‘চরিত্রহীনা২’ পর্ব-১০ (শেষ পর্ব)
.
– Mahian Khan
.
তিন্নির কন্ঠে, ‘জাভেদ’ শুনে জাভেদের স্থির দেহ বেশ কৌতূহলী হয়ে পিছনে ফিরে তাকায়। তিন্নির অশ্রুসিক্ত চোখদুটো একদম স্পষ্ট। জাভেদ অবাক হয়েই তিন্নিকে জিজ্ঞেস করে,
.
– কি ব্যাপার, কাঁদছো কেন?
.
তবুও তিন্নি শুধু কেঁদে যাচ্ছে, জাভেদের প্রশ্নের কোনো উত্তর সে দিল না। বাধ্য হয়ে জাভেদকে আবার সেই একই প্রশ্ন করতে হল,
.
– আরে, বাবা! কাঁদছো কেন?
.
– এমনি, আপনার না গেলে হবে না?
.
– কেনো? অতীত ভুলে থাকাটা তো ভালো হবে,নাকি ?
.
– ভালো হবে হয়ত, কিন্তু এত বছর পর দেখা করলেন শুধু এক দিনের জন্য?
.
– যত বেশী দিন থাকতাম ততবেশী অতীত আমাদের গ্রাস করতে থাকত। হয়ত ততবেশী আমাদের অতীতে ফিরে যেতে ইচ্ছে হত। হয়ত বিদায়টা আরো কঠিন হয়ে যেত! তাই সব ব্যাথা একবারে শুষে নিয়ে একে অপরকে বিদায় দিয়ে দেওয়াটাই ভালো। দেখো, যদি এক সপ্তাহ পর যাই তাও আমাদের বিচ্ছিন্ন হতে হবে কিন্তু এক সপ্তাহ পর যদি যাই তাহলে, একগাদা স্মৃতি মস্তিষ্কে জমা হত আর বিদায়টা তখন আরো কষ্টকর হত। তাই যতদ্রুত সম্ভব একবারে সবকিছু সহ্য করাটাই উত্তম।
.
– আপনি কি থেকে যেতে পারেন না?
.
– মানে?
.
– মানে, আমার সব দু:খ, কষ্ট, পাগলামি তো শুধু একজন মানুষ সহ্য করতে পারে আর তা তো আপনি। এত বছর পর দেখা হয়ে, আপনি একদিন থেকেই চলে যাবেন? তারপর আমার পাগলামি কে সহ্য করবে? আমার রাগ, অভিমান কে সহ্য করবে?
.
– এতগুলো বছর কি কেউ করত না?
.
– না, কেউ করত না আর আজব্দি আপনি বাদে কেউ করল না।
.
– কেউ সহ্য করত না বলে কি জীবন থেমে গিয়েছিল? তোমার সাফল্যতা থেমে গিয়েছিল?
.
– জীবন কখনো থামে না। মানুষের বাধ্য হয়েই জীবনকে চালাতে হয় কিন্তু তাই বলে কি মনের ব্যাথাগুলোকে সে অনুভব করতে পারে না? অবশ্যই পারে কেননা মানুষ এগুলো নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখে। কিন্তু এই লুকিয়ে রাখা ব্যাথাটা যে কি তীব্র সেটা শুধু মানুষ নিজে জানে।
.
– এই ৩ বছর তো তুমি নিজেই যোগাযোগ করনি। এত কষ্ট করে তোমার সন্ধান পেলাম। কত যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি তবে, এখন এরকম করছো কেন? কয়েকদিন যাক, সব ঠিক হয়ে যাবে, ব্যস্ত জীবনে এই সব কিছুই মস্তিষ্কে জং ধরে থাকা কিছু ইতিহাসে পরিনত হবে।
.
– সত্যি বলতে, এই ৩ বছর কোনো যোগাযোগ করিনি কারণ ভেবেছিলাম, আপনি হয়ত অন্যকারো হয়ে আছেন। হয়ত, আপনার সাথে আবার যোগাযোগ করলে আপনার জীবনে আবার ঝামেলা শুরু হবে। আপনাকে প্রচুর জ্বালিয়েছি তাই আবার আপনাকে জ্বালাতে চাইনি কিন্তু এখন চারপাশে সবকিছু অসহ্য। আপনার সাথে আবার সেই আগের মত, প্রায় বেস্ট ফ্রেন্ডের মত থাকা যাবে না? আপনি অন্য কাউকে নিয়ে থাকুন, জীবনযাপন করুন নিজের মত কিন্তু আমি কি আমার বেস্টফ্রেন্ডকে আবার ফিরে পেতে পারি না?
.
– পারো কিন্তু আমার তো জীবন আছে, চাকুরী আছে, কাজ আছে হয়ত সম্ভব হত যদি পরিস্থিতি আগের মত হত। কিন্তু এখন সব পরিবর্তিত। তোমাকে ছাড়া জীবনযাপন করতে আমারও কষ্ট হয় কিন্তু সহ্য করতে হয়। এটাই বাস্তবতা।
.
– কিন্তু আমার তো সবকিছু সহ্যের বাহিরে। আচ্ছা আপনি চিরকালের জন্য এভাবে ছেড়ে না গিয়ে বরং বন্ধুর মত আবার নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক গড়তে পারি না?
.
– পারি, অবশ্যই পারি। তোমার জীবনে প্রতিটি বিপদে তোমার পাশে আছি, ছিলাম, থাকব। আমি তো তোমার জীবন ছেড়ে যেতে চেয়েছি কেননা, তুমি বললে, তুমি অতীত থেকে মুক্তি পেতে চাও।তুমি আমার সাথে যেকোনো সময় যোগাযোগ করতে চাইলে করতে পারো, দরকার হলে নাম্বার লিখে নাও, দরকার হলে আবার তোমাকে প্রতিদিন ম্যাসেজ দিব। যোগাযোগ করা এখন কি কোনো কঠিন কাজ?
.
– আমি সেটা বলতে চাইনি। আমি বলতে চেয়েছি, আমি যখন কাঁদব তখন আপনি কি আমায় সান্তনা দিবেন? আমার চোখ মুছে দিবেন? আমি যখন রাগ হব তখন আমার মাথাকে শান্ত করার জন্য কফি বানিয়ে খাওয়াবেন? আমি অভিমান করে যখন রুম আটকে বসে থাকব , আপনি কি আমার অভিমান ভাঙার জন্য পাশের রুমে সারারাত বসে থাকবেন? সেই আগের মত?
.
– এগুলো তো প্রায় অসম্ভব। এখন তো আর আগের মত সময় নেই। সবকিছু চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে। আমার পক্ষে সম্ভব হত যদি পরিস্থিতি আগের মত থাকত। মানুষের অনেক কিছু ইচ্ছে হয় কিন্তু সবসময় সবকিছু সম্ভব না। সময় স্রোতের সাথে চলতে থাকে আর আমাদের জীবনকে পাল্টাতে থাকে। সেই ৭ বছর আগের মত পরিস্থিতি এখন আর নেই। তখন তুমি একটা কিশোরী ছিলে, আমি তখন যুবক। তখন চাকুরী ছিল না, টিউশনি করতাম, পড়ালেখা ফাঁকি দিতাম, সময়ের কোনো অভাব হত না। এখন প্রায় ৩০ বছর হয়ে গিয়েছে বয়স। এখন আর আগের মত টিউশনি করি না, আগের মত ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন জীবনে বেঁচে থাকতে ২ পয়সা ইনকাম করতে জীবন বের হয়ে যায়। এভাবে ফাঁকা সময় আর নেই, সবকিছু আজকে পরিবর্তিত। তুমি নিজেকে দিয়েই দেখো, তোমার জীবনে কি এখন সেরকম সময় আছে? তুমি কি জানো, আমিও মাঝে মাঝে সেই পুরানো দিনগুলোতে ফিরে যেতে চাই যখন, তুমি ছিলে এক রাগী, চঞ্চল কিশোরী আর তোমার পাশে বসে আড্ডা দিয়ে কাটাতাম আমার যৌবন।
.
– তাহলে অন্তত আর কয়েকদিন থাকুন।
.
– আচ্ছা থাকব, কিন্তু তুমি হঠাৎ এমন কেনো করছো? এভাবে কাঁদছো কেনো?
.
– সবকিছু খুউব অসহ্য লাগছে। আমার আর কোনোকিছু ভালো লাগে না। হঠাৎ সবকিছু জঘন্য হয়ে গেলো। জাভেদ আমি কি সত্যি চরিত্রহীনা না? যদি না হই তবে আমার ভাগ্য এত খারাপ কেনো?
.
– না, তুমি কখনো চরিত্রহীনা না আর তোমার ভাগ্য খারাপ হবে কেন? সত্যি করে বল তো তোমার কি হয়েছে?
.
– জানি না। আমি কিচ্ছু জানি না। কিন্তু প্লিজ আপনি এখন যাবেন না।
.
– আচ্ছা যাব না, কিন্তু ঠান্ডা হও, কান্না বন্ধ কর।
.
তিন্নি চোখের পানিগুলো হালকা মুছে জাভেদকে বলে,
.
– ভিতরে বসুন। আপনাকে তো বাহিরে দাড় করে রেখেছি, খেয়াল ছিল না।
.
– না, এটা কোনো বিষয় না।
.
জাবেদ চুপচাপ বাসার ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে পড়ে। তিন্নিকে দেখেই মনেহচ্ছে, সে ভীষন অস্থির। তিন্নির অস্থিরতা জাভেদকে বেশ কৌতূহলী করে তোলে।
.
– আচ্ছা,তিন্নি প্লিজ সত্যি বল, তোমার কি হয়েছে?
.
– কৈ কিছু না এমনি খারাপ লাগছে, নাস্তা করেছেন?
.
– নাস্তা পরে করা যাবে কিন্তু তুমি মিথ্যা বলছ কেন? রনিকে নিয়ে কিছু একটা ভাবছো, তাই না? এতক্ষণ বিষয়টা জানতে চাইনি কিন্তু এখন কৌতূহলী হচ্ছি। প্লিজ বল কি হয়েছে।
.
– কিছু না, এমনি এসেছিল।
.
জাভেদ উঠে দাড়িয়ে তিন্নির কাছে গিয়ে দাড়ায়।
.
– কি হয়েছে বলবে না আমায়?
.
– না, বলব না।
.
– তোমার মাথা জুড়ে তো এখন রনি ঘুরপাক খাচ্ছে। ভুল বলেছি?
.
– হ্যা, ভুল। আপনি যা ভাবছেন তা মোটেও না।
.
– আর কত মিথ্যা বলবে? জানো মানুষ যাকে ভালোবাসে তার সাথে রাগ করে থাকা অনেক কষ্টকর। তার সাথে অভিমান করা যায় কিন্তু যখন তার প্রিয় মানুষটি অভিমান ভাঙাতে এসে ব্যর্থ হয় তখন আঘাত শুধু প্রিয় মানুষটি পায় না বরং অভিমানিনী এবং তার প্রেমিক উভয়ই সমানভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
.
– মোটেও না, আপনি আমাকে অযথা বিরক্ত করছেন।
.
– বিরক্ত করব কেন? সত্যটা বললাম। জানো তুমি আমাকে ভালোবাসার মানে বুঝিয়েছো। আমি দেখেছি, রনির প্রতি তোমার ভালোবাসা আসলে কোন পর্যায়। কেনো অভিনয় কর? এত বছর পর তোমার প্রেমিককে পেয়েছো তবে কেনো চলে যাও না তার কাছে?
.
– না, ও কোনো প্রেমিক না। যে আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে সে কখনো আমার প্রেমিক না।
.
– ভুল তো মানুষ করে, নাকি? আমি দেখেছি ছেলেটা কতটা অনুতপ্ত ছিল। যাকে মানুষ ভালোবাসে তাকেই মানুষ সন্দেহ করে কেননা নিজের প্রিয় জিনিসকে হারিয়ে ফেলানোর ভয় সবার আছে।
.
– আমি ঘৃনা করি ওকে, চরম ঘৃনা! আমার মেয়ে ওকে কখনো বাবা ডাকবে না।
.
– জানো, বাবা পার্ফেক্ট হয়না কখনো মা’র মত। বাবারা সাধারণত অপরাধী হয় কিন্তু জানো বাবারা আবার কাঁদতেও পারে! নিজের সন্তানকে হয়ত সে ১০ মাস পেটে রাখে না তবে সেই সন্তানটা কিন্তু তার শরীরের অংশ। যখন সে সেই সন্তানের কোনো ক্ষতি করে অথবা সেই সন্তানকে আঘাত করে তখন সে তার নিজের অঙ্গে আঘাত কররে। সেও চরম আঘাত প্রাপ্ত হয় কিন্তু তারা মায়েদের মত সকলের সামনে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে পারে না কেননা সে পুরুষ! পুরুষের সামাজিক বৈশিষ্ট্য হল, সে কঠোর তাই নিজের পুরুষত্ব রক্ষা করতেই সে চোখের পানিগুলোকে শক্ত বরফ করে রাখে। কিন্তু নির্জন পরিবেশে যখন কেউ থাকে না, যখন কেউ তাকে দেখে না তখন সে চিৎকার দিয়ে কাঁদে! ফিরে পেতে চায় নিজের সন্তানকে। ফিরে পেতে চায় তার অমূল্য সেই সম্পদকে যে সন্তানকে সে কোনো একসময় কাঁধে নিয়ে ঘুরেছে, পিঠে বসিয়ে ঘোড়া ঘোড়া খেলেছে। বাবারা মায়েদের মত কোমল হতে পারে না কিন্তু তাদের কঠোর চেহারার মাঝে নিজের জীবনের দু:খ, কষ্টকে বন্দি করে রাখে। রনি কি অস্বাভাবিক কষ্ট অনুভব করে জানো? ও তো এমন অভাগা যে, নিজের সন্তানকে আজ পর্যন্ত ছুঁতে পর্যন্ত পারেনি।
.
– আমার তো মনেহয় অধিকাংশ পিতারা হৃদয়হীন পশু হয়। আপনিও তো আপনার বাবার সাথে রাগ করেই একা একা থাকতেন।
.
– থাকতাম, আজও থাকি। কিন্তু আমি এটাও জানি, যেই বাবা দিনের পর দিন এক শার্ট পরে থাকত। ঈদে এক জোড়া নতুন জুতা পর্যন্ত কিনত। নিজে সাদাসিধে জীবনযাপন করে, আমার,আমার মা’র, আমার বোনের চাহিদা মিটিয়েছে। যেদিন সে আমায় ঘরে দেখেনি, যেদিন সে দেখল তার টিভি দেখার সঙ্গি হিশেবে আমি পাশে বসে নেই, সেদিন কি সে কাঁদেনি? অবশ্যই কেঁদেছিল। কিন্তু আমরা উভয়ই পুরুষ। নিজেদের কষ্টগুলো আমরা আমাদের কঠোরতার মাঝে বন্দি করে রাখি আর এভাবেই আমাদের অভিমান চলতে থাকবে। একদিন হয়ত বাবা থাকবে না সেদিন সব কঠোরতা ভেঙে যাবে আর চিৎকার দিয়ে কাঁদব অথবা একদিন আমি থাকব না সব কঠোরতা ভেঙে সেদিন বাবা চিৎকার দিয়ে কাঁদবে! যাক সেগুলো বাদ দেই, রনিকে একবার সুযোগ দিয়ে দেখো অন্তত।
.
– আমি, পারব না। প্লিজ আমাকে জ্বালাবেন না।
.
– দেখো কষ্ট তো তুমি রনির চেয়ে কোনো অংশে কম পাচ্ছো না। তাহলে কেনো নিজেকে কষ্ট দিচ্ছো?
.
– আপনি নাকি আমাকে ভালোবাসেন তবে আমার আর রনিকে নিয়ে আপনার এত চিন্তা কেনো?
.
– কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি বলেই তোমাকে কষ্ট দেখতে চাই না। তোমাকে সর্বোচ্চ শান্তিতে দেখতে পাওয়াটাই তো আমার সুখ। হয়ত অন্য কোনো পুরুষের সাথে তোমায় দেখলে হালকা কষ্ট লাগতে পারে, ঈর্ষান্বিত হতে পারি কিন্তু তোমার সুখে যদি সুখি না হতে পারি তবে আমি কেমন প্রেমিক বলো?
.
– জাভেদ আপনি আসলেই একদম অন্য পর্যায়ের মানুষ। আমি ভাবতাম, মানুষ মাত্র স্বার্থপর কিন্তু তারপর আপনাকে দেখলাম, আমার জীবনে দেখা সর্বাশ্রেষ্ঠ মানুষ আপনি! মানুষ যে বাস্তবে এমন হতে পারে তা আমার জানা ছিল না। কিন্তু রনিকে আমি কখনো মানতে পারব না, আমার জীবনে। ওকে আমি ভালোবাসি স্বীকার করলাম কিন্তু ওর প্রতি আমার একটা ঘৃনা আছে আর এই ঘৃনা আমাকে আজীবন ওর কাছে যেতে বাঁধা দিবে।
.
– জানি না, আদৌ এটা তোমার অভিনয় নাকি তবুও বলি, অযথা নিজেকে কষ্ট দিও না।
.
– না, মোটেও কষ্ট পাচ্ছি না। কি খাবেন সেটা বলেন?
.
– হুম! তুমি যা ভালো বোঝো। একটু পরাটা আর সেমাই থাকলে দাও। তোমার হাতের পরাটা খাই না, অনেক দিন হল।
.
– আচ্ছা তাহলে, চুপচাপ বসুন। কোনো কথা বলবেন না।
.
– ঠিক আছে। কিছু বলব না।
.
তিন্নি চলে যায় রান্নাঘরে। সোফায় হাত দুটো ছড়িয়ে জাভেদ বারান্দার দিকে তাকিয়ে থাকে। বাহিরে বেশ রোদ আজকে, আকাশ অনেকটা পরিষ্কার। জাভেদের চোখ যায় বারান্দায় বসে থাকা কাকটার দিকে।
.
– আহা! যদি হতে পারতাম কাউয়া তবে তো প্রেমে পড়তাম না, উড়ে বেড়াতাম আকাশে সারাদিন, কোনো অনুভূতি হত না। উড়ে যেতাম যেখানে ইচ্ছে হতে সেখানে, কোনো সুন্দরি আমায় বাধা দিতে পারত না!
.
(১৩)
.
রনি কোথায় গেল না গেল সেটা নিয়ে কারো চিন্তা নেই এই বাসায়। শুধু রনির চাচাতো ভাই ইরফান বাদে। রনি কখনো ওকে পাত্তা দেয় না তবুও ছোট ভাইয়ের প্রতি এক অদ্ভুত টানেই বারবার ইরফান,রনির কাছে যায়। আজ বাসায় এসে রনি বেশ হাসি খুশি ছিল। আজকে বহুদিন পর রনি তার মায়ের সাথেও অনেক কথা বলেছে। কি এমন হতে পারে সেটাই ইরফানের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। প্রশ্নের উত্তর রনি ছাড়া কেউ দিতে পারবে না। তাই রনির কাছ থেকে উত্তরের সন্ধানে ইরফান রনির রুমের উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করে। রনির রুমের কাছে গিয়ে দেখে দরজাটা হালকা খোলা। এই দৃশ্যের সাথে ইরফান সম্পুর্ন অপরিচিত। আজব্দি কখনো রনিকে রুম খোলা রাখতে সে দেখেনি। কৌতূহলী হয়েই দরজাটা খোলে। দরজাটা খুলে ইরফানের দুচোখ শীতল হয়ে জমাট বেধে গেল, দেহ ঠান্ডা হয়ে আসল, রনির ঝুলন্ত দেহটা দেখে। শীতল চোখ থেকে ঠান্ডা নোনাজল অনুমতি ছাড়াই বেরিয়ে এল। হেটে হেটে খাটের উপরে উঠে রনির দেহটা জড়িয়ে ধরে অদ্ভুত ভঙ্গিতে ইরফান কান্না শুরু করল। কাউকে চিৎকার দিয়ে ডাকার শক্তি ইরফানের মধ্যে নেই। কাঁদতে কাঁদতে দু হাটু গেড়ে ইরফান মাটিতে বসে পড়ে, খাটের উপর একটা কাগজের টুকরো পরে থাকা অবস্থায় দেখে। কাগজটা
দেখেই বুঝতে পারে এটা সুইসাইড নোট। কাঁদতে কাঁদতে তবে বেশ মনযোগ দিয়েই ইরফান সুইসাইড নোটটা পড়তে থাকে,
.
” প্রিয় তিন্নি, তোমায় আর আমি জ্বালাব না। কখনো না! মরে তো গিয়েছি আরো ৭ বছর আগেই, ছিল শুধু একটা কৃত্রিম দেহ। সন্ধান করছিলাম আমার জীবনকে কিন্তু তাকে খুঁজে পেয়েও, নিজের কৃত্রিম দেহের সাথে সংযুক্ত করতে পারলাম না। তাই ভাবলাম, এই কৃত্রিম দেহ রেখে কি করব? শুনেছি, জীবিত মানুষ আত্মহত্যা করলে নাকি নরকে যায় কিন্তু মৃত মানুষ আত্মহত্যা করলে কি আদৌ নরকে যায়? বোধহয় যায়। হয়ত কৃত্রিম দেহটা নষ্ট করতাম না কিন্তু করলাম কারণ আমি একজন চরম হিংসুটে। সবক্ষেত্রে হিংসুটে না কিন্তু তিন্নির ক্ষেত্রে হিংসুটে। তিন্নি অন্যকারো হবে এটা আমার সহ্যের বাহিরে, তিন্নিকে শুধু আমার মনে করতাম, ভাবতাম এই তিন্নিকে আমি কখনো ভাগ করব না। তুমিই বল, কেউ নিজের জীবনকে অন্যকারো সাথে ভাগ করতে পারে? যেখানে জীবন নিজেই অন্যকারো কাছে চলে গেল, সেখানে আমি আমার কৃত্রিম দেহটা বাঁচিয়ে রাখব কি কারণে? বরং চলে যাই নরকে, যেখানে নাকি হিংসার আগুনের চেয়েও ভয়াবহ আগুন আছে। তুমি তো অনেক বেশী ভালো তাই মৃত্যুর পর হয়ত স্বর্গে যাবে আর আমি তো নরকে আমার মত অন্য পাপীদের সাথে থাকব। তাহলে, বোধহয় এটাই আমাদের শেষ দেখা ছিল। হয়ত কলেজে চুল ছেড়ে দিয়ে থার্ড বেঞ্চে বসে থাকা সেই মেয়েটার হাত ধরে আজীবন পথ চলার সৌভাগ্য আমার হল না। আমার মৃত্যুর পর অনেকে হয়ত বলবে আমি ২৭ বছর বেঁচেছি কিন্তু আমি বলব, আমি শুধু এক বছর ৫ মাস বেঁচেছি, বাকি ২৫ বছর ৭ মাস একটা মৃত রক্তে মাংসে চলন্ত একটা পুতুল ছিলাম। ভালো থেকো জাভেদের সাথে, ইরাকে ভালো রেখো, আমি যে ওর পিতা সেটা ওকে না জানালেও চলবে। তবে ওকে ভালোবাসার কুফল সম্পর্কে শিক্ষা দিও যাতে ও ভালোভাবে প্রেমিক নির্বাচন করতে পারে। আর আমার মত কোনো বখাটের পাল্লায় যেন ও না পড়ে। আর হ্যা মাঝে মাঝে নরকের উদ্দেশ্য চিঠি লিখো, কে জানে! যদি অলৌকিকভাবে চিঠিগুলো আমার কাছে চলে আসে? তো চলে যাচ্ছি সেই সর্বশক্তিমানের কাছে, যে আমার মত বখাটেকে বানিয়েছে আবার বানিয়েছে, তোমার মত স্বর্গীয় হুরকে । বিদায়, চিরবিদায় আর একটা অনুরোধ যে এই কাগজের খন্ডটা পাবে সে দয়া করে তিন্নির কাছে কাগজটা দিয়ে আসবেন। ”
.
লেখাটা পড়ে ইরফান কাগজ দুটোকে বুকের মাঝে চুপে ধরে কাঁদতে থাকে। কাগজটা উল্টিয়ে দেখে, তিন্নির ঠিকানা দেওয়া আছে। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে, কাগজটা পকেটে ঢুকিয়ে দরজাটা হালকা লাগিয়ে,রুমে গিয়ে মানিব্যাগটা পকেটে ঢুকিয়ে, ইরফান সোজা হাটা শুরু করে। সোজা বাসার বাহিরে গিয়ে , রিক্সা করে কোনো দরাদরি ছাড়াই রওনা দেয়। চোখের পানিগুলো বারবার হাত দিয়ে মুছতে মুছতে ইরফানের চোখদুটো লালা হয়ে যায়। প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে ইরফান তিন্নির বাসায় পৌছে যায়। রিক্সাওয়ালাকে কোনোরকম টাকাটা দিয়েই প্রায় দৌড়ে সিঁড়ি পার করে পাগলের মত তিন্নির বাসায় বেল বাজাতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে একটা মেয়ে দরজা খোলে। যদিও ইরফান কোনদিন তিন্নিকে দেখেনি তবুও ভালোভাবেই বুঝতে পারে এটাই তিন্নি! প্রায় চিৎকার করে একটা গালি দিয়ে তিন্নির গায়ে কাগজটা ছুড়ে মেরে ইরফান হেটে চলে যায়। ছেলেটাকে তিন্নি চেনে না, ছেলেটার আচরণে তিন্নি খুউব অবাক হয়ে যায়। কয়েকবার ডাক দিলেও ছেলেটা একবারও ফিরে তাকায় না। এরকম শব্দ শুনে জাভেদ চলে আসে, কৌতূহলী ইরাও জাভেদের সাথে চলে আসে।
.
– কি হয়েছে তিন্নি?
.
– জানি না, একটা লোক এসে গালিগালাজ করে আর একটা কাগজ দিয়ে চলে গেল।
.
– উঠিয়ে দেখো, কাগজটায় কি!
.
– দেখতেছি।
.
তিন্নি কাগজটা উঠিয়ে, মুড়িয়ে থাকা কাগজটা খুলে মন দিয়ে পড়তে থাকে। জাভেদ শুধু তিন্নির চেহারার দিক তাকিয়ে থাকে। কিভাবে তিন্নির মুখের ভঙ্গি ক্রমেই পাল্টাতে থাকে, তিন্নির চোখ থেকে হঠাৎ করেই পানি বের হতে শুরু করে। বরফের মত, তিন্নি স্থির হয়ে যায়। জাভেদ কৌতূহলী হয়েই তিন্নির পাশে গিয়ে দাড়িয়ে কাগজটা পড়তে থাকে। জাভেদের দুচোখের আয়তন বৃদ্ধি পেয়ে যায়। সান্তনা হিশেবে জাভেদ তিন্নির কাধে হাত দেয়। তিন্নি জাভেদকে জড়িয়ে ধরে প্রায় চিৎকার দিয়ে কান্না শুরু করে। ভিজে যায়, জাভেদের শার্ট। ইরা শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। জাভেদ, তিন্নির চুলে হাত বুলিয়ে দেয়।
.
– আচ্ছা ঠান্ডা হও। চুপ হও।
.
– রনি চলে গেল? আমি তো ওকে অনেক ভালোবাসি, অনেক বেশি
.
– আমি তো জানি কিন্তু অযথা অভিনয় করলে, দেখলে পরিনাম কি হল!
.
– আর করব না আমি! আর করব না!
.
– কি লাভ এখন এগুলো বলে? নিজেকে কন্ট্রোল কর।
.
– জাভেদ, একটা কথা বলব, রাগ না করলে?
.
– রাগ করব না, অবশ্যই বল।
.
– আমি একটু একা থাকতে চাই, অনেক দিন একটু একা থাকতে চাই। প্লিজ রাগ করবেন না।
.
– আচ্ছা থাকো কিন্তু নিজের দিকে খেয়াল রেখো, ইরার যত্ন নিয়ো। তোমার জীবন এখন ইরা। বুঝেছো? যা হয়েছে তা হয়েছে, এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে জীবন ধ্বংস করবে না।
.
– আপনি আসলেই একজন অসাধারণ ব্যক্তি, জাভেদ। আপনার কোনো তুলনা নেই। দেখবেন, জীবনে এমন একটা মেয়ে পাবেন যে আপনাকে অনেক বেশী ভালোবাসবে।
.
– হুম, এমন মেয়ে হয়ত জুটতে পারে কিন্তু ভালোবাসা আর কারো সাথেই হবে না। যাক সেটা বাদ দেই এখন গেলাম।
.
– হ্যা, আর নাম্বারটা মোবাইলটায় লিখে যান আর মাঝে মাঝে ম্যাসেজ দিবেন, ফেইসবুকে। চিন্তা করবেন না, এবার রিপ্লে দিব আর বাসায় আবার আসবেন।
.
– আচ্ছা। ঠিক আছে।
.
তিন্নির মোবাইলে নাম্বারটা লিখে, তিন্নিকে বিদায় জানিয়ে চলে আসে। দুপুর প্রায় ১টার মত বাজে! বাহিরে চরম রোদ। নিচে নেমে রিক্সা খোঁজার উদ্দেশ্য জাভেদ হাটতে থাকে। পথে একটা চায়ের দোকানের সামনে দাড়িয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে টানা শুরু করে।
.
– ধুর! সকালে যেতে পারলাম না। তবে বিষয়টা খারাপ হয়নি,রাতে লঞ্চে বসে বাতাস খেতে খেতে যাব। কিন্তু যত যা বলি, তিন্নি আসলে প্রকৃত প্রেমিকা হলেও রনি কখনো প্রেমিক হতে পারল না, কাপুরুষ হিশেবেই নিজেকে প্রমাণ করল। যে নিজের জীবনের মূল্য বোঝে না সে অপরকে ভালোবাসবে কি করে!
বাপরে বাপ, কি রোদ!
.
জাভেদ চায়ের দোকানের ছাউনির নিচে গিয়ে দাড়ায়। সিগারেটে টানার প্রতি অধিক মনযোগ দেয়। হঠাৎ দেখতে পায় একটা কাক বনরুটিতে ঠোকর দিচ্ছে। সিগারেটের প্রতি মনযোগ ছেড়ে, জাভেদ কাকের প্রতি অধিক মনযোগ দেয়।
.
– আহা! যদি কাউয়া হতে পারতাম!
.
(১৪)
.
দেখতে দেখতে জাভেদ আর তিন্নির জীবন থেকে ১০ বছর সময় কেটে যায়। যুবক জাভেদ আজ একজন ৩৯ বছরের মধ্যবয়স্ক পুরুষ। এখনো সে একজন কুমার। এই ১০ বছরে অনেক মেয়েদের জীবনে পেয়েছে। মানে ফাজলামি, ইয়ার্কি অথবা সময় নষ্টের জন্য। কিন্তু আজও সে আনম্যারিড। তিন্নির সাথে প্রায় প্রতি ২-১ মাসে দেখা করার একটা রুটিন হয়ে গিয়েছিল। একসাথে তারা অনেক ঘুরেছে, লক্ষাধিক কথা বলেছে একজন আরেকজনের সাথে এই ১০ বছরে। কিন্তু একদম বন্ধুর মত ছিল তারা দুজন। কারো প্রতি কারো কোনো চাহিদা ছিল না। জাভেদ জানত, তিন্নি তাকে কখনো ভালোবাসবে না আর তিন্নি জানেত জাভেদকে সে কখনো ভালোবাসতে পারবে না।
.
আজ প্রায় ১০ বছর ৪ মাস পর জাভেদ দাড়িয়ে আছে শত শত লোকের মাঝে অনেক বিশিষ্ট লোকজন এখানে দাড়িয়ে আছে। সবাই বিখ্যাত লেখিকা, সাদিয়া আফরিন তিন্নির জানাযায় উপস্থিত হওয়ার জন্য এসেছে। আজ পর পুরুষ বলে, জাভেদ তিন্নির লাশ দেখতে পারেনি। গাড়ি এক্সিডেন্টে তিন্নি মারা গিয়েছে, জাভেদ জানত না। ইরা জাভেদকে খবর দিয়ে এনেছে। অনেক মানুষেরা, তিন্নির চরিত্র নিয়ে নানা গবেষনা চালাচ্ছে। মানুষগুলোর প্রতি এত ঘৃনা হয় যে, জাভেদ উঠে আসে। উঠে গিয়ে একটু দাড়িয়ে থাকে। বিভিন্ন লোকের কাছে জিজ্ঞেস করে জাভেদ, তিন্নির ভাই, মা, বাবা, বোনকে চেনার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিন্নির আত্মীয় স্বজনকে দেখে জাভেদের পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্ঠুর আর হিংস্র মানুষ বলে মনে হয়। এত বছর তিন্নি বেঁচে আছে না মরে আছে তা নিয়ে যাদের মাথাব্যাথা ছিল না তারা আজ এখানে পিঁপড়ার মত জড় হয়েছে। হঠাৎ দেখতে পায় ইরাকে। এই ১০ বছরে ইরা যথেষ্ট বড় হয়েছে, এখন ক্লাস টেনে পড়ে। দেখতে যেমন হুবুহু তিন্নির মত তেমনি, তিন্নির মত অসংখ্য গুণের অধিকারী। কি অদ্ভুতভাবে ইরা কাঁদছে! ইরার পাশে একটা মেয়ে। বোধহয় ইরাকে ঠান্ডা করার জন্য, ইরাকে বাহিরে নিয়ে আসা হয়েছে। ইরা এখানে, ওর এক মামা ব্যতীত এখানে প্রায় কাউকেই চেনে না। জাভেদকে দেখে ইরা দৌড়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে জাভেদকে জড়িয়ে ধরেছে।
.
– আম্মু আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে আমি এখন কোথায় যাব? আমার তো আম্মু নেই। আম্মু বলত, আম্মু নাকি আমার বাবা আর আম্মুই নাকি আমার মা। আমার আম্মু, আব্বু দুজন মরে গিয়েছে একসাথে। আমি কোথায় যাব বলুন? কে আমাকে সকালে নাস্তা বানিয়ে খাওয়াবে, কে রাতের বেলা আমার চুলে বিলি কেটে ঘুম পাড়াবে? কার হাত ধরে, আমি সকালে মর্নিং ওয়াকে যাব? আমি পড়ালেখা না পারলে, কে বকা দিবে? ওরা আমার আম্মুকে মাটির নিচে রেখে আসবে, আঙ্কেল। মাটির নিচে আমার আম্মু কিভাবে থাকবে? আম্মুর কষ্ট হবে না?
.
– ইরা, ওখানে সবার যেতে হবে। রাজা, বাদশাহ, রিক্সাওয়ালা, ভিক্ষুক, আমি,তুমি সবার। কেউ হয়ত দেরি করে যায়, কেউ হয়ত তাড়াতাড়ি, এই পার্থক্য। একটা কথা শোনো,তোমার মা ততদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে যতদিন পর্যন্ত তোমার সাথে তোমার হৃদয় আছে। তোমার মা যা শিখিয়েছে তা যতদিন পর্যন্ত করবে ততদিন পর্যন্ত তোমার মা তোমার সাথে থাকবে
তোমার মা একজন সাহসী বীরাঙ্গনা ছিল। তার সন্তান হয়ে তুমি যদি ভয় পাও, কাঁদো তবে তোমার মা কি খুশি হবে? তোমার আম্মুর তো বাবা-মা থেকেও ছিল না। তাও আজকে কত মানুষ, কত বড় বড় লোকেরা তোমার আম্মুর জানাযায় এসেছে। আর তুমি যদি তার মেয়ে হয়ে এত ভয় পাও! তোমার জীবনে প্রতিটা জিনিসের দায়িত্ব আমি নিলাম।
.
– আচ্ছা, আঙ্কেল একটা কথা বলব?
.
– হুম, বল।
.
– আমি আপনাকে বাবা ডাকতে পারি?
.
জাভেদের দুচোখ প্রায় ভিজে যায়, ইরাকে স্বজোরে জড়িয়ে ধরে বলে,
.
– অবশ্যই, মা। একবার না একশ বার পারবে।
.
জাভেদের চোখের পানিগুলো গড়িয়ে ইরার চুল ভিজিয়ে দেয়। আশেপাশে লোকজন অনেকটা অবাক হয়েই জাভেদ আর ইরার দিকে তাকিয়ে আছে। ইরার এক মামা এর মধ্যে ইরাকে ডাক দেয়। বাধ্য হয়েই ইরাকে যেতে হয়। চোখের পানিগুলো হালকা পরিষ্কার করে জাভেদ মনেমনে বলে,
.
– হয়ত কপালে লেখাছিল, আমি থাকব চিরকুমার, হয়ত কপালে লেখা ছিল, আমি হব এক ব্যর্থ প্রেমিক! কিন্তু তবুও আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান, কেননা আমি একজন পিতা!
.
(সমাপ্ত)
.
(বি.দ্র : চরিত্রহীনা ২ টি সিজনসহ শেষটা পড়ে আপনার অনুভুতি জানতে চাই। প্লিজ অন্তত একটা হলেও কমেন্ট করবেন।এতে গল্প আপলোড করতে আগ্রহ পাই)
This is my Honest review of the story. Today (20.08.20) is read entire story and after reading I can’t stop my tears feeling me as Javed, Though I am a rough man and has a mind like steel. It is very close to my heart and my loneliness. Great job Mr./Mrs./Ms. Writer and a lot of thanks for this tragic story. Salute to both Tinni and Javed Character. Sorry for not replying in Bengali.
Ki bolbo kichu kuje Pai na kintu borabor apnr dew golpo pore Ami amr past ar dike Cole Jai r golpo ta pore 2 choker Pani dhore rakte pari Ni … selut janai sei lekhika ke je emon sundor golpo porar jnno sujog Kore diyechen ..
Comment: life is a tragedyful and romantic journey.We all have to face this journey.Javed is a real man because he thinks that man has to go one in life.Suicide is not a solution.If our lover feel happy with other person we have to accept it.It is the real identity of a lover.Congratulation you have right a wonderful story.Thank you.