গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ৩৩+৩৪

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৩
.
.
🦋
প্রিয়ার কথা প্রত্যেকের কানে পৌছানো মাত্রই সবাই সিঁড়ির দিকে তাকাতে প্রাণোকে দেখে হ্যাঁ হয়ে গেল৷ মিহু সাজিত সাথে বাকি ছেলেদের তো প্রাণোর উপর থেকে চোখ সরছেই না৷ তা দেখে প্রিয়া গলা খাকাড়ি দিয়ে বলে উঠলো ,” গাইজ সবাই দয়া করে মুখ বন্ধ করো না হলে আপনাদের বন্ধু আমার ভাসুর + ভাই+ দুলাভাই চিরদিনের জন্য আপনাদের মুখ বন্ধ করে দিবে৷”

প্রিয়ার কথা শোনা মাত্রই প্রত্যেকে শুকনো ঢোক গিয়ে চোখ সরিয়ে সামনে তাকাতে দেখে সাফা স্মিতা ঐশী আগুন চোখে নিলয় সাগর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণো স্মরণের বন্ধুদের করুণ অবস্থা দেখে ঠোঁট টিপে হাসতে লাগলো৷

প্রাণো প্রিয়ার সাথে ডাইনিং স্পেসে এসে নিজের বান্ধবীর দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে দেয়৷ সাফা ঐশী স্মিতা প্রাণোর ইশারা বুঝতে পেরে ঐশী বলে উঠলো ,” আকাশ আজ থেকে তোমার সাথে আমার ব্রেকয়াপ ৷ আর আজ থেকে তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না৷ ”

“ওয়াট কি বলছো ঐশী ৷ তুমি হঠাৎ ব্রেকয়াপের কথা বলছো কেন?”(আকাশ)

” কারণ তোমার নজর খারাপ ৷ আমি জলজ্যান্ত তোমার গার্লফ্রেন্ড তোমার সামনে বসে আছি আর তুমি আমার বেস্টুর দিকে নজর দিচ্ছো ছিঃ৷ ”

ঐশীর কথা শুনে আকাশ হতবম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল৷ ঐশী সামান্য একটা বিষয় নিয়ে ঐশী ব্রেকয়াপ করবে এটা ভাবতে পারেনি আকাশ৷

এর ভিতর স্মিতা সাফা দুজনে নিলয় সাগর কে সেম কথা বলে ব্রেকয়াপ করে নিলো৷ নিলয় আকাশ সাগর তিন জন প্রাণোর দিকে অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছে৷ প্রাণো গম্ভির মুখ করে বলে উঠলো ,” এটা তো হওয়ারই ছিলো ভাইয়াগন৷ আপনাদের গার্লফ্রেন্ড সামনে বসা অবস্থায় তারই বান্ধবীর দিকে হা করে তাকিয়ে থাকবেন আর ওরা তা মেনে নিবে লাইক সিরিয়াসলি?”

” স্যরি ভাবি আসলে আপনাকে এতো সুন্দর লাগছে যে আমরা কেউ চোখ ফেরাতে পারেনি৷ বাট ট্রাস্ট মি আপনার দিকে খারাপ নজরে কখনো তাকায়নি প্লিজ ওদের একটু বুঝিয়ে বলুন না?” অসহায় গলায় বলল সাগর….

” ঠিক আছে এই লাস্ট বার ওদের বলছি আপনাদের ক্ষমা করে দিতে বাট নেক্সট টাইম এমন করলে নো ক্ষমা মাইন্ড ইট৷ আর তোরা ভাইয়াদের লাস্ট বার ক্ষমা করে দে৷ তারা আর এমন টা করবে না৷”

” ঠিক আছে তোর কথা ফাস্ট এন্ড লাস্ট বার ওদের ক্ষমা করলাম ৷” ( সাফা)

সাফার কথা শুনে নিলয় প্রাণোকে থ্যান্কিউ বলে উঠতে নিলে প্রাণো বলে ওঠে ,” উঠবেন না আমি আপনাদের খাবার সার্ব করে দিচ্ছি৷”

” আপু তোকে কিছু করতে হবে না ওই দেখ আমাদের শাশুড়ি মা সব নিজের হাতে আজ নাস্তা বানিয়েছে৷ আমাকেও আজ কিচেনে ঢুকতে দেয়নি ৷”

প্রিয়ার কথা শেষ হতে হতে সাহারা বেগম কিচেন থেকে এসে সবাইকে নাস্তা সার্ব করে দিয়ে প্রাণোর সামনে দাড়িয়ে প্রাণোকে দেখে বলে, ” মাশাআল্লাহ আমার বউমাকে একদম পরীর মতো লাগছে এই লাল টুকটুকে শাড়িতে৷ ” সাহারা বেগম এর কথায় তাল দিয়ে সাজিত বলে উঠলো, ” ঠিক বলেছো মম ৷ প্রাণোকে আজ বড্ড বেশি সুন্দর লাগছে৷”

সাজিতের কথা শুনে প্রাণো সাজিতের দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বলে উঠলো ,” দেবরজি আমি আপনার বয়সে ছোট হলেও সন্মানে আপনার থেকে অনেক বড় ৷ আমি আপনার বড় ভাইয়ের স্ত্রী তাই প্রাণো নয় ভাবি বলে ডাকবেন৷”

প্রাণোর এমন কাট কাট উওর শুনে প্রিয়া সাহারা বেগম এবং বাকিরা বেশ খুশি হয় শুধু মিহু আর সাজিত ছাড়া৷ সাজিত না খেয়েই উঠে চলে যায়৷ মিহু সাজিতের পিছু পিছু চলে যায়৷

” মামুনি তুমি সবার সাথে খেতে বসো প্লিজ৷ “”(প্রাণো)

প্রাণোর কথা শুনে সাহারা বেগম এর মনে হলো তাদের সম্পর্ক যেন কতো বছরের , প্রাণো যে ভিষণ মিশুক আর মিষ্টি মেয়ে তা বুঝতে তার বাকি নেই৷

” এখন না বড় বউমা ৷ তোমার শশুড় এখনো নাস্তা করেনি ৷ ওনি না খেলে আমিও খেতে পারি না মা৷” সাহারা বেগমের কথা শুনে প্রত্যেকে এক সাথে বলে উঠলো ,” ওউউউউউউউ”

সবার এমন রিয়েকশন দেখে সাহারা বেগম বেশ লজ্জা পেলেন৷ তখনি পেছন থেকে স্মরণ বলে উঠলো ,” কি হচ্ছে এখানে?”

প্রাণো পেছনে তাকিয়ে স্মরণের দিকে তাকাতে স্মরণ মনমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে প্রাণোর দিকে, প্রিয়া স্মরণের পাশে গিয়ে চোখের সামনে তুরি বাজাতে স্মরণের ধ্যান ভাঙে …

” কি দুলাভাই আপুর উপর থেকে যে একদম চোখ সরছে না আপনার?”

” হুম চোখ তো সালিকার উপর থেকেও সরছে না আধা ঘর ওয়ালী৷”

” দুলাভাই ফাজলামি কম করেন ৷ চলেন খেয়ে নিবেন৷”

” হুম চলো৷”

সবাই নাস্তা উঠে যেতে যেতে প্রাণো সাহারা বেগম কে বলতে লাগলো,” মামুনি আমাকে আজ একটু ভার্সিটিতে যেতে হবে৷ ইম্পট্যার্ন্ট ক্লাস আছে আর কয়েকদিন পর তো আমার পরীক্ষা৷

” এমা তা তো আগে বলবে৷ কোন সমস্যা নেই আজ ভার্সিটিতে যাও ৷ বাকিটা আমি সামলে নিবো ৷ আর সবাই কান খুলে শুনে নেও আগামিকাল ওদের বিয়ের রিসেপশন তোমরা কেউ চলে যাবে না৷ সবাই থাকবে৷”

” ওকে আন্টি৷ ”

” বড় বউমা তুমি তৈরি হয়ে নেও স্মরণ তোমাকে ভার্সিটিতে পৌছে দিবে৷”

প্রাণো মাথা নেরে দ্রুত রুমে গিয়ে শাড়ি পাল্টে চুড়িদার পড়ে নিয়ে রেডি হয়ে নেয়৷ প্রাণোর হাতে সময় নেই যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব অফিসে পৌছাতে হবে৷ আজ অনেক বড় অপারেশন আছে যেটা প্রাণো নিজে লিড করবে৷

প্রাণো তার ফোন নিয়ে রুম থেকে বের হওয়ার পর পর সাফা ঐশী স্মিতা রেডি হয়ে বের হয়ে প্রাণোর সামনে এসে দাড়ায়৷ স্মিতা সাফা ঐশী তিন জনের মাথায় অনেক গুলো প্রশ্ন ঘুরছে কিন্তু এখন সে প্রশ্ন করার সময় নয় বলে চুপচাপ প্রাণোর সাথে সাথে বেড়িয়ে আসে৷ গাড়ির কাছে আসতে স্মিতা আস্তে আস্তে প্রাণোকে বলে,” প্রাণো আজ তো তেমন কোন ক্লাস নেই তাহলে তুই মিথ্যে কেন বললি?”

” আমার একটা কাজ আছে তোরা ভার্সিটিতে আমার জন্য অপেক্ষা করবি ৷ আমি ঠিক সময়ে চলে আসবো ওকে?”

” কিন্তু কোথায় যাবি তুই?”

” সবটা পরে বলবো ৷ আর শোন আমি যে ভার্সিটিতে থাকবো না এটা যেন স্মরণ ভুলেও জানতে না পারে ৷”

” ঠিক আছে৷”

” ওকে”

প্রাণো স্মরণের গাড়িতে উঠে বসে ৷ আর বাকিরা অন্য গাড়িতে৷ পুরো রাস্তায় স্মরণ প্রাণোর হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে চুমু খেয়েছে৷ প্রাণো হাত সরিয়ে নিতে চাইলে স্মরণ চোখ গরম করে তাকিয়ে বলে, ” যদি আর একবারও হাত ছুটিয়ে নিতে চাও তাহলে কিন্তু গাড়িতে বসে রোমান্স শুরু করে দিবো৷”

এটা শোনার পর প্রাণোর আর সাহস হয়নি হাত সরিয়ে নেওয়ার ৷ বরং সময় টা ইনজয় করেছে৷

ভার্সিটির সামনে গাড়ি থামাতে প্রাণো দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে যেতে নিলে স্মরণ প্রাণোর হাত ধরে ফেলে বলে, ” এতো তারা কিসের মিসেস প্রাণো? গুড বাই কিসি না দিয়ে তো কোথাও যেতে দিবো না তোমায় ..”

” কি হচ্ছে টা কি স্মরণ? এটা ভার্সিটি আমাদের বেডরুম না৷ প্লিজ হাত ছাড়ো ক্লাস এখুনি শুরু হয়ে যাবে৷”

” উহু ছাড়ছি না যতোক্ষণ না গুড বাই কিসি দিচ্ছো৷”

স্মরণ যে হারের ঘাড়তেরা তাতে কিস না দেওয়া পর্যন্ত হাত ছাড়বে না৷ ভার্সিটির অনেক ছাত্র ছাত্রী তাকিয়ে আছে ওদের দিকে প্রাণো কি করবে ভেবে হুট করে স্মরণের গালে চুমু দিতে স্মরণ হাত ছেড়ে দিয়ে টেডি স্মাইল গাড়িতে উঠে যায়৷ প্রাণো ভার্সিটিতে ঢুকে ভার্সিটির পেছনের গেট দিয়ে বেড়িয়ে যায়৷ সেখানে RV প্রাণোর জন্য অপেক্ষা করছিলো৷ প্রাণো গাড়িতে উঠে বসতেই RV দ্রুত গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ভার্সিটি রোড ছাড়িয়ে যায়৷

” RV সব রেডি তো? গতকাল মেসেজে যা যা বলেছি করেছো?”

” তুমি কিছু করতে বলবে আর সেটা হবে না! এমন টা কোনদিন হয়েছে মিসেস প্রাণো?”

” আজ কিন্তু আমাদের টিমের সব চেয়ে বড় অপারেশন ৷ এটা যদি জিততে পারি তাহলে আগামিকাল হবে JM এর ধ্বংসলীলা শুরু হয়ে যাবে৷ ”

” শুধু JM নয় প্রাণো তার সাথে আরো দু নাম্বারি ব্যবসায়ীরা শেষ হয়ে যাবে৷”

” হুম একদম বাই দ্যা ওয়ে সিমি আপুর খবর কি? সিমি আপু ঠিক আছে তো? ”

” অফিসে গিয়ে নিজের চোখেই দেখে নেও৷”

” মানে আপু অফিসে কেন? তার তো এখন কমিশনার আঙ্কেলের বাড়িতে থাকার কথা?”

” তার কাছ থেকে সবটা জেনে নিও সিমি আমাকে কিছু বলেনি৷”

কিছুক্ষণের মধ্যে প্রাণো অফিসে পৌছে নিজের কেভিনে গিয়ে চেন্জ করে নিয়ে ফাইল গুলো একবার চেক করতে নিলো তখনি দরজায় কেউ নক করে….

” কামিং”
” প্রাণো”

” আরে সিমি আপু! তুমি আজ এখানে কেন?”

” তুমি ঠিক যে কারণে; ”

” আজ এখানে আসার কোন প্রয়োজন ছিলো না আপু৷”

” আমি জানি তুমি কি মিন করতে চাইছো ৷ কিন্তু প্রাণো দেশের প্রতি আমার যে কতর্ব্য তা আমি পূরণ করবো ৷ আমার কাছে প্রথম প্রায়োরিটি আমার দেশ তারপর আমার স্বামী ৷ যেমন টা তোমার কাছে প্রাণো৷ ”

প্রাণো মুচকি হেসে বললো,” অস্র গুলো একবার দেখে নেও আপু ৷”

” ঠিক আছে”

সিমি চলে যেতে প্রাণো মাথায় কালো হুডিপরে মুখে মাক্স চোখে ব্লাক সানগ্লাস হাতে গ্লোভস পড়ে নিয়ে কেভিন থেকে বের হয়ে দেখে টিম রেডি হয়ে দাড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে৷ প্রণো সবার উদ্দেশ্য বলে উঠলো , ” আর ইউ রেডি গাইজ?”

” ইয়েস ম্যাম, ”

” প্রাণো গাড়ি রেডি এখন তোমার পারমিশন পেলে সবাই রওনা হবে৷”

“চলো সবাই”

আজ ও দুটো টিম প্রাণো ভাগ করে দেয় ৷ একটা টিম প্রাণো আর সিমির অন্যটা RV আর কণার….

শহরের অন্যতম বিশিষ্ট শিল্পপতিদের ফ্যাক্টরিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে৷ শহরে এরকম দশটা ফ্যাক্টরিতে আগুন জ্বলছে৷ প্রেস মিডিয়া সেসব ফ্যাক্টরির সামনে দাড়িয়ে সবটা রেকর্ড করছে৷ কিন্তু কি কারণে সেসব ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলো তা পুরোটাই অজানা রইল সবার কাছে,…….

জীবন মাহমুদ বেলা করে ঘুম থেকে উঠে খবরের কাগজ পড়তে পড়তে চা খেতে লাগলো৷ মিহু ড্রইং রুমে টিভি অন করে চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে একটা নিউজ চ্যানেলে এসে থামে ,

“”ব্রেকিং নিউজ
এখনো কিছুই পুলিশ জানতে পারেনি কি করে এই ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলো৷ এখানকার সিকিউরিটি গার্ড পালাতক ৷ তাকে এবং ফ্যাক্টরির কোন কর্মচারীকে এখন অব্দি আগুন থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ৷ গাজীপুরে এরকম আরো তিনটি ফ্যাক্টরিতে আগুন লেগেছে কিন্তু সে সব কার এবং মালিক কে সে সব কিছুই জানা যাই নি৷ আগুন লাগানো হয়েছে নাকি অসাবধানতা বসত লেগেছে তার ধারনা করা যাচ্ছে না ৷ ইতোমধ্যে ফ্যায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে ৷

আরো আপডেট পেতে চোখ রাখুন এন টিভির পর্দায়৷

খবর শেষ হতেই জীবন মাহমুদ এর হাত থেকে চায়ের কাঁপ টা ফ্লোরে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে গেল৷ চায়ের কাঁপ ভাঙার শব্দে মিহু সাজিত সাহারা বেগম ছুটে আসে৷

” কি হয়েছে তোমার? কাঁপটা কি করে ভাঙলো?”

” আ,, আমাকে এখুনি বের হতে হবে সাহারা…”

জীবন মাহমুদ আর কিছু না বলে দ্রুত রুমে গিয়ে চেন্জ করে বেড়িয়ে পড়ে৷ সাজিত মিহু সাহারা কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছে না জীবন মাহমুদ এর এতোটা অস্থিরতার কারণ?

______________

” এই সব কি হচ্ছে JM ? আমাদের সব দুই নাম্বার ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলো কি করে?”

” তার চেয়ে বড় প্রশ্ন কোটি কোটি টাকা অস্র হিরোইন সব সব পুড়ে নষ্ট হয়ে গেলো৷ আমরা পথে বসে গেছি ৷”(JM)

“কে কে করছে এই সব? আড়ালে থেকে একের পর এক ক্ষতি করে যাচ্ছে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না৷ ”

” ওদের কে ধরতে হবে নাহলে নাহলে বাকিরাও শেষ হয়ে যাবে৷ আমাদের লিগ্যাল কারবারের আড়ালে যে ইললিগ্যাল কাজ করি সেটা সকলের সামনে এসে যাবে ইভেন পুলিশ যদি এই নিয়ে তদন্ত করে তাহলে সব সত্যি সবার সামনে এসে পড়বে৷”(JM)

” তার উপর মিডিয়া আর সেই অজানা শত্রু৷ আমাদের কিছু একটা করতেই হবে ৷”

” আমাকে একটু ভাবতে দে৷ কিছু তো অবশ্যই করবো৷ এভাবে ওদের ছেড়ে দেওয়ার পাত্র এই JM নয়৷ “(JM)

_________________

অপারেশন শেষ করে প্রাণো ফিরে এসে দ্রুত চেন্জ করে নিয়ে RV কাছে গিয়ে বলে,” সেই জার্নালিস্ট কোথায় RV?”

” টর্চার সেলে…”

” ওয়াট! টর্চার সেলে কেন রেখেছো RV ?”

” উপায় ছিলো না৷ মেয়েটা বড্ড বেশি জ্বালাছিলো তার উপর পালানোর চেষ্টা করেছে৷”

” ওহ!”

টর্চার সেলের সামনে দাড়াতে দেখে মৌ হাটুর উপর মুখ গুজে বসে আছে ৷ সকালের নাস্তা যেভাবে দিয়ে ছিলো সেভাবে পড়ে আছে৷ প্রাণোর রাগ হলো মৌর এমন না খেয়ে থাকার নাটক দেখে, এক প্রকার বিরক্ত নিয়ে প্রাণো বলে উঠলো ,” হ্যালো মিস মৌ কেমন আছেন? আমার লোকেরা আপনার ঠিক ঠাক যত্নআত্তি করতে তো?”

মেয়েলি কন্ঠ শুনে মৌ মাথা তুলে তাকিয়ে প্রাণোকে দেখে এক প্রকার শক্টড পেল৷ মৌ ভেবে ছিলো তাকে হয়তো তার কোন শত্রু কিডন্যাপ করেছে৷ কারণ জার্নালিস্টের তো শত্রুর অভাব হয়না কিন্তু প্রাণো যে তাকে কিডন্যাপ করতে পারে তার বিন্দুমাত্র ধারণা করতে পারেনি৷ প্রাণোর হাসি মাখা মুখ দেখে মৌয়ের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো ৷ প্রাণোর দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো ……” তু,,তুমি?”
.
.
.
#চলবে………….
(ভুল ট্রুটি গুলো ধরিয়ে দিবেন৷ ধন্যবাদ)#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৪
.
.
🦋
মেয়েলি কন্ঠ শুনে মৌ মাথা তুলে তাকিয়ে প্রাণোকে দেখে এক প্রকার শক্টড পেল৷ মৌ ভেবে ছিলো তাকে হয়তো তার কোন শত্রু কিডন্যাপ করেছে৷ কারণ জার্নালিস্টের তো শত্রুর অভাব হয়না কিন্তু প্রাণো যে তাকে কিডন্যাপ করতে পারে তার বিন্দুমাত্র ধারণা করতে পারেনি৷ প্রাণোর হাসি মাখা মুখ দেখে মৌয়ের চোয়াল শক্ত হয়ে এলো ৷ প্রাণোর দিকে আগুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে উঠলো ……” তু,,তুমি?”

” ইয়েস ইট’স মি প্রাণো৷ ”

” তার মানে তুমি আমাকে কিডন্যাপ করিয়েছো? ও মাই গড এটা আগে কেন আমার মাথায় আসেনি?” মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার করে বললো মৌ৷

মৌ’র ভাব ভঙ্গি দেখে প্রাণো বাঁকা হেসে বললো, ” তো মিস মৌ দাভাইকে তো আমার দ্বিতীয় রুপটার কথা জানা আপনার আর জানানো হলো না ৷ এখন কি হবে?” বিস্ময় হওয়ার ভাব করে মৌকে বললো প্রাণো৷

” আ,, আমি আমি সব টা বলবো সাদকে প্রাণো৷”

” কিন্তু কি করে মিস মৌ? যাহ! তোমার মাথায় হয়তো কোন বুদ্ধি আসছে না তাই না? নো টেনশন আমি ব্যবস্থা করছি যাতে তুমি দাভাই কে সবটা বলতে পারো৷”

প্রাণো RV দিকে তাকাতে RV পকেট থেকে একটা ইনজেকশন বের করে প্রাণোর হাতে দিয়ে বলে,” তোমার কথা মতো হাই ডোজের টা নিয়ে এসেছি৷ যাস্ট একবার ওর বডিতে ইনজেক্ট করে দেও তারপর…..”

” এভাবে ইনজেকশন দিতে দিবে না৷ তোমার হেল্প লাগবে৷”

” বুঝেছি চলো৷ ”

RV সেলের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতে মৌয়ের চোখে মুখে আতঙ্ক ভয়ের ছাপ স্পষ্ট ৷

” কি কি করবে তোমরা? তোমার হাতে এটা কিসের ইনজেকশন ? কি করবে এটা?” আতঙ্কিত হয়ে এক নাগাড়ে প্রশ্ন করে গেল মৌ৷

” কি করবো এটা দিয়ে তাই তো? যাস্ট সি , RV ” প্রাণো ইশারা করতে RV মৌয়ের দু’হাত চেপে ধরে৷ মৌ RV শক্তির সাথে পেরে ওঠে না৷ প্রাণো সে সুযোগে মৌয়ের কাধে ইনজেকশন টা ইনজেক্ট করে দেয়৷

” কাজ শেষ RV ৷ ”

” হুম , এবার কি করবো?”

” মৌকে তার বাড়িতে পৌছে দেও৷ আগামি তিনচার ঘন্টার আগে জ্ঞান ফিরবে না ৷ আর জ্ঞান ফিরলেও পেছনের কয়েক মাসের কথা স্মৃতি থেকে মুছে যাবে৷ আশা করি এর পর আর কোন সমস্যা হবে না৷ ”

” ঠিক আছে আমি এখুনি ব্যবস্থা করছি৷ ” RV নিজেই মৌ কে কোলে তুলে নিতে প্রাণো বলে ওঠে ,” RV আমাকে যেতে হবে ভার্সিটি কিছুক্ষণ পর বন্ধ হয়ে যাবে৷ ”

“তাহলে আমার সাথে চলো ৷”

” সেটাই করা উচিত ৷ তুমি গাড়ি স্টাট দেও আমি ফোন টা নিয়ে আসছি৷”

” ওকে”

প্রাণো তার কেভিনে গিয়ে ফোনটা হাতে নিতে দেখে স্মরণের দশটা মিসড কল ৷ প্রাণো দ্রুত স্মরণকে ফোন করে….

” হ্যালো প্রাণ কোথায় তুমি ? আমি ভার্সিটির গেটে ওয়েট করছি ৷”

” স্মরণ আমার যাস্ট পনেরো মিনিট লাগবে প্লিজ আর একটু ওয়েট করো৷”

” ওকে সুইটহার্ট৷ তোমার জন্য তো আজীবন অপেক্ষা করতে প্রস্তুত এই অধম৷”

” পাগল ,রাখছি”

কল ডিসকানেক্ট করে প্রাণো RV সাথে বেড়িয়ে পড়ে৷

” RV পনেরো মিনিটের মধ্যে ভার্সিটির গেটে পৌছাতে হবে৷”

” নো চিন্তা ডু ফুর্তি প্রাণো ৷ প্লেনের মতো উড়িয়ে নিয়ে যাবো পনেরো মিনিটের মধ্যে চিন্তা করো না৷”

” কথা না বাড়িয়ে দ্রুত চলো RV”

RV গাড়ি স্টাট দিয়ে ফুল স্পিডে চালাতে লাগলো ৷ যেন গাড়ি চলছে না উড়ছে এমন অবস্থা৷

__________

সাদমান আজ অফিস গিয়ে তার বাবা জুনাইদ কবির কে খুজে না পেয়ে ম্যানেজার এর কাছে জানতে চাইলে ম্যানেজার জানায় জুনাইদ কবির আজ অফিসে আসেনি৷ কথাটা শুনে সাদ এর কপালে চিন্তার ছাপ ফুটে ওঠে ৷ সকালে নিউজ দেখার পর পর জুনাইদ কবির অফিসে কাজ আছে বলে দ্রুত বেড়িয়ে পড়ে৷ কিন্তু তার বাবা অফিসে আসেনি৷ কথাটা জানার পর সাদ এর মনে অন্যকিছু চলছে৷ প্রাণোর কে সবটা বলবে কিন্তু প্রাণো যে তার শশুড় বাড়ি সেখানে হয়তো ব্যস্ত কল করা ঠিক হবে কি হবে না এটা ভেবেই আর কল করলো না প্রাণোকে সাদ৷

” কতো টাকার ক্ষতি হলো JM?”

” লাভের থেকে ক্ষতির পরিমানটা এতো বেশি যে তার হিসেব করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ৷”

” এখন কি করবো? মাল ডেলিভারি দেবো কি করে? ব্যায়াররা যখন জানতে পারবে সব মাল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তখন কি হবে এটা ভেবেই আমার কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে৷ এডভ্যান্স টাকা টাও খরচ হয়ে গেছে৷ টাকা ফেরত দেওয়ার তো কোন ওয়ে দেখছি না JM?”

” কিছু তো একটা করতেই হবে ৷ আমাকে ভাবতে দে কোন না কোন একটা পথ আমি বের করবোই৷”

__________

প্রাণো পেছনের গেট দিয়ে ঢুকে কমন রুমে ঢুকে সাফা ঐশী স্মিতা কে দেখতে পায় ৷ প্রাণোকে দেখে তিন বান্ধবী যেন ধরে প্রাণ ফিরে পেল৷

” দোস্ত তুই এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? দুলাভাই গেটে তোর জন্য অপেক্ষা করছে৷ ভয়ে আমরা কেউ বের হতে পারছি না৷ ”

” চিন্তা করিস না ৷ আমি এসে পরেছি তো চল ও বাইরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে৷”

“চল দোস্ত”

প্রাণো সাফা ঐশী স্মিতা ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে স্মরণ কে দেখতে পেল৷ সকালে কফি কলার শার্ট আর জিন্স পড়ে এসে ছিল স্মরণ আর এখন ব্লাক কোট প্যান্ট ওয়াইট শার্ট চোখে সানগ্লাস ৷ একদম অন্যরকম লাগছে স্মরণকে, প্রাণোর চোখ আশে পাশে পড়তে খেয়াল করে অনেক গুলো মেয়ে চোখ দিয়ে স্মরণকে গিলছে ৷ আর কিছু মেয়ে তো দুরে দাড়িয়ে চুল ঠিক করছে ৷ লিপস্টিক দিচ্ছে৷ এই সব দেখে যেন প্রাণোর পুরো শরীর টা জ্বলে যাচ্ছে , রেগে বিড় বিড় করে বলতে লাগলো, ” এই মেয়ে গুলো না ননীর পুতুল, ন্যাকামির অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ান যদি কেউ হতে পারে তো এই মেয়ে গুলোই পারবে৷ অন্যের স্বামীর দিকে নজর দেওয়া এই শাকচুন্নিদের অভ্যাস ৷ সুন্দর ছেলে মনে হয় যেন এরা জীবনেও দেখেনি৷ অসহ্য আর লোকটার কেন এতো সেজে আসার দরকার ছিলো হাহ! দাড়াও দেখাচ্ছি মজা৷”

প্রাণো ঝড়ের গতিতে গিয়ে স্মরণের সামনে এসে দাড়ায় ৷ স্মরণ কিছু বলার পূর্বে প্রাণো স্মরণের চুল গুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করে দিয়ে চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে নেয়৷ হঠাৎ প্রাণোর চোখ স্মরণের ঠোঁটের উপর পড়তে হাত দিয়ে স্মরণের ঠোঁট ঘষতে লাগে, স্মরণ সহ সাফা ঐশী স্মিতা আহাম্মক হয়ে প্রাণোর কান্ড দেখছে৷ প্রাণোর হঠাৎ কি হলো? স্মরণ প্রাণোর হাত দুটো আটকে দিয়ে বলে,” প্রাণ কি করছো এই সব?” স্মরণ এই কথাটা যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করলো৷ প্রাণো আগুন চোখে স্মরণ এর দিকে তাকাতে স্মরণ চুপসে গেল৷ গলায় আগুন তেজ নিয়ে বলতে লাগলো প্রাণো,” আমি কি করছি তাই না? আমার ভার্সিটিতে আসবে ভালো কথা কিন্তু তো সেজে গুজে আসার কি আছে হু? ওহ নাকি মেয়েদের দেখাতে এসেছো কোনটা? ”

প্রাণোর কথা শুনে স্মরণের আর বুঝতে বাকি নেই আচমকা প্রাণোর এমন রাগার কারণ, স্মরণ ঠোঁট কামড়ে ধরে হাসি আটকিয়ে বলল,” আর ইউ জেলাস প্রাণ?”

” কিহ! জেলাস? জেলাস কেন হতে যাবো? কতো গুলো শাকচন্নির দল আমার বরের দিকে নজর দিবে আর আমি তা সহ্য করবো? এমন উদার মনের মেয়ে কিন্তু আমি নই মিস্টার ইফতেকার মাহমুদ স্মরণ ৷ ”

প্রাণোর কথা শেষ হতে পেছন থেকে স্মিতা ঐশী সাফা কিটকিটিয়ে হেসে বলতে লাগলো ,” আরে বুঝেন না দুলাভাই আপনার বউ ভেতরে ভেতরে জ্বলছে ৷ মেয়ে গুলো শুধু আপনাকে চোখ দিয়ে গিলেছে তাই আপনার এই হাল করলো প্রাণো যদি কোন মেয়ে ভুলেও আপনার কাছে আসার চেষ্টা করে তাহলে আপনার যে কি হবে একমাত্র আল্লাহ জানে…”

” স্যাটয়াপ ৷ ” (প্রাণো)

প্রাণো মুখ ভার করে গাড়ির দরজা খুলে ফ্রন্ট সিটে বসে পড়লো৷ পেছনের সিটে সাফা ঐশী স্মিতা বসলো৷ স্মরণ ড্রাইভিং সিটে৷ পুরো রাস্তায় প্রাণো কোন কথা বললো না৷ মুখ ভার করে রইল৷ আজ স্মরণের কেন যেন প্রাণোর এই রুপটা ভিষণ ভালো লেগেছে৷ প্রাণো যে তাকে নিয়ে পজেসিভ এটা স্মরণ খুব ভালো করে বুঝতে পারছে ৷ স্মরণ মিট মিট করে শুধু হেসে গেছে৷

_____________

দুপুরে ফ্রেস হয়ে প্রাণো তার শাশুড়ির দেওয়া লাল শাড়িটাই আবার পরে নেয়৷ সকালে মাত্র কিছুক্ষণের জন্য শাড়িটা পরেছিলো৷ স্মরণ রুমে আগেই চেন্জ নেয়৷ প্রিয়া প্রাণো কে নিয়ে নিচে গিয়ে দেখে সকালের মতো সবাই ডাইনিংয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে ৷ সাহারা বেগম প্রাণোর হাত ধর রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে বলে,” বড় বউমা নিয়ম অনুযায়ী তোমার আজ রান্না করার কথা ছিলো কিন্তু তোমার কলেজ থাকায় আমি সবটাই রান্না করেছি এখন তুমি শুধু পায়েশ টা রান্না করো আর কিছু করতে হবে না৷ ”

” মামুনি চিন্তা করবেন না আমি এখুনি পায়েশ টা রান্না করছি৷”

” বড় বউমা এটা যদি এবাড়ির নিয়ম না হতো তাহলে তোমাকে চুলার কাছে আসতে ও দিতাম না৷”

” মামুনি তুমি বেশি বেশি ভাবছো ৷ তুমি ওদের খেতে দিয়ে দেও আমি ঝটপট রান্না করে ফেলি৷”

” ঠিক আছে৷ তবে সাবধানে করবে৷”

” ঠিক আছে৷”

সাহারা বেগম সবাইকে খাবার সার্ব করে দেয় কিন্তু স্মরণ খেতে রাজি হয়না কারণ টা সবাই বুঝতে পেরে বেশ হাসি মজা করলো তবে মিহু আর সাজিত কোন টু-শব্দ করলো না৷ চুপ খেতে লাগলো৷

পায়েশ রান্না শেষ হলে প্রাণো বাটিতে সাজিয়ে সবাই কে সার্ব করে দেয়৷ প্রত্যেকে প্রাণোর হাতের রান্না করা পায়েশ খেয়ে প্রশংসা করলো৷ সবাই খেয়ে উঠে পড়তে জীবন মাহমুদ বাড়িতে ঢুকে ৷ কাউকে কিছু না বলে তিনি তার রুমে চলে যান৷ সাহারা বেগম জোর করে প্রিয়া প্রাণো আর স্মরণ কে জোর করে খেতে বসিয়ে রুমে চলে যায়৷

” তোমার আজ এতো দেরি হলো আসতে?”

” কাজ ছিলো সাহারা”

” ঠিক আছে তুমি জামা কাপড় ছেড়ে গোছল করে নেও৷ আমি আসছি৷”

সাহারা বেগম যেতে নিলে জীবন মাহমুদ বলে উঠলো ,” সাহারা কাল তো স্মরণ আর বড় বউমার রিসিপশন ৷ তো আমি ভাবছিলাম রিসিপশন যেহেতু হচ্ছে তখন দুই ছেলের এক সাথে হোক৷ সাজিত আর ছোট বউমার তো রিসিপশন হয়নি৷”

” আমার মনের কথাটাই বললে তুমি, আমার কোন আপত্তি নেই ৷ তুমি সেভাবে এরেন্জমেন্ট করো৷”

” বিকেল থেকে পুরো বাড়ি সাজানো শুরু হবে ৷ আর একটা কথা ইনভাইটেড লোক থাকবে তারা সবাই বড় বড় বিজনেসম্যান ৷ তাদের যেন কোন অসুবিধা না হয় তার ভার তোমার, ”

” চিন্তা করো না আমি আছি তো৷”

” আর একটা কথা বিকেলে একজন ডিজাইনার আসবে তার কাছ থেকে দুই বউমার জন্য পোষাক নিয়ে নিবে৷ ”

” তোমাকে আর এই নিয়ে ভাবতে হবে না ৷ আমি সবটা দেখে নিবো৷”

” ঠিক আছে৷”

সাহারা বেগম রুম থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পর পর জীবন মাহমুদ এর ফোনটা বেজে ওঠে৷ তিনি কল রিসিভ করতে ওপাশ থেকে কিছু শুনে তিনি বলে ওঠে , ” ভেরি গুড, খবর টা তাকে দ্রুত জানিয়ে দেও আসিস৷”

কথাটা বলে কল ডিসকানেক্ট করে ফুরফুরে মন নিয়ে তোয়ালে হাতে নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলেন জীবন মাহমুদ ৷

অন্যদিকে রিভলবারে গুলি লোড দিয়ে হাতের নিশানা ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য সামনে একজন ব্যক্তিকে মাথায় আপেল রেখে দাড় করিয়ে রেখেছে JM ৷ JM এর হাতে রিভালবার দেখে লোকটা ভয়ে থর থর করে কাঁপছে, এই ভেবে হয়তো প্রথম গুলিটা তার কপালে গেঁথে যাবে৷ লোকটাকে ভয় পেতে দেখে JM এর ঠোঁটের কোনে মারাত্মক ভয়ংকর হাসি ফুটে উঠলো ৷ এমন জঘন্য হাসি যে কেউ দেখলে তার শরীর শিউরে উঠবে৷ JM হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে রিভালবার ঘুড়াতে ঘুড়াতে সামনে দাড়িয়ে থাকা লোকটাকে প্রশ্ন করলো,” টিম টার এখন এক্সাক্টলি লোকেশন টা কোথায়?”

” আ,,, আমি জা,, জানি না বস?”

“জানি না” কথাটা শুনে JM লোকটার পায়ে শুট করে বলে,” বাহ! আমার হাতে নিশানা দেখছি এখনো বেশ ভালো ৷ এবার নাহয় তোর কপালে নিশানা করি ৷ কি বলিস?”

” ব,, বস ওই টিমের লোকেশন কোথায় জানি না৷ তবে ওই টিমের একটা মেয়েকে আমি দেখেছি ৷ দেখলে চিনতে পারবো৷”

” তার মুখের আদলের বিবরন দিতে পারবি?”

” পারবো স্যার”

” গুড, রানা ”

” ইয়েস বস”

” আর্টিস্ট ডেকে মেয়েটার ছবি বানিয়ে নে ৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ৷”

“ওকে বস ৷ আমি এখুনি আর্টিস্ট আনার ব্যবস্থা করছি৷”

একবার যাস্ট স্কেচটা হাতে পাই তারপর শুধু মেয়েটা কেন? পুরো টিমের অস্থিত্ব আমি মিটিয়ে দিবো ৷
.
.
.
#চলবে…………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here