#পণ্যস্ত্রী #Part_7
#লিখা- #Yasira_Abisha
মুনাজাতের পরে ইরাদ ভাই সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলেন কবরস্থানেই। আবির ভাই তাকে বাসায় না নিয়ে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলেন,
ডাক্তার বললেন- ইরাদ নিডস রেস্ট,, ডোন্ট ওয়ারি।
আবির- আচ্ছা ডক্টর।
এভাবে পরদিন সকাল হয়ে আসলো ইরাদ ভাইয়া কোথায় গেসে কেউ জানেনা সবাই মিলে খুজা শুরু করলাম এরপর ইরাদ ভাইয়ার P.A সম্পা ফোন করে বলল ভাইয়ার এক্সিডেন্ট হয়েছে ও রাস্তায় দেখে তাকে স্কায়ারে এডমিটেড করেছে আমরা গেলাম সবাই।
অপারেশন চলল ৫ ঘন্টা।
অপারেশন শেষে ডাক্তার বলল – পেশেন্ট কোনো কারণে হয়তো আর ফিরেই আসতে চায় না। অনেক ক্রিটিকাল ছিলো অপারেশনটা কিন্তু আল্লাহার ইচ্ছায় উনি বেচে গেসে। এখন জ্ঞান ফিরে আসলে নিশ্চিত হয়া যাবে নাহলে উনি কোমায় চলে যাবেন।
প্রায় ১মাস পরে ভাইয়ার জ্ঞান আসলো,, আসার পরে ইরাদ ভাইয়া সব ভুলে গেসিলেন প্রায় ২বছরের সব কিছু। তার মায়া ভাবিকে তো মনে আছে কিন্তু এর পরের সেই কঠিন আর ভয়াবহ অতীত মনে নেই।
ডাক্তার বলে দিলেন ভাইয়াকে পুরোনো কিছু মনে করাতে চেস্টা না করা এখন এগুলো করতে তার ব্রেইনে চাপ পরবে আর সেটা উনি নিতে পারবে না,, অন্তত পক্ষে ১বছর সময় নিতে হবে।
আমরা প্রায় ২মাস পর্যন্ত এটা সেটা বলে ভাইয়াকে বুঝাইসি কিন্তু আর সম্ভব হচ্ছিলো না।
পরে সম্পা আপু একটা প্রস্তাব দিলো যে উনি নিজের সারজারি করে ফেলবে মায়া ভাবির মত স্যারের জন্য কারণ উনি স্যারকে ভালোবাসতো,, প্রথমে আমরা সবাই না করি কিন্তু পরে আর উপায় না পেয়ে আবির ভাই আর ঝুনু খালা মিলে ঠিক করলো সম্পা আপুর কথাই হবে। কারণ স্যার হয়তো বুঝে যাচ্ছে,, এমনিতেও স্যার মায়া ভাবির পায়ের হাটাতেও বুঝতে পারতেন চোখ বন্ধ থাকা অবস্থাতেও বলতে পারতেন ভাবি সামনে আসলে।
আর সম্পা আপু তার থেকে পুরো আলাদা ধরনের ছিলো। উপায় না পেয়ে তার কথা তেও সবাই রাজি ছিলাম ঠিক ৫দিন পরে অপারেশন এমন সময় আবির ভাই নাকি আপনাকে দেখসে দেখে আপনার পুরো খোঁজ খবর নিসে এবং আপনাকে নিয়ে আসছে।
ভাইয়া ভাবিকে রুহ বলতেন আগে কারণ তাদের পরিচয় যখন ১বছর তখন ভাইয়া ভাবিকে অন্তর বা রুহ নামেই ডাকতেন ভাবির,, আর লাকিলি আপনার নাম রুহি,,
সব মিলিয়ে এইজে আজকের পরিস্থিতি আপনার সামনে।
রুহির চোখ ভরা পানি,, খুবই কষ্ট লেগেছে এরকম ভালোবাসার এরকম একটা মর্মান্তিক পরিনতি শুনে,, রুহিতো নিজ জীবনে ভালবাসা পায় নি,, পতিতাদের জিবনে ভালোবাসা আসেও না,, কিন্তু যেই মানুষটা নিজের ভালোবাসার মানুষকে এত বেশি ভালোবাসতেন তাকে স্বাভাবিক করার জন্যে রুহি মনোস্থির করলো সে নিজে থেকে যা পারবে যা করা দরকার সবই করবে,,
রুহি- আমাকে আপনারা যেভাবে বলবেন সেভাবেই সব হবে,,
আবির- থ্যানক্স।
ঝুনু খালা আর টুনিও খুব খুশি হলেন রুহির এমন প্রতিক্রিয়ায়।
প্রায় ২টা বাজে এখন দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেলো ইরাদের ও কাজ শেষ।
সবাই খেতে বসলো।
ইরাদ- রুহ,, আমি খাইয়ে দিবো তোমাকে?
রুহি- আচ্ছা।
ইরাদ রুহিকে আগে খাইয়ে দিয়ে নিজে খেয়ে নিলো।
রুহির রুম পরিস্কার করা হয়ে গেছে।
ইরাদ-রুহ তুমি এখন একটু ঘুমাও। তোমার রুমে নিয়ে দিয়ে আসি চল।
রুহি- হুম, আপনিও ঘুমাবেন একটু,,
ইরাদ- আচ্ছা ঠিক আছে।
ইরাদ রুহিকে ওর রুমে দিয়ে গেল,
রুহু রুমে দেখলো কি সুন্দর ডেকোরেশান করা।
কি চমৎকার রুচি ছিলো মায়ার।
অসম্ভব রকমের ভালোবাসা দিয়ে প্রতিটা জিনিসপত্র যেন কিনেছিল মেয়েটা।
রুহি ইরাদ আর মায়ার কথা গুলো মনে করে খুব কষ্ট পাচ্ছে,, ওর মনে কেন এত মায়া হচ্ছে ইরাদ ছেলেটার জন্যে সেটা ও নিজেও বুঝতে পারছেনা।
শুধু মনটা বলছে এই ছেলেটার জীবনে এত কষ্ট প্রাপ্প না,, তার দুঃখের দিন শেষ করে দেন আল্লাহ্।
নিজেকে নিজে রুহি আয়নায় দেখে বলছে- হ্যাঁ আমি মায়া না,, আমি কখনও মায়া হতেও পারবো না জানি।
আমি সত্যি হতেও চাই না। শুধু এই মানুষটা কে ভালো রাখতে চাই যত দিন না উনি সত্যিটা না জানে যে আমি তার মায়া না,, তার মায়া তাকে চিরকালের জন্যে চলে গেছে। একটা ভালোলোক,, যার মনটা অবুঝ বাচ্চাদের মতো তাকে আল্লাহ আর কষ্ট পেতে দিয়েন না,, তাকে খুব খুব ভালো রাখবেন।
(চলবে)