পদ্মপাতার জল পর্ব ২৩

#পদ্ম_পাতার_জল
#পর্ব_২৩
#সাহেদা_আক্তার
#গল্প_কথার_ঝুঁড়ি

কিছু বুঝে ওঠার আগেই মনিকা পদ্মকে রেলিং থেকে হঠাৎ ধাক্কা মারল।

পদ্ম পড়েই যাচ্ছিলো, ইয়াশ দৌঁড়ে এসে ওকে ধরে ফেলল। টান দিয়ে মিশিয়ে ফেলল নিজের বুকের সাথে। ইয়াশ চিৎকার করে বলল, তুই কি পাগল হয়ে গেছিস?

মনিকা- হ্যাঁ আমি পাগল হয়ে গেছি। তোর জন্য পাগল হয়ে গেছি। কেন তুই ঐদিন মিথ্যা বলেছিলে সবার সামনে? কেন সবার সামনে ওকে কিস করেছিলে? কেন?

ইয়াশ- আমি কোনো মিথ্যা বলিনি।

মনিকা পদ্মকে ঠেলে সরিয়ে ওর কলার চেপে ধরে বলল, মিথ্যা, সব মিথ্যা। তুই আমাকে সরানোর জন্য মিথ্যা বলছিস। ইয়াশ কলার থেকে হাত সরিয়ে বলল, আমি প্রমান দেখাতে পারব। দেখতে চাস? ইয়াশ ফোন বের করে একটা ছবি দেখাল। এলবাম থেকে মোবাইলে তোলা ছবি। একটা বাচ্চা মেয়ে আর একটা বাচ্চা ছেলে বিয়ের পোশাক পরা। বাচ্চা মেয়েটা ছেলেটার হাত ধরে তাকিয়ে আছে ছেলেটার দিকে। মনিকা ইয়াশকে চিনতে পারল। ছবিটা দেখে মনিকা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে বলল, না, আমি মানি না। মিথ্যা। সব মিথ্যা।

ইয়াশ- মনিকা, এটাই সত্যি।

মনিকা- কিন্তু পদ্ম তো তোকে ভালোবাসে না।

ইয়াশ- কে বলেছে?

মনিকা- ও তো নিজেই বলেছে ও নাম না জানা এক ছেলেকে ভালোবাসে।

ইয়াশ- সেটা আমি। আমি ছোট থেকে এই পর্যন্ত ওকে সব সময় ফলো করতাম। ও স্কুল কলেজ শেষে ওর পিছু পিছু হাঁটতাম। ও বাসায় ঢোকার পর নিজের স্কুল কলেজে যেতাম। এই জন্য আমি ভার্সিটিতে খুব কমই থাকতাম। ছুটি হলেই ওকে দেখতে চলে যেতাম। তাই প্রায়ই আমার ক্লাস মিস হতো। এখান থেকে গ্রামে যেতাম শুধু এক বার ওকে দেখার জন্য। ওর হাসিভরা মুখটা দেখার জন্য। শুধু আমার করে রাখার জন্য।

মনিকা- আর আমি?

ইয়াশ- তুই শুধু আমার বেস্টফ্রেন্ড। এটাই। আর একটা কথা, আজকে যেটা করলি তা ভুলেও রিপিট করতে যাবি না। তোর এতক্ষণের সব কিছু আমি ভিডিও করে নিয়েছি। বুঝতে পারছিস। আর তোর ঐ আকাশকে বলিস ওর নোংরা হাতগুলো যাতে পদ্ম থেকে যেন দূরে রাখে। নইলে ভিডিওটা……।

মনিকা- ব্ল্যাকমেইল করছিস!?

ইয়াশ- মনে কর তাই। পদ্মকে পাওয়ার জন্য আমি সব করতে পারি।

পদ্ম এতক্ষণ বোকার মতো দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনছিল। এতকিছু জানতো না ও। শুধু জানত কেউ ওকে ফলো করত। এক দুবার দেখেছিলও ছেলেটাকে। একবার ওকে কিছু ছেলে কলেজ থাকতে উত্যক্ত করেছিল। পরেরদিন জানতে পেরেছিল যে ছেলেগুলোকে কেউ মেরে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। পদ্ম বুঝতে পেরেছিল কে হতে পারে। তাই ছেলেটার প্রতি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে যে ইয়াশ এটা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি। কথা শেষ করে ইয়াশ পদ্মের হাত ধরে টেনে ছাদ থেকে নেমে এল। মনিকা পেছন থেকে চিৎকার করে বলতে লাগল, ভালোবাসি যে তোকে খুব। কেন এমন করলি আমার সাথে? পদ্মের শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। এতদিনে জানতে পারল ওর ভালোবাসার মানুষটা ইয়াশ। ভেবে যেমন ভালো লাগছে তেমনি নিজেকে স্বার্থপরও লাগছে। কিন্তু ইয়াশ একবারও তাকাল না পেছনে। শক্ত করে ওর হাত ধরে রুমে চলে এল। রুমে ঢোকার আগে হাত ছেড়ে দিল। তারপর নিজে ঢুকে গেল রুমে। পদ্ম দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে রইল। কি করবে? মনটা খারাপ হয়ে আছে। একটু পরে ইয়াশ, আকাশ আর রাফি রুম থেকে বেরিয়ে এল।

আকাশ- এখানে দাঁড়িয়ে আছো যে?

পদ্ম- এমনি, এখুনি ঢুকছিলাম। তোমরা কোথায় যাচ্ছো?

রাফি- তোমরা রুমে ঘুমিয়ে পড়ো। আমরা নিচে ড্রয়িং রুমে ঐদিকের একটা ছোট রুম আছে। ওখানে ঘুমাব।

পদ্ম- ও।

পদ্ম ইয়াশের দিকে তাকাল। ইয়াশ অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। একবারও ওর দিকে তাকাল না।

রাফি- তোমরা ঘুমাও। আমরা আসি।

পদ্ম- আচ্ছা।

পদ্ম রুমে ঢুকে গেল। ইয়াশ একবার বন্ধ দরজার দিকে তাকিয়ে চলে গেল নিচে। মনিকা অনেকক্ষণ পরে রুমে এসে শুয়ে পড়ল চুপচাপ। পদ্মের ঘুম আসছে না। কয়েকবার এপাশ ওপাশ করে রাত তিনটার দিকে উঠে বসল। দরজা খুলে নিচে চলে গেল। উঁকি দিয়ে দেখল তিনজনে নিচে বিছানা করে ঘুমাচ্ছে। পদ্ম গুঁটি গুঁটি পায়ে ইয়াশের কাছে গিয়ে ঝুঁকে বসল। কিছু চুল ইয়াশের মুখে পড়তেই ও দ্রুত সরে গেল। হালকা ঘামে মুখটা ভিজে আছে। ওর ইচ্ছা করছে হাত দিয়ে ওর কপালের ভেজা চুলগুলো গুছিয়ে দিতে। কিন্তু ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে আর ধরল না। উঠে যেতে লাগলেই হাতে টান পড়ল। সোজা ইয়াশের বুকে। পদ্ম কিছু বলার আগেই ইয়াশ বলল, কোথায় যাচ্ছো?

পদ্ম ফিসফিস করে বলল, আপনি ঘুমাননি!

ইয়াশ- তোমাকে ছাড়া কি করে ঘুমাই?

পদ্ম- আরে…ছাড়ুন। ওরা জেগে যাবে।

ইয়াশ- জাগুক। নিজের বউকেই তো জাপটে ধরেছি।

পদ্ম- ইস্। বৌ। কচু বৌ। ছাড়ুন। আমি রুমে যাব।

ইয়াশ- না। কোথাও যাবে না। আজকে আমি তোমার ঘ্রাণে ঘুমাব।

ইয়াশ পদ্মকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইল। পদ্ম ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ছোটবেলার কথা তেমন একটা মনে নেই। তাই বিয়ের কথা ওর মনে নেই। তবে মাঝেমধ্যে যখন গ্রামের বাড়িতে পরিবারসহ যেত, সারাক্ষণ ওদের বাড়ি থাকত। সবসময় ওকে জ্বালাত। একবার দুষ্টমি করে ব্লাউজ কেটে দিয়েছিল। সবাই মিলে চড়ুই ভাতি করতে গিয়ে ভুলে গরম পানি পড়ে গিয়েছিল ওর হাত থেকে। তখন সে নিজে হাতে ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু দাগটা রয়ে গেছে। ওকে নিয়ে এইটুকুন স্মৃতি ছিল ওর মনে। কিন্তু লুকিয়ে যখন চলতো, ওর পিছনে ঘুরত, তখনকার অনেক ঘটনা ওর মনে আছে। একবার স্কুলে পিরিয়ড হয়ে গিয়েছিল। ও বলতে পারবে না। তখন ইয়াশ ওর এক বান্ধবীকে ডেকে নিজের জ্যাকেটটা দিয়ে বলেছিল ওকে দিতে কোমরে পেঁচানোর জন্য। সেইসময়ও সামনে আসেনি। জ্যাকেটটা দিয়েই লুকিয়ে গিয়েছিল। সেই জ্যাকেটটা এখনো আছে ওর কাছে। সেই জ্যাকেটের মিষ্টি ঘ্রাণের প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। আর আজ সেই ঘ্রাণে ডুবে আছে। ওকে ঘিরে আছে। ভাবতে ভাবতে চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেল।
.
.
.
.
পদ্ম লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসল। পাশে তাকিয়ে দেখল ইনু কাঁদার মতো ঘুমিয়ে আছে। চারপাশে তাকিয়ে নিজেকে উপরের রুমে আবিষ্কার করল। দ্রুত ফোনের লক স্ক্রিনেরআলো জ্বালিয়ে দেখল পনে ছয়টা বাজে। জানালা দিয়ে বাইরে থেকে হালকা আলো আসছে। সূর্য ওঠার সময় হয়ে যাচ্ছে। পদ্ম দ্রুত নামায পড়ে নিয়ে বাকিদের ডেকে দিল। নিচে গিয়ে দেখল রুমটা ফাঁকা। তার মানে তিনজন মসজিদে গেছে। খুট করে শব্দ হতেই পদ্ম পিছন ফিরে দেখল ইয়াশ দরজা মেরে দাঁড়িয়ে আছে।

পদ্ম- আপনি? কোথা থেকে এলেন?

ইয়াশ- নামায পড়ে আসলাম।

পদ্ম- দরজা মারলেন কেন?

ইয়াশ- তোমার সাথে একটু সময় কাটাতে। সারাদিন তো আর আমার কাছে থাকবে না।

ইয়াশ ওর হাত ধরে বসিয়ে দিল বেডে। তারপর ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। পদ্মকে বলল মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। পদ্ম হাত বুলাতে বুলাতে বলল, আচ্ছা, সত্যিই কি আমাদের বিয়ে হয়েছিল?

ইয়াশ- বিশ্বাস হচ্ছে না?

পদ্ম- উঁহু।

ইয়াশ- এই দেখো। তুমি আর আমি। বিয়ের সাজে। আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে। তোকে শাড়ি পরাতে কি যে কষ্ট হয়েছিল। তুই বার বার টেনে খুলে ফেলতি। শেষে সবাই যখন বলল যে তোকে ফ্রক পরিয়েই বিয়ে দেবে। তখন আম্মু বেঁকে বসেছিল। আমি নিজে হাতে তোকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছিলাম। জানো, আমি শাড়ি পরার পর তুমি একটা কাজ করেছিলি। এখন এটা করবি।

পদ্ম- কি করেছিলাম?

ইয়াশ- আমার গালে একটা কিস করেছিলি।

পদ্ম- ইস্। ভাগেন।

ইয়াশ- যতক্ষন না দিচ্ছো, ততক্ষণ আমি ছাড়ছি না।

ইয়াশ ওর পেটের দিকে ফিরে গেল। ও শাড়ি চেঞ্জ করে থ্রিপিস পরেছিল। সেই থ্রিপিস ভেদ করে নিঃশ্বাসের গরম বাতাস ওর পেটে গিয়ে লাগছে। এই উত্তপ্ত বাতাসে ওর সারা শরীর শিউরে উঠতে লাগল। পদ্ম কাঁপা গলায় বলল, আমার কোল থেকে নামেন। আমি বাইরে যাব। সবাই কি ভাববে।

ইয়াশ- যা ভাবার ভাবুক। আমি তোমায় ছাড়ছি না।

পদ্ম- আমি পারব না। আর আপনার মুখের খোঁচা দাঁড়িতে ব্যাথা পাবো।

ইয়াশ- তাহলে শেভ করে আসি।

পদ্ম- এই না না। আসলে এই দাঁড়িতে আপনাকে কিউট লাগে।

ইয়াশ- সত্যি?

পদ্ম লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। ইয়াশ বুঝতে পেরে বলল, থাক এখন, আগে বাড়ি যাই তারপর সব সুদে আসলে শোধ করে নেব। কিছুক্ষণ পর উঠে বাইরে চলে গেল। পদ্ম ওভাবে বসে থেকে ভাবতে লাগল এত সুখ কপালে থাকবে?

রুম থেকে বের হতেই ইনু আর রিনি এসে ঘরে ধরল। দুইজনের কত অভিযোগ। ওদের অভিযোগে পদ্ম অস্থির হয়ে বলল, কি বলছিস কিছুই তো বুঝতে পারছি না। দুইজনে একসাথে কথা বললে কি করে বুঝব। ওর কথার কোনো জনই পাত্তা দিল না। বকবক করতে করতে ওকে টেনে রুমে নিয়ে গেল। রুমে গিয়ে বুঝল আসল কারণ। ওদের সাজিয়ে দিতে হবে। পদ্ম একটা বড়ো নিঃশ্বাস নিয়ে বসে গেল ওদের সাজাতে। সাজাতে সাজাতে নয়টা। এদিকে ইরিনা এসে দুইবার ঘুরে গেল। বলে গেল ওকে সাজতে। কিন্তু এই দুইজনকে সাজাতে বসে ওর মনে হল যুদ্ধ জয় করতে এসেছে। একবার এদিক নড়ে, একবার ওদিক নড়ে। শেষ পর্যন্ত সাজানো শেষ হল। দুইজনই সাজ দেখ খুব জোরে জড়িয়ে ধরল। পদ্ম হেসে ওদের গাল টিপে দিয়ে নিজেকে নিয়ে বসল। আজকে সবাই লেহেঙ্গা পরবে। ওরটা সোনালী আর লাল রঙের। ও সুন্দর করে লেহেঙ্গাটা পরে ওড়নাটা এমনভাবে পেঁচিয়ে নিল যাতে পেট দেখা না যায়। চুলগুলো আঁচড়িয়ে দুই পাশে ক্লিপ মেরে দিল। সামনের ছোটচুল গুলো খোলা। একটা বেলীফুলের লতাকে পেছন থেকে ঘুরিয়ে আটকে দিল খোলা চুলে। হালকা সাজ দিয়ে বেরিয়ে এল রুম থেকে। করিডোরে দাঁড়াতেই ইয়াশকে দেখল সোনালী রঙের একটা গর্জিয়াস পাঞ্জাবি পরে আদনান আর রাফির সাথে কথা বলছে। দেয়ালের পেছনে গিয়ে ও উঁকি মেরে দেখতে লাগল ইয়াশকে। সামনে থেকে দেখতে ভয় লাগছে, যদি ওকে দেখে ফেলে।

– সুন্দর লাগছে বুঝি?

পদ্ম- হুম। কে কে?

পদ্ম পেছনে তাকিয়ে দেখল ইরিনা দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে। পদ্ম একটু আমতা আমতা করে বলল, কি যেন বলছিলে?

ইরিনা- বলছিলাম এভাবে লুকিয়ে না দেখে সামনে গিয়ে দেখ।

পদ্ম- না না। আমি তো এমনি দেখছিলাম। কে কোথায় আছে।

ইরিনা- ও… আজকে আমার ভাইটাকে খুব হ্যান্ডসাম লাগছে, না রে?

পদ্ম- হ্যাঁ, না মানে ভালোই লাগছে।

পদ্ম আবার ইয়াশের দিকে তাকালে ইরিনা বলল, আর দেখতে হবে না। চল, নিলার কাছে।

পদ্ম- হুম, চলো।
.
.
.
.
বৌভাতটা কেটে গেল। ইয়াশ সারাদিনে একবারও পদ্মের দেখা পেল না। সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময়ও ওকে দেখতে পেল না। ইরিনাকে জিজ্ঞেস করতেই সে বলল ওর শরীর খারাপ লাগছিল তাই আগেই বাড়ি চলে গেছে।

ইয়াশ- আমাকে জানাওনি কেন?

ইরিনা- তুই জেনে কি করতি?

ইয়াশ- ওকে একলা ছেড়ে দিলি?

ইরিনা- একলা কোথায়? আম্মু আব্বুও যে আশেপাশে নেই সেই খেয়াল আছে?

ইয়াশ- ও, আম্মুর সাথে গেছে। গাড়িতে উঠো।

সবাই গাড়িতে উঠে বসল। আধা ঘন্টায় বাড়ি পৌঁছে গেল। সবার ভয়ে এখনও হাত পা কাঁপছে। ইয়াশ সবাইকে নিয়ে প্রায় উড়ে এসেছে। যেন গাড়ি না এয়ার প্লেন চালাচ্ছিল। ইয়াশ বাড়ি ঢুকে সোজা ইরিনার রুমে চলে গেল। রুমে ঢুকেই একটু ধাক্কা খেল। ওর দিকে তিনজন তাকিয়ে আছে। পদ্ম, শাপলা আর মরিয়ম বেগম।

ইয়াশ- আসসালামু আলাইকুম, আন্টি।

মরিয়ম- ওয়া আলাইকুম আসসালাম। কেমন আছো বাবা?

ইয়াশ- আলহামদুলিল্লাহ। কখন এসেছেন?

মরিয়ম- এই তো, বিকালে। তোমার আব্বু কি জরুরি কারণে ডেকেছে। তাই হঠাৎ আসা।

ইয়াশ- ও। আন্টি আমি আসি। বাইরে থেকে এসেছি তো। ফ্রেশ হতে হবে।

মরিয়ম- আচ্ছা যাও।

ইয়াশ বেরিয়ে নিজের রুমে চলে গেল। একটু হলেই ভয়ে হার্টটা বেরিয়ে আসছিল। মনে মনে অভইমানও করল। ওর পরিবার এসেছে আর একবার জানালো না পর্যন্ত। তার উপর সারাদিনে একবারও সামনে আসেনি। তাই রাগ করে আর বের হল না রুম থেকে।
.
.
.
.
রাতে খাবার খেয়ে বড়রা বৈঠকে বসল। ইয়াশ নিজের রুমে চলে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর ওর ডাক পড়ল। যাওয়ার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু মাহফুজ আমান ডেকেছে। তাই নামতেই হল নিচে। গিয়ে দেখল একটা সোফায় পদ্ম মাথা নিচু করে বসে আছে। অন্যদিকে দুই পরিবার মুখোমুখি বসে আছে। ইরিনা হাত ধরে ইয়াশকে পদ্মের পাশে বসাল। সবাই চুপ করে আছে। মাহফুজ আমান শুরু করলেন।

মাহফুজ- আমরা এখানে কেন বসেছি জানো?

ইয়াশ- না।

মাহফুজ- আমরা সবাই মিলে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটা শোনানোর জন্য তোমাকে আর পদ্ম মাকে ডেকেছি।

ইয়াশ- কি আব্বু?

মাহফুজ- আগামী শুক্রবার পদ্ম মায়ের বিয়ে।

ইয়াশ- কি!!!!!!!!
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here