#অদ্ভুত_নেশা
#পর্ব_০৫
#অধির_রায়
১১.
ছোঁয়া কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়ে পড়ে জানা নেই৷ মাঝ রাতে ছোঁয়া বুঝতে পারে তার পাশে বসে কেউ হাউমাউ করে কান্না করে যাচ্ছে। কিন্তু আঁখি মেলে যা দেখে তার জন্য ছোঁয়া প্রস্তুত ছিল না।
ছোঁয়া চোখ মেলে একটা সুন্দর মেয়েকে দেখতে পায়৷ গায়ে তাহার সাদা কারুকাজ করা গর্জিয়াস গহনা৷ মুখখানা দেখতে চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল।
— কে আপনি? এখানে এভাবে কেন কান্না করছেন?
— মা আমি তোমার কাছে একটা কথা অনুরোধ নিয়ে এসেছি।
— কিসের অনুরোধ?
— তুমি কথা দাও আমার কথা রাখবে।
— আগে তো আপনার অনুরোধের কথাটা বলেন?
— আগে বলো তুমি আমার কথা রাখবে।
–হুম আমি আেনার কথা রাখার চেষ্টা করবো।
মহিলাটি কথা শুরু করতেই ছোঁয়ার মা ছোঁয়াকে ডাক দেয়। কিন্তু অদ্ভুত ঘটে এখানে ডাক আসার সাথে সাথে ছোঁয়া অদ্ভুত মহিলাটিকে আর দেখতে পেল না৷ ছোঁয়া ওয়াসরোম, বেলকনি সব জায়গায় খোঁজেছে৷ দেখা মেলেনি ওই ভদ্র মহিলার।
ছোঁয়া হতাশ হয়ে নিচে নামে।
— তোমাকে কখন থেকে ডাকা হচ্ছে?(ছোঁয়ার মা)
— আসলে মা ওয়াসরোমে ছিলাম তাই সাড়া দিতে পারিনি৷
— গতকাল রাতেও কিছু খাওনি৷ আজও না খেয়ে ঘুমিয়ে যাবে৷
— না মা না খেয়ে ঘুমিয়ে যাবে কেন? গতকাল রাতেও তো খেয়েছি৷
ছোঁয়া হঠাৎ করেই সব বলে দিতে চেয়েছিল অল্পের জন্য সে সব কিছু সামলিয়ে নেয়।রাতের খাবার শেষ করে রুমে ফিরে আসে৷
রুমে আসতেই ছোঁয়ার রুমের দ্বার অটো বন্ধ হয়ে যায়। লাইট সব বন্ধ হয়ে যায়৷ ছোঁয়া ভয়ে কাবু হয়ে দেয়ালের সাথে লেগে দাঁড়ায়৷ পরক্ষণেই মনে পড়ে এই ভুত আমার কোন ক্ষতি করবে না। যা করার আগেই করে ফেলেছে৷ এখন যেভাবেই হোক তার নাম জানতে হবে৷
ছোঁয়া নিজের মাঝে সাহস জুগিয়ে ধীরে ধীরে বলে উঠে কে আপনি?
ছোঁয়া নিজেকে হালকা অনুভব করতেই ছোঁয়া দেখতে পায় সে তার বিছানায় শুয়ে আছে৷ তাকে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে অদ্ভুত লোকটি৷ যার জন্য ছোঁয়ার শ্বাস নিতে কিছুটা কষ্ট হচ্ছে৷
ছোঁয়া অদ্ভুত লোকটিকে হালকা ধাক্কা দিয়ে এই আপনি আগে আমাকে আপনার পরিচয় দেন.
— আমার পরিচয় দিয়ে কি করবে তুমি?
— আপনার লজ্জা থাকা দরকার একটা মেয়ের সাথে সহবাস করেছেন তাও পরিচয় হীনভাবে৷
— আমি যার সাথে সহবাস করেছি সে আর কেউ না সে হলো আমার বউ৷
— কে আপনার বউ?
— এখানে তুমি ছাড়া অন্য কেউ নেই। তাহলে জেনে নাও আমি কার কথা বলছি৷
— আমি আপনাকে স্বামী হিসেবে মানি না।
— কেন?
— অপরিচিত কাউকে স্বামী হিসেবে মানা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷
— পরিচয় বড় না৷ এটা বড় আমি তোমার স্বামী।
–পরিচয় বড় আমার কাছে৷ আমি অপরিচিত কারো সাথে কোনদিন কথা বলি না৷
— আমার সাথে এখন বলছো তার মানে আমি তোমার পরিচিত।
— ওকে আপনার পরিচয় দিতে হবে না শুধু আপনার নামটা বলে যান৷
— আমার নামটাই শুধু শুনতে চাও!
— হুম শুধু আপনার নাম শুনতে চায়৷
— আমি আর কেউ না। আমি তোমার বন্ধু অধির রায় চৌধুরী।
— অধির রায় চৌধুরী মানে কি? আমি এই নামে কাউকে চিনি না।
ছোঁয়া অনেক কিছু বলতে নিবে তার আগেই অধির ছোঁয়ার মুখে হাত দেয়৷ যার ফলে ছোঁয়া কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। কিন্তু সে ঠোঁট নাড়িয়ে অনেক কিছুই বলে যাচ্ছে। যা ছোঁয়া ছাড়া অন্য কেউ শুনতে পারছে না৷
সকাল বেলা ছোঁয়ার ঘুম ভাঙে পাখির কিচিরমিচির শব্দে৷ ছোঁয়া ঘুম থেকে উঠে অভাগ৷ আজ ছোঁয়ার গায়ে কম্বল টুকুও নেই৷ সমস্ত গায়ে এক ফোঁটা কাপড়ের অংশও নেই।
ছোঁয়া তারাতাড়ি করে নিজেকে কম্বল দিয়ে প্যাচিয়ে নেয়৷ ছোঁয়ার নিজের এমন অবস্থা দেখে দেখে কেঁদে যাচ্ছে নিঃশব্দে। মন বলছে তুই পৃথিবী ছেড়ে চলে যা৷ কিন্তু আত্মহত্যা মহাপাপ।
ছোঁয়ার হঠাৎ অনলাইনের কথা মনে পড়ে৷ অনলাইনে সব কিছুর তথ্য পাওয়া যায়। তার মানে অশরীরী সম্পর্কেও জানা যাবে। এতে অধির আমার কোন ক্ষতি করতে পারবে না৷
ছোঁয়া অনলাইনে সার্চ দিয়ে অশরীরী সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে নেয়৷ সেখানে এটা তার কাছে অনেক বড় সহায়তা করে৷ অশরীরী ছায়া শুধু একা কেউ থাকলে তার সাথে খারাপ কিছু করতে পারে৷ এখন থেকে আমি মা বাবার সাথে থাকবো। বিয়ের পর তপেসের সাথে থাকবো৷ সারা রাত তপেসের হাতে হাত রেখে ঘুমিয়ে থাকবো৷
১২.
,ছোঁয়া নিজেকে পোশাক দিয়ে ঢেকে ওয়াসরোমে যায়৷ সেখান থেকে ভালোভাবে পরিষ্কার হয়ে নিচে নামে।
— ছোঁয়া আজ এত লেট হলো কেন?(ছোঁয়ার মা)
— আসলে মা ঘুম ভাঙতে লেট হয়ে গেছে। এর পর থেকে এমন আর হবে না।
— তারাতাড়ি খাবার খেয়ে নাও৷ তোমাকে আমাদের সাথে যেতে হবে৷
— কোথায় যাবো?
— তোমার বিয়ের বাজার করতে?
— আমার বিয়ে৷ না জানার ভান করে বলে উঠে।
— এভাবে অভাগ হবার কি হলো?
— আমার বিয়ে আর আমিই জানি না৷
— জানবে কি করে সারা দিন ফোনে চোখ ঢুবিয়ে রাখলে(ছোঁয়ার মা)
— মেয়েকে আর বকতে হবে না (ছোঁয়ার বাবা)
— তোমার আশকারা পেয়ে এমন হয়েছে!
— মা বর্তমানে সবাই ফোনে মুখ ঢুবিয়ে থাকে শুধু আমি না৷ আর মা তুমি কবে মর্ডান হবে। সেই আদিম মানুষের মতো কথা বলা বন্ধ করবে।
— কি আমি আদিম মানুষ? (ছোঁয়ার মা)
— মা কথা বলা বন্ধ করো৷ আমার খাওয়া শেষ৷ তোমরা তাড়াতাড়ি আসো৷ আমি অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে পারব না। (সিদ্ধার্থ)
— কি আমার বিজনেসম্যান আসছে৷ অপেক্ষা করতে পারবে না৷ (ছোঁয়া)
— তোর কথা শুনার মতো আমার কাছে কোন সময় নেই৷ আর বিয়েটা আমার না বিয়েটা তোর৷
— আমার বিয়ে আমাকে বুঝে নিতে দে তোকে বলতে হবে না৷
— এবার ঝগড়া বন্ধ কর তোরা! ক্ষেপে বলে উঠে ছোঁয়ার মা৷
–
–
–
শপিংমল
ছোঁয়া তার বিয়েতে বেনারসি পড়বে নাকি লেহেঙ্গা পড়বে তা ভেবে পাচ্ছে না৷ একবার বলছে বেনারসি পড়বে আর একবার বলছে লেহেঙ্গা পড়বে৷ তার এই দ্বিধা সবাইকে তিক্ত করে তুলেছে৷
— তুই বিয়েতে বেনারসি পড়বি এটাই আমার ফাইনাল কথা।ছোঁয়ার মা বলে উঠে।
ছোঁয়া ১০ টার মতো বেনারসি সামনে বসে আছে কিছুতেই বেনারসি পছন্দ করতে পারছে না৷ হঠাৎ ছোঁয়ার চোখ পড়ে সোনালী রঙের পাড়ের দিকে। যেখানে সে ওই সব কারুকাজ দেখতে পায়। যা সে অদ্ভুত লোকটির রুমে দেখতে পেয়েছি৷ এখন তো অদ্ভুত লোক বলা যাবে না৷ সালার নাম হলো অধির৷
— চাচা ওই সোনালী রঙের পাড়ের বেনারসিটা দেখান৷ (ছোঁয়া)
দোকানদার চাচা সোনালী রঙের পাড়ের বেনারসিটা বের করে৷ সোনালী পাড়ের হলেও সমস্ত বেনারসি লাল রঙের। যা সকলের পছন্দ হয় একদম গর্জিয়াছ বেনারসি। ২৬ হাজার টাকা দিয়ে তারা সেই বেনারসিটা কিনে নিল।
ছোঁয়ার বেনারসি কিনার পর তপেসের বাড়ির লোকজন আসে তারাও ছোঁয়ার বেনারসিটা খুব পছন্দ করে।
ছোঁয়া আর তপেস মিলে তাদের পছন্দ মতো সব কিনে নিল। তাদের এমন কাপল দেখে সবাই মুগ্ধ।যেন তারা এক সাথে চলতে পারে এজন্য অনেকে তাদের জন্য প্রার্থনা করেছে।
বিয়ের সমস্ত কেনা কাটা করে তারা বাড়িতে ফিরে আসে৷ সকলেই খুব ক্লান্ত।
১৩.
ছোঁয়ার মা বাবা ঘুমানোর ঠিক মুহুর্তেই ছোঁয়া এসে হাজির৷
–মা বাবা আমি তোমাদের সাথে ঘুম আসবো৷(ছোঁয়া)
— পাগল মেয়ে তুমি তো এখন বড় হয়ে গেছো এখন আমাদের সাথে কেন ঘুম আসবে৷ (ছোঁয়ার বাবা)
— আমি জানতাম তোমরা কেউ আমাকে ভালোবাসো না৷ এজন্য তো আমাকে এই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইছো৷
ছোঁয়া ন্যাকা কান্না করে যাচ্ছে।যেন তার মা বাবা তাকে ফিরিয়ে না দিতে পারে৷
–ছোঁয়ার মাথায় হাত রেখে ছোঁয়ার মা বলে উঠে কে বলছে আমরা তোমাকে ভালোবাসি না৷ আমাদের নিজের থেকেও বেশি তোমাকে ভালোবাসি৷
— মুখেই ভালোবাসা কাজে কোন ভালোবাসা নেই৷ লাগবে না তোমাদের ভালোবাসা।
— পাগলি মেয়ে তোমাকে কি আমি রুম থেকে চলে যেতে বলছি৷ তুমি আমাদের সাথেই ঘুম আসবো৷ (ছোঁয়ার বাবা)
— কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে?
— কিসের শর্ত?
— বিয়ের আগ পর্যন্ত আমি তোমাদের সাথে ঘুম আসবো।
— ওকে ডিয়ার৷(ছোঁয়ার মা)
ছোঁয়া তার মা বাবার মাঝ খানে শুয়ে পড়ে৷ মনে মনে সে খুব খুশি।সালা অধির তুই আমাকে আর বিরক্ত করতে পারবি না৷
সালা অধির তুই কোনদিন আমাকে পাবি না৷ আমি তোকে কোনদিন ভালোবাসিনি৷ আর কোনদিন ভালোবাসবোও না৷ সালা ভুত কোথাকার। তোকে আমি সামনে পেলে তোর মাথা কেটে ফুটবল খেলতাম৷
ছোঁয়া সকাল বেলা নিজ রুমে এসে অভাগ,
চলবে,, #অদ্ভুত_নেশা
#পর্ব_০৬
#অধির_রায়
ছোঁয়া সকাল বেলা নিজের রুমে এসেই ছোঁয়ার চোখ আকাশ পাণে৷
ছোঁয়ার সমস্ত রুমের জিনিস এখানে সেখানে ছড়ানো ছিটানো। কোন কিছুর আস্ত রাখেনি৷ ছোঁয়ার বুঝতে দেরি হলো না এটা কার কাজ। এ কাজ সালার ভুত অধির ছাড়া কেউ করতে পারে না৷
ছোঁয়া নিজের রুমে এসে নিজের জিনিস গুলো আগের মতো করে গুছিয়ে রাখে। যেন কেউ বুঝতে না পারে এখানে কিছু হয়েছে৷ এমনেই বিয়ে বাড়িতে অনেক চলে আসবে একটু পর৷
ছোঁয়া টেবিলের বই গুছতে গিয়ে একটা চিরকুট পায়৷ ছোঁয়া ভাবে চিরকুট টা পড়বে না৷ কিন্তু মন তো মানে না অবশেষে ছোঁয়া চিরকুটটা খোলেই ফেলল
প্রিয়তমা ❤
তুমি কিন্তু ভুল করতেছে৷ সে ভুলের কোন ক্ষমা হয় না৷ তুমি ভেবেছো তুমি তোমার মা বাবার সাথে ঘুম আসলে তুমি আমার কাছ থেকে মুক্তি পাবে। আমি তোমাকে কোনদিন মুক্তি দিব না৷ তুমি মিশে আছো আমার হৃদপিণ্ডে৷ তুমি আমার নিঃশ্বাস। তোমাকে ছাড়া আমি অচল৷ আমি যদি তোমাকে না পায় তাহলে তোমাকে কেউ পাবে না৷ আমি ওই ডাব্বুওয়ালা তপেসকে দেখে নিব৷
আমি জানি তপেস খুব ভালো ছেলে। তুমি তাকে বুঝিয়ে বললে সে ঠিক বুঝবে। কিন্তু তুমি তপেসকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে রাজি হবে না৷ ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই তপেসকে মেরে ফেলবো না৷ তপেসকে আমি বুঝিয়ে দিব। তোমার জীবন থেকে দূরে সরে যেতে। সে ঠিক তাই করবে৷
আর আমার কাছ থেকে দূরে থাকার শাস্তির জন্য অপেক্ষা কর।
ইতি
অধির🖤
ছোঁয়া চিরকুটটা দুই থেকে তিন বার পড়ে। সে তেমন কিছুই বুঝতে পারে না৷
ছোঁয়া ভাবতে পারছে না অধির তার কাছ থেকে কি চায়৷ সে কেন তার পিছনে পড়ে আছে।আমি একটা মানব। আর সে একটা ভুত। আমরা কোনদিন এক হতে পারব না৷ এই সামান্য কথাটা বুঝতে পারছে না কেন?
কেন সে আমার সাথে এমন করছে৷
ছোঁয়া এসব ভেবে যাচ্ছে। আর চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝড়ে যাচ্ছে। চোখের জল মুছে।
— কেন আমার এত কাষ্ট হচ্ছে। এটা কি অধিরের জন্য। নাকি তপেসের জন্য৷ সে বলল তপেসকে মেরে ফেলবে না৷ আমি জানি অধির আমার সাথে যা কথা বলে তাই করে৷ এটা আমি নিশ্চিত যে অধির তপেসকে মারবে না৷ মনে মনে ছোঁয়া অন্য মনস্ক হয়ে ভাবতে থাকে।
১৪.
— কিরে ছোঁয়া এভাবে বসে বসে কার কথা ভাবছিস?রিয়া রুমে প্রবেশ করতে করতে বলে উঠে।
— কই কারো কথা ভাবি না৷ তুই কখন আসলি?
— অনেক আগেই এসেছি৷ কিন্তু আমি তোকে অনেক ক্ষণ থেকে লক্ষ্য করছি তুই কিছু একটা ভাবছিস তাই বিরক্ত করতে চায়নি৷ কিন্তু তুই যে এত ভাবছিস তোকে ডেকেও সাড়া পাচ্ছি না৷
— তুই আমাকে ডেকেছিস? কিছুটা অবাক হয়ে।
আমি এত ভাবনার মাঝে ঢুবে ছিলাম। কোনদিকে আমার মন ছিল না৷ আমার চিন্তার কারণ রিয়াকে বলা যাবে না৷ সে আমাকেই সামলাতে হবে।
— হ্যাঁ এত কার কথা ভাবছিস?
— আসলে তোদের কথাই ভাবছিলাম।
— আমাদের কথা কেন?
– আমার শুধু মনে হচ্ছে তোদের আমি চিরদিনের জন্য হারিয়ে ফেলবো।
— আরে বোকা তোর আর আমার প্রতিদিন দেখা হবে ভার্সিটিতে।
— হুম হবে তো৷
— বাংলার পাঁচ করে মুখ কালো করে রাখলে তোকে ভালো লাগে না৷ প্লিজ এবার একটু হাসতে পারিস৷
–ছোঁয়া মুচকি হেঁসে চল আমরা ছাঁদে যায়।
তুই কিছুই জানিস না রিয়া৷ আমার জীবনে একটা বড় সত্য হলো যে আমি এখন আর ভার্জিন নয়৷ আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে একটা অতৃপ্ত আত্মা আমার সাথে সহবাসে লিপ্ত হয়েছে৷ জানলে তুই আমাকে হাসতে বলতে পারতি না৷ কিন্তু আমি নিরুপায় তোদের এসব কথা বলতে পারব না৷ পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিস৷ সত্যি বলছি তোদের আমি খুব ভালোবাসি। তোদের ভালোবাসার জন্য আমি সব করতে পারি৷ তোদের বাঁচানোর জন্য অধিরকে মানা করতে পারি নি। মনে মনে ছোঁয়া কথাগুলো। কখন যে তার চোখে জল এসে পড়েছে ছোঁয়ার জানা নেই৷
— কি রে ছোঁয়া তুই কান্না করিস কেন?
— কই আমি কান্না করি৷
— আমাকে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে তুই ভাবছিস আমি চোখের জল চিনি না৷
— আসলে চোখে কিছু একটা পড়েছে৷
— আবারও মিথ্যা কথা বলিস কেন?
— তুই এখন ছাঁদে যাবি এত প্রশ্ন করিস না তো?
— কথা কাটানোর চেষ্টা করবি না৷
— যখন তোর বিয়ে হবে তখন বুঝতে পারবি। এখন তোর বিয়ে না তাই তুই আমার কষ্ট বুঝতে পারছিস না৷
— হয়েছে তোর এত উপদেশ আমার কাছে আসবে না৷ আমি জানি তোর সাথে কোনদিন কথা বলে পারি নি আজও পারবো না৷
–
–
–
ছোঁয়া আর রিয়া ছাদেঁর রিলিং বেড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদেরকে দূর থেকে চোখ বন্ধি করে রাখছে.
— রিয়া তোকে একজন দূর থেকে দেখছে।
— কে দেখছে?
— কেউ না।
— তাহলে তুই যে বললি।
— ওই দিকে তাকিয়ে দেখ কিছু বুঝতে পারিস কি না?
— কি বুঝবো?
— আগে তুই তাকিয়ে দেখ?
রিয়া ছোঁয়ার কথা মতো তার দেখানোর দিকে তাকিয়ে শকট। রিয়াকে চোখ বন্ধি করে রাখছে আর কেউ না সিদ্ধার্থ। রিয়াও সিদ্ধার্থের দিকে তাকিয়ে তার চোখে বন্ধি হয়ে যায়।
ছোঁয়া রিয়াকে হালকা করে ধাক্কা দিয়ে।
— কি করে কই হারিয়ে গেলি?
— কই হারিয়ে যাবো?
— আমি কিন্তু সব দেখে ফেলছি?
— কি দেখে ফেলছিস?
— তুই যেভাবে আমার দাদার দিকে তাকিয়ে ছিলি মনে হচ্ছে তুই আমার দাদাকে গিলে খাবি৷
— তোর দাদাকে আমি কেন গিলে খেতে যাবো৷ তোর দাদাই তো আমাকে দেখে যাচ্ছে।
— আর তুই?
— আমি মুটেও দেখি নি৷
— তাহলে এতক্ষণ কাকে দেখছিলি।
— আমি নীলাকাশ দেখছিলাম।
— তাহলে তুই নীলাকাশ দেখ আমি চললাম।
ছোঁয়া কিছুটা ক্ষেপে চলে যায়। রিয়ার পিছন পিছন চলে যেতে নেয়৷ ছাঁদের দ্বারের কাছে আসতেই সিদ্ধার্থ দ্বার আটকে দাঁড়ায়৷
— কোথায় যাও মহারানী?
— আপনি আমার পথ আটকালেন কেন?
— আমার মন আটকাতে বলেছে তাই আটকিয়েছি।
— আমার পথ ছাড়েন?
— না ছাড়বো না।
— আমি কিন্তু?
— কি করবে?
— দেখে যান৷
রিয়া সিদ্ধার্থের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি কিন্তু আপনাকে?
— আমাকে,,সিদ্ধার্থ রিয়ার কোমরে হাত দিয়ে।
সিদ্ধার্থ রিয়ার কোমরে হাত দিতেই রিয়া কেঁপে উঠে। এই প্রথম কোন ছেলে রিয়ার এত কাছে এসেছে। রিয়ার বুকের ভিতর হার্ট বিট বেজে যাচ্ছে।দেহের রক্ত গরম হয়ে যাচ্ছে। রক্তের সঞ্চালন বেড়ে যায়।
সিদ্ধার্থ রিয়ার এত কাছে যে রিয়া নিজেকে ছাড়াতে পারছে না৷ সিদ্ধার্থের গরম নিঃশ্বাস রিয়ার মুখের উপর পড়ছে। রিয়াও যেন একটা ঘুরে চলে যাচ্ছে। রিয়া কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
১৫.
ছোঁয়া খুব খুশি রিয়াকে তার দাদাট কাছে রেখে এসেছে বলে। ছোঁয়া চোখের ইশারায় তার দাদাকে সব বলে দে৷ছোঁয়া তোর কোন জবাব নেই৷ ছোঁয়া নিজেকে নিয়ে এমন গর্ব করছে যেন ছোঁয়া মহাভারত জয় করে ফেলেছে।
ছোঁয়া খুশি মনে গান গেয়ে মনের সুখে নেচে নেচে নিচে নামছে। অন্য দিকে তপেস ছোঁয়ার সাথে দেখা করার জন্য ছাঁদে যাচ্ছে। তপেস ফোনে ফ্রী ফাইয়ার খেলতে খেলতে এগিয়ে যাচ্ছে। ছোঁয়া আবোল তাবোল গান বলে নিচে নামছে৷ হঠাৎ করেই ছোঁয়া আর তপেসের সংঘর্ষ লাগে৷ দু জনেই ছিটকে পড়ে যায়।ভাগ্য ভালো তারা কেউ সিঁড়িতে ধাক্কা খায়নি সিঁড়ি বাকে ধাক্কা লাগাতে তাদের জীবন এই যাত্রায় বেঁচে যায়৷ ভাবা যায় যদি তারা সিঁড়িতে ধাক্কা খেতে তাহলে দুজনের মাঝে একজন সিঁড়ি বেড়ে নিচে পড়ে যেত৷ যার ফলে অকাল মৃত্যু হতো।
ছোঁয়া চোখ বন্ধ করে,কোন সালা আমাকে ধাক্কা দিলি। তোর চোখ কি হাতে নিয়ে ঘুরিস? আল্লাহ আমার কোমরটা ঠিক রেখে। আমি এত সহজে হার মানবো না৷ প্লিজ তুমি আমার কোমর ঠিক রেখে।
কুত্তা, তুই কোনদিন বিয়ে করতে পারবি না৷ তোর বউ হবে কালাচাঁদ। তুই হবি উগান্ডা৷ সরি তুই বিয়েই করতে পারবি না৷
তপেস ছোঁয়ার এসব কথা শুনে কি বলবে তা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে৷ সে মেয়ে সব সময় সবাইকে সম্মান দিয়ে কথা বলত। আজ সেই মেয়ে কাউকে গালি দিচ্ছে৷ নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি৷ (মনে মনে)
তপেস নিজের হাতে নিজেই চিমটি কাটে স্বপ্ন নাকি বাস্তব। হাতে ব্যথা পাওয়ায় সে বুঝতে পারে এটা বস্তব৷ তপেস আবুলের মতো করে ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷
ছোঁয়া এখন চোখ বন্ধ করে রেখেছে৷ তার সামনে কে দাঁড়িয়ে সে জানে না৷ সে একা একা বকেই যাচ্ছে। তপেস আপন মনে ছোঁয়ার ডিজিটাল গালি শুনে যাচ্ছে।
— ব আকার ল আমাকে তুল? ছোঁয়া হাত বাড়িয়ে দিয়ে।
তপেস ছোঁয়ার হাত ধরে ছোঁয়াকে দাঁড় করাই৷ ছোঁয়া পিন পিক করে চোখ খোলে৷ চোখ খোলেই তার চোখ কলকাতার রসে গোল্লায়। (ছোঁয়ার মেনে বেজে যাচ্ছে আমি কলকাতার রসে গোল্লা)
— কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
— আপনি এখানে কি করছেন? ন্যাকা সুরে বলে।
— তোমার পবিত্র গালি শুনতেছি।
— পবিত্র গালি কোনটা৷
— ব আকার ল।
ছোঁয়া জিহ্বায় কামড় দিয়ে মনে মনে আমি নিজের অজান্তেই কি না কি বলে ফেলেছি৷
— প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দেন৷ আমি না জেনেই এসব বলে ফেলছি৷
— এভাবে নাচতে নাচতে আসছিলে কেন? কোম দিকে দৃষ্টি নাই কেন?
— আপনি যেহেতু আমাকে দেখেছেন সো সাইট দিতে পারতেন। তাহলে তো আমি আপনার সাথে ধাক্কা খেতাম না৷ আমার তো মনে হচ্ছে ধাক্কা খেয়ে পেট ভরে গেছে৷ আর খাবার খেতে হবে না৷
— কি বলছো আবুলের মতো?
— আবুল আপনার থেকে ভালো আছে। আমি চললাম৷
ছোঁয়া এক পা বাড়াতেই তপেস ছোঁয়াকে (রহস্য)
চলবে,,,
বানান ভুল হলে নিজ দায়িত্বে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
আজ রবিবার ছুটির দিন। সেজন্য খুব বিজি ছিলাম। পরিবারের সকলের সাথে সময় কাটাতে হয় এই দিনে৷ খুন ব্যস্ততার মাঝে এত টুকু লিখেছি৷ কাল বড় করে দিব৷
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১ শে ফেব্রুয়ারী। আমি কি ভুলিতে পারি। শহিদদের প্রতি সম্মান ও শুভেচ্ছা রইল।