#তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন
#তানজিলা_খাতুন_তানু
#বোনাস_পার্ট (পর্ব_৭)
ফারাবি কথাটা এগিয়ে যেতে বললো…
– দ্যাখ আমি তোকে হোয়াটসঅ্যাপ এ সবকিছু পাঠিয়ে দিচ্ছি। তুই দেখে নিয়ে বল পছন্দ হয়েছে কিনা।
– ওকে।
তুহা ফারাবির পাঠানো ছবিগুলো দেখলো, সত্যি খুব সুন্দর। কিছুক্ষন পর আবার ফারাবি কল করে ওর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে রেখে দিলো কলটা।
তিশার বিয়ের আয়োজন খুব দমে চলছে। বিয়ের আর মাত্র ১ সপ্তাহ বাকি আছে। কেনাকাটা আয়োজন সবকিছুই জোড় কদমে চলছে।
সব বোনগুলো একসাথে কনফারেন্স কলে আছে। কথা তিশাকে বললো…
– তিশা বিয়েতে কি পড়বি লেহেঙ্গা না শাড়ি।
– ভাবছি ওটাই বলো না তুমি।
সকলেই সবার মতো নিজের পছন্দ বলছে। তুহা সবার কথাতে কান না দিয়ে বললো…
– আমি বলবো শাড়িটাই বেস্ট হবে। কারন বাঙালি বিয়ে মানেই শাড়ি। শাড়িটা আমাদের ঐতিহ্য, আধুনিক স্টাইলের লেহেঙ্গা না পড়ে শাড়ি পড়েই বিয়ে করা ভালো।
তুহার কথাতে সকলেই সহমত হয়ে যায়। ওদের সব কথায় শুনেছিলো কাব্য আর ফারাবি। তবে ওরা ওখানেই আছে যে কথাটা তিশা,মেধা,তুহা আর মিহা জানে না। তুহার কথা শুনে কাব্য ফিসফিস করে ফারাবিকে বললো….
-দাভাই দেখেছিস আমাদের তুহাটা কতটা বড়ো হয়ে গেছে। কিভাবে কি সুন্দর করে কথাটা বললো। আমার না ওকে কি কিউট লাগে। মনে হয় টাস করে একটা কিস দিয়ে দিই।
কথাটা বলেই জিভ কাটলো কাব্য। ফারাবির দিকে তাকিয়ে দেখলো ফারাবি রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। ফারাবি কাব্যকে কিছুই না বলে চুপ করে উঠে চলে গেলো।কাব্য মনে মনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
পরেরদিন…
আজকে সকলে মিলে বিয়ের শপিং করতে যাবে।সকলে বলতে বোনগুলো তার সাথে ফারাবি,কাব্য, মেধার মা আর ওইদিক থেকে অয়ন আসবে।যেহেতু এতগুলো মানুষ তাই দুটো গাড়ি নিয়েছে।
একটা ড্রাইভার ড্রাইভ করবে আর একটা ফারাবি। প্রথম গাড়িতে কাব্য, মেধার মা,তিশা,কথা। আর দ্বিতীয় গাড়িতে ফারাবি,মেধা,কুহু,মিহা আর তুহা দুটো গাড়ির মাঝে দাঁড়িয়ে ভাবছে কোথায় বসবে। তুহাকে ওইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ফারাবি লাগালো এক ধমক..
– এই যে ম্যাডাম আমরা কি চলে যাবো। না আপনার জন্য আজকে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো সারাদিন।
– যাচ্ছি।
তুহা কাঁচুমাচু হয়ে এসে দেখলো পেছনের তিনটে সিট বুকিং খালি আছে শুধু ফারাবির পাশের সিটটা। তুহা ফারাবির আর ধমক খেতে চাই না তাই চুপচাপ বসে পড়লো। গাড়ি স্টার্ট দিতে দিতে ফারাবি বললো…
– সিটবেল্টটা বেঁধে নে।
সারারাস্তা সকলে বকবক করলেও তুহা আর ফারাবি চুপ ছিলো।তুহার রাগ হয়েছে ওদের উপরে ওরা কিভাবে পারলো ওই পাষানের কাছে একাকে রেখে চলে যেতে। তুহা ফোন টিপছে।
শপিং মলে এসে দেখলো অয়ন এসেছে। অয়নের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে তুহার মুখে হাসি ফুটলো।
– হাই তুমি এখানে।
– চলে এলাম কি করবো বল।
– ভালোই করেছো।
ফারাবী একটা রাগী লুক নিয়ে মেহতাবের দিকে তাকালো। শপিং মলে সারাটা ক্ষন ধরে তুহা মেহতাবের সাথে আছে। অনেকক্ষন ধরে মিহা ওদেরকে দেখছে। মেধা ওকে খোঁচা দিয়ে বললো…
– মিহু কি দেখছিস।
– দেখছি ওই বজ্জাতটা দিভাই এর সাথে কিভাবে আঠার মতো লেগে আছে।
– কেন তোর জ্বলে নাকি।
মিহা একটা রাগী লুক নিয়ে মেধার দিকে তাকিয়ে বলল…
– আমার জ্বলবে কেন, কিন্তু দিভাই কেন ওকে এতটা পাত্তা দেয় বুঝি না আমি।
– দ্যাখ মনে হয় ভালোবাসে।
মেধা মুচকি হেসে ওখান থেকে চলে যায়। মিহা মেধার বলা কথাটা নিজের মনেই বিরবির করে, ভালোবাসে। মিহার মনে প্রশ্ন জাগে সত্যি কি দিভাই ওই বজ্জাতটাকে ভালোবাসে।
সারাদিন শপিং করে খাওয়া দাওয়া করে সকলেই বাড়ি ফিরে যায়। সবাই খুব টার্য়াড থাকাই ঘুমিয়ে পড়ে।।
রাত্রিবেলা…
– তুহা,মিহা মামনি আমাদের দেখাবি না কি কিনলি।
মিহা সরাসরি বলে দিলো…
-না এখন দেখাবো না যেদিন পড়বো সেদিন দেখে নেবে।
তুহা কিছু না বলে ড্রেসগুলো আনতে গেলো। প্যাকেটগুলো খুলতে গিয়ে হতবাক হয়ে গেলো। ওর পছন্দ করা একটাও ড্রেস নেয় তার বদলে অন্য ড্রেস আছে। তুহার রাগ হচ্ছে খুব, এতটা চেঞ্জ হয়ে গেলো কিভাবে, একটা কাগজের দিকে নজর গেলো তুহার কাগজটা হাতে তুলে নিয়ে দেখলো কম্পিউটার টাইপিং করা একটা চিঠি।
প্রিয় তাহুপাখি,
রাগ করো না সোনা আমার। আমিই তোমার জামা গুলো চেঞ্জ করে দিয়েছি। তুমি যেইগুলো পছন্দ করেছিলে সেগুলোর থেকে এইগুলোতে তোমাকে আরো কিউট লাগবে আমার পাখিকে তাই চেঞ্জ তো করতেই হতো। মন খারাপ না করে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জামাগুলো নিজের গায়ে ফেলে দ্যাখো তো ভালো লাগে কিনা। আর যখন ওইগুলো পড়বে তখন না হয় অনুভব করে নিও আমি তোমার পাশে আছি।
ইতি…
তোমার প্রেমিক পুরুষ।
তুহা কেন জানো আর রাগ করতে পারলো না। চুপটি করে একটা ড্রেস তুলে নিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের গায়ে ধরলো। সত্যি অসাধারণ লাগছে। তুহা নিজের চোখটা বন্ধ করে তার প্রেমিক পুরুষ কে অনুভব করতে লাগলো। হঠাৎ করেই ঘাড়ে কারোর গরম নিঃশ্বাস অনুভব করলো। আচমকা এইরকম হওয়াতে তুহা তাড়াতাড়ি চোখটা খুলে দেখলো ঘরের আলো বন্ধ করা।তুহাকে সামনে থাকা মানুষটা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো, তুহা ভয়েতে একটা ঢোক গিললো।তখনি কানের কাছে সেই একি কন্ঠস্বর শুনতে পেল।
-তাহু পাখি তোমাকে কাছে পাবার লোভটা যে দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই তাহুপাখি কবে আমাকে ভালোবেসে নিজের কাছে টেনে নেবে বলো না। আমি যে আর পারছি না, তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়টা আমার আরো তীব্রতর হচ্ছে। এই তাহুপাখি একবার বলো না ভালোবাসি।
প্রেমিক পুরুষের করুন কন্ঠটা তুহার বুকে ঝড় তুলে দিচ্ছে। তুহা অনুভব করলো ওর ঘাড়ে পানি পড়ছে। বুঝতে পারলো মানুষটার চোখ দিয়েই অশ্রুকণা ঝড়ে পড়েছে। তুহাও চোখ বন্ধ করে নেয়,ওর চোখ দিয়েও পানি পড়ছে। মানুষটা ওকে ছেড়ে চলে যায়। আর ঘরের লাইট অন হয়ে যায়। তুহার কানে করুন কন্ঠে করা আকুতি মিনতি টাই বাজছে। তুহার মনের কোনো প্রশ্ন জাগে..
– আমি কাউকে তো একজনকেই ভালোবাসি। কিন্তু কাকে।
#তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_৮)
মেধা আর তিশার অনুরোধে তুহা আর মিহা ওই বাড়িতে চলে যায়। বিয়ের আর মাত্র ৫ দিন বাকি আছে। আয়োজনের দায়িত্বে আছে তুহা আর ফারাবি যদিও বিষয়টা তুহার বাবা অজানা।জানলে কি করতেন সেটা উপরওয়ালা ভালো জানেন।
তিশা আর মেধা তো সেই খুশি। কিন্তু তুহা কোনো এক কারনে খুশি হতে পারছে না। মনটা যে মানছে না। কিভাবে মানাবে মনকে।
সবাই বসে বসে প্ল্যান করছে। পরশুদিন মেহেন্দি,তার পরের দিন গায়ে হলুদ আর তার পরেরদিন বিয়ে। সবকিছুর আয়োজন করতে হবে ২ দিনের মধ্যে।
মাঝে কেটে যায় ২ টো দিন। আজকে তিশার মেহেন্দি অনুষ্ঠান।সব বোনগুলো তো খুব খুশি। তাদের যে খুশির সীমা নেয়। তিশাকে মেহেন্দি ও লাল কম্বিনেশনের একটা লেহেঙ্গা পড়ানো হয়েছে। আর বাকিরা যে যেটা ইচ্ছা পড়েছে। তুহা নিজের ড্রেস পড়তে এসে দেখতে পাই। প্রতিটা ড্রেসের উপরে কাগজে লেখা আছে, কোনদিন কোন ড্রেসটা পড়তে হবে।
তুহা মেহেন্দির দিন লেখা ড্রেসটা পড়ে নিলো। লাল সবুজের কম্বিনেশনের একটা গাউন বেশ সুন্দর লাগছে। আর গাউন টার সাথে কিছু জুয়েলারি আর কসমেটিকস ওহ ছিলো। তুহা তার প্রেমিক পুরুষের মনের মতো করেই সাজলো।
তুহাকে সবাই দেখে মুগ্ধ হয়ে যায়। মিহা তুহাকে ঠেস দিয়ে বললো…
-আচ্ছা আজকে কার মেহেন্দি দিভাই না তিশামনির।
– মিহার বাচ্চা তোকে তো আমি।
ওদের দুইবোনের ঝামেলা লেগে গেলো। সকলেই ওদের কান্ড দেখে হাসছে। মিহার পেছনে তুহা দৌড়াচ্ছে হঠাৎ করেই কারোর সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে গেলে। দুটো শক্ত হাত ওকে আগলে রাখে। আচমকা এইরকম হওয়াতে সকলেই চমকে উঠলো। তুহা চিৎকার শুনে সকলেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলো যে তুহা পড়ে যাবে। কিন্তু ফারাবি তুহাকে আগলে নেওয়াতে সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। তুহাকে টান দিয়ে নিজের বুকে ফেললো ফারাবি। তুহা কেঁপে উঠলো ফারাবির এতটা কাছে নিজেকে দেখে।
ভালোভাবেই মেহেন্দির অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যায়। আজকে তিশার গায়ে হলুদ… মেয়েরা সকলেই হলুদ শাড়িতে হলুদ পরী হয়ে আছে। ছেলের বাড়ি থেকে তত্ত এসেছে আর তত্ত এনেছে মেহতাব। ওদের আপ্যায়ন চলছে আর কিছুক্ষন পর অনুষ্ঠান শুরু হবে এমন সময়ে তুহাকে কোনো একটা কাজে বাড়ির পেছনের দিকে যেতে হয় তখনি কেউ একজন আবারো ওকে দেয়ালের গায়ে চেপে ধরলো। সেই একই ফিসফিসিয়ে কন্ঠস্বর..
– তাহুপাখি তোমাকে দেখে তো নিজেকে সামলে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ছে। কিভাবে সামলাবো বলো।
– নিজেই তো এইগুলো পছন্দ করে দিয়েছেন।
– হুম। আমি জানি তো আমার তাহুপাখিকে এইগুলোতে ভালো লাগবে। তবে আগে যদি জানতাম এই লুকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ হবে তাহলে তো কখনোই এইগুলো চয়েস করে দিতাম না। একটা খারাপ মতো জিনিস চয়েস করতাম।
– তাই।
– হুম। আর একটা কথা তাহুপাখি, খবরদার ওই ফারাবির দিকে একদম নজর দেবে না ওর কাছ থেকে দূরে থাকবে কথাটা যেন মনে থাকে।
তুহা আর কিছু বলতে পারলো না। প্রেমিক পুরুষ উধাও হয়ে গেলো। তুহার মনের ভিতরে একটা চাপা রাগ জমা হলো কারনটা একদম অজানা।
হইহই করে তিশার গায়ে হলুদ কম্পিলিট হলো। তিশা ওর মা’কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।
পরেরদিন…
তিশাকে খুব সুন্দর করে লাল বেনারসী পড়িয়ে সাজানো হয়েছে। লাল বেনারসী কনেদের একটা ঐতিহ্য। একটা আলাদা রকমের ভালো লাগে লাল বেনারসীতে বাঙালি মেয়েদের।
তিশাকে মন খারাপ করে থাকতে দেখে তুহা বললো…
– দিভাই কি হয়েছে। মন খারাপ কেন?
– আমাদের মেয়েদের কথা ভাবছি একটা বাড়িতে জন্ম নিয়ে, জীবনের সুন্দরতম মুহূর্তগুলো ছেড়ে আরেকটা বাড়িকে আপন করে দিতে হবে আর সেখানেই মৃ / ত্যু বরন করতে হবে। কি ভাগ্য আমাদের।
– কি করবো বলো এটাই তো সমাজের রীতি। আমাদের মেয়েদের বাপের বাড়ি নিজেদের বাড়ি হয়না। ঠিক যেমন ভাবে ভারাটিয়া বাড়ি যতই যত্ন করে সাজিয়ে রাখো না কেন নিজের বাড়ি হয় না ঠিক সেইভাবেই।
– হুম ঠিক বলেছিস।
– হুম। চিন্তা করো না আমাদের জিজু খুব ভালো তোমাকে আগলে রাখবে।
– ভালো জীবনসঙ্গীনী পাওয়া না ভাগ্যের ব্যাপার আর এই বিষয়ে সবথেকে বেশি লাকি তুই। তোর জীবনে এমন একটা মানুষ আছে যে তোকে সবসময় আগলে রাখবে সকল বিপদ থেকে। তবে তুহা তোর কাছে আমার একটা অনুরোধ।
– কি?
– মানুষটাকে চিনতে দেরি করে ফেলিস না তাহলে কিন্তু অনেকটাই দেরি হয়ে যাবে।
– হুম।
তিশার কথাতে সহমত হলেও সবকিছুই মাথার উপর দিয়ে গেলো। মনের মাঝে অনেকগুলো প্রশ্ন ভীড় করছে। তিশা কি তাহলে জানে ওর গোপন প্রেমিক পুরুষ কে?
তুহার মনে আরো প্রশ্ন ভীড় করার আগেই হইচই পরে যায় বর চলে এসছে। তুহাও ব্যস্ত হয়ে পড়লো। তুহার চোখ পড়লো গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার দিকে ব্লু পাঞ্জাবিতে অসাধারণ লাগছে। আর হাসিটা তো উফ্। তার মধ্যে চুলগুলোকে হাত দিয়ে পেছনের দিকে ঠেলছে এককথায় অসাধারণ। যেকেউ ক্রাশ খেতে বাধ্য কিন্তু তুহা তো খাবে না। এই ফারাবি ওর কাছে একটা যন্ত্রনা ওর উপরে ক্রাশ খাওয়া মানে যেচে বাঁশ খাওয়া।
তুহা দাঁড়িয়ে আছে, মেহতাব ওর পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললো…
-তুহা রানিকে পুরোই পরী লাগছে।
-ধন্যবাদ।
– তা আমাকে বললি না তো আমাকে কেমন লাগছে।
তুহা ভালো করে মেহতাবকে দেখলো, মেহতাব কেও সুন্দর লাগছে।
– পারফেক্ট।
– তাই।
– হুম।
পাশ থেকে মিহা বিরবির করে বললো…
-পুরোই বজ্জাত লাগছে।
বিয়ের প্রতিটা অনুষ্ঠান খুব ভালো করেই মিটে যায়। বিয়ের অনুষ্ঠানের একদিন পরেই ফারাবি কোথায় হাওয়া হয়ে যায়। না কলেজে যায় আর না অন্য কোথাও। কোথায় গেছে সেটা তুহার অজানা। চাইলেও কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারছে না। সবাই কি ভাববে সেই ভেবে।
তুহা আনমনা হয়ে বসে আছে। মিহা ফোনটা ওর সামনে ধরে বললো…
— ওই দিভাই দ্যাখ তিশামনি আর জিজু আমাদের জন্য একটা ট্রুরের ব্যবস্থা করেছে। আমি তো খুব এক্সাইটিং তুই যাবি তো।
তুহা খুশি হতে পারলো না মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেলো। তুহার ভালোই আন্দাজ আছে ওর বাবা মিহাকে যেতে দিতে রাজি হলেও ওকে যেতে দেবে না।তুহাকে মন খারাপ করতে দেখে মিহা বললো..
– দিভাই কি হলো তোর
– আমার যাওয়া হবে না রে।
– কেন
– বাবা।
– আরে দিভাই চিন্তা করিস না । ওই বজ্জাতটা বাবাকে ম্যানেজ করেছে। যাক এতদিনে একটা ভালো কাজ করেছে।
– বজ্জাত কে?
– ওই তোমার মেহতাব।
– ওহ বজ্জাত ( ভ্রু কুঁচকে)
– হুম। আমি গেলাম তোর ফোন তুই রাখ।
তুহা তো খুশি হয়ে যায়। যাইহোক তার বাবা তো রাজি হয়েছে এটাই অনেক। মেধাকে কল লাগলো..
-হ্যালো মেধা
-হ্যা বল।
-বলছি সত্যি জিজু আমাদের জন্য এই ট্রুরের ব্যবস্থা করেছে।
-হুম রে
-আচ্ছা কে কে যাবে।
– এই তো আমি তুই,মিহা,কুহু,কাব্য’দা, মেহতাব’দা। জিজু আর দিভাই।
– ওহ আর কথাদি জিজু যাবে না।
– না রে ওদের তো আবার ফিরে যেতে হবে তাই আর কোথাও যাবে না এই কয়েকদিন সবার সাথেই থাকতে চাই।
– ওহ। আর ওই ফারাবি।
– দাদাই এর কথাটা জানি না ঠিক। মনে হয় যাবে না।
– ওহ।
তুহাল মনটা খারাপ হয়ে যায়। যাবার ডেট ঠিক হয়ে যায়। কথামতো সকলেই ঠিক করে সকালের ট্রেনে রওনা দেবে,, আগেই টিকিট কাটা ছিলো। বিকাল সকলেই বাড়ি থেকে এসে মেধাদের বাড়িতে একজোট হয়ে যায় তারপরে ওখান থেকে ভোরবেলা স্টেশনে আসে।
অয়ন সবাইকে দেখে বললো…
– সকলেই সাবধানে উঠবে। আর সাবধানে সবকিছু নিয়ে থাকবে। মনে থাকবে সকলের।
– হুম
সকলেই সহমত জানায়। মেহতাব তুহাকে বললো.
-তুহা তোর কিছু লাগবে কিছু কি খাবি।
-না,লাগলে বলবো।
-আচ্ছা।
তুহা চুপ করে বসে আছে কিছুই ভালো লাগছে না। মনটা কিরকম ভার হয়ে আছে। চাইলেই ঠিক করতে পারছে না। কিছুক্ষন পর ট্রেন আসে আর সকলেই উঠে চলে যায়। তুহা জানালার পাশে বসে বাইরের দৃশ্য দেখতে ব্যস্ত এমন সময় পাশে তাকিয়ে থমকে গেলো…
#চলবে….