অনুরাগে_অনুভাবে_শুধু_তুই পর্ব ১০

#অনুরাগে_অনুভাবে_শুধু_তুই

#পর্ব-১০
#লেখনী-সুরাইয়া ইসলাম সানজি।
,

(আমি একটু অসুস্থ তাই আজকের পর্বটা ছোট হওয়ার জন্য দুঃখিত)
সকালে ঘুমের ভীতর শীতল স্পর্শে আয়াতের ঘুম ভেঙ্গে যায়। শেষ রাতের দিকেই ঘুম পড়েছেসআয়াত তার উপর সকাল সকাল ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ায় বিরক্ত মুখে চোখ খুলে, পাশ ফিরে দেখে আলাইনা কাচুমাচু করে শুয়ে আছে, আয়াত আলাইনার দিকে ছোট চোখ করে তাকাতেই

আলাইনা চোখ পিট পিট করে বলে-
—” ওই রুমে খুব শীত তাই এখানে আসছি”

আয়াত আলাইনার কথা শুনে মুচকি হেসে আবার চোখ বন্ধ করে আলাইনাকে জড়িয়ে ধরে।
,
,

কেটে যায় কয়েক সপ্তাহ , এর মাঝে অফিসের অনেকেই সন্দেহ করলেও আলাইনা আর ততটা গায়ে মাখেনি।

হঠাৎ একদিন আলাইনা রাস্তা দিয়ে আসার সময় একটা গাড়ি দিয়ে ধাক্কা দেয়, আয়াত কাছেই ছিলো তাই আর বেশি ক্ষতি না হলেও আয়াত আলাইনাকে হারানোর ভয় আতকে ধরে।
সেই দিন রাতেই ভালোবাসার উদাহরণ স্বরূপ আয়াত আলাইনার গলায় লকেট সহ একটা চেইন আর এইটা আংটি পরিয়ে দেয়। কেটে যায় বেশ কিছুদিন।

______________________________

একদিন রাতে আলাইনা আয়াতে জন্য কফি নিয়ে আসতেই আয়াত একটানে আলাইনাকে কোলে বসায়। চুলের ক্ষোপা খুলে পিছন দিক থেকে আলাইনার চুলে মুখ ডুবায়।
এবার আর আলাইনা বাধা যায় না,
আয়াতকে না হয় আজ একন্তই নিজের করো পাবে ভুল কি তাতে, যদি ভুলও হয় তবে এমন ভুল বার বার করতে রাজী সে।
আচমকা আলাইনা সামনে ঘুড়ে আয়াত কিছু বুঝে ওঠার আগেই আয়াতে ঠোঁটে দুটো নিজের ঠোঁটের মাঝে আবদ্ধ করে নেয়।

হঠাৎ আয়াতের ফোন বেঝে উঠায় দুজনের ধ্যান ভাঙ্গে, আলাইনা লজ্জা তারাতাড়ি আয়াতের কোল থেকে সরে যায়।
আয়াত ফোন ধরার পর থেকেই গম্ভীর হয়ে যায়, আলাইনা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকলেও কিছু না বলে সেখান থেকে আয়াত ওঠে বারান্দায় চলে যায়।

আরো বেশ কয়েকদিন চলে যায়, আয়াত সব সময়ই কারো না কারো সাথে ফোনে কথা বলে কিন্তু আলাইনা আসলেই ফোন কেটে, আলাইনা প্রথম প্রথম না বুঝলেও পরে খুব কষ্ট পায়, কি এমন কথা যা তার সামনে বলা যায় না।

দিন দিন আয়াত আলাইনার উপর আরো বেশি খারাপ ব্যবহার করতে থাকে, আলাইনা প্রতিবার আয়াতের ব্যবহারে কেঁদে বুক ভাসায়, যাই হোক ভালোবাসার মানুষটি থেকে এমন ব্যবহার নেওয়া যায় না।

—“কি সমস্যা আয়াত, কিছুদিন থেকে এমন করছেন কেনো? আপনি কি জানেন না কতোটা ভালোবাসি আপনাকে, আপনার থেকে এমন ব্যবহার নিতে কতো কষ্ট হয় বুঝতে পারেন একটুও।

ঠুকরে কেঁদে ওঠে আলাইনা আবারো কান্না জরিত কন্ঠে আয়াতের হাত গুলো ধরে বলে – “খুব বেশি ভালোবাসি আপনাকে, আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা।”

আয়াত এতোখন বিরক্ত মাখা মুখ করে সব শুনছিলো, এবার বিরক্তের চরম শিখরে গিয়ে হাত থেকে আলাইনার হাত সরিয়ে দিয়ে গালে চড় দেয়-

—” কি মনে হয় নিজেকে, এসব ঠং করলে আমার মন কাড়বে? এগুলো করে আদ্রিলকে ফাসালেও আয়াত চৌধুরীকে ফাসানো সোজা না।”

আয়াতে ফোনে কল আসলে আয়াত ফোনে কথা বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
আলাইনা আয়াতের অন্য কোনো সমস্যা ভেবে চুখ মুখ মুছে ওঠে দাড়ায়, যে ভাবে করেই হোক আয়াতে সমস্যা জানতেই হবে।

______________________________

আয়াত সেদিন আর বাসায় ফিরে না, আলাইনা সারারাত আয়াতের অপেক্ষা করে ভোর রাতে সোফায় বসেই ঘুমিয়ে পরে।
পরের দিন আলাইনা একাই অফিসে চলে যায়, আয়াতের ফোনে ফোন দিলে কয়েক বাঝলেও আয়াত ফোন বন্ধ করে রাখে।
আলাইনা সেদিনের মতো একাই অফিসের সবকিছু সামলায়। মনে মনে ভাবে যে করেই হোক আজ আয়াত আসলে তার ভুলটা কি জেনে নিবে।

হঠাৎ আলাইনার ফোনে মেসেজ আসলে আলাইনা আয়াতের মেসেজ ভেবে তাড়াতাড়ি মেসেজ অন করতেই দেখে সেখানে একটা হোটেলের নাম আর রুম নং দেওয়া। আর পাশে পাশে ছোট ছোট করে বাংলায় লেখা- “আপনাকে আপনার জীবনের নতুন অধ্যায়ে স্বাগতম”।

আলাইনা আর কিছু না ভেবেই গাড়ী নিয়ে পেরিয়ে পরে ঠিকানার উদ্দেশ্য, মনে হচ্ছে যা কিছু হচ্ছে সবই জানতে পারবে মেসেজে লেখা ওই রুমে গেলে।

______________________________

বেশ কয়েকবার রুমে নক করলেও ভীতর থেকে কোনো শব্দ না পেয়ে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে ধাক্কা দিতে থাকে আলাইনা।

কিছুখন পর দরজা খুলতেই আলাইনা দরজার দিকে তাকাতে দেখে আয়াত খালি গায়ে ঘুম ঘুম চোখে দাড়িয়ে আছে।
আলাইনা আর কিছু না ভেবে আয়াতকে ঠেলে ভীতরে ডুকে দেখে বেডটা সম্পূর্ণ আলোমেলো ভীতরে আর অন্যকেউ নেই।
তখনই ওয়াসরুমে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে সেদিকে তাকিয়ে দেখে ন্যান্সি মাএ শাওয়ার নিয়ে তোয়ালে পরে বের হচ্ছে।

—” আয়াত কে আসছে বাবুটা? দরজা খোলতে এতো লেইট হলো কেনো”

আলাইনা বুঝতে আর কিছু বাকি নেই, এই মুহূর্তে তার কি বলি উচিত ভেবে পাচ্ছেনা। আলাইনার সমস্ত দুনিয়া একখানেই ধমকে গেছে।

অবিশ্বাসের চোখে আয়াতের দিয়ে তাকিয়ে আছে চোখ থেকে অনবরত জল পরছে।

আয়াত আলাইনার দিকে তাকিয়ে দেখে ঘৃণা চোখে একদৃষ্টিতে আলাইনা তার দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়াত আলাইনাকে কিছু বলবে তার আগেই আলাইনা বলে-

—“থাক মিষ্টার আরিয়ান চৌধুরী আয়াত নতুন করে আর নাটক করতে হবে না, আমার আপনাকে ভালো লাগেনা বললেই হতো এতো নাকট করার কি দরকার ছিলো? আজ থেকে আমাদের সম্পর্ক আমার কাছে মৃত আর নাতো আমি আপনার কাছে জীবিত।

আলাইনা এ টুকু বলেই হনহন করে বেড়িয়ে যায়, আজ দুচোখ যেদিকে যায় সেদিকেই চলে যাবে। অন্তত বিশ্বাস ঘাতকের কাছে থাকবেনা।

আলাইনা চলে যেতেই ধুম করে হাটু গেড়ে নিচে বসে পরে আয়াত। ন্যান্সির দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে। ন্যান্সি মুচকি হেসে টেবিলের উপর থেকে হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বাহিরে চলে যায়।
ন্যান্সি চলে যেতেই আয়াত ওঠে দাড়িয়ে রহস্যময় ভাবে মুচকি হাসে।

[বিঃদ্রঃ যদিও গল্পটা স্যাড এন্ডিং ভাবছিলাম, কিন্তু কালকে জিঙ্গেস করার পর একটা কমেন্টও আসেনি স্যাড এন্ডিংয়ের, সবাই হ্যাপি এন্ডিং চায়। এখন আমি যদি পাঠকদের কথা না রাখি তবে কি তারা আমার উপর খুব বেশি রাগ করবে?😑😶]

চলবে,,,,,,,
[প্লিজ সবাই সবার মতামত জানাবেন। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤❤]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here