ভুল করে একবার বল না তুই আমার পর্ব ৬

💞ভুল করে একবার, বল না তুই আমার💞
Part-07
Writer _ Raidah _ Islam_ Nova

একটা ছেলে বাইকে থাকা ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলো— এটাকে কি করবো?

বাইকে থাকা ছেলেটি বাইক থেকে নেমে হেলমেট খুলতে খুলতে বলল —
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করে রেখে আয়।

হেলমেট খুলে ছেলেটি রিয়ানের সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসলো।রিয়ান সেন্সলেস হয়ে রাস্তায় পরে আছে।

ছেলেটিঃ খুব সাহস তোর, তাই না।আমার কলিজার টুকরার ওরনা ধরে টান দিছিস।দেখ, এখন তোর কি অবস্থা করলাম।অন্য মেয়ের ওরনা ধরাতো দূরেই থাক। নিজের বউয়ের ওরনাও ধরতে পারবি না।আবার নিজে গিয়ে প্রিন্সিপালের কাছে বিচার দিছিস।অবাক হতে হয় তোর সাহস দেখে। ( সাথের ছেলেগুলো কে উদ্দেশ্য করে) নে এবার এটাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে আয়।

সাথের ২/৩ টি ছেলে রিয়ান কে নিয়ে চলে গেলো। অন্য একটি ছেলে বাইকে থাকা ঐ ছেলেটিকে বলল…. এমনটা না করলেও পারতি, মেহের।

মেহেরঃ না করলেও পারতাম।কি বলছিস তোরা? আমার কলিজার টুকরা বোনের দিকে কেউ বাজে নজরে তাকালে আমি তার চোখ উপরে ফেলি,আর ও আমার বোনের ওরনা ধরে টান দিছে।ওকে আমি ছেড়ে দিবো।তোরা আমার ফ্রেন্ড হয়ে ভাবলি কি করে এটা।আর আজকে এটা নতুন নয়।এর আগেও অনেক গুলোকে সারা জীবনের জন্য পংগু করেছি আমি।ও আমার বোনের ওরনা ধরছে তাই আমি ওর দুই হাতই নাই করে দিলাম।হয় হাত দুটোকে কেটে ফেলতে হবে নইলে সারা জীবনের জন্য অবশ হয়ে যাবে।( রেগে)

বাইকে থাকা ছেলেটি আর কেউ নয় মেহের।মেহের আর মেহেকের মধ্যে মিল না থাকলেও মেহের ওর বোনকে নিজের জীবনের চাইতে বেশি ভালবাসে। ওদের ভাই – বোনের ভালবাসাটা ঝগড়া, খুনসুটি,মারামারির মধ্যেই আছে।যা দুই ভাই – বোনের কেউই কাউকে বুঝতে দেয় না।কিন্তু দুজন দুজনকে ভীষন ভালবাসে।আগের কলেজে থাকতেও মেহেক কে অনেকে ডিস্টার্ব করতো।তাদের সবাইকে মেহের
সারা জীবনের জন্য পংগু করেছে।কিন্তু এসবের কিছুই মেহেক জানে না।শান্ত শিষ্ট,নম্র,ভদ্র ছেলেটা মেহেকের সাথে কেউ বাজে ব্যবহার করলেই হিংস্র হয়ে উঠে।ও আজ পর্যন্ত ওর বোনের গায়ে কোনো আঁচড় লাগতে দেয়নি। মেহেরের একটাই কথা যে ওর বোনের দিকে বাজে নজরে তাকালো,সে নিজের সর্বনাশ ডেকে আনলো।

(কি, কেমন দিলাম ঝাটকাটা?😁 যারা বলেছিলেন সান/ অজানা বাইকে ছিলো তাদের জন্য মেহেরের এই রূপটাতো যাস্ট ট্রেইলার দিলাম।পিকচার আভি বাকি হে ইয়ার।বোনের জন্য একজন ভাই কি কি করতে পারে? তা দেখবেন এই গল্পে। তবে আরো পরে।)

London…..

টি- টেবিলে ল্যাপটপ রেখে সোফায় বসে কাজ করছে অজানা ছেলেটি।মাঝে মাঝে কফির মগে চুমুক দিচ্ছে।হঠাৎ ফোন হাতে নিয়ে জিদানকে কল করলো।

অজানাঃ কি খবর, জিদান?

জিদানঃ ভালো না বস।

অজানাঃ কেনো? কি হয়ছে?

জিদান অজানাকে দুই দিনের সব ঘটনা খুলে বললো।পুরো ঘটনা শুনে ছেলেটির রাগে চোখ দুটো লাল হয়ে গেলো।
অজানাঃ What is this? তোমরা থাকতে এসব কি করে হলো? ঐ ছেলেটার এত বড় সাহস আমার হিরের ওড়না ধরে টান দিছে। ওকে উপরে পাঠিয়ে দেও।

জিদানঃ বস,কারা যেন ওকে মেরে হসপিটালে ভর্তি করে রেখে আসছে।

অজানাঃ হোয়াট? কারা?( ভ্রু কুচঁকে)

জিদানঃ জানি না বস।মনে হয় সানজাদ।

অজানাঃ সানজাদ।( অবাক হয়ে)

জিদানঃ হতে পারে বস।আমি সঠিক জানি না।

অজানা কথা ঘুরালো।

অজানাঃ বাই দ্যা ওয়ে ঐ সানজাদের সাহস কি করে হয় আমার জান পাখির গালে চর মারার।ওকে তো এর জন্য অনেক বড় মাশুল দিতে হবে।তোমরা সানজাদকে—-

জিদানঃ সরি বস,আমি পারবো না।

অজানাঃ হোয়াট? তোমরা আমার লোক হয়ে সামান্য সানজাদকে ভয় পাও।( রেগে)

জিদানঃ মাফ করবেন বস।সানজাদকে আমরা শুধু ভয় নয় অনেক ভয় পাই।ওকে সামান্য বলে ভুল করবেন না।ও কোনো সামান্য ছেলে না।দেখতে খুব শান্ত,নম্র,ভদ্র মনে হলেও রেগে গেলে কি কি করতে পারে তা আপনার ধারণারও বাইরে।আপনার থেকে দুই ডবল উপরে সানজাদ।একবার রেগে গেলে বাঘের চেয়েও বেশি হিংস্র হয়ে যায়।তখন ওকে কেউ আটকাতে পারে না।

অজানাঃ তোমরা, তোমরা একটাও কাজের না।তোমাদের কি আমি সানজাদের গুনগান গাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে রেখেছি। কল কাটো,জলদি কল কাটো।এবার বোধহয় এই সানজাদের জন্য আমাকে দেশে আসতেই হবে।(রেগে+ চিৎকার করে)

জিদান ফোন কাটাতেই অজানা সামনে থাকা
টি- টেবিলটা জোড়ে লাথি মারলো।কাচের টেবিলটা ভেংগে চুরমার হয়ে গেলো। কাচের টুকরো গুলো মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে।

অজানাঃ না,অনেক সহ্য করেছি এই সানজাদকে,আর নয়।ওর একটা ব্যবস্থা করতেই হবে।আমি বাংলাদেশে আসছি সানজাদ।তুই শুধু আরেকটু অপেক্ষা কর।
( রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে)

পরের দিন……

আজ মেহেক কিছুতেই কলেজে আসতে চায়নি।গত কালের ঘটনায় সারাদিন মন খারাপ ছিলো। বর্তমানে প্রিন্সিপালের রুমে বসে আছে। প্রিন্সিপাল ওকে ডেকেছে। রোমে প্রিন্সিপাল সহ সানের দলের সবাই আছে।

প্রিন্সিপালঃসরি,মেহেক।আসলে কালকের ঘটনার জন্য আমরা সবাই তোমার কাছে মাফ চাইছি।তোমার কথা আমাদের শোনা উচিত ছিল।

মেহেক কোনো কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।

প্রিন্সিপালঃ তুমি কি জানো,কালকে ছেলেটি মানে রিয়ানকে কে বা কারা হাতের উপর দিয়ে বাইক উঠিয়ে দিয়েছে। ওর দুটো হাতই কেটে ফেলতে হয়েছে।

মেহেকঃ কি সত্যি? (খুশি হয়ে)

প্রিন্সিপালঃ হুম।

কথাটা শুনেই রুমে সবার সামনে মেহেক পাগলু ডান্স করছে।সবাই হা করে ওর নাচ দেখছে। দেখে মনে হচ্ছে অনেক খুশি হয়েছে।

সাদঃ কি রে ভাই তোর মেহেক কি পাগল হয়ে গেলো নাকি।

রিকঃ সান ও এভাবে নাচছে কেন?

সানঃ সেটা ওকে জিজ্ঞাসা কর।

প্রিন্সিপালঃ মেহেক তুমি কি ঐ কাজটা করেছো?

মেহেকঃ কোন কাজ স্যার? ( নাচতে নাচতে)

প্রিন্সিপালঃ ওকে হসপিটালের ভর্তি তুমি করেছো?

মেহেকঃ না স্যার, আমি কিছুই করিনি।কে করেছে তাও জানি না। কিন্তু যেই করুক তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।আমার যে কি খুশি লাগছে।

নাচতে নাচতে বের হয়ে গেলো মেহেক।ওর যাওয়ার দিকে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে।

সাদঃ ভাই, তুই কিছু করিস নি তো।

সানঃ না।

সাদঃ তাহলে বিকালে যে বের হয়ে গেলি।কোথায় গিয়েছিলি?

সানঃ ঐ ছেলেটাকে মারতেই গিয়েছিলাম।কিন্তু গিয়ে দেখি আমার আগেই কেউ ওকে মেরে হসপিটালে ভর্তি করেছে।

সাদঃ কে করছে ভাই?

সানঃ মেহের।

সাদঃ কি ই-ই-ই মেহের ভাই এসব করছে? ( অবাক হয়ে)

সানঃ জি,হ্যাঁ।

সাদঃ আমি তো মনে করতাম মেহেরের মতো ভদ্র ছেলে এই দুনিয়ায় নাই।

সানঃ সত্যি নাই। কিন্তু মেহেককে কেউ কিছু বললে বা করলে তাকে মেহের ছাড় দেয় না। ওর বোন ওর কলিজার টুকরা।

সাদঃ বা-প-রে। যেমন বোন তেমন ভাই। ( ভয় পেয়ে)

সানঃ সরতো সামনে থেকে। আমার মেহেককে সরি বলতে হবে।কালকে পুরো ঘটনা না জেনেই রিয়েকশন করে ফেলেছি।

সান চলে গেল মেহেককে খুজঁতে।

সাদিকঃ কাল কি হয়ছিলো?

সাদঃ শুনতেই তো পেলি।

সাইমনঃ কে করেছে এসব?

সাদঃ সেটা তোদের না জানলেও চলবে।

রেহানঃ রিয়ান-মেহেকের সাথে কি করছিলো রে?

রিকঃ ওড়না ধরে টান দিছিলো।

সাদঃ যার কারণে ওর দুইটা হাতই নাই হইয়া গেছে।

রিকঃ খবরদার ঐ মেয়ের সাথে কেউ লাগতে যাইস না কিন্তু।

মেহেক নাচতে নাচতে ওর রংধনু গ্রুপের সামনে গেল।

শাবাবঃ কি মাম্মা পাগল হইয়া গেলা নাকি?

নূরিঃ এমনে নাচতাছত কে হির?

কায়সারঃ কি হয়ছে, এতো খুশি কেন? কিছু বলবি তো।

মেহেক সবাইকে পুরো ঘটনা খুলে বললো।

আফজাঃ কে করছে এসব?

মেহেকঃ আমি জানি না।

ববিঃ এর জন্য এমন কইরা নাচতাছত।আমরা তো ভাবলাম কি না কি হয়ছে।

মেহেকঃ আমার যে কি খুশি লাগতাছে।

কায়সারঃ সেই খুশিতে একটা….

মেহেকঃ খবরদার পরের শব্দটা ভুলেও উচ্চারণ করিস না।নইলে তোরেও ঐ ছেলেটার পাশের সীটে ভর্তি কইরা রাখমু।

কায়সারঃ 🤬🤬

কায়সার, মেহেকের হুমকিতে ট্রিট শব্দটা ও উচ্চারণ করতে পারলো না।ও ভালো করেই জানে মেহেক যা বলে তাই করে।

শাবাবঃ দোস্ত,ঐটা আমাদের ক্লাসের নিলি আর আবির না।

নূরিঃ হুম। কি হয়ছে?

শাবাবঃ ওরা ঐ জায়গায় কি করে? ( অবাক হয়ে)

ববিঃ প্রেম করতাছে।

রাইমঃ সবাই প্রেম করে খালি আমিই পারি না।

নুরিঃ তোর কি শখ হইছে?

রাইমঃ হুম। ☺

আফজাঃ দাঁড়া মাইয়া খুঁজতাছি।

রাইমঃ তোরা তো মাইয়া খুঁজবি না।আমারে বাঁশ দেওনের মানুষ খুঁজবি।

মেহেক চারদিকে তাকাতে লাগলো। হঠাৎ একটা ৭০/৮০ কেজি ওজনের একটা মোটা মেয়ে দেখতে পেলো। মেয়েটা যেমন মোটা তেমন কালো।

মেহেকঃ দোস্ত, পাইছি।

সবাইঃ কি -ই-ই-ই?🙄

মেহেকঃ রাইমের girl friend

ববিঃ কই?

মেহেকঃ ঐ যে দেখ সেই লেভেলের মিনি হাতি।

কায়সারঃ রুপে,গুণে টয়টুম্বুর।

রাইমঃ না,জীবনেও না।দরকার পরলে সারা জীবন চিরকুমার থাকমু।তাও ঐ মিনি হাতি বিয়া করমু না।

শাবাবঃ চল, তোর GF এর লগে কথা কইয়া আসি।

রাইমঃ মইরা গেলে ও যামু না। হাতিরে খাওনের খরচ আমার নাই।

আফজাঃ আরে যা ভাবির সাথে কথা কইয়া আয়। সরম পাস কে আমরা আমরাইতো।

রাইমঃ আমি যামু না।

নূরিঃ মাইয়া খুজতে কইছত কে? এখন তোর যাইতেই হইবো।

কায়সারঃ প্রেম করে চাস আর girl friend এর সামনে যাবি না।তা কি হয়।

মেহেকঃ যাবি কি না ক।নইলে ঐ মিনি হাতিরে ধাক্কা দিয়া তোর উপরে ফালায় দিমু।

রাইমঃ না, আমি গাইল্লা যামু।😭

শাবাবঃ জীবনে আর প্রেম করতে চাই বি।

রাইমঃ না আমার শখ মিইট্টা গেছে।

সবাইঃ 😂

কিছুক্ষন পর সান আর তার দল ওদের সামনে এসে দাঁড়ালো।সানকে দেখে…..

4 COMMENTS

  1. Just osm 💗✉✉💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉✉
    💗💗💗💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉💗💗✉✉💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉✉
    💗💗💗💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉💗
    💗✉✉💗✉✉💗

  2. Apu tmr golpota asolei darun hoyeche . Amr socheye besi Valo legeche Vai boner dusto misti khunsutigulo sottikarer bonding gula arokome hoi Ami kipta noi tai ata bollam kintu aktu kiptami kore bolle
    Super se vi uper meye yaar 💗💗💗💗
    Just osm love it ❤️❤️❤️❤️
    Next part ato taratari chai na cause sobure meoya folee☺️☺️☺️☺️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here