#গল্পঃ_চুক্তির_বউ_যখন_প্রেগন্যান্ট_পর্ব_০১
অজানা ভালোবাসার গল্প।
লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহ জালাল।
আমি আকাশ চৌধুরী। আব্বু আম্মুর আদরের একমাত্র ছেলে। পড়া লেখা শেষ করে আব্বুর অবর্তমানে অফিস
সামলাতে হচ্ছে। অফিসে বসে আছি। একটু পর মেঘ [অফিসের কর্মকর্তা] এসে আমাকে বলে উঠলো……..
মেঘঃ-May I come in sir
আকাশঃ-yes come
মেঘঃ-স্যার কেনো ডেকেছেন আমায়?
আকাশঃ-হ্যা বলছি এখানে বসো?
মেঘঃ-থ্যাকং ইউ স্যার?
আকাশঃ-শুনলাম তোমার টাকার দরকার
কথাটা কি সত্যি?
মেঘঃ-আসলে স্যার…….?(পুরোটা বলতে না দিয়ে)
আকাশঃ-সত্যি কি না সেটা বলো?
মেঘঃ-হ্যা স্যার টাকা দরকার?
আকাশঃ-কত টাকা দরকার?
মেঘঃ-প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মতো?
আকাশঃ-টাকা গুলো আমি তোমাকে দিবো?
মেঘঃ-আপনে কেনো আমাকে এতগুলো টাকা দিবেন।তাছাড়া আমি এত টাকা আপনার কাছ থেকে নিতে পারবো না??
আকাশঃ-টাকা তো তোমার খুব ইম্পরট্যান্ট। আর টাকা গুলো তোমাকে এমনি এমনি দিবো না?
মেঘঃ-হুমম ইম্পরট্যান্ট। কিন্তু আমি আপনার কাছ থেকে টাকা গুলো নিতে পারবো না?
আকাশঃ-টাকা গুলো আমি তোমাকে এমনি এমনি
দিবো না?
মেঘঃ-তাহলে কেনো দিবেন টাকা গুলো?
আকাশঃ-আমার একটা কাজ করে দিতে হবে তোমাকে?
মেঘঃ-কি এমন কাজ যার জন্য আপনি আমাকে
এত গুলো টাকা দিবেন??
আকাশঃ-সেটা কিছুক্ষণ পরে বলবো। এখন বলো
টাকা গুলো তুমি নিবে কি না??
মেঘঃ-স্যার টাকা আমার দরকার কিন্তু সেটা আমি এমনি এমনি নিতে পারবো না। কি কাজ আর সেটা কতটা ইম্পরট্যান্ট আগে আমাকে জানতে হবে।
না হয় টাকা আমি নিতে পারবো না?
আকাশঃ-তাহলে তোমার মাকে বাঁচাবে কি ভাবে।
যদি টাকা জোগাড় না হয়?
মেঘঃ-আপনি কি ভাবে জানেন আমার মায়ের ব্যাপারে?[অনেকটা অবাক হয়ে]
আকাশঃ-সেটা তোমার দেখার বিষয় না। এখন ভেবে দেখো তুমি কি করবে?
মেঘঃ-কি কাজ করতে হবে বলুন?
আকাশঃ-একটা এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন
করতে হবে?
মেঘঃ-কিসের এগ্রিমেন্ট?
আকাশঃ-বিয়ের…?
মেঘঃ-মানে…..?
আকাশঃ-মানে হলো একটা বিয়ের এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করবে তুমি। তাহলে আমি তোমাকে টাকা গুলো দিবো। আর হ্যা এগ্রিমেন্ট হবে ১বছরের জন্য। ১বছর পর তুমি তোমার পথ দেখবে আর আমি আমার পথ?
এই কথা শুনে মেঘ বলে উঠলো……….
|||
যারা গল্প পড়েন…আশাকরি সবাই লাইক কমেন্ট করে উৎসাহ দিবেন।এবং লাইক কমেন্ট করে আমার সাথে থাকবেন। ভালো রিসপেন্স ফেলে পরের পর্ব আগামী কালকে পাবেন। গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি দুঃখীত। ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।
মেঘঃ-সরি স্যার আমার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়?
আকাশঃ-ভেবে দেখো সময় মাত্র ২৪ ঘন্টা?
এরপর মেঘ কোনো কিছু না বলেই নিজের ডেস্কে চলে গেলো। আর গিয়ে বসে বসে ভাবতে থাকে………..
|||
ডাক্তার বলেছে..যেই ভাবে হোক টাকা গুলো জোগাড় করতে। নয় তো তাদের আর কিছুই করার থাকবে না।
যেই ভাবে হোক মাকে বাঁচাতেই হবে। প্রয়োজনে নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও মায়ের ট্রিটমেন্ট আমাকে করতেই হবে..। কিন্তু স্যার আমার মায়ের খোঁজ পেলেন কি ভাবে। আর এগ্রিমেন্ট পেপারই বা কেনো…
বিয়ে যদি করতে না চায় তাহলে বিয়ের নাটক কেনো।
আসল রহস্য কি আমাকে জানতেই হবে? এসব কথা ভাবতেছে মেঘ। হটাৎ করে তার সহকর্মী তানহা এসে মেঘ কে বললো………
তানহাঃ-কিরে মেঘ কি ভাবছিস?
মেঘঃ-………?[চুপ করে আছে কোনো কথা বলছে না]
তানহাঃ-মেঘ কি ভাবছিস বলবি তো নাকি?
মেঘঃ-হুমম তানহা তুই কি বলবি বল?
তানহাঃ-বলবি তো তুই?
মেঘঃ-মানে কি বলবো আমি?
তানহাঃ-তোকে স্যারের সাথে কথা বলতে দেখলাম। কিছু হয়েছে নাকি?
মেঘঃ-না তেমন কিছু না।। তানহা তুই তো জানিস এই দুনিয়ায় মা ছাড়া আর কেউ নেই আমার। আজ যদি সেই মাকে বাঁচাতে না পারি তাহলে বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে যাবো। যেই মা নিজে না খেয়ে আমাকে খাইয়েছে। নিজের সুখ না দেখে আমার সুখের জন্য ভেবেছে আজ সেই মায়ের মৃত্যু কি ভাবে নিজের
চোখে দেখবো বলতে পারিস?
তানহাঃ-মন খারাপ করিস না। কিছু একটা উপায় নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে?
মেঘ সারারাত একটুও ঘুমাতে পারেনি। কি ভাবে ঘুমাবে মা যে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে.। তাহলে মেয়ে হয়ে কি ভাবে ভালো থাকবে।
কোনো ভাবে রাতটা পার করে মেঘ সকাল বেলায় নাস্তা করে অফিসে চলে গেলো। গিয়ে আকাশের সাথে দেখা করতে গেলো………
মেঘঃ-স্যার আসবো?
আকাশঃ-আরে তুমি? কি ব্যাপার আজ নিজ থেকে আসলে। any problem..?
মেঘঃ-স্যার সমস্যা তো একটাই?
আকাশঃ-তার মানে তুমি আমার প্রস্তাব মেনে নিতে রাজি তাইতো?
মেঘঃ-আর কোনো অপশন কি নেই??
আকাশঃ-না আর কোনো অপশন নেই। মা তোমার লাইফ তোমার সিদ্ধান্ত তোমাকেই নিতে হবে??
মেঘঃ-আচ্ছা স্যার আমি রাজি??
আকাশঃ-গুড আমি জানতাম তুমি এই প্রস্তাব
ফেলতে পারবে না??
মেঘঃ-স্যার টাকা গুলো আজই দরকার??
আকাশঃ-হুমম টাকা আজই দিবো আর বিয়েটাও আজই হবে??
মেঘঃ-কিন্তু…….??[পুরোটা বলতে না দিয়ে]
আকাশঃ-কোনো কিন্তু নেই। এসো আমার সাথে কোনো প্রশ্ন করো না, যেখানে যাবো সাথে তুমিও যাবে। আর হ্যা ভয় পেওনা কিন্তু তোমার মায়ের ট্রিটমেন্টের টাকা আমি দিচ্ছি এটাই ফাইনাল??
মেঘঃ-থ্যাংক ইউ স্যার??
আকাশঃ-এসব না বললেও চলবে, আগে আসো??
আকাশ মেঘ কে নিয়ে গাড়িতে বসালো। তারপর গাড়ি ড্রাইব করতে শুরু করলো। এরপর মেঘ আকাশ কে বলতে শুরু করলো………
মেঘঃ-আমরা কোথায় যাচ্ছি??
আকাশঃ-গেলে বুঝতে পারবে,,এত প্রশ্ন করো
কেনো তুমি??
মেঘঃ-না স্যার এমনিই জিজ্ঞেস করছিলাম??
এরপর মেঘকে নিয়ে একটা বাড়ির ভিতরে ডুকলো,মেঘ
অবাক হয়ে চারদিকে তাকিয়ে আছে। এটা বাড়ি নাকি রাজপ্রাসাদ। এতো সুন্দর বাড়ি কারো হয় নাকি।
আকাশের সাথে মেঘ ভিতরে ডুকলো। ভয়ে মেঘের গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু মেঘ একটা কথাও মুখ ফুটে বলতে পারছে না। হটাৎ করে আকাশ বলে উঠলো……
আকাশঃ-মামনি মামনি দেখো কাকে নিয়ে এসেছি??
কিছুক্ষণ পর হুইল চেয়ারে বসে একজন মহিলা এগিয়ে আসলো আকাশের কাছে। হ্যা উনি আকাশের মা।
একটা এক্সিডেন্টের পর থেকে উনি প্যারালাইজড হয়ে যান। সেই থেকে হাটাচলা করতে পারেন না। তিনি এসে আকাশ কে বললো………..
আম্মুঃ-এই তো আমি,,কি হয়েছে এতো চিৎকার
করে ডাকছিস কেনো??
আকাশঃ-কাকে নিয়ে এসেছি দেখো??
আম্মুঃ-বাহহ খুব সুন্দর তো,,এই কি সেই মেয়ে
যাকে তুই??[পুরোটা বলতে না দিয়ে]
আকাশঃ-মামনি মামনি শোনো,,,আজকে ওর সাথে আমার বিয়ে তুমি সব কিছু আয়োজন করো। আমি একটু আসছি ওকে নিয়ে শপিং করতে যাবো??
আম্মুঃ-এতদিনে একটা কাজের মতো কাজ করতে যাচ্ছিস। ঠিক আছে আমি তোর উকিল আংকেল
কে ফোন আসতে বলি। সব কাগজ পত্র রেডি করে
রাখি। তোরা শপিং করে আয়..??
আকাশঃ-আচ্ছা ঠিক আছে মামনি??
আম্মুঃ-এদিকে একটু আসবে মা…??[মেঘ কে উদ্দেশ্য করে]
মহিলার মুখে মা ডাক শুনে মেঘের বুকে কেমন জেনো মুচড় দিয়ে উঠলো। মেঘ উনার কাছে গিয়ে পায়ের কাছে বসে হাতে হাত রাখলো। আর আকাশের মা বলে উঠলো……..
আম্মুঃ-আজ থেকে আমার এই বাদর ছেলের সব দায়িত্ব কিন্তু তোমার,,ওকে দেখে রাখবে কেমন।
আমার ছেলের পছন্দ যে এতো সুন্দর তা আগে
জানা ছিলো না??
মেঘ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে উনার দিকে,কি বললো এটা উনি। মেঘের মাথায় জেনো আকাশ ভেঙে পড়লো।
মেঘ ঘাড় ঘুরিয়ে আকাশের দিকে তাকালো। আকাশ ওর এমন করে তাকানো দেখে বললো……..
আকাশঃ-এই ভাবে তাকিয়ে না থেকে তাড়াতাড়ি আসো শপিং করতে হবে??
মেঘ রিতীমতো ভয় পেয়ে গেলো,, আকাশের এই রকম কথায়। কি আজব লোক রে বাবা। নিজের সার্থ রক্ষা করার জন্য আমাকে বিয়ে করতে চাইছে, নাকি উনার এই বিয়ের পিছনে কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে। জানি না কি চান উনি।
উনার মতিগতি বুঝার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দেয়নি মনে হয়। যাই হোক এতে ভেবে লাভ নেই। এখন মাকে বাঁচানোর এই একটাই উপায়। যে ভাবেই হোক মাকে আমার চাই ই চাই।
দুজনে টুকটাক কিছু শপিং করে বাসায় চলে আসলো। বাসায় এসে আকাশ মেঘ কে একটা শাড়ী পড়ে রেডি হতে বললো। একটু পরে কাজী আসবে।
তারপর থেকে মেঘের আগামী এক বছর চুক্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকবে। একটা সম্পর্ক কি চুক্তি দিয়ে শুরু হয়।
মেঘ এসব কথা ভাবছে। হটাৎ করে আকাশ বললো…..
আকাশঃ-এই যে হ্যালো তাড়াতাড়ি রেডি হও কাজী চলে আসবে??
মেঘঃ-স্যার আমার মা??
আকাশঃ-তোমার মায়ের অপারেশন আজকে হবে।
তুমি সেখানে যাবে কিন্তু আগে আমাদের বিয়ে টা
হোক তারপর??
মেঘঃ-অপারেশনের টাকা??
আকাশঃ-ওটা অলরেডি জমা হয়ে গেছে। আর ডাক্তারের সাথে আমার কথাও হয়েছে??
মেঘঃ-ওহহহ??
আকাশঃ-তুমি রেডি হয়ে আসো,,আমি নিচে
অপেক্ষা করছি??
মেঘঃ-হুমম??
আকাশঃ-ও হ্যা একটা কাজ বাঁকি??
এই কথা বলে আকাশ আলমারি থেকে একটা কাগজ বের করে মেঘের হাতে দিলো…। মেঘ কাগজ টা হাতে নিয়ে বলে উঠলো………
মেঘঃ-এটা কি স্যার??
আকাশঃ-এটা এগ্রিমেন্ট পেপার??
মেঘ হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করলো। আকাশ মেঘ কে থামিয়ে দিয়ে বললো…….
আকাশঃ-এখন এটা পড়ে সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি সাইন করো??
মেঘঃ-এক্ষুনি সাইন করতে হবে??
আকাশঃ-হ্যা এক্ষুনি সাইন করতে হবে??
মেঘ ভয়ে ভয়ে হাতে কলম তুলে নিলো। আর ভাবতে শুরু করলো…..
|||
হে আল্লাহ বাঁচার কি কোনো উপায় নেই? শেষ পর্যন্ত একটা এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করে বেঁচে থাকার লড়াই করতে হবে।
কিন্তু যদি তামিম এটা জানে তাহলে তাকে কি ভাবে জবাব দিবো। অবশ্য ওর আর এখন আমার লাইফ নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। যদি থাকতো তাহলে
এই ভাবে……….
পুরোটা বলার আগেই আকাশ বলে উঠলো…….
আকাশঃ-এতো ভেবে লাভ নেই। যা হবে অবশ্যই ভালো হবে। তোমার মাকে তো পিরে পাবে তাইনা??
পর্ব০২ এর লিংক। 👇👇
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=133086395237741&id=111134014099646
মেঘ ভাবতে লাগলো…একটা সাক্ষরের মাধ্যমে আমি
আমার সব কিছু হারাতে যাচ্ছি। তবে যাই হোক এর কারনে তো আমার মাকে ফিরে পাবো। এটাই আমার কাছে অনেক।
অবশেষে মাকে বাঁচাতে গিয়ে আজ নিজের জীবনকে চুক্তির ভিতরে নিয়ে নিলাম।
হুট করে মেঘ এগ্রিমেন্ট পেপারে সাইন করে কাগজ টা আকাশের হাতে দিলো। আকাশ সেটার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।
তারপর আকাশ এগ্রিমেন্ট পেপার আলমারিতে রেখে মেঘ কে নিচে আসতে বলে নিজ রুম থেকে বের হয়ে নিচে চলে গেলো।
মেঘ খুব জোরে কান্না করতে লাগলো। আজ সব শেষ হয়ে গেলো সব। অবশেষে বিয়ে টা সম্পুর্ণ হলো।
বিয়ে শেষ করে কাজী চলে গেলো।। মেঘ আকাশকে বলতে শুরু করলো……….
চলবে কি….??