মান অভিমান পর্ব -০৮

#মান_অভিমান
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#৮_পর্ব
,
মাহির হাত ধরে সামনের দিকে তাকিয়ে রাস্তার ধার ঘেষে থাকা ছোট্ট ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলেছে মেহরাব,, আর মাহি সেই তখন থেকে মেহরাব এর দিকেই তাকিয়ে আছে, আর্দ্রসহ মেহরাব এর কিছু বন্ধু মিলে মাহি আর মেহরাব এর বিয়েটা দিয়েছে যদিও মেহরাব একটু টেনশনে ছিলো কিন্তু আর্দ্র ওকে সার্পোট করায় একটু হলেও সাহস পেয়েছে তাই এই কঠিন কাজটা করে ফেলেছে সামনে কি হবে ওরা কেউ জানেনা আর্দ্র বলেছে বিয়ের ব্যপার টা এখন চেপে রাখতে পরে সময় সুযোগ বুঝে সবাইকে বলা যাবে,, আর মাহি যেনো এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে ওর বিশ্বাসই হচ্ছে নাহ যে মেহরাব এর সাথে কিছুক্ষণ আগে ওর বিয়ে হয়েছে, ভাবতেই কেমন লাগে ও এখন মেহরাব এর বউ,, সামনে দেখে হাঁট মাহি নয়ত পড়ে যাবি।

আপনি আছেন তো আমাকে ধরার জন্য,, এই কারণে আমার পরার কোনো ভয় নেই।

মাহি এটা আগেবে গাঁ ভাসিয়ে দেওয়ার সময় নয়, আমি জানি না সবাই যখন ব্যাপার টা জানতে পারবে তখন কি হবে, বিশেষ করে দাদু ওনি জানলে তো ভীষণ কষ্ট পাবে হয়ত আমাকে কোনোদিন মাফ করবে নাহ।

আপনি এতো চিন্তা কেনো করছেন, কিচ্ছু হবে নাহ আর আর্দ্র ভাইয়া তো বলল ওনি দেখবেন।

মেহরাব আর কিছু বলল নাহ শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে আবার সামনের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে লাগল,, আর মাহিতো মনে মনে হাজারো স্বপ্নের জাল বুনতে ব্যাস্ত।
,,,,,
আর্দ্র যতই মেহরাব কে বলুক যে কোনো চিন্তা নেই সামনে যা হবে দেখা যাবে তবুও ওর অনেক টেনশন হচ্ছে কি যে হবে,, আর্দ্র ড্রাইভ করছে আর কথা গুলো ভাবছিলো তখনি সামনে কিছু একটা দেখে হঠাৎই গাড়ির ব্রেক কষল,, এরা দুজনে এখানে কি করছে।

আসোলে সামনে অনু আর ইশান দাঁড়িয়ে ফুচকা খাচ্ছে, একসাথে দাঁড়ায়ে ফুসকা খাইলে কোনো সম্যসা ছিলো না কিন্তু ওরা তো একে অপরকে খাইয়ে দিচ্ছে। এরা একজন আরেকজন কে খাইয়ে দিচ্ছে কেনো?? এক মিনিট ওরাও আবার একে অপরের সাথে প্রেম করার চিন্তা করছে না তো তাহলে তো কেলেংকারী হয়ে যাবে একটা সামাল দিতেই আমার অবস্থা কাহিল আবার আর একটা?? না না পানি বেশি দূর গড়ানোর আগেই থামাতে হবে। কথাগুলো ভেবে আর্দ্র জলদি করে গাড়ি থেকে নেমে ওদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো,, কি রে হা কর এটা অনেক বড় ফুচকা নে নে যলদি নে টক তো পরে গেলো, আজব তো হা করে ওভাবে আমার পিছনে কি দেখছিস?? ইশান এক নাগারে কথা বলেই যাচ্ছে আর ওদিকে অনু ইশান এর পিছনে আর্দ্র কে দেখে ওর গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে,, ইশান যখন দেখল অনু হা না করে ওর পিছনের দিকে তাকিয়ে আছে তখন অগত্যা ইশান ও পিছে ঘুরলো দেখল আর্দ্র রেগে ভ্রু কুঁচকে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে, ইশান আর্দ্র কে দেখে চমকে গিয়ে ওর হাতে থাকা ফুচকা টা টুপ করে নিজের মুখের মধ্যে নিয়ে একটা হাসি দেওয়ার চেষ্টা করল কিন্তু মুখ ভর্তি ফুচকা থাকায় সেটা সফল হলো নাহ।

তোরা দুজনে ক্লাস বাদ দিয়ে এখানে কি করছিস??

ইয়ে মানে ভাইয়া, ফুচকা খাচ্ছি।

উমমম উমমম উমমম,, আসলে ইশানের মুখে ফুচকা থাকায় কথা বলতে পারছে না তাই উমম শব্দ করছে।

তুই আবার এমন করছিস কেনো কথা বলতে কেউ নিষেধ করেছে?? এতোক্ষণ তো ভালোই মুখে পপকোণ ফুঁটছিলো।

আসলে কি বলোত আর্দ্র ভাই এখন আমাদের ক্লাস নেই তো তাই ভাবলাম আমরা দুজনে মিলে ফুচকা খেয়ে আসি এই জন্য আর কি এখানে আসা তাই না অনু, বল আর্দ্র ভাইকে।

হ,,হ্যাঁ ভাইয়া ইশান ভাইয়া ঠিকি বলেছে আমাদের ক্লাস নেই তাই এখানে এসে ফুচকা খাচ্ছি তুমিও খাও অনেক টেস্টি এখানকার ফুচকা,, মামা আমার ভাইয়াকে এক প্লেট ফুচকা দেন টাকা আমি দেবো,, আল্লাহ এবারের মতো বাঁচিয়ে দাও মনে থাকলে আর কখনো এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইশানের সাথে ফুচকা খাবো না পরের বার থেকে মাস্ক পড়ে বেরবো।

নাহ থাক আমি ফুচকা খাইনা, আর অনু আমাকে দেখই ইশান তোর ভাই হয়ে গেলো? এতোক্ষণ তো ভালোই তোকে খাইয়ে দিচ্ছিলো, তা তোর হাত কি হয়েছে বাসায় রেখে এসেছিস??

এইরে এবার মনে হয় বড়সর একটা কেস খাবো,, মনে মনে বলল ইশান।

আজকে যা হয়েছে হয়েছে এর পর যদি তোদের দুটোকে একসাথে দেখি তাহলে খবর আছে, মন দিয়ে পড়াশোনা করবি নয়ত ইশান মেহরাব কে বলে পড়াশুনা বাদ দিয়ে রিকশা কিনে দিতে বলল, আর আপনি, অনুকে উদ্দেশ্য করে, এতো শীঘ্রই নিশ্চয়ই বিয়ে করার ইচ্ছে নেই, তাই বলছি সময় থাকতে ভালো হয়ে যা,, গাড়িতে গিয়ে বস এখন আমার সাথে বাসায় যাবি।

ইয়ে মানে আর্দ্র ভাই,,

কিহ অনুকে লাগবে? ফুচকা খাওয়ার জন্য?

নাহ বলছি যে বিলটা দিয়ে দাও না গো,বোঝোই,তো বেকার মানুষ টাকা কই পাবো,, কথাটা বলে প্লেটে অবশিষ্ট থাকা একটা ফুচকা মুখে পুরে নিয়ে ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে দৌড়ে ওখান থেকে চলে গেলো ইশান।
,,,,,,
আর্দ্রর বাবা অসুস্থ তাই সপ্তাহ খানিক মতো অফিসে আর্দ্রই যাবে,, আর্দ্র রেডি হয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে গেলো,, কিন্তু ও জানতেও পারল না চারটি চোখ ওকে খুবি নিখুঁত ভাবে ফলো করছে, তারা আর কেউনা অনু আর ইশান, আসলে ওরা রাতে প্লান করেছে যে আর্দ্র কে ফলো করবে আর যদি দ্যাখে কোনো মেয়ের সাথে আর্দ্র খুব বেশি কথা বলছে বা মেয়েটা দেখতে শুনতে ভালো তাহলে ওরা নিজের জান প্রাণ দিয়ে হলেও ওই মেয়ের সাথে আর্দ্র প্রেম করায়ে দেবে, তারপর যখন প্রেমটা মাখো মাখো হবে তখন ওরাও আর্দ্র কে ব্ল্যাকমেইল করবে আর জ্ঞানের কথা বলবে। আরে কি করছিস কি আরো জোরে চালা ভাইয়ার গাড়ি তো অনেক দূর চলে গেলো।

অনু এটা উড়োপ্লেন নয় যে এক মিনিটেই চলে যাবে এটা হলো বাই সাইকেল আর আমি পা দিয়ে এটা চালাচ্ছি+ তুই পিছনে বসে আছিস আর আমার কি এসব চালানোর অভ্যাস আছে??

তোকে আগেই বলেছিলাম যে বাইক নিয়ে আয় তাহলে ভালো হবে কিন্তু তুই কি করলি বাইক না এনে আনলি বাই সাইকেল এখন ঠেলা বোঝ।

আরে বাইক তো ভাইয়া নিয়ে কোথায় যেনো গেছে, আর ওটা ভাইয়ার বাইক তাই ভাইয়া নিয়ে গেছে আমার বাইক নাকি যে যখন তখন নিয়ে চলে আসব,। এভাবেই ঝগড়া করতে করতে ওরা অবশেষে আর্দ্রর অফিসের সামনে আসলো ওরা আসার অনেক আগেই আর্দ্র অফিসে চলে আসছে,, নে চলে এসেছি এখন তাহলে মিশন শুরু করা যাক,, মিশন আর্দ্র ভাইয়ার বউ খোঁজা।
,,,,,,,
মে আই কামিং স্যার??
।ইয়েস কাম

ইয়ানা একটা ফাইল নিয়ে কেবিনে ঢুকে মাথা উঁচু করে কিছু বলতে যাবে তখন দেখল ওর বসের চেয়ারে আর্দ্র বসে আছে,,আপনি??

হুম আমি এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে, এভাবে হা করে না থেকে ফাইলে কি সম্যসা হয়েছে সেটা দেখান আর বাইরে গিয়ে ম্যানেজার সাহেব কে বলুন আমি ডেকেছি।

বস হতে ন হতেই আমার উপর হুকুম করা শুরু পাশেই তো টেলিফোন আছে ওতেই তো ম্যানেজার সাহেবকে ডাকা যাই সেটা না করে এখন আমাকে খাটানোর প্লান করছে সব বুঝতে পারছি,, মনে মনে বলল ইয়ানা।

চলবে,,,,,,????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here