গল্প :- বড্ড ভালোবাসি♥
পর্ব :- ৩৭
লেখিকা :- Labiba Islam Roja
:
:
:
ছাদের রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমি।আজ মনটা খুব একটা ভালো না আবার খারাপও না।আমার মন বর্তমানে ঠিক কোন অবস্থায় আছে নিজেও জানিনা।আজকে চাঁদটাকেও দেখা যাচ্ছে না।কালো মেঘে ডেকে দিয়েছে।আমার মনের সাথে সাথে আকাশেও মেঘ জমেছে।একমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে এসব ভেবে চলেছি তখন ভাইয়া এসে পেছন থেকে ডাক দিলেন….
.
পরী তুই এখানে আর আমি তোকে পুরো বাড়ী খু্ঁজে বেড়াচ্ছি।কি হয়েছে মন খারাপ।
.
না ভাইয়া ভালো লাগছিলো না তাই এখানে এসেছি।দেখো না আজ চাঁদটাকেও দেখা যাচ্ছে না।(ঠোঁট উল্টিয়ে)
.
হুম তাই তো দেখছি।আসলে চাঁদ ও জানে আজ পরীর মন খারাপ তাই মেঘকে বলেছে তাকে ঢেকে দিতে।
.
ভাইয়ার কথায় মৃদু হাসলাম আমি।ভাইয়া তুমি যে কি বলনা।
.
ঠিকই তো বলি এই নে তোর চকলেট।আর শোন তোর ভাবিকে কিন্তু দেখাবি না যেই পেটুক মেয়ে দেখলেই খপ করে নিয়ে খেয়ে ফেলবে।
.
ভাইয়ার কথায় আমি হাসতে হাসতে শেষ।ভাইয়া কি করে যে এসব আজগুবি কথা বলে কে জানে।।তখনই পেছন থেকে ভাবি বলে উঠলো….
.
ভাই বোন মিলে আমার নামে কি এত কথা হচ্ছে।কি করেছি আমি হুম(মুখ কালো করে)
.
ভাবিকে দেখে ভাইয়া ফিসফিস করে আবারও বলল পরী চকলেট লুকা তাড়াতাড়ি নাহলে আজ আর চকলেট খেতে পারবিনা।আমি ভাইয়ার কথা শুনে খিল খিল করে হেসে উঠলাম সাথে ভাইয়াও আর ভাবি বোকার মতো আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।ভাবি আবারও বলল কি হলো তোমরা হাসছো কেন?
.
আসলে ভাবি ভাইয়া বলছিলো বলতেই ভাইয়া আমার মুখ চেপে ধরলো আর বলল….কই কিছু না তো।
.
আমি মুখ থেকে ভাইয়ার হাত সরিয়ে আবারও বললাম…না ভাবি আমরা তোমার নামে কেন কিছু বলতে যাবো।আমরা তো তিশার ব্যাপারে কথা বলছিলাম।ও না খুব পেটুক মেয়ে আমার হাতে চকলেট দেখলেই ওকে খেতে হবে।এই যে দেখ (চকলেট দেখিয়ে)ভাইয়া আমাকে দিয়েছে এখন যদি তিশা থাকতো সেই কবেই আমার হাত থেকে নিয়ে হাপিস করে দিতো।
.
আমার কথায় মুচকি হাসলেন ভাবি।রোজ তোমার মন ভালো হয়েছে।
.
আমার মন খারাপ ছিলো কবে?আমার মন তো ভালোই ছিলো।
.
হুম ভালো।আচ্ছা ছাড়ো তোমাকে আর চকলেট লুকাতে হবে না আমি তিশার মতো নই।কারণ আমি চকলেট খাই না।আমার ভালো লাগে না।যদি খেতাম তাহলে তিশার মতো আমিও খেয়ে নিতাম বলে হাসতে লাগলেন।
.
ভাবির কথা শুনে আমি ভাইয়ার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।ভাইয়া তুমি আমাকে মিথ্যা কেন বললে?
.
তোর মুখের এই হাসিটা দেখার জন্য।আমি কবে থেকেই জানি রাহা চকলেট খায় না।আর রাহাই বললো তোর মুড অফ তাই এসব বললাম।
.
বাহ বাহ আমার ভাইয়াও আমার হাসি দেখার জন্য এমন করলো।কথাটা জানলে ভাবির নিশ্চয় খারাপ লাগবে।
.
ভাবিঃনা লাগবে না।তুমি শুধু রাহাতের বোন নও।আমি তোমাকে ননদ নয় নিজের বোন মনে করি।তাই তোমার মুখে হাসি দেখার জন্য এতটুকু আমি সহ্য করতেই পারি।অনেক হয়েছে এবার চলো সবাই মিলে ডিনার করবো।
.
.
খেয়েই বিছানায় এসে গা এলিয়ে দিয়েছি আর রিহানের কথা ভাবছি। সকালের পর থেকে উনার সাথে কথাও হয়নি।উনিও কল করেননি আর আমিও সময় পাইনি।আচ্ছা উনি ঠিক আছেন তো একটা কল করবো।না হয়তো বিজি আছেন তাই বিষন্ন মনে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালাম।
.
.
.
রাত দুইটা হঠাৎ করেই আমার ঘুমটা টুস করে ভেঙে গেলো।মনের মধ্যে কেমন একটা অস্বস্তি কাজ করছে।চোখের সামনে শুধু সকালের ঘটনাটা ভাসছে।উনি ঠিক আছেন তো।অজানা আঙ্কায় ঘিরে ধরেছে আমায়।এখন কি জেগে আছেন। কল দিলে উনি তুলবেন তো।না তবুও একবার ট্রাই করতে তো মানা নেই।যেই ভাবা সেই কাজ।কয়েকবার রিং হওয়ার পরই আমাকে অবাক করে ফোনের ওপাশ থেকে বলে উঠলেন উনি…..
.
এই ঘুম কুমারী তুমি এখনও ঘুমাওনি।এত রাত পর্যন্ত জেগে আছো কেন?শরীর খারাপ করবে তো।
.
উনার কথায় পাওা না দিয়ে বললাম…. আপনি ঠিক আছেন?আর কোনো সমস্যা হয়নি তো।
.
আমার কথায় হাসলেন উনি এত চিন্তা করছো কেন ঘুম কুমারী আমি একদম ঠিক আছি।আর কোনো সমস্যা হয়নি।এত রাত হয়েছে আর তুমি না ঘুমিয়ে এই সিম্পল একটা বিষয় নিয়ে এত চিন্তা করছো….
.
এটাকে সিম্পল বলছেন আপনি। না ঘুমিয়ে পরেছিলাম কিন্তু হঠাৎ ঘুমটা ভেঙে গেলো।আর….
.
আর কি হুম
.
আর শুধু আপনার কথা মনে পরছিলো।আর কথা বলতে ইচ্ছে করছিলো আরো অনেক কিছু যেগুলো আপনাকে এখন বলা যাবে না সিক্রেট।
.
ওরে বাবা সিক্রেটও আছে।আমাকে নিয়ে কি কি করতে ইচ্ছা করছিলো সেটা আমার কাছেই সিক্রেট থাকবে এটা মানতে পারছি না।
.
সে আপনি নাই মানতে পারেন তবুও আমি বলবো না।
.
ওকে তুমি নাই বলতে পারো বাট আমি জানি কি বলবো…
.
চুপ একদম চুপ আপনাকে কিচ্ছু বলতে হবে না।আপনি এত রাতে না ঘুমিয়ে কি করছেন সেটা বলুন।
.
আমি একটু আগে অফিস থেকে ফিরেছি। ফ্রেশ হয়ে একটা পিচ্চির ছবি দেখে কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
.
আপনি এখন অফিস থেকে ফিরেছেন?কেন এত রাত পর্যন্ত অফিস করে কালকে ভার্সিটি যাবেন কি করে?
.
এ নিয়ে তুমি ভেবো না এখন ঘুমিয়ে পরো। নেক্সট উইক থেকে আমার ফাইনাল এক্সাম শুরু হবে।আর কোনো কথা না বলেলে চুপ করে ঘুমিয়ে পরো গুড নাইট ঘুম কুমারী টুট টুট টুট…..
.
এটা কি হলো আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কল কেটে দিলেন আশ্চর্য।
.
.
চলবে………….