তুমি বললে আজ ২ পর্ব -১৭

#তুমি_বললে_আজ_২
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ১৭. (প্রথমাংশ)

.
আধা মিনিট সময় অতিক্রম হবার পর যখন পুরো শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে উঠলো, তখন শরীর কাঁপুনিতে চিনচিনিয়ে ব্যথা অনুভব হলে ডান গালে।আস্তে করে একহাত গালে দিতেই আবারও কেঁপে উঠলো পুরো শরীর। দু’ চোখে একদল অশ্রুকণা ভীড় জমিয়ে ছলছল করে উঠলো চোখ দু’টো। ছলছল চোখেই হাজারো বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছি তাসফি ভাইয়ের দিকে। এখনো যেন ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছি না উনি আমাকে থাপ্পড় মে*রেছেন। বড় হবার পর কখনোই কেউ গায়ে হাত তুলে কি। তাসফি ভাইয়াও তো কখনো মা*রেন নি, তাহলে আজকে হঠাৎ কেন এভাবে মা*রলেন? আলতো করে গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। কান্নাগুলো যেন অতি কষ্টে আটকে আছে গলায়।
তাসফি ভাইয়ার রাগে র*ক্ত চোখ নিয়ে একটু এগিয়ে আসতেই যেন আমার ঘোর কাটলো। প্রচন্ড ভয় পেয়ে দূর্বল পায়ে সামান্য পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করলাম, হঠাৎ কেউ এসে ধরে ফেললো আমায়। একটু মাথা ঘুড়িয়ে পিছনে তাকাতেই ফুপির চেহারা ভেসে উঠলো। তাসফি ভাইয়ের চিৎকারেই হয়তো ছুটে এসেছে ফুপি। ফুপিকে দেখে আর যেন সামলাতে পারলাম না নিজেকে, একহাতে ফুপিকে জড়িয়ে নিয়ে হু হু করে কেঁদে উঠলাম। আমাকে কাঁদতে দেখে ফুপি উত্তেজিত হয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে? কিন্তু জবাব দিতে পারলাম না আমি। আমাকে সেভাবেই ধরে সোফায় বসাতে বসাতে ফুপি বলে উঠলো,
“কি হয়েছে মা, এভাবে কান্না করছিস কেন? বল আমাকে, কি হয়েছে?”

নিরুত্তর হয়ে সেভাবেই কান্না করতে গেলাম আমি। আমার উত্তর না পেয়ে তাসফি ভাইকে বলে উঠলো,
“কি হয়েছে ওর? কি বলেছিস ওকে তুই? এভাবে কান্না করছে কেন?”

“ও কি করেছে সেটা আগে জানতে চাও। কোথায় ছিলো ও এতক্ষণ? কার সাথে ছিলো?”

প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে উঠলেন উনি। ওনার চিৎকারে কেঁপে উঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ফুপিকে। এই মুহুর্তে প্রচন্ড রকমের ভয় লাগছে ওনাকে। ওনার এই চেহারার সাথে আমার একদমই পরিচয় নেই, এমতবস্থায় কখনোই দেখি নি ওনাকে। সবসময় তো আমাকে আগলে রাখতেই দেখেছি, শাসন করে দু’ একটা ধমকও খেয়েছি, ওনার শক্ত হাতের আলতো করে মা*ইরও খেয়েছি, কিন্তু এই মুহুর্তে পুরোই অন্য এক তাসফি ভাইকে দেখছি যেন।
ফুপি দু’ হাতে আমাকে আগলে নিয়ে, ওনাকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
“কোথায় ছিলে মানে? জানিস না কোথায় ছিলো ও? সকালে রেখে আসলি না ওকে কলেজে?”

“সকালে তো কলেজেই রেখে এসেছিলাম। তারপর? তারপর কোথায় ছিলো ও? এত দেরি হলো কেন ফিরতে? কার সাথে কোথায় গিয়েছিলো? জিজ্ঞেস করো ওকে।”

“আশ্চর্য! তাসফি, এসব কি ধরনের কথাবার্তা? কার সাথে কোথায় গিয়েছিলো মানে কি? দু’ একদিন দেরি হতেই পারে, বন্ধুদের সাথে ঘুরতেই পারে….”

“আর সেটা যদি হয় ছেলে বন্ধু, তাহলে তো কথায় নেই, তাই না আম্মু?”

বলেই একটু থামলেন, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও জোরে করে বলে উঠলেন,
“একা একা হাত ধরাধরি করে কি গল্প থাকতে পারে ওদের? কলেজে কি এসব করার জন্যই যায় ও? ছেলেদের সাথে হাত ধরাধরি করে ঘোরার জন্য?”

তাসফি ভাইয়ার চিৎকার আবারও কেঁপে উঠলাম। সহসায় ওনার ঠিক বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ জয়ের কথা মনে হতেই চমকে উঠলাম। তার মানে উনি কি জয়ের কথা বোঝাতে চাইছেন? কলেজে তো একমাত্র ওই আমার হাত ধরেছিলো আজ। তাহলে কি উনি সেটায় কোন ভাবে দেখেছেন? কিন্তু কিভাবে?
আস্তে করে মাথা উঠিয়ে তাকালাম ওনার দিকে, সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। ওনার র*ক্ত লাল চোখে তাকানোর সাহসটা ঠিক পেলাম না। ফুপি আমার দিকে একবার তাকিয়ে ওনাকে বলে উঠলো,
“এগুলো কি ধরনের কথাবার্তা তাসফি? কি বলছিস তুই?”

“কি বলছি সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছো কেন? বলো ওকে। চুপ করে আছিস কেন? বেয়াদব! বল বলছি…. ”

শেষ কথাটা চিৎকার করে আমাকে বলে উঠলেন। ওনার চিৎকার কাঁপুনির মাত্রাটা যেন আরও বেড়ে গেল। এই তাসফি ভাইয়াকে প্রচন্ড ভয়ংকর বলে মনে হচ্ছে আমার। ভয়ের তাড়নায় ফুপিকে দু’ হাতে খামচে ধরলাম যেন। এতক্ষণে বেঁধে রাখা হিজাবও এলোমেলো হয়ে খুলে গেছে। বাকি পিনগুলোও খুলে দিলো ফুপি। হিজাবটা পুরোপুরি খুলে দিয়ে আমাকে আগলে নিয়ে গালে হাত রেখে শান্ত করার চেষ্টা করলো। ডান গালে হাত রাখতেই ব্যাথায় চিনচিন করে উঠলো। কান্নার মাঝেই ‘আহ্’ করে আত্মদান করে গালে হাত দিলাম। ফুপি উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,
“কি হয়েছে মা? বল আমাকে….”

ফুপিকে বলতে চেয়েও কিছুই বলতে পারলাম না, গলা দিয়ে কোনই কথা বের হলো না আমার। কিন্তু গালে হাত রেখে ফুপিয়ে কাঁদতে দেখে হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো। রাগী চোখে তাসফি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে জোরে করে বলে উঠলো,
“তুই ওকে মে*রেছিস তাসফি? কথা বলছিস না কেন?”

“হ্যাঁ! মে*রেছি। কলেজ ক্যাম্পাসে ছেলেদের হাত ধরে গল্প করবে, আর দেখেও আমি চুপ করে থাকবো, সেটা ভাবলে কি করে তুমি?”

“তাই বলে ওর গায়ে হাত তুলবি? এতটুকু মেয়ের গায়ে হাত তোলার সাহস কি করে হলো তোর?”

“কোনদিক থেকে ছোট মনে হয় ওকে? এই চার বছরে অনেক বড় হয়ে গেছে ও, তোমার কিভাবে ওকে বলো ছোট আছে?”

“তাসফি…. অনেক হয়েছে, আর না? তোকে এই শিক্ষা দিয়েছি? এক্ষুনি সরে যা আমার চোখের সামনে থেকে।”

সাথে সাথে কিছু বললেন না উনি। আমি হালকা করে তাকাতেই যেন ওনার রাগটা বেড়ে গেল। জোরে জোরে নিশ্বাস টেনে ফুপিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন,
“তোমার ভাইদের মেয়ে তাদের ঠিক কতটা বড় হয়ে গেছে, লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করা শিখেছে, হাত ধরে ঘুরতে শিখিছে।”

বলেই একটু থামলেন, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও বললেন,
“সাথে এটাও বলে দিয়ো ওকে আর এখানে রাখবো না আমি, ঢাকায় নিয়ে যাবো আমার সাথে। দরকার নেই ওর আর কলেজে যাবার। আর তুই…. তোকে চার মাস সময় দিয়েছিলাম না? সেটাও আর পাবি না, ঢাকায় যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে নে।”

শেষ কথাটা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেই আর দাঁড়ালেন না উনি। নিজের রুমে গিয়ে জোরে শব্দ করে দরজা আঁটকে দিলেন। উনি যেতেই অস্পষ্ট সুরে ফুপিকে বলে উঠলাম,
“বব্..বাসায় যাবো…. আ..আমি..”

“একটু শান্ত হু মা… খুব লেগেছে না? কোথায় কষ্ট হচ্ছে বল আমাকে?”

ফুপির কথা শুনে এখন আরও কান্না পাচ্ছে। ফুপির কথার জবাব না দিয়ে শুধু বলতে লাগলাম বাসায় যাবার কথা। অনেক কিছু বুঝিয়ে আমাকে শান্ত করে রুমে নিয়ে আসলো ফুপি। রুমে এসে ফুপির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলাম। গালের ব্যাথাটা যেন ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। ফোপাঁতে ফোপাঁতে সেভাবেই শুয়ে থাকলাম ফুপিকে আঁকড়ে ধরে।

.#তুমি_বললে_আজ_২
লেখনীতেঃ #রিধিমা_জান্নাত_রূপা
পর্বঃ ১৭. (প্রথমাংশ)

.
আধা মিনিট সময় অতিক্রম হবার পর যখন পুরো শরীর ঝাঁকুনি দিয়ে কেঁপে উঠলো, তখন শরীর কাঁপুনিতে চিনচিনিয়ে ব্যথা অনুভব হলে ডান গালে।আস্তে করে একহাত গালে দিতেই আবারও কেঁপে উঠলো পুরো শরীর। দু’ চোখে একদল অশ্রুকণা ভীড় জমিয়ে ছলছল করে উঠলো চোখ দু’টো। ছলছল চোখেই হাজারো বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছি তাসফি ভাইয়ের দিকে। এখনো যেন ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছি না উনি আমাকে থাপ্পড় মে*রেছেন। বড় হবার পর কখনোই কেউ গায়ে হাত তুলে কি। তাসফি ভাইয়াও তো কখনো মা*রেন নি, তাহলে আজকে হঠাৎ কেন এভাবে মা*রলেন? আলতো করে গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। কান্নাগুলো যেন অতি কষ্টে আটকে আছে গলায়।
তাসফি ভাইয়ার রাগে র*ক্ত চোখ নিয়ে একটু এগিয়ে আসতেই যেন আমার ঘোর কাটলো। প্রচন্ড ভয় পেয়ে দূর্বল পায়ে সামান্য পিছিয়ে যাবার চেষ্টা করলাম, হঠাৎ কেউ এসে ধরে ফেললো আমায়। একটু মাথা ঘুড়িয়ে পিছনে তাকাতেই ফুপির চেহারা ভেসে উঠলো। তাসফি ভাইয়ের চিৎকারেই হয়তো ছুটে এসেছে ফুপি। ফুপিকে দেখে আর যেন সামলাতে পারলাম না নিজেকে, একহাতে ফুপিকে জড়িয়ে নিয়ে হু হু করে কেঁদে উঠলাম। আমাকে কাঁদতে দেখে ফুপি উত্তেজিত হয়ে জানতে চাইলো কি হয়েছে? কিন্তু জবাব দিতে পারলাম না আমি। আমাকে সেভাবেই ধরে সোফায় বসাতে বসাতে ফুপি বলে উঠলো,
“কি হয়েছে মা, এভাবে কান্না করছিস কেন? বল আমাকে, কি হয়েছে?”

নিরুত্তর হয়ে সেভাবেই কান্না করতে গেলাম আমি। আমার উত্তর না পেয়ে তাসফি ভাইকে বলে উঠলো,
“কি হয়েছে ওর? কি বলেছিস ওকে তুই? এভাবে কান্না করছে কেন?”

“ও কি করেছে সেটা আগে জানতে চাও। কোথায় ছিলো ও এতক্ষণ? কার সাথে ছিলো?”

প্রচন্ড জোরে চিৎকার করে উঠলেন উনি। ওনার চিৎকারে কেঁপে উঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ফুপিকে। এই মুহুর্তে প্রচন্ড রকমের ভয় লাগছে ওনাকে। ওনার এই চেহারার সাথে আমার একদমই পরিচয় নেই, এমতবস্থায় কখনোই দেখি নি ওনাকে। সবসময় তো আমাকে আগলে রাখতেই দেখেছি, শাসন করে দু’ একটা ধমকও খেয়েছি, ওনার শক্ত হাতের আলতো করে মা*ইরও খেয়েছি, কিন্তু এই মুহুর্তে পুরোই অন্য এক তাসফি ভাইকে দেখছি যেন।
ফুপি দু’ হাতে আমাকে আগলে নিয়ে, ওনাকে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে বলে উঠলো,
“কোথায় ছিলে মানে? জানিস না কোথায় ছিলো ও? সকালে রেখে আসলি না ওকে কলেজে?”

“সকালে তো কলেজেই রেখে এসেছিলাম। তারপর? তারপর কোথায় ছিলো ও? এত দেরি হলো কেন ফিরতে? কার সাথে কোথায় গিয়েছিলো? জিজ্ঞেস করো ওকে।”

“আশ্চর্য! তাসফি, এসব কি ধরনের কথাবার্তা? কার সাথে কোথায় গিয়েছিলো মানে কি? দু’ একদিন দেরি হতেই পারে, বন্ধুদের সাথে ঘুরতেই পারে….”

“আর সেটা যদি হয় ছেলে বন্ধু, তাহলে তো কথায় নেই, তাই না আম্মু?”

বলেই একটু থামলেন, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও জোরে করে বলে উঠলেন,
“একা একা হাত ধরাধরি করে কি গল্প থাকতে পারে ওদের? কলেজে কি এসব করার জন্যই যায় ও? ছেলেদের সাথে হাত ধরাধরি করে ঘোরার জন্য?”

তাসফি ভাইয়ার চিৎকার আবারও কেঁপে উঠলাম। সহসায় ওনার ঠিক বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ জয়ের কথা মনে হতেই চমকে উঠলাম। তার মানে উনি কি জয়ের কথা বোঝাতে চাইছেন? কলেজে তো একমাত্র ওই আমার হাত ধরেছিলো আজ। তাহলে কি উনি সেটায় কোন ভাবে দেখেছেন? কিন্তু কিভাবে?
আস্তে করে মাথা উঠিয়ে তাকালাম ওনার দিকে, সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। ওনার র*ক্ত লাল চোখে তাকানোর সাহসটা ঠিক পেলাম না। ফুপি আমার দিকে একবার তাকিয়ে ওনাকে বলে উঠলো,
“এগুলো কি ধরনের কথাবার্তা তাসফি? কি বলছিস তুই?”

“কি বলছি সেটা আমাকে জিজ্ঞেস করছো কেন? বলো ওকে। চুপ করে আছিস কেন? বেয়াদব! বল বলছি…. ”

শেষ কথাটা চিৎকার করে আমাকে বলে উঠলেন। ওনার চিৎকার কাঁপুনির মাত্রাটা যেন আরও বেড়ে গেল। এই তাসফি ভাইয়াকে প্রচন্ড ভয়ংকর বলে মনে হচ্ছে আমার। ভয়ের তাড়নায় ফুপিকে দু’ হাতে খামচে ধরলাম যেন। এতক্ষণে বেঁধে রাখা হিজাবও এলোমেলো হয়ে খুলে গেছে। বাকি পিনগুলোও খুলে দিলো ফুপি। হিজাবটা পুরোপুরি খুলে দিয়ে আমাকে আগলে নিয়ে গালে হাত রেখে শান্ত করার চেষ্টা করলো। ডান গালে হাত রাখতেই ব্যাথায় চিনচিন করে উঠলো। কান্নার মাঝেই ‘আহ্’ করে আত্মদান করে গালে হাত দিলাম। ফুপি উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,
“কি হয়েছে মা? বল আমাকে….”

ফুপিকে বলতে চেয়েও কিছুই বলতে পারলাম না, গলা দিয়ে কোনই কথা বের হলো না আমার। কিন্তু গালে হাত রেখে ফুপিয়ে কাঁদতে দেখে হয়তো কিছুটা আন্দাজ করতে পারলো। রাগী চোখে তাসফি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে জোরে করে বলে উঠলো,
“তুই ওকে মে*রেছিস তাসফি? কথা বলছিস না কেন?”

“হ্যাঁ! মে*রেছি। কলেজ ক্যাম্পাসে ছেলেদের হাত ধরে গল্প করবে, আর দেখেও আমি চুপ করে থাকবো, সেটা ভাবলে কি করে তুমি?”

“তাই বলে ওর গায়ে হাত তুলবি? এতটুকু মেয়ের গায়ে হাত তোলার সাহস কি করে হলো তোর?”

“কোনদিক থেকে ছোট মনে হয় ওকে? এই চার বছরে অনেক বড় হয়ে গেছে ও, তোমার কিভাবে ওকে বলো ছোট আছে?”

“তাসফি…. অনেক হয়েছে, আর না? তোকে এই শিক্ষা দিয়েছি? এক্ষুনি সরে যা আমার চোখের সামনে থেকে।”

সাথে সাথে কিছু বললেন না উনি। আমি হালকা করে তাকাতেই যেন ওনার রাগটা বেড়ে গেল। জোরে জোরে নিশ্বাস টেনে ফুপিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলেন,
“তোমার ভাইদের মেয়ে তাদের ঠিক কতটা বড় হয়ে গেছে, লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করা শিখেছে, হাত ধরে ঘুরতে শিখিছে।”

বলেই একটু থামলেন, সেকেন্ডের মতো সময় নিয়ে আবারও বললেন,
“সাথে এটাও বলে দিয়ো ওকে আর এখানে রাখবো না আমি, ঢাকায় নিয়ে যাবো আমার সাথে। দরকার নেই ওর আর কলেজে যাবার। আর তুই…. তোকে চার মাস সময় দিয়েছিলাম না? সেটাও আর পাবি না, ঢাকায় যাবার জন্য প্রস্তুত হয়ে নে।”

শেষ কথাটা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেই আর দাঁড়ালেন না উনি। নিজের রুমে গিয়ে জোরে শব্দ করে দরজা আঁটকে দিলেন। উনি যেতেই অস্পষ্ট সুরে ফুপিকে বলে উঠলাম,
“বব্..বাসায় যাবো…. আ..আমি..”

“একটু শান্ত হু মা… খুব লেগেছে না? কোথায় কষ্ট হচ্ছে বল আমাকে?”

ফুপির কথা শুনে এখন আরও কান্না পাচ্ছে। ফুপির কথার জবাব না দিয়ে শুধু বলতে লাগলাম বাসায় যাবার কথা। অনেক কিছু বুঝিয়ে আমাকে শান্ত করে রুমে নিয়ে আসলো ফুপি। রুমে এসে ফুপির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরলাম। গালের ব্যাথাটা যেন ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। ফোপাঁতে ফোপাঁতে সেভাবেই শুয়ে থাকলাম ফুপিকে আঁকড়ে ধরে।

.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here