#নয়নতারা_২২
#জেরিন_আক্তার_নিপা
নয়নতারা নিজে থেকেই ঝিনুকের কাছে এলো। কিছু বলবে বলবে করেও আমতা আমতা করে যাচ্ছে। সে যা বলতে এসেছে তা কোনোভাবেই বলতে পারছে না। হয়তো পারবেও না। কিভাবেই বা পারবে! ঝিনুককে কীভাবে বলবে, আপু আমি বাড়ি যেতে চাই। আমাকে তুমি নিয়ে চলো।
এই কথা বললে ঝিনুক আপু তার উপর একচোট হাসবে। তার মজা নিয়ে বলবে, বাবাহ নয়ন! তুই তো দেখছি নক্ষত্রর জন্য পাগল হয়ে গেছিস রে। কয়টা দিন ওকে ছাড়া থেকে এখন চলে যাওয়ার জন্য নিজে থেকেই বলছিস!
নয়ন ওসব কথা শুনতে চায় না৷ কারো জন্যই পাগল হয়নি সে। বিশেষ করে ওই পাষাণ বদ লোকটার জন্য তো জীবনেও পাগল হবে না। পাষাণটা যে সেই গেল তারপর একবার এলো না। কল করেও তাকে যেতে বলল না। এতো জেদ! এতো দাম তার! নয়নের নিজের কি কোন দাম নেই।
নয়নের কিছু বলতে হলো না। ঝিনুক ওকে দেখে বলল,
—-কিরে নয়ন, কিছু বলবি?”
—-না। ইমন ভাইয়া কোথায় আপু?”
কী বলতে এসেছিল আর কী বলে যাচ্ছে সে। এখানে ইমন ভাইয়ার কথা কোত্থেকে এলো? ইমন ভাইয়ার সাথে একটু আগেও দেখা হয়েছে তার। সে তো নক্ষত্রর কথা বলতে এসেছিল। ইমন ভাইয়ার খোঁজ নিয়ে তার কাজ কী?
ঝিনুক তীক্ষ্ণ চোখে নয়নকে দেখল। এই মেয়ে ইমনকে খুঁজে কেন? ইমন কি নক্ষত্র আর ওই মেয়ের ব্যাপারটা নয়নকে বলে দিয়েছে? নয়ন সব জেনে গেছে? আর জানলেও এতো শান্ত আছে কীভাবে? রাগারাগি করছে না কেন। ঝিনুক হেসে বলল,
—-নয়ন আমার না ঘুরতে যেতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। চল না আজ একটু বাইরে থেকে বেরিয়ে আসি।”
নয়নের ইচ্ছে করছে না। সে একবার না বলে দিল। তবুও ঝিনুকের জোরাজুরিতে রাজি হতে হলো। সে আজ শ্বশুরবাড়ি যেতে চেয়েছিল বাইরে কোথাও ঘুরতে না।
নয়ন রেডি হয়ে ঝিনুকের সাথে বেরিয়ে গেল। ঝিনুক অনেকক্ষণ নয়নকে নিয়ে নানান জায়গায় গেল। আসল কথা সে নয়নকে নিয়ে নক্ষত্রদের বাড়িতে যাবার জন্য বেরিয়েছে। নক্ষত্রর সাথে সামনাসামনি কথা বলা দরকার। দূরে থেকে ভুল বোঝাবুঝি বাড়ার আগে নয়নকে ওবাড়ি ফিরে যাওয়া উচিত। কিন্তু প্রথমেই নক্ষত্রদের বাড়িতে গেলে নয়ন বুঝে ফেলবে, ঝিনুক তাকে ইচ্ছে করে নিয়ে এসেছে। এই অবুঝ মেয়ে তখন ভেবে বসবে সে সবার মাথার বোঝা হয়েছে।
নয়ন মনে মনে বেশ অবাক হলো। এদিকে তো তার শ্বশুরবাড়ি। একটু সামনেই নক্ষত্রদের বাড়ি।
—-আপু তুমি আমাকে এদিকে কোথায় নিয়ে এলে।”
—-হাঁটতে হাঁটতে এসেই যখন পড়েছি তখন চল তোর শ্বশুরবাড়ি থেকে ঘুরে যাই৷ দেখি নক্ষত্র বাড়িতে আছে কিনা।”
নয়ন না করল না। তার নিজেরও ইচ্ছে ছিল আজ চলে আসার। আসা যখন হলো না তখন দেখে গেলে সমস্যা কী। কয়দিন ধরে নক্ষত্রকে দেখে না। মন তো কম চঞ্চল হয়নি।
বাড়িতে ঢুকে ওরা যা দেখল তা দেখার জন্য হয়তো নয়ন প্রস্তুত ছিল না৷ ঝিনুকও এমন কিছু দেখবে ভাবতে পারেনি। দু’জনই দরজার সামনে ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল। নক্ষত্র আর একটা মেয়ে সোফায় বসে আছে। না বসে আছে বললে ভুল হবে। কোন কিছু নিয়ে হুড়োহুড়ি করছে ওরা। মেয়েটা কী যেন নক্ষত্রর হাত থেকে ছিনিয়ে নিতে চাইছে। নক্ষত্র ওকে সেই জিনিসটা দিবে না বলে হাত উঁচিয়ে রেখেছে। মেয়েটা ধরতে গেলে হাত এদিকে ওদিকে সরিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে মেয়েটা একদম ওর বুকের সাথে মিশে আছে। নয়নের সর্বাঙ্গ জ্বলে গেল। মেয়েটার চুল ধরে ওকে নক্ষত্রর থেকে সরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। থমথমে মুখে নয়ন ওদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল। ঝিনুক এতটাই অবাক হয়েছে হাঁ করা মুখ বন্ধ করতে ভুলে গেছে সে। ইমন তাহলে ঠিকই বলেছিল। নক্ষত্র সত্যিই আজকাল একটা মেয়েকে নিয়ে ঘুরছে। সব এই গাধী নয়নের জন্য। নয়ন নক্ষত্রকে পাত্তা দেয়নি। যতই হোক সে একটা ছেলে। বউয়ের কাছে পাত্তা না পেলে অন্য মেয়ের কাছে যাবেই তো৷ নয়নটা সময় থাকতে বুঝল না। এখন ওর ঘর ভাঙুক। ওর চোখের সামনে ওর স্বামীকে অন্য মেয়ে নিয়ে যাক।
রামিশা নক্ষত্র দু’জনই হাসছে। রামিশা এখনও এমন পাগলামি করে। হঠাৎ নক্ষত্রর চোখ দরজায় দাঁড়ানো দুই মূর্তির দিকে পড়ল। মুহূর্তে সব হাসি উড়ে গেল তার। তারা এসেছে! নিজের বুকের উপর থাকা রামিশার দিকে একবার দেখল নক্ষত্র। এবার তার খেয়াল হলো। মজা করতে করতে অনেকটা কাছে চলে এসেছে ওরা৷ নয়ন ওদের এই অবস্থায় দেখে ভুল বুঝতে পারে। নক্ষত্র রামিশাকে সরিয়ে দিয়ে উঠে দাঁড়াল। নয়নের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে ওকে ব্যাপারটা বুঝানোর চেষ্টা করে বলল,
—-তারা কখন এলে তুমি? ও রামিশা। আমার ছোট বেলার বন্ধু।”
নয়নের দৃষ্টি নড়ল না৷ সে একইভাবে নক্ষত্রকে চোখ দিয়ে ভস্ম করে দিতে চাইছে। মেয়েটা কে তা জানার তার কোন আগ্রহ নেই। নক্ষত্র ঝিনুককে দেখে অসহায় মুখ বানাল।
—-ঝিনুক ভেতরে এসো।’
—-না,না৷ আমরা বসবো না। এদিক দিয়েই যাচ্ছিলাম। ভাবলাম তুমি বাড়িতে আছো কিনা দেখে যাই। এক্ষুনি চলে যাব আমরা।”
—-আমি যাব না ঝিনুক আপু। তুমি চলে যাও। বাবলু বা জাহিদ কাউকে দিয়ে আমার জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিও।”
ঝিনুক অবাক হলেও মনে মনে খুশি হলো। যাক গাধীটার সুবুদ্ধি হয়েছে তাহলে। ঝিনুক এখান থেকেই চলে গেল। তারা যে ভুল বুঝেছে এটা নক্ষত্র বুঝতে পারছে। কিন্তু কীভাবে সে তারার ভুল ভাঙাবে সেটা বুঝতে পারছে না। তারা তাকে রামিশার সাথে ওভাবে দেখে কী ভাবছে তা নিয়েই নক্ষত্রর মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। রামিশা আর তার মধ্যে তেমন কিছুই নেই। তারা তাকে ওরকম না ভাবলেই হলো। বউকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে বাড়িতে মেয়ে নিয়ে আসবে না সে। তারা তাকে এতটুকু বিশ্বাস করা উচিত।
—-তুমি আসবে বলে আসোনি কে…
নক্ষত্র কথা শেষ করতে পারল না। নয়ন তার কোন কথায় কান না দিয়ে ঘরে যেতে নিলো। নয়নের চলে যাওয়া নক্ষত্র পেছন থেকে দেখছে। দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে। নয়ন কিছু না জানিয়ে হঠাৎ এসে উঠবে। আর এসেই রামিশার সাথে ওকে ওভাবে দেখবে। ব্যাপারটা বিশ্রী হয়ে গেল। নয়নের ভুল ভাঙাতে হবে। সে নিজেও ঘরের দিকে পা বাড়াল। এই পাগল মেয়ে রাগের মাথায় বাড়িতে সবাইকে না জানিয়ে দিলেই হয়। ঝিনুক বাড়ি গিয়ে কিছু বলবে না। এটা জানে নক্ষত্র। ভয় নয়নকে নিয়ে। তাকে ছেড়ে যাওয়ার জন্য সর্বক্ষণ এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে মেয়েটা। এখন তো ছেড়ে যাবার জন্য শক্ত একটা অজুহাত পেয়েছে।
নয়ন ঘরে গিয়ে ফুঁসছে। ওই মেয়েটার সাথে নক্ষত্রকে দেখে মাথা পাগল পাগল লাগছে তার। মেয়েটাকে মোটেও ভালো লাগেনি নয়নের।
—-তারা আমাকে কল করতে। আমি গিয়ে তোমাকে নিয়ে আসতাম। না বলে এসে…
নক্ষত্র কথা শেষ করতে পারল না। নয়ন তার আগেই ফুঁসে উঠল।
—-কেন? না বলে এসেছি বলে আপনার সমস্যা হয়েছে? এখন কি চলে যাব আমি?”
নক্ষত্র নয়নের সামনে এসে দাঁড়ায়।
—-এই না,না। তুমি যাবে কেন তারা।”
—-তাহলে বারবার এক কথা বলছেন কেন? আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই না বলে এসেছি। আপনাকে আগে থেকে বলে এলে আপনি কী করতেন? ওই মেয়ের সাথে ওইভাবে দেখে নিয়েছি বলে আপনার এতো অসুবিধা হচ্ছে! থাক আমাকে কিছু বোঝাতে হবে না। আমি বুঝেছি উনি আপনার খুব ভালো বন্ধু।”
নক্ষত্র হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। নয়নের নতুন রূপ দেখছে আজ সে। নক্ষত্র কিছুই বলতে পারল না। কথা হারিয়ে ফেলেছে যেন সে।
—-হাই নয়নতারা। কেমন আছো তুমি?”
রামিশার অতি আদিখ্যেতা নয়নের মোটেও সহ্য হচ্ছে না। আবার বিনা কারণে মেয়েটার সাথে বাজে ব্যবহারও করা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত এই মেয়ে তাকে কিছু বলেনি। নয়ন দায়সারা ভাবে উত্তর দিল।
—-ভালো।”
—-আমি নক্ষত্রর ছোটবেলার বন্ধু। একসাথে স্কুল কলেজে পড়েছি আমরা।”
—-অহ।”
নয়ন এর বেশি কথা বাড়াল না। ওর আগ্রহ নেই দেখে রামিশাও আর কথা বাড়াতে পারল না।
রাতে নক্ষত্রর মা বাড়ি ফিরে রামিশাকে দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে যায়।
—-ও রামিশা! মাই বেবি! কখন এলে তুমি? কবে দেশে ফিরেছ? আমি তো তোমার ফেরার কথা কিছুই জানি না। নক্ষত্র জানত? আমাকে তো বলেনি।”
রামিশা নক্ষত্রর মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে একগাল হেসে বলল,
—-মাই সুইট আন্টি, উপস তোমাকে তো আন্টি বলা যাবে না। যা সুন্দর হচ্ছ দিনদিন! তোমাকে আমার থেকেও ছোট লাগে। বয়স দশ বছর কমিয়ে নিয়েছ।”
নয়ন শ্বাশুড়ি মা’র সাথে ওই মেয়েটার মাখামাখি দেখে জ্বলে যাচ্ছে। নিজের ছেলের বউকে দুই চোখে দেখতে পারে না। ওই মেয়েকে নিয়ে কতো আহ্লাদ দেখাচ্ছে। দেখাবেই না বা কেন? মেয়েটা এতো তেল মারতে পারে বাবা! নয়ন শ্বাশুড়ি মা’কে এরকম বললে উনিও নয়নকে পছন্দ করত।
খাবার টেবিলে রাশিমা নক্ষত্রর পাশের চেয়ারে বসার আগে নয়ন গিয়ে সেই চেয়ারে বসে পড়ল। নক্ষত্র নয়নের কাজে মনে মনে অবাক হলো। আবার তার ভালোও লাগল। মনে মনে হাসল সে।নয়ন তাকে নিয়ে রামিশার সাথে জেলাস ফিল করছে! কিন্তু কেন? নয়ন আজ ইচ্ছে করেই নক্ষত্রর প্লেটে অধিকার দেখিয়ে এটা সেটা তুলে দিল। নক্ষত্র না করল না। মিটমিট করে হেসে চুপচাপ খেতে লাগল। নয়ন অন্য কারো দিকে একবারও তাকাল না। যার যা ভাবতে ইচ্ছে হয় ভেবে নিক। ওই মেয়েকে সে নক্ষত্রর আশেপাশে ঘেঁষতে দিবে না। শয়তান মেয়ে। অন্যের স্বামীর সাথে অত কিসের পিরিতি হ্যাঁ? নয়ন বন্ধুবান্ধবদের মাঝে এতো মাখামাখি পছন্দ করে না।
রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে ফেলার পর নয়ন ঘরে চলে যায়। নক্ষত্র রামিশার সাথে হলে বসে গল্প করে। রামিশা তার নিউইয়র্কের বয়ফ্রেন্ড গুলোর কথা বলছে।
—-আরে আর বলো না। একজন তো এতটা পাগল হয়েছিল যে আমাকে না পেলে নাকি আমার চোখের সামনে সুইসাইড করবে। আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে দিয়েছিল। আমিও কম নাকি? নিজে বিষের বোতল হাতে দিয়ে বলেছি, নে এবার খা। আমার সামনেই মর। সবটুকু খাবি। আমি দেখব। তখন ওর মুখের অবস্থা দেখার মতো হয়েছিল। যা ভয় পেয়েছিল বেচারা। তুমি দেখলে বুঝতে।”
রামিশা কথা বলতে বলতে হেসে নক্ষত্রর গায়ের উপর গড়িয়ে পড়ছে। নয়ন সিঁড়ির উপর থেকে ওদের দেখছে। সত্যি সত্যিই এই মেয়ের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে তার। বেহায়া মেয়ে তার বরের উপর নজর দিয়েছে কেন? দুনিয়াতে কি আর অবিবাহিত কোন ছেলে নেই?
—-শুনছেন। শুতে আসবেন? আমি লাইট অফ করে দরজা লাগিয়ে দেব।”
নক্ষত্রর মাথায় কেউ ভারী কিছু দিয়ে বাড়ি মারলেও সে এতটা অবাক হতো না। নয়নের আজ হয়েছে কী? বাবার বাড়ি থেকে ফেরার পর ওর ব্যবহার সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। এটা সেই নয়ন হতেই পারে না। রামিশাকে রেখেই নক্ষত্রকে উঠে চলে যেতে হলো। নয়ন লাইট অফ করে শুয়ে পড়েছে। নক্ষত্র কয়েকবার নয়নকে ডাকল। নয়ন কোন উত্তর দিল না। একটা ভাবনা নক্ষত্রর মনে এলে সে খুশিতে দিশেহারা হয়ে গেল। নয়ন রামিশার সাথে তাকে সহ্য করতে পারছে না। তার মানে নয়নের মনে তার জন্য কিছু আছে। নইলে সে এতটা জেলাস হবে কেন।
—-নয়ন কি আমাকে ভালোবাসে? ওর জেলাসি তো তেমনই বলছে। নয়ন যদি সত্যিই আমাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে তার মুখ দিয়ে এই কথা স্বীকার করাতে হবে। নয়ন আমাকে ভালো না বাসলেও আমার জন্য ওর মনে একটু ফিলিংস তো আছেই। তাই আজ ও এরকম আজব বিহেভ করছে।”
নক্ষত্র একা একাই হাসল। আজ সারাদিন সে না জেনে নয়নকে জ্বালিয়েছে। কাল থেকে ইচ্ছে করে জ্বালাবে।
—-নয়নতারা কাল থেকে আমার নতুন খেলা শুরু হবে। আমার জন্য তোমার মনে যা কিছুই থাকুক তা তোমাকে স্বীকার করতেই হবে। নক্ষত্র তোমার মনের কথা মুখে আনিয়েই ছাড়বে।”
খুশি খুশি মনে ঘুমোতে গেল নক্ষত্র। নয়নও তার জন্য কিছু ফিল করে৷ হয়তো তাকে ভালোবাসে। এমনটা ভেবেই তার খুশিতে মরে যেতে ইচ্ছে করছে।
চলবে__