#অচেনা_শহর 💖
#সিজন (২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[১৩]
আদ্র নিজের মত কথা বলে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে গটগট করে বেরিয়ে গেল রুম থেকে। আমি স্তব্ধ হয়ে ওই খানে ব্যালকনিতে বসে পরলাম। কথা বলার সময় আদ্রর চোখের কোণে ও পানি ছিল। আদ্র অনেক কষ্ট পেয়েছে ওর চোখ মুখ বলে দিচ্ছে। কিন্তু আমি তো ওর কথা ভেবেই কিছু বলিনি। আমি চাইনি নিজের মায়ের সম্পর্কে খারাপ মনোভাব জন্ম নিক।
কিন্তু সেই তো সব জানলো কিন্তু অন্য ভাবে আর আমার উপর রাগ তৈরি হলো। আদ্রর রাগ কিভাবে ভাঙাবো আমি। কিছু মাথায় আসছে না আমার।
বেলকনির সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছি।
আদ্রর ইগনোর করাটা বুকের ভেতর গিয়ে লাগছে।
আদ্রকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে ওইখানেই ঘুমিয়ে পেরেছি। ঘুম ভেঙ্গে আধো-আধো চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি আমি রুমে শুয়ে আছি। কালকে রাতের কথা মনে পড়তেই ধরফরিয়ে উঠে বসি। আমি তো বারান্দায় ছিলাম এখানে কখন এলাম ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল হয়ে গেছে। আমি বিছানায় কিভাবে আসলাম আমিতো বারান্দায় বসে ছিলাম। ঐখানে তো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
তাহলে কি আদ্র আমাকে এখানে রেখেছে। কিন্তু ও কোথায়? আমি বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে বাইরে আসি। সিঁড়ির উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠি।নিচে আদ্রর বাবা মা বসে আছে। আদ্র সেখানেই আছে।
______
আদ্র নিজের বাবা-মা দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আদ্রর বাবা ছেলের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,,
মাই সান তুমি দেশে চলে এসেছ কেন? আবার এক সপ্তাহ ধরে দেশে এসেছ আমাদের সাথে যোগাযোগ করছ না কেন ? আমরা কতটা টেনশনে ছিলাম তুমি জানো। তোমার মা তো সারাদিন কেঁদে কেটে কি হাল করেছে নিজে দেখো?
উনি খুব নরমভাবে কথাগুলো বলছে কিন্তু আদ্র তাতে কোনো ভ্রুক্ষেপ করছে। গম্ভীর হয়ে চোখমুখ শক্ত করে বসে আছে। আদ্রর মা উঠে আদ্রর হাত ধরে বলল,,
বেটা তুই কোথায় ছিলি?এ বাসায় তো ছিলে না আমরা তো খোঁজ নিয়েছিলাম। এভাবে লুকিয়ে কেন ছিলি আমাদের টেনশন দিয়ে তোর খুব ভালো লাগে তাইনা।
অভিমানী গলায় বলল।
আদ্র নিজের হাতের উপর থেকে মায়ের হাত সরিয়ে দিয়ে দিলো।
আদ্রর মা এটা দেখে বিশ্মিত হলো। আদ্র নিজের মায়ের দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,,,
তোমাদের সত্যি চিন্তা হয় আমার জন্য এত টেনশন করো আমার কে নিয়ে?
ঠাট্টা সুরে বলল।
আদ্রর মা অবাক হয়ে বলল,
কি সব বলছিস চিন্তা হবে না আবার ?তুই আমার একমাত্র ছেলে তোর জন্য আমরা চিন্তা করবো না। তোকে নিয়ে কত চিন্তা করে সেসব কি আর তুই বুঝিস। বুঝলে এভাবে মাকে কষ্ট দিতে পারতি। বাসায় না গিয়ে এভাবে লাপাত্তা হতে পারতি। চল বাসায় ফিরে চল।
বাসায় যাওয়ার কথা শুনে চিৎকার করে দাঁড়িয়ে পরল,
তোমরা চলে যাও। আমি তোমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে চাইনা। যতই হোক তোমরা আমার বাবা-মা আমি চাইনা তোমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে।
আদ্রর চিৎকার কন্ঠ শুনে আদ্রর বাবা-মা দুজনেই ভড়কে গেল আর দাঁড়িয়ে পরলো,
এমন করছিস কেন আমাদের সাথে? কি করেছি আমরা?
হতবাক হয়ে নিজের বাবা মার দিকে তাকিয়ে আছে আদ্র। এতকিছু করার পরও এখন জিজ্ঞেস করছে কি করছে?
তোমরা কি সত্যি বুঝতে পারছ না তোমরা কি করেছ?
আদ্রর কথা শুনে আদ্রর মা মাথা নিচু করে ফেলল। উনি বুঝতে পারছেন আদ্র কেন এমন করছে….
উনি এগিয়েছে আদ্র কে বলল,,,
আদ্র বেটা যা করেছি তোর ভালোর জন্য করেছি। ওই মেয়েটা তোর জন্য উপযুক্ত না। আমি মানছি তুই ওই মেয়েটাকে খুব ভালোবাসি। ও গরিব তাতে আমার সমস্যা ছিল না কিন্তু ওই মেয়েটা একটা চরিত্রহীনা। আর অনেকের সাথে বাজে সম্পর্ক আছে সেগুলো প্রমাণ আমার কাছে আছে।আমি জেনে শুনে ওমন একটা মেয়েকে কিভাবে নিজের পুত্র বধু হিসেবে মেনে নেব বল।প্রথমে তো আমি মেনে নিয়েছিলাম বল কিন্তু এসব জানার পর আমি আর মানতে পারিনি আর তোকে বললে তুই তো আমার কোন কথাই শুনবি না শুধু বাসা থেকে বেরিয়ে আসবি বলছিলি। তুই ওর প্রেমে অন্ধ হয়ে ছিলি তাই তোর ভালোর জন্য আমি সব করেছি। আমাকে ভুল বুঝিস না। বাবা মা কখনো সন্তানের খারাপ চায়না। আমি যা করেছি সব তোর ভালোর জন্য। ওই মেয়েটাকে ভুলে যা আমি তোর জন্য তোর উপযুক্ত মেয়ে এনে দেবো। ওই মেয়ের থেকেও সুন্দরী মেয়ে দেখিস।
রাগে আদ্রর শরীর কাঁপছে হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
মায়ের সাথে এখন বাবা যুক্ত হলো দুজন মিলে আদ্রকে স্নেহার নামে খারাপ কথা বলতেছে। আদ্র চুপ করে সব কথা শুনতেছে।ওপরে দাঁড়িয়ে আমি সব কথা শুনতে পাচ্ছি কারন সবাই অনেক জোরে জোরে কথা বলছে। আমার নামে এত খারাপ খারাপ কথা শুনে আমার নিজের চোখ দিয়ে গলগল করে পানি পড়তে লাগল। উনারা আমাকে এত খারাপ ভাবে আর আদ্র ও সব কথা নীরবে শুনছে। তাহলে কি আদ্র সব কথা বিশ্বাস করছে। নিজের নামে এত বাজে কথা আর শুনতে পাচ্ছি না কানে হাত চেপে রুমে চলে এলাম।
বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদতে লাগলাম।
____________
আতিক চৌধুরী ও তামান্না বেগম আদ্রর বাসা থেকে বেরিয়ে এলো।আতিক চৌধুরী থমথমে মুখ করে বাইরে এলো তারপর স্ত্রীর দিকে রেগে তাকালো।
তামান্না বেগম হু হু করে কেঁদে যাচ্ছে। তার দিকে তাকিয়ে আতিক চৌধুরী রেগে উঠলো,,
তোমার ছেলের কতো অধঃপতন হয়েছে দেখ।এতো প্রমান দেখালাম কিন্তু তোমার ছেলে কিছু বিশ্বাস করলো না উল্টা ওই মেয়ের জন্য আমাদের সাথে চিৎকার করলো। তার জন্য তুমি চোখের জল ফেলছো কেন?
রাগে আতিক চৌধুরী কপালের রগ ফুলে উঠেছে। তিনি চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে তামান্না বেগম এর দিকে।
ওই ছেলের জন্য কাঁদছো তুমি?
হুম কাঁদছি আমার একটাই ছেলে আর সে কিনা আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলো আমি কাঁদবো না। তোমার তো কিছু হচ্ছে না পাষাণ তুমি ছেলেকে মানাতে পারলে না। আমার ছেলেটার কি হাল হয়েছে দেখেছো।
তোমার ছেলে ওই মেয়ের জন্য পাগল হয়ে গেছে তার জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ অফ করেছে। এমন ছেলের দরকার নেই।
বলেই হনহন করে গাড়িতে উঠে বসলো। তামান্না বেগম আদ্রর বাসায় দিকে তাকিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে বসলো।
আর সারা রাস্তা স্নেহাকে বকতে বকতে এলো।ওই মেয়ের জন্য আজ আমার ছেলে আমার থেকে দূরে।
__________
অন্তরা এসে হাজির। খুশীতে লাফিয়ে চলে এসেছে এসেই দেখে আদ্র মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে বসে আছে।
অন্তরা একাই এসেছে হৃদয় এর সাথে ওর মান অভিমান চলছে।
এসেই আদ্রর সামনে গিয়ে বলল,
কি খবর ভাইয়া আপনার মন খারাপ নাকি?
অন্তরার কন্ঠ শুনে আদ্র ওর দিকে তাকিয়ে মুখে মেকি হাসি ফুটিয়ে তুলে বলল,,
না তো।
কিন্তু আমার তো তাই মনে হচ্ছে।যাই হোক আপনি এইভাবে চলে এসেছে শুনে এতো খুশি হয়েছি।
তাও একজন তো খুশি হলো আমি আসায় তো অনেকে অখুশি হয়েছে।
কে আবার অখুশি হয়েছে।
কে আবার তোমার বান্ধবী।
কি যে বলেন ওই তো সব থেকে খুশী হয়েছে। ও কোথায়?
আদ্র রুম দেখাতেই অন্তরা উপরে চলে গেল।
#অচেনা_শহর 💖
#সিজন (২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[১৪]
বেলকনিতে বসে আছে সিগ্ধ। মহুয়ার বাবা সিগ্ধকে শাসিয়ে গেছে রুমে থেকে কালকে। আর মহুয়া আর ওর সাথে কোন কথা বলেনি বিছানায় শুয়ে পরেছে।সকালে উঠে সবাই খাবার টেবিলে জরো হলো,,
মহুয়ার বাবা বললেন,
মাইশা টা বিদেশে আটকে আছে ওকে দেশে আনতে হবে। মেয়েটাকে বিপদে ফেলেছে ওই আতিক এর ছেলে। ওর সাথে তো আমার বুঝা পরা আছে।
বলেই ফুস করে উঠলো মহুয়ার বাবা। মহুয়া সেদিকে তাকিয়ে বলল,
মাইশা কে বলেছিলাম ওই ছেলেকে ছাড়। কিন্তু ও তো ওই বিবাহিত ছেলের জন্য পরে আছে।
মহুয়ার বাবা মহুয়ার দিকে তাকিয়ে রেগে বলল, তোমার থেকে ভালো কাউকে চয়েজ করেছিল তাও। তুমি তো একটা ফকিন্নির বাচ্চা কে নিয়ে আমার মুখে চুলকানি দিয়ে চলে গেছিলে। এখন সে তোমার গায়ে হাত তোলে।
মাথা নিচু করে হজম করলো কথা।
তারপর মাথা উঁচু করে বলল,,
বাবা আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মহুয়ার বাবা মা দুজনেই ফিরে তাকাল, কি?
সিগ্ধকে আমি ডিবোস দেবো।
মহুয়ার কথা শুনে ওর বাবা মা দুজনের মুখ ঝলমল করে উঠল।এতো দিনে মেয়ের বুদ্ধি হয়েছে।
______________
অন্তরা একঘন্টা কাটিয়ে চলে গেছে।অন্তরা চলে যাবার সাথে আদ্র ও বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। আমি ওর সাথে কথা বলতে চাইছিলাম কিন্তু বলা হলো না।
বারোটার দিকে বের হয়েছে এখন চারটা বেজে কখন বেরিয়ে গেছে এখনো বাসায় আসেনি আমি চিন্তিত হয়ে চাতক পাখির মতো দরজার দিকে তাকিয়ে আছি। জাইন বাসায় ই ওর থেকে জানলাম ও কিছু জানে না। ওর ফোন দিয়ে আদ্র কে কল করেছি ফোন বাসায় ই রেখে গেছে।
ফোন হাতে খাটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছি। আদ্র কি ওই সব বিশ্বাস করলো ও কি আমাকে খারাপ ভাবে।
সারা শরীর কেমন ব্যাথা অনুভব করছি নরতে ইচ্ছে করছে না। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসছে শীত লাগছে। ট্রি টেবিলের উপর থেকে পানি নিয়ে খেয়ে ওইভাবেই শুয়ে পরলাম।
মাথা ব্যাথা ছিঁড়ে নিচ্ছে। সারা শরীর কেঁপে উঠছে এতো শীত কেন করছে ?পায়ের কাছে থেকে চাদর নিয়ে শরীরে জরিয়ে নিলাম।
সেই মুহূর্তে আদ্র বাসায় এলো আর সোজা রুমে এসে আমাকে এভাবে অবেলায় শুয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকালো।
আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো,,,
স্নেহা এই অসময়ে এমন শুয়ে আছো কেন?
আমি আদ্র কণ্ঠ শুনে চোখ মেলে তাকালাম। আদ্র আমার দিকে ঝুঁকে তাকিয়ে আছে ভ্রু কুঁচকে।
আমি দুর্বল গলায় বললাম, আপনি কোথায় ছিলেন?
আদ্র আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে কেমন চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। অসুস্থ লাগছে স্নেহা কে। ও উঁচু হয়ে পাশে বসে ওর কপালে হাত রাখতে যাবে। তখনই স্নেহা উঠে বসে,
আর এক হাত বাড়িয়ে আদ্র হাত চেপে ধরে,
আদ্র আপনি কোথায় গিয়েছিলেন? আপনিও কি সবার মত আমাকে খারাপ ভাবেন।
স্নেহার স্পর্শ পেয়ে আদ্র চমকে উঠলো। হাত এত গরম হয়ে আছে আগুনের মতো। স্নেহার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে নিজে হাত বাড়িয়ে স্নেহার কপালে রাখল, কপাল ও আগুনের মত গরম হয়ে আছে কপাল গালে হাত রেখে বুঝতে পারল স্নেহার জ্বর হয়েছে। স্নেহা তাকাতে পারছে না বসে থাকতে পারছেনা কাঁপছে। ওইভাবেই আমার দিকে শুকানো মুখে তাকিয়ে আছে।
স্নেহা তোমার তো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে। এত জ্বর কিভাবে আসলো শুয়ে পড়ো উঠলে কেন?
আদ্র কথাটা বলে আমাকে কাঁধে ধরে শুইয়ে দিতে গেল। কিন্তু আমি চট করে আদ্রর গলা জড়িয়ে ধরলাম। আর জড়ানো কণ্ঠে বলে উঠলাম,
বলুন না আপনিও কি ভাবেন? আমি খারাপ আমি চরিত্রহীন? আপনার মা-বাবা যেসব বলে গেছে সেসব কি আপনি বিশ্বাস করেছেন?
আদ্র আমার কথা শুনে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর বলে উঠলো,
স্নেহা এসব পরে হবে তুমি অসুস্থ। খাবার ও তো খাও নি দাঁড়াও আমি খাবার নিয়ে আসছি তুমি বসো ওষুধ খেতে হবে তো।
আদ্র আমার থেকে উঠে যেতে চাইলো আমি জোর করে ধরে রাখলাম ওর শার্ট।
ছলছল চোখে তাকিয়ে বললাম,,
আপনি আমার কথা এরিয়ে যাচ্ছেন কেন তাহলে কি সব বিশ্বাস করেছেন? বিশ্বাস করুন আমি….
আদ্র এগিয়ে এসে আমার গালে হাত রেখে বলল,,
কাঁদছো কেন? তোমার কেঁদে কিছু বলার দরকার নাই। আমি আমার বউকে খুব বিশ্বাস করি। তুমি কেমন সেটা আমি তোমার থেকে বেশি ভালো জানি। আমার স্নেহা কোন খারাপ কাজ করতে পারে না এটা আমার বিশ্বাস। আমি এসব তোমাকে কখনো জিজ্ঞেসই করতাম না কারণ আমি জানি আমার স্নেহা কখনো এসব করবে না। এই সবকিছু কারো চাল আর তাকেও আমি এর উপযুক্ত শাস্তি দেবো। যার জন্য তুমি মায়ের চোখে এত খারাপ সেই তোমাকে মায়ের কাছে ভালো প্রমাণ করবে আর নিজের দোষ স্বীকার করবে।এই সামান্য বিষয় ভেবে তুমি কাঁদছো তুমি এখনো আমাকে চিনতে পারোনি।
আদ্র কথাগুলো খুব নরমকন্ঠে বলছিল আমি এক দৃষ্টিতে তার মুখের দিকে তাকিয়ে কথা শুনছিলাম। আদ্রর আমার প্রতি আত্মবিশ্বাস দেখে আমার চোখ দিয়ে ফোটা জল গড়িয়ে পরলো। এই মানুষটাকে কত কষ্ট দিয়েছি এক সময়। কতটা ভালবাসে আমাকে। আদ্র আমার চোখের পানি মুছে দিলো। আর বলল,,
আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে এই অসুখ বাধালে তাইনা।
আমি আদ্রর দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,,
আমাকে ক্ষমা করে দেন আমি শুধু আপনাকে ভুল বুঝি।
আদ্র আমার দিকে এগিয়ে কপালে নিজের ঠোট ছোয়ালো। আদ্র স্পর্শ পেয়ে আমি চোখ বন্ধ করে ওর স্পর্শ অনুভব করতে লাগলাম। সরে এসে বলল,,
তুমি এখনো তোমার আদ্র কে চিনতে পারোনি। আর তার ভালোবাসা গভীরতা কত খানি এখনো আন্দাজ করতে পারোনি।
কথাটা বলে আদ্র আমাকে বসিয়ে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আমি আদ্রর যাওয়ার দিকে অপলক তাকিয়ে আছি। আজ কতদিন পর আদ্র ভালোবাসার স্পর্শ পেলাম। বাম হাত কপালে নিয়ে নিজের ঠোঁটের কাছে এনে হাতে চুমু খেলাম। জানো আদ্রকে চুমু দিচ্ছি এটা ভেবে লজ্জা পেলাম।
পাঁচ মিনিটের ভেতরে আদ্র প্লেট ভর্তি খাবার নিয়ে এলো।খাবারটা আমি রান্না করেছিলাম তখন শরীরটা ভালই ছিল তারপর কিভাবে যে গা কাঁপিয়ে জ্বর চলে এলো বুঝতেই পারলাম না।
গভীর ভাবে তাকিয়ে আদ্রকে বললাম,,আপনি আমাকে ক্ষমা করেছেন তো।
আদ্র আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে খাবার মেখে মুখের কাছে আনলো,,
আমি উত্তরের আসায় তাকিয়ে আছি খাচ্ছি না।
খাচ্ছি না দেখে বিরক্ত হয়ে আদ্র বলল,,, খাচ্ছো না কেন?
আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দিলেন না।
যদি বলি করিনি এখনও।
করিনি শুনে আমার বুকটা ছ্যাঁত করে উঠলো। আমি মলিন মুখ করে আদ্র দিকে তাকিয়ে আছি।
আদ্র আমার দিকে তাকিয়ে মুখে হালকা হাসি টেনে বললো,,,
তোমার উপর তো আমি রাগ করিনি তাহলে ক্ষমা করার প্রশ্নই উঠছে কেন?
কথাটা শুনে আমি চমকে আদ্রর দিকে তাকালাম,,, মানে?
মানে সিম্পল আমিতো কার ওপর রাগ করিনি।
আমি আদ্রর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বললাম,
তাহলে ওসব কি ছিলো?
আমি তোমার ওপর রাগ কখনই করতে পারব না আমার তো মন খারাপ হয়েছিল যে তুমি এত বড় কথাটা আমার থেকে লুকিয়ে ছিলে আমি এটা মানতে পারছিলাম না আমি চাই তুমি সব কিছু আমাকে বল কোন কিছু আমার থেকে না লুকাও।
আমি বিস্মিত হয়ে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি।
বিষ্ময়ে আমার মুখটা হা হয়ে গেছে। তখনই ফট করে আদ্র আমার মুখে আবার ঢুকিয়ে দেয়। আমি চোখ বড় বড় করে আদ্র দিকে তাকাই।
তুমি আগে তো এতো ভালো করে আমার সাথে কথাই বলনি কখনো সব সময় শুধু ঝগড়া করার তালে থেকেছ।আর এখন দেখো কত উন্নতি হয়েছে তোমার ঝগড়ার ধারের কাছেও যাওনা। স্বামী হয়ে গেছি সেটা বুঝেছো তাহলে স্বামীকে সম্মান করে কথা বলছো সব সময়।
~~চলবে~~
~~চলবে~~