প্রেম সায়রের ছন্দপাত পর্ব ৬

#প্রেম_সায়রের_ছন্দপাত

#সাদিয়া_নওরিন

পর্ব—৬

—– লাইক সিরিয়াসলি! তুই এমন আবালগিরি করেছিস, কাল পুরো রাত জুড়ে!
—– এইটা আবালগিরি বলে না প্রিয়া। এইটাতে নরমাল ভূল বলে।আর তুমি আইডি খুলে দিয়েছো ওকে। এই ইনফরমেশনগুলো ঠিক করে ওকে বুঝিয়ে দাও নি কেন? আর চায়লে পাসওয়ার্ড টা ও তো নিতে পারতে তুৃৃমি। আর তারপর বাসায় বসে ভালোভাবে সবকিছু ঠিক করে দিতে পারতে।
—– মায়া, ওর তো কোন দোষ নেই। আমিই বুঝতে পারি নি বিষয়টি।
মৃদুস্বরে বলে উঠলো আরশী। আর সাথে সাথেই আরশীর কথায় হ্যা মিলালো প্রিয়া। আর তারপর পরম এটিটিউডের সাথে বলে উঠলো,
—– তাছাড়া ওর পাসওয়ার্ড ও তো ওর কাছে। ওর পারশোনাল জিনিস ওটা। তাইতো নিই নি। আর কালকের কথাই ধরো, আমি চায়লেই কি ঠিক করে দিতে পারতাম তখন?
—– রাতে অন্তত একবার, নেটে ডুকে তো দেখতে পারতে। নতুন আইডি খুলে মেয়েটা কি করছে না করছে।তা দেখা টা কি দরকার ছিল না তোমার? আমাকেও রিকুয়েষ্ট পাঠাও নি। হয়তো আমি দেখলে ঠিক করে দিতে পারতাম রাতে। এখন তো ফোনটাও আনি নি আমি।
ফোঁস করে নিশ্বাস ছাড়ে মায়া। আরশীর কালকের অবস্হার কথা ভেবে বুক কাঁপছে তার। মেয়েটার উষ্কখুষ্ক চেহারায় জানান দিচ্ছে কতোটা টেনশনে ছিল সে পুরাটা রাত।

হঠাৎ আনমনে কিছু ভেবে ব্রু কুঁচকে প্রিয়ার দিকে তাকালো মায়া। তারপর বলল,
—– আচ্ছা, আমি তোমাদের বান্ধবী হওয়ার পরও সবাইকে রিকুয়েস্ট দিলে আমাকে দিলে না কেন?
—- তুমি কি আমাকে আরশীর কাছে কালার করতে চায়ছো?
—- ঐ স্বভাবটি মোটেও নেই আমার। চার বছর ধরে বন্ধুত্ব আরশীর সাথে আমার। তোমার আগে ও আমার বান্ধবী। সুতরাং এইসব ডাবল মিনিং কথাবার্তা একদমই বলবে না তুমি আমার সাথে।

দাঁতে দাঁত চেপে কঠিন গলায় বলে উঠে মায়া। আচমকা দু’হাত উচু করে তাদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে যায় আরশী। হতাশাজনক দৃষ্টিতে উভয়ের দিকে তাকিয়ে নরম স্বরে বলে সে,
—- তোমরা দুজনই আমার কাছে খুব প্রিয়৷ একদম অন্তরের কাছে তোমরা। তাই প্লিজ নিজেদের মাঝে এমন কাদা ছোড়াছুড়ি করো না।
মায়া বিষন্ন দৃষ্টিতে তাকায় আরশীর দিকে। তারপর আনমনে ভাবে,
“মেয়েটা একটা সহজসরল কেন! কেন এমন সবাইকে অন্ধ বিশ্বাস করে সে! ”
কিন্তু প্রিয়ার শরীরে যেন রাগ দৌড়ে বেড়াচ্ছে এখন। মায়ার হাতে হেনস্তা হতে মোটেও ভালো লাগে না তার। সে নাক ফুলিয়ে বলল,
—- আসলে আরশী, ওর হিংসা হচ্ছে তোর সাথে। আমি তোর সাথে বেশী ক্লোজ কিন্তু ওর সাথে না তো ৷ তাই।
—– আহ্!
হাতকে মশা তাড়ানোর মতো করে নাড়িয়ে, তাচ্ছিল্যের হাসি মুখে ঝুলিয়ে বলে উঠে মায়া,
—– হুম৷ হিংসে হয় আমার। অনেক বেশী হিংসা হয়। তবে আরশী না তোমার সাথে। এমন বাদরের গলায় মুক্তোর মালার মতো তুমি ঝুললে কিভাবে, সেইটা ভেবে হিংসে হয়। নিজের নোটস দেওয়া, পড়ার খবর নেওয়া, ক্লাসের পড়াগুলো বুঝানো, এক্সাম হলে হেল্প করা।
এমন ফ্রেন্ড মানুষ পায় কোথায়! লাইক হারিকেল দিয়েও খুজে পাওয়া যায় না। তোমার তো আকাশ সমান ভাগ্য।
ইশ, ইউ ডোন্ট ডিজার্ব হার।

ঝগড়া হাতাহাতির পর্যায়ে যাওয়ার আগেই, মায়ার দু’হাত ধরে টেনে দেওয়ালের পাশের বেঞ্চে বসিয়ে দিল আরশী। আর নিজেও তার পাশেই বসে পড়লো। প্রিয়া তাদের পাশেই আরেকটা বেঞ্চে বসে আঁড়চোখে তাকালো তাদের দিকে। আর আরশী আঁড়চোখে তাকালো মায়ার দিকে । এই মেয়েটির এই সাংঘাতিক রাগটাকেও যেন অতিরিক্ত ভালোবাসে সে!
কিছুসময় পর, আমতাআমতা করে মায়ার গা ঘেঁসে বসলো আরশী।তারপর চেহারাটি বেবি ফেইস করে বলল,
—– জানিস কালকে পুরা রাত আমি নির্ঘুম কাটিয়েছি। একদম কাযার রাত যাকে বলে, তেমন একটা রাত।
—– তুই কাযা রাত কাটা বা নফল আমার কি? পারলে মাথা নিচে দিয়ে পা দুটা ওপরে ছড়িয়ে ঘুমা। হু কেয়ারস।
মুখ বাঁকিয়ে বলল মায়া। আরশীর বড্ড হাসি পাচ্ছে। কিন্তু সে নিজেকে স্বাভাবিক করে, মুখ ছোট করে বলল,
—– তার মানে তুই শুনতে চাস না! ওকে শুনিস না। তোকে তো সেই গুন্ডা টাইপের ছেলেটির কথাও বলি নি আমি। যে কাল রাতে আমাকে বকেছিল!

আরশীর কথায় থ বনে গেল মায়া। নাক ফুলিয়ে ফেলল সে সাথে সাথে! চরম উত্তেজিত হয়ে পুরো বিষয়টা খুলে বলতে বলল সে আরশীকে। মনে মনে ছেলেটির মাথা ভাঙ্গানোর প্ল্যান ও যেন করে ফেলল সে! আর আরশী, সে হরবড়িয়ে ইরশাদের প্রোফাইল আর মেসেজ সম্পর্কে বিস্তারিত বলে দিল মায়াকে.

মাথায় হাত দিয়ে হতাশভাবে আরশীর দিকে তাকিয়ে আছে মায়া। মনে হচ্ছে সে সেমিকোমায় পৌঁছে গিয়েছে, যেকোন সময়ই সে টুপ করে চোখ বুঝে ফেলবে! আরশী অবাক হয়ে তাকালো তার দিকে। তারপর উৎসুকভাবে কিছু জিজ্ঞেস করার আগে মায়া বলে উঠলো,
—– আজিমপুর চিড়িয়াখানায় নাকি অদ্ভুত জীবের বাস। তা তোকে নিয়ে গেল না কেন তারা? নাকি ভারত গিয়ে আমিই তোকে সেখানের কতৃপক্ষের কাছে জমা দিয়ে আসবো। তোর স্বজাতির সাথে থাকবি।
—- কিহ
—- তো কি? ভালোকে খারাপ আর খা-রা-প কে ভালো বলার খুব বাজে ব্যামো আছে তাই না তোর? আসলে তোর চিন্তাভাবনা দেখে কি মনে হয় জানিস? তুই। দ্যা গ্রেট আরশী এলিয়েন তাও আবার সেই গাধা ওয়ালা।

আরশী তার বড় বড় চোখের পাতা, বার কয়েক ফেলে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—- এমন পাজল সৃষ্টি করছিস কেন? কি করলাম আমও আবার?
—- ছেলেটি তোর হেল্প করতে চেয়েছিল আয়নাবিবি।আর তুই সেই লক্ষ্মী ছেলেটাকে গুন্ডা বললি! ইশ বেচারা ছেলেটা।
আরশী অবাক হয়ে তাকালো। মায়াকে দেখে মনে হচ্ছে সে ছেলেটাকে না মায়ার কলিজাটাকেই হয়তো গুন্ডা বলেছে!

—- তো তার প্রোফাইল পিকটা।
মিনমিনিয়ে বলল আরশী। আরতখনই পাশের বেঞ্চ থেকে বলে উঠলো প্রিয়া,
—– ঐটা অনেকেই প্রোফাইল পিক হিসেবে দেয়। ছেলেদের কমন পিক ও বলতে পারিস।
তারপর আনমনে কিছু ভেবে আবার বলে প্রিয়া,
—- তবে কাউকে নিজের রিয়েল পরিচয় বলে দিস না যেন আবার।বিপদে পড়তে পারিস তখন
—– কেন?
—– আরে, তুই তো আইডি খুলেছিস কেও জানে না।তাই আর কি, আবার যদি লতানো পেঁচানো কোন রিলেটিভ হয়ে যায় তোর সেই ফেইসবুক ফ্রেন্ড। তখন কি করবি?
প্রিয়ার এই কথায় মায়াও সায় দেয় কারণ আরশী আবার কোন সমস্যায় পড়ুক সে চায় না৷
অন্যদিকে মহাবিপদে পড়ে যায় আরশী৷ এখন কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে কি মিথ্যা পরিচয় বলতে হবে তাকে! কিন্তু কি বলবে সে!

___________
বিকেলে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর, ছাঁদে চলে আসে আরশী। দুতলা বিল্ডিং তাদের। ছাঁদে অসংখ্য ফুলের টব। হাতে থাকা কাপড়গুলো রশিতে ছড়িয়ে দেয় সে। তারপর মায়ার কথা অনুযায়ী পোস্টটি ডিলেট করে দেয়। এরপর খুব সাবধানে সেটিং এর বাকি বিষয়গুলোও পড়ে দেখে। সব শব্দের মিনিং বোঝার পরও, কোন অপশনেই ক্লিক করলো না সে! ফোনটি এখন এমনভাবে ইউস করছে সে,দেখে মনে হচ্ছে যেন এটি একটি বোমা! টিপ দিলেই ফেটে যাবে।

সবকিছু দেখা শেষ করে মেসেজের অপশনে যেতেই, যেন আকাশ থেকে পড়লো আরশী৷ খারাপ লোকগুলোর খারাপ এসএমএসে ভর্তি হয়ে আছে তার মেসেন্জার! কয়েকজন তো আবার তাকে কল ও দিয়েছে! সকালে ফোনটি লুকিয়ে রেখে গিয়েছিল আরশী৷
যদি মা ফোনটা ধরতো! আনমনে এইসব ভাবতেই গলা কেঁপে উঠলো আরশীর। আচমকা একজন খুব খারাপ ছবি পাঠালো তার কাছে! ছবিটি ওপেন করতেই গা গুলিয়ে উঠলো তার। মাথার ভেতরটা ও যেন পছন্ডভাবে ঝিমঝিম করে উঠলো !
আরশী ভেবেই পায় না, মানুষ এতোটা কিভাবে নিজে নামতে পারে! অচেনা অজানা কোন মেয়েকে হুট করে নিজের বিশেষ স্থানের ছবি দিতে কি তাদের বিবেকে একটুও বাঁধে না! একহাতে অন্যহাতকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে জোরে শ্বাস নিল আরশী। তারপর চোখবুঁজে কিছুসময় ছাঁদেই বসে রইলো!

নির্মল বাতাস ও পাখির কিচিরমিচির ধ্বনি বারবার ছুঁয়ে দিয়ে যাচ্ছে আরশীর কোমল মন। ক্লাসে এমন ঘটনা আগেও শুনেছে সে৷ হুটহাট এমন ছবি পাঠানো এ যেন আজকালকার যুগে কমন বিষয়।আর এই সমস্যার ভুক্তভোগী হয় অসংখ্য মেয়েরা। আরশী মনে করার চেষ্টা করলো তিন্নির বলা এমন ঘটনাটি। তারপর শুনেছিল সে, ব্লক করে দিতে হয় এমন আইডি গুলোকে। এমন অশ্লিল মানুষের কথার জবাব কোন উত্তর নয়, কেবল ব্লকটাই তাদের প্রাপ্য। পারলে একদম রিপোর্ট করে তারপর ব্লক।
মায়ার কথামতো এক্টিভিটি লগ চেক করলো আরশী। চেক করে হতাশ হলো সে, মায়া প্রিয়া কেউ ই নেই।আরশী মাথায় হঠাৎ অদ্ভুত জেদ চেপে গেল। সে এখনই ব্লক করবে এদের। একদম তার নাম্বার থেকেও!

আচমকা একটি নামের পাশে জ্বলে থাকা সবুজ বাতিটির দিকে তাকিয়ে থমকে গেল সে! মায়ার বলা কথাগুলো হুট করেই মনে পড়লো তার। হঠাৎ তার মনে হলো, এই ছেলেটি হয়তো হেল্প করবে তাকে! আনমনে ভাবলো সে,
“নেটে তো অনেক মানুষের সাথেই কথা হয় মানুষের। তো আমি বললে সমস্যা কোথায়! আর তাছাড়া নিজের পরিচয় না বললেই তো হলো”! এইসব ভাবতে ভাবতে সেই আইডিতে মেসেজ করে বসলো সে,
—– আস্সালামুয়ালাইকুম ভাইয়া।

প্রবল অসস্হি হচ্ছে আরশীর। কেমন অদ্ভুত অসস্হি! বারবার মনে হচ্ছে,
“ইশ আমাকে কি বাজে মেয়ে ভাবছে! ” তার এখন ইচ্ছে হলো মেসেজটি ডিলেট করে দিতে। কিন্তু সেই অপশন টাও যে তার জানা নেই!

ঘুমু ঘুমু চোখে ফোনের দিকে তাকালো ইরশাদ। এই বিকেল বেলা তাকে কেউ এসএমএস দিবে, এমন তো স্পেশাল কেউ নেই তার জিবনে! আনমনে ভাবলো সে।তারপর ফোন অন করতেই কালকের সেই মেয়েটির এসএমএস চোখে পড়লো তার। হালকা অবাক হয়ে আইডিটিতে ডুকে দেখলো সে। হু ডিলেট দিয়েছে।
তারপর চট জলদি রিপ্লাই লিখলো।

—– ওয়ালাইকুম আস্সালাম। কেমন আছেন?
—- জ্বী আলহামদুলিল্লাহ। আপনি( দেখার সাথে সাথে রিপ্লাই করলো।আরশী। মুখে প্রশান্তির হাসি ঝুলছে তার!)
—– আলহামদুলিল্লাহ।

আরশী দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে আবার এসএমএস লিখলো,
—- আসলে ভাইয়া আপনি কি আমাকে একটু হেল্প করতে পারেন? আপনি কালকে বললেন হেল্প করবেন। তাই এসএমএস দিলাম। সরি। যদি ডিস্টার্ব করি।

মুচকি হাসলো ইরশাদ। একদম পিচ্চি আনাড়ি মেয়ে মনে হচ্ছে ইরশাদের মেয়েটিকে। কালকে এমন কঠিন শব্দের এসএমএসটির জন্য বড্ড মন খারাপ লাগছে এখন তার।মনে মনে ভাবলো ইরশাদ,
” যদি আমার কোন ছোট বোন থাকতো। হয়তো এতটুকুই হতো”
সে রিপ্লাই দিল,
—- হুম, বল কি হেল্প লাগবে। যদিও তুমি তোমার কালকের পোস্ট ডিলেট দিয়েছো।
—- আপনি খেয়াল করেছেন!
—– হুম।আর সরি, কালকে হয়তো অনেক খারাপ ভাবে বললাম তোমাকে

আরশীর বড্ড ভালো লাগছে অচেনা এই মানুষটির সাথে কথা বলে। মনে মনে ভাবলো সে,
” কতো বিনয়ী তিনি! আর আমি কতো খারাপ ভাবলাম তাকে!” তার যেন লোকটির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হুট করেই বেড়ে গেল! সে আবার লিখলো,

—– সমস্যা নেই ভাইয়া।আসলে ভাইয়া, আইডি ব্লক কিভাবে করে, আর ফোনের নাম্বার ব্লক?
—– ওয়েট দিচ্ছি।

ইরশাদ পুরো প্রসেসের স্কিনসট তুলে পাঠালো আরশীকে।কিন্তু আরশী তার কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না! বড্ড ইতস্তত হচ্ছে এখন আরশীর।
কিছু বুঝে নি বললে হয়তো তাকে বেকুব মনে করবে লোকটি” মনে মনে ভাবতে লাগলো সে। তারপর আবার বাকি বিষয়গুলো দেখতে লাগলো৷ তখন আবার মেসেজ করলো ইরশাদ

—– তোমার ফোনটি কি বাটনের?
—- হু। জ্বী
—- ওহ।তাহলে তো এই প্রসেসে হবে না তোমার ফোনে। তুমি না পারলে বলবে তো। ওয়েট আমি তোমাকে বাটন ফোনের বিষয়টা বলছি।

আরশীর যেন আজ পুলকিত হওয়ার দিন৷ খুব কম মানুষের সাথে মেশার স্বাধীনতা আছে আরশীর। সবার সাথে মিশতে দেয় না তার বাবা মা। বন্ধুবান্ধব ও তারাই ঠিক করে দেয়। বিশেষ করে যারা ভালো স্টুডেন্ট তাদের সাথেই সবসময় মিশতে বলেন তারা তাকে।
যদিও এই বিষয়টি বেশীরভাব মা-বাবায় মনে করেন। কিন্তু তারা এইটা বুঝতে চান না মাঝে মাঝে খারাপ স্টুডেন্টের সাথেও মিশতে হয়। কারন যে স্টুডেন্টটি পড়াশোনায় খারাপ সে মনের দিক দিয়ে চমৎকার ব্যাক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে। হতে পারে সে অন্য গুনের অধিকারী।কিন্তু একজন পড়ুয়া শিক্ষার্থী যে সবসময় ভালোই হবে তার কিন্তু কোন নিশ্চয়তা নেই।

মায়ের রুম থেকে পা টিপে টিপে মায়ের ফোনটি নিয়ে আবার ফিরে আসে ইরশাদ। তারপর ঐ ফোনে নিজের আইডি ওপেন করে দেখতে থাকে সবকিছু। অন্যদিকে আরশী ওয়েট করতে করতে যেন ক্লান্ত। সে মেসেজ করে,

—- ভাইয়া, হলো?
— আপু আর পাঁচ মিনিট। প্লিজ।

আরশীর এবার লজ্জা লাগছে যেন। মানুষটি কতো আপনের মতো করে বলল কথাটি! মনে মনে ভাবলো সে।ঠিক তখন তখনই ইরশাদ মেসেজে সব প্রসেসিং লিখে পাঠিয়ে দিল।তার কাছে। নাম্বার ব্লক করলেও আইডি ব্লক করার অপশন মোটেও খুজে পাচ্ছে না আরশী। এবার হতাশ হয়ে আবার লিখলো সে,
—- ভাইয়া, আইডির টা হচ্ছে না।
—- আর একটু দেখ৷ হয়তো পারবে।
—- আপনি করে দেন না। আমার দ্বারা তো আর হচ্ছে না
—- আমি কিভাবে করবো!
—- আমার আইডি পাসওয়ার্ড নিয়ে।
—- কিহ্! একজনের পাসওয়ার্ড অন্যজনকে দেয় না।
অবাক হয়ে লিখলো ইরশাদ ।
—– কেন? আমার বান্ধবী তিন্নি তো তার বয়ফ্রেন্ড কে দিয়েছে।

এবার বড্ড হাসি পেল ইরশাদের। খিলখিলিয়ে হেঁসে দিল সে৷ চিকন চিকন দাঁত গুলো মুক্তোর দানার মতো যেন ছড়িয়ে পড়লো সাথে সাথে। ঠোঁটের কোনে দুষ্ট হাসিও দেখা মিলল তার। সে লিখলো,
—– তো আমি কি তোমার বয়ফ্রেন্ড?

দাঁতে জিহ্বা কেটে চোখ বুঝলো আরশী৷ বড্ড লজ্জা হচ্ছে এখন তার৷। মনে হচ্ছে মানুষটি যেন সামনেই আছে!তার কথার বিপরীতে কি বলবে এ যেন এখন চিন্তার বিষয়!

চলবে

(আশা করি আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য জানাবেন। আপনাদের মন্তব্য অনুপ্রেরণিত করে আমাকে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here