#নিশ্বাস
#পর্ব_৯
#লেখক_Mohammad_Asad
আজকে শুক্রবার, ছাদিক আরামে ঘুমিয়ে আছে। এদিকে নিশাত সকালের নাস্তা তৈরি করছে। নাস্তা তৈরি করা শেষ হলে রুমে আসে নিশাত এসে দেখে ছেলেটা এখনও ঘুমিয়ে আছে। ছাদিকের পার্শে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় নিশাত।
-এই শুনছেন?
“ছাদিক একটু নড়ে চড়ে উঠে। নিশাত আবার মিস্টি কন্ঠে বলে উঠে”
-এই যে শুনছেন? ঘুম থেকে কখন উঠবেন হুম।
“ছাদিক বিছানায় বসে বলে”
-আজকে তো শুক্রবার, আমাকে শান্তিতে একটু ঘুমতে দেও প্লিজ।
-নাহ্, তা তো হবে না। ঘুম থেকে যেহেতু উঠেছেন আবার বিছানার সুইবেন না। নয়তো চোখে পানি ঢেলে দিবো।
-উফফ্ নিশাত তুমিও না। এতো বকবক করো কেন বলতো। তুমি তোমার কাজ করো গিয়ে, আমাকে শাস্তিতে একটু ঘুমতে দেও। “ছাদিক মাথায় বালিশ চেপে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
“নিশাত মন খারাপ করে বলে”
-আচ্ছা ঠিক আছে আপনি ঘুমান। কাজের মেয়ের কথা শুনতে যাবেন কেন? আমি তো কাজের মেয়ে আমাকে রাগ দেখিয়ে কথা বলবেন। এটাই স্বাভাবিক।
“ছাদিক বালিশের নিচ থেকে বলে”
-নিশাত তুমি আবার বকবক শুরু করলে তো।
“নিশাত এবার রেগে দাঁত কটমট করে বলে”
-হ্যাঁ আমি খারাপ। আমি সবসময় শুধু বকবক করি।
“ছাদিক এবার মিস্টি হেঁসে বালিশটা সরিয়ে নিশাতের চোখের দিকে তাকায়।”
-কি হয়েছে হুম। এতো কথা বলো কেন? মাথার কি ত্যাঁড় ছিঁড়ে খেছে তোমার।
-এইইই কি বললেন।
-কিছু না থাক” “ছাদিক বালিশ চেপে আবার ঘুমিয়ে পরে। নিশাত ছাদিকের হাত থেকে বালিশটা কেঁড়ে নেয়।
-নিশাত এমন করে বালিশটা নিলে কেন তুমি।
“নিশাত রেগে দাঁত কটমট করে বলে”
-তখন আপনি কি যেন বললেন!
-কি আবার বললাম?
-আমার মাথার কি যেন ছিঁড়া বললেন আপনি।
-ওহ আচ্ছা, বলছিলাম কি তোমার মাথার একটা ত্যাঁড় ছিঁড়ে গেছে। তাই তো রেগে যাচ্ছো। আর উল্টো পাল্টা কথা বলছো।
-ওহ তাই না।
নিশাত রেগে ছাদিকের বুকে কিল ঘুশি দিতে শুরু করে। ছাদিক হা হা করে হেঁসে যাচ্ছে।
-আরে নিশাত কি শুরু করেছো তুমি।
-আপনি খুব খারাপ।
“ছাদিক মেয়েটাকে অনেক শক্ত করে বুকে জরীয়ে নিয়ে বলে”
-আমি খুব খারাপ তাই না।
-হুঁ অনেক অনেক অনেক। “বুকে কিল ঘুশি দিয়ে।”
-তাহলে একটু দুষ্টুমি করি তোমার সঙ্গে।
“নিশাত এবার লজ্জায় মুখটা লাল করে দিয়েছে।
-এইইই ফাজিল এইসব না এখন।
-কেন না হুম।
-এখন এইসব চিন্তা করবেন না। চলুন সকালের নাস্তা করে নিবেন।
-নাহ্ আমার ঘুম পাচ্ছে তুমি যাও। বাবা-মা ভাবি ভাইয়াকে সকালের নাস্তা দিয়ে এসো।
-কেন আপনি যাবেন না। দুষ্টুমি করার সময় তো ঘুম আসে না। এখন তো আপনি জেগে আছেন। চলুন বলছি সকালের নাস্তা করবেন।
-নাহ্ নিশাত, তুমি যাও, আমার জন্য কি কি বানিয়েছো একটা বাটিতে করে নিয়ে আসলেই হবে। যানোই তো কত কাজ করতে হয় আমাকে। সারাদিন অফিসে থাকতে হয়।
-আহারে আমার জামাইটা। আচ্ছা ঠিক আছে আপনি একটু ঘুমিয়ে নিন।
“ছাদিক নিশাত হাত টেনে নেয় নিজের বুকে”
-তুমি চাইলে আমার কাছে থাকতে পারো।
-উঁহু রে আইছে, বউকে নিয়ে সুয়ে থাকতে। আমার কি কাজ নেই নাকি। যে আপনার মতো সারাদিন সুয়ে থাকবো।
-আমার বউটা যে এতো বকবক করতে পারে ইসস।
-কি বললেন।
-কিছু না। তুমি যাও রুম থেকে।
-আমাকে বের করে দিচ্ছেন।
-ধ্যাৎ তুমি এরকম কেন! আজকে একটু বেশি পাগল হয়ে গেছো নাকি?
-এই আমি পাগল!
-হ্যাঁ তুমি পাগল।
-কিইইই,
“ছাদিক মাথা চুলকিয়ে বলে”
-আচ্ছা তোমার কি সত্যি মাথার ত্যাঁড় ছুঁটে গেছে। এমন পাগলামি করছো কেন? ছোট ছোট বিষয় নিয়ে।
নিশাত এবার চোখে হাজারো অভিমান নিয়ে তাকিয়ে থাকে ছেলেটার দিকে।
-ছাদিক বুঝতে পারে। বৃষ্টি আসতে চলছে।
নাহ্ বিষ্টি আসেনি। নিশাত চোখের জল মুছে রুমের বাইরে চলে যায়। ছাদিক বুঝতে পারে মেয়েটা অনেক রাগ করেছে। তবে এমন পাগলামি কখনো করেনি নিশাত। ছাদিক আজকে একটু হলেও আবাক হয়েছে। নিশাত কেমন যানি হয়ে গেছে। একটু বেশি অভিমানী।
নিশাত টেবিলে সকালের নাস্তা গুলো সাজিয়ে রেখে বাবা-মা ভাবি ভাইয়া সবাইকে ডেকে সকালের নাস্তা গুলো খেতে দেয়।
আম্মু বলে,
-নিশাত ছাদিক উঠেনি?
-নাহ্ মা,
-ওহ আচ্ছা সমস্যা নেই। আজকে ছেলেটাকে বলো কোথায় যেন না যায়। বাসায় যেন থাকে। বিকেলে মেয়ে পক্ষ দেখতে আসবে ছেলেটাকে।
-মানে আম্মা কি বলছেন এইসব।
“আম্মু ধমক দিয়ে বলে”
-এই তোর এতো বড় গলা হলো কবে থেকে। আমার মুখের উপর কথা বলিস।
“নিশাত মাথাটা নিঁচু করে নেয়। রাইসুর ভাইয়া আম্মুকে বলে”
-আম্মু তুমি নিশাতকে এরকম করে ধমক দিচ্ছো কেন? আর কিসের মেয়ে পক্ষ আসবে ছাদিককে দেখতে।
-ওহ হ্যাঁ রাইসুর তোকে বলা হয়নি। ছাদিকের বিয়ে ঠিক করেছি। আমার এক বান্ধবীর মেয়ের সঙ্গে। আজকে শুধু দেখতে আসবে। দেখেই যদি পচ্ছন্দ হয় ছেলেকে তাহলে বিয়ে পাকা। আমি যানি আমাদের ছেলেকে দেখলে চোখ বন্ধ করে পচ্ছন্দ করবে মেয়ে পক্ষ।
“রাইসুল আম্মুর কথাবার্তা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।”
-মানে কি আম্মু, ছাদিকের বিয়ে মানে। তাহলে নিশাতের কি হবে?
-নিশাতের আবার কি হবে ডিভোর্স করিয়ে দিবো দুজনের।
“নিশাত ডিভোর্সের কথা শুনে কান্না করতে করতে রুমের মধ্যে চলে যায়।”
“তিন্নি ভাবি বলে”
-আম্মা এইসব করা কি ঠিক হচ্ছে।
“আব্বু তখন বলে”
-তোমার শ্বাশুড়ি পাগল হয়ে গেছে। নিশাত ছাদিক দুজনে তো ভালোই আছে। ওদের মধ্যে ফাঁটল ধরিয়ে দিচ্ছো কেন?
-এই তুমি চুপ করো তো। বেশি বুঝো তুমি। ছাদিকের ভালোর জন্যই করছি। কে বললো তোমাকে নিশাতের সঙ্গে ছাদিক ভালো আছে। একটা কাজের মেয়ের সঙ্গে ছাদিক ভালো আছে আমাকে এইটা বিশ্বাস করতে বলছো।
-তোমাকে বুঝানোর শাদ্ধ আমার নেই।
“আব্বু খাবার টেবিল থেকে উঠে যায়।
এদিকে নিশাত রুমে এসে কান্না করছে জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে। ছাদিক নিশাতের কান্নার আওয়াজ পেয়ে বিছানা থেকে উঠে যায়। নিশাতের ঘাঁড়ে হাত দিলে নিশাত চমকে যায়। নিশাতের চোখে জল দেখে ছাদিক নিশাতের চোখের জলগুলো মুছে দিয়ে বলে।
-আরে নিশাত তুমি কান্না করছো কেন? কি হয়েছে তোমার বলো আমাকে।
“চলবে?”