#তোমাতেই_খুজি_আমার_পূর্ণতা🤗 (১৯)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)
মধ্য বয়সের লোকটি ধ*র*ফ*রি*য়ে উঠে তীব্রকে নিজের সামনে দেখতে পেয়ে চোখ যেনো কো*ট*র থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম হয়। তীব্র ইশারায় মধ্য বয়সের লোকটির মুখে বে*ধে রাখা কাপড়টি খুলতে বলে। তীব্রের পাশে বালতি হাতে নিয়ে দাড়িয়ে থাকা কালো পোশাকধারী লোকটি হাতের বালতিটি মেঝেতে রেখে মধ্য বয়সের লোকটির পিছনে গিয়ে মুখের বা*ধ*ন খুলে দেয়।
মুখের বাধণ খোলা পেতেই লোকটি জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিতে থাকে , খা*চা থেকে স*দ্য মু*ক্তি পাওয়া পাখিরা যেমন খোলা আকাশে ডানা ঝা*প্টা*তে পেরে অমায়িক সুখ লাভ করে তেমনি মধ্য বয়সের লোকটিও প্রা*ণ ভ*রে নিঃশ্বাস নিতে পেরে নিজের মাঝে সেই সুখ লাভ করে।
তীব্র নিরব থেকেই নিজের কপালের ডান পার্শে ব*ন্দু*ক এর মাথা ঠেকিয়ে আলতো করে ঘ*ষা দিচ্ছে। তীব্রের এই নীরবতা যেনো বড় কোনো ঝ*ড়ে*র পূর্বা*ভা*স , মধ্য বয়সের লোকটি নিজের দৃষ্টি চ*ন্ঞ্চ*ল রেখে বারবার শুকনো ঢো*ক গি*ল*ছে। চোখের পলক না পড়তেই তীব্র লোকটির ডান হাটুতে সু*ট করে। সঙ্গে সঙ্গে মধ্য বয়সের লোকটি ক*রু*ণ আ*র্ত*না*দ করে উঠে। তীব্র উচ্চস্বরে ক*র্ক*শ কন্ঠে লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলে…
____”চুপপপপপপপ……”
তীব্রের ধ*ম*ক মিশ্রিত উচ্চস্বর কর্ণপাত হতেই মধ্য বয়সের লোকটি ঠোঁটের সাথে ঠোঁট চে*পে য*ন্ত্র*ণা স*হ্য করে নেওয়ার দ*রু*ণ প্রচেষ্টা চালায়। কিয়ৎক্ষণ পর তীব্র আবারও বলে উঠে…..
____”আমার আ*ন্ডা*রে এতোগুলো বছর ধরে কাজ করে আসছিস সেই আমার সাথেই এতো বড় বিশ্বাস*ঘা*ত*ক*তা করতে তোর রু*হু কা*প*লো না রে ….জা*নো…. ভাবলি না একবার ও আমি তোদের এই কার্য কলাপের কথা জানতে পারলে তোদের জীবনে ঠিক কোন ভ*য়া*ব*হ দিন গুলো আসতে পারে!
তীব্রের কথা বলার মাঝেই মধ্য বয়সের লোকটি অ*নু*ন*য়ে*র স্বরে বলে উঠে…
____”আমাকে ক্ষ*মা করে দিন ব*স , টাকার লো*ভ আমাকে তার কালো চাদর দিয়ে এমন ভাবে জ*র্জ*রি*ত করে নিয়েছিলো যে কোনটা সঠিক কোনটা ভু*ল সেই দিক-বে*দিক না ভেবেই প্রতিটি প*দ*ক্ষে*প নিয়ে ফেলেছিলাম।”
____”লো*ভে পা*প আর পা*পে মৃ*ত্যু। তুই যে চরম পা*প কাজগুলো করে এসেছিস তই তোর জন্য ভ*য়া*ব*হ মৃ*ত্যু অপেক্ষা করছে।”
____”বস আপনি যা বলবেন সেই সব কথা , কাজ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। আর কখনও বিশ্বাস*ঘা*ত*ক*তা করবো না।”
মধ্য বয়সের লোকটির মুখে এহেনু কথা শুনে তীব্র রুম কা*পি*য়ে হাসতে শুরু করে। তীব্রের হাসির প্র*তি*ধ্ব*নি মধ্য বয়সের লোকটির রু*হু কাঁপিয়ে কাঁপিয়ে তুলছে। পরমুহূর্তেই তীব্র হাসি থামিয়ে রাগে হি*স*হি*সি*য়ে বলে…
____”আমার ডিকশিনারিতে বিশ্বাস*ত*ক*দে*র জন্য ক্ষ*মা বলতে কোনো শব্দ নেই। তোর মৃ*ত্যু অ*ব*ধা*রি*ত।
মধ্য বয়সের লোকটির সর্ব শরীর ঘে*মে একাকার অবস্থা।
তীব্র ওর হাতে থাকা ব*ন্দু*ক*টি লোকটির মাথা বরাবর ধরে আবারও বলে….
____”কতোটুকু জানিস তুই দ্রুত সব বল…!”
লোকটিকে নিরব থাকতে দেখে তীব্র ওর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কালো পোশাকধারী লোকটিকে ইশারা করে। ইশারা পেতেই কালো পোশাকধারী লোকটি মেঝে থেকে আরেকটা বালতি উঠিয়ে নিয়ে মধ্য বয়সের লোকটির উপর ছু*ড়ে মা*রে। এবারের পানিগুলো আগের তুলনায় দ্বি’গুণ গরম ছিলো। চামড়া ঝ*ল*সে যাওয়ার উপক্রম হয় যেনো লোকটির। আবারও কলিজা ছে*ড়া আ*র্ত*না*দ করে উঠে। তীব্র সঙ্গে সঙ্গে হাতে থাকা ব*ন্দু*ক*টি লোকটির মুখের ভিতর ঢু*কি*য়ে দেয়। মধ্য বয়সের লোকটি য*ন্ত্র*ণা*য় ওভাবেই ‘উমমম’ ‘উমমম’ স্বরে কা*ত*ড়া*তে থাকে। কিয়ৎক্ষণ পর তীব্র লোকটির মুখের ভিতর থেকে ব*ন্দু*ক*টি বের করে বলে…
____”বললললললল ….শু*য়া ….
মধ্যবয়সের লোকটি মুখ দিয়ে লা*লা ফেলতে ফেলতে নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে নিয়ে বলতে শুরু করে….
————————-
সাল ২০১৭…….
~~~~~~~~~
তীব্রকে হ*ত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিলো অনেক পূর্ব থেকেই। কিন্তু অত্যন্ত ধূ*র্ত , চা*লা*ক , বুদ্ধি সম্পন্ন , পা*ও*য়া*র ফু*ল , হিং*স্র , রু*ক্ষ মে*জা*জে*র হওয়ায় কেও ই সেই সাহস করে উঠতে পারে নি। দিন কাটতে থাকে। তীব্রের আঁধারে নি*ম*জ্জি*ত জীবনে আলোর দিশা হয়ে আসে নূরা। যার সংস্পর্শে এসে তীব্রের মাঝে পরিবর্তন লক্ষ্য হয়। তীব্র ওর পা*পে*র রাজত্ব ত্য*গ করে ধীরে ধীরে নিজেকে সাধারণ মানুষ হিসেবে তৈরি করতে শুরু হয়।
বেশিরভাগ সময় নূরার সাথে আর অনাথ আশ্রমের বাচ্চাদের সাথে থেকেই কাটিয়ে দেয়। তীব্রের এমন হু*ট করে পরিবর্তন হওয়াকে ওর পক্ষ দলের অনেকেই মেনে নিতে পারে না। করণ তীব্রের পরিবর্তন এর জন্য তারা অনেক বড় একটা শ*ক্তি হা*রি*য়ে ফেলবে , যা কোনো না কোনো সময় তাদের হু*ম*কি*র মুখে ফে’লে দিতে পারে। তাই তীব্রের পক্ষ দলের লোকেরা একত্র হয়ে কূ*ট বুদ্ধি আ*টে আর তীব্রের বি*প*ক্ষ দলের সাথে হাত মিলায়। তীব্রের বি*পক্ষ দলের লোকরা এই সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলো যেনো।
তারা সকলে মিলে প্লা*ন করে অন্য একজন মেয়ের প্লাস্টিক সা*র্জা*রি করে নূরার চেহারা বসিয়ে দিবে। নূরাকে কি*ড*ন্যা*প করে সেই মেয়েটিকে পাঠিয়ে দিবে তীব্রকে হ*ত্যা করে। কিন্তু সেইমূহূর্তে ওরা আরো একটি বড় তথ্য জানতে পারে। জাবেদ ইসলামের বড় মেয়ে বিদেশ থেকে ফিরবেন কিছুদিন পরই , ওর নাম তিলত্তমা তারিন। তারিন এর চেহারার সাথে হুবহু মিল আছে নূরার চেহারার।
তীব্রের গু*লি*র আ*ঘা*তে জাবেদ ইসলামের ছোট মেয়ে নিরা আ*হ*ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। ডাক্তারকে মো*টা অংকের টাকা দেয় আর নিরাকে ভু*ল চিকিৎসার মাধ্যমে মে*রে ফেলতে বলা হয়। ডাক্তার ও টাকার লো*ভে জ*র্জ*রি*ত হয়ে নিরাকে মে*রে ফেলে। কোম্পানি হা*ত*ছা*ড়া হওয়ার পরপরই ছোট মেয়ের মৃ*ত্যু সংবাদ শুনে জাবেদ ইসলাম মানসিক ভাবে ভে*ঙে পরে।
জাবেদ ইসলাম তার নিজ বাসভবন ইসলাম মঞ্জিলে এসে তারিনকে উল্লেখ করে চিঠি লিখে, আ*ত্ন*হ*ত্যা করবেন বলে মনঃস্থির করেন। এমন মানসিক য*ন্ত্র*ণা নিয়ে বে*চে থাকা যেনো অ*সম্ভব হয়ে উঠেছে জাবেদ ইসলামের জন্য। সেইমূহূর্তে তীব্রের বি*পক্ষ দলের কয়েকজন লোক এসে জাবেদ ইসলামের উপর আ*ক্র*ম*ণ করে।
শ্বা*স*রো*ধ করে তাকে হ*ত্যা করে তারই ঘরের সেলিং এর সাথে ঝু*লি*য়ে রাখে, যেনো সকলে দেখে ভাবে জাবেদ ইসলাম স্বইচ্ছায় আ*ত্ন*হ*ত্যা করেছেন। তারিন নির্ধারিত সময়ের ২ দিন পূর্বেই দেশে ফিরে নিজের বাবা-বোনের মৃ*ত্যু সংসাদ শুনে , জাবেদ ইসলামের লেখা চিঠিটি পড়ে রা*গে ক্ষো*ভে ফে*টে পরে। সেইমূহূর্তে তীব্রের বি*পক্ষ দলের লোকেরা তাদের প্লা*ন এর ম*ক্ষ*ম চা*ল চা*লে।
তারিনকে নিজেদের আ*স্তা*না*য় ডেকে আনে। তারপর তারিনকে বুঝিয়ে বলে কিভাবে তীব্রকে হ*ত্যা করতে হবে। তারিনকে নূরার জায়গায় পাঠানোর পূর্বে নূরাকে সেখান থেকে স*রি*য়ে আনতে হবে। আশ্রমের কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে কিনে নেয় তীব্রের বি*পক্ষ দলের লোকেরা। আশ্রমের কর্মকর্তা ও তাদের কথানুযায়ী তীব্রের অনু*প*স্থি*তে নূরার উপস্থিতি দেখে ফোনে কথা বলার অভিনয় করে , নূরাকে শুনায় ওরা আশ্রমের বাচ্চাদের পা*চা*র করার পরিকল্পনা করছে আজ রাতেই (.ঠি..কা..না.) জায়গায় নিয়ে যাবে ।
নূরাও ওদের ফা*দে পা দেয় , তীব্রকে না জানিয়ে আশ্রমের বাচ্চাদের বাচাতে একাই সেই ঠিকানায় চলে যায়। তীব্রের বি*পক্ষ দলের লোকেরা সেইমূহূর্তে নূরাকে কি*ড*ন্যা*প করে নেয়। আর নূরার বে*শে তারিনকে আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়। তারিন আশ্রমে এসে শফিককে বলে সে যেনো রহমান মন্ঞ্জিলে তীব্রের কক্ষ খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। নূরা তীব্রকে ভালোবাসার কথা প্রকাশ করবে এমনই বলে।
তীব্র ও খুশি মনে নিজ বাসায় আসে। তারিন সেদিন নিজেকে নিজের মতো করে সাজিয়েছিলো। নূরা কিভাবে সাজতে পছন্দ করতো তা সম্পর্কে জানতো না। নূরার কথা বলার ধরণ তীব্রের সাথে কেমন ছিলো সে সম্পর্কেও জানতো না। সব নিজের মতো করেই করে তারিন। বি*পক্ষ দলের লোকেরা তীব্রকে হ*ত্যা করতে তারিনকে একটা বি*ষ মাখানো ছু*রি দেয়। তীব্রকে দূ*র্ব*ল করে দিতে পারে এমন ঔ*ষ*ধী ড্রিং*ক*স এ মিশিয়ে খাইয়ে দিতে বলে। তারিন ও সেই অনুযায়ী কাজ করে।
তীব্রকে ড্রিং*ক*স করিয়ে দূ*র্ব*ল বানিয়ে ওর বুকে সেই বি*ষ মাখানো ছু*রি বসিয়ে দেয়। নিজের মনের মধ্যে পু*ষে থাকা সব রা*গ , ক্ষো*ভ তীব্রের উপর প্রকাশ করে ঠিকই কিন্তু তীব্রের মৃ*ত্যু নিশ্চিত না করেই স্থান ত্য*গ করে।
————————
বর্তমান…..
মধ্য বয়সের লোকটির কথাগুলো শোনামাত্র তীব্র স্ত*ব্ধ হয়ে যায় যেনো কিছুসময়ের জন্য। এতো নি*খু*ত পরিকল্পনা করেছিলো ওরা। সেদিন ওদের এই খা’রা’প পরিকল্পনা সফল ই হতো যদি না শফিক আসতো সঠিক সময়ে। সেদিন শফিক কোনো একটা কাজে রহমান মন্ঞ্জিলে আবারও আসতে বা*ধ্য হয়। মূল দরজা খো*লা দেখে দ্রুত পায়ে তীব্রের রুমে এসে দেখে তীব্র উ*বু হয়ে মেঝের উপর পরে আছে। তীব্রের চারপাশ র*ক্ত দিয়ে একাকার অবস্থা।
শফিক দ্রুত গা*র্ড*দের ডেকে ওদের সহায়তায় তীব্রকে হাসপাতালে ভর্তি করে। তীব্রের বুক ছি*দ্র করা ছু*রি*তে যে বি*ষ ছিলো তা খুবই খা*রা*প বি*ষ ছিলো। আর ক্ষ*ত টাও বেশ গভীর হওয়ায় তীব্রের সুস্থ হয়ে বেশ কয়েকমাস লেগে যায়। নূরা রূপী তারিনের থেকে এতো বড় আ*ঘা*ত পেয়ে তীব্র মনে মনে ভিষণ আ*হ*ত হয়৷ এ বিষয় নিয়ে আর খো’জ ও করে নি। আবারও নিজের পুরোনো মা*ফি*য়া ক্য*রে*ক্টা*র এ ফিরে আসে।
#চলবে……….#তোমাতেই_খুজি_আমার_পূর্ণতা🤗 (২০)
#Maisha_Jannat_Nura (লেখিকা)
চি’ন্তা’র ঘো’র থেকে বেড় হয়ে তীব্র ঐ মধ্যবয়সের লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলে…
____”নূরা কোথায়? তোরা কি করেছিস ওর সাথে?”
মধ্য বয়সের লোকটি কান্নারত কন্ঠে বলে…
____”ম্য’ম এর কথা আমি জানি না বস। ওনার সাথে ওরা (তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা) কি করেছে আমি কিছু জানি না। আমি যতোটুকু জানতাম সব আপনাকে খুলে বলেছি ইতিমধ্যে। এবার আমাকে ছে’ড়ে দিন বস, আমাকে মু’ক্তি দিন।”
____”মুক্তি তো তোকে দিবো, তারআগে এটা বল কে কে জড়িয়ে আছে তোদের এই কার্যকলাপের সাথে।”
মধ্য বয়সের লোকটি কয়েকবার শুকনো ঢো’ক গি’লে নেয়। তারপর বলে…
____”আপনার অফিসের ম্যনেজার আবদুল মান্নান সাহেব, ওয়াসিফ, আপনার আপন চাচা ম’ন্ত্রী কামরুল হাসান, তার বড় ছেলে কামাল হাসান আর আপনার বি’পক্ষ দলের নেতা মিরাজ উদ্দিন খোকন একত্র হয়ে আছেন। আর এরাই মূল হো’তা। ম্য’ম আদেও বেঁচে আছেন কি না, কোথায় আছেন সেই সব তথ্য ওরাই আপনাকে দিতে পারবে। আমি আর কিছু জানি না বস।”
লোকটির কথা শেষ হতেই তীব্র কয়েক ল’হ’মা নিরব থাকে। তারপর বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে কালো পোশাকধারী ব’ডি’গা’র্ড’কে ইশারা করে কিছু বলে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে যায় অ’ন্ধ’কা’রা’চ্ছ’ন্ন রুমটি থেকে। তীব্রের ইশারা বুঝতে পেরে কালো পোশাকধারী লোকটি আরো দুজন লোককে সাথে নিয়ে ঐ মধ্য বয়সের লোকটিকে চেয়ার থেকে খুলে একটা স্ট্রে’টা’রে শুইয়ে দিয়ে আবার বে’ধে ফেলে। মধ্য বয়সের লোকটি চিৎকার করে মু’ক্তি চাইছে৷ কিন্তু কেও ওর সেই চিৎকার কানে তুলছে না।
কালো পোশাকধারী লোকগুলো ধা’রা’লো ছু’রি নিয়ে মধ্য বয়সের লোকটিকে সঙ্গানে রাখা অবস্থাতেই শরীরের চামড়া ছি’ল’তে শুরু করে। মধ্য বয়সের লোকটির ক’রু’ণ আ’র্ত’না’দ আর ছু’টা’র প্রচেষ্টায় কোনো পরিবর্তন হয় না কালো পোশাকধারী লোকগুলোর মাঝে৷ তারা তাদের কাজে ব্যস্ত। ধীরে ধীরে শরীরের অ’ঙ্গ গুলোকে ছোট ছোট টু’ক’রো করে ফেলে। একটা সময় আর য’ন্ত্র’ণা সহ্য করতে না পেরে মধ্য বয়সের লোকটি মা’রা যায়।
সব গুলো টুকরো একত্র করে কালো পোশাকধারী লোকগুলো একটা লোহার খা’চা’র সামনে এসে দাঁড়িয়ে পরে। খাঁ’চা’র ভিতর পায়চারী করতে করতে থেমে থেমে হুং’কা’র ছাড়ছে একটা ক্ষু’ধা’র্ত কালো চামড়ার ভা’ল্লু’ক। কালো পোশাকধারী লোকগুলো তাদের হাতে থাকা গো’স্তে’র সব গুলো টুকরো সেই খা’চা’র ভিতর ঢে’লে দেয়। নিমিষের মধ্যে ক্ষু’ধা’র্ত ভা’ল্লু’ক’টি সব গুলো গো’স্তে’র টুকরো ভিষণ আ’মো’দে’র সাথে খে’য়ে ফেলে। ধরনীর বুক থেকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় একজন পা’পী কী’ট।
————————-
সকাল বেলা ঘুম ভা’ঙা’র পর থেকে সম্পূর্ণ বাড়ি জুড়ে তীব্রকে দেখতে না পেয়ে আমার কপালে চি’ন্তা’র ভা’জ স্পষ্ট হয়। গতকাল রাতে তীব্রকে সব খু’লে বলার পর ওর করা প্রতিত্তুর গুলো শোনার পর থেকেই আমার মন অ’স্থি’র হয়ে আছে। কোনো কিছুই ভালো লাগছে না, শুধু মনে ভ’য় কাজ করছে। তীব্রকে হা’রি’য়ে ফেলার ভ’য়।
ড্রয়িং রুমে সোফার উপর বসে আমি মনে মনে আল্লাহকে ডাকতে শুরু করি, আমার থেকে যেনো তীব্রকে তিনি কে’ড়ে না নেন। তীব্র আমাকে ভালো না বাসলেও আমি ওকে ভালোবাসি আর আমি জানি আমি পারবো আবারও তীব্রের মনে ভালোবাসার সৃষ্টি করতে আমার ভালোবাসা দিয়ে। তীব্র ও আমাকে ভালোবেসে ফেলবে। সেই সুযোগ আমি হা’রা’তে চাই না। সব কী’ট দের যথাযথ শা’স্তি দিয়ে আমি আর তীব্র সুস্থ স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চাই।
আমার চি’ন্তা’র মাঝে তীব্র মূল গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। আমি দ্রুততার সাথে বসা অবস্থা থেকে উঠে দাঁড়াই, তীব্র আমার থেকে বেশ খানিকটা দুরত্ব বজায় রেখে দাঁড়িয়ে পরে জিঙ্গাসা করে…
____”এখন শরীর ঠিক আছে তো তোমার?”
আমি আমার দৃষ্টি তীব্রের উপর স্থির রেখে শীতল কন্ঠে বলি…
____”সব পা’পী’দে’র শা’স্তি দিতে গিয়ে আমার থেকে দূরে চলে যাইয়েন না দয়া করে। আমি আপনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কা’ঙা’ল হয়ে আছি। আমাকে এভাবে য’ন্ত্র’ণা দেওয়ার অধিকার আপনার নেই।”
আমার কথা শুনে তীব্র চ’ট করেই তাকায় আমার দিকে। ওর এই দৃষ্টি আমার বুকের ভিতরটা মু’চ’ড়ে দেয় যেন। আমি তীব্রের প্রতিত্তুরের আশায় আছি। তীব্র আমাকে হ’তা’শা’র অতল সাগরে ছে’ড়ে দিয়ে কোনো টু শব্দটি না করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায় দ্রুত পায়ে। আমি তীব্রের যাওয়ার পা’নে তাকিয়ে আছি। চোখ জোড়া দিয়ে ঝরঝর করে নোনা জল গড়িয়ে পড়ছে। ঠোঁট চে’পে কান্না নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। আমার মন যেন থেমে থেমে চিৎকার করে জানতে চাইছে….
____”সবকিছুর ভি’ড়ে আমার দো’ষ কোথায়? ভালোবাসা আমাকে এতো ক’ঠি’ন য’ন্ত্র’ণা কেন দিচ্ছে? প্রতিটি ক্ষ’ণে আমি শে’ষ হয়ে যাচ্ছি। যাকে নিজের সবটা উ’জা’র করে ভালোবাসি সেই মানুষটির চোখের দিকে তাকালে নিজের জন্য এক চিলতে পরিমাণ ও ভালোবাসা দেখতে পাই না, এর থেকে গভীর য’ন্ত্র’ণা আর কিছুতে আছে কি!”
————————-
ওয়াসিফ এর হু’ট করে গা’য়ে’ব হয়ে যাওয়ার খবর তীব্র অনেক আগেই পেয়েছিলো। বিষয়টা নিয়ে তখন এতোটা মাথা ঘা’মা’য় নি, কিন্তু এখন খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে ওর চারপাশে এমন অনেক বি’ষা’ক্ত কী’টে’রা বাস করছে যারা নিজেদের স্বা’র্থে এতোটুকু পরিমাণ আ’চ আসতে দিতে রাজি না। তার জন্য যদি নিজের র’ক্ত’কেও আ’ঘা’ত করতে হয়, হ’ত্যা করতে হয় সে বিষয়ে কেও দু’বার ভাববে না।
মা’ফি’য়া জগৎটি এমনই, এখানে কোনো সম্পর্কের কোনো মূল্য নেই। বাবার স্বার্থে ছেলে ব্য’ঘা’ত হা’ন’লে ছেলেকে খু’ন করবে তেমনি ছেলের স্বা’র্থে বাবা ব্য’ঘা’ত হা’ন’লে বাবাকেও ম’র’তে হবে। নিজের জীবন একান্ত নিজের সম্পদ, তাই নিজের সম্পদকে একান্ত নিজেকেই র’ক্ষা করে এই মা’ফি’য়া জগতে প্রতিটি প’দ’ক্ষে’প ফেলতে হয়।
তীব্র এখন আর কাওকে পুরোপুরি বিশ্বাস করবে না, যাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবে বলে ঠিক করবে ১ম এ তার সবথেকে দূ’র্ব’ল জায়গা গুলোকে জেনে নিয়ে নিজের ক’ব্জা’য় রাখতে হবে নয়তো কখন কে আবার পিঠ পিছনে আ’ঘা’ত করে বসে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। পা’পে’র সাম্রাজ্য গড়ে তোলা ভিষণ সহজ, কিন্তু পা’পে’র সাম্রাজ্য ধ্বং’স করে ভালোর সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করার পথ অত্যন্ত ক’ঠি’ন, ভ’য়া’ব’হ, অনেক বা’ধা পে’ড়ো’তে হয়।
—————————
কে’টে যায় ২দিন,
এরমাঝে তীব্র তারিনের খোঁজ নিয়েছে। তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা তীব্রকে হ’ত্যা করার জন্যই কেবল তারিনকে ব্যবহার করেছিলো। তারিন সেই কাজ সম্পন্ন করেছে, তীব্র মা’রা গিয়েছে এমনটা ভেবে নিয়ে তীব্রের শ’ত্রু পক্ষের লোকেরা তারিনকেই মে’রে ফেলেছে। কোনো প্রমাণ তারা রাখতে চায় না, একটা ভু’ল করলে তাদের এতোগুলো বছর ধরে গড়ে তোলা পা’পে’র সাম্রাজ্য মূহূর্তেই ভে’ঙে গু’ড়ি’য়ে যেতে পারে।
তীব্র ওর চাচা কামরুল হাসান আর চাচাতো ভাই কামাল হাসানের সাথে হিসাব পরে মি’টা’বে বলে মনঃস্থির করে। তার আগে ওর অফিসে কাজ করে ম্যনেজার আবদুল মান্নানের অ’স্তি’ত্ত্ব নি’শ্চি’হ্ন করতে হবে। ডাল-পা’লা ছা’টা’ই করে ফেললে পরে গাছের মূল অংশটাকে এক কো’পে কে’টে ফেলা যাবে৷
—————————-
নিজরুমে সোফায় বসে ল্যপটপে কিছু কাজ করতে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করে রেখেছিলো তীব্র। আমি বেশ অনেকক্ষণ হলো তীব্রের রুমের দরজার সামানে দাঁড়িয়ে থেকে ওর কার্যকলাপ দেখছি। ইদানিং মানুষটা অনেক বেশিই পরিবর্তন দেখাচ্ছে নিজের মাঝে, কেমন যেনো আমার সাথে নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টায় ব্য’স্ত থাকে। বিষয়টা নিয়ে আমি মনে মনে ভিষণ বি’র’ক্ত। আজ এর একটা বি’হী’ত করেই ছাড়বো বলে মনঃস্থির করেছি। উনি মা’ফি’য়া কিং হতে পারেন আমিও মা’ফি’য়া কুইন।
আমার ভালোবাসা এতো তু’চ্ছ আর স’স্তা নাকি যে এভাবে পা’ত্তা না দিয়ে এড়িয়ে চলবে। এখনও পর্যন্ত তীব্রের আমাকে লক্ষ্য না করার বিষয়টা যেনো আমার কা’টা ঘাঁ*য়ে নু’নে’র ছি’টা’র মতো কাজ করছে। আমি আর একমুহূর্তের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত পায়ে তীব্রের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম। আমার আর তীব্রের মাঝে রাখা রয়েছে একটা টি-টেবিল। আমি দ’প তীব্রের ল্যপটপটা ব’ন্ধ করে দেই, তারপরও তীব্র আমার দিকে তাকালেন ও না। আবার ও ল্যপটপ অন করতে নিলে বিষয়টা এবার অ’তি’রি’ক্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে আমার।
আমি দু’হাতে টি-টেবিলটা আমাদের মাঝে থেকে সড়িয়ে দ’প করে তীব্রের কোলের উপর বসে পড়লাম। আমার হঠাৎ এমন কাজে তীব্র কিছুটা অ’প্রস্তুত হয়ে পরে। আমাকে কিছু বলতে প্রস্তুত হতে নিবে তারপূর্বেই আমি তীব্রের ঠোঁটের ভা’জে আমার ঠোঁট বসিয়ে দি। এতো সময়ের যতো ক্ষো’ভ, রাগ আমার মাঝে জমে ছিলো সব একসাথে ঝা’রা’র উপায় যেনো মিলে গিয়েছে আমার। তীব্র বিন্দুমাত্র বা’ধা প্রয়োগ করলেন না। আমার রা’গ নিয়ন্ত্রণ হতেই আমি তীব্রের ঠোঁটের ভা’জ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে নিলে তীব্র এবার ওর দু’হাতে আমার কমোর জড়িয়ে ধরে পরম আবেশে আমার ঠোঁটের স্বা’দ গ্রহন করতে থাকে দু’জনেই কয়েক মূহূর্তের জন্য ডু’বে যাই অন্য জগতে।
#চলবে………
[😶বা’চ্চা’রা ই’গ’নো’র মাই লু’মা’ন্তি’ক কথাবার্তা😣]