গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া পর্ব ৩৫+৩৬

#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৫
.
.
🦋
” আর্টিস্ট ডেকে মেয়েটার স্কেচ বানিয়ে নে ৷ যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব ৷”

“ওকে বস ৷ আমি এখুনি আর্টিস্ট আনার ব্যবস্থা করছি৷”

একবার যাস্ট স্কেচটা হাতে পাই তারপর শুধু মেয়েটা কেন? পুরো টিমের অস্থিত্ব আমি মিটিয়ে দিবো ৷

_________

” মৌ মামুনি এখন কেমন লাগছে?”

” ড্যাড আমি কোথায়? ”

” মৌ তুমি বাড়িতে, এখন বলোতো এই তিনদিন কোথায় ছিলে?”

” কোথায় ছিলাম আমি? কোথায় ছিলাম”

বলতে বলতে দু’হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে৷

” কি হলো মৌ কি হয়েছে তোমার? উফফ এই সময় তোমার মম কোথায় চলে গেল? মেয়েটাকে এভাবে ফেলে কোথায় চলে গেল?”

মৌ মাথায় হাত দিয়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো ,” আমি কোথায় ছিলাম? কেন ছিলাম? আমার কেন কিছু মনে পড়ছে না? কেন কেন কেন?”

মেয়ের এমন অবস্থা দেখে অমিত ডক্টর কে জ্বিজ্ঞাসা করলো,” ডক্টর মৌ কিছু মনে করতে পারছে না কেন?”

” আই থিং সর্ট মেমোরি লস হয়েছে ৷ আপনারা মেয়ে কে একবার হসপিটালে নিয়ে আসবেন কিছু চেকয়াপ করাতে হবে৷ আর মৌ’কে আর প্রশ্ন করবেন না৷ ওর রেস্টের দরকার৷ ”

” ওকে ডক্টর”

ডক্টর চলে যাওয়ার পর পর মৌ বেড থেকে নেমে তার ক্যামেরা খুজতে থাকে৷

” মৌ তুমি এখন কি খুজছো? ডক্টর কি বলে গেলো শুনোনি? তোমাকে রেস্ট নিতে বলেছে৷”

“ড্যাড আমার ক্যামেরাটা কোথায়?”

” রুমে তো থাকার কথা!”

” রুমের কোথাও নেই ড্যাড৷ যে ভাবে পারো ক্যামেরাটা খুজে বের করো৷ ”

” কিন্তু এখন ক্যামেরাটা নিয়ে কি করবে?”

” ড্যাড তুমি ভুলে যাচ্ছো আমি একজন জার্নালিস্ট ৷ আর আজ অর্থমন্ত্রীর একটা ইন্টারভিউ আছে ৷ আর বস আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে৷”

” মৌ মামুনি তুমি চার মাস আগে অর্থমন্ত্রীর ইন্টারভিউ নিয়েছো ভুলে গেলে?”

” ওয়াট! আজ ক’ তারিখ ড্যাড?”

” ২০ শে আগস্ট ২০২১ ”

” ম,,মানে? তাহলে আমার কেন মনে নেই? মাঝের মাস গুলোয় কি হয়েছিলো ?”

” জানি না মৌ ৷ কাল সকালে তোমাকে নিয়ে হসপিটালে যাবো চিন্তা করো না৷”

” মম কোথায় ড্যাড?”

” জানি না” অন্যদিকে মুখ ঘুড়িয়ে কথা টা বললো অমিত….

” মৌ মামুনি তুমি রেস্ট করো আমি তোমার জন্য সুপ নিয়ে আসছি৷”

মৌ কিছু না বলে বেডের উপর শুয়ে পড়ে ভাবতে থাকে গত চার মাস কি করে তার স্মৃতি থেকে বাদ যেতে পারে? কি হয়েছিলো তার? কেন ভুলে গেল পেছনের দিন গুলো? ভাবতে ভাবতে মাথায় চিন চিন ব্যাথা অনুভব করে মৌ ……….

______

” মিস্টার ডেভিল হাসবেন্ট এখানে মুখ ভার করে দাড়িয়ে আছেন কেন?”

” আমাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করা যায় না প্রিয়ু?” শূন্য আকাশ থেকে প্রিয়ার দিকে স্থির দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কথাটা বললো সাজিত৷

” ক্ষমা! ক্ষমা করার প্রশ্ন কেন আসছে? আপনি কি কোন অপরাধ করেছেন?”

” করেছি সব থেকে বড় অপরাধ করেছি তোমাকে ঠকিয়ে৷ জানো প্রিয়ু স্মরণ ভাইয়া কিন্তু আমার সৎভাই ৷ এটা শুধু আমরা ফ্যামিলির লোকেরাই জানি৷ বাইরের কেউ জানে না৷ বাবা কোন দিন আমাদের ভাই বোনদের ভেতর কোন পার্থক্য না করলেও মা করতো৷ ছোট বেলা থেকেই মা ভাইয়াকে বড্ড বেশি ভালোবাসতো ৷ মিহু আর আমি সেই ভালোবাসা এক অংশ পাই নি কখনো, হয় তো ভাইয়ার মা নেই সে জন্য তার উপর একটু বেশি মায়া মমতা ভালোবাসা একটু বেশি প্রকাশ পেত৷ কিন্তু আমরা দুজন ছোট বেলা থেকে বাবার ভালোবাসা পেয়ে এসেছি৷ এটা বলবো না মা কখনো আমাদের ভালোবাসেনি কিন্তু আমরা দুভাই কোন কখনো সেই এটেনশন মায়ের কাছে আশা করতাম সেটা কখনো পাই নি৷ তারপর আমরা যখন ধিরে ধিরে বড় হতে লাগলাম তখন থেকে হুট করে বাবা ভাইয়ের ভেতর কেমন যেন দূরত্ব বাড়তে লাগলো জানি না তার কারণ কি তবে আমরা বেশ খুশি ছিলাম প্রিয়ু ৷ তবে স্মরণ ভাইয়া ছোট বেলা থেকে খুব গম্ভির হয়ে থাকতো বিধায় আমরা ভাইয়ের সাথে কথা বলতেও ভয় পেতাম৷ কেন জানো একদিন স্কুলে ভাইয়ার ক্লাস মেট ভাইয়ার কলমটা না বলে হাত থেকে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিলো সেদিন ভাইয়া ছেলে টাকে এমন ভাবে মেরে ছিলো যে তাকে হসপিটালে ভর্তি করতে হয়ে ছিলো৷ সে দিন বুঝতে পেরেছিলাম ভাইয়ার রাগ বেশি ৷ ধিরে ধিরে ভাইয়া পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করতো ৷ তারপর একদিন শুনি ভাইয়া নাকি নতুন বিজনেস শুরু করেছে৷ ড্যাড চেয়েছিলো তার বিজনেসে হাত দিক কিন্তু ভাইয়া মুখের উপর না বলে দেয়৷ ভাইয়া ধিরে ধিরে তার ব্যবসা বড় করতে লাগলো ৷ নিজের পরিচয় বানালো৷ জানো আমাদের রিলেটিভ বন্ধু বান্ধব ভাইয়ের সাথে আমাকে তুলনা করতো তখন প্রচন্ড রাগ হতো হিংসে হতো ভাই কে, একদিন হঠাৎ শুনি ভাইয়া কোন এক মেয়ে ভালোবাসে কিন্তু বলেনি৷ আমিও সুযোগ পেয়ে গেলাম প্রতিশোধ নেওয়ার ৷ খোজ নিতে শুরু করি কিন্তু কিছুতেই খুজে পাচ্ছিলাম না৷ একদিন ভাইয়ের ফোনে প্রাণো আর তোমার ছবি দেখতে পাই ভাইয়াকে লুকিয়ে ছবিটা আমি আমার ফোনে নিয়ে নি অবশ্য নিতে পারতাম না যদি না ভাইয়া ফোনের লক খুলে না রাখতো৷ তারপর বন্ধুদের লাগিয়ে দি প্রাণো কে খুজতে আর একদিন হঠাৎ তোমাকে খুজে পাই তারপর… ”

“তারপর আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করলেন রাইট? যাই হোক এই বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না তবে একটা কথা বলবো৷ ভুল বলছেন আপনি মামুনি আপনাদের সমান ভাবে ভালোবাসে কিন্তু প্রকাশ করার ধরণটা হয়তো ভিন্ন আর একটা কথা মিহু বা আপনি ছোট বেলা থেকে একটা ধারনা মনে পোষণ করে রেখেছেন যে স্মরণ ভাইয়া আপনার সৎ ভাই ৷ আর আপনার মা আপনার সৎভাইকে বেশি ভালোবাসে৷ কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা পোষণ করেন আমি মনে করি৷ অবশ্য সবটাই করেছেন হিংসার বশবর্তী হয়ে৷ ”

” আমাকে কি শেষ বার ক্ষমা করা যায় না প্রিয়ু?”

” করে দিলাম ক্ষমা ৷ আর কিছু?”

” প্রিয়ু আমি তোমার সাথে আমাদের সংসারটা নতুন করে শুরু করতে চাই? ”

” আবার নতুন অভিনয় শুরু করলেন দেখছি!”

” আমি কোন অভিনয় করছি না প্রিয়ু মন থেকে বলছি৷ আমি ভাইয়া আর ভাবির মাঝে তৃতীয় ব্যাক্তি হয়ে ঢুকতে চাই না৷ আমি একটু শান্তিতে তোমার সাথে ভালোবাসাময় সংসার গড়তে চাই প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিও না৷” প্রিয়ার সামনে হাটু গেড়ে হাত জোর করে বলতে লাগলো প্রিয়াকে…. প্রিয়ার চোখের অশ্রুদ্বয় টলমল করতে করতে একসময় গড়িয়ে পড়লো৷ এই অশ্রুদ্বয় কোন দুঃখের নয় বরং সুখের, তার ভালোবাসা আজ নিজের ভুল বুঝতে পেরে তার কাছে ফিরে এসেছে৷ এর থেকে আনন্দের আর আছে? প্রিয়া সাজিতের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁদতে লাগলো৷ সাজিত পরম আদরে প্রিয়াকে তার বুকের সাথে জড়িয়ে নিলো৷ আজ থেকে অভিনয়ের খেলায় মাতবে না সাজিত ৷ বরং ভালোবাসাময় সংসার গড়বে৷

_________

” প্রাণো তুই কি করছিস? তুই এমন ডেন্জারাস কাজ করছিস ? আই কান্ট বিলিভ দিস ইয়ার৷”(সাফা)

” কেন বিলিভ করছিস না সাফা?”(প্রাণো)

প্রাণোর প্রশ্নের উওরে স্মিতা বলে উঠলো , ” কারণটা আমি বলছি প্রাণো৷ তোর যে রক্তে ফোবিয়া আছে সেটা আমরা সবাই জানি৷ যে মেয়ে রক্ত দেখলে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় ৷ সে মেয়ে এমন দলের টিম লিডার এটা মানতে সত্যি ভিষণ কষ্ট হচ্ছে ৷”

স্মিতার কথা শুনে প্রাণো হেসে উঠলো৷ হাসতে হাসতে প্রাণো হঠাৎ গম্ভির হয়ে বলতে লাগলো, ” তোদের সামনে যে প্রাণোকে দাড়িয়ে থাকতে দেখছিস সে রক্ত দেখলে ভয় পায় ৷ আর যে প্রাণোর কথা তোদের বলেছি সে রক্ত দিয়ে হলি খেলে৷ ”

” প্রাণো! তুই সত্যি ওরকম ডেন্জারাস টিম লিড করিস? “”(ঐশী)

” ইয়েস, তবে একটা কথা তোরা কান খুলে শুনে রাখ ৷ এই কথাটা যদি তোদের তিনজন ব্যতিত চার জন হয় তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না৷ এই প্রাণো তোদের ছেড়ে দিলেও টিম লিডার প্রাণো তোদের কিন্তু ছাড়বে না৷ সো বি কেয়ারফুল গাইজ৷ ”

প্রাণোর ঠান্ডার গলার থ্রেট শুনে সাফা ঐশী স্মিতা তিনজনই চুপ হয়ে যায়৷

” গাইজ ডিজাইনার কিছুক্ষণ পর এসে যাবে তোরাও ওখান থেকে নিজেদের জন্য ড্রেস চুজ করে নিস৷ ”

” ওকে”

তিনজন রুম থেকে বের হতেই স্মরণ রুমে ঢুকতেই তিন বান্ধবী ঘাবড়ে যায়৷ স্মিতা সাফা ঐশী কে ঘাবড়াতে দেখে স্মরণ ব্রুযুগল কুচকে জিজ্ঞাসা করে,” কি হলো শালী সাহেবাগন আমাকে দেখে তোমরা ঘাবড়ে গেলে কেন? এখানে কি নিয়ে বান্ধবীর সাথে আলোচনা হচ্ছে হুম?”

সাফা ফট করে বলে ওঠে,” এই তো আপনাদের আবার ফুলসজ্জার আয়োজন করা হবে সে নিয়ে কথা বলছিলাম৷”

” রিয়েলি?”

” তাহলে আর ওরা কি নিয়ে আলোচনা করবে স্মরণ?”(প্রাণো)

” হতে পারে কোন গোপন রহস্য যেটা আমাদের সবাইকে লুকিয়ে রাখতে চাইছো তোমরা?”

” হি হি হি ভেরি ফানি দুলাভাই ৷ আপনি তো অনেক মজার মানুষ ৷ আপনার বউয়ের কোন গোপন রহস্য থাকলে তো সেটা আপনার সবার আগে জানার কথা তাই না?”

” তা ঠিক তবে এখন কোন রহস্য জানি বলে পরে জানবো না এটা কিন্তু বলে নি৷” স্মরণের কথা শুনে সাফা ঐশী স্মিতা ঘাবড়ে গেল শুধু ঘাবড়ালো না প্রাণো সে শান্ত স্থির হয়ে বসে আছে৷

” ড্রামা কুইনরা এখন আপনারা আসতে পারেন৷” (প্রাণো)

” হুম আমরা যাচ্ছি ৷ ”

প্রাণোর বান্ধবীরা চলে যেতে স্মরণ দরজা লক করে প্রাণোকে কোলে তুলে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিয়ে প্রাণোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে ৷ প্রাণো কিছু বলতে নিলে স্মরণ বলে ওঠে , ” ডোন্ট ডিসটার্ব মি প্রাণ ৷ ঘুমাতে দেও আমাকে,”

” আমাকে ছেড়ে ঘুমাও প্লিজ”

” উহু আমি যতোক্ষণ ঘুমাবো তোমাকেও ততোক্ষণ ঘুমাতে হবে৷ আর এখন একটা কথা বললে রাতের রোমান্টিক টর্চার কিন্তু এখন শুরু করবো আমি সুইটহার্ট ৷”

প্রাণো স্মরণের সাথে না পেরে চুপ হয়ে গেল৷

পরেরদিন বিকেলে বাড়িতে গেস্ট আসতে শুরু হয়ে গেলো অথচ প্রিয়া প্রাণো কেউ রেডি হয়নি৷ দুজনকে সাজাতে বিউটিশিয়ানরা এসেছে৷ প্রাণো মেরুন রঙের ল্যাহেঙ্গা পড়েছে সাথে ভারি গহনা সাজ৷ আর প্রিয়া গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে৷ প্রিয়া দুধ সাদা না হলেও প্রচন্ড মায়া ভরা মুখ প্রিয়ার ৷ গোলাপি রঙের লেহেঙ্গা পড়নে ভিষণ সুন্দর লাগছে প্রিয়াকে, সাফা ঐশী স্মিতা তিন জনই প্রাণো আর প্রিয়ার দিকে হ্যাঁ করে তাকিয়ে আছে৷

” ওহ মাই গড দোস্ত তোদের দুবোন কে পরীর মতো সুন্দর লাগছে৷ কেউ কারোর থেকে কম লাগছে না৷”(ঐশী)

” ঠিক বলেছিস ঐশী৷ প্রাণোর দিক থেকে যেমন চোখ সরানো যাচ্ছে না ঠিক প্রিয়ার উপর থেকেও চোখ সরানো যাচ্ছে না৷ স্মিতা একটা কাজ কর এম্বুলেন্সে ফোন কর কারণ আজ স্মরণ দুলাভাই আর সাজিত দুজনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে তাদের বউ কে দেখে…”

” সাফা আপু তুমি কিন্তু একটু বেশি বেশি বলছো৷”(প্রিয়া)

প্রিয়ার কথা শুনে প্রাণো প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে, ” ওরা কেউ একবর্ণ মিথ্যা বলে নি আজ আমার প্রিয়ু কে সত্যি একটা ছোট্ট পরীর মতো লাগছে৷ দোয়া করি আমার বোনটার জীবনে আজ থেকে আনন্দের জোয়ার আসতে লাগুক৷ যতো দুঃখ যতো কষ্ট সব যেন আনন্দের জোয়ারে ভেষে যায়৷ চোখে দুঃখের কান্না নয় সুখের কান্না হোক৷ ”

” আপু” প্রিয়া প্রাণোকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়৷

” এই তোরা কান্না কাটির পর্ব এখন শুরু করিস না প্লিজ ৷ তাহলে মেকয়াপ যে নষ্ট হয়ে যাবে ৷ তখন কিন্তু পার্টির সবাই ভুত ভেবে পালিয়ে যাবে৷”(সাফা)

সাফা কথা শুনে প্রাণো প্রিয়া দুজনে হেসে ফেলে…….

সিঁড়ি দিয়ে প্রাণো আর প্রিয়া নামতে স্পট লাইটের আলো ওদের উপর ফোকাস করা হয়৷ সাজিত স্মরণ সাথে প্রত্যেকটা গেস্ট তাকিয়ে আছে দুবোনের দিকে, দুজনকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে৷ সাজিত আজ প্রথম বার প্রিয়ার উপর মুগ্ধনয়নে তাকিয়ে আছে৷ গোলাপি লেহেঙ্গায় পরীর চেয়ে কোন অংশে কম লাগছে না৷ হ্যাঁ করে তাকিয়ে প্রিয়াকে দেখে যাচ্ছে সাজিত৷ এদিকে স্মরণের যেন হার্টবিট মিস হয়ে গেল প্রাণোকে দেখে মেরুন রঙের লেহেঙ্গা পুরো অঙ্গে গহনা জড়ানো৷ তার চেয়ে বড় কথা আজ প্রাণোর নীল আখিদ্বয় থেকে চোখ সরছে না কারোর ,

প্রাণো স্মরণ প্রিয়া সাজিত কে স্টেজে বসানো হলে একে একে সবাই এসে আলাপ করছে ৷ প্রাণো আড়চোখে স্মরণের দিকে তাকিয়ে দেখছে ৷ পুরো ব্লাক হয়ে আছে স্মরণ ব্লাক কোট প্যান্ট শার্ট , প্রাণো স্মরণের মুখের দিকে তাকাতে খেয়াল করে স্মরণ আজ ক্লিন সেভ করেছে যেটা প্রাণো মটেও পছন্দ করে না৷ তবুও আজ স্মরণকে পুরো রাজপুত্রের মতো লাগছে৷

সাজিত অনেকক্ষণ ধরে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷ এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে প্রিয়া এক প্রকার বিরক্ত হয়ে সাজিতের হাতে চিমটি কেটে বলে, ” এভাবে চোখ দিয়ে আমাকে গিলছো কেন ?”

” তাহলে কি মুখ দিয়ে গিলবো? সমস্যা নেই সেটা না হয় রা..” বাকিটা বলার আগে প্রিয়া সাজিতের মুখ চেপে ধরে বলে, ” একটাও বাজে কথা উচ্চারণ করলে বাসর করার সাধ জীবনের মতো ঘুচিয়ে দিবো৷ ”

” এই না না আমি চুপ করে আছি সি” ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে দেখালো সাজিত৷

” উফফ , তুমি এখানে বাজে না বকে দেখো তো আম্মু আব্বু দাভাই এখনো আসেনি কেন?”

” ওকে জানেমন আমি এখুনি খবর নিয়ে আসছি৷”

রিসেপশনে সাদমান আর নিশিতা বেগমকে দেখে প্রাণোর মন খারাপ হয়ে যায় তা দেখে স্মরণ বলে ওঠে , ” সুইটহার্ট মন খারাপ করো না ৷ শশুর মশাই আর ড্যাড একটু আগে বাইরে গেল কোন আর্জেন্ট কাজে আমাকে মেসেজ করে জানিয়ে দিয়েছে৷”

” তাই বলে আব্বু আমার সাথে একবার দেখা করলো না৷ এতো রাগ এতো অভিমান?” কথা টা বলতে বলতে চোখে পানি জমলো প্রাণোর, স্মরণ প্রাণোর চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলল,” প্রাণ ডোন্ট ক্রাই ইউ নো না আমি তোমার চোখের পানি সহ্য করতে পারি না৷ এই পানি অতি মূল্যবান কথায় কথায় ঝড়াতে নেই প্রাণ এন্ড ট্রাস্ট মি শশুর মশাই আসবে আর তোমার সাথে দেখাও করবে৷ ওয়েট আমি তোমার জন্য পানি নিয়ে আসছি৷”

স্মরণ স্টেজ থেকে নামতেই প্রাণোর ফোনটা ভাইব্রেট হতে লাগলো ৷ প্রাণো ফোনের স্কিনে RV নামটা দেখে একটু আড়ালে গিয়ে কল রিসিভ করে …

” হ্যালো প্রাণো ”

“হ্যাঁ, RV বলো তুমি এখন ফোন করলে এ্যাভরি থিং ইজ অল রাইট ?”

” না প্রাণো কিচ্ছু ঠিক নেই৷ কণা কে কিছুক্ষণ আগে একটা গাড়ি এসে তুলে নিয়ে গেছে৷ আমি কিছু করার আগেই গাড়িটা মিনিটে ভ্যানিস হয়ে গেছে ৷ আ,, আমি পারলাম না কণা প্রটেক্ট করতে..”

” RV , RV ডোন্ট বি প্যানিক৷ আমি আসছি ৷”

” মা,,মানে! আজ তোমার রিসেপশন প্রাণো?”

” গো টু হেল , সব কিছুর আগে আমার টিম মেম্বার RV তারপর অন্য কিছু , তুমি কণার ফোন নাম্বার ট্রেস করার চেষ্টা করো ফাস্ট৷”

“ও ওকে..”

প্রাণো কল ডিসকানেক্ট করে এদিক ওদিক তাকিয়ে সাফা ঐশী স্মিতা কে খোজার চেষ্টা করলো৷ তারা তাদের বয়ফ্রেন্ডের সাথে গল্প করতে মসগুল এখন উপায় শুধু প্রিয়া……..

________

” মেয়েটা কোথায়?” (JM)

” বস ওই রুমে আটকে রেখেছি৷ বস মেয়েটা তো মুখ খুলছে না৷”

” মুখ তো খুলতে হবেই ওকে নাহলে যে আমার হাতে মরবে ৷ রানা ”

” ইয়েস বস”

” সব কিছু রেডি তো?”

“ইয়েস বস সব কিছু রেডি আছে আপনি শুধু শুরু করুন৷”

” গুড ” JM দামী সিগারেট এর ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে রুমে এসে প্রবেশ করতে কণার চোখ দরজার দিকে পড়তেই কণা শক্টড…….
.
.
.

#চলবে………..#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৬
.
.
🦋
” সব কিছু রেডি তো?”

“ইয়েস বস সব কিছু রেডি আছে আপনি শুধু শুরু করুন৷”

” গুড ” JM দামী সিগারেট এর ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে রুমে এসে প্রবেশ করতে কণার চোখ দরজার দিকে পড়তেই কণা শক্টড ৷ এতোটাই কণা শক্টড হয়ে গেল যে গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হচ্ছে না৷

JM কণার সামনা সামনি চেয়ারে বসে কণার দিকে তীক্ষ্ণ চাউনিতে তাকিয়ে বললো,” মিস কণা চুপ করে আর কতোক্ষণ থাকবে? মুখ তো খুলতেই হবে ৷ ”

” য,,যদি মুখ না খুলি কি করবেন মিস্টার JM?” কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো কণা৷

” বাহ! মুখ দিয়ে দেখছি কথা বের হচ্ছে ৷ বেশ ভালো তো কিন্তু এখন যে তোমাকে তোমার দলের সম্পর্কে মুখ খুলতেই হবে নাহলে!”

” নাহলে কি ?”

কণার কথা শুনে বাঁকা হাসলো JM . JM হঠাৎ মুখে গম্ভীরতা এনে রানা বলে চিৎকার করে ডাকে সাথে সাথে রানা হাতে নানা রকম অস্ত্র নিয়ে হাজির হয়৷

” বস সব রেডি আছে আপনি বললে কাজ শুরু করতে পারি৷”

” অবশ্যই কি মিস কণা তাই তো?”

কণা কোন কথা বলছে না ৷ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে JM কে দেখছে৷ মানুষ যে কতো রকমের মুখোশ পড়ে থাকতে পারে তাই ভেবে যাচ্ছে কণা৷ হঠাৎ আঙ্গুলে ব্যাথা অনুভব হতে কণা হাতের দিকে তাকিয়ে দেখে JM কণার আঙ্গুলে কেচি দিয়ে চাপ দিচ্ছে ৷ কণা দাঁতে দাঁত চেপে ব্যাথাটা হজম করার চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু কোন ভাবে আর সম্ভব হচ্ছে না বিধায় কণা শব্দ করে ফেললো৷ কণা চোখে মুখে কষ্টের ছাপ ফুটে উঠতে দেখে JM এর ঠোঁটের কোনে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো ৷

” টিমের সম্পর্কে সব ইনফরমেশন দিয়ে দেও কণা তাহলে তোমাকে আমি ছেড়ে দিবো নাহলে …” কথাটা বলতে বলতে আঙ্গুলে আরো জোরে চাপ দিলো JM…

” আমাকে মেরে পুতে ফেললেও আমার মুখ থেকে একটা ইনফরমেশন বের করতে পারবি না তোরা৷ কারণ আমি আমার দলের সাথে কখনো বেইমানি করবো না৷ ”

” ওয়াও আই লাইক ইট৷ দলের প্রতি এই লয়ারিটি টাই আমার ভিষণ পছন্দ মিস কণা তবে এটা আমার দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ৷ অন্যদের ক্ষেত্রে আমার একটু সমস্যা আছে ৷”

” রাইট কিন্তু সমস্যাটা তোদের আমার নয় ৷ তাই আমার সাথে কথা বলে শুধু শুধু সময় নষ্ট করছিস তোরা , আমার পেট থেকে একটা শব্দ বের করতে পারবি না৷”

কণার কথা শুনে JM প্রচন্ড রেগে গেল৷ হাত থেকে কেচি টা ফেলে দিয়ে কণাকে কয়েকটা থাপ্পড় মেরে বসে৷ কণার ঠোঁটের কোন দিয়ে রক্ত পড়ছে ৷ গালে হাতের ছাপ পড়ে গেছে৷

” এই দুই আঙ্গুলের মেয়ে এভাবে মানবে না বস ৷ একে আমার হাতে তুলে দিন দেখুন কি করে পেট থেকে কথা বের করতে হয়৷ ”

” কি করবি তুই?”

” বেশি কিছু না ওর ওই সুন্দর শরীরটা একটু ছুঁয়ে দেখবো৷”

রানার কথা শুনে JM হেসে দিয়ে বলে উঠলো ,” তাহলে তো একে ছোঁয়ার প্রথম রাইট আমার , রানা মেয়েটাকে বেডে ফেলে হাত দুটো বেধে ফেল৷ ”

” ওকে বস”

কণা JM আর তার ডান হাত রানার কথা শুনে কণার পুরো শরীর গুলিয়ে উঠলো৷ এই নোংরা লোক গুলো যে ওকে ছুঁবে এটা ভাবতেই কণা শরীরে যেন রাগ টা হির হির করে বেড়ে গেল৷ রানা কণার হাতের বাধন খুলতেই কণা পা দিয়ে রানার অন্ডকোষে লাথি মেরে পালাতে নিলে পেছন থেকে JM কণার ঘাড়ে একটা ইনজেকশন পুশ করে দেয় সাথে সাথে কণা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে…

___________

” আপু কি বলছিস এই সব কণা আপু কিডন্যাপ হয়েছে? কিন্তু এটা কি করে সম্ভব হলো? কণা আপুকে কি করে চিনলো তারা?”

” জানি না প্রিয়া তবে যেখানে কণাকে লুকিয়ে রাখুক না কেন আমি তো কণাকে খুজে বের করবোই কিন্তু এখন তোর সাহায্য চাই প্রিয়া৷”

” আপু আমাকে কি করতে হবে শুধু বলো ৷ বাকিটা আমি করে নিবো৷”

” আমাকে এখন বের হতে হবে৷ আমি বের হবার পর তুই এখানকার পরিস্থিতি সামলাবি ৷”

” ওকে আপু৷ কিন্তু এই পোশাকে তো তুই বের হতে পারবি না৷ চল তোকে চেন্জ করে দিতে হেল্প করছি৷”

” না আমাকে হেল্প করতে হবে না তুই স্মরণ আর বাকিদের সামলে নিস ৷”

” ঠিক আছে আপু ”

প্রিয়া বাইরে গিয়ে স্মরণ কে বলে প্রাণোর প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে তাই মেডিসিন খেয়ে রেস্ট নিচ্ছে তাকে যেন কেউ বিরক্ত না করে৷ স্মরণ প্রাণোর মাথা ব্যাথা করছে এটা জেনে রুমে আসতে নিলে প্রিয়া স্মরণকে আটকে দেয় ৷

” ভাইয়া আপু আমাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে কেউ যেন তাকে ডিসটার্ব না করে ৷ এক ঘন্টা রেস্ট নিয়ে সে নিজে চলে আসবে৷”

” কিন্তু আমি একবার দেখি আসি প্রিয়া৷”

” নো মানে না ৷ একদম না ৷ আপু আমাকে এটাও বলেছে যাতে আপনাকেও রুমে যেতে না দি ৷ আপনি যদি রুমে যান তাহলে রেস্ট নেওয়া তো হবে না বরং আপনার দুষ্টুমি শুরু হয়ে যাবে৷”

” উফফ এই প্রাণটাও না ৷ শালীর সামনে প্রেস্টিজের চটপটি বানিয়ে দিলো ৷ ওকে ওকে আমি রুমে যাচ্ছি না কিন্তু কোন কিছুর যদি প্রয়োজন হয় আমাকে জানাবে ওকে?”

” ওকে এখন আপনি যান প্লিজ৷ আর আমি রুম বাইরে থেকে তালা মেরে যাচ্ছি৷”

“আবার তালা কেন?”

” আপনাকে বিশ্বাস নেই বলে৷ এখন নিচে যান আমি রুম তালা দিয়ে আসছি৷”

প্রিয়ার এমন ওভার প্রটেক্টটিভ কাজ টা স্মরণের একদম পছন্দ হয়নি৷ তবুও মুখের উপর কিছু বললো না৷ প্রিয়া রুম লক করে নিচে চলে যায়৷ এদিকে প্রাণো চেন্জ করে ব্যালকনিতে গিয়ে পানির পাইপ বেয়ে নিচে নেমে যায়৷ বাইরে কেউ না থাকায় প্রাণোকে কেউ দেখতে পাই নি৷ প্রাণো খুব সাবধানে দেয়াল টোপকে রাস্তায় এসে সিএনজি করে বেড়িয়ে যায়৷

” Rv কণার নাম্বার ট্রেস করতে পেরেছো?”(সিমি)

” হ্যাঁ কিন্তু কোন লাভ হয়নি ৷ কণার লোকেশন তো হাতিরঝিল পর্যন্ত দেখাচ্ছে ৷ কিন্তু ওখানে গিয়ে আমি কিছুই পাইনি শুধু কণার ব্যাগটা ছাড়া”

” প্রাণো কোথায়? আমার মনে হয় প্রাণোই পারবে কণাকে খুজে বের করতে৷”

” কিন্তু প্রাণো এখনো আসছে না কেন?”

RV কথা শেষ হতেই ঝড়ের গতিতে প্রাণো এসে হাজির হয়৷

” RV কণাকে ট্রেস করা গেল?”

” কিডন্যাপার ভিষণ চালাক প্রাণো৷ বুঝতে পেরেছিলো কণার ফোন দিয়ে ট্রেস করতে পারি তাই ব্যাগটা ফেলে দিয়েছে৷ ”

” ওহ বাট নো টেনশন আমি এখুনি জানতে পেরে যাবো কণাকে কোথায় রেখেছে ওরা৷”

” কিন্তু কি করে প্রাণো?”

” কি করে তা দেখতেই পাবে সিমি আপু৷ RV ওঠো আমি দেখছি৷ ”

RV কে সরিয়ে ল্যাপটপ নিয়ে প্রাণো দুমিনিট কিছু করার পর ল্যাপটপ অফ করে বলে , ” লোকেশণ পেয়ে গেছি ৷ দ্রুত আর্মস নিয়ে রেডি হও ৷ আর আপু তুমি এক্সট্রা রিভালবার নিজের কাছে রাখবে ৷”

” ঠিক আছে কিন্তু তুমি কি করে কণাকে ট্রেস করলে প্রাণো?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো সিমি৷

সিমির কথা শুনে রহস্যময় হাসি দিয়ে প্রাণো বলতে লাগলো,” আমাদের হাতে সময় খুব কম সিমি আপু ৷ এই নিয়ে আমরা পরেও কথা বলতে পারি রাইট?”

” হুম আমি রেডি হয়ে আসছি৷”

RV সিমি বেড়িয়ে যেতেই প্রাণো তার অপারেশনের লুকে ফিরে আসে যাতে কেউ চিনতে না পারে৷

প্রাণো সিমি RV কে নিয়ে বেড়িয়ে যায়৷ RV আরো লোক নিতে চাইলে প্রাণো বারণ করে দেয়৷ কারণ কণা কে উদ্ধার করা প্রাণোর উদ্দেশ্য থাকলেও প্রাণো খুব ভালো করে জানে আজ এক্সট্রা লোক সাথে নিলে তাদের কে বাঁচানো খুব টাফ হয়ে যেতে পারে কারণ যে সে কণাকে কিডন্যাপ করে নি এটা প্রাণোর ধারণা ৷ তাই দুজনকে নিয়ে বের হয় প্রাণো৷

প্রাণো গাড়ি ড্রাইভ করে একটা জঙ্গলের ভিতর ঢুকে যায় ৷ খুব সাবধানে গাড়ি চালিয়ে একটু আড়ালে গাড়ি থামায় প্রাণো৷

” RV সিমি আপু খুব সাবধান ৷ কিডন্যাপারের লোক কিন্তু পুরো জঙ্গলে ছড়িয়ে আছে৷ ”

“প্রাণো এই জঙ্গলে শুধু জঙ্গিরা সাধারণ আশ্রয় নেয়৷ কারণ জঙ্গলটা বেশ বড় আর এখানে একটা সুবিশাল বাড়ি ও আছে যেটা জঙ্গি দের সাথে মিশে এখান কার নাম করা গুন্ডা বদমাস বানিয়েছে নিজেদের বিশ্রাম আর লুকিয়ে থাকার জন্য ৷ তার মানে কোন জঙ্গি কণাকে!”

” নো Rv বিডিতে গত ছয় মাসে কোন জঙ্গি ঢুকতে পারেনি৷ আর এখানে কোন জঙ্গি নেই ৷ এখন কোন কথা না বলে আমার পিছু পিছু এসো ৷ ”

_______

বেডের উপর উর্ধ উলঙ্গ হয়ে সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে আছে কণা৷ এখনো কণার জ্ঞান ফিরে নেই কিন্তু তার আগেই জীবনে মহা মূল্যবান সম্পদটাই হাড়িয়ে ফেলেছে কণা৷ কণাকে বেডে ফেলে একটু দুরে JM আর রানা বিদেশি মদ গিলছে৷

” বস মেয়েটা তো এখনো সেন্সলেস কোন ইনফরমেশন বের করতে পারলাম না৷”

” মেয়েটার জ্ঞান ফেরানোর ব্যাবস্থা কর রানা৷”

” ওকে বস”

রানা মদের বোতলটা সাথে নিয়ে কণার কাছে গিয়ে কণার মুখ ঢেলে দেয়৷ মুখে তরল জাতীয় কিছু পড়তে কণার ধিরে ধিরে জ্ঞান ফিরে আসে৷ চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রানা তার দিকে ললুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ কণা ওঠার চেষ্টা করতে খেয়াল করে তার শরীরে কাপড় নেই ৷ শরীর এবং পেটে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলো কণা ৷ কণা বুঝতে পারলো তার সব কিছু শেষ৷ প্রচন্ড কান্না পাচ্ছে কণার , কিন্তু এখন কেঁদে যে লাভ নেই ৷ কণা তার জামা কাপড় ফ্লোর থেকে তুলে পড়ে নেয় দ্রুত ৷ তখনি রানা কণার কোমরে হাত দিয়ে বলে উঠলো , ” ট্রাস্ট মি কণা জীবনে প্রথমবার কোন মেয়ের শরীরের সাধ নিয়ে এতো মজা পেলাম ৷ তোমাকে ড্রেস ছাড়া যা দেখতে লাগে না মাইরি বলছি বস পযর্ন্ত ফিদা হয়ে গেছে৷ ”

কণা একদলা থু রানা মুখে ছুড়ে মেরে বলে, ” তোদের মতো জানোয়ারদের জন্য সে একদম ঠিক আছে ৷ তোরা কি ভেবে ছিস আমার সতীত্ব কেড়ে নিয়ে আমাকে দূর্বল করে টিমের সব ইনফরমেশন জেনে নিবি? হি হি হি পারবি না পারবি না তার আগেই সে এসে তোদের কে শেষ করে দিয়ে আমাকে এই নরকপুড়ি থেকে নিয়ে যাবে৷”

মুখে থু থু মারায় রানা প্রচন্ড রেগে কণার গালে কয়েকটা থাপ্পর মেরে গলা টিপে ধরে৷ JM মদের নেশায় বুদ হয়ে আছে বিধায় রানাকে বারণও করতে পারছে না৷ তখনি হঠাৎ বাইরে গুলির আওয়াজ শুনতে পায় রানা JM কণা …

গুলির আওয়াজে JM এর মদের নেশা যেন হাওয়ার গতিতে উড়ে গেল৷ রানাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কণা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলে উঠলো , ” তোদের জম এসে গেছে জানোয়ার ৷ এবার মরার জন্য প্রস্তত হ তোরা ৷”

JM এবার কোমর থেকে রিভলবার বের করে কণার উদ্দেশ্য বলে উঠলো,” এই JM কে শেষ করার মতো ক্ষমতা এখনো পৃথিবীতে কারোর জন্ম নেয় নি ৷ আজ যে আসুক না কেন আমার হাতেই তাকে মরতে হবে৷ রানা এটার হাত বেধে ফেলে রাখ আর তাকে খবর দে বল এখানে আর লোক পাঠাতে ৷ ”

” ওকে বস আমি এখুনি ওনাকে ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি৷”

JM বের হতে বের হতে গুলি আওয়াজ যেন আরো কাছাকাছি আসতে লাগলো৷ JM রুম থেকে বের হতে নিবে তখনি একটা গুলি এসে JM এর হাতে লাগে ৷ JM কিছু বুঝে ওঠার আগেই চারিদিক কালো ধোয়ায় ছেয়ে যায়৷
.
.
.
#চলবে…………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here