চুক্তির বউ যখন প্রেগন্যান্ট পর্ব-০৬

#গল্পঃ_চুক্তির_বউ_যখন_প্রেগন্যান্ট_পর্ব_৬

অজানা ভালোবাসার গল্প।

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।

একটু পর দরজা খোলার আওয়াজ। আকাশ ভিতরে যাবে তখনই চোখ যায় তার মায়ের দিকে। তারপর চোখ থেকে অবিরাম জল গড়িয়ে পড়ছে আকাশের।

নিজের চোখে বিশ্বাস করতেই পারছে না যে এটা তার মা। এক ছুটে মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আকাশের এমন কান্না দেখে তার মা বলে উঠলো……

মামনিঃ-পাগল ছেলে কান্না করছিস কেনো…??

আকাশঃ-মামনি এটা কি ভাবে সম্ভব হলো..??

আকাশ কান্না করতে করতে তার মায়ের পায়ের দিকে ইশারা করে। আকাশের কান্নার কারন হচ্ছে সে তার মাকে প্রায় ৩ বছর পর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছে।

মাকে এই অবস্থায় দেখে আকাশ যে কতটা খুশি হয়েছে তা বলে বুঝানো যাবে না। এরপর আকাশ তার মাকে বলে উঠলো………

________
যারা কষ্ট করে গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট করেন, তাদের প্রতি অন্তরের অন্তস্তল থেকে ভালোবাসা রইলো😍
|||
আর যারা চুপি চুপি গল্প পড়ে লাইক কমেন্ট না করে কেটে পড়েন তাদেরকে বলছি আপনার একটা লাইক কমেন্ট আমার মনে গল্প লিখার ইচ্ছা শক্তি বৃদ্ধি করে।
|||
রিসপেন্স না ফেলে গল্প লিখার ইচ্ছা শক্তি হারিয়ে যায়।
আপনাদের আগ্রহ দেখলে অনুপ্রেরণা ফেলে পরের পর্ব আগামী কালকে পাবেন ইনশা-আল্লাহ। আশাকরি এই পর্বে যথেষ্ট ভালো রিসপেন্স পাবো।
গল্পের মাঝে বিরক্ত করার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত🙏🙏_____ইতিঃ আব্দুল্লাহ আল শাহজালাল।

আকাশঃ-মামনি তুমি ভালো হয়ে গেছো। ইয়াহুহ আমার মামনি আবার হাঁটা চলা করে…??

আকাশ তার মাকে ধরে চারদিকে ঘুরছে আর চিৎকার করে কথাটা বলেছে। এরপর তার মা বলে উঠলো…..

মামনিঃ-আকাশ পড়ে যাবো থাম এবার…..??

আকাশঃ-মামনি তোমার পা ঠিক হলো কবে…??

মামনিঃ-এটার জন্য ক্রেডিট মেঘের…??

আকাশঃ-মেঘ কি ভাবে তোমার পা…??[পুরোটা বলতে না দিয়ে]

মামনিঃ-সেটা পরে বলছি আগে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে আয়..??

আকাশঃ-ওকে আমি এক্ষুনি আসছি….??

আকাশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এলো। এর মাঝেই মেঘ আকাশের জন্য শরবতের গ্লাস
নিয়ে আসলো। এসে শরবতের গ্লাস রাখলো। যেই
চলে যাবে ঠিক তখনই আকাশ মেঘকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো……..

আকাশঃ-থ্যাংক ইউ মেঘ..??

মেঘঃ-কিসের জন্য….??

আকাশঃ-মামনিকে সুস্থ করে তোলার জন্য…??

মেঘঃ-ওহহ মাকে সুস্থ করার জন্য থ্যাংকস দিয়ে ছোট করতে চাইছেন…??

আকাশঃ-আসলে ঠিক সেটা নয় মেঘ…??

মেঘঃ-আমার বুঝা হয়ে গেছে। মেয়ে মাকে সুস্থ করার জন্য মায়ের সেবা করেছে আর আপনি সেটাকে অন্য ভাবে নিলেন…??

আকাশঃ-মেঘ এটা আমি কখন বললাম। আমি শুধু বলতে চেয়েছি হাজার চেষ্টা করেও আমি মামনিকে
সুস্থ করতে পারিনি। আর তুমি মামনিকে ৩ মাসের মধ্যেই সুস্থ করে তুললে….??

মেঘঃ-আর বুঝাতে হবে না। শরবত খেয়ে নিচে আসুন খাবার ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে…??

আকাশঃ-ট্রাস্ট মি মেঘ, আমি ওভাবে বলিনি..??

মেঘ আর কিছু না বলে নিচে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর আকাশ খাবার খেতে নিচে যায়। খাবার টেবিলে বসলে তার মা নিজ থেকেই বলতে থাকে…….

মামনিঃ-তুই চলে যাওয়ার পরে বউ মা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে দিনের পর দিন আমার সেবা করেছে। প্রতিদিন ২বার করে পায়ে মালিশ করতো
টাইম মতো ঔষধ খাইয়ে দিতো…??
|||
মাঝে মাঝে ঘুম পারিয়ে দিতো। প্রতিদিন ভোর ৫টায়
আর সন্ধার আগে ২ বার করে পার্কে নিয়ে যেতো।
হাতে হাত রেখে হাঁটতে শিখাতো।
|||
একটা সময় পায়ের টান গুলো হালকা কমতে থাকে।
ডাক্তারের ট্রিটমেন্টও এর সাথে ছিলো। এই ভাবে
ধীরে ধীরে পায়ের ফুলা গুলো কমতে থাকে।একদিন তো উইল চেয়ার থেকে পড়ে গেছিলাম।
|||
মেঘ যখনই আমাকে তুলতে যাবে তার আগেই আমি নিজে নিজে উঠার চেষ্টা করি। এরপর থেকে একটু
একটু করে হাঁটতাম। আর এখন সম্পুর্ণ সুস্থ সবই আমার এই মায়ের জন্য..???

মেঘকে উদ্দেশ্য করে কথাটা বললো। মেঘ এতোক্ষণ পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। আকাশ মেঘের দিকে একবার তাকায় আবার মায়ের দিকে তাকায়।

আকাশের তাকানো দেখে মেঘ মাথা নিচু করে ফেলে। এরপর আকাশের মা বলতে থাকে…….

মামনিঃ-মেঘ না থাকলে আজ আমি হাঁটতেই
পারতাম না…??

মেঘঃ-মা কি সব ফালতু কথা বলছেন,আপনার হাঁটার পিছনে আপনার মনের জোরটাই ছিলো সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি তো শুধু আপনার লাঠি হিসেবে কাজ করেছি।
|||
আপনার মনে আবারো স্বাভাবিক হওয়ার ইচ্ছে শক্তি
ছিলো তাই আপনি শতবার পড়ে যাওয়ার পরেও হার মানেন নি। আর তার ফল হিসেবে আজ আপনি হাঁটা চলা করতে পারছেন..??

মামনিঃ-তোর সাথে কথায় পারবো না। এখানে এসে বস আজ আমি তোকে নিজ হাতে খাইয়ে দিবো..??

মেঘঃ-আপনি খেয়ে নিন আমি পরে খাবো….??

মামনিঃ-মায়ের কথা অমান্য করে আয় এখানে..??

মেঘঃ-সরি মা আর এমনটা হবে না…??

এরপর মেঘ মায়ের চেয়ারের পাশে বসলো। মিলি এসে
কি লাগবে না লাগবে দেখে গেলো। আকাশের মা ভাত
মেখে মেঘের মুখের সামনে তুলে ধরলেন। মেঘ এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেনো বিশ্বাসই করতে পারছে না।

আজ অনেক দিন পর মেঘ তার মায়ের হাতে খাবার খাবে,, সেই খুশিতে মেঘের চোখের কোনে অশ্রু ধরা দিলো। মেঘের চোখে পানি দেখে মামনি জিজ্ঞেস করলো………

মামনিঃ-কিরে মা কান্না করছিস কেনো…??

মায়ের কথা শুনে আকাশ চোখ তুলে তাকিয়ে দেখলো মেঘ সত্যি কান্না করছে। আকাশ বুঝতে পারলো না মেঘ হটাৎ করে কেনো কান্না করছে।

আকাশ বুঝতেই পারলো না মেঘের কান্নার রহস্য কি। মেঘ কান্না করেই যাচ্ছে থামার কোনো নিশানা নেই।
মেঘের এসন কান্না দেখে মামনি বললো……..

মামনিঃ-পাগল মেয়ে এভাবে কেউ কান্না করে…??

মেঘঃ-মা 😭😭😭[ কান্না করেই যাচ্ছে ]

অনেক দিন পর শ্বাশুড়ি মায়ের হাতে খাবার খাচ্ছে।
যেনো মনে হচ্ছে খুব আদর করে মেঘের মা মেঘকে খাইয়ে দিচ্ছেন। মেঘের কান্না থামছেই না মামনি
এবার মেঘের চোখে পানি মুছে দিয়ে বললো…….

মামনিঃ-ভাতের প্লেটে চোখের জল ফেলতে নেই মা।
নে হা কর আর কান্না করিস না…???

মেঘঃ-হুমম..??

এরপর সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করলো। আকাশ ও তার মা বসে বসে গল্প করছে। হুট করে আকাশের মা বলে উঠলো………

মামনিঃ-আকাশ কালকের তারিখ টা তোর মনে আছে…??

আকাশঃ-কালকের তারিখ….??

আকাশ একটু ভাবনায় পড়ে যায়,, কালকে কি সেটা নিয়ে। কিছুক্ষণ পরে যখন মনে পড়লো কালকে কি।
তখনই আকাশ তার মায়ের দিকে একপলক তাকায় মুহুর্তেই ভয়ানক দিনটার কথা মনে পড়ে যায়?

সাথে সাথে আকাশ তার মায়ের পাশ থেকে উঠে সোজা
ছাদে চলে গেলো। আর এক মুহূর্ত মায়ের পাশে থাকলে নিজেকে সামলানো অনেক বেশি কষ্ট কর হয়ে যাবে।
আর আকাশের মাও পারবে না নিজেকে সামলাতে।

আকাশ চলে যাওয়ার সাথে সাথে মেঘ তার শ্বাশুড়ির কাছে গিয়ে বসে আর জিজ্ঞেস করে……….

মেঘঃ-মা কালকে কি আছে আর উনি এভাবে চলে গেলেন কেনো…??

মেঘের শ্বাশুড়ি কান্না করছে কোনো কথা বলছে না।
মেঘের শ্বাশুড়ির কান্না দেখে মেঘ বললো……..

মেঘঃ-মা কি হয়েছে কান্না করছেন কেনো…??

মামনিঃ-জানতে চাস কালকের দিনে কি হয়েছে…..??

মেঘঃ-কি হয়েছে…??

মামনিঃ-কালকে আকাশের বাবার মৃত্যু বার্ষিকী…??

মেঘঃ-কত বছর হয়েছে…??

মামনিঃ-কাল ৩ বছর পুর্ণ হয়েছে…??

মেঘঃ-ওহহহ। মা বাবা মারা গেছেন কিভাবে, উনার কি কোনো রোগ ছিলো…??

মামনিঃ-না রে মা। একটা এক্সিডেন্টে সব শেষ করে দিলো। ওই এক্সিডেন্টের পর থেকে আমি হাঁটা চলা করতে পারতাম না। আর আকাশ ওই দিনের পর
থেকে নিজেকে প্রতিটা মুহুর্ত অপরাধী ভাবছে..??

মেঘঃ-এক্সিডেন্টে উনি নিজেকে অপরাধী কেনো ভাববে এটা হয়তো আল্লাহর ইচ্ছে, কেনো উনি নিজেকে কষ্ট দিচ্ছেন। কালকের দিন থেকে উনি হাসবে। উনাকে যে আগের মতো হতেই হবে.??

মামনিঃ-তুই পারবি তো মা…??

মেঘঃ-আমাকে পারতেই হবে। মা আমি একটু বাহিরে যাবো আমার একটু কাজ আছে। চিন্তা করবেন না
সন্ধা হওয়ার আগেই আমি চলে আসবো…??

মামনিঃ-ঠিক আছে মা তবে যেখানে যাবি সাবধানে কেমন…??

এরপর মেঘ নিজের পার্টস আর কিছু টাকা নিয়ে বের হয়ে গেলো। বিকেল গরিয়ে সন্ধার কিছু সময় আগে মেঘ বাসায় ফিরে আসে। রুমে গিয়ে দেখে আকাশ রুমে নেই তাই মিলিকে জিজ্ঞেস করে………

মেঘঃ-মিলি তোর ভাইজান কে দেখছিস..??

মিলিঃ-ভাইজান তো সেই দুপুরের পর থেকে ছাদে এখনো নিচে আসেনি…??

মেঘঃ-ওহহ আচ্ছা ঠিক আছে….??

মেঘ দ্রুত করে ছাদে চলে গেলো।। ছাদে গিয়ে দেখলো আকাশ দাঁড়িয়ে আছে আকাশের দিকে তাকিয়ে। মেঘ অনেকক্ষণ ধরে আকাশের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। কিন্তু আকাশের এক মুহূর্তের জন্য অনুভব হয়নি তার পাশে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। এরপর মেঘ নিজ থেকেই আকাশের ঘাড়ে হাত দিয়ে বলতে শুরু করে……

মেঘঃ-এখানে দাঁড়িয়ে থাকবেন….??

আকাশ পিছনে ফিরে মেঘকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করে। পাগলের মত কান্না করছে আর বলছে…..

আকাশঃ-বিশ্বাস করো মেঘ আমি বাপিকে মারিনি..?? কিভাবে যেনো এক্সিডেন্ট টা হয়ে গেলো। আমার জন্য আমার মামনি ৩ বছর নিজের পায়ে হাঁটতে পারেনি.?
|||
আমার জন্য মামনির গায়ে সাদা শাড়ি জড়াতে হলো।
আমি অনেক চেষ্টা করেছি বাপিকে বাঁচানোর, কিন্তু বাঁচাতে পারিনি।

মেঘঃ-প্লিজ একটু শান্ত হন…??

আকাশঃ-জানো বাপি মারা যাওয়ার কিছুদিন পর জানতে পারলাম… কেউ একজন আমাকে মেরে ফেলার জন্য গাড়ির ব্রেক ফেইল করিয়ে রাখে।
|||
আর বাপি সেটা জেনে যায়। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে সেদিন বাপি নিজেকে শেষ করে দিলো
বাপির মৃত্যুর জন্য আমি দায়ী মেঘ আমি দায়ী.??

মেঘঃ-প্লিজ আপনি একটু শান্ত হন।। আপনি নিজেকে কেনো দোষী ভাবছেন। দেখুন কেউ যদি আপনার ক্ষতি করতে,আপনাকে মেরে ফেলতে চায় আর সেটা আপনার বাবা জেনে গিয়েও কিভাবে হাত ঘুটিয়ে বসে থাকবেন..??
|||
আপনার বাবার এই সবকিছুই তো আপনার জন্য। সেই
আপনাকে যদি উনি সুখ দিতে না পারেন তাহলে উনি নিজেকে খুব অপরাধী মনে করবেন। আর শুনুন আজ
থেকে নিজেকে কোনো দোষ দিবেন না.???
|||
কারন আপনি নিজে খুব ভালো করেই জানেন আপনি দোষী নন। শুধু শুধু নিজেকে কেনো নিজেক কষ্ট দিচ্ছেন। আর আপনি এটা জানার চেষ্টা করেন, কে আপনাকে সেদিন মারতে চেয়েছিলো..??

আকাশঃ-কি ভাবে জানবো আমি…???

মেঘঃ-আমার মন বলছে মা কিছু একটা আড়াল করছে উনি পারবেন আপনাকে আসল অপরাধীর কথা বলতে। যদি উনি জেনো থাকেন তাহলে.??

আকাশঃ-হতে পারে। এই জন্যই মামনি বারবার অফিস এর বিষয় নিয়ে চিন্তায় থাকেন। আমি কত বুঝাই আমি সবকিছু ঠিকঠাক মত দেখা শোনা করছি। তবুও কি যেনো চিন্তা করে..??

মেঘঃ-হুমম তাহলে কালকে থেকে আমরা খুঁজবো কে এর পিছনে আছে….??

আকাশঃ-তুমি আমার সাথে থাকবে…???

মেঘঃ-হ্যা কেনো থাকবো না। এখনো আমাদের চুক্তির এক বছর পুর্ণ হয়নি যে মাঝপথে আপনাকে ছেড়ে
চলে যাবো। যতদিন চুক্তির মেয়াদ আছে ততদিন
আমি আপনার সাথেই থাকবো…??

আকাশঃ-ওহহহ। চুক্তি শেষ হলে চলে যাবে…??

মেঘঃ-হুমম যেতে তো আমাকে হবেই। কারন এই চুক্তিটা যে শুধু মাত্র এক বছরের জন্য ছিলো.?

মেঘ মনে মনে বলতে থাকে…..এই চুক্তি কেনো দেওয়া এক বছর কেনো। যদি আমার মৃত্যুর পর আরো
কোনো জনম থাকে সেই জনমেও আমি আপনাকে ছেড়ে যাবো না। জানিনা এই চুক্তিতে কি আছে কেনো এই চুক্তি কি কারন আছে তার শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আমি অতীতের ভুলটা আর করতে চাইনা।। আমি আর হারাতে পারবো না কিছু। কারন আমার সেই শক্তি নেই।

তবে ভালোই হয়েছে অতীতে যদি ভুল টা না করতাম তাহলে চোখ খুলতো না। জানতেও পারতাম না আর বুঝতেও পারতাম না আসল ভালোবাসা টা কি।

আকাশ দরজা খুলে রুমে ডুকে চারদিকে তাকিয়ে মেঘ
বলে চিৎকার দিয়ে ডাকতে লাগলো। মেঘ আকাশের চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি করে আকাশের রুমে আসে।
আকাশ মেঘকে উদ্দেশ্য করে বলে……….

আকাশঃ-এসব কি মেঘ…??

আকাশ রুমের ভিতরটা দেখিয়ে কথাটা বললো।। মেঘ পুরো রুমটা সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে। চরদিকে মোমবাতির নিবু নিবু আলো পুরো রুমটার সুন্দর্য যনো দশগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।

শুধু মোমবাতি নয়….সামনে ছোট টেবিলে ছোট একটা কেক আর তাতে লেখা ছিলো………

________Happy Birthday My Dear Akash_______

এগুলো দেখে আকাশের মাথায় রক্ত চেপে যায়?? মেঘ কিছুটা ভয়ে ভয়ে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে আর বলে উঠে…….

মেঘঃ-আসলে একটু পর তো আপনার জন্মদিন তাই..??

আকাশঃ-কে বলেছে এসব করতে আমি বলেছি। আমি
বলেছি আমার জন্মদিনে আমাকে উইশ করো। আমি বলেছি আমার জন্মদিনে পার্টি করো। আমি বলেছি আমার জন্মদিনে আমাকে সারপ্রাইজ দাও..??

আকাশ ধমক দিয়ে কথা গুলো বললো।। মেঘ কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না। আকাশ মেঘকে ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালে সাথে ধরলো…????

এমন ভাবে হাত দুটি চেপে ধরেছে মেঘ ব্যাথায় চিৎকার দিয়ে উঠলো। মেঘ ব্যাথা পাচ্ছে দেখে আকাশ মেঘের হাত ছেড়ে দেয় আর বলতে থাকে……..

আকাশঃ-কেনো এসব করছো একবার আমাকে বলতে পারতে…??

মেঘঃ-সরি আমি বুঝতে পারিনি আপনি এভাবে রিয়েক্ট করবেন। একটু শান্ত হয়ে আমার কথা গুলো শুনুন..??

আকাশঃ-কি শুনবো আমি। আমার কোনো কিছু শুনার ইচ্ছে নেই আমাকে একা থাকতে দাও..??

মেঘঃ-দূরর একা থাকবেন বলে কি আমি এতকিছু করলাম। তখন কি বললেন আপনি আর এখন কি বলছেন….???

আকাশঃ-তখন ভাবনার বাহিরে ছিলো তুমি আমার জন্মদিনে এমন কিছু করবে..???

মেঘঃ-হুমম তাই নাকি। আচ্ছা বাদ দিন এখন আসুন কেক কাটবেন…??

এই কথা বলে মেঘ আকাশের হাত ধরে টানতে টানতে কেকের সামনে নিয়ে দাঁড় করায় ঠিক তখনই আকাশ বলে উঠলো…….

আকাশঃ-কেনো এমন করছো মেঘ। এই দিনটা আমি ভুলে যেতে চাই, তুমি কেনো বুঝো না…??

মেঘ আলতো করে আকাশের গালে এক হাত রাখলো।।
অন্য হাতে আকাশের এক হাত ধরে আছে। আর বলতে শুরু করে……

মেঘঃ-আপনি তো কোনো রকম অন্যায় করননি তাহলে আপনি কেনো কষ্ট পাবেন। আর আমি যখন জেনে গেছি বাবার মৃত্যুর পিছনে কেউ জড়িত তখন তাকে খুঁজে বের করা আমার দায়িত্ব। আর আজ থেকে আপনার মুখে হাসি ফোটানো আমার দায়িত্ব….???

আকাশঃ-এক মাসের জন্য…??

মেঘঃ-হোক না এক মাস তাতে কি। এই এক মাসকেই
আমি কাজে লাগাবো…??

আকাশঃ-কি করবে এই এক মাসে, যা আমি তিন বছরেও পারিনি…??

মেঘঃ-উফফফ সেটা আমি দেখবো আসেন তো আগে কেক কাটবেন। আমি মাকে কথা দিয়েছি আমার
কথা আমাকে রাখতে দিন প্লিজ…???

মেঘ এর কথায় আকাশ আর কিছু না বলে… ছুরি হাতে নিয়ে কেক কাটে। আর মেঘ হাততালি দিয়ে আকাশকে উইশ করতে থাকে। অন্য দিকে আকাশের মা দরজার পাশে থেকে এই সব দেখে মুখে একটা তৃপ্তি মাখা হাসি নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়।

তারপর মেঘ আর আকাশ অনেকক্ষণ গল্প করলো।
সেদিনের পর থেকে আকাশ অনেকটা বদলে গেছে। আগের মতো হাসি আনন্দ নিয়ে মেতে থাকে।

কিন্তু একটাই চিন্তা আর মাত্র কয়েকটা দিন পরেই মেঘ চলে যাবে।

তাহলে আকাশ কি ব্যার্থ হলো মেঘকে তার ভালোবাসা বুঝাতে। হয়তো আকাশ ব্যার্থ হলো নয়তো না। তাহলে কি পারবে না আকাশ মেঘকে আটকাতে। তার জীবন সঙ্গী হিসেবে পথ চলার সাথী করতে।

অন্য দিকে মেঘ একটু একটু করে জানার চেষ্টা করছে কে মারার প্লান করতে পারে আকাশকে। কে ওর এত বড় ক্ষতি করতে চায়।

পর্ব০৭ এর লিংক 👇👇
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=137348911478156&id=111134014099646

ধীরে ধীরে মেঘ সব রহস্য জানতে পারলো। মেঘ যখন জানতে পারলো এর পিছনে কার হাত আছে তখন সে বিশ্বাসই করতে পারলো না যে মেঘের সামনে এমন কিছু আসবে আর মেঘকে বিপদের দিকে ঠেলে দিবে।

আজ মেঘ আর আকাশের বিয়ের এক বছর পুর্ণ হবে।
একদিকে আকাশ ভাবছে মেঘকে কিভাবে ডিবোর্সের
কথা বলবে.? অন্যদিকে মেঘ চাইছে আজ এমন কিছু হোক যেনো আকাশ মেঘকে কোনো ভাবেই না ছাড়ে।

পরের দিন সকাল বেলায় মেঘ কাউকে কোনো কিছু না বলে বের হয়ে যায়। সারাদিন পার হয়ে যাচ্ছে মেঘের বাসা পেরার কোনো নাম নেই।

আকাশ কয়েক বার মেঘের ফোনে কল দিলো…কিন্তু বারবার ব্যার্থ হয়। কারন মেঘের মোবাইল নাম্বার বন্ধ দেখাচ্ছে।

আকাশ পাগলের মতো হয়ে যাচ্ছে এই ভেবে…শেষমেশ মেঘ কি চলে যাবে আকাশকে ছেড়ে। আকাশ আর ওর
মা ভাবতেছে পুলিশকে রিপোর্ট করবে। এর মধ্যেই আকাশের মোবাইলে একটা কল আসে। কলটা রিসিভ
করতেই একটা লোক বললো…….

চলবে কি….??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here