#অদ্ভুত_সুখানুভূতি
#সাদিয়া_আহমেদ_রোজ
#পর্ব_০৪
রোজ, নীলয় আর নিভিকে নিয়ে ক্লাসে চলে গেলো।। সেকেন্ড পিরিওডে রোজকে ডাকতে আসলো পিয়ন। রোজও হাসি মুখে যেতে লাগলো। ওকে দেখে মনে হচ্ছে ও বোধ হয় এটার অপেক্ষাতেই ছিলো। প্রিন্সিপালের কেবিনে মুখোমুখি দাড়ানো সারা, সাথি, সাঞ্জানা আর রোজ।
প্রিন্সিপাল : কলেজে প্রথমদিন এসেই সিনিওরদের সাথে বেয়াদবি করেছো,,, এর ফল কি জানো.? সরি বলো ওদের।
রোজ : কে কাকে বলবে বুঝতে পারছি না স্যার।। কাইন্ডলি ডেটিকেট করে বলুন প্লিজ।
সাথি : দেখেছেন স্যার কিভাবে মুখে মুখে তর্ক করে.? ওকে তো কলেজে রাখাই ঠিক না। ওকে রাস্ট্রিকেট করে দিন স্যার।
রোজ : বড় আপু কি বলছেন আপনারা..? আমি তো আপনার ছোট বোনের মতো,, কেন বানিয়ে বানিয়ে বলে আমাকে বকা খাওয়াচ্ছেন..? কি করেছি আমি.?
প্রিন্সিপাল : তুমি ওদের কামড় দিয়েছো…. থাপ্পড় মেরেছো…. ফেলে দিয়েছো। প্রথমদিন এসে এতো সাহস কোথায় পেলে.?
রোজ : এসব কি বলছেন স্যার,, আমি আপুদের কেন ফেলবো,, আমি তো ওনাদের চিনতামও না। ওনারাই আমাদের ডেকেছিলো,, কলেজে যে কারোর কাছে শুনে দেখুন। আমি অনেক গরীব ঘরের মেয়ে,, শুধু একটু পড়ার জন্য কলেজে এসেছি। এমন ঝামেলায় জড়ালে আমার ক্যারিয়ারে ইফেক্ট পড়বে স্যার। প্লিজ আমাকে এসবে টেনো না আপু।
প্রিন্সিপাল : ওকে তোমরা ডেকেছো.? সত্যিটা বলবে সবাই। হ্যা কি না?
সবাই : জি স্যার।
রোজ : দেখলেন তো স্যার।
প্রিন্সিপাল : ছি! তোমরা এমন একটা বাজে কাজ করবে কল্পনাও করতে পারিনি আমি। ও তো তোমাদের ছোট বোনের মতো,, তোমাদের কাছ থেকে বাকিরা কি শিখবে.? নেক্সট টাইম যেন এমন ভুল না হয়। যাও তোমরা,,,
রোজ : আমিও যাবো স্যার..??
প্রিন্সিপাল : হ্যা। আর কোনো সমস্যায় পড়লে আমাকে জানাবে।
রোজ : অকে স্যার।
।
।
।
কেবিনের বাইরে দাড়িয়ে রাগে ফুসছে ওরা। রোজ একবার সবার দিকে তাকিয়ে ক্লাসের দিকে হাটা শুরু করলো। সাথি বলে উঠলো,,
সাথি : আই উইল সি ইউ চিপ গার্ল।
কথাটা কানে যেতেই রোজ পেছন ঘুরে তাকালো।
রোজ : চিপ গার্ল শব্দটা আমার সঙ্গে নয় তোমাদের সঙ্গে বেশি মানায়। আর হ্যা আমাকে যতোখুশি দেখো। কারন মাটিতে দাড়িয়ে চাঁদকে দূর থেকেই দেখা যায়। কখনো ছোয়া যায় না।
সারা : চাঁদ..?? ফুটপাতে থেকে চাঁদ হওয়ার স্বপ্ন দেখো,,,
রোজ : কেন… স্বপ্ন কি তোমাদের কেনা প্রপার্টি..?যে দেখতে পারবো না। আর রইলো বাকি ফুটপাতের কথা,, ফুটপাতে থেকে যে শিক্ষা আমি পেয়েছি সেটা তোমরা স্বর্ণ প্রাসাদে থেকেও পাওনি,,, হয়তো পেয়েছো তবে আয়ত্ত্ব করতে পারো নি। আসলে কি জানো যোগ্যতারও তো একটা ব্যাপার আছে।
সাঞ্জানা : ইউউ
রোজ : আঙ্গুল নিচে। নাহলে তোমার আঙ্গুলের অবস্থাও সারা আপুর মতো হবে।
রোজ ক্লাসে এসে মনোযোগ সহকারে ক্লাস করতে লাগলো । টিফিন আওয়ারে নিভি আর রোজ ক্যান্টিনে যাওয়ার জন্য বের হতে লাগলো অথচ নীলয় এখনো বই এ মুখ গুজে আছে
রোজ : আব্বে ওই বিদ্যাসাগরের নাতি,, এতো পড়ে কি লাভ..? এবারেও আমি টপ করবো। তাই বই রেখে পেট সেবা করতে চল।
নীলয় : তোরা যা আমি চ্যাপ্টাররর
রোজ : রাখ তোর চ্যাপ্টার। নিভি এটাকে তোল তো। সারাদিন ধরে পড়তেই থাকে,, এতো ধৈর্য কই পায় আল্লাহই জানে।
রোজ আর নিভি নিলয়কে ক্যান্টিনের সামনে টেনে আনে। কিন্তু ক্যান্টিনের ভেতর যেতেই চমকে যায় রোজ। গতকালের ছেলেগুলো বসে আছে । ওদের সামনের টেবিলে সাথিরা।
রোজ : [ ওহহ তার মানে সব এক গোয়ালের গরু গাঈ। বেশ ভালো,, এগুলোকে টাইট করতে আমার ভালোই লাগবে। ] মনে মনে।
নিভি : রোজ কি খাবি.?
রোজ : পিৎজা আন, সাথে বার্গার, রোল আর কোক। আর একটা কথা একটু চিলি সস আনিস। ঝাল না থাকলে ঠিক জমে না।
কথা বলতে বলতে রোজ চেয়ার টেনে বসলো,, ওদের ঠিক উল্টো দিকে মুখ করে বসে নীলয়ের সাথে কথা বলছে ও। নিভি খাবার আনতে গেছে।
ওদিকে মেঘের সাথে আবার তেমন টা হচ্ছে যেমনটা গতকাল হয়েছিলো,, হার্টবিট বাড়ছে,, অস্থির লাগছে।
মেঘ : সে!! সে কি এখানে আছে.??
মেঘ ঘাড় ঘুরিয়ে চারপাশ দেখলো। কারোর চোখ তেমন লাগছে না যেমনটা ও দেখেছিলো। তাহলে এই অদ্ভুদ অনুভুতি কিসের..?
সারা : কি রে মেঘ তোকে এমন লাগছে কেন.? প্রেমে ট্রেমে পড়ছিস নাকি ছ্যাকা খাইছিস..? আজ উসকো খুসকো চেহারা কেন গম্ভির বালকের।
আরাভ : মেঘ আর প্রেম..?? দুই দিকের মেরু ভিন্ন রে সারা । আমাদের মেঘের দ্বারা ওসব প্রেম ট্রেম হবে না। সারাজীবন দেবদাসের মতো ঘুরে বেড়ানোর প্লানিং আছে ওর।
সাঞ্জানা : ওর কি কোনো মেয়েকেই পছন্দ হয় না.? আমাদের কলেজের রেপুটেশন বলে তো একটা কথা আছে। এতো সুন্দরিদের ভীরে একটা ভাবি পাবো না.?
আয়াশ : কাল যাকে দেখেছিলাম তাকে দেখলে মেঘ ভাইয়া চিতকাত হয়ে যাবে । যেমন সুন্দর তেমন মিষ্টি গলা আর এটিটিউড।
নীলাদ্রি : তুই তো ঝগড়া করতে ব্যস্ত ছিলি এতোসব নোটিস করলি কখন? ওই মেয়ে মোটেও সুবিধার না। বাব্বাহ ধানি লঙ্কা।
আরাভ : আচ্ছা এই টপিক বাদ। সাথি তোদের নাকি একটা মেয়ে নাজেহাল করছে.? কে রে সে? কার এতো সাহস.?
সাঞ্জানা : তোদের পেছনেই তো বসে আছে চেয়ে দেখ।
মেঘ বাদে সবাই পেছন রোজের দিকে তাকালো । রোজ পিৎজা গালে নিয়ে হাসছে আর নীলয়কে টোকা দিচ্ছে। রোজের ঠোট বেয়ে সস গড়িয়ে পড়ছে। নিভি টিস্যু দিয়ে সেটা মুছে দিচ্ছে,,
আরাভ : ইমপসিবল।
আয়াশ : এ তো বাচ্চা মেয়ে। ঠিক করে খেতেও পারে না।
নীলাদ্রি : এ তোদের নাজেহাল করেছে.? নাকি তোরা ওকে.? এইটুকু একটা মেয়েকে দোষি বানাতে লজ্জা করে না.?
সাঞ্জানা : আরে ও দেখতে কিউট,, কিন্তু সত্যিই ও সেই মেয়ে। ইভেন প্রিন্সির কাছে গিয়েও এমন নাটক করেছে যে প্রিন্সি ওকে বিশ্বাস করেছে।
আয়াশ : মেয়েটার চোখ দেখ। গতকালের মেয়েটার মতো নাহ..?
আরাভ : ওই মেয়েটা দেখছি তোর মাথা খারাপ করে দিয়েছে ভাই। সব জায়গায় ওকে দেখছিস। আরে এই মেয়েটাকে দেখে কি ওমন মনে হয়.? কতো বাচ্চা ইনোসেন্ট টাইপের একটা মেয়ে।
রোজ পানি আনার জন্য উঠে দাড়ালো আর হঠাৎ টেবিলের নিচে থাকা পেরেক ওর পায়ে ঢুকে গেলো।
রোজ : আহহ।
রোজের গলা শুনে সবাই রোজের দিকে তাকালো। রোজ চেয়ারে বসে প্লাজুটা হালকা উচু করে একটানে পেরেকটা তুলে ফেললো। নিভি রোজের কাছে আসতে গেলে রোজ বাধা দেয়। রোজ ব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে রক্ত মুছে পানি নিতে বাইরে চলে গেলো।
সারা : কেমন বাচ্চা দেখলি। ওরে বাবা,, পেরেক ফুটলো তাও হেটে চলে গেছে,, আমারই তো গায়ে কাটা দিচ্ছে।
আয়াশ : মেয়েটার ফর্সা পায়ে হালকা পশম,, দারুন লাগলো মেয়েটারে আগের মেয়ে বাদ আজ থেকে একে পটানোর কাজে লেগে যাবো।
নীলাদ্রি : এ কি ছেলে রে ভাই,, পা দেখে মেয়ে পছন্দ করে। দেখবি তোর কপালে এমন মেয়ে জুটবেই না।
সাথি : গম্ভির বালক কি ঘুমিয়ে গেছে.? এতো কিছু বললাম ওর কানে কি কিছু যায় না.? কোনো সাড়াশব্দ নেই।
মেঘ : শুনছি। বলার মতো কিছু পাচ্ছি না বলে চুপ করে আছি।
সারা : একটু পানি এনে দে ভাই।
আয়াশ : আমি যাচ্ছি।
সাথি : তুই চুপ করে বস। মেঘ যাচ্ছে।
মেঘ বোতল নিয়ে টিউবওয়েলের কাছে আসলো। একটা মেয়ে টিউবওয়েলের সামনে দাড়িয়ে পানি খাচ্ছে
মেঘ : একটু সড়ে দাড়াবেন.? পানি নিবো
রোজ শেষ ঢোক গিলে সড়ে দাড়ালো। তারপর বোতল টা উচু করে দেখলো পানি নেই। এমনিই কলটা শক্ত,, চেপে পানি তুলতে অনেক কষ্ট তারওপর বোতল ছোট। রোজ পেছন ঘুরে দেখলো ছেলেটা নিচু হয়ে জুতার ফিতা লাগাচ্ছে।
রোজ : আমার এই বোতলটা ভরে দিবেন.? আমিও পানি নিবো কিন্তু কলটা শক্ত।
মেঘের চোখ প্রথমেই মেয়েটার পায়ের দিকে যায়। প্লাজুর কোনা রক্তে ভিজে আছে। মেঘ কৌতুহল নিয়ে মেয়েটির দিকে তাকায়। আর মেয়েটার চোখের দিকে তাকাতেই আবার সেই ধুকবুকানি শুরু হয়ে যায়।
মেঘের মুখটা দেখামাত্র রোজের হাত পা ঠান্ডা হতে লাগলো,, ডার্ক ব্রাউন চোখের স্থির শান্ত চাহুনি রোজকে বার বার শিহরিত করছে।
মেঘ : তোমার প্লাজুতে রক্ত লেগে আছে। কোনো সমস্যা.?
রোজ : না মানে,,
মেঘ : পাশেই ফার্মেসি আছে। সমস্যা হলে আমাকে বলতে পারো।
রোজ : পায়ে পেরেক ফুটেছিলো। আর কিছু না। ( এই ছেলেটা প্রথম দেখায় এমনভাবে প্রশ্ন করলো মনে হচ্ছে আমি ওর Gf বা হবু বউ। বেদ্দব প্রশ্ন করার মতো কিছু কি পাস নি নাকি.? )
মেঘ : (তাহলে এই মেয়েটাকে নিয়েই ওরা কথা বলছিলো। গতকাল যাকে দেখেছি সেও যে এই মেয়ে এবিষয়ে কনফার্ম আমি। তবে ওরা যে বললো মেয়েটা গরীব। ফুটপাতে থাকে।) নাম কি তোমার.?
রোজ : আপনার নাম কি.?
মেঘ : মেঘালায় আহমেদ রৌদ্র। তুমি তো উত্তর দিলে না।
রোজ : আমার নামটা অনেক বড়। মনে রাখতে পারবেন.?
মেঘ : বলেই দেখো।
রোজ : সিটাদিয়া চিটৌধুরি রিটোজ। [ সাদিয়া চৌধুরি রোজ। ]
মেঘ : এটা কেমন নাম।
রোজ : সুন্দর নাহহ.?আচ্ছা আপনি বড় আপুদের সাথে ছিলেন না একটু আগে.? ওরা কি আমার নামে কিছু বলেছে.?
মেঘ : নাহহ
রোজ : আপনি কি কম কথা বলেন.?
মেঘ : কেন.?
রোজ : একটা একটা ওয়ার্ড বলছেন। আপনি কি বিবাহিত.? অনেকে বউ এর ভয়ে চুপচাপ থাকে। তাদের মধ্যে একজন নাকি.?
মেঘ : বিয়ে করিনি আমি।
রোজ : সত্যিই তো এটা কি প্রশ্ন করলাম,, আপনাকে বিয়ে করবে এমন কাউকে তো খুজেও পাওয়া যাবে না। কথা এতো কম বলেন জীবনে হেসেছেন কিনা সন্দেহ আছে। আপনাকে দেখে আমার একটা কথা মনে পড়ে গেলো,, রামগরুড়ের ছানা হাসতে তাদের মানা।
মেঘ : তুমি অতিরিক্ত কথা বলো।
রোজ : শুনুন মন খুলে কথা বললে শরীর সাস্থ মন হৃদয় সব ভালো থাকে। আর যাই হই না কেন আপনার মতো চাপা স্বভাবের হতে পারবো না। আর আমি আপনাদের মতো নই যে
মেঘ : যে.?
রোজ : আবব আমার মতো গরীব মেয়েদের জন্য এই হাসি মুখ আর মন খুলে কথা বলাটাই তো সম্বল।
মেঘ : গরীব ঘরের মেয়েরা বাইক চালায়.? তাও আবার রাইডারের ড্রেসে। টোটালি ব্লাক কুইন সেজে। ইনগ্রসিং, ভেরি ইনগ্রসিং ।
রোজ : [ এই ব্যাটা আমাকে চেনে নাকি.? গতকালের কথা জেনে গেছে.? কিন্তু ওখানে তো ওই ভেতরের ছেলেগুলো ছিলো। তাহলে কি ঢপ দিচ্ছে ওদের কথা শুনে.? ] গরীব ঘরের মেয়ে বাইক চালায়.? কোথায় সে.? তার কাছ থেকে ইন্সপায়ার্ড হতে হবে আমাকে। আমিও বাইক কিনতে চাই। আচ্ছা সে কিভাবে বাইক কিনেছে জানেন.?
মেঘ : স্ট্রেঞ্জ। ( এর কথা শুনে তো মনে হচ্ছে না এ কিছু লুকাচ্ছে। তাহলে বোধ হয় আমিই ভুল। এ তো টোটালি ইনোসেন্ট একটা মেয়ে। শুধু শুধু একে তাতিয়ে লাভ নেই।) এই নাও তোমার পানির বোতল।
রোজ : জি। ( এবার আপনিই আমার হয়ে কথা বলবেন। আমার মতো ইনোসেন্ট বাচ্চা মেয়েকে কি কেউ সন্দেহ করতে পারে.? আর করলেও আপনি ঠেকিয়ে দিবেন। ) এখানের স্টুডেন্টগুলো অনেক মিথ্যা বলে,, ওই আপুগুলো তো আজ আমাকে কলেজ থেকে বেরই করে দিচ্ছিলো। কি জানি ওনাদের কোন পাঁকা ধানে মই দিয়েছি।
মেঘ : বাদ দাও। ওরা আর কিছু বলবে না তোমাকে। ( শুধু শুধু মেয়েটাকে হ্যারাস করলো ওরা। নাহ ওদের মানা করতে হবে।এভাবে চলতে থাকলে কলেজের রেপুটেশন খারাপ হবে।)
রোজ : আর তবুও যদি আমাকে ধমকায়.?
মেঘ : আমি দেখে নিবো।
রোজ : ( যা চাচ্ছি সেটাই হচ্ছে। থ্যাংকইউ মাই মিনিস্টার, চালটা ঠিকঠাক দিও কেমন.? ) আপনি এই কলেজে পড়েন.?
মেঘ : হুম।
রোজ : আপনার পরিচয়.?
মেঘ : কলেজের ওনারের ছেলে হই আমি। অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। এবার চুপ করো। প্রচুর কথা বলো তুমি।
রোজ : অকে। ( আর কোনো প্রশ্ন ছিলোও না। এমন নিরামিষ টাইপের ছেলে যাস্ট অসহ্য লাগে আমার। কোথায় মানুষ একটু ফ্রি লি অর ম্যানার দিয়ে কথা বলবে তা না। হু হ্যা হুম না উত্তর দেয়।। বেকুব। )
।
।
।
রোজ আর নিভি কলেজ হোস্টেলে সিটের জন্য এপ্লাই করেছে। কিন্তু সাঞ্জানা গিয়ে সেটা ক্যান্সেল করে দেয়।
নিভি : এখন কি হবে.?
রোজ : এরা যথেষ্ট অসভ্য। তুই দাড়া আমি দাভাইকে বলে দেখি।
রোজ সম্রাটকে ফোন দিয়ে একটা রুমের চাবি পাঠাতে বললো। কিছুক্ষনের মধ্যে হোস্টেলের সুপার এসে চাবিও দিয়ে গেলো,,
নিভি : সোজা চাবি দিয়ে গেলো.?
রোজ : সাদাফ চৌধুরি অরফে ডক্টর সম্রাটের কথা মানবে না এমন মানুষ বাংলাদেশে খুব কম আছে,, সো যাস্ট চিল জানু । এখন চল রুমটাকে সু্ন্দর করে সাজাই।
কফি মগ হাতে ছাদে পাইচারি করছে রোজ। হাতে একটা বাইনাকুলার। গলায় বাচ্চাদের মতো চশমা ঝুলছে,,
রোজ : ইশ পুরোটা দেখতে পারলাম না। কি হ্যান্ডওভার করলো ওরা.? ড্রাগ নাকি ডায়মন্ড.? সাদা ছোট লাল থলে,, কি থাকতে পারে ওখানে.? আর ওরাই বা কার লোক।
মেঘ : কি করছো এখানে.? ( খানিকটা ধমকের সুরে বললো )
রোজ : আব হাটছি। কফি খাচ্ছি।
মেঘ : আমার দিকে ঘোরো।
রোজ : নাহ। মানে কেন.?
মেঘ : এতো কথা না বলে আমার দিকে তাকাও।এটা আমার ওর্ডার। তুমি কি ভয় পাচ্ছো.? লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু করছিলে নাকি.?
রোজ : ডিসগাস্টিং। নিন আপনার দিকে ঘুরলাম এখন.?
মেঘ : বাইনাকুলার দিয়ে কি করছিলে.?
রোজ : বাইনাকুলার দিয়ে মানুষ কি করে.? আমিও সেটাই করছিলাম। আসলে আমি চোখে কম দেখি তো এই দেখুন চশমাও আছে। মাঝে মাঝে চশমায় কাজ হয় না। তখন বাইনাকুলার দিয়ে দেখি।
মেঘ : স্টুপিড।
রোজ : সেইম টু ইউ।
মেঘ : হুয়াটটট।
রোজ : আব আপনি এখানে কি করছেন.? লেডিস হোস্টেলে আপনার কি.?
মেঘ : মেঘ কাউকে কৈফিয়ত দেয় না। আর এভাবে হুটহাট করে ছাদে আসবে না। সমস্যা হবে।
রোজ : ওয়ে হয়ে প্রেম করেন বুঝি। আচ্ছা যখন প্রেম করবেন তখন জানিয়ে দিবেন সেটাইমে আসবো না। তবে আমার যখন মন চাইবে তখনই আসবো। ছাদে। টাটা।
মেঘ : ইনগ্রসিং,, ভেরি ইনগ্রসিং গার্ল।
রোজ রুমে এসে ভাবতে লাগলো মেঘ ওখানে আসলো কেন,, তাও এই সময়.? কি এমন কারন হতে পারে এই নিষেধবার্তার।
রোজ : কলেজের কোন রহস্য আমার চোখের সামনে থাকার পরেও আমি দেখতে বা বুঝতে পারছি না.? কোনো মানুষ,, কোনো জিনিস,, কোনো ডকুমেন্ট কি হতে পারে।
নিভি : এই রোজ কি ভাবছিস.?
রোজ : ভাবছি অনেকদিন বিয়ে খাইনি। দুএকটা বিয়ে খেতে পারলে ভালো হতো। দাভাইকে বিয়ে দেওয়া যায়,,কিন্তু মেয়ে কই.?
নিভি : নীলয়ের বড় আপু মেহেক। ও কিন্তু দাভাইকে পছন্দ করতো। 1সাইড লাভ ছিলো। তোর দাভাই পাত্তা দেয় নি।
রোজ : ও দেয়নি ওর বোন দেবে। ডিসিশন ফাইনাল মেহেক আপু থেকে মেহেক বউমনি ডাকার প্রাকটিস শুরু করে দে। আর কিভাবে এই দুজনের জুটি বাধা যাবে তার ব্যাপারটা আমার ওপর ছেড়ে দে। এসবে এক্সপার্ট আমি।
নিভি : আচ্ছা.? তো মিস এক্সপার্ট নিজে কয়টা প্রেম করছো.? বলো একটু শুনি।
রোজ : আব প্রেম করা লাগবে কেন.? চারপাশ থেকে দেখেই এক্সপার্ট হয়েছি,, চোখ কান খোলা রাখলেই হয়। আর কিছুর প্রয়োজন হয় না । বুঝেছিস.?
নিভি : নাহ। ক্লিয়ারলি বল প্রেম করবি নাকি আজীবন সিঙ্গেল থাকবি। আচ্ছা বিয়েশাদী করবি তোহ.?
রোজ : এসব আমার জন্য না। আই হেটস বয়। আমি না বিয়ে করবো না কারোর প্রেমে পড়বো। তোরা করছিস ওটাতেই আটকে থাক। আমারটা নিয়ে বেশি ভাবিস না জানু। সম্ভব হলে আমি সন্যাসী হতেও প্রস্তুত তবে ছেলেদের চক্করে পড়তে রাজি না।
নিভি : যেদিন প্রেমে পড়বা সেদিন বুজবা যে ছেলেদের সহ্য করতে পারিস না তারাই তোর কাছে সব থেকে বেশি ইমপর্টেন্স পাবে। কোনো এক রাজকুমার এসে আমাদের এই রাজকুমারির মন জয় করে নিয়ে যাবে তার প্রেমের রাজ্যে।
রোজ : কল্পনা করে যাও। বাস্তব হওয়ার আশা রেখো না।
নিভি : দেখা যাবে। হুহ
চলবে..??