অগোচরে তুমি পর্ব -১১+১৩

#অগোচরে_তুমি
লেখনীতেঃ স্বর্ণালী তালুকদার

১২.

অর্কের সাথে রাওনাফ পুরো এনজিওটা ঘুরে দেখলো।রাওনাফ দেখলো এখানে একটা অনাথ আশ্রম আছে সাথে একটা স্কুলও আছে।রাওনাফ অনাক হয়ে অর্ককে জিজ্ঞাস করলে অর্ক বললো,বাচ্চারা এখানেই থাকে আর এখানেই পড়াশোনা করে।অয়ন, কলি, তনিমা আর দিহাদ ওদের ক্লাস নেয়।মাঝে মাঝে অর্কও ওদের ক্লাস নেয়।তবে খুব কম,বিজ্ঞান ক্লাসটা অর্ক নিয়ে থাকে সপ্তাহের যেকোনো একদিন।অন্যসময় অয়নই পড়ায়।রাওনাফ খরচের কথা জানতে চাইলে অর্ক হেসে বললো,

– ওদের আর তেমন কি খরচ।আমাদের নিজেদের সেভিংস থেকেই চলে যায়।এছাড়া অনেকেই ডোনেশন দেয়।ডোনেশনের ওই টাকাটা ওদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সেভিংস করা হচ্ছে।ওদের প্রয়োজন মতো কাজে লাগাবো।

আজকের মতো এনজিওতে অর্কের কাজ শেষ।বাহিরে কোথাও আড্ডা দিবে বলে দুই বন্ধু এনজিও থেকে বেড়িয়ে আসে।

অর্ক আর রাওনাফ যখন বাড়ি ফিরে তখন অনেকটা রাত হয়ে যায়।রাওনাফ বাড়ি ফিরে এসে দেখলো মেহেনূর বা রোশনি কেউই বাড়িতে নেই।একটু অবাক হয়ে রেনুফা বেগমকে জিজ্ঞাস করলো,

– মা মেহেনূর আর রোশনি কোথায়?

ছেলের কথায় রেনুফা বেগম তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো।বাজখাইঁ গলায় বললো,

– তোর ফোন বন্ধ ছিল কেন?

সন্তান দেরি করে বাড়ি ফিরলে সব মায়েরাই চিন্তা করেন মিষ্টি শাসনের মাধ্যমে বকাবকিও করেন।কিন্তু রেনুফা বেগমের রাগের কারণ বাসায় দেরি করে ফেরা নিয়ে নয়,রাওনাফের ফোন বন্ধ পাওয়ায় তিনি ভীষণভাবে রেগে গেছেন।হয়তো তিনি অনেক বার ট্রাই করার পরেও ব্যর্থ হয়েছেন বলেই এতটা রেগে গিয়েছেন।ওর ভুলবশত হয়ে যাওয়া কাজটা মায়ের রেগে যাওয়ার জন্য যে যতেষ্ট রাওনাফ সেটা আন্দাজ করতে পারছে।মায়ের কঠোরতা দেখে রাওনাফ একটু নরম গলায় বললো,

– সরি মা,ফোনে চার্জ ছিল না।

ফোনে চার্জ ছিল না কি আর করা যাবে।এর প্রতুত্তরে ছেলেকে কিছু বলেন নি রেনুফা বেগম।কিন্তু দমে যান নি তিনি।পরমুহূর্তেই রাগটা যেনো মাথায় আবার চড়াও হয়ে উঠে।কপালে চিন্তার ছাপ ফেলে ধমকানোর ভঙ্গিমায় বললো,

– মেহেনূর আর রোশনি সেই বিকাল বেলা বের হয়েছে বাসা থেকে। এখন রাতের বাজে সাড়ে বারোটা কিন্তু ওরা এখনো বাসায় আসে নি।ওদেরকেও ফোনে পাচ্ছি না।এমনিতেই তো ওরা এই শহরের তেমন কোনো কিছুই চিনে না জানে না।তারউপর এই রাতের বেলা একা দুজন মেয়ে মানুষ।রাস্তায় যদি ওদের কোনো বিপদ-আপদ হয় তখন কি হবে?

– ওদের জন্য চিন্তা করো না।ওরা ঠিক রাস্তা চিনে বাসায় চলে আসবে!

রাওনাফ কথাটা বলে চলে যাওয়ার জন্য উদ্যত হতেই রেনুফা বেগম ওর পথ আগলে দাঁড়ান।ছেলের এমন ভ্রুক্ষেপহীন উত্তর শুনে উনি বেশ অবাক হয়েছেন।সাথে রাগও।দুইটা মেয়ে মানুষ রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে আর এই ছেলে কিনা বলছে ওরা ঠিক রাস্তা চিনে বাসায় চলে আসবে।রেনুফা বেগম আশ্চর্য হয়ে বললো,

– তোর কথা শুনে তো আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছি রাওনাফ।মেয়ে দুটো বাড়ির বাইরে আর তুই বলছিস চলে আসবে?ঘড়িটায় তাকিয়ে দেখ কয়টা বাজে।একটার কাটা ছুইঁছুইঁ।

রাওনাফ মাকে কি ভাবে বুঝাবে ওর বোন আর দশটা মেয়ের মতো নয়।ওর চলন-বলন বাকি মেয়েদের মতো নয়।বয়স অল্প হলেও ও অনেক বেশি ম্যাচিউর একটা মেয়ে।নিজের সমস্যা নিজেই স্যান্ডেল করার মতো ক্যাপাবিলিটি ওর আছে।কিন্তু মাকে সেই কথা বুঝানোর মতো শব্দ রাওনাফের কাছে নেয়। রাওনাফ ওর মাকে শান্ত কন্ঠে বললো,

– ওরা চলে আসবে মা।তুমি চিন্তা করো না।

তেতে উঠেন রেনুফা বেগম।ছেলের কথা শুনে উনার রাগ যেন বেড়ে গেছে আরো একধাপ।পরমুহূর্তেই তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,

– এটা তোদের কানাডা না বাবা,এটা বাংলাদেশ।এখানে মেয়েরা এতো সেইফলি চলাফেরা করতে পারে না!

মায়ের কথায় রাওনাফ ঠোঁট বাকিয়ে তাচ্ছিল্যে হাসে।মাকে কিছু একটা বলতে গিয়েও বললো না।জানে ওর কোনো কথায় এখন আর উনি শুনবে না।তাই মুচকি হেসে বললো,

– ঠিক আছে আমি দেখছি কি করা যায়।

রাওনাফ আবার বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসে।এতো রাতে কোথাও গাড়ি পাওয়া যাবে না।তাই অর্কের বাইক নিয়ে যাবে বলে ঠিক করলো।অর্কের কাছে বাইকের চাবি চাইলে অর্ক একটু অবাক হয়ে বললো,

– এতো রাতে বাইক নিয়ে কোথায় যাবি তুই?

রাওনাফ অর্ককে বলে যে মেহেনূর আর রোশনি এখনো বাসায় পড়ে নি।অর্ক মেহেনূর আর রোশনির কথা শুনতে পেয়ে রাওনাফকে অনেক বকাবকি করে।কেন ওকে আগে বলে নি?রাওনাফ অর্কের শাসানো দেখে বললো,ও নিজেই জানে না যে মেহেনূর আর রোশনি বাইরে বেড়িয়ে।যদি জানতো তাহলে ওদের নিয়ে এক সাথেই বাসায় ফিরতো।অর্কের কপালে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু রাওনাফের মধ্যে কোনো হেলদোল নেই।ওর হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে সবে সন্ধ্যা সাতটা!অর্ক রাওনাফের এমন ব্যবহার দেখে চোখ পাকিয়ে বললো,

– তোর কি ওদের জন্য টেনশন হচ্ছে না?

– টেনশন হওয়ার কি আছে।ওরা কি ছোট্ট বাচ্চা নাকি?ওরা ঠিক বাসায় চলে আসতো।কিন্তু শুধু মায়ের জন্য আমাকে যেতে হচ্ছে।

রাওনাফের কান্ডজ্ঞানহীন কথা শুনে অর্ক তাজ্জব বনে গিয়ে শুধু রাওনাফের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ।অর্ক বুঝে গেছে রাওনাফ আসলে ওদের খুঁজতে যেতে চাইছে না।ওর বোন আর উডবি ওয়াইফ এই রাতের বেলায় বাড়ির বাইরে কিন্তু এই ছেলে দিব্যি শান্ত মস্তিষ্ক নিয়ে কিভাবে এই কথাগুলো বলছে একমাত্র আল্লাহ-ই জানেন।ওর কি একবারও মনে হচ্ছে না ওদের কোনো বিপদ হতে পারে!অর্ক ফোঁস করে তপ্ত একটা নিঃশ্বাস ফেলে গাড়ির চাবি নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়।রাওনাফ অর্কের দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো,

– হু!আমার বোন আমার বউ আর যত চিন্তা ওর।

রাওনাফ জানে ও যদি নাও যায় অর্ক একাই ওদের খুঁজতে যাবে।কিন্তু বোকা ছেলের কাছে না আছে মেহেনূরের ফোন নাম্বার আর না রোশনির।বিশাল এই শহরের কোথায় খুজতে যাবে ওদের?রাওনাফ পকেট থেকে ফোনটা বের করলো ঠিকই কিন্তু হতাশ হয়ে আবার পকেটেই রেখে দিলো।তারপর বাহিরে বেরিয়ে এসে দেখে অর্ক গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের করে চলে যাচ্ছে।রাওনাফ দৌঁড়ে গিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ায়।ব্রেক কষে অর্ক।বিরক্ত হয়ে বললো,

– বিড়ালের মতো রাস্তা কাটলি কেন?

রাওনাফ মুখ ফুলিয়ে বললো,

– তাছাড়া কোনো উপায় ছিল না।আমাকে না নিয়েই তো চলে যাচ্ছিলি।

– তো কি করবো?

কথাটা বেশ ঝাঝালো কন্ঠে বললো অর্ক।রাওনাফ তাড়াতাড়ি করে এসে গাড়িতে উঠে বসতে বসতে বললো,

– গাড়িতে পাওয়ার ব্যাংক আছে?

অর্কের উত্তরের আশায় না থেকে নিজেই খুঁজতে লাগলো।ফোনটা চার্জে বসিয়ে দিয়ে অর্কের দিকে তাকাতেই চমকে উঠে রাওনাফ।অর্ক চোখ রাঙিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে এক্ষুণি গিলে খেয়ে ফেলবে।রাওনাফ মেকি হেসে বললো,

– আসলে ফোনটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।তাই মায়ের কলগুলো……

অর্কের দাঁত কড়মড় করতেই পুরো কথা শেষ না করেই থেমে যায় রাওনাফ।মুখে সিরিয়াস ভাব টেনে বললো,

– বসে আছিস কেন?চল।

সামনের দিকে তাকিয়ে আছে রাওনাফ।অর্ক চুপচাপ ড্রাইভ করছে।মিনিট তিনেক পরেই রাওনাফ ওর ফোনটা হাতে নিয়ে অন করে কাউকে একটা টেক্সট করলো।সেকেন্ডে দশেক পরেই রিপ্লাই আসলো।চেক করে ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে ফোনটা আবার রেখে দিলো।অর্ক রাওনাফের দিকে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললো,

– ওরা কোথায়?

– নীল চত্ত্বরে!

ভ্রু কুচকে আসে অর্কের।এত রাতে নীল চত্ত্বরে?ওদের বাসা থেকে তো নীল চত্ত্বর অনেক দূরে!তাহলে ওরা ওখানে কি করছে?অর্ক আরো কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু রাওনাফ ওকে বলতে না দিয়ে হাতে থাকা ঘড়িটায় তাকিয়ে বললো,

– দেড়টা বাজে তাড়াতাড়ি চল।

অর্ক আর কিছু বললো না।শুধু গাড়ির গতিটা বাড়িয়ে দিয়েছে।মিনিট বিশেক পরেই অর্ক আর রাওনাফ এসে পৌঁছায় নীল চত্ত্বরে।কিন্তু এখানে কোথাও মেহেনূর বা রোশনি কাউকেই দেখতে পাচ্ছে না।গাড়ি থেকে নেমে আসে দুজনই।এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু সামনে এগোতেই রোশনি আর মেহনূরকে দেখতে পেলো। রাওনাফ স্বাভাবিক থাকলেও অর্ক বেশ অবাক হয়।অর্ক দ্রুত পায়ে ওদের কাছে গিয়ে মেহেনূরকে উদ্দেশ্য করে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বললো,

– কয়টা বাজে ম্যাডাম?

– পাঁচ মিনিট কম দুইটা!

মেহেনূর গাড়ি সামনে উঠে আসন পেতে বসে রোশনির হাত থেকে মনের সুখে ফুচকা খাচ্ছিলো আর ফোন স্ক্রল করছিল।ফোনটা হাতে ছিল বলে অর্কের প্রশ্নের ঝটপট উত্তর দিয়ে দেয়।কিন্তু পর মুহূর্তেই পরিচিত কন্ঠস্বরের আন্দাজ করতেই ফোনের উপর থেকে দৃষ্টি সড়িয়ে সামনে তাকায় মেহেনূর।আদোআদো আলো অন্ধকারে অর্কের মুখটা ভেসে উঠতেই এক লাফে গাড়ির উপর থেকে নেমে দাঁড়ায় মেহেনূর।চোখ গোলগোল করে তাকিয়ে আছে।অর্ক রোশনির হাতে থাকা ফুচকার প্লেট থেকে অবশিষ্ট ফুচকাটা তুলে নিয়ে মেহেনূরের মুখে পুরে দিয়ে বললো,

– এএম আর পিএম,এই দুটোর মধ্যে পার্থক্য বুঝো?দুটো শব্দের মধ্যে পার্থক্য শুধু দুইটা বর্ণের হলেও এর বিশালতা কিন্তু অনেক।পরেরবার থেকে কথাটা মাথায় রাখবে।

কথাটা শেষ করে নীরব দৃষ্টি স্থির করে মেহেনূরের দিকে তাকিয়ে আছে অর্ক।অর্কের এ হেন কান্ড দেখে মেহেনূরের চোখ কোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম।রোশনি মেহেনূরের অবস্থা দেখে মুখ টিপে হাসছে।পরমুহূর্তেই অর্ক মেহেনূরের হাতে সন্দিহান চোখে তাকিয়ে বললো,

– বসে বসে তো দিব্যি ফোন গুতোচ্ছিলে তাহলে আন্টির কল রিসিভ করো নি কেন?

মুখে থাকা ফুচকাটা চটজলদি হাতে নিয়ে নেয় মেহেনূর।মেহেনূর কি বলবে বুঝতে পারছে না।অর্ক চোখ রাঙিয়ে বললো,

– খাবারের অপচয় করতে নেই।

– বাসায় ফিরতে হলে খেয়ে নে তাড়াতাড়ি!

মেহেনূর রাওনাফের গলার আওয়াজ পেতেই অর্কের পিছনে উঁকি দিয়ে দেখে রাওনাফ দাঁড়িয়ে আছে।ভাইকে দেখে মুখে হাসি ফুটে উঠে মেহেনূরের।এতক্ষণ চুপ ছিল কারণ ও ভেবেছিল হয়তো অর্ক কোনোভাবে ওদের এখানে দেখতে পেয়ে চলে এসেছে।কিন্তু এখন শিওর হলো ওদেরকে নিতেই এসেছে অর্ক আর রাওনাফ।কিন্তু কি করে জানলো ওরা এখানে আছে?রোশনির দিকে জিজ্ঞাসুক দৃষ্টিতে তাকাতেই রোশনি মাথা নেড়ে বললো, ওই বলেছে।রাওনাফ এগিয়ে এসে রোশনির পাশে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাস করলো,

– গাড়ি কিনেছিস?

কপাল কুঁচকে আসে অর্কের।সামনে তাকিয়ে খেয়াল করে দেখলো আসলেই মেহেনূরের পিছনে একটা নতুন গাড়ি।কারোর মধ্যেই তেমন কোনো কৌতূহলী ভাব দেখতে না পেয়ে অর্ক একটু অবাক হয়।মেহরাব সাহেব ব্যাংক ম্যানেজার ছিলেন।বছর দুয়েক আগেই রিটায়ার্ড করেছেন।ছেলে বিদেশী কোম্পানিতে জব করে গাড়ি কিনতেই পারে।কিন্তু রাওনাফের কথার ভঙ্গিটা এমন ছিল যে বাজার থেকে হয়তো কোনো চকলেট কিনেছে ওরা।কিন্তু গাড়িটা দেখে বেশ দামিই মনে হচ্ছে অর্কের।দুই কোটি তো হবেই।অর্ক তাও রাওনাফের বিষয়টি নিয়ে বেশি মাথা ঘামায় নি।মেহেনূর মুখে ফুচকা পুরে নিয়ে তাড়াতাড়ি শেষ করে একটু পানি খেয়ে নেয়।রোশনি কিছু বলতে যাচ্ছিলো কিন্তু মেহেনূর ওকে থামিয়ে দিয়ে মিনমিনে স্বরে বললো,

– আসলে ভাইয়া আজকে বিকালে ভাবীকে নিয়ে একটু বেড়িয়েছিলাম।কিন্তু বাসা থেকে বের হয়ে আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পরেও কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না।তখন আমার ভীষণ রাগ হয়েছিল।তাই আরকি!

– হুম বুঝেছি।যা গিয়ে গাড়িতে বস।মা কিন্তু খুব রেগে আছে।এখন যদি বাসায় না ফিরিস তাহলে মা বাড়িতে ঢুকতেই দেবে না।

থমথমে মুখ করে রোশনি গিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।মেহেনূর রাওনাফের হাতে চাবিটা দিয়ে বললো,

– ভাইয়া এই নে চাবি।

– আমি চাবি নিয়ে করবো?তোর গাড়ি তুই নিয়ে যা।আমি অর্ককে নিয়ে আসছি।

মেহেনূর রাওনাফের হাতের মুঠোয় চাবিটা ধরিয়ে দিয়ে মুচকি হেসে শান্ত স্বরে বললো,

– ভাবীকেও একটু সময় দে।দেখ তো মেয়েটার মুখটা একদম শুকিয়ে গেছে।কেমন যেন মনমরা হয়ে আছে।কাল রাতের পর আজকে এখন দেখা হলো তোর সাথে।এর মধ্যে তো একটা বারের জন্য ফোন অবধি করিস নি।হয়তো মুখে কিছু বলবে না,তাই বলে অভিমান হতে পারে না বুঝি?তোরা ওই গাড়ি করে বাসায় যা আমরাও আসছি।

রাওনাফ চাবি নিয়ে গিয়ে গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসে অর্ক আর মেহেনূরকে উদ্দেশ্য করে বাই বলে চলে যায়।ওরা চলে যেতেই মেহেনূর অর্কের দিকে তাকিয়ে চোখে থাকা চশমাটা ঠিক করে এক গাল ফোকলা হেসে গাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।

চলবে…….#অগোচরে_তুমি
লেখনীতেঃ স্বর্ণালী তালুকদার

১৩.

গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো মেহেনূর।অর্ক মেহেনূরের চলে যাওয়া পথের দিকে এক পলক তাকিয়ে ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।দ্রুত পায়ে এগিয়ে ড্রাইভিং সীটে গিয়ে বসে অর্ক।সীট বেল্ট লাগাতে লাগাতে আঁড় চোখে তাকায় মেহেনূরের দিকে।হাত পা ছেড়ে দিয়ে সীটে হেলান দিয়ে চোখ বুজে শুয়ে আছে মেহেনূর।মুখটা মলিন হয়ে আছে।অথচ একটু আগেই দিব্যি আয়েশ করে বসে ফুচকা খেয়েছে।তাহলে মুখটা এত মলিন দেখাচ্ছে কেন?আর ওকে এত ক্লান্তই বা দেখাচ্ছে কেন?

– আজ আমি সত্যিই খুব ক্লান্ত!

চমকে উঠলো অর্ক।কপাল কুঁচকে আসে ওর।মেহেনূর আগের মতোই বসে আছে চোখ বুজে।কিঞ্চিৎ বিস্মিত হয়ে মেহেনূরের দিকে তাকিয়ে আছে অর্ক।ওর মনের কথাগুলো শুনে ফেললো নাকি মেয়েটা?সেটা কি করে সম্ভব?

– বাসায় নিয়ে চলুন তাড়াতাড়ি।আমার একটু বিশ্রাম প্রয়োজন।

এবারো চোখ খুললো না মেহেনূর।আগের মতোই নির্বিকার চিত্তে বসে আছে।ওকে দেখে সত্যি অনেক ক্লান্ত লাগছে।মেহেনূরের উপর থেকে দৃষ্টি সড়িয়ে অর্ক কোনো শব্দ ছাড়াই ড্রাইভিং এ মনোযোগ দেয়।অর্কের মাথায় অনেকগুলো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।হঠাৎ এত রাতে এই নীল চত্ত্বরে মেহেনূর আর রোশনি কি করতে এসেছিল?তখন রোশনি কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু মেহেনূর রোশনিকে বলতে না দিয়ে ওই বলেছে।যেটা অর্কের কাছে একটু খটকা লেগেছে।তখন রোশনি কি বলতে চাচ্ছিলো?মেহেনূরেরই বা এত ক্লান্তির কারণ কি?এইসব প্রশ্নের উত্তর অর্কের জানা নেই।ক্রস করে যাওয়া গাড়ির শব্দে হুশ ফিরে অর্কের।নিজের মন মস্তিষ্কের উপর কি ওর কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে নাকি?হঠাৎ করে মেহেনূরকে নিয়ে ও এত ভাবছেই না কেন?ওকে নিয়ে এত ভাবার কি আছে?অর্ক আর কোনো ভাবনা ওর মাথায় আসতে দেয় নি।চোখ বন্ধ করে মাথা ঝেড়ে ক্ষুদ্র একটা নিঃশ্বাস ফেলে ড্রাইভ করছে অর্ক।ড্রাইভিং এর ফাঁকে ফাঁকে এক পলক তাকাচ্ছে মেহেনূরের দিকে।মেহেনূর অনেকক্ষণ আগেই ঘুমিয়ে গেছে।ঘুমের ঘোরে কাত হয়ে পড়ে যেতে নিলেই অর্ক ওর বাম হাত দিয়ে ধরে নেয়।মেহেনূরের মাথাটা আস্তে করে ওর কাঁধে রাখে।তা না হলে ঘুমের ঘোরে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেতে পারে।আগের তুলনায় গাড়ির স্পীড অনেক কমিয়ে দিয়েছে অর্ক।নয়তো মেহেনূরের ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সম্ভাবনা আছে।অর্ক মুচকি হেসে মেহেনূরের চোখ থেকে চশমাটা খুলে গাড়ির সামনে রাখে।কারণ এই চশমাটা ওর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।চশমার ফ্রেমের নড়াচড়ার জন্য ঘুমের মধ্যেই মেহেনূরের অস্বস্তি হচ্ছিলো।তাই ওটা সড়িয়ে দিয়েছে অর্ক।

মেহেনূরদের বাসার সামনে এসে গাড়ি থামায় অর্ক।সামনে তাকিয়ে দেখে রাওনাফ আর রোশনি এখনো গেইটের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে।ওরা বাসার ভেতরে যায় নি।অর্ক বুঝতে পেরেছে মেহেনূরের জন্যই ওরা ওয়েট করছে।আর এইদিকে গাড়ি থামার কয়েক সেকেন্ড পড়েই মেহেনূরের ঘুম ভেঙে যায়।চোখ খুলে নিজেকে অর্কের কাঁধে শুয়ে থাকতে দেখে চমকে উঠে।চটজলদি মাথা তুলে নেয় মেহেনূর।অর্কের সামনে অস্বস্তিতে পড়ে যায় ও।মাথার চুল আর ওড়নাটা ঠিক করে নিয়ে গাড়ির সামনে রাখা চশমাটা চোখে পড়ে নিয়ে ধীর কন্ঠে বললো,

– সরি!

শব্দটা উচ্চারণ করেই গাড়ি থেকে দ্রুতগতিতে নেমে চলে যায় মেহেনূর।অর্ক ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে মেহেনূরের দিকে।মেহেনূর আর রোশনি বাড়ির ভিতরে চলে যায়।রাওনাফ এগিয়ে এসে অর্ক কাছে দাঁড়ালো।অর্ক কথা না বাড়িয়ে রাওনাফকে গুড নাইট জানিয়েই চলে আসে।রাওনাফও হেসে মাথা নাড়িয়ে সায় দেয়।

________________

আজকে একটু সকাল সকালই ঘুম ভেঙে যায় মেহেনূরের।রাতে মা বাবা কারোর সাথেই দেখা হয় নি।বাসায় ঢুকে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল।যা হবে সকালে দেখা যাবে এটা ভেবেই মেহেনূর শুয়ে পড়েছিল।কিন্তু এখন তো সকাল হয় গেছে।এখন কি হবে?বাবা মাকে কিভাবে ফেইস করবে?মেহেনূর ওর ভাবনা মধ্যেই রেনুফা বেগমের ডাক শুনতে পেলো।আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে।পাশে তাকিয়ে দেখে রোশনি বিছানায় নেই।তারমানে রোশনি আরো আগেই উঠে গেছে।মেহেনূর আর একমুহূর্তও দেরি না করে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যায়।ডাইনিং টেবিলে বসে খবরের কাগজে মুখ গুজে বসে আছেন মেহরাব সাহেব।মেহরাব সাহেব চেয়ার টানার শব্দ পেয়ে মাথা উপরে তুলে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

– শুনলাম আপনি নাকি নতুন গাড়ি কিনেছেন?

চমকে উঠে মেহেনূর।বাবার দিকে তাকিয়ে গলা শুকিয়ে আসছে ওর।কিন্তু সেটা বাবাকে বুঝতে দেওয়া যাবে না।মনে মনে ভয় পেলেও মেহরাব সাহেবের সামনে সেটা প্রকাশ করার কোনো লক্ষণ মেহেনূরের মধ্যে দেখা যায় নি।চেয়ার টেনে বসে স্বাভাবিক ভাবেই বললো,

– গাড়িটা আমাদের প্রয়োজন ছিল বাবা।তুমি বেশির ভাগ সময়ই পায়ে হেটে মেইন রাস্তা অব্দি যাও।কি ভেবেছিলে তুমি?আমরা এখানে থাকি না বলে এইসব আমাদের চোখে পড়ে না?মেইন রাস্তাটা একটু দূরে তাই আমাদের বাসা থেকে কোথাও যেতে নিলে এখানে সহজে কোনো গাড়ি পাওয়া যায় না।আমাদের আশেপাশে যারা থাকে সবাই নিজেদের গাড়ি নিয়ে চলা ফেরা করে।আর বাবা পায়ে হেটে যাবে!তোমাদের বয়স হয়েছে বাবা।তোমাদের এতো সাফার করার কোনো প্রশ্নই আসে না।আমাদের নিজেদের একটা গাড়ি থাকলে ক্ষতি কি।তাছাড়া আমাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে অন্যদের গাড়ি চাওয়াটা কেমন দেখায় না বাবা?

– আসতে পারি?

আঁতকে উঠে মেহেনূর।গলার স্বরটা পরিচিত মানুষের।কাল রাতের কথা মনে পড়তেই মেহেনূরের কেমন যেন অস্বস্তি হতে লাগলো।অর্ক মেহরাব সাহেবের পাশের চেয়ারটায় বসতে বসতে গলার স্বর উঁচু করে বললো,

– আন্টি খুব খিদে পেয়েছে খেতে দাও তাড়াতাড়ি।

অর্কের গলার আওয়াজ শুনে রাওনাফও ওর ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে।রোশনি আর রেনুফা বেগম টেবিলে খারাব পরিবেশন করে দেয়।তারপর সবাই একসাথে খেতে বসে।

– বাই দ্যা ওয়ে আঙ্কেল,তুমি ড্রাইভ করতে পারো?

খাওয়ার মাঝেই প্রশ্নটা করে বসে অর্ক।মেহরাব সাহেব উত্তর দেওয়ার আগেই মেহেনূর ধীর কন্ঠে বললো,

– বাবা আমি চলে যাওয়ার আগে একজন ড্রাইভার ঠিক করে রেখে যাবো।তোমাদের কোনো সমস্যা হবে না।

মেহরাব সাহেব এতক্ষণ কোনো কথা না বললেও এখন মেহেনূরের কথায় শীতল কন্ঠে বললেন,

– তা না হয় বুঝলাম।কিন্তু আমাকে একটা কথা বল তো,

– কি কথা বাবা?

– তুই এত টাকা দিয়ে গাড়ি কিনতে গেলি কেন?আর তুই এত টাকা বা কোথায় পেলি?

থতমত খেয়ে যায় মেহেনূর।বাবার সামনে যে ও এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে পারে সেটা তো ওর মাথায়ই আসে নি।এখন কি উত্তর দিবে?মাথা নিচু করে চুপচাপ খাবার খাচ্ছে আর চোখ এদিক সেদিক ঘোরাচ্ছে।

– কি হলো কথা বলছিস না কেন?

– কিস্তিতে নিয়েছি বাবা!আমার কিছু সেভিংস ছিল ওটা দিয়েছি আর বাকি টাকাটা একবছরে পরিশোধ করলে হবে।

কথাটা মিনমিনে স্বরে বললো মেহেনূর।রোশনি আর রাওনাফ বাদে বাকি সবাই অবাক হয়ে মেহেনূরের দিকে তাকিয়ে আছে।এই মেয়ে কি বলছে এইসব এত দামী গাড়ি নাকি কিস্তিতে নিয়েছে।তাও আবার এক বছরের ভেতরে পরিশোধ করতে হবে। মেহরাব সাহেব কড়া গলায় বললেন,

– এত টাকা তুই পাবি কোথায় শুনি?

বাবা যে রেগে যাচ্ছে তা আন্দাজ করতে পারছে মেহেনূর।মুচকি হেসে বললো,

– আমি কেন টাকা দিতে যাবো?আমার মনে হয়েছিল এই মুহুর্তে আমাদের একটা গাড়ির প্রয়োজন তাই গাড়ি কিনেছি!শো-রুমের মালিক তো আমাকে আর এমনি এমনি গাড়িটা দিয়ে দিতো না,তাই কিছু টাকা দিয়েছে আরকি।আর বাবা তোমার যে একটা ছেলে আছে সেই কথা কি তুমি ভুলে গেছো নাকি?টাকা তো ভাইয়াই দিবে তুমি চিন্তা করো না।

মেহরাব সাহেব রাগী চোখে রাওনাফের দিকে তাকায়। রাওনাফ বাবার চাহনি দেখে মেকি হেসে শুধু মাথা নাড়িয়ে মেহেনূরের কথার সাথে সায় দেয়।বাবার হাত থেকে বাঁচতে ভাইকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে মেহেনূর।রোশনি আর মেহেনূর দুজনেই ঠোঁট টিপে হাসছে।মেহরাব সাহেব যে মেয়ের এহেন কাজে মন থেকে বেশ প্রশান্তি পাচ্ছেন তা খুব ভালোই আন্দাজ করতে পারছেন রেনুফা বেগম।শুধু উনাদের একটু যাতায়াতের জন্য এত দামী একটা গাড়ির কিনার কি দরকার ছিল না,এই যা।প্রসঙ্গ পরিবর্তন করতে রেনুফা বেগম ধীর কন্ঠে বললো,

– খাওয়ার সময় এত কথা বলতে নেই।

সবাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিয়েছে।মেহরাব সাহেব কোথাও বেড়িয়েছেন।অর্ক আর রাওনাফ ড্রয়িং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে।

– মা আমি আর ভাবী একটু বের হচ্ছি।

মেহেনূরের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে অর্ক আর রাওনাফ মেহেনূরের দিকে তাকায়।রেনুফা বেগম রান্নাঘর থেকে ট্রে-তে করে দুটো কফির মগ নিয়ে এসে অর্ক আর রাওনাফের সামনে রাখেন।তারপর মেহেনূর আর রোশনির সামনে এসে দাঁড়িয়ে কঠোরভাবে জিজ্ঞাস করেন,

– আজকে আবার কোথায় যাচ্ছিস?

কালকে দেরি হওয়ার জন্য যে রেনুফা বেগম ওদের কিছুই বলে নি তার জন্য মেহেনূর আর রোশনি দুজনেই একটু অবাক হয়েছিল।আসলে রেনুফা বেগমকে রাওনাফই সামলে নিয়েছিল।আর রেনুফা বেগম ওদের দেরি হওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন না।ফোন রিসিভ না করায় দুঃচিন্তা করছিলেন।হুট করেই রেনুফা বেগমকে জড়িয়ে ধরলো মেহেনূর।মায়ের গালে চুমো দিয়ে আহ্লাদী গলায় বললো,

– মা আমরা শপিং করতে যাচ্ছি।শপিংয়ে যাওয়ার আগে একটু ঘুরাঘুরি করবো।সন্ধ্যার আগেই বাসায় চলে আসবো প্রমিজ।

– ঠিক আছে মনে থাকে যেনো।

– ওকে!

বাসা থেকে বেরুনোর জন্য পা বাড়াতেই মেহেনূরের ফোনে মেসেজ আসে।ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করতেই মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠে।ফোনটা আবার ব্যাগে রেখে দিয়ে রাওনাফকে উদ্দেশ্য করে বললো,

– ভাইয়া বিকালে আঙ্কেল আন্টি আর রোশান আসছে।তাদেরকে রিসিভ করতে তুই যাবি নাকি আমরা যাবো?

– ওই যাবে।তোদের আর এয়ারপোর্টে যেতে হবে না।তোরা যেখানে যাচ্ছিলি ওইখানেই যা।আর সন্ধ্যার আগেই যেনো তোমাদের আমি বাসায় দেখি। মনে থাকবে?

কড়া গলায় কথাগুলো বললেন রেনুফা বেগম।রোশনি শাশুড়িকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বললো,

– মনে থাকবে মা।আমরা এখন আসি কেমন।

– ঠিক আছে,সাবধানে যেও।

ওরা চলে যেতেই অর্কও উঠে এসে বললো,

– আন্টি আমিও যাই।আমাকেও একটু বেরুতে হবে।এনজিওর বাচ্চাদের জন্য কিছু কেনা কাটা করতে হবে।আন্টি গেলাম তাহলে।

– তুমিও শপিংয়ে যাবে?তাহলে তো মেহেনূরদের সাথেই যেতে পারতে।

অর্ক ওর পায়ের নিচে কিছু একটার উপস্থিতি টের পেয়ে নিচে তাকিয়ে দেখে একটা কাগজ পড়ে আছে।নত হয়ে কাগজটা হাতে নিয়ে দেখেই ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে কাগজটা পকেটে রেখে দিয়ে বললো,

– সমস্যা নেই আন্টি।আমি বাইক নিয়ে যাবো।আসি এখন।

রাওনাফ গলার স্বর উঁচু করে বললো,

– বিকালে কি তুই ফ্রী আছিস?

– তোর জন্য আমি অলওয়েজ ফ্রী।বিকালে বাসায় থাকিস তুই।আমি বাসা থেকেই তোকে পিক করে নিবো।এখন আসছি আমি।

চলবে…….

#

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here