প্রেমঘোর ২, পর্ব-৭

0
1739

প্রেমঘোর ২
পর্ব : সাত
লেখক : নার্গিস সুলতানা রিপা

রাইসা পুরো দমে মেডিকেল প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বুয়েট, ঢাবি দুই জায়গাতেই কিছুদিন করে ক্লাস করেছে সে। মন্দ লাগে নি তারপরও মেডিকেলের প্রতি একটা অদ্ভুত টান কাজ করে। তাই সব দুটানা পেছনে ফেলে আবার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাউনাফ আর অলিকও ব্যস্ত। তাদেরও বোর্ড পরীক্ষা সামনে। তারপরও যতটুকু অবসর পায়, চিন্তা করতে থাকে কখন আর কিভাবে রাইসাকে ফাঁদে ফেলা যায়।
রাইসার শরীরটা দু-দিন যাবত খারাপ। সারা সকাল পড়াশোনা করে দুপুরে গোসল আর নামায সেরে ছাদে আসলো। রাইসার চুলগুলো নৌশিনের মতো হয়েছে। অনেক ঘন এবং লম্বা৷ এমনিতেই ঠাণ্ডা এখন এই ভেজা চুলে ঘরে বসে পড়লে আরো ঠান্ডা লেগে যাবে। তাই হাতে রসায়নের একটা সীট নিয়ে ছাদে বসে পড়ছে। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি এবং এইচএসসি ‘ র ফলাফলে ২০০ নম্বর আর বাকী ১০০ হচ্ছে এক ঘন্টার এমসি কিউ পরীক্ষা। এই একশ নম্বরের পরীক্ষাতেও আবার ভাগ আছে;
জীববিজ্ঞান : ৩০
রসায়ন : ২৫
পদার্থ : ২০
ইংরেজি : ১৫
সা. জ্ঞান (বাংলাদেশ) : ৬
সা.জ্ঞান (বিশ্ব) : ৪
এই হলো মোট একশ নম্বর। সবকিছু বেশ ভালোই আয়ত্তে আছে রাইসা। রাইসার পদার্থ আর উচ্চতর গণিত করতেই বেশি ভালো লাগে। অথচ এই দুটোর একটাও মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। যদিও পদার্থ থেকে প্রশ্ন করা হয়, কিন্তু তাতে খুব একটা মজা হয় না। কেননা বিশটা প্রশ্নের বেশির ভাগ হয় তত্ত্ব ভিত্তিক আর সোজা। সাধারণ বিষয়গুলো ভালো করে পড়লেই যে কেউ পদার্থের বিশ নম্বর থেকে আঠারো এমনিতেই পেয়ে যাবে। প্রশ্ন একটু ভেতর থেকে করা হয় রসায়নে। তাই রাইসা এবার রসায়ন বেশি বেশি পড়ছে।

রাইসা চুলগুলো পিঠ বরাবর মেলে দিয়েছে। শুকাচ্ছে চুল। পড়তে পড়তে চুলগুলো নাড়িয়েও নিচ্ছে যেন তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। আজকাল শহরের নিজস্ব জমিগুলো মানুষ কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা আর ফ্ল্যাটের লোভে নিজেদের জমি কোম্পানির হাতে দিতে একটুও কি মায়া লাগে না ওদের? রাইসা আশেপাশে তাকিয়ে ভাবলো। এই তো ওদের বাড়ির ডান পাশেই অনেক সুন্দর একটা বাসা ছিলো। বাসার মালিকদের না ছিলো অভাব বা জরুরি কোনো দরকার। তারপরও নিজেদের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটা ভেঙে ফেলেছে ওরা। সেখানে এখন পনেরো তলা ফ্ল্যাট বাসা হচ্ছে। দশ তলা ইতোমধ্যে হয়েও গেছে। লোকজন থাকছেও। রাইসা এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ আড় চোখে খেয়াল করলো সেই পাঁচ তলার বারান্দা থেকে কেউ একজন তার দিকে তাকিয়ে আছে। রাইসা সে দিকে তাকালো না আর। দ্রুত ছাদ থেকে নেমে এলো। নৌশিন প্রশ্ন করলো,
“চলে এলে কেনো? আরো কিছুক্ষণ বসতে ছাদে।”
“বসবো কি করে? পাশের ফ্ল্যাট থেকে একজন জানি হা করে তাকিয়ে ছিলো।”
বলেই রাইসা ঘরে গিয়ে পড়তে লাগলো আবার। নৌশিন হাসলো। তার ছোট্ট রাইসা যে বড় হচ্ছে। মায়াবী, সুদর্শনী মেয়েটার দিকে আজকাল লোকের নজরও পড়ছে।

রাউনাফ নৌশিনের ঘর থেকে রাইসার কাছে এলো।
“কি করিস আপু?”
“পড়ছি। কেনো?”
“একটু মোবাইলটা দিবি?”
“ফোন দিয়ে কি করবি এখন। পড়া নেই?”
“আমি তো পড়ছিলাম এতক্ষণ। একটু দে।”
“না আমার ফোন দিবো না তোকে। আমি পড়ছি, বিরক্ত করিস না।”
“দিবি না?”
“না।”
“আসলেই দিবি না?”
“বললাম তো না। তুই আম্মুর ফোন নিয়ে খেল যা।”
“না, আমি তোরটাই নিবো৷ দে তুই…”
“রাউনাফ! যা বলছি না? আম্মুরটা ধর যা।”
“কেনো? তোর ফোন দিলে কি হয়? তোর ফোনে কি তোর বয়ফ্রেন্ড কল করবে যে আমাকে দিলে সমস্যা?”
রাইসা চট করে রাউনাফের দিকে তাকালো। বললো,
“কি বললি তুই?”
“কি বলেছি?”
“একটু আগে কি বললি? বয়ফ্রেন্ড মানে? তুই এই ভাষা কোথা থেকে শিখেছিস?”
“উমমমম, কোথায় শিখবো আবার? আমি কি ছোটো? আমি তো কত বড় হয়ে গেছি। আমি জানি ভার্সিটিতে পড়লে ছেলে-মেয়েরা গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড হয়ে যায়। তুইও তো এখন ভার্সিটিতে পড়িস। তাই বললাম।”
রাইসা ঠাস করে একটা চড় বসালো রাউনাফের গালে।
“বেয়াদব। বেশি সাহস হয়ে যাচ্ছে তোমার? যা নয় তাই বলো? বাজে ছেলে।”
রাউনাফ চড় খেয়ে চোখ বড় করে করে তাকালো রাইসার দিকে। বললো,
“মারলি কেনো আমায়?”
“রাউনাফ তুই যা প্লিজ। আমি পড়ছি, বিরক্ত করছিস তুই।”
“তুই মারলি কেনো?”
“তুই আমার সাথে বেয়াদবি করেছিস তাই মেরেছি। এসব বলবি না আর। আর নিজেকে এতো বড় ভাবিস না, যা।”
রাইসা পড়তে লাগলো। রাউনাফ ঠাঁট দাঁড়িয়ে রাগে ফুলছে। হঠাৎ করেই টেবিল থেকে ফোনটা নিয়ে সজোরে আঘাত করলো রাইসার মাথায়। রাইসা আঁতকে উঠলো।
“ও মা!”
রাউনাফ ফোন ফেলে ভৌ দৌড়। রাইসা আঘাত করা জায়গায় হাত দিয়ে কেঁদে ফেললো। নৌশিনকে ডাকলো। নৌশিন এসে দেখলো বেশ জোরে সোরে আঘাত করেছে রাউনাফ। রাইসাও ছোটো সময় দুষ্টু ছিলো তবে সেটা এরকম না। ও বায়না করতো, সবাইকে কেমন অদ্ভুতভাবে কাছে টেনে নিতো। কিন্তু রাউনাফ অন্যরকম। সারাদিন মারামারি, ছড়ানো-ছিটানো অভ্যাস। নৌশিন বরফ দিয়ে দিলো রাইসার মাথায়। বেশি দিলো না, রাইসার আবার টনসিলের সমস্যা। তাই ঠান্ডা যত এড়িয়ে চলা যায় তত ভালো। মাথার জায়গাটুকু ফুলে গেছে। নৌশিন বললো,
“শুয়ে থাকো একটু।”
“তোমার ছেলেকে যদি পাই আমি আজ, দেখো কি করি।”
“আর কিছু করতে হবে না তোমাকে। শুধু শুধু তুমিই বেশি ব্যথা পাবে। ওকে আজ আমি মারবো।”
“মারই তো কত! লাভ হয়? আবার তো এমন করে।”
“আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। শুয়ে থাকো তুমি।”
“মাথাটা ব্যথা করছে আমার।”
“ব্যথা তো করবেই। কম জোরে তো মারে নি, ফুলে গেছে একদম।”

নৌশিন সারা বাড়ি রাউনাফকে খুঁজলো পেলো না। বাগানে গিয়ে দেখলো ওর ফোন হাতে বসে বসে খেলছে। ধরে নিয়ে আসলো। বাগানেই দুটো থাপ্পর বসালো পিঠে। কেঁদে ফেললো রাউনাফ।
“আরো মারবি আপুকে? বল? আর ফোন নিয়ে এসেছিস কেনো?”
নৌশিন গাড়ি পার্কিং এর শব্দ শুনে পেছনে তাকালো। সাদাদ এসেছে। তারপরও আরো একটা থাপ্পর দিলো রাউনাফকে। রাউনাফ কাঁদতে কাঁদতেই বললো,
“আপুনিও তো আমাকে মেরেছে।”
“মারবেই তো। ওকে পঁচা কথা বলেছিস কেনো?”
সাদাদ এগিয়ে এসে বললো,
“কি হয়েছে?”
“কি আবার হবে? এতো গুনধর ছেলে তোমার? মেয়েটার মাথায় এতো জোরে মেরেছে মাথাটা ফুলে কি অবস্থা হয়েছে। এখনি এতো আঘাত করা স্বভাব। বড় হলে কি করবে কে জানে?”
সাদাদ রাউনাফকে কাছে নিলো।
“কি? আম্মু কি বলছে?”
“আপুনিও আমাকে মেরেছে।”
নৌশিন বললো,
“আরো মারতো ভালো হতো। আপুনিকে কি বলেছো তুমি?”
“আমি খারাপ কি বলেছি। অর্ণবের বড় বোনেরও তো বয়ফ্রেন্ড আছে। তাই তো…..
নৌশিন রাগী চোখে রাউনাফের দিকে তাকিয়ে আছে। বললো,
“এইটুকু ছেলে কিসব কথা? যার বোনের আছে থাকুক। তুমি তোমার আপুনিকে যেভাবে বলেছো ফোন দেয় নি বলে, তারজন্য একটা থাপ্পর খাওয়া যায়। বুঝলে?”
রাউনাফ এবার জোরেসোরে কাঁদলো।
“হ্যাঁ, যাই ই তো। তুমি খালি আমাকেই মারো। আপুনিকে তো কোনোদিন মারো না। একদিন ও না….”
সাদাদ হাসলো। নৌশিন বললো,
“তোর আপুনি তোর মতো করে না বাপ। করলে তাকেও মারতাম।”
“ও তোমার ভালো মেয়ে। আমি পঁচা, আমি খারাপ সব ভালো তোমার মেয়ে।”
“আবার গলা উঁচু করে কথা বলছিস? চুপ কর…একদম চুপ….”
সাদাদ বললো,
“আচ্ছা, ছাড়ো। ভেতরে চলো।”
রাউনাফ রেগে গিয়ে দরজা লাগলো। নৌশিনের ঘরের দরজা। সাদাদ, নৌশিন অনেক ডাকলো কিন্তু কাজ হলো না। সাদাদ ফ্রেশ হলো রাইসার ঘরের ওয়াশরুমে। খাওয়ার সময়ও ডাকা হলো রাউনাফকে। ভেতর থেকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলো,
“তোমরা তোমাদের ভালো মেয়েকে নিয়েই খাও। আমি খাবো না। আমাকে আর ডাকবে না।”
“বাবাই, দরজা খুলো। এতো রাগ করা ঠিক না।”
“আমি রাগ করি নি। আমি একঘুরে থাকার প্র্যাকটিস করছি। আমি তোমাদের সাথে থাকবো না আর।”
“আরেকটু বড় হও বাবাই, তারপর একা একা থেকো। এখন না।”
“না, আমি এখন থেকেই একা একা থাকবো।”
নৌশিন বললো,
“কেনো জেদ করছো? এরকম করে না বাবা।”
“আমাকে বাবা ডাকবে না তুমি। তোমার রাইসাকে গিয়েই বাবা ডাকো। ও ই তো তোমার সব।”
“ও তো আমার মা হয়। তুই না আমার বাবা। দরজাটা খোলো সোনা। আর মারবো না। সকালেও তো তেমন কিছু খাস নি। রোস্ট করেছি তোর জন্য, আয়।”
রাউনাফ রোস্টের কথায় একটুখানি গলে গেলো। সকালে তাড়াতাড়ি করে অল্প খেয়েই স্কুলে চলে গিয়েছিলো, খিদেও পেয়েছে এতক্ষণে। নৌশিন আবারো ডাকলো,
“খোলো বাবা। রোস্ট খাবি না?”
“তোমার মেয়েকেই খাওয়ায়। তাহলে যদি একটু মোটা হয়।”
নৌশিন হাসলো। বললো,
“ও মোটা হবে না। তুই আয়, বেশি বেশি খা তাহলে তোর আপুনির চেয়ে বড় হয়ে যাবি, তখন আর মারবো না।”
“মিথ্যা বলছো তুমি। আমি বুড়ো হয়ে গেলেও তুমি মারবে আমায়।”
সাদাদ-নৌশিন দুজনে হাসলো এবার। নৌশিন মন খারাপ করার ভঙ্গি করে বললো,
“তুমি যদি এমন করো তাহলে আমি কিন্তু কষ্ট পাবো। আমি কি খুব মারি তোমায়? দুটো থাপ্পরই তো দিয়েছি।”
রাউনাফ চুপ করে রইলো।
নৌশিন বললো,
“খোল দরজাটা। তুই না খেলে আমিও খাবো না। খুলবি না?”
“কেনো ডিস্টার্ব করছো আমাকে?”
“খুলবি না তুই? সত্যিই খাবি না?”
রাউনাফ বিছানায় বসে ছিলো। ধুমধাম উঠে এলো। ঠাস করে দরজা খুলে বললো,
“কি? কি হয়েছে? আমি বলেছি না একা থাকবো?”
নৌশিন রাউনাফের হাত ধরে টান দিয়ে ঘর থেকে বের করলো।
“থাকিস। আরেকটু বড় হ তারপর বিয়ে করাবো তোকে। তখন বউ নিয়ে একা একা থাকিস।”
“আমি বিয়ে করবো না। তুমু বিয়ে করো।”
সাদাদ হেসে বললো,
“কি?”
রাউনাফ সোজা সাপ্টা উত্তর দিলো,
“হুম, আম্মু বড় হয়ে গেছে এখন আম্মুর বিয়ে দেওয়া দরকার।”
কাশলো সাদাদ।
“তোর আম্মুর জন্য কি পাত্র দেখতে হবে?”
“পাত্র না দেখলে কে বিয়ে করবে? তুমি?”
নৌশিন রাউনাফের হাতে চাপ দিয়ে বললো,
“চুপ কর পাগল ছেলে। শুধু লম্বাই হচ্ছিস, দিনকে দিন খারাপ হচ্ছিস। বুদ্ধি জ্ঞান বলতে কিচ্ছু হচ্ছে না।”
“সব তো তোমার মেয়ের…..”
“চুপ। আর একটা কথা বললে….”
নৌশিন খুব রাগ নিয়ে কথা বলেছে। রাউনাফ ভয় পেলো একটু। তবুও মাথা নিচু করে বিড়বিড় করে কিছু একটা বললো। নৌশিন হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে খাবার টেবিলের দিকে নিয়ে আসলো। অলিক, রাইসা আর তাদের দাদু আগে থেকেই খাচ্ছিলো। নৌশিন সাদাদ আর রাউনাফের খাবার বেড়ে দিলো। রাউনাফকে বললো,
“চুপচাপ সব খাবার শেষ করবি।”
রাউনাফ বললো,
“তুমি না বললে আর মারবে না আমায়?”
“আমি মেরেছি?”
“বকছো তো।”
“তুমি দুষ্টামি করো না। তাহলে আর বকবো না।”
রাউনাফ অলিক আর রাইসার প্লেটের দিকে তাকালো। অলিক মিটমিট করে হাসলো রাউনাফের দিকে তাকিয়ে। রাউনাফ রেগে গেলো,
“হাসছিস কেনো ইঁদুরের মতো?”
“রাউনাফ! চুপ বলেছি না?”
“ভাইয়া আর আপুনিকে কয়টা করে রোস্ট দিয়েছো?”
“ওরা যতটা খাবে ততটাই দিয়েছি।”
“আমাকে আরো একটা দাও।”
“উফফ! আল্লাহ। এই ছেলেকে নিয়ে কি যে করবো আমি!”
সাদাদ বললো,
“দাও আরেকটা।”
“ও এটাই নষ্ট করবে। পুরোটা খেতেই পারবে না।”
রাউনাফ বললো,
“আমি পারবো।”
নৌশিন বাধ্য হয়ে আরো একটা রোস্ট দিলো রাউনাফের পাতে। রাউনাফ খেলো তবে অর্ধেকের বেশি রোস্ট খেতে পারলো না। বাকী দেড় রোস্টটুকু হাত দিয়ে ভেঙে টুকরো টুকরো করলো শুধু। নৌশিন ব্যর্থ চোখে সাদাদের দিকে তাকালো। সাদাদ বললো,
“থাক, ছেড়ে দাও।”
রাউনাফ রোস্টগুলো টুকরো টুকরো করেই বাদ রাখে নি। সেগুলো আরো নষ্ট করার জন্য আধা গ্লাস পানিও ঠাললো থালে। তারপর হনহন করে উঠে চলে গেলো। নৌশিন তাকিয়ে রইলো শুধু। ভাবলো, রাউনাফ কি বড় হয়েও এমন বিপরীতমুখী মনোভাব পুষবে?
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here