#তোমাতেই_রহিব_বিলীন
#পর্ব_১৫
#নিশাত_জাহান_নিশি
“আআপনি? আআপনি আমার রুমে কি করছেন?”
ঘটনার আকস্মিকতায় জিজু হঠাৎ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন। ড্রিম লাইটের মিহি আলোতে স্পষ্ট আমি জিজুর ঘর্মাক্ত অবয়ব দেখতে পারছি। অস্থিরতা নিয়ে জিজু দৌঁড়ে রুম থেকে ছুটে পালাতেই মনে হলো রুমের দরজাটায় ভেতর থেকে কেউ খিল আটকে দিলো। হুড়মুড়িয়ে আমি শোয়া থেকে উঠে দাঁড়াতেই রুমের লাইটটা হঠাৎ অন হয়ে গেলো। দরজার দিকটায় উদগ্রীব দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখতে পেলাম আহনাফ বাঁকা হেসে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আহনাফের ঠিক দু ফুট দূরত্বে জিজু অপরাধী ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। হম্বিতম্বি হয়ে আমি ছুটে এলাম দুজনের মাঝখানে। কৌতুহলী দৃৃষ্টিতে কিছুক্ষন আমি আহনাফের দিকে তাকাচ্ছি তো কিছুক্ষন জিজুর দিকে। আকস্মিকভাবে দুজনই শক্ত মুখ ভঙ্গি নিয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছেন। নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে আমি কম্পিত কন্ঠে জিজুকে উদ্দেশ্যে করে বললাম,,
“আআপনি আআমার রুমে কিকিকি করছিলেন জিজু?”
আমার কথায় কোনো রূপ তোয়াক্কা না করে জিজু খড়তড় দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে চেয়ে আছেন। আহনাফ অট্ট হেসে দরজার হেলান ছেড়ে দাঁড়ালেন। অতঃপর হাত দুটো ঝেঁড়ে আহনাফ জিজুর সম্মুখস্ত হয়ে জিজুকে প্রশ্ন ছুড়ে বললেন,,
“তো ভাইয়া বলো। প্রভার রুমে তুমি এতো রাতে কি করছিলে?”
জিজু রাগে গজগজ করে ডান হাতটা মুষ্টিবদ্ধ করে আহনাফের দিকে তেজী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,,
“আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়া আহনাফ। রুম থেকে বের হতে দে আমায়!”
আহনাফ এক রোঁখা ভাব নিয়ে বললেন,,
“স্যরি টু সে ভাইয়া! প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া অবধি তোমার কোথাও যাওয়া হচ্ছে না ভাইয়া। সো সামনে থেকে সর, সামনে থেকে সর। এসব বলে আমার মাথা গরম করো না।”
জিজু রক্তিম দুচোখে আহনাফের দিকে তাকিয়ে ঝড়ের গতিতে আহনাফকে জোরে এক ধাক্কা মেরে দরজার খিল খুলে দৌঁড়ে রুম থেকে প্রস্থান নিলেন। আহনাফ হম্বিতম্বি হয়ে জিজুকে ধাওয়া করার পূর্বেই আমি পেছন থেকে উত্তেজিত কন্ঠে আহনাফকে ডেকে বললাম,,
“আহনাফ প্লিজ স্টপ। বাড়ি ভর্তি মেহমান আপনাদের। ফর দ্যা গড সেইক, দু ভাই মিলে কোনো সিনক্রিয়েট তৈরী করবেন না প্লিজ। তাছাড়া এটা আপনাদের খালামনির বাড়ি। নিজেদের বাড়ি নয়। বুঝতে পারছেন তো? আমি কি মিন করতে চাইছি?”
আহনাফ থেমে গেলেন। তাৎক্ষণিক পিছু ফিরে আহনাফ উদয়স্ত রাগ, জেদ সমেত আমার মুখোমুখি দাঁড়ালেন। রাগকে শান্ত করার বৃথা চেষ্টা করে আহনাফ কপালে জমে থাকা বিন্দু বিন্দু ঘাম গুলো মুছে আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললেন,,
“ঘুমানোর পূর্বে যে দরজা লক করে ঘুমাতে হয় জানো না তুমি? দরজাটা ওপেন করে ঘুমুলে কেনো তুমি? মিনিমাম কমনসেন্স টুকু নেই তোমার?”
“আশ্চর্য! আমি কি জানতাম নাকি? কেউ এই মাঝরাতে দরজা খুলে আমার রুমে ইন করবে? তাছাড়া দরজা লক করে ঘুমানোর অভ্যেস নেই আমার। কেমন যেনো ভয় কাজ করে!”
“তুমি আশ্চর্য ওকে? এই প্রথম আমি শুনলাম, কেউ ভয় কাটানোর জন্য দরজা ওপেন করে ঘুমায়! ভয় পেলেই তো মানুষ দরজা লক করে ঘুমায় নাকি? তোমার ক্ষেএেই যতোসব উল্টো নিয়ম!”
“আপনি কি এই রাত বিরাতে আমার সাথে ঝগড়া করতে এসেছেন? আমার খুঁত ধরতে এসেছেন? কে দরজা লক করে ঘুমালো না ঘুমালো এসব খুঁজতে এসেছেন?”
আহনাফ ভীষন ক্ষেপে আমার গাঁয়ের সাথে একদম এডজাস্ট হয়ে দাঁড়িয়ে তটস্থ কন্ঠে আমায় বললেন,,
“কিপ ইউর মাউথ শাট ওকে? আমি তোমার খুঁত ধরতে আসি নি৷ তোমায় জাস্ট সেইফ করতে এসেছিলাম। আমি আগে থেকেই জানতাম এমন কিছু একটা ঘটবে। তাই আগে থেকেই প্রিপারেশন নিয়ে রেখেছিলাম।”
জিগ্যাসু কন্ঠে আমি আহনাফকে বললাম,,
“সিরিয়াসলি? আপনি জানতেন জিজু আমার রুমে প্রবেশ করবেন?”
“তোমার কি মনে হয়? আমি না জেনেই রাত জেগে তোমার রুমের আশেপাশে ঘুড়ঘুড় করছিলাম?”
“তাহলে নিশ্চয়ই এটা ও জানেন, জিজু কেনো এই রাত বিরাতে আমার রুমে প্রবেশ করেছিলেন? কোনো বেড ইন্টেনশান ছিলো উনার?”
“আলবাত ছিলো। তোমার উপর ভাইয়ার ফার্স্ট থেকেই বেড ইন্টেনশান ছিলো। যা তুমি কখনোই বুঝতে পারো নি। আসলে বুঝার চেষ্টাই করো নি। আজ শুধু ভাইয়া বেঁচে গেলেন, বাড়িটা আমাদের নয় বলে। নয়তো ভাইয়ার মুখোশ আজ সবার সামনে টেনে খুলতাম আমি৷ ড্যাম ইট, সুযোগটা ফসকে গেলো হাত থেকে!”
একদম নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম আমি। কি বলছেন আহনাফ এসব? সত্যিই জিজুর প্রথম থেকে আমার উপর বেড ইন্টেনশান ছিলো? কোনো ভাবে জিজু আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলেন? তবে আপু? আমার আপুর কি হবে? জিজু যে আপুর হাজবেন্ড। জিজুর এই খারাপ দিকটার কথা আপু জানতে পারলে ধৈর্য্য নিয়ে সবটা সহ্য করতে পারবেন তো? আমার আপুর কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে না তো? আপুর ভালোবাসার সংসারটা ভেঙ্গে যাবে না তো?
নির্জীব অবস্থায় আমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আহনাফ আমার দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন,,
“কি ভাবছ? আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না তাই তো?”
স্তম্ভিত দৃষ্টিতে আমি আহনাফের দিকে চেয়ে বললাম,,
“জিজু সত্যিই এতোটা খারাপ?”
“আমার কোনো সাধ নেই জেঁচে নিজের ভাইকে খারাপ বলার৷ কষ্ট হচ্ছে আমার কথা গুলো বলতে৷ তবে না বলে ও থাকতে পারছি না। সম্পর্ক যতোই গভীর হোক না কেনো, সত্যটা থেকে আমি সরতে পারি না!”
উৎসুক দৃষ্টিতে আমি আহনাফের দিকে চেয়ে বললাম,,
“অর্ধ কথা না বলে সম্পূর্ণ বিষয়টা শেয়ার করুন। একদম প্রথম থেকে। আমি ফার্স্ট টু লাস্ট সব শুনতে চাই।”
“পারবে তো সহ্য করতে?”
আমি দৃঢ় কন্ঠে বললাম,,
“পারব। আপনি বলুন।”
“ওকে। তবে বড় সড় একটা আঘাত পাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে নাও!”
আমার সম্মুখ থেকে সরে আহনাফ দ্রুত বেগে প্রথমে রুমের দরজাটা লক করে দিলেন। অতঃপর খপ করে আমার হাতটা ধরে আমাকে নিয়ে সোজা ব্যালকনীতে চলে এলেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম মধ্যরাত ২ঃ৩০ মিনিট বাজছে। সমগ্র ধরা রাতের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বড্ড শুনশান হয়ে আছে। চারিদিক থেকে কেবল ঝিঁ ঝিঁ পোকার আওয়াজ ভেসে আসছে। আকাশে অর্ধ চাঁদ বিরাজ করছে। অতি অল্প জোসনার বিকিরন ঘটছে ধরাতে। চাঁদকে ঘিরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অসংখ্য তাঁরারা তাদের আধিপাত্য বিস্তার করে আছে। নিকষ কালো আকাশের সঙ্গী চাঁদ এবং তাঁরাদের উপস্থিতিতে ও আকাশটা কেমন গুমোট লাগছে। কিছুক্ষন পর পর বৈরী বাতাস শরীরে কাঁটা তুলে দিচ্ছে। উড়নার আঁচলটা সেই বাতাসের প্রকোপে দ্বিধাহীন ভাবে উড়ে আহনাফের চোখে, মুখে ঠিকড়ে পড়ছে। আহনাফ এখনো আমার হাতটা ছোঁয়ে আছেন। নেশাভরা দৃষ্টিতে আমার পানে এক ধ্যানে চেয়ে আছেন। উড়নাটা যতো বারই উনার চোখ মুখ স্পর্শ করছে, ততো বারই উনি উড়নাটা আলতো হাতে মুখ থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তবে শেষ বার উড়নাটা যখন উনার ঠোঁট ছুঁলো সঙ্গে সঙ্গেই উনি উড়নাটা খপ করে ধরে উড়না সমেত আমাকে হেচকা টান দিয়ে উনার বুকের পাজরে মিশিয়ে নিলো। মুহূর্তের মধ্যে উত্তেজিত হয়ে আহনাফ আমার গলায় মুখ ডুবিয়ে ঘোর লাগা কন্ঠে বললেন,,
“আমি চাই নি কোনো ভুল করতে। তবে তুমিই বাধ্য করলে আমার মনকে ডিস্টার্বড হতে। এবার এই বেহায়া মনকে আমি মানাই কি করে?”
চেয়ে ও কেনো জানি না আটকাতে পারছিলাম না আহনাফকে। পরম আবেশে চোখ জোড়া বুজে আমি আহনাফের ঠোঁটের স্পর্শ মাখছিলাম সমস্ত ঘাড় জুড়ে। হিম শীতল শরীরটা উষ্ণ হয়ে উঠছিলো আহনাফের উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শে। শ্বাস পাল্লা দিয়ে ভারী হচ্ছিলো। উত্তেজনায় হাত, পা কাঁপছিলো। হার্টবিট টিউ টিউ শব্দে ভেতর থেকে বোধ হয় বেরিয়ে আসছিলো। এর মাঝেই আহনাফের ঠোঁটের বিচরন আচমকা থেমে গেলো। তাৎক্ষনিক আহনাফ আমায় ছেড়ে মোটামুটি ২ ফুট দূরত্বে সরে দাঁড়ালো। আমি আধো চোখে আহনাফের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারলাম আহনাফ তার ঘোর কেটে মাএ বেরিয়েছেন। চোখে, মুখে অনুশোচনার ছাপ ফুটে আছে। সামনের চুল গুলো টেনে আহনাফ চশমার ফ্রেমটা উপরে তুলে আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে শুকনো ঢোক গিলে বললেন,,
“স্যস্যরি।”
লজ্জায় আমি মাথা নিচু করে ছোট আওয়াজে বললাম,,
“ইট’স ওকে!”
আহনাফ আচমকা আমার কপালে কপাল ঠেঁকিয়ে বললেন,,
“বিয়ের পরেই আমাদের মিলন হোক। জাস্ট কয়েকটা দিন ধৈর্য্য ধরতে হবে আমার। আই হোপ সো, আমি পারব!”
আমি ম্লান হেসে মাথা নাঁড়িয়ে সম্মতি জানালাম। আহনাফ দীর্ঘশ্বাস নির্গত করে মলিন কন্ঠে আমায় উদ্দেশ্য করে বললেন,,
“জানো? তোমার ঐ ফেইক আইডিটা হ্যাকড হয়েছিলো?”
আমি উৎসুক কন্ঠে বললাম,,
“জানি। কিন্তু কে করেছিলো আহনাফ?”
“আরিফ ভাইয়া!”
“হোয়াট? জিজু হ্যাক করেছিলেন আইডিটা?”
“ইয়েস। কজ আরিফ ভাইয়া জানতেন তুমি গোপনে এই আইডিটা ইউজ করো। আর মাঝে মধ্যেই এই আইডি থেকে ছেলেদের সাথে মজা করো!”
“কিন্তু কিভাবে? জিজুর তো জানার কথা নয়!”
“কোনোভাবে জানতে পেরেছিলেন হয়তো!”
আমি আগ্রহ নিয়ে বললাম,,
“তারপর?”
“ভাইয়া জানতেন, আমি প্রথম থেকেই তোমাকে ভালোবাসতাম। আই মিন প্রথম দেখাতেই তোমার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।”
হতবিহ্বল কন্ঠে আমি চোখ জোড়া আকস্মিকতা নিয়ে বললাম,,
“সিরিয়াসলি আহনাফ? আপনি প্রথম থেকেই আমাকে পছন্দ করতেন?”
“শুধু পছন্দই না! ভালোবাসতাম। ভাইয়ার বিয়ের কিছুদিন পরেই তো কিছু দরকারী কাজে আমায় অপারগ হয়ে কানাডায় ব্যাক করতে হয়। দীর্ঘ ৬ টা মাস কানাডায় আমি পাগলের মতো তোমার স্মৃতিচারন করেছিলাম। প্রতিটা দিন, প্রতিটা ক্ষন, প্রতিটা মুহূর্ত তোমায় ভেবে অবলীলায় কাটিয়ে দিয়েছিলাম। অনেক বার ট্রাই করেছিলাম তোমার সাথে কন্ট্রাক্ট করতে। তবে ভয়, ভীতি, সংকোচবোধ থেকে তোমার সাথে কন্ট্রাক্ট করার সাহসটা জোগাতে পারি নি!”
“এরপর?”
“এরপর! তোমার ফেইক আইডির সন্ধান পাই আমি৷ আশ্চর্যের বিষয় কি জানো?”
“কি?”
“ফেইক আইডি থেকে তুমিই এট ফার্স্ট আমাকে নক করেছিলে। আই মিন তোমার ছদ্মবেশে থাকা আরিফ ভাইয়া আমাকে নক করেছিলেন। অথচ আমি এতোটাই বোকা যে, কখনো ধরতেই পারি নি ওটা তুমি ছিলে না। তোমার আড়ালে থাকা দু, দুটো কাছের মানুষ, আপন মানুষ আমার ইমোশন নিয়ে ঠাট্টা, বিদ্রুপ করছিলো!”
#তোমাতেই_রহিব_বিলীন
#পর্ব_১৬
#নিশাত_জাহান_নিশি
“ফেইক আইডি থেকে তুমিই এট ফার্স্ট আমাকে নক করেছিলে। আই মিন তোমার ছদ্মবেশে থাকা আরিফ ভাইয়া আমাকে নক করেছিলেন। অথচ আমি এতোটাই বোকা যে, কখনো ধরতেই পারি নি ওটা তুমি ছিলে না। তোমার আড়ালে থাকা দু, দুটো কাছের মানুষ, আপন মানুষ আমার ইমোশন নিয়ে ঠাট্টা, বিদ্রুপ করছিলো!”
প্রকান্ড চোখে আমি আহনাফের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,
“দুজন? দুজন কে কে?”
আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিশ্বাসহীন কন্ঠে বললেন,,
“ভাইয়া এবং তনিমা!”
“হোয়াট? তনিমা আপু?”
“হুম তনিমা!”
ভ্রু যুগল খড়তড় ভাবে কুঁচকে আমি প্রশ্নবিদ্ধ কন্ঠে বললাম,,
“এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড! আপনি কি মিন করতে চাইছেন? জিজু এবং তনিমা আপু পূর্ব থেকে পরিচিত?”
আহনাফ মাথা নিচু করে মলিন কন্ঠে বললেন,,
“ইয়েস। দুজনের মধ্যেই লাভ রিলেশান ছিলো প্রায় ৭ মাস যাবত! যখন আমি কানাডা ব্যাক করি তখনই তাদের সম্পর্কটা ভাঙ্গে! আর তখনই তনিমার মুখ থেকে আমি সব সত্যিটা জানতে পারি।”
মাথায় বোধ হয় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আমার। স্থিরতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না এক জায়গায়। বুকটা অসহনীয় ভাবে কেঁপে উঠছিলো৷ ভেতর থেকে আহত মনের আর্তনাদ হু হু শব্দে নিঃসৃত হচ্ছিলো! আহনাফ এসব কি বলছেন? জিজুর সাথে তনিমা আপুর সম্পর্ক ছিলো? তাহলে এর মাঝে আমাকে এবং আহনাফকে ইনভলভ করলেন কেনো জিজু? আর আপু? অগোচড়ে জিজু আপুর সাথে প্রতারনা করছিলেন? আপুকে ঠকাচ্ছিলেন? তবে কি আপুর সংসারটা এবার ভেঙ্গেই যাবে? এই জীবনে আপুর আর সংসার করা হবে না? পারব তো আমরা আপুকে সামলাতে? এই কথা গুলো শুনলে তো আমার আপু সহ্য ই করতে পারবেন না! বাঁচিয়ে রাখতে পারব তো আমরা আপুকে?
অশ্রুসিক্ত চোখে আমি ফুঁফিয়ে উঠে বললাম,,
“তার মানে আপনার ভাই এতো বছর যাবত আমার আপুর সাথে চিট করছিলেন? পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন?”
আহনাফ উল্টো দিকে ঘুড়ে নিচ কন্ঠে বললেন,,
“হুমম। আমার ভাইয়া ভাবীর সাথে চিট করছিলেন। পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন সম্পূর্নভাবে। ছোট ভাই হয়ে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে এসব বলতে আমার একটু ও বিবেকে বাঁধছে না বিশ্বাস করো। তবে আমি লজ্জিত। বড় ভাইয়া হিসেবে ভাইয়াকে পরিচয় দিতে আমার ভীষন লজ্জাবোধ করছে, ঘৃনা কাজ করছে!”
উদ্বেগী কন্ঠে আমি পুনরায় প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,
“তনিমা আপু? তনিমা আপু জানতেন না? আপনার ভাইয়া বিবাহিত?”
“না। জানত না বলেই তনিমা ভাইয়ার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলো!”
“তনিমা আপুর কথা আপনি বিশ্বাস করে নিলেন? ৬ মাস রিলেশানে থাকা সত্ত্বে ও উনি বুঝতে পারেন নি আপনার ভাইয়া বিবাহিত? কথা, বার্তা, আচার-আচরন, ভাব-ভঙ্গি এসব দেখে ও কিছু আঁচ করতে পারেন নি?”
“ছলনাকারীর ছল বুঝতে হলে উল্টো পাশের মানুষটাকে ও ছলনাময়ী হতে হয়! তনিমা ছলনাময়ী টাইপ মেয়ে ছিলো না বলেই কিছু বুঝতে পারে নি। তাই এই বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ হয় নি!”
অধৈর্য্য কন্ঠে আমি একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,
“তাদের পরিচয় হয়েছিলো কিভাবে? তনিমা আপু এর আগে কখনো আপনার ভাইয়াকে দেখেন নি? কখনো আপনাদের বাড়িতে আসেন নি? কখনো আপনার ভাইয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান নি? ইসসস সব গুলিয়ে যাচ্ছে আমার!”
“তনিমার সাথে আমাদের পরিচয় বলো বন্ধুত্ব বলো সবটাই হয় কানাডায়। ভাইয়ার বিয়ের আনুমানিক ৬ মাসে পূর্বে। এর মধ্যে তনিমা কখনো বিডিতে আসে নি। তাই আমাদের বাড়িতে কখনো আসা যাওয়া হয় নি তার। ভাইয়া সম্পর্কে ও বিস্তারিত জানা হয় নি।”
“তাহলে আপনার ভাইয়া কোন পরিচয়ে তনিমার আপুর সাথে সম্পর্কে ছিলেন? মানে, কিভাবে তাদের পরিচয় হয়েছিলো?”
“ফেইসবুক থেকে। আমি, নেহাল এবং তনিমা প্রায় মাঝে মধ্যেই গ্রুপ ছবি ফেইসবুকে আপলোড করতাম। ওখান থেকেই ভাইয়া তনিমাকে চিনে, জানে, পরিচিত হয়। তবে তনিমার সাথে ভাইয়ার পরিচয়টা হয় ভাইয়ার ফেইক একাউন্ট থেকে! তাই তনিমা কিছু বুঝতে পারে নি। জানতে ও পারে নি ফেইক আইডির আড়ালে থাকা মানুষটা আমার বড় ভাইয়া ছিলেন!”
“মানে কি? আপনার ভাইয়াকে না দেখে না শুনে না চিনেই তনিমা আপু হুটহাট সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন?”
“ভাইয়া নিজের রিয়েল কয়েকটা ছবি তনিমাকে সেন্ড করেছিলেন। পরিচয় দিয়েছিলেন, ভাইয়া আমার দুঃসম্পর্কের আত্নীয়। এখনই এই সম্পর্কের বিষয়টা যেনো তনিমা আমাকে না জানায়। সময়, সুযোগ বুঝে ভাইয়া ই আমাকে সবটা জানাবেন। আর তনিমা ও ভাইয়ার কথায় সায় জানিয়ে কখনো কিছু জানায় নি আমাকে।”
“জিজু এবং আপুর বিয়ের ছবি ও তনিমা আপু কখনো দেখেন নি? আপনি কানাডা ফিরে আপনার ভাইয়ার বিয়ে সম্পর্কে তনিমা আপুকে কিছু জানান নি?”
“ভাইয়ার বিয়ে ছিলো ওটা জানত তনিমা। বাট ভাইয়ার ছবি বা ভাইয়ার বিয়ের ছবি কখনো দেখতে চায় নি তনিমা। আর আমি ও অতোটা আগ্রহ নিয়ে তনিমাকে কখনো ভাইয়ার ছবি টবি দেখাই নি। আমার ভাইয়ার নাম যে আরিফ, ওটা ও জানত না তনিমা। তাছাড়া ভাইয়া উনার আসল নাম তনিমাকে বলেন নি, ফেইক নাম বলেছিলেন!”
“কিন্তু এর মধ্যে আমি এলাম কিভাবে? আমাকে এবং আপনাকে ফাঁসানো হলো কেনো? জিজু তো তনিমা আপুকে ভালোবাসতেন তাই না?”
“তোমাকে দেখার পর থেকে ভাইয়ার আস্তে আস্তে তনিমার প্রতি মোহ কেটে যায়! সেই মোহ এসে পড়ে তোমার উপর৷ ভাইয়া তোমাকে কখনো ভাবীর ছোট বোন হিসেবে দেখেন নি। সবসময় কু-দৃষ্টিতে দেখেছেন। যা তুমি কখনো আঁচ করতে পারো নি।”
“ছিঃ! শেষ পর্যন্ত জিজু আমাকে ও ছাড়েন নি? আমাকে ও টার্গেট করেছিলেন?”
“হুম। জানি না, আর কতজন মেয়ে ভাইয়ার কু-দৃষ্টির স্বীকার হয়েছে। ভাইয়ার লালসার স্বীকার হয়েছে!”
“কিন্তু জিজু ফেইক একাউন্ট খুলেছিলেন কেনো? কি স্বার্থ ছিলো এতে?”
“ভাইয়া কোনো ভাবে জানতে পারেন, প্রথম দেখায় আমি ও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম! আর দেশে ফিরেই আমি তোমার ফ্যামিলিতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো। আর তখনই ভাইয়া আমার চোখে তোমাকে খারাপ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যান। ফেইক একাউন্ট খুলে তুমি সেজে আমার সাথে কথা বলেন। সব’চে আশ্চর্যের বিষয় কি জানো?”
“কি?”
“এই পুরো বিষয়টাতে তনিমা ও ভাইয়ার সাথে জড়িত ছিলো!”
“মানে? কিভাবে?”
“ভাইয়ার ভালোবাসায় তনিমা এতোটাই অন্ধ হয়ে পড়েছিলো যে, ভাইয়া যা বলত তনিমা তাই শুনত এবং তাই করত। তনিমার একটা ভালো গুন আছে। তনিমা ভয়েজ চেইঞ্জ করে কথা বলতে পারে। যে কারো কন্ঠ নকল করে সে হুবহু সেই কন্ঠে কথা বলতে পারে। ভাইয়া কোনো ভাবে তোমার ভয়েজ রেকর্ডিং করে সেই রেকর্ডিং টা তনিমাকে শুনায়। আর তনিমা সেই ভয়েজ রেকর্ডিং অনুযায়ী স্বর পাল্টে ফেইক একাউন্ট থেকে আমার সাথে কল+ভয়েজে কথা বলত!”
“এসবে তনিমা আপুর কি স্বার্থ ছিলো? আপনারা দুজন তো খুব ভালো বন্ধু ছিলেন তাই না? তনিমা আপু জেনে বুঝে কিভাবে আপনাকে ঠকাতে পারলেন?”
“ঐ যে বললাম, ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো! দুষ্টু লোকের কথা স্বভাবতই মিষ্টি হয়। যে কেউ সেই মিষ্টি কথায় ভুলতে বাধ্য। এছাড়া ও ভাইয়া হুমকি দিয়েছিলেন তনিমাকে। তনিমা যদি ভাইয়ার কথা শুনে না চলে তবে তনিমার সাথে সব সম্পর্ক এখানেই শেষ করে দিবেন। তনিমার কিছু পার্সোনাল ছবি ভাইরাল করে দিতে বাধ্য হবেন! নির্বোধ তনিমা তখন ও জানতে পারে নি ভাইয়া বিবাহিত। এমনকি তোমাকে কোনো ভাবে পাওয়ার জন্য যে ভাইয়া তনিমাকে ইউজ করছে তনিমা তা ও তনিমা বুঝতে পারে নি। প্রেমে তনিমা ঠিক এতোটাই অন্ধ হয়ে পড়েছিলো!”
ফুঁফিয়ে কেঁদে আমি ধপ করে ফ্লোরে বসে প্রচন্ড জেদ দেখিয়ে বললাম,,
“ছিঃ ছিঃ ছিঃ। জিজু এতোটা খারাপ মন মানসিকতার মানুষ? এই নোংরা মানুষটাকে আমার জিজু বলে ডাকতে ও বিবেকে বাঁধছে।”
আহনাফ পিছু ঘুড়ে দাঁড়ালেন। আমার দিকে কিছুক্ষন নিস্ক্রিয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আহনাফ ও আমার মতো ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লেন। নতজানু হয়ে আহনাফ নিচ কন্ঠে বললেন,,
“ভাইয়ার কুকর্মের জন্য আমি লজ্জিত প্রভা। যতো দ্রুত সম্ভব ভাবীকে প্রতিটা সত্যি আমাদের জানাতে হবে। ভাবীকে এই মিথ্যে সম্পর্কটা থেকে বের করতে হবে!”
কান্নারত অবস্থায় আমি দুচোখে অস্থিরতা নিয়ে আহনাফের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,
“বেবি মিসকারেজের ব্যাপারটা? ওটাতে ও কি জিজুর হাত ছিলো?”
“হুম। ডক্টরের সাথে কন্সাল্ট করেই ভাইয়া বেবি মিসকারেজের মেডিসিন ভাবীকে প্রতিবার সেবন করাত। যার কারনে প্রতিবারই ভাবীর মিসকারেজ হতো!”
হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে আমি অনবরত ফ্লোরে আঘাত করছি আর ফুঁফিয়ে কেঁদে বলছি,,
“ঐ নরপশুকে আমি ছাড়ব না আহনাফ। শুধুমাএ উনার জন্য আমার আপুর দু দু বার বেবি মিসকারেজ হয়েছে। অসহ্য যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে আমার আপুকে। শুধু তাই নয়, বিয়ে হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত আপুকে প্রতিনিয়ত ঠকতে হয়েছে। সুখে, শান্তিতে সংসারটা পর্যন্ত করতে পারেন নি।”
মুহূর্তের মধ্যে আহনাফ আমাকে বুকে টেনে নিলেন। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আহনাফ শান্ত কন্ঠে বললেন,,
“বি কুল প্রভা। আমি নিজে ও কখনো ভাইয়াকে মাফ করতে পারব না। বড় ভাই হয়ে যে ব্যক্তি ছোট ভাইয়ের ক্ষতি করতে ছাড়েন নি, সেই ব্যক্তি যে অনায়াসে অন্য কারো ক্ষতি করতে পারবে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। ভাইয়ার জন্যই আমাদের মধ্যে দীর্ঘ দেড় বছরের দূরত্ব এসেছিলো। সব ছেড়ে আমাকে কানাডা চলে যেতে হয়েছিলো। আসলে সত্যিটা জানার পর আমি পারছিলাম না ভাইয়ার মুখোমুখি দাঁড়াতে। লজ্জায়, ঘৃনায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করেছিলো। তাছাড়া তখন তুমি ও আমায় পছন্দ করতে না। জোর করে তোমাকে বিয়ে করলে ও তোমার ভালোবাসা আমার পাওয়া হতো না। খুব ডিপ্রেশানে ভুগছিলাম তখন। মুখ খুলে কাউকে সত্যিটা বলতে ও পারছিলাম না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। তখন মনে হয়েছিলো তোমাকে ছেড়ে যাওয়াটাই হয়তো ব্যাটার! এর মধ্যেই আবার জানতে পারি…
“কি?”
“নেহাল ও তোমাকে ভালোবাসত!”
“তাই নেহাল ভাইয়ার হাতে আমাকে ছেড়ে দিয়ে আপনি খুব অনায়াসে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তাই না?”
গলা জড়ানো কন্ঠে আহনাফ অর্নগল বলতে আরম্ভ করলেন,,
“নেহাল প্রেমিক হিসেবে খুব পার্ফেক্ট ছিলো। একদম তোমার মনের মতো ছিলো। তুমি হয়তো এমন প্রেমিক পুরুষই তোমার লাইফে চেয়েছিলে। তোমার কিছু কিছু কথায় আমি ভীষন আঘাত পেয়েছিলাম। যদি ও ঐ মুহূর্তে প্রকাশ করি নি। তবে ভেতরে ভেতরে জ্বলছিলাম, পুড়ছিলাম। ভেবেছিলাম অন্তত নেহালের সাথে বিয়ে হলে তুমি হ্যাপী থাকবে। নেহাল তোমাকে সবটা দিয়ে সুখে রাখবে। ভাইয়ার কু-নজর থেকে বাঁচবে, উনার ধরা, ছোঁয়ার বাইরে থাকবে। অন্তত একই ছাঁদের নিচে তো আর সংসার করতে হবে না। নেহালের চোখে তোমার জন্য আমি অফুরন্ত ভালোবাসা দেখেছিলাম। কষ্ট হতো আমার তখন। ভীষন কষ্ট হতো। আমি যাকে ভালোবাসি, তাকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ও ভালোবাসে। পারছিলাম না, নেহালের হাতে তোমাকে তুলে দিতে। ভেতরটা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছিলো! তবু ও বুকে পাথর চাঁপা দিয়ে আমি বাধ্য হয়েছিলাম নেহালের হাতেই তোমাকে তুলে দিতে। নেহাল তোমাকে এতোটাই চেয়েছিলো যে, তনিমাকে কনভেন্স করেছিলো আমার নামে তোমাকে দু, চারটা মিথ্যে কথা বলতে। তোমার মনে আমার জন্য ভুল বুঝাবুঝি এবং সন্দেহ তৈরী করতে! আমি ও তখন সায় জানিয়েছিলাম নেহালের সিদ্ধান্তে। এছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না আমার হাতে। উভয় সংকটে ভুগছিলাম আমি। শেষ পর্যন্ত অপারগ হয়ে তনিমা নেহালের সাথে ফোনে দু,চারটা মিথ্যে কথা বলেছিলো। যদি ও তুমি সেদিন কথা গুলো বিশ্বাস করে নিয়েছিলে, তবে আমাকে ভালোবাসতে, আমার জন্য অপেক্ষা করতে তুমি ভুলো নি! দু দুবার নেহালের দেওয়া বিয়ের প্রপোজাল তুমি রিজেক্ট করে দিয়েছিলে। বাধ্য হয়ে নেহাল কানাডা ব্যাক করে। তুমি যে আমায় ঠিক কতোটা ভালোবেসে ফেলেছিলে নেহালের কাছ থেকেই আমার জানা। তোমার ভালোবাসার টানেই আমি বাধ্য হই দেশে ব্যাক করতে। ভাইয়ার মুখোশ খুলতে, তোমাকে নিজের করে নিতে। ভাবী এবং তনিমার সাথে করা ভাইয়ার অপরাধের হিসেব নিতে। রক্তের সম্পর্ক বলে আর এক রত্তি ও ছাড় দেওয়া যাবে না ভাইয়াকে। ভাইয়াকে উনার পাপের শাস্তি পেতেই হবে!”
আহনাফের চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়তেই আমি জলটা হাতের মুঠোয় পুড়ে নিষ্প্রভ দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে চেয়ে বললাম,,
“এতো ব্যাথা চেঁপে রেখেছিলেন বুকে? অথচ কখনো মুখ ফুটে কিছু বলেন নি! ভালো ছিলেন তো আমায় ছাড়া? দীর্ঘ দেড়টা বছর?”
#চলবে….?
(রি-চেইক করা হয় নি। এক্সাম চলছে, খুব চাপের মধ্যে আছি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)
#চলবে…?