#মনের_গভীরে_তুমি❤
#পর্ব_০৬
#M_Marufa_Yasmin
আরাভ ছুটে গিয়ে বাড়িতে ঢুকে।দুজন কে দৌড়ে আসতে দেখে।ইশরা বড়ো বড়ো চোখ করে কোমরে হাত দিয়ে বলল …..
—“তোরা আবার শুরু করেছিস?এই রকম বাচ্চামো করলে তোদের সংসার করা আর হবে না।কদিন পর দুজনে বাচ্চার মা বাবা হবে আর এনাদের কে দেখো বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করছে উফফ এদের নিয়ে হয়েছে আমার যত জ্বালা।
দরজায় দাঁড়িয়ে ইমরান চৌধুরী হাসতে হাসতে বললেন …
—“কাদের নিয়ে তোর আবার জ্বালা শুরু হলো?
—“দেখো না বাবা তোমার ছেলে আর বউমা সব সময়ই বাচ্চাদের মতো লেগে থাকে একে অপরের সাথে।
ইশরার কথা শুনে ইমরান চৌধুরী হাসতে লাগলেন।
আরাভ মা চুলকে ওপরে চলে গেলো। সন্ধ্যা সাতটা বাজে। ইশরা আর টিপ টিভিতে সিনেমা দেখছে।
আরাভ সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখলো ইশরা আর টিপ কিছু খাচ্ছে আর টিভি দেখছে।ব্যাস ওর বদমায়েশি শুরু হয়ে গেলো।ওদের কাছে গিয়ে সোফায় বসে টিপের দিকে বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে বলল …
—“এই টিপ তুমি কাঁদছো কেনো?
টিপ চোখের পানি মুছে বলল …
—” সিনেমার নায়িকা টা মরে গেলো।
—“সানাম তেরি কাসাম বাবা কি সিনেমা ।হাহাহাহাহা সিনেমা দেখে কান্না হাহাহা ও মাগো ট্রু লাভ।
টিপ রেগে গিয়ে বলল ..
—” আপনি একটা লাল বান্দর। সব সময়ই মজা এইসব কি কথা হ্যা ।
আরাভ হাসতে লাগে আবার।
ইশরা রেগে বলল
—“তোদের জন্য আমি শান্তিতে একটু সিনেমা ও দেখতে পাবো না নাকি বলতো। সব সময়ই ঝগড়া।
ডাকবো বাবা কে?
দুজনেই জোরে চেঁচিয়ে ওঠে “নাহহহহহ”
ইশরা ভুরু কুঁচকে বলল
—“তাহলে চুপ করে সিনেমা দেখ।
দুজনেই বলল” ওকে”
সিনেমা দেখে
রাত এগারোটায খাওয়া দাওয়া শেষ করে টিপ আরাভ রুমে আসে।।।
In dubai ………….
একজন হ্যান্ডসাম ছেলে বসে আছে একটা বড়ো চেয়ারে।ফর্সা,চাপ দাড়ি, চুল গুলো হাওয়ায় উড়ে বারবার চোখে পরছে ,কোট প্যান্ট পরে আছে ।পাশে অনেক গুলো গুণ্ডা টাইপের লোক দাঁড়িয়ে আছে বন্ধুক নিয়ে।আর ছেলেটার পায়ের নিচে মাথা নিচু করে হাত জোর করে বসে আছে একজন ছেলে
—“আমাকে প্লিজ ছেড়ে দিন আমি আর কোনোদিন আপনার বোনের দিকে নজর দেবো না।
বিশ্বাস করুন।
ছেলেটা বন্ধুকটাকে ছেলেটার মাথায় রেখে বলল …
—“আমি কাওকে ক্ষমা করি না আমার বোনের দিকে যে তাকাবে তাকে তো মরতেই হবে।
বলেই লোকটার মাথায় গুলি চালিয়ে দিল।লোকটা ছটফট করতে করতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে গেল।পাশে থাকা গুণ্ডা টাইপের লোক গলো এসে লোকটাকে তুলে নিয়ে চলে যায়।
ছেলেটা ফোন নিয়ে ফেসবুক করতে লাগে হঠাত একটা ছবি দেখে সে থমকে গেল।আর হা করে তাকিয়ে আছে।এটা suggestions এ এসেছে সব যাচাই করার জন্য টাইম লাইন এ ঢুকলো।দেখলো আইডিটা public করা আছে।টাইম লাইন ঘুরে দেখতে লাগল ঠিকানা টা দেখলো India, West bengol, kolkata
আইডিটা আর কারো না টিপ এর। টিপের অনেক গুলো ছবি সে ফোনে সেভ করে নিলো ।আর মনে মনে বলল…
—“এই প্রথম কোন মেয়েকে দেখে কেমন জেনো লাগছে।এই মেয়েটা এত সুন্দর কি করে ।এখানে এর থেকেও কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আমার পেছনে পরে থাকে ।আর এই মেয়েটাকে দেখা মাত্র আমার বুকটা কেমন করতে লাগল ।নাম টাও খুব সুন্দর “টিপ” আমার টিপ আচ্ছা মেয়েটাকে একটা ম্যাসেজ করি না থাক।আর্য এর বাড়ি তো কলকাতা তাহলে ওর সাথে আমি কোলকাতা যাবো আর আমার এই টিপের সাথে দেখা করবো।
,,,,,,,,,,,,,
In India. …….
টিপ সোফায় ঘুমিয়ে আছে চাঁদের আলো এসে টিপের মুখে পড়ছে। আরাভ বিছানায় শুয়ে আছে।
আরাভ পানি খাওয়ার জন্য উঠে টেবিল থেকে পানির বোতলটা নিয়ে পানি খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে নেয় ওমনি টিপের দিকে চোখ পরে।ঠান্ডায় কাঁপছে টিপ।আরাভ আসতে আসতে পা ফেলে টিপের কাছে যায়।গায়ে হাত দিয়ে দেখে জোরে গা পুরে যাচ্ছে।আরাভ অবাক হয়ে যায়।জোর দেখে।তাড়াতাড়ি করে টিপকে কোলে তুলে বিছানায় শুয়ে দেয়। তারপর আলমারি থেকে একটা কম্বল বের করে টিপের গায়ে দেয়।
—“এত জোর উফফ আজ বৃষ্টিতে ভিজেছে ওই জন্যই। এখন কি করবো? মা বাবা কে ডাকা ঠিক হবে না ।বরং ডাক্তার কে ফোন করি।
আরাভ টেবিল থেকে ফোন নিয়ে।ডাক্তার কে ফোন করে।অনেকক্ষন পরে ডাক্তার ফোন তুলে ।
—“হ্যালো হ্যালো ডাক্তার সেন ।
—“হ্যা বলো আরাভ এত রাতে ফোন করেছ?
Any problems কারো কিছু হয়েছে নাকি?
—“হ্যা ডাক্তার আমার wife এর প্রচন্ড জোর প্লিজ আপনি যদি একবার আসতেন অনেক বড়ো উপকার হতো।
—“ওকে আমি আসছি ।
কিছুক্ষন পর ডাক্তার আসে।টিপ এর চিকিৎসা করে কিছু ওষুধ দেয়।
—“এই ওষুধ গুলো খাওয়ালে সকালের মধ্যে জোর সেরে যাবে ।
—“thank you doctor ।
আরাভ ডাক্তার কে বাড়ির বাইরে পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসে। রুমে এসে দরজাটা লাগিয়ে টিপের পাশে এসে বসে ।মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।তারপর টিপ কে উঠিয়ে।ওষুধ খাইয়ে আবার শুয়ে দেয়।কপালে জল পট্টি দিতে থাকে বারবার।
সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে টিপ দেখে আরাভ ওর পায়ের নিচে মাথা করে বসে ঘুমিয়ে আছে।টিপ উঠে আরাভ এর পাশে বসে।তখনই আরাভ এর ঘুম ভেঙে যায়।সামনে টিপকে দেখে বলল ..
—“তুমি উঠে গেছো? শরীর কেমন আছে এখন জোর নাই তো ।
টিপের কপালে হাত দিয়ে দেখলো জোর আছে কি না।টিপ মুচকি হেসে বলল …
—“ঠিক আছে।আপনি উঠুন ফ্রেশ হয়ে আসুন।
—“হুম ।
আরাভ ফ্রেশ হতে যায় ।
ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে টিপ খুব চিন্তিত হয়ে কাকে জেনো ফোন করছে আরাভ মাথা মুছতে মুছতে টিপের কাছে গিয়ে বলল
—“টিপ! Any problems? এত চিন্তিত দেখাচ্ছে কেনো?
—“আসলে আবির কে সকাল থেকে ফোন করছি কিন্তু ওর ফোন অফ আসছে।খুব চিন্তা হচ্ছে।
—“তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো আমি দেখছি।
—“ওকে ।
টিপ ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে দেখে আরাভ রুমে নেয়।টিপ নিচে যায়।দেখে আরাভ ইশরার সাথে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে টিপ গিয়ে বলল ..
—“বলছি আবীরের কোনো খবর পেলেন?
—” তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
—“কিহহ?
—“wait কই ভেতরে এসো ।
আবির ভেতরে আসে।টিপ আবির খেলা দেখে দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরে।আর কাঁদে দেয়।
—“ফোন কেনো অফ তোর জানিস আমার কত চিন্তা হচ্ছিল ।
—“কি করবো হসপিটালে ছিলাম তো।দাদা তোকে বলেনি ।
টিপ অবাক হয়ে বলল …
—“হসপিটালে ?
আরাভ মুচকি হেসে বলল …
—“অপারেশনের এর জন্য ।
টিপ কেঁদে দিয়ে আবিরের দুই গালে হাত দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বলল..
—“তুই ঠিক হয়ে গেছিস ।
—“হ্যা দিদি ।
আরাভ বলল
—“আসলে তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম ওর যে কিডনি টা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো।সেটার বাদ দিয়ে নতুন কিডনি দাওয়া হয়েছে। একজন বৃদ্ধ মারা যাওয়ার সময়ে ওনার কিডনিটা আবির কে দিয়ে গিয়েছেন ।আচ্ছা ও সব থাক এখন শোনো টিপ ওর এখন কদিন ভালো করে খেয়াল রাখো আজ থেকে ও আমাদের বাড়িতে থাকবে।
এতক্ষন ইশরা রান্নাঘরে ছিল বাইরে এসে আবির কে দেখে চমকে গেলো ।
—“তুমি?
আবির বলল
—“তুমি মানে এটা তোমার বাড়ি?
টিপ আর আরাভ একবার একে অপরের দিকে তাকিয়ে আবার ওদের দুজনের দিকে তাকালো দিয়ে বলল
—“তোরা একে অপর কে চিনিস?
—“হুম আমারা একি স্কুলে পড়ি আর একি ক্লাস এ ।
টিপ বলল
—“আবির এতদিন তুই বলিশনি তো তোর মেয়ে বন্ধু আছে ।
আবির আমতা আমতা করে বলল …
—” না মানে দিদি আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
—” ও ও তাই ।
আরাভ একটু গম্ভীর গলায় বলল
—“ওঁকে এখন ছাড়ো রেস্ট এর দরকার ওর
আবির কে নিয়ে টিপ রুমে যায়।
*
*
*
*
বাকি
(