#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত
#সাদিয়া_নওরিন
পর্ব— ৭
শব্দের শ্রেনীবিন্যাস কন্ঠনালীকে যেন রুদ্ধ করছে বারবার। অদ্ভুত লজ্জা গ্রাস করছে আরশীকে। যার প্রভাব তার বৃদ্ধা আঙ্গুলদ্বয়েও বিদ্যমান! কম্পন, আর অসস্হি এ যেন মুষড়ে দিচ্ছে তাকে! পরপর করেকটা শুঁকনো ঢোক গিলে আবার লিখলো আরশী,
—– না মানে, বন্ধুও তো হতে পারি।
—– বন্ধু!
মুখে এখনো দুষ্টু হাসি ঝুলছে ইরশাদের। আরশীকে নাস্তানাবুদ করে, অদ্ভুত এক তৃপ্ততায় আছন্ন হচ্ছে যেন তার মন! মিটিমিটি হেঁসে আরশীর পরের রিপ্লাইয়ে অপেক্ষা করায় লেগে গেল সে! এ যেন এক অন্যরকম খেলা!
ঠিক তখনই আবার এসএমএস এলো,
—– বন্ধু না হতে পারি। আদমের দিক দিয়ে তো আমি আপনার বোনই হই। তিনি তো আদি পিতা আমাদের সবার। তাই না?
আলতো ব্রু বাকালো ইরশাদ।
” মেয়েটি যথেষ্ট বুদ্ধিমতী।”মনে মনে ভাবলো সে। তারপর লিখলো
—– হুম। তা ঠিক। কিন্তু কারো পাসওয়ার্ড কাউকে দেওয়া যায় না। সে যতই আপন হোক না কেন। কারণ প্রতিটি ব্যাক্তির মাঝে নিজস্বতাবোধ রয়েছে, আর সেই নিজস্বতায় কারো হস্তাক্ষেপ মোটেও কাম্য নয়।
বার কয়েক মেসেজটি পড়লো আরশী।
“এতো সুন্দর ভাবে এই বিষয়ে বুঝিয়ে বলবে, এমন মানুষ যে খুব কমই আছে ধরনীতে! ” মনে মনে ভাবলো সে। কথাগুলো চিন্তা করার ফলে, অন্যরকম ভালো লাগা বিরাজ করছে এখন তার সম্পূর্ণ মন জুড়ে। এই ভালো লাগা যেন সংজ্ঞাহীন৷ এই ভালা লাগা কিশোরকালের বায়ুসন্ধির ভালো লাগা। যার না হয় কোন কারণ, না লাগে কোন সময়! এ ভালোলাগা এমনিতেই আসে। ঠিক প্রজাপতির মতো! ফুলের ওপর উড়ে বেড়ানো ডোরাকাটা সেই ভোমরের মতো! এই ভালো লাগার হুট করেই আগমন। আর দিন গড়াতেই এ যে হয়ে উঠে কিশোরী কন্যার প্রিয় অসুখ!
হঠাৎ মেসেজের শব্দে চৈতন্য ফিরে পায় আরশী।
—— এখন কিভাবে ঠিক করবো তোমার সমস্যা? আমার মনে হচ্ছে, সব লিখে পাঠিয়েছি তাই তুমি বুঝতে পারছো না। মুখে বললে হয়তো বুঝতে পারতে। আচ্ছা তোমার ফোনে ভয়েস রেকর্ড সাপোর্ট করে?
—- হুম।
—- ওকে ওয়েট।
আরশী অবাক দৃষ্টিতে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো। মানুষটি ঠিক কি করতে চায়ছে যেন বোধগম্য হচ্ছে না এখন তার। কিন্তু কিছুসময় পরই কয়েকটা ভয়েস রেকর্ডের মেসেজ ফোনের স্কিনে দৃশ্যমান হতেই বিষয়টি বুঝতে পারলো সে।
আরশীর মাঝে হুট করে অদ্ভুত ইতস্ততবোধ কাজ করতে শুরু করলো। কারো ভয়েস রেকর্ড তার ফোনে ভাবতেই, নাক মুখ ঘেমে একাকার হয়ে গেল মুহূর্তেই। আরশী আলতোভাবে কানে হেডফোন গুঁজে, মেসেজটি ওপেন করলো।
ঠান্ডা শীতলস্রোত শিরদাঁড়ার ঠিক মধ্যখান বেয়ে প্রভাহিত হচ্ছে শরীরের নিন্মভাগে৷ শিহরণ জাগানো অদ্ভুত মুগ্ধতায়, রুহ কেঁপে উঠার জোগাড় যেন! আরশী চোখ বুঝে অনুভব করতে থাকে ইরশাদের মিষ্টি স্বরের মাধুর্যতা! এ যেন অন্তরে শিতল পরশের ছোঁয়া দিয়ে যায়, আর প্রাণকে করে সিক্ত।
ইরশাদের প্রথম বলা কথাগুলো বার কয়েক শুনলো আরশী!প্রতিবারই যেন অদ্ভুতভাবে শিহরিত হচ্ছে সে!
” আপু শুনছো, আমি যেভাবে বলবো সেইভাবেই করবে। ঠিক আছে?”
বাকি কথাগুলো কর্ণ স্পর্শ করলো না আরশীর। অথবা হয়তো কর্ণস্পর্শ করলেও অন্তরের কুঠুরিতে ঢালা হলো না!
হঠাৎ মেসেজ আগমনের ভাইব্রেশনে কেঁপে উঠলো আরশী। তাড়াতাড়ি মেসেজটি ওপেন করতেই লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো যেন সে! গালের কাছটাও লাল হয়ে গেল সাথে সাথে!
আরশী করতে পেরেছে কিনা সেই চিন্তায় মগ্ন ইরশাদ। কয়েকটা মেসেজ ও দিলো সে সেই প্রসঙ্গে। আর আরশী, সে যেন মগ্ন এখন,সেই অচেনা সুমধুর কন্ঠস্বরের প্রেমে!
আরশী ” আর পাঁচ মিনিট” এমন মেসেজ লিখেই কাজে নেমে পড়লো। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সমাধান করলো সকল সমস্যার। এবার যেন সবকিছুই ঠিক আরশী।আর বাকি অন্য তথ্য, যেগুলো আরশী বুঝবে না মনে হলো ইরশাদের। সেগুলো ও ইরশাদ নিজ থেকেই বলে দিল তাকে!
আকাশটা সিঁদুরে রং ধারণ করে জানান দিচ্ছে সময়ের সমাপ্তির খবর৷ পাখির কিচিরমিচির শব্দও যেন আরশীর কানে কানে বলছে,
” আরশী, বাড়ির সবাই খুঁজ লাগাবে তোমার, এখন অন্তত বাড়ি যাও”
অন্যদিকে আরশী পড়েছে প্রচন্ড বিপাকে। মনের কোনে বেড়ে চলেছে তার এক অদ্ভুত অনৈতিক চাহিদা! যা হুট করেই বের করা সম্ভবপর নয়। ইরশাদের সাথে আরো কথা বলার লোভ যেন বারবার শাসিয়ে চলেছে তাকে! অবাধ্য মনটি যেন বলছে, “আরশী আর একটু কথা বললে কি ক্ষতি? ” কিন্তু মনকে মোটেও পশ্রয় না দিয়ে তাড়াতাড়ি ” বাই” লিখে মেসেজটি পাঠিয়ে দিল আরশী ইরশাদের কাছে।
হঠাৎ তার ধারণা হলো, ইরশাদ হয়তো আরো কিছুসময় গল্প করতে বলবে তাকে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে কোনকিছুই বলল না ইরশাদ। বরং নরমালই ” নিজের যত্ন নিও ” বলে বিদায় জানিয়ে দিল তাকে।
কোমলমতি হৃদয়ের ওপর, কঠিন আবেগী চাপের অস্তিত্ব অনুভব করছে আরশী! সে এক অদ্ভুত প্রলয়কারী অনুভূতি। যা কোন কিশোরীর জিবনে পদার্পিত প্রথম অচেনা পুরুষটিকে অনুভব করে উৎপন্ন হয়। যা চলমান সময়ে দিবাস্বপ্ন দেখায় মত্ত করে তুলে সেই কিশোরীকে!
ইরশাদের নামের পাশে জ্বলতে থাকা সবুজ বাতিটি, হুট করেই অভিমানের কারন হয়ে দাঁড়ালো আরশীর জন্য! কিন্তু সে পাল্টা আর কোন মেসেজ দিল না বরংমুখ গোমড়া করে নিচে নেমে গেল।
পা টিপে টিপে ঘরে প্রবেশ করছে আরশী। মায়ের রক্তচক্ষুর সামনে দাঁড়ানোর দুঃসাহস, আপাতত নেই তার মাঝে। সে তাড়াতাড়ি পড়ার টেবিলে বসে, বই খুলে পড়তে আরম্ভ করে দিলো!
আরশীর কন্ঠস্বর শুনে অবাক হয়ে তার কাছে এগিয়ে এলেন আরশীর মা আফিয়া।পরম অবাক হয়ে চোখ দুটি বড় করে প্রশ্ন ছুঁড়লেন তিনি আরশী দিকে।
—- তুই এতোক্ষণ কই ছিলি?
—– ছাঁদে, কাপড়গুলো নিতে গিয়েছিলাম।
হড়বড়িয়ে কথাগুলো বলে উঠে, মৃদুভাবে চেপে রাখা নিঃশ্বাস ছাড়ে আরশী।
সুক্ষ্ম দৃষ্টিতে কিছুসময় ধরে আরশীকে পরখ করলেন আফিয়া। তারপর আলতো মাথা ঝাঁকিয়ে বিকালের নাস্তা বানানোর তৈয়ারীতে লেগে পড়লেন তিনি।
আরশীর পিতা একটি কোম্পানিতে, ভালো পোস্টে জব করেন। সন্ধ্যা সাতটা, তার অফিস ছুটির সময়। বাসায় ফিরতে ফিরতে আটটা বাজে তার। কিন্তু মাঝে মাঝে সাতটা চল্লিশ এ ও চলে আসেন তিনি। আবার যেদিন কাজের চাপ খুব বেশী থাকে সেদিন সাড়ে আটটাও বাজে।
এখন, আরশীর হয়েছে এক জ্বালা! তার প্রিয় সিরিয়াল “সাথিঁয়া ” সাড়ে সাতটায় শুরু হয়। আবার সাড়ে আটটায় ” ইচ পেয়ার কো কিয়া নাম দূ “এইটাও দেখতে হয় তাকে! একদিন না দেখলেই নিজেকে কেমন সন্যাসী মনে হয় সেদিন তার!
ঘড়িতে সাড়ে সাতটা বাজতেই পা টিপে টিপে ড্রইংরুমে চলে যায় আরশী। রাতে টিভি দেখা মানেই, যুদ্ধ করা আরশীর জন্য! কারন রাতে টিভি দেখাটা নিষিদ্ধ তাদের বাসায়। আর এই কারনে অনেক লুকোচুরির আশ্রয় নিতে হয় তাকে।
টিভিটা একদম দরজা বরাবর ওভারড্রবের ওপরে রাখা। আর এই কারনে টিভির রিফলেকশন দরজার পাশের খালি স্পেস দিয়ে সিঁড়িঘরে পড়ে! তবে তা খুবই ক্ষীণ। কিন্তু আরশীর পিতা শাওন অতিরিক্ত বুদ্ধিমান। তিনি সেই ফাঁক দিয়েই দেখেন আদো আরশী পড়ছে, নাকি টিভি দেখছে!
মেইনদরজার হুকের সাথে ওড়নাটা ঝুলিয়ে টিভিটা ছেড়ে সিরিয়াল দেখায় মন দেয় আরশী। সাওনটাও খুব ছোট করে দেয় সে। তারপর টিভির খুব কাছে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে! সিরিয়ালের এহেমের কঠিম কঠিন বাক্যগুলো মন দিয়ে শুনতে থাকে সে, আর সাথে সাথেই কল্পনার জগতে ডানা মেলে! কখনো নিজেকে নায়কা ভেবে শিহরিত হয় তো কখনো ভীত! মাঝে মাঝে,তাদের কষ্টে ফুফিয়ে কাঁদতে থাকে সে যেন কাহিনীটা কাল্পনিক নয় বরং তারই জীবন!
কলিংবেলের কর্কশ ধ্বনিতে চমকে উঠলো আরশী। চাকতির মতো ঘুরে দাঁড়িয়ে দৌড়ে গেল সে টিভির কাছে।আর সাথে সাথেই টিভিটা অফ করে দরজার পাশ থেকে ওরনাটি নিয়ে, সেটি গায়ে জড়িয়ে দরজাটি খুলে দিল।
তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে আরশীর দিকে তাকালো শাওন সাহেব। পুরো কক্ষে আলতো দৃষ্টি বুলিয়ে, পকেট হাত পুরে আরশী দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লেন,
—- এতোক্ষণ কি করছিলে?
—- পড়ছিলাম আব্বু।
মিনমিনে স্বরে জবাব দিল আরশী৷ ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে তার।
” বাবা বুঝলেন কি!”
কিন্তু তার প্রশ্নের উত্তর যেন শাওন সাহেবই দিয়ে দিলেন,
—– মিথ্যেতে পিএইচডি করে ফেলেছো দেখছি! দরজার ফাঁক দিয়ে অন্ধকার দেখা যাচ্ছিল, কিন্তু ওপরের ভেন্টিলেটর দিয়ে তো রুমের লাইট জ্বলছিল তা দৃশ্যমান হচ্ছিল।
—- আসলে আব্বু.
—- তার মানে তুমি দরজার ফাঁকে কিছু দিয়েছিলে তাই না?লুকোচুরি টা কি আমার সাথে খেলছো নাকি নিজের ভবিষ্যতের সাথে?ফাঁকিটা কাকে দিচ্ছো? আমাকে না নিজেকে? বল?
প্রবলবেগে কান্না পাচ্ছে আরশীর। তিরিশ মিনিট টিভি দেখার জন্য কি এখন বকা শুনতে হবে তাকে! আনমনে ভাবলো সে। কিন্তু মুখে কেবল মাফ চেয়েই ড্রইংরুম ত্যাগ করলো সে।
বিছানায় শুয়ে আছে আরশী। পা দুটি আড়াআড়িভাবে একটি অন্যটির ওপর। খাবার শেষ করেই শুয়ে পড়ে সে। ঠিক রাত ১১টা ঘুমের জন্য নির্ধারিত। এটাও এ বাড়ির নিয়মের অন্তর্ভূক্ত।
আরশী আলাদা কক্ষেই ঘুমায়।কেবল আইমান আসলেই তার সাথে বেড শেয়ার করতে হয় তার। বিকেলের বকার জন্য এখনো প্রচন্ড রকমের মন খারাপ আরশীর। সে মন খারাপ করে প্রিয়ার কাছে মেসেজ দেয়,
—– আজ আব্বু বকলো।
—- কেন? আবার সিরিয়ার?
—- হু।
—- না দেখতে পারিস না। দেখিস কেন? আমার তো মেজাজটাই বিগড়ে যায় দেখলে।
—–আমার তো ভালো লাগে।
আর কোন রিপ্লাই দিল না প্রিয়া। হয়তো খুব বিজি! মুহূর্তেই মনের কোনায় এক টুকরো মেঘ জমতে শুরু করলো আরশীর! মনটাও অসম্ভব ভার ঠেকছে এখন তার , যেন এখুনি ঝড়ে পড়বে অশ্রু নামক নোনাজল!
বড্ড মন খারাপের দিনে, কারো মিষ্টি কথোপকথন মনে অনাবিল প্রশান্তি সৃষ্টি করে। আর সেই প্রশান্তির কথা অনুভব করতেই আনমনে ইরশাদের কথায় মনে পড়ে গেল আরশীর! অদ্ভুত লোভ হলো তার ইরশাদের সাথে আর একটি বার কথা বলার। লজ্জায় বারবার রাঙ্গা হচ্ছে আরশী। বুকের ভেতরটাও অজানা অনুভূতিতে বারবার কেঁপে উঠছে তার, যেন কোন ভাব্রেট ফোন! জড়তা বারবার রুদ্ধ হচ্ছে তার কন্ঠনালী।
পরপর কয়েকটি ঢোক গিলে কম্পিত হাতে লিখলো সে,
—- বিজি?
—- ওম হো।
সাথে সাথে উওর দিল ইরশাদ! চাপা আনন্দে একহাতে অন্যহাত চেপে ধরলো আরশী। অন্যরকম অস্হিরতা বহমান তার পুরো হৃদয় জুড়ে, যা শান্ত করতে ব্যার্থ যেন সে! ঠিক তখনি আবার প্রশ্ন ছুড়লো ইরশাদ,
—- কি করছো?
—- হু। শুয়ে আছি। আপনি?
—– আমিও।
কিছুসময় নিরবতা ছুঁয়ে গেল দুজনকে, যেন কথায় খেই হারিয়েছে তারা। মনে হাজার শব্দের ভান্ডার থাকার পরেও যেন শব্দহীন আজ দুজন।
আলতো কপাল চুলকে কি লিখবে চিন্তা করলো ইরশাদ। মেয়েদের সাথে খুব কম কথা হয় তার। এমনটা না, মেয়েরা বলতে চায় না। কেন যেন ইরশাদেরই বলতে ইচ্ছে হয় না কারো সাথে! কেবল পায়েলের সাথে খানিকটা জমে তার৷ একই কোচিং আর কলেজে পড়ে সেই সুবাদে। নিজের ঠোঁটি আলতো দাঁত দিয়ে কেটে লিখে সে,
—- তো পুরো দিন কেমন কাটলো?
—- ভালো না। মন খারাপ।
চিন্তিত ভাবে কপাল কুঁচকালো ইরশাদ। কেন যেন মেয়েটির এই মেসেজটি পড়ে তারও মন খারাপ হয়ে গেল! সে তাড়াতাড়ি টাইপ করলো,
—– কেন?
সাথে সাথে চার্জ চলে গেল তার ফোনের! এবার মেজাজটি বিগড়ে গেল ইরশাদের। যদিও রাতে তেমনটা ফোন লাগে না বিধায়, ফোনে তেমন চার্জ দেয় না সে। কিন্তু আজ কেন যেন নিজের ওপরই বিরক্ত অনুভব করলো সে। তাড়াতাড়ি লাফিয়ে নেমে ওভারড্রপের ওপরে থাকা চার্জারে ফোনটি চার্জে দিয়ে আবার ফোনটি অন করলো ইরশাদ।
অন্যদিকে আরশী কয়েকটা মেসেজ দিয়ে অবাক হয়ে গেল। হঠাৎ মনে হলো তার, মানুষটি কি তার ওপর বিরক্ত! আবার এইটাও মনে হলো অপরিচিত একজনকে খুব জ্বালাচ্ছে কি সে! অশ্রু যেন আবার দুকূল চাপিয়ে আসার সংকেত দিতে লাগলো তাকে। সে তাড়াতাড়ি লিখলো
—– সরি ভাইয়া। আপনাকে বিরক্ত করলাম। খুব বেশী দুঃখিত।ওকে গুড নাইট। ভালো থাকবেন
ইরশাদের এখন ফোনটি আছাড় দিতে ইচ্ছে হচ্ছে । ফোনটি হ্যাং করে জানা ছিল তার। কিন্তু এতোটা হ্যাং করে তা যেন আজই প্রথম জানলো সে! বারবার টিপে ফোনটি অন করতেই, আরশীর পঞ্চম মেসেজটি চোখে পড়লো তার। সে তাড়াতাড়ি এসএমএস লিখলো,
—- আপু সরি, ফোন অফ হয়ে গিয়েছিলো।
—- আপু রাগ করলে?
—- এই আপু, সত্যি। বিরক্ত করো নি তো তুমি আমাকে। কোথায় তুমি?
দীর্ঘ আধাঘন্টা যাবত আরশীর মেসেজের অপেক্ষায় ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েই রইলো ইরশাদ। তার এমন কান্ড যেন আজই প্রথম! কিন্তু সে কেন দাড়িয়ে আছে তার কারণ যে একদমই অজানা তার কাছে! আর অন্যদিকে বালিশে মুখ চেপে বেঘোরে ঘুমুচ্ছে আরশী!
শেষে ফোনটি স্বশব্দে ওভারড্রবের ওপর ফেলে দাঁতে দাঁত পিষে বলে উঠলো ইরশাদ,
—- শালার কালকেই নতুন ফোন কেনা লাগবে আমার
চলবে???