#প্রেমাসক্তি
#পর্ব__০৯
#অদ্রিতা_জান্নাত
হঠাৎ কি হলো যে উনি এরকম করছেন? আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম ৷ ভয় লাগছে অনেক ৷ যদি আমাকে মেনে না নেন? কিন্তু ইশানের বাবা এতো রেগে কেন গিয়েছেন হঠাৎ করে? সেটাই বুঝতে পারছি না ৷ ইশানের বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আবার বলতে লাগলেন,,,,,,,,
—- তোমার সাহস কি করে হয় এই বাড়িতে আসার? ওহ তোমাদের পরিবারের সাহস তো এমনিতেই বেশি ৷ আবার কোন ঝামেলা করতে এসেছো এখানে?
আমি ওনার কথার আগামাথা কিছুই বুঝতেছি না ৷ আসলে কি হয়েছে ওনার? কেন বাপির নাম শুনে এরকম করছেন ৷ সেটাই বুঝতে পারছি না ৷ আমি চুপ করে আছি দেখে ইশান বললো,,,,,,,
ইশান : পাপা কি বলছো এসব? কি হয়েছে? ও কেন ঝামেলা করবে?
—- তুই চুপ থাক ৷ এই মেয়েটা তোকে ইউস করেছে শুধু ৷ তোকে মারতে চায় এরা ৷ এক্ষুনি এই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও ৷
ইশান : পাপা তুমি…
ইশানকে থামিয়ে কাঁপাকাঁপা গলায় বলতে লাগলাম,,,,,,,,
ইশিতা : আআমি জজানি না কেন আপনার রাগ আমার বাপির উপর ৷ এটাও জানিনা আপনি আমার বাপিকে চিনেন কি করে ৷ কেন আমার বাপির জন্য আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন আঙ্কেল? আমি কেন ইশানকে ইউস করবো? কেন ওকে মারতে চাইবো? ওকে ভালোবাসি আমি আঙ্কেল ৷ প্লিজ আমাকে বের করে দিবেন না ৷ আমার বাপি যদি আপনার সাথে কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে প্লিজ তার শাস্তি আমাকে দিয়েন না ৷ আমাদের আলাদা করবেন না প্লিজ ৷
ইশিতার কান্না দেখে ইশান বলতে লাগল,,,,,,
ইশান : কি হয়েছে পাপা? কেন এরকম করছো তুমি? ইশিতা কেন মারতে চাইবে আমাকে? পাপা এরকম করো না প্লিজ ৷ ওকে বের করে দিও না ৷
ইশানের বাবা কিছুক্ষন চুপ থেকে বলতে লাগলেন,,,,,,,,,,
—- রোহান আমাকে একটু উপরে নিয়ে চল ৷ শরীরটা কি রকম যেন লাগছে ৷
ইশান আগাতে নিলে ইশানের বাবা হাত দিয়ে থামিয়ে দিয়ে বললেন,,,,,,,
—- তোমার আসতে হবে না ৷
রোহান ভাইয়া ইশানের বাবাকে নিয়ে উপরে চলে গেলেন ৷ আমি ধপ করে সোফায় বসে পরলাম ৷
ইশান ইশিতার দিকে তাকিয়ে দেখে ও নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে ৷ ইশিতাকে এভাবে দেখে ইশানের নিজেকেই শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে ৷ ইশিতার কাছে গিয়ে মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে পরলো ৷ ইশিতার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বলতে লাগল,,,,,,,,,,,
ইশান : ইশুপাখি কেঁদোনা প্লিজ ৷ দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে ৷ প্লিজ কেঁদোনা আর ৷
ইশিতা : কিচ্ছু ঠিক হবে না ইশান ৷ যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে ৷ তোমার বাবা কখনোই মেনে নিবে না আমাকে ৷ আমাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে ৷ তোমার থেকে দূরে চলে যেতে হবে ৷ কি করে থাকবো আমি ইশান ৷ আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে ৷ আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না ৷
ইশান ইশিতার চোখের পানি হাত দিয়ে মুছিয়ে দিয়ে ওকে বুকের সাথে মিশিয়ে বলতে লাগল,,,,,,,,,,
ইশান : থাকতে হবে না ৷ পাপা তোমাকে না মেনে নিলে আমি এ বাড়ি থেকে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো ৷ তবুও তোমাকে দূরে যেতে দিব না আমি ৷ কান্না থামাও প্লিজ ৷
ইশিতা চুপ করে কাঁদতে লাগল ৷ ইশান ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,,,,,
ইশান : আমার বাবা তোমার বাবাকে চিনে কীভাবে?
ইশিতা : জানি না ৷ কীসের জন্য এরকম করছেন উনি? আমার বাবা যদি কোনো ভুল করে থাকে তার জন্য কি আমাকে মেনে নেয়া যাবে না? ভুল তো আমি করি নি ৷ তবুও কেন তার শাস্তি পাবো?
ইশান : ইশিতা শান্ত হও ৷ পাপা এরকমটা করবে না ৷ আমি পাপার সাথে কথা বলবো ৷ দেখো এসব কিছু হবে না ৷
ইশিতা : আমাকে চলে যেতে হবে ইশান ৷ আমি এই জন্যেই ঢাকায় আসতে চাই নি ৷ তোমার থেকে দূরে যেতে পারবো না আমি ৷ পারলে আমাকে মেরে ফেলো ইশান ৷ দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার ৷
ইশান ইশিতাকে ঝাকিয়ে বললো,,,,,,,
ইশান : ইশিতা পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি? আমি বলেছি না এরকম কিচ্ছু হবে না ৷ বুঝছো না কেন?
বলেই ইশান ইশিতাকে জড়িয়ে নিল ৷
_______________
বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি আমি ৷ সকালের পরে রুম থেকে বের হয়নি আর ৷ ইশানের বাবার সামনেও যাই নি ৷ ইশান আমাকে রুমে দিয়ে সেই যে গেছে আর একবারও আসে নি ৷ কষ্ট হচ্ছে খুব ৷ খারাপ লাগছে অনেক ৷ এটাই ভাবছি যে অামার এতো কষ্ট হলে আপুর কতটা কষ্ট হবে!
দরজা খোলার শব্দে পিছনে ঘুরে তাকালাম ৷ ইশানকে দেখে ঘুরে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ ইশান আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললো,,,,,,,
ইশান : এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
আমি কিছু বললাম না ৷ ইশান আমাকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বলতে লাগল,,,,,,,,,,,
ইশান : এরকম করে থাকলে হবে বলো? এসো খাবে ৷
ইশিতা : আঙ্কেল কি বলেছে? তুমি কথা বলেছো না? কি বলেছে বলো না?
ইশান : আগে খেয়ে নাও তারপর বলবো ৷ আসো ৷
ইশিতা : না আগে বলো তারপর খাবো ৷ বলো না প্লিজ ৷
ইশান : পাপাকে বলেছি আমি ৷ বুঝিয়েছিও আমি ৷
ইশিতা : কি বলেছে? চলে যেতে বলেছে না? আমি যেতে পারবো না ৷ যেতে পারবো না আমি ৷
ইশান : কে যেতে বলেছে? পাপা ঐসময় রাগের বশে বলে দিয়েছে তোমায় ৷ মন থেকে বলে নি ৷
ইশিতা : মেনে নেয় নি আমাকে ৷ তাহলে এসব বলা না বলায় কি আসে যায়…
ইশান : কে বলেছে মেনে নেয় নি?
ইশিতা : জানি আমি ৷
ইশান ইশিতাকে পেছনে ঘুরিয়ে ওর কানে ফিসফিস করে বললো,,,,,,,,
ইশান : পাপা রাজি হয়েছে আর বিয়ের ডেট ও ফিক্সড হয়েছে ৷
ইশিতা অবাক হয়ে বললো,,,,,,
ইশিতা : কি বললে?
ইশান : হুম ৷ সত্যি বলছি ৷
ইশিতা ইশানের দিকে ঘুরে বলতে লাগল,,,,,,
ইশিতা : ততুমি সত্যি বলছো তো? আআমার বিশ্বাস হচ্ছে না ৷
ইশান : সত্যি বলছি ৷ আর মাত্র এক সপ্তাহ তারপর তুমি একেবারেই আমার ৷
ইশিতা : এক সপ্তাহ মানে?
ইশান : নেক্সট উইক এ বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে ৷ ততোটা বড় ভাবে হবে না ৷ পাপা বলেছে পরে তোমার পরিবারের সাথে বড় করে একটা অনুষ্ঠান করলেই হবে৷
ইশিতা : আম্মু, বাপিকে না জানিয়েই বিয়ে করে ফেলবো আমি?
ইশান : তুমি চাইলে তাদেরকে জানাবো ৷ সমস্যা…
ইশিতা : তাহলে সমস্যা আরো বাড়বে ৷ যেটা আমি চাই না ৷ বাপি সামনে থাকলে কখনোই আমার বিয়ে তোমার সাথে হতে দিবে না ৷
ইশান : তাহলে মন খারাপ করো না প্লিজ ৷
ইশিতা ইশানকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,,,,,,
ইশিতা : এই শেষ মূহুর্তে তোমাকে হারিয়ে ফেলার ভয়টা আরো বেড়ে গিয়েছে আমার ৷
ইশান : ভয় তো আমারও হচ্ছে ইশিতা ৷ তবে তোমাকে বলতে পারছি না ৷ তুমি শুনলে আরো পাগলামি করবে ৷ টেনশান করবে শুধু শুধু ৷ আমি তোমাকে এই কয়দিন একদম চোখে চোখে রাখবো দেখো ৷ এই ভয়টাকে সত্যি হতে দিব না ৷ কখনোই না ৷ পাপাকে যখন রাজি করিয়েছি তখন তোমার বাপিকেও মানিয়ে নিব ৷ তবে আমাদের ফ্যামিলির সাথে তোমাদের ফ্যামিলির কি সম্পর্ক? সেটাও জানতে হবে ৷ (মনে মনে)
ইশিতা : কিছু বলছো না যে?
ইশান : কিছু না ৷ চলো খেয়ে নিবে ৷ নাহলে শরীর খারাপ করবে ৷
ইশিতা : খাবো না ভালো লাগছে না ৷
ইশান : তুমি না বললে খাবে ৷ এখন আবার না করছো? চলো ৷
ইশিতা : ইশান!!
ইশান : চুপ কোনো কথা না ৷
বলেই আমাকে বেডে বসিয়ে দিলো ৷ তারপর আমার সামনে প্লেট ধরে বললো,,,,,,,,
ইশান : খেয়ে নাও ৷
ইশিতা : তুমি খেয়েছো?
ইশান : হুম খেয়েছি ৷
ইশিতা : পুরো মিথ্যা ৷ হাত ধুয়ে এসে আমাকে খাইয়ে দাও আর সঙ্গে তুমিও খাবে ৷
ইশান : আমি খাইয়ে দিব?
ইশিতা রুমের আশে পাশে একবার চোখ বুলিয়ে বললো,,,,,,,,,,
ইশিতা : তোমাকে বলেছি নাকি?
ইশান : তো কাকে?
ইশিতা দাঁতে দাঁত চেপে বললো,,,,,,,,
ইশিতা : পাশের বিল্ডিংয়ে একটা ছেলেকে দেখেছি ৷ অনেক কিউট দেখতে আর ভদ্র ৷ ওকে গিয়ে বলি আমাকে খাইয়ে দিতে ৷
বলেই ইশিতা প্লেট নিয়ে উঠতে গেলে ইশান ওর হাত ধরে টেনে বসিয়ে দিয়ে বললো,,,,,,,
ইশান : আরে ইশুপাখি আমি তো মজা করছিলাম ৷ বাই দা ওয়ে তুমি ছেলেটাকে দেখেছো নাকি?
ইশিতা : হ্যাঁ হ্যাঁ দেখেছি তো ৷ কত্তো সুন্দর, হ্যান্ডসাম ৷ তোমার থেকে অনেক ভদ্র, সভ্য ৷ বুঝলে?
ইশান : বুঝলাম ৷
ইশান ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বসে আছে সেটা দেখে রাগি সুরে বললাম,,,,,,,,,
ইশিতা : এই তুমি খাওয়াবে নাকি ওই ছেলেটার কাছে যাবো কোনটা?
ইশান : আরে বাবা আসছি আসছি ৷ হাতটা ধুয়ে আসছি ৷
বলেই ইশান উঠে হাত ধুয়ে এসে ইশিতাকে খাইয়ে দিল ৷ ইশিতার জোরাজুরিতে নিজেও খেয়ে নিল ৷
★★★
মাঝখান দিয়ে কেটে গেল গেল আরো ৪ টা দিন ৷ এই ৪ দিনে ইশানের বাবা আমার সঙ্গে প্রথম দিনের মতো এতো ভালো করে কথা বলেন নি ৷ আমার দিকে একবারও তাকান নি ৷ মাঝেমাঝে এক দুইটা ওয়ার্ড জিজ্ঞেস করেছেন ৷ আর কিছুই না ৷ বুঝতেই পারছি উনি বাধ্য হয়ে রাজি হয়েছেন ৷
বিয়ের কথা আপুকে বলেছি কিন্তু আপু তেমন কিছুই বলে নি ৷ শুধু বলেছে নিজের খেয়াল রাখতে ৷ গায়ে একটা চাদের জড়িয়ে ছাদে চলে গেলাম ৷ এই কয়দিনে এই বাড়ি থেকে একটুও বের হয় নি আমি ৷ দম বন্ধ হয়ে আসছে ৷ ছাদে এসে মনটা ফুরফুরে হয়ে গেল ৷ এই বাড়ির ছাদের চারপাশে ফুলগাছ লাগানো ৷ অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে চারপাশটা ৷ হালকা ভাবে সব গুলো গাছ ছুইঁয়ে দিলাম আমি ৷ তখনি হাতের ফোনটা বেজে উঠলো ৷ তাকিয়ে দেখি ইশান ফোন করেছে ৷ ১ ঘন্টাও হয়নি এরই মাঝে ফোন দিল? মৃদু হেসে ফোনটা রিসিভ করে বললাম,,,,,,,,
ইশিতা : কি হয়েছে হুম? মাত্রই গেলে অফিসে ৷ কাজ নেই?
ইশান : ইচ্ছা করছে না ৷ ভাবছি আরো কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে নিব ৷
ইশিতা : এই একদম না ৷ কেন শুধু শুধু ছুটি নিবে?
ইশান : শুধু শুধু কই? বিয়ের জন্য ৷ আর আমি ভাবছি জবটা ছেড়ে দিব ৷ এখন এসব কাজ একটুও ভালো লাগে না ৷
ইশিতা : তুমি তোমার কোম্পানিতে জয়েন করো ৷
ইশান : দেখা যাক ৷
ইশিতা : শোনো আমার না এভাবে বাড়িতে একা বসে থাকতে ভালো লাগে না ৷ দম বন্ধ হয়ে আসে ৷ চলো না একটু ঘুরে আসি ৷
ইশান : তুমিই তো চাইতে বাড়ি থেকে বের হতে না ৷
ইশিতা : হ্যাঁ তবে এখন ভালো লাগছে না ৷ আজ আসো না প্লিজ ৷ আমি মুখ ঢেকেই বের হবো ৷ কেউ চিনতে পারবে না ৷ চলো না প্লিজ ৷
ইশান : আচ্ছা তুমি রেডি হও ৷ আসছি আমি ৷
ইশিতা : তাড়াতাড়ি ওকে?
ইশান : আচ্ছা ৷
______________
পাশে ইশান বসে ড্রাইভ করছে ৷ আর আমি আশপাশটা দেখছি ৷ একটা মলের সামনে গাড়ি থামিয়ে ইশান বললো,,,,,,,
ইশান : চলো ৷ বাহিরে এতো হাঁটার দরকার নেই ৷ মলের ভিতরে গিয়ে কিছু কিনে তারপর বাড়ি ফিরে যাবো ৷
ইশিতা : বাহিরে একটুও হাঁটবো না?
ইশান : না ৷ কয়েকদিন পরে নাহয় সারা শহর হেঁটো ৷ বাট আজ না ৷ বাহিরে বের হয়েছো এটাই অনেক ৷
বলেই ইশান গাড়ি থেকে নেমে আমাকে নামালো ৷ আশপাশটা দেখে ইশানের সাথে এগিয়ে গেলাম ৷ মলের ভিতরে ঢুকতেই আমার ফোন বেজে উঠলো ৷ তাকিয়ে দেখি আপু ফোন করেছে ৷ ইশানের দিকে একবার তাকিয়ে ফোনটা রিসিভ করলে ওপাশ থেকে আপু বলতে লাগলো,,,,,,,,,
—- বোন তুই কোথায়? তোকে বাড়ি থেকে বের হতে না করেছিলাম না?
ইশিতা : আপুই কি হয়েছে তোর? তুই…
—- তুই কোথায় আছিস? একটা লোক মাত্রই বাপিকে ফোন করে বলেছে তোকে নাকি কোনো শপিংমলে দেখেছে ৷
ইশিতা : মানে? কীভাবে? চিনলো কীভাবে?
—- দেখ তুই যদি এখন বাড়ির বাইরে থাকিস তো ফিরে যা প্লিজ ৷ বাপি তোকে খুঁজতে লোক পাঠিয়েছে ৷ আমি এখন রাখছি ৷
বলেই আপু কল কেটে দিল ৷ ইশান আমার দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,
ইশান : কি হয়েছে? কে ফোন করেছে?
ইশিতা : আপু ৷ ইশান আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে হবে ৷
ইশান : কিন্তু কেন?
ইশিতা : বাপি আমাকে খুঁজতে এখানে লোক পাঠিয়েছে ৷ কে জানি চিনে ফেলেছে আমাকে ৷
ইশান : তুমি তো বোরখা পরে আছো ৷ মুখ তো পুরো ঢাকা ৷ কে চিনবে?
ইশিতা : জানিনা ৷ তবে আপু মিথ্যা বলবে না কখনোই ৷ কেউ তো দেখেছে যে আমাকে এভাবেও চিনে ফেলেছে ৷ ইশান আর দেরি করা ঠিক হবে না ৷ ফিরে চলো ৷
ইশান : আচ্ছা চলো ৷
বলেই পিছনে ঘুরে একটু এগিয়ে যেতেই জিজুকে দেখতে পেলাম কয়েকটা ছেলের সাথে আমার দিকে এগিয়ে আসছে ৷ সেটা দেখে ইশানের হাত শক্ত করে ধরলাম ৷ ইশান বললো,,,,,,,,,
ইশান : ইশিতা তুমি ঠিক আছো তো দাঁড়িয়ে পরলে যে?
এখন কি করবো আমি? ইশানকে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিতে হবে ৷ ওরা আমাকে ইশানের সাথে দেখলে ইশানের কোনো ক্ষতি করে দিবে ৷ আর ইশান তো আমাকে ওদের হাতে কখনোই তুলে দিবে না ৷ কি করবো আমি?
ইশান : ইশিতা কিছু বলছো না যে?
ইশিতা আশেপাশে তাকিয়ে ইশানকে বললো,,,,,,,
ইশিতা : ইইইশান তুমি আমার জন্য কয়েকটা চচকলেট নিয়ে আসো তো ৷ আমি এখানেই আছি ৷ প্লিজ যাও ৷
ইশান : কীসের মধ্যে কি বলছো?
ইশিতা : ইশান প্লিজ যাও না ৷ যাও ইশান নাহলে…
প্লিজ যাও তুমি ৷
ইশান : ইশিতা?
ইশিতা জোরে বললো,,,,,,,
ইশিতা : আমি তোমাকে যেতে বলেছি ৷ You have to go now.
ইশান : না আমি তোমাকে এখানে একা ফেলে কোত্থাও যাবো না ৷
ইশিতা : যাও প্লিজ ৷
ইশান : না ৷
ইশিতা ওর হিজাপের থেকে একটা পিন খুলে সেটা হাতে ধরে বললো,,,,,,,
ইশিতা : তুমি যাবে নাকি যাবে না?
ইশান : যাবো না ৷
ইশিতা : আচ্ছা ৷
বলেই ইশিতা ওর হাতের সাথে পিনটা জোরে চেপে বললো,,,,,,,,,,,,,,,
ইশিতা : এই হাতটা ক্ষত বিক্ষত করে ফেলবো আমি ৷ যদি তুমি না যাও ৷
ইশান : ইশিতা কেন এরকম করছো? ওটা সরাও নাহলে কেঁটে যাবে ৷
ইশিতা একবার পিছনে তাকিয়ে আবার ইশানের দিকে তাকিয়ে বললো,,,,,,,,,
ইশিতা : ইশান যাও ৷ আমি যেটা বলছি সেটা কিন্তু করে ফেলবো এখনই ৷ যাও তুমি প্লিজ ৷
ইশান একবার ওর দিকে তাকিয়ে দৌঁড়ে একদিকে চলে গেল ৷ ইশিতাও ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল ৷
“আজ আমাকে বাপির কাছে ধরা দিতে হবে ৷ সেটা আমি চাইলেও আর না চাইলেও ৷ কিন্তু তোমার কোনো ক্ষতি করতে পারবো না আমি ৷ চিন্তা করো না ঠিক আবার চলে আসবো তোমার কাছে!”
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,