প্রণয়ের রং,পর্ব:২

0
460

প্রণয়ের রং
পর্ব – ০২

ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই যেন মিনিট দুয়েকের জন্যে থ বনে গেল। মনে মনে বিশাল একটা দম নিলো সে। কিছু বলতে মুখ খুলবে অমনি__

___” কি করলে এটা? ফাজিল মেয়ে।” ধমকে উঠলো সামনের লোকটা।

___” সরি ভাইয়া। আমি ইচ্ছে করে করিনি।” মিনমিনিয়ে কোনোমতে বললো নিমিতা।

___” সরি? সরি বললেই হলো? কি অবস্থা করেছো আমার দেখছো তুমি?”

এমনিতেই মেজাজ বিগড়ে ছিলো নিমিতার। এবার আরও খারাপ হয়ে গেল।

___” এই ছেলে আমি ইচ্ছে করে করেছি? ভুল হতেই পারে। আপনি দেখে চলতে পারেন না? যত্তসব। একদম চেচাঁবেন না।”

___” তুমি জানো আমি কে?”
___” আর্মির মেজর তো না। ভাব এমন যেন কি না কি। ”

এবার শুভ্র খুব রেগে গেল। নিজেকে কন্ট্রোল করে জিগ্যেস করলো —
___” ভার্সিটির স্টুডেন্ট তুমি? ”

___” হ্যাঁ। কেনো? ”

___” আমি শুভ্র। ভার্সিটিতে আমার ব্যাপারে জিগ্যেস করো। জেনে যাবা আমি কে। ” বলেই হনহন করে চলে গেল শুভ্র।

নিমিতা এবার চোখ গরম করে তাকালো আবিরের দিকে। এই বাদঁরটার জন্যই এতকিছু। তারপর কাউকে কিছু না বলেই সেও হনহন করে সোজা বাড়ি চলে এলো।

পরেরদিন নিমিতার ভার্সিটিতে যেতে দেরি হয়ে যায়। সে ক্যাম্পাসে পা রাখতেই পরিমরি করে ছুটে নিতু।

___” দোস্ত একটা ভয়ংকর নিউজ আছে ”
___” কি হয়েছে? ”
___” কাল যে ছেলেটার গায়ে পানি দিয়েছিলি সে আমাদের সিনিয়র ভাই।”

এই কথা শুনে নিমিতার মুখ হা হয়ে গেল।
___” কাল যারা আমাদের র্যাগ দিলো তাদের ব্যাচের। পুরো ভার্সিটির ক্রাশ। মেয়েরা পাগল ওর জন্যে। সবাই যেমন ওরে ভালোবাসে তেমন ভয়ও করে। যে বেডার পেছনে পুরো ক্যাম্পাস ছোটে সেই বেডারে কাল তুই কুলি কইরা গোসল করাইছোস। ” বলে মুখ অন্ধকার করে রাখলো নিতু।

সবশুনে নিমিতার গলা শুকে কাঠ হয়ে গেল।এমন সময় পেছন থেকে __
___” এই যে মিস. ফুটো কলসি ”

নিমিতা পেছন ফিরে দেখলো শুভ্র দাড়িয়ে। পরনে ডার্ক ব্লু শার্ট, অফ হোয়াইট প্যান্ট, হাতে রিচ ওয়াচ। খোচা খোচা দাড়ি, চুলগুলো হালকা এলোমেলো।

কাল খেয়াল না করলেও উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের ছেলেটাকে আজ বড্ড আকর্ষণীয় লাগছে। এমনিই কি আর সব মেয়েরা ছোটে এর পিছু পিছু।

___” আমার নাম নিমিতা। ”
___” নিমপাতা?”
___” নি..মি..তা।
___” ভুল নাম রাখছে। নিমপাতাই রাখতে হতো। ”

___” দেখুন। আপনি এবার..”
___” বেশি বলছি। তাইতো? ”

নিমিতা এবার মাথা নিচু করে চুপ করে রইল। কি বলবে সে ভেবে পাচ্ছে না। আড়চোখে নিতুর দিকে তাকিয়ে আছে।

………

আজ নিমিতাদের অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম। সে রামধনুর সাত রঙা শাড়ি পরেছে আজ।

চোখে টানা করে কাজল পরা, হাতে সাতরঙা চুড়ি, চুলগুলো আলতো হাতে হাতখোপা করে সাদা গোলাপ গুজে দেয়া, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক। এতো হালকা সাজেই মোহনীয় লাগছে তাকে। ঠোঁটের কোণের ছোট্ট তিলটি ঐ চেহারার মায়া আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

শুভ্র দূর থেকে মুগ্ধ চোখে দেখছে নিমিতাকে। মেয়েটার মুখ অসম্ভব মায়ায় জড়ানো। যার দিক থেকে চোখ ফেরানো দায়। আনমনে আওড়ে যাচ্ছে সে ___

সপ্তরঙের ছোঁয়ায় রাঙা
মায়া জড়ানো মায়াবিনী
মনকে রাঙিয়ে গেল প্রণয়ের রঙে

চলবে…

নিমিতা আনাম

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here