#মায়ায়_জড়ানো_সেই_তুমি
#পার্ট_৩
জাওয়াদ জামী
” এইযে নবাবজাদা আর কতক্ষণ ঘুমাবেন? বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়েছে, তাও নবাবের ঘুম ভাঙেনা! ” বলতে বলতে শাহানা সিদ্দিকা তার ছোট ছেলের পিঠে দুমদাম করে কয়টা বসিয়ে দিলেন।
” আহা মাতা! তুমি কিভাবে একটা নিষ্পাপ বাচ্চাকে মারতে পারো! তোমার মাথা কাঁপেনা? ”
” কি বললি উজবুক! মাথা কাঁপবে মানে? ” রেগে শাহানা সিদ্দিকা জবাব দেয়।
” কাঁচা ঘুম ভাঙ্গানোর সাইড ইফেক্ট, মাদার বাংলাদেশ । ”
” বেলা একটা বাজতে চলল। আর উনার নাকি কাঁচা ঘুম ভাঙ্গলো! এই তুই উঠবি? তা নাহলে এবার কিন্তু জুতা পেটা করব। ”
বলতে দেরি নেই মাদার বাংলাদেশের নবাবজাদা ধড়মড়িয়ে উঠে বসল।
” এই উজবুক কাল কি কান্ড করেছিস বলতো? ” ছেলের কান টেনে জিজ্ঞেস করলেন শাহানা সিদ্দিকা।
” আহ, মাতা ব্যথা লাগছে তো। আমি কিছুই করিনি। তোমার গুল্টুমুল্টু, নিষ্পাপ ছেলে কিছু করতে পারে! দিল টুট গায়া মাদার বাংলাদেশ । ” ন্যাকা স্বরে বলে মায়ের নবাবজাদা।
” গতকাল জিসানের গাড়ি নিয়ে যাবার পথে কি করেছিস? সত্যি না বললে তোর অসুবিধা আছে। ” খটখটে গলায় বলেন শাহানা সিদ্দিকা।
” একটা মেয়েকে টিজ করছিল কয়েকজন মিলে। তাই একটু ভাব নিয়ে হিরো সেজেছি, এই যা। ”
” আর ভাব নিতে যেয়ে এসপি সেজেছিস? অকর্মা, উজবুক একটুও লজ্জা নেই তোর! লেখাপড়া শেষ করেছিস। কোথায় এখন চাকরি করবি, নিজের পায়ে দাঁড়াবি। আর তুই টোকাইদের সাথে ভাব নিতে যাস! টোকাইয়ের সর্দার একটা। ”
” মাআআআ এভাবে অপমান্স করোনা। আমি এসপি না হলে কি হয়েছে ভাইয়া তো এসপি। ভাইয়ার পাওয়ার মানেই আমার পাওয়ার। ”
” থাক হয়েছে, বাকিটা জিসানের উপর ছেড়ে দে। যা করার ও করবে এখন উঠ উজবুক। ”
” মা আমার নাম ইশান। তুমি এমনভাবে আমার নিক নেইম দাও মনে হয় এই নামগুলো শুধু আমার জন্যই জন্ম নিছে। ” মুখ ভার করে বলে।
ছেলের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দেয় শাহানা সিদ্দিকা।
তার আদরের দুই ছেলে জিসান আর ইশান।বড়টা যেমন দ্বায়িত্ববান তেমনি নম্র-ভদ্র। আর ইশান তার সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম। বড় ভাই এসপি হবার সুবাদে যেখানে সেখানে জিসানের নাম নিয়ে নিজেকে এসপি বলে পরিচয় দেয়া তার কাছে ডালভাতের মত। এজন্য অবশ্য কম ঝাড়ি খায়না সবার কাছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে বিন্দাস মুডে থাকা যার কাজ।
চৌধুরী বাড়িতে আজ খুশির আমেজ। সাদিফের প্রমোশন হয়েছে। শায়লা চৌধুরী ভিষণ খুশি। ছেলের পছন্দের সব খাবার রান্না হয়েছে। ড্রয়িংরুমে ছেলের নামে প্রসংশার ডালা নিয়ে বসেছেন। তার সাথে তাল মেলাচ্ছে সাইফ,সাইরা। আর জামিল চৌধুরী গালে হাত দিয়ে বসে বসে নাটক দেখছেন।
” আমি জানতাম আমার ছেলে জীবনে অনেক বড় হবে। সমাজে আমাদের মাথা উঁচু করবে। ”
জামিল চৌধুরী মনযোগী হয়ে স্ত্রীর কথা শুনছেন।
” আহা! কি ভালোবাসা! আমার মা যদি আমাকে নিয়ে এরুপ কমপ্লিমেন্ট দিত তাহলে আমিও আজ বাপ-দাদার মাথা উঁচু করতাম। কেন মা কেন, তুমি আমাকে এমনভাবে বলনি কেন। ” শায়লা চৌধুরীর মেজাজ খিঁচে উঠে স্বামীর এরুপ কথায়।
” সব সময়ই তোমার এরকম বলতে হবে? এমন ভাব করো যেন ছেলে-মেয়েরা একাই আমার। তুমি কিছুই নও। ”
” আহা, রাগ করো কেন? আমি না থাকলে তোমার এই দালাল বাহিনীর জন্ম দিতে কিভাবে শুনি! ”
এবার যেন আ*গু*নে ঘি পড়ল। ছ্যাঁৎ করে উঠল শায়লা চৌধুরী।
” একটুতো লজ্জা করো। ছেলে-মেয়ের সামনে কি বলতে হয় তা কি তুমি ভুলে গেছ? বুড়ো বয়সে ভীমরতিতে পেয়েছে তোমাকে! ”
শ্বশুর, শ্বাশুড়ি বাকবিতন্ডায় লজ্জা পায় তানিশা।সাইফ, সাইরা মুখ টিপে হাসছে আর ঝগড়া উপভোগ করছে।
ঘড়িতে এগারোটার ঘন্টা বাজল। এখনো কেউ ঘুমায়নি। সবাই সাদিফের অপেক্ষা করছে।
” তোমার প্রমোশনওয়ালা নবাবপুত্র কখন আসবে শায়লা? নাকি সমাজের মাথায় তোমাকে বসিয়ে দিয়ে আসছে জন্য দেরি হচ্ছে ! ”
” আবারো শুরু করলে তুমি? ”
” আচ্ছা চুপ করলাম। ” বলে ঠোঁটে আঙুল চেপে নড়েচড়ে বসে।
” ড্যাড তুমি আমাদের নিয়ে সব সময়ই এমনভাবে বলো কেন? ” আহ্লাদী স্বরে জানতে চায় সাইরা।
” আসছে মায়ের দালাল! কিছু বলেও শান্তি নেই! এখন থেকে দেখছি মুখে কুলুপেতে থাকতে হবে। ”
কলিংবেলের আওয়াজ শুনে তানিশা দরজা খুলতে যায়। সাদিফ হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে আসতেই শায়লা চৌধুরী দৌড়ে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে। সাইফ, সাইরাও ভাইকে শুভেচ্ছা জানায়। ড্রয়িংরুমে একটা উচ্ছ্বসিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
” এইযে বাছাধন এখানে তোমার অধম বাবা দাঁড়িয়ে আছে। এই অধমকেও একটু তোমার পরশ পেতে দাও। ”
সাদিফ হাসিমুখে এসে বাবাকে জড়িয়ে ধরে।
” বাবা আজকেও তুমি আমার পেছনে লাগবে! ”
পরিবারের সবার এমন মিলন দেখে তানিশার চোখে পানি আসে। সেই সাথে নিজের বাবা-মা ‘র কথা মনে হয়। কতদিন থেকে তাদের সাথে দেখা হয়না।
সাদিফ সাইরার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দেয়।
” তোদের জন্য কিছু কেনাকাটা করেছি। দেখ পছন্দ হয় কিনা। ”
সাইরা ব্যাগটা সাদিফের হাত থেকে লুফে নেয়। সেখানেই খুলতে শুরু করে। সাইফ, সাইরা, শায়লা চৌধুরী, জামিল চৌধুরী সবার জন্য পোশাক এনেছে। সাইরা যার পোশাক তাকে দেয়।
জামিল চৌধুরী গম্ভীর হয়ে সাদিফকে জিজ্ঞেস করে, ” সবার জন্য শপিং করেছ দেখছি , তা বউমার জন্য কি এনেছ? ”
সাদিফ নিশ্চুপ থাকে। এগিয়ে আসে শায়লা চৌধুরী, ” তুমি সব সময়ই এমন করো কেন? ছেলেটার প্রমোশন হয়েছে, তাই ভাই-বোনদের জন্য শপিং করেছে। ওর জন্য আজ আনেনি, পরে আনবে। ”
” বাড়িতে আমরা মানুষ ছয়জন। তোমার ছেলে পাঁচজনের জন্য শপিং করেছে, বাকি একজন কি দোষ করল? নাকি বউমার জন্য কোন কাপড়ই দোকানে ছিলনা? শোনে সাদিফ, তোমার কেনা জিনিস আমি নিতে পারলামনা। আর একটা কথা, যে পুরুষ সবার সামনে স্ত্রীকে অসম্মান করে, আর যাই হোক তাকে আমি মানুষ বলে মনে করিনা। ” কথাগুলো বলেই দ্রুত পায়ে নিজের রুমে চলে যায় জামিল চৌধুরী।
তানিশা এতসব কিছুর মাঝে রান্নাঘরে আসে। এই পরিস্থিতিতে ড্রয়িংরুমে থাকলে ওকেও কথা শুনতে হবে।
” ড্যাড সব কিছুতেই বেশি বেশি করে। দিলতো সবার আনন্দ মাটি করে। সে নিজেও চিল করতে জানেনা আবার কালো চিল করা সহ্যও করতে পারেনা। কোথাকার কোন মেয়ে তার জন্যও শপিং করতে হবে। মগের মুল্লুক নাকি। ” ফোঁসফোঁস করে বলে সাইফ।
সাদিফ সোজা চলে যায় নিজের রুমে। মুহূর্তের মধ্যেই বাড়ির আনন্দঘন পরিবেশ বিলীন হয়ে যায়।
তানিশা এসব কিছুর জন্য নিজেকে দায়ী করছে। তার জন্যই এমন হাসিখুশি পরিবেশ নষ্ট হল।
” তোমার শান্তি হয়েছে? আমাদের সুখ তোমার সহ্য হয়না। আমার বাড়িতে অপয়া ঢুকেছে। সব কিছুতেই শুধু অশান্তি আর অশান্তি। ”
সে রাতে আর কেউ খেলোনা। তানিশা সব গুছিয়ে রেখে রুমে আসে। সাদিফ চুপচাপ কপালে হাত রেখে শুয়ে আছে। তানিশা রুমের বাতি নিভিয়ে একটা বই নিয়ে ব্যালকোনিতে আসে। তাকে জীবনে অনেক বড় হতে হবে।
পরদিন সকালেও সবার মুড অফ। চুপচাপ খেয়ে যে যার মত বেরিয়ে যায়। তানিশা দুপুরের রান্না শেষ করে বই নিয়ে বসে।
দেখতে দেখতে পনের দিন কেটে যায়। তানিশার পরিক্ষা শুরু হয়েছে। সেদিনের পর সেই ছেলেগুলো আর ওরা সামনে আসেনি। মোটামুটি নির্ঝঞ্জাট কাটছে ভার্সিটিতে। আজকের পরিক্ষা বেশ ভালো হয়েছে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে রিক্সার জন্য। হঠাৎ করেই সামনে একটা বাইক এসে থামে। তানিশা চমকে তাকায়। কিন্তু হেলমেট পড়ায় চিনতে পারেনা আগন্তুককে।
আগন্তুক হেলমেট খুলে বলে , ” হ্যাল্লো ম্যাডাম। আপনি সেই না যাকে আমি সেদিন ছুঁচোদের হাত থেকে বাঁচালাম? কিন্তু আপনি একটা ধন্যবাদও না দিয়ে ফুসসসসসস হয়ে গেলেন? আজকালকার দুনিয়া ভালোদের জন্য নয় বুঝলেন তো ম্যাডাম। আমার মত একটা ভালো মানুষের জন্য দুনিয়া কষ্টের জায়গা। তা আজকে একবার ধন্যবাদ দিবেন নাকি? ”
তানিশা হতভম্ব হয়ে গেছে ছেলেটার কথা শুনে। ধীর গলায় বলে, ” ধন্যবাদ সেদিনের জন্য। আসলে খুব তাড়া থাকায় চলে যেতে হয়েছিল। ”
” মেনশন নট ম্যাডাম। আপনার ধন্যবাদের জন্য ধন্যবাদ। ”
এই ছেলে বলে কি! ধন্যবাদের জন্য ধন্যবাদ! তানিশা ছেলটার কথার ধরন শুনে হা হয়ে যায়।
” আজ আসি দেরি হয়ে যাচ্ছে। ” তানিশা আর কথা না বাড়িয়ে সামনে এসে মাত্রই দাঁড়ানো খালি রিক্সায় উঠে বসে।
” এই যা চলে গেল! আমার মত একজন হ্যান্ডসাম ছেলেকে দেখেও ম্যাডাম পাত্তা দিলনা।ইশানরে তুই আসলেই অকর্মা। মাদার বাংলাদেশ ভুল কিছু বলেনা। ”
” স্যার আপনি এখানে? ”
” আরে তোরা সেদিনের ছুঁচোর দলেরা না? দেখেছিস বলেছিলাম না তোদের খবর নিব। ”
” স্যার আমরা সেদিনের পর থেকে ভালো হয়ে গেছি। কারো দিকে খারাপ নজর দিইনা। ”
” গুড গুড। অবশ্য খারাপ নজর দিলেও অসুবিধা নেই। আমার হাত আবার সব সময়ই চুলকায়। দুই-চার ঘা দিলেই চুলকানি থেমে যায়। ”
” স্যার কি বলছেন এসব! আমরা আর আগের মত নেই। এই বল সবাই স্যারকে বল। ”
সবাই সমস্বরে বলে, জ্বি স্যার।
ইশান আর কথা বাড়ায়না। বিদায় নেয় সেখান থেকে।
রাতে রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে সাদিফ। তানিশা বসেছে বই নিয়ে। যে যার কাজ মনযোগ দিয়ে করছে। নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে রুমের সর্বত্র। কিন্তু ফোনের আওয়াজ নিস্তব্ধতার বুক বিদীর্ণ করে দেয়। সাদিফের ফোন বাজছে। ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে ফোনে নজর দেয় সাদিফ। সঙ্গে সঙ্গে এক চিলতে হাসি ফুটে ঠোঁটের কোনে। যা তানিশার চোখে ঠিকই পরে। ল্যাপটপ অফ করে ব্যালকোনিতে যায় সাদিফ।
তানিশার বুক ধ্বক করে উঠে। কার ফোন পেয়ে সাদিফ এমনভাবে হাসল!
এক ঘন্টার বেশি হলো সাদিফ ব্যালকোনিতে গেছে। ওপাশ থেকে দরজা বন্ধ করে রেখেছে সে। কথার আওয়াজ মাঝে মাঝে ভেসে আসছে। তানিশার কেন যেন খুব খারাপ লাগছে। আজ পর্যন্ত আমার সাথে স্বেচ্ছায় একটিবারও কথা বলেননি উনি! কিন্তু আজ কার সাথে এত কথা বলছে! প্রায় দুই ঘন্টা পর সাদিফ রুমে আসে। তখন তার চোখ-মুখে এক ধরনের প্রশান্তি লক্ষ্য করে তানিশা।
রুমে এসে সাদিফ সোজা শুয়ে পরে।
” বাতি নিভিয়ে দাও, আমি ঘুমাবো। তোমার পড়ার প্রয়োজন হলে ব্যালকোনিতে যাও। ” বলেই চোখে হাত রেখে সটান হয়ে শুয়ে থাকে।
তানিশা কথা না বাড়িয়ে বাতি নিভিয়ে ব্যালকোনিতে চলে আসে। ওর চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। একটা সময় ধৈর্যের সকল বাঁধ ভেঙে যায়। হুহু করে কাঁদতে থাকে।
” এমন কেন উনি! কেন এত অবহেলা? আমি আর কত সহ্য করব? আর যে পারছিনা। ” থম মেরে বসে থাকে অনেকক্ষণ। ধীরে ধীরে নিজে ধাতস্থ করে চোখের পানি মুছে সোজা হয়ে বসে।
” আমাকে ভেঙে পরলে চলবেনা। ঘুরে দাঁড়াতে
হবে। নিজেই নিজের ভাগ্য বদলাতে হবে। আমি একা, কেউ নেই আমার পাশে। আজ থেকে আমি আর কাঁদবনা। নিজের লক্ষ্যে এগিয়ে যাব। ”
বই হাতে নিয়ে পড়ায় মনযোগ দেয় তানিশা।
পড়তে পড়তে কখনযে একটু একটু করে ধরনীর বুকে ভোর উঁকি দিচ্ছে বুঝতেই পারেনি। আজানের ধ্বনি চারপাশে মুখরিত হতেই তানিশা বই থেকে মুখ তোলে। রুমে এসে দেখে সাদিফ গভীর ঘুমে মগ্ন। তানিশা সোজা ওয়াশরুমে যায়।
অজু করে এসে নামাজে দাঁড়ায়। সৃষ্টিকর্তার একটু সান্নিধ্যের জন্য এরচেয়ে ভালো উপায় নেই। নামাজ শেষে কিছুক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করে। কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ কানে আসতেই সাদিফের ঘুম ভেঙে যায়। মাথা উঁচু করে তানিশার দিকে একটু তাকিয়ে পাশ ফিরে শোয়।
তিলাওয়াত শেষ করে তানিশা রান্নাঘরে আসে। সকালের নাস্তার পাশাপাশি একবারে দুপুরের জন্য রান্না করে নেয়। সারারাত না ঘুমানোর দরুন মাথা ভার হয়ে আছে। সবাই বেরিয়ে গেলে একটু ঘুমাবে।
চলবে….