তুমি আসবে বলে পর্ব -৩৩+৩৪+৩৫+৩৬

#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৩৩

আনভিকে দেখে সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় কি হলো এতটুকু সময়ে। মেয়েটা কেমন নেতিয়ে গেছে। রোদ অন্তুকে অসহায় চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে অন্তু কান্না করতে থাকে।রোদ কাপা কাপা হাতে আনভিকে কোলে তুলে নিয়ে বলতে লাগলো…

রোদঃ আম্মু এই আম্মু দেখো আমার দিকে তাকাও। চোখ বন্ধ করবে না নিঃশ্বাস নাও জোরে জোরে।

কিন্তু আনভি কথা বলছে না চোখ বন্ধ করে কেমন ছটফট করছে তা দেখে অন্তু কান্না করতে করতে বললো… আমি কিছু করিনি সত্যি। শুধু পায়েস খাইয়েছি বিশ্বাস করো।

রোদ অন্তু কথায় তার দিকে চেয়ে থাকে অন্তু আনভির অবস্থা দেখে কেমন যেন করছে অন্তুকে দেখে নরমাল মনে হচ্ছে না কেমন হাসফাস করছে হাইপার হতে লাগলো। রোদ চোখের ইশারায় অরনিকে তার কাছে আসতে বলে অন্তুর খেয়াল রাখতে অরনি এসে অন্তুকে পিছন থেকে ধরতেই অন্তু জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে বললো…

অন্তুঃ অরু সত্যি আমি কিছু করিনি হঠাৎ করে আনভি নিঃশ্বাস নিতে পারছে না দেখে আমি ভয় পেয়ে যায়। [বলে কান্না করতে লাগলো]

অরনিঃ দিদিয়া কিছু হয় নি আনভির এখনি ভালো হয়ে যাবে দেখিস।

অন্তু ছলছল চোখে অরনির দিকে তাকিয়ে বললো… সত্যি। অরনি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো কিন্তু তাতেও কিছু হলো না সে কান্না করতেই থাকে। রোদ প্রাপ্য দিকে তাকিয়ে বললো..

রোদঃ প্রাপ্য জলদি গাড়ি থেকে ঔষধের বক্সের মধ্যে থেকে আনভির এলার্জির ইনজেকশন নিয়ে আয় সময় নেই যা।

প্রাপ্যঃ হ্যাঁ ভাইয়া।

প্রাপ্য দৌড়ে চলে যায় ঔষধ আনতে। রোদ আনভিকে কোলে নিয়ে ড্রইংরুমে নিয়ে এসে সোফায় শুয়ে দিয়ে তার পাশে বসে, অন্তু তার পিছে পিছে এসে আনভির মাথা তার কোলে রাখে। রোদের কথায় এখন সবাই বুঝতে পারে কি হয়েছে আসলে (হ্যা আনভির এলার্জি অ্যাটাক হয়েছে তাই এমন করছে) রোদ অন্তুকে অশ্বাস দিয়ে বলে…

রোদঃ অন্তু আনভির কিছু হয়নি এখনি ইনজেকশন দিলে ঠিক হয়ে যাবে তুমি শান্ত হও প্লিজ।

রোদের কথায় অন্তু শান্ত হলো না বরং কান্না করতে থাকলো। প্রাপ্য ইনজেকশন নিয়ে এসে রোদকে দিলে রোদ দেড়ি না করে আনভির ছোট হাতে ইনজেকশনটি পুশ করে তা দেখে অন্তু চোখ মুখ খিঁচে রাখে। রোদ ইনজেকশন দিয়ে সিরিনজটা টেবিলর ওপর দেখে দীঘ নিঃশ্বাস নে। কিছু সময় পর আনভি স্বাভাবিক গতিতে নিঃশ্বাস নিলে রোদ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সাথে সবাই কিন্তু অন্তু এখনো চোখে জল নিয়ে আনভির দিকে তাকিয়ে আছে। একটু আগেও হেসে খেলে বেরা ছিলো কিন্তু এখন কেমন নেতিয়ে গেছে ফর্সা মুখ লালা হয়ে গেছে কি কষ্টই না পেয়েছে ছোট প্রানটি অন্তু এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আনভির দিকে কেন যানি আনভিকে কষ্ট পেতে দেখে তার কলিজা কেঁপে উঠলো মনে হচ্ছিল নিজের প্রান পাখি উড়ে যাবে। রোদ অন্তুর দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বাকিদের দিকে তাকিয়ে দেখে সবাই জানতে ইচ্ছুক কি হয়েছে আসলে। রোদ বললো….

রোদঃ আসলে আনভির বাদাম আর কিচমিচে এলার্জি আছে তাই এমন করছিলো কিন্তু এখন ঠিক আছে আপনারা প্লিজ টেনশন করবেন না ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে।

আদিঃ আসলে আমরা কেউ জানতাম না যে আনভির এলার্জি আছে সরি আমাদের খোঁজ নেওয়া উচিৎ ছিল।

দিদুনঃ রোদ বাবা আমাদের ক্ষমা করো আমরা সত্যি এটা ভাবিনি এমনটা হবে।

রোদঃ প্লিজ আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে আমাকে ছোট করবে না এটা নিছক একটা দূর্ঘটনা এর বেশি কিছু না।

আকাশঃ রোদ তোমার মন ভালো তাই বলছো কিন্তু দোষটা আমাদের আমাদের খেয়াল রাখা উচিৎ ছিলো। আমাদের ভুলের জন্য আজ আনভির এই অবস্থা।

অন্তু কাঁপা কাঁপা গলায় বললো… সব দোষ আমার না আমি পায়েসে বাদাম দিতাম না এমন হতো। দাদাভাই দেখো না আনভি কেমন নির্জীব হয়ে গেছে কথা বলছে না কেমন মুখ শুকিয়ে গেছে।

অন্তুর কথা শুনে সবাই বুঝতে পারে অন্তু কতোটা আঘাত পেয়েছে আনভির অবস্থা দেখে নিজেকে দোষ দিচ্ছে। আদি অন্তুর কাছে আসতে নিলে রোদ গিয়ে অন্তুর হাত ধরে অন্তু আনভির থেকে চোখ সরিয়ে রোদের দিকে তাকায়। রোদ অন্তু চোখের জল দেখে চোখ বন্ধ করে নেয় তার বুকে গিয়ে লাগছে অন্তুর কান্না কেন জানে না। রোদ তাকিয়ে বললে….

রোদঃ অন্তু এটা জাস্ট একটা অ্যাক্সিডেন্ট এর বেশি কিছু না। এটা যে কারোর থেকে হতে পারতো তাই নিজেকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন। আম্মু ঠিক হয়ে যাবে।

অন্তু শুধু রোদের কথা গুলো শুনলো কিছু বললো না রোদ অন্তুর চোখের জল মুছে দেয়। সবাই রোদ আর অন্তুর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে রোদ সরে আসে অন্তুর থেকে।

আনভিঃ মা মাম্মাম..[কাঁপা গলায়]

আনভির অস্পষ্ট ডাক অন্তুর বুকে গিয়ে লাগে তাড়াতাড়ি করে অন্তু আনভিকে তার কোলে নিয়ে সারা মুখে অজস্র চুমো দিতে লাগলো। অন্তুকে আনভির প্রতি এতোটা দূর্বল দেখে সবাই হতবিহ্বল কেউ বিশ্বাস করতে পারছে না কিছু দিনের পরিচয়ে এতোটা এ্যাটাচ হতে পারে যদি না তাদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক থাকে কিন্তু তাদের মধ্যে তো আদোও সেটা নেয়। অন্তু বললো…

অন্তুঃ মামুনি তুমি ঠিক আছো। সরি মামুনি আমার জন্য তোমাকে কষ্ট পেতে হলো।

আনভি মিটিয়ে যাওয়া গলায় বললো… মাম্মাম

অন্তু স্তব্ধ হয়ে যায় এই ডাকে তার বুক শান্ত হয়ে যায়। রোদ আনভি কথা শুনে অন্তুর দিকে তাকায় অন্তু স্নিগ্ধ তৃপ্তি পাওয়া মুখ দেখে সে তৃপ্তি পায়। রোদ সবাইকে বললো…

রোদঃ আমরা এখন যায় আম্মুকে রেস্ট করতে হবে তাই বাসায় যাওয়াটা দরকার। আমরা পরে আবার আসবো।

সবাই রোদের কথায় এক মত আনভির রেস্ট দরকার। রোদ অন্তু কোল থেকে আনভিকে নিলে অন্তু রোদের চোখে তাকায় রোদ সেই চোখ দেখে কেপে ওঠে। অন্তু ছলছল চোখের দৃষ্টি নামিয়ে নিয়ে দৌড়ে তার রুমে যায় সবাই তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। রোদ অরনিকে ইশারায় কিছু বলে অরনি ও অন্তুর সাথে যায়। সবার থেকে বিদায় নিয়ে রোদ আনভিকে নিয়ে চলে যায় বাড়িতে…..
________________________________

অন্তু নিজের রুমে এসে কান্না করতে লাগলে তার কিছুতেই আনভিকে ছাড়তে ইচ্ছা করছিলো না কিন্তু সে কি করবে তার কোন অধিকার নেয় আনভিকে তার কাছে রাখা। বার বার আনভির মাম্মাম ডাক তার কার্ণপর্নে বাজছে। তার মেয়েটা থাকলে সেও তো আনভির বয়সি হতো সেও তাকে মাম্মাম বলে ডাকতো কিন্তু সে তাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক দূরে ভেবেই আরো কান্না করতে লাগলো সে। হঠাৎ কাঁধে হাত পেতেই সে চমকে যায় পেছনে তাকিয়ে অরনিকে দেখো তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললো…

অন্তুঃ অরু আমার মেয়েটা বেঁচে থাকলে সেও আনভির মতো আমাকে মাম্মাম বলে ডাকতো তাই না। আনভি যখন আমাকে মাম্মাম বলো তখন আমার সারা শরীর ঠান্ডা হতে হয়ে গেছিলো কেমন শান্তি অনুভব করতে লাগলাম। যখন রোদ তাকে নিয়ে নিলো তখন অনেক কষ্ট হচ্ছিল আর আমার মনে হচ্ছিল আমার প্রাণটা কেউ আমার কাছ থেকে কেরে নিচ্ছে।

অরনি অন্তুকে কি বলে শান্তনা দেবে সে জানে না। একটা মেয়ের কাছে তার বাচ্চা কি সেটা শুধু তার মা যানে আর কেউ না। অন্তুর ক্ষেত্রেও তাই আজ যদি তার বেবি তার কাছে থাকতো তাইলে সে এমন ভাবে আনভির জন্য কান্না করতো না। অরনি অন্তুকে শুয়ে দিয়ে তার মাথায় হাত বুলাতে লাগে অন্তু ফোপাঁতে ফোপাঁতে ঘুমিয়ে যায় অরনি তা দেখে তার ফোন থেকে একটা মেসেজ লিখতে লাগলো… দিদিয়া ঠিক আছে এখন ঘুমাছে কিন্তু অনেক দিন পর তার মেয়ের কথা মনে পরেছে৷ প্যানিক অ্যাটাক হয় নিই কিন্তু কষ্ট পেয়েছে আজ খুব। বলে কাওকে সেন্ড করে মিনিট কয়েক পর রিপ্লাই আসে… ওর খেয়াল রাখো আর কিছুতেই একা থাকতে দেবে না। মেসেজ দেখে অরনি দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে অন্তুর মাথার পাশে বসে রইলো…
______________________________

দিদুনঃ আজ আল্লাহ অশেষ শুকরিয়া আনভির কিছু হয় নি। আনভির কিছু হলে অন্তুকে সামলানো যেতো না।

আকাশঃ জ্বি আম্মাজান আপনি ঠিক বলেছেন। আর রোদের উপস্থিত বুদ্ধিজ্ঞান আছে বলে কিছু হয় নি আসলেই ছেলেটা হীরের টুকরো না হলে এতখন না জানি কি কান্ড করতো তার মেয়ের জন্য। আম্মাজান রোদ কিন্তু তার মেয়েকে নিজের জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসে।

আকাশের কথায় সায় দিয়ে আদি বলে… দিদুন চাচ্চু ঠিক বলছে আমিও দেখেছি রোদের লাইফে আনভির ভূমিকা কতেটা।

নিহিতা মির্জাঃ আপনারা কিছু খেয়াল করেছেন না কি যানি না কিন্তু অন্তু কিন্তু আনভির প্রতি অনেকটা দূর্বল হয়ে পরেছে এটা কিন্তু ঠিক না। অন্তু কিন্তু পরে গিয়ে কষ্ট পাবে। আরেকটা জিনিস দেখেছেন আনভির বাদামে আর কিসমিসে এলার্জি আছে যেমনটা অন্তুর ও আছে।

নিহিতা মির্জা কথা শুনে সবাই চিন্তায় পরে যায় নিহিতা কথাটা খারাপ বলে নি। আসলেই সবাই খেয়াল করেছে অন্তু আনভির প্রতি একটু বেশি মায়া কাজ করে এতে অন্তুর অতীতের ক্ষত গুলো তাজা করছে। কেউ আর কিছু বলে না সবাই যে যার রুমে চলে যায়…
________________________________

হ্যালো আনভি এখন ঠিক আছে রোদ..বলে চুপ করে যায় অন্তু। (আসলে মুল্যতো আনভির কি অবস্থা সেটা যানার জন্য অন্তু রোদকে ফোন করে) রোদ অন্তু কন্ঠ শুনে বুঝতে পারে অন্তু এখনো কান্না করছে। রোদ বললো…

রোদঃ অন্তু আম্মু এখন ঠিক আছে প্লিজ আপনি কান্না বন্ধ করুন।

অন্তু চোখের জল মুছে বললো… একটা বার কথা বলা যাবে তার সাথে।

রোদঃ অন্তু আম্মু ঘুমাছে আপনি কাল বাড়িতে চলে আসুন আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছি।

অন্তুঃ না না আপনার গাড়ি পাঠাতে হবে না আমি একলাই চলে যাবো।

রোদঃ ঠিক আছে (কিছুখন চুপ থেকে) অন্তু আপনি ঠিক আছেন তো??

অন্তু রোদের কাতোর গলা শুনে কেঁপে ওঠে সে বলে… আমি ঠিক আছি রোদ আমাকে নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না। আমি রাখছি

রোদঃ হুমম..

অন্তু ফোন রাখতেই রোদ আনভির দিকে তাকায় মেয়েটা গুটিশুটি হয়ে ঘুমিয়ে আছে। বাড়ি আসার পর থেকে ঘুমাছে একটু আগে কিছু খাইয়ে আবার ঘুম এসেছে কিন্তু ঘুমের মধ্যে মাম্মাম কে খুজছে রোদ আনভিকে দেখে কষ্ট হচ্ছে। মাম্মাম থাকতেও আনভি কষ্ট পাচ্ছে আর অন্য দিকে তার মাম্মাম ও তার জন্য কষ্ট পাচ্ছে কবে যে সব ঠিক হবে তবেই শান্তি। রোদ লাইট ওফ করে আনভির কাছে এসে শুয়ে পরে।
__________________________________

অন্যদিকে অন্তু তার পেটে হাত রেখে বলছে..

অন্তুঃ বেবি আমি পঁচা তাই আমাকে রেখে সবাই চলে যায় প্রথমে তোমার পাপা তার পর তুমি। আমি কি এতোই খারাপ যে কেউ আমার কাছে থাকতে চায় না। তোমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেছিলাম কিন্তু কি হলো সেই তুমিই চলে গেলে। এতো কষ্ট করে তোমাকে নিজের মধ্যে রেখেছিলাম তোমার কি একটু মায়া হলো না মাম্মামের ওপর যে তোমার মাম্মাম কি করে থাকবে তোমাকে ছাড়া তুমি না বুঝেই আমাকে একা ফেলে চলে গেলে। তোমরা বাপ বেটি এক ধরনের আমাকে একা ফেলে চলে যাও কিন্তু আমাকে তোমাদের সাথে নিয়ে যাওনা। তোমাদের সাথে আরি…

বলে হু হু করে কান্না করতে লাগলো অরনি দরজার পেছেন থেকে এতখন অন্তুর সব কথা শুনলো তার চোখে পানি তার দিদিয়াকে কষ্ট পেতে দেখে তার ভেতরটা জ্বলছে। একবার দৌড়ে গিয়ে সব সত্যি বলতে ইচ্ছা করছে এতে যদি তার দিদিয়ার কষ্ট কমে কিন্তু পরক্ষনেই তার দিদিয়ার ওপর অন্যায় সব মনে পরতেই নিজেকে গুটিয়ে নেই আর তো কিছু দিনের বেপার তারপরেই তার দিদিয়া সারাজীবনের মতো খুশি থাকবে। অরনি চলে যা সেখান থেকে অন্তু চোখ মুছে বিছানায় শুয়ে পরে তার শুধু আনভির মুখ মনে পরছে। অন্তু চোখ বন্ধ করে থাকে….
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৩৪

সকাল সকাল অমরন ভেঙ্গে ঘুম থেকে জেগে উঠলো আনভি চোখ খুলতেই অন্তুর হাস মাখা মুখ দেখে আনভি অবাক হলো সাথে চোখ ছোট ছোট করে বললো…

আনভিঃ ভালো আন্টি তুমি সত্যি এসেছো??

অন্তু মুচকি হেসে আনভিকে কোলে নিয়ে তার কপালে ভালোবাসর স্পর্শ দিয়ে বললো…

অন্তুঃ হ্যাঁ আমি সত্যি এসেছে।

আনভি খুশিতে আত্মহারা হয়ে অন্তুর সারা মুখে হাত বুলাতে লাগলো অন্তু আনভির কর্মকাণ্ড গুলো দেখছে। আনভি হাত থামিয়ে বললো…

আনভিঃ ভালো আন্টি তুমি আমাকে দেখতে এসেছো। তাইলে তো একটু পর চলে যাবে তাই না।

বলে মন খারাপ করে ফেলো অন্তু আনভির মন খারাপ করতে দেখে বললো…

অন্তুঃ কে বলেছে আমি এখনি চলে যাবো আমি তো আমার আনভি মামুনির সাথে সময় কাটাবো। অনেক সময়।

বলে আনভিকে কাতুকুতু দিতে লাগলো আনভি খিলখিল করে হেসে বললো… সত্যি

অন্তুঃ হ্যাঁ

(কালকের ঘটনার জন্য অন্তু মন শান্ত হচ্ছিল না। কেন জানি আনভিকে নিয়ে তার টেনশন হচ্ছিল তাই সকাল সকাল সে চৌধুরী বাড়িতে আসে দিদুন কে বলে)

আনভি আর অন্তু খুনসুটি করছে ঠিক তখনি রোদ চলে আসে এসে তাদেরকে হাসি খুশি দেখে তার ঠোঁটের কোণে তৃপ্তির হাসি ফুটে। কাল থেকে টেনশন হচ্ছিল খুব অন্তুকে আর আনভিকে নিয়ে অন্তু নিজেকে দোষ ছিলো আনভির অসুস্থ হবার জন্য এখন ভালো লাগছে অন্তুর হাসি খুশি দেখে। রোদকে দেখে আনভি বললো…

আনভিঃ পাপা ভালো আন্টি আজ আমার সাথে থাকবে বলেছে।

আনভির কথা শুনে অন্তু রোদের দিকে তাকালে তাদের চোখাচোখি হয় অন্তু তারাতাড়ি চোখ নামিয়ে নেয় রোদ মুচকি হেসে বলো…

রোদঃ হ্যা আম্মু যানি এখন তুমি ফ্রেশ হয়ে নিচে চলো মালা আন্টি তোমার জন্য খিচুড়ি রান্না করবে তাই তোমাকে খেতে হবে। চলো…

খিচুড়ির কথা শুনে আনভি মুখ কুচকে ফেলে তা দেখে অন্তু হাসতে লাগলো রোদ মুগ্ধ নয়নে অন্তু দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুখন। রোদ অন্তু থেকে চোখ সরিয়ে আনভির দিকে তাকিয়ে বললো..

রোদঃ আম্মু মুখ কুঁচকে ফেলে হবে না খেতে হবে চলো।

আনভিঃ আমি মালা আন্টি খিচুড়ি খাবো না।

রোদঃ কেন আম্মু?

আনভিঃ ভালো হয় না তার খিচুড়ি।

রোদ হতাশ হলো এতখন অন্তু বাবা মেয়ের কথা শুনলো আর মনে মনে হাসলো। অন্তু এবার আনভিকে বললে…

অন্তুঃ আনভি মামুনি আমি খিচুড়ি রান্না করলে খাবে তো তুমি।

অন্তু কথা শুনে আনভি যেন আকাশের চাঁদ পেলো সে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলে সে খাবে। রোদ কিছু বলতে যাবে তার আগে অন্তু আনভিকে ফ্রেশ করাতে নিয়ে যায়। রোদ জানে অন্তু যখন বলছে সে রান্না করবে তাইলে করবে রোদ নিচে চলে যায়। রোদ আজ অফিসে যাই নি বাড়িতে তার বাবাই নেই তাই আনভিকে একা রেখে যেতে পারবে না তাই প্রাপ্যকে অফিসে পাঠিয়ে সে বাড়িতে আছে। এদিকে অন্তু আনভিকে ফ্রেশ করিয়ে নিচে গিয়ে দেখে রোদ ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে তাই সে কিচেনে গিয়ে আনভিকে একটা চেয়ারে বসিয়ে বললো..

অন্তুঃ মামুনি তুমি খিচুড়ি সাথে কি খাবে বলো?

আনভি কিছুখন ভেবে বললো… ডিম ভাজি।

অন্তু হেঁসে এক চুলায় আনভির জন্য খিচুড়ি দিলো অন্যটাতে রোদের জন্য রুটি বানাবে তাই সে রুটি বানানোর প্রস্তুতি করতে লাগলো আর আনভির সাথে গল্প করতে লাগলো। রোদ খেয়াল করে কিচেন থেকে আনভি অন্তুর হাসির শব্দ আছে সে একবার কিচেনের দিকে তাকিয়ে আর নিজের কাজে মন দিলো। ১ঘন্টা পর অন্তু খাবার টেবিলে নিয়ে এসে রোদকে ডাকে রোদ গিয়ে দেখে অন্তু খিচুড়ি বাদেও তার খাবার জন্য রুটি ডিম ভাজি করেছে। রোদ তা দেখে অন্তুকে বলে..

রোদঃ অন্তু এতো কিছু আপনি নিজে করতে গেলেন কেন কাউ কে বলে সে করে দিতো।

অন্তুঃ আনভির জন্য রান্না করছিলাম তাই আপনার জন্যও কিরে দিলাম।

রোদ অন্তুর কথা শুনে মুচকি হেসে খেতে বসে তার প্লেটে রুটি ডিম ভাজি নিয়ে খেতে লাগলো আর অন্তু দিকে চোরা চোখে তাকাতে লাগলো। অন্তু এক মনে আনভিকে খাওয়াছে আর আনভি লক্ষীমেয়ের মতো খাচ্ছে। রোদ তৃপ্তির নিয়ে খেয়ে উঠে যায় আর অন্তুকে খেতে বলে অন্তু রোদে কথা শুনে হালকা হেসে খেয়ে আনভিকে নিয়ে রোদের রুমে চলে যায়…..
________________________________

ডক্টরঃ রোদ আনভি এখন ভালো আছে তুমি শুধু ওর খাওয়া দাওয়ার দিকে খেয়াল রেখো তাই হবে।

রোদঃ ধন্যবাদ আঙ্কেল আমি তো কাল ভয় পেয়ে ছিলাম আম্মুকে ওই অবস্থা দেখে।

ডক্টরঃ কিছু হবে না তুমি আনভিকে ঔষধ গুলো ঠিক সময় খাওয়ায় তাইলে হবে।

রোদঃ ঠিক আছে আঙ্কেল।

(আসলে সকালে আনভিকে দেখেতে ডক্টর আসে রোদ আনভি হেল্থ নিয়ে কোন প্রকার গাফিলতি করতে চায় না তাই ডক্টর ডেকে আনভিকে দেখায়)

ডক্টর আনভির সাথে অন্তুকে দেখে রোদকে বলে… রোদ এই মেয়েটাকে তো চিনতে পারছি না

রোদ অন্তুকে একবার দেখে বললো… আঙ্কেল ও অন্তু আমাদের রিলেটিভি

ডক্টরঃ ওও তাইলে আজ আসি।

রোদ ডক্টরকে এগিয়ে দিয়ে এসে দেখে অন্তু আর আনভি খেলছে তখন সে বললো….

রোদঃ সারা দিন খেলে হবে আম্মু কয়টা বাজে সে খেয়াল আছে চলো গোসল করিয়ে দিই তোমাকে।

আনভিঃ পাপা ভালো আন্টি কারিয়ে দেবে আজ গোসল।

রোদঃ না আম্মু ভালো আন্টি কেন করাবে চলো আমি করিয়ে দিই।

আনভিঃ না ভালো আন্টি করাবে।

রোদঃ জেদ করে না আম্মু।

অন্তুঃ রোদ আপনি কিছু না মনে করলে আমি আনভিকে গোসল করিয়ে দিচ্ছি।

রোদঃ কিন্তু

অন্তুঃ কোন কিন্তু না আপনি গোসল করে ড্রাইনিং টেবিলে যান আমি আনভিকে নিয়ে আসছি।

বলে আনভিকে নিয়ে ওয়াশরুম চলে যায় রোদ নিজের জামাকাপড় নিয়ে অন্য রুমে চলে যায়। অন্তু আনভিকে গোসল করিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করিয়ে দুপুরে খাবার খাইয়ে তাকে নিয়ে শুয়ে গল্প করতে লাগলো।
আনভি অন্তুর গাল টিপতে টিপতে বললো…

আনভিঃ ভালো আন্টি তোমার গাল কতো নরম।

অন্তুঃ আমার গালের থেকেও তোমার গাল আরো নরম ( বলে আনভির গাল টিপতে লাগলো)

আনভি গোমরা মুখে বললোঃ কাল তোমার বাড়িতে সবাই আমার গাল টিপেছে আমার একটুও ভালো লাগেনি।

অন্তুঃ ওকে সবাইকে বলবো আমার আনভি মামুনির যেন গাল না টেপে।

অন্তু আনভিকে তার বুকে নিয়ে আবার গল্প করতে লাগলো। রোদ সোফায় বসে বসে তাদেরকে দেখছে আর কাজ করছে। একটা সময় রোদ খেয়াল করে অন্তু আনভিকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেছে রোদ হাসলো। কোল থেকে ল্যাপটপ নামিয়ে ধিরে পায়ে অন্তুর কাছে গিয়ে তার মুখের ওপর থেকে তার অবাধ্য চুল গুলো সরিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। রোদের হঠাৎ অন্তু ঠোঁটের নিচের তিলে তার চোখ আটকে যায় অবাধ্য মন চাচ্ছে তিলটা ছুঁয়ে দিতে কিন্তু রোদ তা চায় না নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে অন্তুর কপালে ছোট একটা চুমু দিয়ে সরে আসে। সে নিজেই নিজের কাজে অবাক কেন সে অন্তুর কাছে বার বার চলে আসে, কেন তার থেকে দূরে থাকতে পারে না, রোদ উঠে এসে সোফায় বসে অন্তু আনভিকে দেখতে দেখে চোখ লেগে যায়……..
__________________________________

অন্তু অন্তু সন্ধ্যা হয়ে গেছে আপনি বাড়ি যাবেন না… বলে ডাকতে লাগলো রোদ। অন্তু চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে রোদকে তার মুখের সামনে ঝুকে থাকতে দেখে হচকে যায় তাড়াতাড়ি উঠে বসে নিজেকে ঠিক করে নেয়। রোদ আবার বলে…

রোদঃ ফাইনালি আপনি উঠলেন কখন থেকে ডাকছি আপনাকে কিন্তু আপনি উঠছেই না। সন্ধ্যা হয়ে গেছে বাড়িতে যাবেন না আপনি।

রোদের কথা শুনে অন্তু বাইরে তাকিয়ে দেখে সত্যি অন্ধকার হয়ে গেছে সে কি করে এতখন ঘুম পারলো। নিজের পাশের তাকালে আনভিকে না দেখতে পেয়ে সে রোদকে জিজ্ঞেস করে…

অন্তুঃ আনভি কোথায়?

রোদঃ আনভি অনেকখন হলো ঘুম থেকে উঠেছে এখন প্রাপ্যর সাথে খেলছে নিচে। আপনি ফ্রেশ হয়ে আসুন আমি নিচে যাচ্ছি।

বলে রোদ নিচে যায় অন্তুও ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়। আনভির থেকে বিদায় নিয়ে রোদের সাথে তার বাড়ির উদ্দেশ্য যায়। আনভি কিছুতেই অন্তুকে আসতে দিতে চায় নিই অনেক বুঝিয়ে সে এসেছে। মির্জা বাড়ির গেটের সামনে রোদ তার গাড়ি থামায়। অন্তু গাড়ি থেকে নামতে যাবে তখন রোদ তার হাত ধরে এতে অন্তু ভ্রু কুচকে রোদের দিকে তাকায় রোদ তার হাত ছাড়িয়ে বললো..

রোদঃ অন্তু কিছু না মনে করলে একটা কথা বলতে পারি।

অন্তুঃ হ্যাঁ বলুন

রোদঃ আনভির সাথে আপনি যদি একটু টাইম স্পেন্ড করতেন তাইলে ভালো হতো। যদি আপনার মনে করেন??

অন্তুঃ ঠিক আছে। এখন আসি

বলে চলে যায় রোদ ও তার গাড়ি নিয়ে চলে যায়। অন্তু বাড়ির ভেতর ডুকতেয় নিহিতা মির্জা বলে….

নিহিতা মির্জাঃ অন্তু এখন কোথায় থেকে এলে। সকাল থেকে তোমাকে বাড়িতে দেখলাম না কোথায় গিয়েছিলে?

অন্তুঃ চাচী আনভিকে দেখতে গিয়েছিলাম সেখান থেকেই আসলাম।

নিহিতা মির্জাঃ কাউকে কিছু না বলে তুমি রোদের বাড়ি গিয়েছিলে তাও আবার সারাটা দিন ওখানেই ছিলে তুমি?

অন্তুঃ আমি দিদুনকে বলে গিয়েছিলাম আর আনভি আসতে দিতে চাচ্ছিলো না তাই দেড়ি হয়ে গেছে।

নিহিতা মির্জাঃ ঠিক আছে রুমে যাও।

অন্তু আর কথা না বাড়িয়ে নিজের রুমে যায় এদিকে নিহিতা মির্জা অন্তু যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে কেন জানি তার কাছে অন্তুকে দেখে ভালো লাগছে না আর আনভির সাথে এতো মেশামেশি তার ভালো লাগছে না নিহিতা তার কাজ করতে লাগলো। ওপর থেকে আয়ান সব দেখে বাঁকা হেসে কাউকে ফোন করে বললো…

আয়ানঃ তো সারাটা দিন ভালোই ইনজয় করলে বুঝি??

ওপাশ থেকে কিছু বলে আয়ান উচ্চ স্বরে হেসে বললো… ঠিক আছে আমি আমার চরকায় তেল দিচ্ছি তুমি তোমার টায় দাও।

বলে ফোন রেখে তার রুমে চলে যায়। কিছু মানুষ তার মনের কথা বলতে সময় নেয় কিন্তু সময়ের অপেক্ষা করতে করতে খারাপ সময় তাড়াতাড়ি চলে আছে। ঠিক যেমনটা সবার এদের জীবনে আসতে চলেছে। অতীতের কিছু কুৎসিত মানুষ যদি সামনে আসে তখন কি হয় তা দেখার পালা……..
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৩৫

সময় যেন দ্রুত চলে যায় দেখতে দেখতে ১মাসের কাছাকাছি চলে এসেছে। সেদিনের রোদের কথা অন্তু রেখেছে সে আনভির সাথে সময় বেশি কাটায় এটা অন্তুর বাড়ির কেউ জানে না এমনকি অন্তু জানাই নিই সবাই জানে সে আর্ট ক্লাসে যায় কিন্তু অন্তু আনভির কাছে যায়। এদিকে আদি আদিবার নানা ভাবে ডিস্টার্ব করে কিন্তু আদিবা চুপচাপ সব সহ্য করে নেয় আদিবা আস্তে আস্তে আবার আদির প্রতি দূর্বল হতে লাগে সেটা আদি বুঝতে পেরে তাকে আরো বেশি করে জ্বালায়। এদিকে অরনি আর প্রাপ্য ভালো সমায় কাটাছে লুকোচুরি প্রেম ইনজয় করছে। সবাই সবার লাইফে হেপ্পি আছে কিন্তু কিছু মানুষের পাপের সাম্রাজ্য ধ্বংস হচ্ছে…পাপ কখনো তার বাপকে ছাড়ে না ঠিক তেমন তার পাপের ঘড়া পূর্ণ হলে তার শাস্তি পেতেই হয় সেটা সে পাচ্ছে….
__________________________________

আজাদ মির্জা তার পাটি অফিসে বসে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে। তাকে চিন্তিত দেখাছে দেখাবে না কেন কে বা কারা তার সব ব্যবসা একে একে ধ্বংস করতে উঠে পরে লেগেছে। এতে তার অনেক লোকসানের সমমুখীন হচ্ছে সামনে তার পাটি ইলেকশনে দাড়াবে তার জন্য ফান্ড লাগবে কি করে এতো টাকা জোগাড় করবে ভেবেই হতাশ হচ্ছে। হঠাৎ কারো ডাকে সে মাথা তুলে তাকাতেই সে সামনের মানুষটিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচায় আশিক বিশ্রী হাসি দিয়ে রুমে এসে চেয়ারে বসলে আজাদ মির্জা বলে…

আজাদ মির্জাঃ তুমি এখানে কি কারনে??

আশিকঃ আপনার অবস্থা সম্পর্কে আমি অবগত তাই একটা ডিল নিয়ে এসেছি যদি আপনি রাজী থাকেন তাহলে বলতে পারি।

আজাদ মির্জা আশিকের কথা শুনে ভ্রু কুচকে সরু চোখে তাকিয়ে বললে… কি ডিল৷ আশিক পিৎশাচী হেসে বলতে লাগলো তার ডিলের কথা আজাদ মির্জা সব শুনে চিন্তায় পরে যা কি করবে ভাবতে পারছে না। কিন্তু সব চিন্তা ফেলে সে আশিকের সাথে হাত মেলায় আশিক শয়তানি হাসি দেয় সে যানত তার ডিলটা আজাদ মির্জা ঠিক মানবে সে এখন সঠিক সময়ের অপেক্ষাতে আছে অতীতে তার সাথে যা কিছু হয়েছে তার প্রতিশোধ নেবার সময় এসে গেছে…….
_________________________________

আম্মু আমি কিছুতেই বিয়ে করবো না তুমি বড় আব্বুকে বলে দাও আমি কিছুতেই ওই আশিক ফাশিকের সাথে বিয়ে করবো না। তুমি জানো না ওই আশিকের জন্য দিদিয়ার জীবনটা নষ্ট হয়েছে তাইলে বড় আব্বু কি করে পারলো আমার সাথে ওই শয়তানটার সাথে বিয়ের কথা বলতে…বলে কান্না করতে লাগলো। মেয়ে কান্না দেখে নিহিতা মির্জা অসহায় মুখে হয়ে যায় সে ও চায়না এটা করতে কিন্তু তার করার কিছু নেই নিজের ছেলের ভবিষ্যত গুছাতে তার মেয়ের জীবন নষ্ট করতে হচ্ছে। (সে দিন আশিক আজাদ মির্জাকে অরনির সাথে বিয়ের ডিল করে তাই আজাদ মির্জা নিহিতা মির্জাকে আয়ানের ভবিষ্যতে লোভ দেখিয়ে আশিকের সাথে বিয়েতে রাজী করায়)

নিহিতা মির্জা বলে… অরু আশিক চলে এসেছে তুমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে আসো আমি নিচে গেলাম।

অরনি তার মার দিকে ঘেন্না দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো সে। নিজের মাকে ঘিন্না লাগছে তার কাছে কেমন মা সে তার মেয়ের জীবন নষ্ট হবে জেনেও কিছু করছে না। নিহিতা চলে গেলে অরনি আয়রার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় আয়রা এতোখন দাড়িয়ে সব শুনলো তার কিছু করার নেয় তার কথা কেউ মানবে না। অরনি আয়রাকে বলে….

অরনিঃ ভাবি কিছু করো আমি ওই জানোয়ারটাকে কিছুতেই বিয়ে করবো না।

বলে কান্না করতে লাগলো। আয়রা তার কাছে গিয়ে বললো… অরু কান্না করো না আমি আয়ানকে ফোন করে সব বলছি তুমি চিন্তা করো না।

অরনিঃ তোমার যা করার করো কিন্তু এর থেকে আমাকে বাঁচাও। আজ দিদিয়াও সকাল সকাল অর্ণব ভাইয়ার ফ্ল্যাটে চলে গেলো তার যে তার অরুর দরকার সেটা সে বুঝলো না।

আয়রা সান্ত্বনা দেবার মতো ভাষা নেই সে আয়ানকে ফোন করলো কিন্তু ফোন ধরছে না আজ সকালে আদির সাথে কোথায় যে আয়ান গেছে কে যানে। আয়রা পেটে হাত দেয় তার পেটে একটু একটু ব্যাথা অনুভব করছে কিন্তু সে ব্যাথাকে উপেক্ষা করে সে আবার আয়ানকে ফোন করলো কিন্তু না সে ফোন তুলছে না সে হতাশ হলো একবার অরনির দিকে তাকায় কেন ছটফট করছে আর কার সাথে যেনো কথা বলছে কান্না করতে করতে…..
________________________________

রোদ ভাইয়া প্লিজ তাড়াতাড়ি কিছু করো না হলে আমি অরুকে সত্যি আজ হারিয়ে ফেলবো… বলে হবতম্ভ হয়ে রোদের কেবিনে আসলো প্রাপ্য। রোদ প্রাপ্য কথা শুনে তার দিকে তাকিয়ে দেখে প্রাপ্য কেমন হাসফাস করছে আর চিন্তিতো দেখাচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা হয়েছে। রোদ এটা বুঝতে পারছে না অরনির আবার কি হলো রোদ বললো…

রোদঃ কি হয়েছে এমন করছিস কেন তুই আর অরুর কি হয়েছে।

প্রাপ্যঃ ভাইয়া অরুকে দেখতে লোক এসেছে আর অরু আমাকে ফোন করে কান্না কাটি করছে বলছে আমি কিছু না করলে সে নিজের কোন ক্ষতি করে দেবে। তার থাকেও বড় কথা যে অরনিকে দেখতে এসেছে সে কে জানো…

রোদ গম্ভীর হয়ে বললো… কে?

প্রাপ্যঃ আশিক রেজা।

আশিক রেজার নাম শুনে রোদের চোখ ভয়ংকর লাল হতে লাগলো রাগে গজগজ করতে লাগলো। রোদ হাতের মুঠো বন্দী করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করতে লাগলো কিন্তু সে ব্যর্থ আজ তার ধৈর্যর বাধ ভেঙ্গে গেছে। প্রাপ্য রোদকে দেখে ভয় পায় কিন্তু সে জানে তার ভাই কোন অনথা করবে না। রোদ প্রাপ্য দিকে তাকিয়ে বললো… চল আমার সাথে আজ একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বো। বলে প্রাপ্য কে নিয়ে বেড়িয়ে যায় মির্জা বাড়ির দিকে আজ কিছু একটা ঘটবে যা সবার জীবনকে বদলে দেবে। কারোর জীবনের থেকে আজ অনেক বড় সত্যি আড়াল থেকে বের হবে আবার কেউ তার পাপের শাস্তি পাবে…..
_____________________________________

ড্রইংরুমে পরিবেশ বেশ গরম দিদুন রেগে বসে আছে সোফাতে তার আশিকে দেখে মেজাজ পুরোই আগুন লেগে যাচ্ছে তার থেকেও তার ছেলের ওপর রাগ চরছে তার ছেলের কাজে সে ক্ষিপ্ত আছে আজ এর একটা হেন্তা করবে আগে আশিক চলে যাক। আয়রা দাড়িয়ে আছে তার পেছনে অরনি শাড়ি পরে দাড়িয়ে আছে সে কিছুতে আসতে চাই নিই কিন্তু তার মা জোর করে নিয়ে এসেছে তার মনে তার মার জন্য সুপ্ত কঠিন দেওয়াল তৈরি হতে লাগলো। আশিক সয়তানি হাসি দিয়ে অরনিকে দেখতে লাগলো এদিকে অরনির গা ঘিন্ন ঘিন্ন করছে আশিকের দৃষ্টি দেখে। আশিক লোভ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অরনির দিকে তার এখনো মনে আছে কিছু দিন আগে অরনিকে দেখে তার পুরুষসত্ব জেগে উঠে তার সাথে প্রতিশোধে নেশা তাই তো আজাদ মির্জাকে ডিল অফার করে। আশিক বিশ্রী হেসে বললো…

আশিকঃ আঙ্কেল আমি যতো তাড়াতাড়ি পারি অরনিকে বিয়ে করতে চায়।

বলে খারাপ দৃষ্টিতে অরনির দিকে তাকায় অরনি চোখ থেকে জল পরছে। আজাদ মির্জা বললো… ঠিক আছে তুমি বলো কবে বিয়ে করবে।

আশিক কিছু বলতে যাবে তার আগে অন্তু এসে বললে…. এখানে কি হচ্ছে??

অন্তুর কথা শুনে সবাই তার দিকে তাকায় অন্তু অরনির দিকে তাকিয়ে তার বুক কেপে যায় অরনির চোখ মুখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে কান্নার ফলে। অন্তু অরনির দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে তার আব্বু দিকে তাকালে দেখে তার আব্বু সাথে আশিক বসে আছে এক নিমিষেই বঝতে পারে এখানে কি হয়েছে। আশিকে দেখে তার আগের কথা মনে পরতেই রাগ মাথায় উঠে যায় অন্তু দাঁতে দাঁত চেপে বললো…

অন্তুঃ দিদুন এখানে কি হচ্ছে আর অরু কান্না করছে কেন আর এই জানোয়ারটা এখানে কেন??

জানোয়ার কথাটা আশিকের ইগোতে লাগে আশিক তারপর ও কিছু না বলে অন্তুকে চোখ দিয়ে গিলতে লাগলো। আশিকের তাকানো অন্তুর যেন রাগ ঘেন্না বাড়িয়ে দিচ্ছে নিজেকে রাগ কে কন্ট্রোল করতে পারছে না মনে হচ্ছে একে জুতো পেটা করি। দিদুন গম্ভীর মুখে বললো…

দিদুনঃ তোমার আব্বু অরনির সাথে আশিকের বিয়ে ঠিক করেছে।

কথাটা শোনার সাথে সাথে অন্তু নিজেকে আর ধরে রাখতে পারে না সোজা আশিকের কাছে গিয়ে পর পর দুটো থাপ্পড় লাগায় তার গালে আকাম্মসিক থাপ্পড়ের আশিক কিছুটা ঘাবড়ে যায় তারপর তেজি চোখে অন্তুর দিকে তাকায়। সবাই অন্তুর কাজে বিস্মিত কেউ ভাবতেও পারবে না যে অন্তু এটা করবে। অন্তু রেগে গিয়ে বলে…

অন্তুঃ তোর সাহস কি করে হয় আমার বোনকে বিয়ের প্রস্তাব দেবা। তোর মতো জানোয়ারের হাতে আমার বোনকে আমি কিছুতেই তুলে দেবো না আর (আজাদ মির্জা দিকে তাকিয়ে) আব্বু আপনি আগেও ভুল করে আমার জীবন নষ্ট করেছেন কিন্তু এবার অরু জীবন নষ্ট করতে দেবো না আমি।

আজাদ মির্জাঃ অন্তু বড়দের মধ্যে কথা বলবে না তুমি, আমি যা করছি অরুর জন্য ভালো।

অন্তুঃ কি ভালো হ্যা কি ভালো অরু সাথে এই চরিত্রহীনা লোকের সাথে বিয়ে দিলে ভালো থাকবে আপনি কি করে জানলেন না-কি অন্য কিছু আছে?

অন্তু কথায় আজাদ মির্জা ঘাবড়ে যায় সে আর কিছু বলতে চায় না, না হলে সব গোলমাল হয়ে যাবে। আজাদ মির্জা চুপ হতেই অন্তু তাচ্ছিল্য হাসি দেয় এদিকে আশিক রাগ হচ্ছে আজাদ মির্জা ওপর তিনি কিছু না বলে চুপ হয়ে গেছেন দেখে। ঠিক সেই সময় রোদ আর প্রাপ্য আসে অরনি প্রাপ্য কে দেখে কান্নারত চোখে চেয়ে থাকে প্রাপ্য অসহায় মুখে চায় তার দিকে, পরে আশ্বাস দেয় সব ঠিক হবে সে যেন না ভেঙ্গে পরে অরনি চোখ মুছে নিলো। রোদ রেগে আশিকের দিকে যেতে নিলে প্রাপ্য তাকে থামায় রোদ প্রাপ্য দিকে তাকালে ইশারায় কিছু বলে সে সামনে তাকিয়ে দেখে অন্তু রাগে কাপছে তার চোখের কোণে জল। রোদ জানে অন্তুর এখন কি অবস্থাতে আছে রোদের চোখের কোণে জল জমতে থাকে। অন্তু আশিকের সমমুখী হয়ে বলে…

অন্তুঃ তোমার চরিত্র কেমন সেটা আমার থেকে বেশি কেউ জানে না। যে ছেলে প্রথম দেখতে আসা একটা মেয়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে তার শরীরে স্পর্শ করে সে কতোটা ভালো আমি জানি।

অন্তুর কথা শুনে রোদে চোখ থেকে একফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পরে সে নিজেকে ধরে রাখতে পারছে না প্রাপ্য রোদের অবস্থা দেখে তার হাত ধরে থাকে। সবাই অন্তুর কথায় হতভম্ব অন্তু কি বললো তারা বুঝতে পেরেছে। আশিক রেগে গিয়ে বলে… তোমার মতো মেয়ে দেখা আছে আমার। আমার সাথে বিয়ে ঠিক হবা সত্ত্বেও তুমি অন্য কারোর অবৈধ বাচ্চা পেটে নিয়ে ঘুড়েছো।

আশিকের কথা শুনে রোদের চোখ দিয়ে যেন লাভা বের হচ্ছে। এদিকে অন্তু আশিকের বলা কথা শুনে তার গালে আরো একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো… মুখ সামলে কথা বলবে আমার বাচ্চাকে নিয়ে তোমার নোংরা মুখে থেকে আর একটা কথাও যেনো না শুনি। আর কি বলে অবৈধ তাই না তাইলে শুনে রাখো সে আমার বৈধ সন্তান ছিলো আমার আর অর্ণবের ভালোবাসার চিহ্ন ছিলো। অর্ণব আমাকে বিয়ে করে তাও আইনগত ভাবে তাই নিজের নোংরা মুখে কিছু বলবে না।

অন্তু কথায় সবাই স্তব্ধ রোদ একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে তাকায় অন্তু দিকে। অন্তু নিজেকে সামলে সরে আসতে নিলে আশিক তার হাত ধরতে যাবে তা দেখে রোদ প্রাপ্যর হাত ছাড়িয়ে যেতে লাগলো কিন্তু তার যাওয়ার আগে আয়ান এসে আশিকের হাত ধরে মোচর দেয় হাতে ব্যাথা পেতেই আশিক উচ্চ স্বরে চিতকার করে তার চিতকারে অন্তু তার দিকে তাকিয়ে দেখে আয়ান তার হাত মোচকে ধরেছে। অন্তু সরে আসে সেখান থেকে আশিক ছাড়া পাবার জন্য ছটফট করতে থাকে কিন্তু আয়ান তাকে ছাড়ছে না বরং আরো চেপে ধরে বললো…

আয়ানঃ তোর সাহস হয় কি করে আমার বোনুর দিকে হাত বাড়ানো। আগের বার তোর কি হাল করেছিলাম মনে নেয় তাইলে আবার কেন সেই সাহস দেখাছিস তুই।

বলে আরো চেপে ধরে অন্তু আয়ানের কথা শুনে ‘থ’ মেরে যা আগের বার মানে আয়ান কি বলতে চায়। আশিক আগের বারের কথা মনে পড়তেই ভয় পেয়ে যায়। আশিক বলে… আয়ান দেখো ছাড়ো আমার হাত ভেঙ্গে যাবে। আমি কিন্তু আইনি উদ্যোগ নিতে বাদ্ধ হবো

আয়ানঃ যা ইচ্ছে কর কিন্তু তোকে এর শাস্তি পেতেই হবে…

আর বলতে পাড়ে না তার আগে আয়রার আকুতি ভরা চিতকার তার কানে আসে। আয়ান আশিকে ছেড়ে আয়রার দিকে তাকায় আয়রা পেটে হাত দিয়ে আছে তার চোখ দিয়ে জল পরছে অরনি তাকে ধরে আছে। সবাই আয়রা দিকে তাকালে আশিক হাফ ছেড়ে পালানোর জন্য পা বাড়ায়ে মির্জা বাড়ি থেকে বের হয় কিন্তু তাকে রোদ দেখে ফেলে সে কাউকে ফোন করে বলে… মির্জা বাড়ির থেকে এই মাত্র যে বের হলো তাকে তুলে আমার গোডাউনে নিয়ে যাও আমি আসছি। বলে ফোন রেখে আয়রার দিকে যায়। আয়ান আয়রাকে ধরে বললে…

আয়ানঃ আয়রা কোথায় কষ্ট হচ্ছে বলো এই এমন করছো কেন?

আয়ানের কথা গলায় আটকে আসে আয়রা জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলো আর পেট ধরে আছে ব্যাথা সে সহ্য করতে পারছে না। সবাই আয়রাকে দেখে ভয় পেয়ে যায় দিদুন আয়ানকে বলে…

দিদুনঃ আয়ান আয়রাকে হসপিটালে নিয়ে যাও ওর পেন উঠেছে। তাড়াতাড়ি করো।

দিদুনের কথা শুনে আয়ান আয়রাকে কোলে তুলে বাড়ির বাইরে এসে গাড়িতে শুয়ে দেয় আয়রাকে অন্তু অরনি তার পাশে বসে আদি গাড়ি ড্রাইভিং সিটে আর আয়ান তার পাশে বসে। বাকি রা আলাদা গাড়িতে আসে রোদ প্রাপ্য আলাদাভাবে যায় হসপিটালের দিকে….
#তুমি আসবে বলে
#অপেক্ষার প্রহর
#Sondha Halder
#পর্ব-৩৬ (রহস্যভেদ-১)

হসপিটালের করিডোরে পায়চারি করছে আয়ান, সে স্থির হয়ে দাঁড়াতে পারছে না কোথাও তার মনের ভেতরে আয়রাকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। তখন আয়রা পেন হওয়াতে তাকে হসপিটালের নিয়ে আসলে ডক্টর তাকে ইমারজেন্সিতে নিয়ে যায়। আয়রা ব্যাথায় কাতরানো চেহেরাটা দেখে আয়ানের বুক পুরছে মেয়েটা আর কতো কষ্ট পাবে আল্লাহ এবার তাকে যেন রেহায় দেয় সেই দোয়ায় করেছে মনে মনে আয়ান। সবাই করিডোরে বসে চিন্তা মুখে বসে আছে সবাই দোয়া করছে আয়রা বা তার বেবির কিছু যেন না হয়। রোদ প্রাপ্য সাথে দাড়িয়ে আছে তার ফোনে বার বার ফোন আসছে কিন্তু সে ধরছে না তার এখন এখানে থাকাটা জরুরি পরে আশিকের ব্যবস্থা করা যাবে। রোদ আয়ানের ছটফটানি দেখছে আয়রার চিন্তায় সে স্থির হয়ে বসতেও পারছে না। ভেতর থেকে আয়রার কান্নার আওয়াজ আসছে ব্যাথা সে সহ্য করতে পারছে না। আয়রার কান্নার আওয়াজে আয়ানের বুকে তোলপাড় হচ্ছে বার বার আয়রাকে ইমারজেন্সিতে নেবার আগের বলা কথা মনে পরছে…

আয়রাঃ আ আয়ান আমার কিছু হয়ে গেলে তুমি প্লিজ আমাদের বেবিকে দেখে রেখো…[কান্না করে বললো]

আয়ান আয়রার ফালতু কথা শুনে ধমুক দিয়ে বললো… এই মেয়ে একটাও বাজে কথা বলবে না তুমি। তোমার কিছু হবে না আর না আমাদের বেবির। তুমি আমাদের বেবিকে নিজে মানুষ করবে, তোমার না বেবি লাগবে তাইলে এখন তাকে ছেড়ে চলে যাবার কথাও মনে আনবে না। না হলে তোমাকে মেরে ফেলবে।

আয়ানের কথাবে সে মৃদু হেসে বললো… আয়ান আমি তোমার সাথে আমার বেবি সাথে থাকতে চায় প্লিজ আমি কিছুতেই যেতে চায় না। তুমি আমাকে যেতে দিও না প্লিজ…

আয়ান আয়রাকে জড়িয়ে ধরে কপালে চুমু দিয়ে বললো…তোমার কিছু হবে না, আমি তোমার কিছু হতে দেবো না। তুমি আমার সাথে থাকবে সারাজীবন বুঝলে।

আয়রা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে ডক্টর আয়রা কে নিয়ে ভেতরে চলে যায় তখন থেকে সে পায়চারি করছে। ডক্টর মাবিয়া রহমান কেবিন থেকে বেরিয়ে আসতে দেখে আয়ান হবতম্ভ হয়ে তার কাছে এসে প্রশ্ন করে….

আয়ানঃ ডক্টর আয়রা আমার ওয়াইফ কেমন আছে আর বেবি। আপনি কিছু বলছেন না কেন?

ডক্টরঃ আয়ান জাস্ট রিল্যাক্স তোমাকে আগেই বলেছিলাম ডেলিভারি সময় প্রবলেম হতে পারে এখন তাই হচ্ছে। আয়রা কান্ডিশন ভালো না অনেক ব্রিডিং হচ্ছে আমি অপারেশন থিয়েটার রেডি করাচ্ছি তুমি ব্লাড অ্যারেঞ্জ করো তাড়াতাড়ি।

বলে তিনি চলে যায় আয়ান ‘থ’ মেরে দাঁড়িয়ে রইলো ডক্টরে কথা শুনে। আয়রার কান্ডিশন ভালে নেয়, রক্ত লাগবে শুনে আয়ানের হাত পা কাপছে, আয়রাকে হারাতে পাড়বে না আর না বেবিকে হারাতে পারবে সে। আদি আয়ানের কাধেঁ হাত রাখতেই আয়ান আদির দিকে তাকায় শুকনো মুখে আদি বললে…

আদিঃ আয়ান নিজেকে শক্ত কর আয়রা বা বেবির কিছু হবে না আমাদের ব্লাড অ্যারেঞ্জ করতে হবে চল জলদি আমি ব্লাড ব্যাংকে খোঁজ নিচ্ছি।

আয়ান আদির কথা শুনে তার কাঁধ থেকে আদির হাত সরিয়ে টলোমলো পায়ে সামনে এগোতে লাগলো সে জানে এখন একজননি তার আয়রাকে বাঁচাতে পারে আর সে হলো তার মা নিহিতা মির্জা। আদি আয়ানে এভাবে কষ্ট পেতে দেখে তারও কষ্ট লাগছে কিন্তু তার হাতে নেয় কিছু সে আয়ানের সাথে যেতে লাগলো। আয়ান সোজা তার মা নিহিতা মির্জা যেখানে বসে আছে সেখানে গিয়ে তার পা ধরে বসে পরে হঠাৎ কেউ পা ধরাতে নিহিতা মির্জা চমকে সেদিকে তাকিয়ে দেখে আয়ান তার পা ধরে বসে আছে তা দেখে সে বিস্মিত হয়৷ আয়ান নিহিতা মির্জা পা ধরে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে করতে বললো…

আয়ানঃ আম্মু প্লিজ আমার আয়রা আর বেবিকে বাঁচাও আম্মু। তোমার দুটি পায়ে ধরছি আমি, আমি আমার বেবি আর আয়রাকে ছাড়া থাকতে পারবো না, প্লিজ তোমার রক্ত দিয়ে আমার আয়রাকে বাঁচাও। আমি তোমার কাছে কিছু চায় না প্লিজ আম্মু আমার বাচ্চা আর আয়রাকে বাঁচাও শুধু। এখানে উপস্থিত কারোর সাথে আয়রার রক্তের মিল নেই শুধু তুমি বাদে প্লিজ আম্মু আমার এই অনুরোধ টুকু অন্তত রাখো। প্লিজ আম্মু

আয়ানকে এমন অসহায় অবস্থায় দেখে উপস্থিত সবার চোখে পানি চলে আসে আয়রা আসলে ভাগ্যবতী যে আয়ানের মতো ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে। নিহিতা মির্জা তার ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে নিজের ছেলেকে এর আগে এমন দেখেনি তিনি। সেদিনের ঘটনার পর থেকে যখন আয়ান তার সাথে কথা বলতো না তখন তিনি কষ্ট পেতেন ঠিকি কিন্তু আজ আয়ানকে এই অবস্থায় দেখে তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে তার চোখ থেকে জল পরছে। নিহিতা মির্জা চোখ মুছে আয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে উঠে চলে যায় ব্লাড দিতে তিনি আয়রাকে মেনে নেয় নিই কিন্তু আয়ানকে সে কষ্টে দেখতে পারবে না তাই সে যাচ্ছে। সবাই নিহিতার কাজে অবাক তার কেউ ভাবেনি যে নিহিতা আয়রার জন্য রক্ত দেবে। নিহিতা মির্জা রক্ত নিয়ে আয়রার অপারেশন শুরু করে। দীর্ঘ ১.৩০ ঘন্টা যাদব অপারেশন দরজার সামনে আয়ান দাড়িয়ে থাকে হঠাৎ ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেতেই সবাই আনন্দিত হয় একটা চাপা দম বন্ধকর পরিবেশ এখন খুশির আমেজে পরিণত হয় অরনি অন্তুকে জড়িয়ে ধরে। দিদুন আল্লাহ কাছে শুকরিয়া করে। আদি আয়ানের কাছে এসে জড়িয়ে ধরে বলে…

আদিঃ কংগ্রেস ভাই তুই বাবা হয়ে গেছিস আমি চাচা।

আয়ান নিজেক আর ধরে রাখতে না পেরে আদিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে একটুপর নার্স একটা তোয়ালে করে ছোট বাচ্চাকে নিয়ে এসে বললে…

নার্সঃ কংগ্রাচুলেশনস আপনা ছেলে হয়েছে।

আয়ান কাপা কাপা হাতে তার ছেলেকে কোলে তুলে নেয় প্রথম স্পর্শ পায় আয়ান তার ছেলের ছোট ছোট চোখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে আয়ান হাসতে লাগলো। ছেলে কে চুমু দেয় বাবা হবার প্রথম মুহুর্ত তার কাছে সে পুরোটা জুরিয়ে নেয়। আয়ান কাঁপা গলায় নার্সকে বলে..

আয়ানঃ আমার ওয়াইফ কেমন আছে।

নার্স হেসে বলে… তিনি ঠিক আছে একটু পরে তাকে কেবিনে দেওয়া হবে তখন দেখা করতে পারবেন।

বলে চলে যায় অরনি তাদের কাছে এসে বলে… ভাইয়া আমাকে দাও আমিও কোলে নেবো।

আয়ান অরনিকে দেখে তার কোলে বাচ্চাকে দেয়। অরনি বাচ্চা কে কোলে নিয়ে আদর করতে লাগে একে একে সবাই বেবিটাকে কোলে নেয় সর্বশেষে অন্তু তার কোলে বাচ্চাটিকে নিয়ে একটা চেয়ারে বসে বাচ্চাটিকে মন ভরে দেখতে লাগলো। বেবির ছোট ছোট হাত, পা, চুল, মাথা, গাল, ঠোঁট সব ছুঁয়ে দিয়ে অন্তু হাসতে লাগে তাকে দেখে বেবিও হাসে। রোদ দূর থেকে অন্তুকে দেখছে অন্তুর সকল কার্য পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো। অন্তুর ঠোঁটে হাসি দেখে রোদের ঠোঁটে হালকা হাসি ফুটে উঠলো। রোদ ফোন হাতে বের হয়ে যায় তার সাথে প্রাপ্য অরনি কেউ খেয়ালি করে না তাদের যাবার দিকে। অন্তু বেবিটাকে দেখে তার নিজের বেবির কথা মনে পরে যায় তাকে বাঁচাতে অনেক লড়াই করেছিলো সে…

অতীতে…

অর্ণবকে নিচে পরতে দেখে অন্তু সেখানে জ্ঞান হারায় আয়ান তাকে নিয়ে বাড়ি আসে। দিদুন অন্তুকে আয়ানের সাথে দেখেই বুঝে যায় আয়ান কি করেছে আয়ান অন্তুকে তার রুমে শুয়ে দিলে দিদুন আয়ানকে থাপ্পড় মেরে বলে…

দিদুনঃ আয়ান তোমার এতো অধপতন হয়েছে যে বোনের সুখ তুমি সহ্য করতে পারলে না। দেখো মেয়েটা কেমন নির্জীবি হয়ে গেছে অর্ণবকে কি করেছো তুমি। আয়ান অন্তুর কিছু হলে তোমাকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না মনে রেখো।

আয়ান ছলছল চোখে তাকিয়ে একটা কথাও না বলে সেখান থেকে চলে যায়। অন্তুর জ্ঞান না ফেরায় সবাই চিন্তায় পরে যায়, তাই আজাদ মির্জা ডক্টর নিয়ে আসে ডক্টর এসে অন্তুকে চেকাপ করে বলে অন্তু প্রেগন্যান্ট এটা শুনে সবাই অনেক বড় ধাক্কা পায়। আজাদ মির্জা নিজের মান-সম্মান বাঁচাতে ডক্টরকে বলে বেবিটাকে অ্যাবর্শন করতে কিন্তু দিদুন কিছুতেই বাচ্চাটাকে মারতে চায়নি তাই তিনি নিজে প্রচেষ্টায় আর আজাদ মির্জা কথা নাকোচ করে অন্তুর বেবিকে বাঁচায়। অন্তুর জ্ঞান ফেরার পরে সে অর্ণব অর্ণব করে পাগলামি শুরু করে দিদুন অরনির অনেক কষ্টে তাকে বুঝিয়ে নিজের বেবির কথা বলে তাকে বুঝায় এতে অন্তু বুঝলেও একে বারে চুপ হয়ে যায় কিন্তু মানসিক ভাবে ভেঙে পরে। অরনি, দিদুন মিলে অন্তুকে দেখা শোনা করে ভালো রাখা চেষ্টা করতো। কিন্তু অর্ণবের মৃত্যু সে মেনে নিতে পারে না তাই সে মাঝে মাঝে কেমন যেন পাগলামি করতে লাগলো কারোর সাথে কথা বলতো না, গুমোট হয়ে থাকতো, বার বার বলতো অর্ণব আসবে সে তাকে কথা দিয়েছে। সময় আস্তে আস্তে যেতে লাগলে হঠাৎ একদিন আয়ান তার দিদুনের কাছে তার সত্যি বলে সব শুনে তার দিদুন একেবারে ভেঙ্গে পরে কিন্তু অন্তুকে বাঁচাতে তিনি নিজেকে শক্ত করেন। এরপর আয়ানে কাউকে কিছু না বলে বিদেশে সিফট হয় যায়। অন্তু এক বারে ভেঙ্গে পরে কিন্তু তার বেবির জন্য নিজেকে ধরে রাখে আর অর্ণবের অপেক্ষা করে। এর মধ্যে আদি ফোন করে তার আর আদিবার মধ্যে কি হয়েছে সব কথা অন্তুকে বলে। আদিকে ভেঙে পরতে দেখে অন্তু তার বিষয়ে বলে আদিকে আর টেনশনে দিতে চাইনি তাই কেউ আদিকে কিছু বলে না। অন্তু প্রেগ্ন্যাসির সময় তার আব্বু তার সাথে কথা বলতো না এমন কি আশিক অন্তুর প্রেগন্যান্টের কথা শুনে বাড়িতে এসে আজাদ মির্জাকে অপমান করে বললে..

আশিকঃ আপনাদের আমাকে আগেই বলা উচিৎ ছিলো যে আপনার মেয়ের চরিত্র ভালো না, তাইলে আমাদের এই অপমানটা হতো না।

আশিকের অন্তু চরিত্রে নিয়ে কথা বলতেই দিদুন রেগে বলে… তোমার সাহস তো কম না তুমি বাড়ি বয়ে এসে আমার দিদিভাইকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করো। এখনি বেরিয়ে যাও এখান থেকে না হলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাইরে বের করে দেবো।

আশিক রেগে বললো… আপনার দিদিভাই ধোঁয়া তুলসি পাতা না সে একটা ছেলের সাথে ফিজিক্যালি ইনভলভ হয়ে তার সন্তান তার পেটে বয়ে বেরায় তাইলে এটাকে কি বলবেন। আপানার দিদিভাই বাইরে আর কতো ছেলের সাথে এমন করেছে কে যানে।

আকাশ মির্জা আশিকের কথা শুনে রেগে তাকে থাপ্পড় মেরে বললো… জাস্ট সট আপ তোমার মুখ থেকে আমার অন্তু মামুনির নামে একটা কথাও যেনো না শুনি বেরিয়ে যাও এখান থেকে।

আশিক রেগে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় অন্তু সব উপর থেকে শুনেছে। সে তার পেটে হাত রেখে হু হু করে কান্না করতে লাগলো তার সন্তানকে জারোজ বলো অর্ণব আর তার বৈধ সম্পর্ককে খারাপ বলো। সেসব ভেবে তার খারাপ লাগছে। এই ঘটনার রেশ ধরে অন্তর শরীরের বেশ অবনতি হয় কেমন পাগলামি করতো নিজের খতি করার চেষ্টা করতো অরনি, দিদুন, আকাশ মিলে অন্তুকে সামলে রাখতো। তার কিছু দিন পরে জানা যায় আশিকে কেউ মেরে রাস্তায় ফেলে রাখেছে গেছে সেটা জানা যায় কে বা কারা মেরেছে সেটা জানা যায় নি। দীর্ঘ ৮মাস পর হঠাৎ অন্তু ব্যাথা উঠলে দিদুন অরনি তার চাচা মিলে তাকে হসপিটালের নিয়ে যায়। অন্তুর কন্ডিশন ভালো না থাকায় প্রেগ্ন্যাসিতে প্রবলেম হয় অন্তু নিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই দিন তার বেবি কে জন্ম দেয় অন্তুর কানে তার বাচ্চার কান্নার শব্দ আসলে তার ঠোঁটের কোণে তৃপ্তির হাসি ফুটে তারপর সে জ্ঞান হারায়। যখন জ্ঞান আসে তখন দিদুন তাকে বলে তার মেয়ে হয়েছিলো কিন্তু সে মারা গেছে এটা শুনে অন্তু কান্না করতে করতে বললো…

অন্তুঃ তুমি মিথ্যা বলছো দিদুন আমি স্পষ্ট আমার মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনেছি। তুমি বলো আমার মেয়ে কোথায় প্লিজ দিদুন আমি মরে যাবো আমার মেয়েকে না পেলে।

দিদুনঃ দিদিভাই আমি সত্যি বলছি তোমার মেয়ে পৃথিবীতে আসার পরে মারা যায়।

অন্তুঃ তুমি মিথ্যা বলছো আমার মেয়েকে এনে দাও প্লিজ ও আমার ভালোবাসর চিহ্ন ছিলো। অর্ণবের অংশ ছিলো প্লিজ এমন করো না তোমরা আমার সাথে।

অন্তু অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে সে তার বাচ্চার মৃতু মেনে নিতে পারে না। তাকে সামাতে পারতো না কেউ এর পর থেকে অন্তুর মাঝে মাঝেই প্যানিক অ্যাটাক হতো পাগলামি বেরে যায়। দিদুন অরনি সামলাতে পারতো না হঠাৎ একদিন অরনি একটা বাচ্চার কান্নার, হাসির আওয়াজ শোনায় তার তারপর থেকে অন্তু নরমাল হতে লাগে আস্তে আস্তে।

হঠাৎ আয়ানের কথা শুনে অন্তুর হুশ আসে সে আয়ানের দিকে তাকালে আয়ান বললে….. অন্তু আয়রার জ্ঞান এসেছে বেবিকে দেখতে চাচ্ছে চল।

অন্তু বেবির দিকে তাকায় দেখে বেবি মুখে এক আঙ্গুল দিয়ে ঘুমিয়ে গেছে অন্তু হাসতে। তারপর আয়ানের সাথে আয়রার কেবিনের দিকে যেতে লাগলো….
_________________________________

অন্ধকার গোডাউনের মধ্যে একটা চেয়ারে অজ্ঞান অবস্থায় আশিকে বেঁধে রাখা হয়েছে তার মুখ থেকে রক্ত পরছে দেখে মনে হচ্ছে কেউ অনেক মেরেছে। আশিক হালকা নড়তে লাগলো পিটপিট করে চোখ খুলে তার নিজের অবস্থান দেখে তার মনে পরলো মির্জা বাড়ি থেকে বাইরে এসে তার গাড়ি নিয়ে কিছু দূর আসলে হঠাৎ এক দল লোক এসে তাকে ঘিরে ধরে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেঘোরে পিটাতে লাগলো হঠাৎ মাথায় আঘাত লাগতেই সে জ্ঞান হারায় তার পর কিছু মনে নেই। আশিক নিজেকে ছোটাতে লাগলো আর বললো…

আশিকঃ কেউ আছো কে আমাকে এখানে এনেছে এক বার ছাড়া পাই সব গুলোকে মেরে ফেলবো। আমার কথা কেউ শুনতে পাচ্ছো ও হ্যালো কেউ আছো।

হঠাৎ তার চোখে আলো এসে পরে আশিকের, সে অনেক কষ্টে চোখ খুঁলে দেখে কেউ তার দিকে এগিয়ে আসছে তাকে দেখে তার মনে বাঁচার আশা দেখা গেলো সে তাকে দেখে বললো….

আশিকঃ হেল্প প্লিজ আমাকে কেউ এখানে ধরে রেখেছে। আমাকে এখান থেকে বের হতে সাহায্য করো আমি অনেক টাকা দেবো তাকে।

আশিকর কথায় সে ব্যাক্তি কিছু না বলে সামনে এসে কাঠ গলায় বললো… আমিই তো তোকে এখানে তুলে এনেছি আর আমার কাছেই সাহায্য চাস তুই জানোয়ারে বা*

আশিক অগত ব্যক্তির কথা শুনে ভয় পেয়ে যায় কাপা কাপা গলায় বললো… কে তুমি??

সেই ব্যাক্তিটি আশিকের সামনে এসে দাঁড়াতে আশিক বিস্ময় চোখে বললো… রোদ চৌধুরী??

রোদ চোখে রাগ নিয়ে শান্ত কন্ঠে বললো… রোদ না অর্ণব, অর্ণব আহমেদ

আশিক চোখ বড় বড় করে কাপা কাপ গলায় বললো… অ র্ণ ব

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here