মিস্টার সিনিয়র পর্ব -০২

#মিস্টার__সিনিয়র
#পর্বসংখ্যা_০২
®ফিহা আহমেদ

“হেই সুন্দরী এদিকে আসো” !!

পরশি সেদিকে কান না দিয়ে সোজা হাঁটা শুরু করলো। ছেলেটার কথায় পরশি পাওা না দেওয়ায় ছেলেটা রেগে গেল। ছেলেটা বসা থেকে ওঠে এসে পরশির পথ আটকালো।

[ছেলেটা তার বন্ধুদের সাথে ভার্সিটির মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো।পরশিকে গেইট পেরিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে দেখে ডাক দিল বিরক্ত করার জন্য]

“সমস্যা কি পথ আটকালেন কেন ? (পরশি বিরক্তিকর কন্ঠে বললো)

“তোমার সাহস তো কম নয় সিনিয়রের সাথে বেয়াদবি করছো”।

“পাগল নাকি আপনি আমি কখন আপনার সাথে বেয়াদবি করলাম? (পরশি আশ্চর্য হয়ে কথাটি বললো)

“তোমাকে ফার্স্ট যখন ডেকেছি তুমি আমার কাছে না গিয়ে সোজা হাঁটা ধরলে কেন ?

“পথ ছাড়ুন আমি ক্লাসে যাব। আপনার ফালতু কথা শুনার টাইম আমার কাছে নেই” । (পরশি)

ছেলেটি পরশির হাত ধরে বলে,,,,,

“তাই নাকি সুন্দরী” ।

ছেলেটি হাত ধরাতে পরশির রাগ ওঠে গেল।পরশি হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ছেলেটি দু’গালে ঠাস ঠাস করে দু’টো থাপ্পড় মেরে দেয়।আর রাগে গজগজ করতে করতে বলে,,,,,

“তোর সাহস তো কম নয় আমার হাত ধরেছিস।শুধু তো থাপ্পড় মেরেছি তোর হাত যে কাটিনি এটাই অনেক।তোকে যেন আমার আশেপাশে আর না দেখি তাহলে তোর বারোটা বাজিয়ে দিব” ।

পরশি ছেলেটাকে কতক্ষণ হুমকিধামকি দিয়ে সেখান থেকে চলে গেল।

[পরশি নিজের ফ্যামিলির অত্যাচার সহ্য করলেও বাহিরে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না।]

ভার্সিটির মাঠে যারা বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো তারা সবাই আশ্চর্য হয়ে এতক্ষণ সবকিছু দেখেছিল।

তখন একটি ছেলে আড্ডা থেকে ওঠে এসে বললো,,,,

“রকি তুই কেন শুধু শুধু মেয়েটার হাত ধরতে গেলি। মেয়েটা তোকে কিভাবে থাপ্পড় মেরে চলে গেল”।

“এতো সহজ নাকি এই রকির থেকে ছাড় পাওয়া। আমি এই মেয়েকে দেখে নিব তুই দেখিস সাদিক”। (রকি)

“সব মেয়ে এক হয় না।কিছু কিছু মেয়েকে যা করতে বলা হয় ভয় পেয়ে করে কিন্তু এই মেয়েটা অনেক জিদি।এখন এসব ছাড় ক্লাসে চল। (সাদিক)

_____

“এই যে আপু শুনছেন ফাস্ট ইয়ারের ক্লাস কোন দিকে দয়া করে বলবেন প্লিজ ? (পরশি)

“তুমি ওই মেয়েটা না যে একটু আগে রকিকে থাপ্পড় মারলে।এটা ঠিক করনি বোন তোমার নিজের বিপদ নিজে ডেকে নিয়ে আনলে।যেখান প্রিন্সিপাল স্যার রকির বিচার করেনা ওর বাবার ভয়ে। ওর বাবা শহরের একজন বড় গুন্ডা। আর সেখানে তুমি ভার্সিটির এতো ছেলে-মেয়ের সামনে রকিকে থাপ্পড় মারলে”।

পরশি কিছু না মুচকি হেসে আবার বললো,,,,

“আপু ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাসটা দেখিয়ে দিলে ভালো হতো”।

নয়ন আর কিছু না বলে পরশিকে বললো,,,,

“ডান দিকের শেষ ক্লাসটা ফার্স্ট ইয়ারের”৷

“ধন্যবাদ আপু” । (পরশি)

“কি অদ্ভুত মেয়ে এতকিছু বলার পর ও কিছু বললো না উল্টো মুচকি হেসে চলে গেল।আল্লাহ ই ভালো জানে এই মেয়ের কপালে কি আছে। আল্লাহ এই মেয়েকে রকির থেকে রক্ষা করো”। (নয়ন মনে মনে এইসব বলে)

“কিরে নৌকা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছিস ?

নয়ন সামনে তাকিয়ে দেখে তার বেস্ট ফ্রেন্ড নিহান সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

“তোকে কতবার বলেছি আমায় এই নামে ডাকবি না”। (নয়ন হালকা রেগে কথাটি বললো)

“আচ্ছা সরি এখন আর বলবো না কিন্তু একটু পর আবার বলবো”। (নিহান)

বলে নয়নের মাথায় থাপ্পড় দিয়ে দৌঁড় শুরু করলো। নয়নও নিহানের পিছনে পিছনে দৌঁড়ানো শুরু করলো।

_____

তখনি কালো রঙের বাইকে করে হাজির ভার্সিটির সব মেয়েদের ক্রাশ জোভান চৌধুরী। চতুর্থ ইয়ারের ছাএ জোভান। দুষ্টুমিতে সেরা। গার্লফ্রেন্ড এর অভাব নেই জোভানের।লাইফে মজা-মাস্তি করে জোভান দিন কাটাচ্ছে। টেনেটুনে পাশ করে জোভান।পড়াশোনায় ভালো কিন্তু জোভান পড়ে না।পরীক্ষার আগে কোনোরকম পড়াশোনা করে টেনেটুনে পাশ করে।

“ওই দেখ নিহান জোভান এসে গেছে”। (নয়ন)

“হু সব মেয়েদের ক্রাশ চলে এসেছে”। (নিহান)

জোভান গাড়ি থেকে নামতেই একটা মেয়ে এসে জোভানের হাত জড়িয়ে ধরে বললো,,,,,

“জান এসে গেছ তুমি। কতক্ষণ ধরে তোমার অপেক্ষায় ছিলাম।অবশেষে তুমি আসলে”।

“হাত ছাড় অরিন”। (জোভান)

“না ছাড়ব না” । (অরিন)

“ছাড়বি নাকি থাপ্পড় খাবি। আজ মুড খারাপ আমার হাত ছাড়”। (জোভান)

অরিন মন খারাপ করে হাত ছেড়ে দিল জোভানের। অরিন জোভানের চার নম্বর গার্লফ্রেন্ড।

নয়ন আর নিহান জোভানের বেস্ট ফ্রেন্ড। নিহান আর নয়ন জোভানের কাছে আসতেই অরিন বলে উঠলো,,,,

“আজ আমার জানের মন খারাপ কেউ ওকে ডিস্টার্ব করো না”। (অরিন)

অরিনের কথায় নয়ন রেগে কিছু বলতে যাবে নিহান নয়নের হাত শক্ত করে ধরে চোখের ইশারায় চুপ থাকতে বললো।

জোভান কারো সাথে কোনো কথা না বলে সোজা ক্লাসে চলে গেল।

_____

ক্লাসে চুপচাপ বসে আছে জোভান। কারো সাথে কোনো কথা বলছে না।

“জোভানের কি হলো নয়ন? (নিহান)

“দেখে মনে হচ্ছে মুড ভীষণ খারাপ জোভানের। এখন কিছু বলার দরকার নেই। মুড ভালো হলে নিজেই কথা বলবে”। (নয়ন)

“ঠিক বলেছিস।কিছু বললে যদি রেগে যায়”। (নিহান)

_____

~ “ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস”….

পরশি চুপ করে ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসে আছে।তখন একটা মেয়ে এসে তার পাশে বসলো।মেয়েটি পরশির সামনে হাত এগিয়ে দিয়ে বললো,,,,

“হায়, আমি সিমি শেখ। তুমি?

পরশি হালকা হেসে সিমির হাতের সাথে হাত মিলিয়ে বললো,,,,

“আমি পরশি সিকদার”।

“ওয়াও তোমার নামটা ভীষণ সুন্দর”। (সিমি)

“ধন্যবাদ। তোমার নমাটা ও সুন্দর”। (পরশি)

“ধন্যবাদ কিউটি পরশি” । (সিমি)

বলে পরশির গাল দুটো টেনে দিল।সিমির কাজে পরশি শব্দ করে হেসে দিলো।

“ওয়াও পরশি তুমি হাসলে গালে টোল পড়ে”। গালের টোলের জন্য তোমার হাসি আরো সুন্দর লাগছে।তোমার আর কোনো বোন আছে? (সিমি অবাক হয়ে বললো)

“তেমন কিছু না। স্যার ক্লাসে এসে গেছে চুপ থাক। তোমার সব কথার উওর পরে দিব আমি”। (পরশি হালকা হেসে বললো)

“ঠিক আছে পরশি”। (সিমি)

_____

ক্লাস শেষে সিমি আর পরশি ভার্সিটির কেন্টিনে গেল খেতে।

“বলো কিউটি পরশি কি খাবে? (সিমি হেসে বললো)

“কিউটি বাদ দিয়ে বলো”। (পরশি)

“স্যান্ডউইচ খাবে”। (সিমি)

“ঠিক আছে” । (পরশি)

“এই সুন্দরী পরশি তুমি গিয়ে স্যান্ডউইচ নিয়ে এসো আমার না কোমরাটা হঠাৎ করে ব্যথা করছে”। (সিমি)

“ঠিক আছে নিয়ে আসছি”। (পরশি)

পরশি দু’টো স্যান্ডউইচ নিয়ে আসতে যাবে ঠিক তখনই কারো সাথে ধাক্কা লেগে পরশির হাত থেকে স্যান্ডউইচ পড়ে যায়।পরশি সামনে না তাকিয়ে হালকা রেগে বললো,,,,,

“দেখে হাঁটতে পারেন না”।

“আমি না হয় দেখে হাঁটতে পারি না আপনি তো দেখে হাঁটতে পারতেন”।

পরশির রাগ উঠে গেল ছেলেটির কথায়।পরশি রেগে হাত উঁচিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগে ছেলেটি পরশির হাত ছেলেটির বুকের বাম পাশে রাখলো।

“নিহান জোভান ওই মেয়েটার হাত ধরেছে। জোভানের গালে থাপ্পড় পড়বে আমি নিশ্চিত”। (নয়ন)

“এখন কি হবে নয়ন ? (নিহান)

চলবে…..
_____

(বানানে ভুল-ক্রটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

(গল্প পড়ে সবাই লাইক – কমেন্ট করবেন। নাইচ, নেক্সট না লিখে গল্প সম্পর্কে গঠনমূলক মন্তব্য করবেন পাঠক-পাঠিকাগণ।)
[❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ❌]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here