চলো তবে শূন্যতা ধরে হাঁটি পর্ব ১৪

#চল তবে শূন্যতা ধরে হাঁটি
Zannatul ferdaous zannat
part:14

“অন্তি একটা রাত না ঘুমালে কি খুব ক্ষতি হয়?চোখের নিচে কি একগাদা কালি জমে? অথবা পর পর দুদিন অবসাদ লাগে?”
আরশান অন্তির হাত ধরে ঘাসের উপর হাঁটতে হাঁটতে প্রশ্নটা করলো।

অন্তি মুচকি হেসে বললো
-কতো রাত না ঘুমিয়ে কেঁদে কেঁদে কাটিয়েছি আর এতো মাত্র একটা রাত। তুমি পাশে থাকলে মুহূর্তেই কেটে যাবে।

আরশান আবার বলল,
-এই অন্তি খালি পায়ে ঘাসের উপর হেঁটেছো কখনো?
-অনেক দিন হাঁটি না।
-জুতা খুলে আমার হাতে দাও তো।
-একদমই না, আমি নিজের হাতে রাখতে পারবো।কিন্তু জুতা খুললে আমি তোমার কাধের থেকেও নিচে নেমে যাবো, ইশ কি বেমানান লাগবে বলো।
-কে বলেছে এই বাজে কথা? আরশানের পাশে অন্তি সবসময় পারফেক্ট,বুঝলে পাগলি?

অন্তি একগাল হেসে জুতা খুলে জুতার ফিতা আঙ্গুলে ঝুলিয়ে আরশানের পাশে পাশে হাটতে লাগলো। ওরা হাটতে হাটতে ওদের রুম গুলো থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে।

“একটা রাত একটু এলোমেলো পাগলামি ভরা হওয়াই যায় তাইনা বলো? “আরশানের মুখের দিকে তাকিয়ে অন্তি বললো।

আরশান যেনো অন্তির প্রতিটা কথায় বিস্মিত হচ্ছে।যে মেয়ে নিজে থেকে কোনো দিন হাত ধরতো না, সেই মেয়ে আজ নিজে জড়িয়ে ধরেছে। আর সেই ঘোর কাটতে না কাটতেই অন্তিকে আরশান চুমু দিলেও কোনো বাধা দিলো না। বরং নিজে থেকে রেসপন্স করেছে। আরশানের মনে প্রশ্ন জাগলো
” আচ্ছা অন্তি বড় হয়ে গেলো না তো?”
সে হলফ করে বলতে পারে, আগের অন্তি হলে জীবনেও এতো কাছাকাছি এসে এতোটা নরমাল থাকতো না। বরং একদিন তো আরশান অন্তির ঠোঁটে চুমু খাওয়ার অপরাধে কতো শাস্তি না পেয়েছে।
অন্তির দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে আরশান প্রশ্ন করলো
-তোমার বয়স কতো হলো গো?

ব্রু কুচকে অন্তি তাকিয়ে বললো
-মেয়েদের বয়স জিঙ্গেস করতে আছে বুঝি?
-কুড়ি?
-না এখনো তিন মাস বাকি।

আরশান আপন মনেই হেসে দিলো। সত্যি তাহলে বড় হয়ে গেছে অন্তি। আরশানের খুব জানতে ইচ্ছে করছে “অন্তি কি তার চোখ পড়তে পারে? ওর আবেগ, ওর অস্থিরতা বুঝতে পারে?” কিন্তু কিছুই বলা হলো না।

দুজন আরও কিছুক্ষন নিরব থাকলো। তারপর নিরবতা ভেঙ্গে অন্তি বললো
-শান আমার না খুব ক্ষুধা লাগছে। কি করবো এখন?

আরশান ঝট করে পকেট থেকে মোবাইল বের করে সময় দেখে নিলে। ০১ঃ২৮ বাজে। এসময় খুব ভালো খাবার পাওয়া যাবে কিনা ভাবতে ভাবতেই আরশান অন্তিকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে ঢুকলো।

বিশেষ কিছু না পেলেও অন্তি একবাটি থাই স্যুপ আর দুটো চিকেন বল আর আরশান এক কাপ কফি অর্ডার দিলো।
অন্তি যখন খাচ্ছে আরশান যেনো মুগ্ধ হয়ে অন্তিকে দেখছ, এই মেয়েটা এমন কেনো? কোনো অভিযোগ নেই, বাড়তি কোনে জেদ নেই, আর পাঁচটা মেয়ের মতো এত্তো এত্তো চাওয়া নেই, কেনো নেই?

কফিতে চুমুক দিতে দিতে আরশান বললো
-তোমার কি খেতে সমস্যা হচ্ছে অন্তি?
-আসলে তখন খাইনি, খুব ক্ষুধা পেয়েছিলো। আর জানোই তো “ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।”

আরশান হেসে দিলো। তারপর আবার বললো
-এমন সব কিছু সবসময় মানিয়ে নিবে না। বুঝলে, যারা মানিয়ে নেয় নিজের মনের বিরুদ্ধে যেয়ে তারা কিন্তু সবসময় বেশি কষ্ট পায়।

অন্তি হা করে আরশানের কথা গিলছে।

-এতো এতো আবদার করবে বুঝলে। ভালো না লাগলে বলবে এটা ভালো লাগে না ওইটা দাও। মুখ ফুটে বলবে। এইযে এখন তোমার স্যুপটা এতো রাতে খেতে কষ্ট হচ্ছে এটা হাসি মুখে মেনে না নিয়ে বলবে।

অন্তি বললো
-এতো রাতে আর কি বা পাবো বলো?এটা যে জুটেছে এই অনেক।

-অন্তি তুমি আবদার করবে, জেদ করবে, আমি সেসব পূরণ করতে করতে হাঁপিয়ে যাবো। এমন একটা জীবন কাটাতে চাই অন্তি। কিন্তু তুমি হুট করেই কেমন যেনো বড় হয়ে গেলে। কোনো নেকামি নেই,কোনো বাচ্চামি নেই, এমন কেনো তুমি? এতো লক্ষী কেনো?

-এই যে তুমি বললে আমি লক্ষী এটাই কম কিসে?
এটা না বলে যদি বলতে, “অন্তি তুমি প্যারা দাও, এতো নেকা কেন তুমি? এতো চাহিদা কেনো তোমার?” এসব শুনতে কিন্তু আমার মোটেও ভালো লাগতো না।

আরশান হেসে দিলো। আরও কিছুক্ষন ওখানে আড্ডা দিয়ে ঘড়িতে দেখলো দুটো বেজে গেছে। আরশানের মনে হচ্ছে রাতটা যেনো খুব তারাতাড়ি কেটে যাচ্ছে।

রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে আরশান আর অন্তি আরও কিছুক্ষন ঘাসের উপর হাঁটাহাঁটি করে ওদের রুমটার দরজায় এসে দাড়াতেই অন্তি বললো
-আমি বরং নুন এর রুমে যাই। অনেক রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়ো।

দরজা খুলতে খুলতে আরশান বললো
-নুন দরজা লাগিয়ে ঘুমিয়ে গেছে।সকালে ওকে ফোন দিলে দরজা খুলে দিবে তখন যেয়ে ওর সাথে ঘুমাবে কেমন?

অন্তি কিছু না বলে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকলো। আরশান ঘরে ঢুকে অন্তিকে দরজায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে বলল
-ভেতরে এসো। অনেক রাত হয়েছে ঘুমাবে চলো।

অন্তি এলোমেলো পায়ে ঘরে ঢুকলো। সত্যি খুব ঘুম পাচ্ছে, কিন্তু একটু আগে যে আরশান বললো, “একটা রাত না ঘুমালে কি হয়?” ও কি সত্যি ঘুমিয়ে যাবে? এটা ভাবতে ভাবতেই অন্তি আরশানের দিকে তাকালো।
আরশান বিছানাটা গোছাতে গোছাতে বললো,
-তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো, আর জামাটা চেন্জ করে আমার একটা টিশার্ট পড়ে নাও তো।
-তোমার টিশার্ট আমার হবে?
-না হলেই বা কি? আমরা আমরাই তো।

অন্তি মুখে বেশ কয়েকবার পানি ঝাপটা দিয়ে মাথায় একটু পানি দিয়ে বেড়িয়ে আসলো। আরশানের টিশার্ট টা অন্তির হাটু ছুঁই ছুঁই। তবে পালাজ্জো থাকায় খুব একটা বেমানান লাগছে না।

চোখের চশমাটা টেবিলের উপর রাখতে রাখতে খেয়াল করলো আরশান একটা টিশার্ট আর একটা থ্রীকোয়াটার পড়েছে। অন্তি আগ্রহ নিয়ে জিঙ্গেস করলো
-চেন্জ করলে কখন?
-এইতো তুমি যখন ফ্রেশ হতে চলে গেলে।
-আমি যদি হঠাৎ বেড়িয়ে আসতাম? তখন কি হতো? ছি!
-এতো ছি ছি করছো কেনো? তুমিই তো, দেখলে দেখতে। আজ হলেও দেখতে কাল হলেও তো দেখবেই।

অন্তি আরশানের পিঠে মারতে মারতে বললো
-ছি ছি মুখের কথায় লাগাম নেই কোনো। লজ্জা লাগে না? এতো বাজে কেনো তুমি?

অন্তির হাত ধরে অন্তিকে থামিয়ে আরশান পিছন থেকে অন্তিকে জড়িয়ে ধরে চুলে নাক ডুবিয়ে বললো
-আমি এদিক থেকে দরজা লক করে নিয়েছিলাম, আর চেন্জ করেই খুলে দিয়েছি।
-তাহলে ওসব বললে কেনো?
-তোমায় রাগাতে। রাগলে কিন্তু বেশ দেখতে হও। অন্তি তুমি কি শ্যাম্পু দাও বলো তো? এতো সুন্দর গন্ধটা। প্রেমে পড়ে যাই বার বার।

অন্তি আরশানকে ছাড়িয়ে বিছানার কোনায় বসতে বসতে বললো
-এতো নেকামি কেমনে করো গো? একদম বাচ্চাদের মতো।

আরশান অন্তির উড়নাটা নিয়ে মাথায় পাগড়ির মতো বাঁধতে বাঁধতে বললো
-সম্পর্কে একজন যদি নিরামিষ হয় তাহলে অন্য জনকে আমিষ হতে হয় অন্তি, তা না হলে মজা থাকে না।
-মানে?
-এইযে তুমি কেমন কাঠখোট্টা, আমিও যদি তোমার মতো চুপচাপ হয়ে থাকি তাহলে আমরা সময় গুলো উপভোগ করতে পারবো না। একজন নিরব হলে অন্যজনকে চরম পর্যায়ের পাগল হতে হয় অন্তি।

কিছুক্ষণ নিরব থেকে অন্তি বললো,
-আমি এতোদিন পর হঠাৎ তোমার মুখোমুখি হয়ে ঠিক ভাবে মিশতে পারছিলাম না, কেমন যেনো এলোমেলো লাগতো সব। তুমি যখন আগে পিছে ঘুরতে আমি নিজেকে সামলাতে পারতাম না তবে খুব অপরাধ বোধ হতো। বাবা মার কাছে প্রমিসের কথা মনে হতো। কিন্তু একটা সময় তোমার পাগলামির কাছে হেরে গেছি আমি।

আরশান অন্তির পাশে বসে হাসতে হাসতে বললো
-তুমি আমার ছিলে আমারই আছো। হেরে যাওয়া জিতে যাওয়া কিছু না বুঝলে। তবে তুমি এমন নিরব থাকবে না। সবসময় চঞ্চল থাকবে। তোমার চেহারার সাথে গাম্ভীর্য যায় না। তুমি হবে দূরন্ত চটপটে আর অনেক বাচাল।

অন্তি আরশানের উড়না দিয়ে বানানো পাগড়ি ঠিক করতে করতে বললো
-তুমি যে বললে তখন একজন নিরব থাকলে অন্য জনের পাগল হতে হয়। এখন আমি যদি বাচাল, চঞ্চল হয়ে যাই কেমিস্ট্রি কি জমবে তখন?

-কেনো জমবে না? যখন তুমি বাঁচাল হবে আমি তখন ভালো শ্রোতা হয়ে যাবো।

অন্তি হাসতে হাসতে বিছানার বাম পাশটায় শুয়ে পরলো। এই ছেলের সাথে কথা বলে যে পারা যাবে না তা অন্তি বুঝে গেছে।
আরশান ডানপাশে হাঁটু ভাজ করে হাতদিয়ে হাঁটু ধরে অন্তির দিকে তাকিয়ে বললো
-দেখো তো কেমন বর বর লাগছে না আমায়?

অন্তি আরশানের দিকে তাকিয়ে হেসে দিয়ে বললো
-কেটকেটে কমলা কালার পাগড়ি বুঝি বর পরে?

-বউ-রা কিন্তু তোমার মতো টিশার্ট পরে না বুজলে। অথচ আমার কাছে তোমাকে কেমন বউ বউ লাগছে। তুমিও কল্পনা করো দেখবে আমায় তোমার বরের মতো লাগছে।

অন্তি হাসতে হাসতে উঠে বসলো।তারপর আরশানের গাল টেনে ধরে বললো
-শান এখন কি তোমার এই ঘরটা বাসর ঘরের মতো লাগছে?

আরশান যেনো অন্তির কথায় আকাশ থেকে পড়লো। তারপর বললো
-ইশ এটা তো ভাবি নি। আমার বউটা যে এতো ফাস্ট জানতাম না। অন্তি চলোনা বিয়ে করে নেই।
-কিভাবে?
-চোখ বন্ধকরো।
-কিন্তু,
-কোনো কিন্তু নয়।

অন্তি আর কিছু বলতে পারলো না।ছেলেটার চেহারায় এতো এতো মায়া কেনো?অন্তি চোখটা ব্ন্ধ করতেই আরশান অন্তির ডান চোখের পাতায় চুমু দিয়ে বললো “কবুল”, তারপর বাম চোখের পাতায় চুমু দিয়ে বললো ” কবুল” আর তারপর কপালে চুমু দিয়ে বললো “কবুল”। অন্তি ততক্ষনে আরশানকে জড়িয়ে ধরেছে। আর আরশান যতোবার কবুল বলেছে অন্তিও ততবার মনেমনে কবুল বলে নিলো।

আরশান এবার অন্তিকে ছেড়ে অন্তির মুখের দিকে তাকিয়ে বললো
-কাজল লেপ্টে গেলে তোমাকে কিন্তু অনেক বেশি আকর্ষনীয় লাগে, তোমার মুখ ধুয়ে আসার পর মুখের উপর যে ফোঁটা ফোঁটা পানি তোমার মুখে জমে থাকে তা আমার খেয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। তোমার ঠোঁটের লিপস্টিক যখন মুছে যেয়ে হালকা একটু স্টেইন থাকে ওইটা আমাকে সব থেকে পাগল করে দেয়।

অন্তি এবার আরশানকে ধাক্কা দিয়ে অপর দিক ঘুরে শুয়ে পড়ে বলতে লাগলো
-ইশ, শুধু বাজে বাজে কথা। পঁচা লোক একটা।

তবে হুট করে এলো মেলো হয়ে শুয়ে পড়ায় অন্তির কোমড়ের একটু অংশ বেড়িয়ে আছে আর তা আরশানের চোখে পড়তেই যেনো শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেলো।
নিজে না চাইলেও হাতটা অন্তির কোমরের খালি অংশে স্পর্শ করলো।
অন্তি চমকে যেয়ে আরশানের দিকেই তাকাতেই খেয়াল করলো আরশান অন্তির কোমরের দিকে ঠোঁট এগিয়ে নিচ্ছে। ভয়ে যেনে অন্তির গলা শুকিয়ে আসলো। অন্তি সরে যেতে চাইলেও আরশান অন্তিকে হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরায় সরতে পারলো না। আর আরশান কোমরে এলোপাথারি কয়েকটা চুমু দিয়ে বসলো।
অন্তি যথারিতি কাঁপছে। এমন কিছু ওর সাথে কখনও ঘটে নি।

অন্তি আরশানকে ছাড়িয়ে উঠে বসতেই আরশান ও উঠে বসলো। মাথার পাগড়িটা এলোমেলো হয়ে খুলে আছে। অন্তি ফ্যাসফ্যাসে গলায় আরশানের দিকে তাকিয়ে বললো
-শান আমার ভয় লাগে।

আরশানও কাপাকাপা গলায় বললো
-কেনো?
-যদি আবার আলাদা হতে হয়?

আরশানের যেনো রাগ উঠে গেলো। সুন্দর মুহূর্ত গুলো কেনো এসব বলে নষ্ট করতে হবে? এই মেয়েটা এতো আনরোমান্টিক কেনো? আরশান কোনো জবাব না দিয়ে অপর পাশ ঘুরে শুয়ে পড়লো।
আর খুব নিচু গলায় বললো
– তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারো। আমি আমার লিমিট টা জানি। সেটা কখনই ক্রস করবো না, তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।

অন্তির খুব খারাপ লাগছে।ও সত্যি ওভাবে আরশানকে বলতে চায়নি।কিন্তু আরশান যে কষ্ট পেলো অন্তির কথায়।বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করেও যখন দেখলো আরশান ওর দিকে তাকাচ্ছে না তখন নিজে আরশানের গালে হাত দিয়ে নিজের দিকে ঘুরাতেই চমকে উঠলো।

আরশানের চোখে পানি। অন্তির যেনো মুহূর্তেই সব এলো মেলো হয়ে গেলো। অন্তি নিজেও কেঁদে ফেললো।
আর আরশানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতেই আরশান অন্তির মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে স্বাভাবিক গলায় বললো
-আগের বার চলে গেছিলে আমি মেনে নিতে না পারলেও মানিয়ে নিয়েছিলাম। মনে হয়েছিলো তুমি ছোট, তাই হয়তো আমাদের দূরত্ব তোমাকে প্রভাবিত করেছে। এজন্যই আমাকে ছেড়ে গেছো। কিন্তু অন্তি আমি এখন জানি সবটা। তুমি আমাকে কতোটা ভালোবাসো তাও জানি। সেবার না হয় তোমার চলে যাওয়ার শব্দ শুনি নি, তোমার চোখের পানি দেখি নি, কিন্তু এবার তুমি আলাদা হলে আমি শেষ হয়ে যাবো অন্তি। হয়তো মরে যাবো না। কিন্তু ওই বেঁচে থাকার কোনো মানে থাকবে না, আমি পারবো না অন্তি।

অন্তি এবার হেঁচকি তুলে কাদাতে শুরু করলো। অন্তি নিজেও পারবে না থাকতে। আরশানের বুকে টিশার্টের অংশটুকু কাদাতে কাদতে ভিজিয়ে ফেলেছে মেয়েটা। আরশান এবার অন্তির মুখটা একটু উপরে তুলে ঠোঁটে গভীর ভাবে চুমু খেলো।
এভাবে কতোটা সময় কাটলো অন্তির জানা নেই। কিন্তু কান্নাটা একদম থেমে গেছে।

আরশানের গালে হাত দিয়ে অন্তি কিছুক্ষন তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো। এতো মায়া কেনো এই মুখে? মুহূর্তেই কেমন ঝড় বইয়ে দিতে পারে আবার মুহূর্তেই সব শান্ত।

অন্তি চুপচাপ আরশানের বুকে মাথা রাখতেই আরশান অন্তির চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বললো
-ঘুমিয়ে যাও পাগলি।

অন্তি ঠিক আরশানের বুকে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে গেলো কিন্তু আরশান সারাটা রাত চোখের পাতা এক করতে পারলো না। হয়তো অন্তিকে খুব কাছে পেয়েও এতোটা দূরত্ব অথবা অন্তিকে হারাবার চিন্তা তার মাথায় ঝেকে ধরলো।

সকালের আলো ফুটে গেছে। প্রকৃতি যেনে নতুন একটা দিন উৎযাপন করতে ব্যাস্ত। আরশান তাকিয়ে আছে তার বুকে শুয়ে থাকা অপ্সরীর দিকে। বাচ্চাদের মতো কেমন ঠোঁট ফুলিয়ে ঘুমাচ্ছে পাগলিটা। পৃথিবীর সমস্ত মায়া কেনো এই মেয়েটার মুখে?

চলবে…

(যা মনে আসলো লিখে ফেললাম,জানিনা কেমন হলো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here