে হয়ে যায়।
চাচাজির সামনে ভোট থাকায় বাবা আর কিছু করতে পারে না।
সব কিছু কি ভাবে চাচাজি ম্যানেজ করছে কেউ জানে না।।
তারপর ভাইয়া আজ দুই বছর ঐ কারাগারে বন্দী।
সেদিন তো আমিও বাড়িতে ছিলাম!!
মেঘা আপু কি করে আসলো জানি না,,
খুন কিভাবে হলো জানি না,,,
দাদাভাই অসুস্থ তাও প্রশ্ন।
সেদিনের সব কিছু প্রশ্ন হয়ে আছে তার উওর নেই।
শুধু এতোটুকু জানি ভাইয়া মেঘা আপুকে খুঁন করে নি।
সে কোনোদিন এ কাজ করতে পারে না।
সে রাতের রহস্য মেঘা আপুর সাথে দাফন হয়ে যায়।সে রাতের স্বাক্ষি শুরু রাতের অন্ধকার ছিলো,,আর কেউ না।
আরে যে খুনি প্রমাণিত হলো না তাকে সবাই খুনি বলে!!!!
‘
‘
‘
ত্বায়িহা :সে রাতে বাড়িতে তোমরা তিন জন ছিলে,,জুরাইন,, তুমি,,,দাদাভাই।।
জিরান :হুম।
ত্বায়িহা :তোমরা দু জন ঘুমিয়ে ছিলে,,,
দাদাভাই কি ভাবে আসছে জানো না।
জিরান :নাহ
ত্বায়িহা :মেঘা সে রাতে বাড়িতে কোনো আসছে এটা যে জানে সেই বলতে পারবে,,
খুন কি করে হয়ছে।
দাদাভাই হয়তো সে খুনের স্বাক্ষী।
জিরান :জানি না ভাবি,,কিছু জানি না,,
সে রাতের কাহিনী পুরাটাই একটা গোলকধাঁধা।
ত্বায়িহা :সেই গোলকধাঁধা ভেদ না করতে পাড়লে জুরাইন কে যে সারাজীবন জেলে থাকতে হবে।তোমরা চেষ্টা করো নাই।
জিরান :অনেক ভাবে করছি পারি নাই, সবাই বলে কিছু জানে না।।
ত্বায়িহা :জুরাইন কি কখনো কিছু বলছে??
জিরান :না ভাবি ভাইয়া তার #ক্ষণিকের_বসন্ত হারিয়ে তারপর আর কারো সাথে কথা বলে না
ত্বায়িহা :আচ্ছা তুমি বাড়ি যাও আমি জুরাইনের সাথে দেখা করে আসি।
জিরান :এতো রাতে কি ভাবে যাবে,,,
চলো আমি তোমাকে দিয়ে আসি।
ত্বায়িহা :রাত ভোর হয়ে গেছে,,,
এখন নতুন সকালের অপেক্ষা।
চলো দিয়ে আসবে।
জিরান ত্বায়িহাকে জেলখানার বাহিরে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়।
‘
‘
এদিকে যে জেলখানায় জুরাইন আছে সেখানে ডুকতেই একটা গাড়ি দেখতে পায়,,গাড়িটা ত্বায়িহার চেনা।
গেটে তাকে বাধা দিলে সে বলে আমাকে চেনেন কে আমি আমি সৈয়দ মীরজাফর চৌধুরীর বাড়ির…
তারপর আর কিছু বলা লাগে না সে নাম শুনে ওকে ভেতরে যেতে দেয়।
ত্বায়িহা :আস্তে আস্তে জেলখানার ভেতরে যেতে থাকে,,
একটা রুমে কারো কথোপকথন শুনে সে থেমে যায়।।।
তাদের সব কথা শুনে সে জুরাইনের সেলের দিকে এগিয়ে যায়।
জুরাইন :সামানে তাকিয়ে দেখে ত্বায়িহা দাড়িয়ে আছে,,দু চোখে জল।এখানে কেনো আসছো??
ত্বায়িহা : আপনার এ কি অবস্থা,,
এভাবে কেনো মারছে এরা,,
জুরাইনের পুরা শরিল রক্তাক্ত।
কেউ তাকে যালিমের মতো মারছে।
একটা পুলিশ এসে সেলর দরজা খুলে দেয়।
ত্বায়িহা :ভেতরে গিয়ে জুরাইনের কপালের রক্ত হাতে নিয়ে বলে,,,
যে আমার ভালবাসার রক্ত এভাবে ঝরিয়ে ছে তাকে প্রতিটা রক্তের ফোঁটার হিসাব দিতে হবে।
জুরাইন :এটা আমার কর্মের ফল,,,
আমি তো খুঁনি,,,
আমার কাছ থেকে চলে যাও তুমি।।
না হয় তোমাকেও খুঁন করে দিবো আমি।
ত্বায়িহা :যে খুনি সে শাস্তি পাবে,,,
আপনি যে খুনি না তা আমি জানি,,
এখন আপনি আমাকে বাকী কাহিনী বলবেন।
জুরাইন :কেন জানতে চাও আমার অতীত।। আমাকে তো ঘৃণা করো তুমি।
ত্বায়িহা : হ্যা ঘৃণা করতাম।।
আপনি আমার স্থানে থাকলে একি কাজ করতেন,,
সেদিন আপনি আপনার #ক্ষণিকের_বসন্ত হারিয়েছেন,,,
কিন্তু আজ আমি আমার ক্ষণিকের_বসন্ত হারাতে চায় না।
কারণ আমি আপনাকে ভালবাসি তাই।।
নাই বা ভালবাসেন আমাকে আমি ভালবেসে যাবো সারাজীবন।
তার জন্য না হয় জীবন দিতে পারি আবার নিতেও পারবো।
জুরাইন :আমি তোমাকে ভালবাসি না,,
আর তুমি আমার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করো না,,আমাকে ডিভোর্স দিয়ে নতুন করে জীবন সাজাও।
ত্বায়িহা :আমি আমার জীবন আপনার সাথে সাজাতে চায়,,তা হোক মরার আগে বা মৃত্যুর সময়,,,তবুও আপনার সাথে থাকবো ।
জুরাইন :আমি অন্ধকার রাতের সেই নিকষ কালো রাত যে রাতের কোনো সকাল নেই।
ত্বায়িহা : একটু রেগে বলে দেখুন এসব ডায়লগ শুনতে ইচ্ছা করছে না,,,
ওর মাথায় জুরাইনের হাত রেখে বলে সে সকালের কাহিনী বলুন।
জুরাইন :সকালো ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার হাতের মাঝে ছুড়ি,,
আর পুরা শরিলে রক্তেমাখা,,
তারপর বাহিরে এসে যা দেখি তাতে আমার কোনো হুস ছিলো না,,
পড়ে বুঝতে পারি সব কিছুর জন্য হয়তো চাচাজির হাত আছে।
জুরাইন বাকী টা জেলে এসে বুঝতে পারি।
যে উনি আমার সম্পত্তির জন্য এসব করছে।আমার সব কিছুর অর্ধেক মালিক আমার বউ হবে তাই।তুমি সাবধানে থেকে চাচাজির থেকে,,অযথা আমার জন্য তোমার জীবন ও রিস্কে থাকবে।
ত্বায়িহা :একটা অন্যরকম হাসি দিয়ে বলে,,, আমাকে নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না।
তারপর ত্বায়িহা নিজের ওড়না দিয়ে জুরাইনের আঘাতের স্থান মুছে দিয়ে ওর কপালে আর ঠোটে চুমা দিয়ে বলে,,
এবার বাকিটা আমার কাজ।তুমি জেলেই থাকো জুরাইন বলে সে চলে যায়।
‘
‘
মীরজাফর :ওহ সব কিছু জানে কিন্তু ওর কাছে কোনো প্রমাণ নাই।।আর না কেউ বিনা প্রমাণে ওকে বাচাতে পারবে,,,ভাবছে বিয়ে দিলো বাচাতে পাড়বে 😈😈
ত্বায়িহা :এরা ভাবছে আমাকে এদের ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে জুরাইন চৌধুরী কে বাঁচাতে পারবে কিন্তু এটা জানে না,,,
আমি জুরাইনের গলায় ফাঁসীর দড়ি পড়াতে আসছি তাই না স্যার।
মীরজাফর :আমার ছোট ভাই তো বোকা তার ছেলেকে বিয়ে দিয়ে না কি বাঁচাতে পারবে।
কিন্তু সে জানে না,,,
তার ছেলের বউটা আমার পাঠানো মেয়ে,,,
সে জুরাইন কে কি বাঁচাবে ওকে মারতো আসছে।
ত্বায়িহা :জ্বি চাচাজি,,, তা এখন তো জুরাইন আবার জেলে,,,এখন তো আপনার সাথে কাজ করতে পারি???
মীরজাফর :তা আর বলতে,,,
আজ থেকে জুরাইনের সব কিছু দেখাশোনা তুমি করবা,,
কিন্তু সব টাকাকড়ি আমার ফান্ডে যাবে,,,
আস্তে আস্তে সব আমার করে নিবো।
বলে মীরজাফর আর ত্বায়িহা হাসতে হাসতে জেলখানার বাহিরে আসে।।
মীরজাফর :তাহলে ত্বায়িহা আজ থেকে নতুন নাটক করে ,,জুরাইনের সব কিছুতে শুধু তোমার অধিকার দিবো।।
ত্বায়িহা :জ্বি অবশ্যই চাচাজি।
বাড়িতে এসে খাবার টেবিলে…….
( নতুন টুইস্ট,, জানিনা কতোটা হজম করতে পারবেন সবাই 😁😁😁)
‘
‘
‘
চলবে….