অন্তরালের কথা পর্ব ২

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ২
.
.
” এ বিদায় যে শুধু বিদায় নয় তিহান। এ বিদায় যে আমৃত্যু অবধি বিদায়। ”
কথাটি বলেই তানহা ব্যাগ থেকে মোবাইলটি বের করে ব্যাক কভার খুলে সাইড থেকে সিমটি খুলে হাতের মুঠোয় নিল। মোবাইলটি আবার ব্যাগে ঢুকিয়ে হাতের মুঠোটি খুলে এক পলক সিমটির দিকে তাকালো আরেক পলক তিহানের দিকে। তিহানের দিকে তাকানো অবস্থাতেই মুহুর্তের মাঝে সিমটি দু’আঙুল দিয়ে চাপ দিয়ে দু-ভাগে করে ফেললো। তিহান হা হয়ে তাকিয়ে আছে তানহার দিকে। তানহা সেদিকে গুরুত্ব না দিয়ে সিমটি ঘাসের উপর ছুঁড়ে মেরে চোখের জল মুছে দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে সামনে এগুতে লাগলো। তবে তিহানও আজ তানহাকে আটকানোর জন্য দৌড়ে গেল না। সে নিজের স্থানে দাঁড়িয়েই চোখের জল ফেলতে লাগলো।
তানহা প্রায় ১০/ ১২ কায়িক হাঁটার পর হুট করে ঝড়ো হাওয়া শুরু হলো। পলকে মাঝেই ঝড়ো হাওয়ার সাথে বৃষ্টি নেমে গেল। পার্কে থাকা সকল মানুষ যে যার মতো ছুটতে লাগলো নিজেদেরকে বৃষ্টির থেকে আড়াল করতে। কিন্তু দু’জন মানুষ রয়ে গেল তাদের সেই অবস্থাতেই। নিজেদের মনের সকল বাসনা বিলীন করতে বৃষ্টির এই মিঠা পানির মাঝে।
তিহান এক দৃষ্টিতে তানহার দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করছে তার ভালোবাসাকে ফিরে পাবার আশায়। এদিকে তানহা থমকে দাঁড়িয়ে আছে মাঝ পথে। আর ভাবছে,
” এ বৃষ্টি যে খুব পরিচিত তাদের ভালোবাসায়। কত মধুময় স্মৃতিই না জড়িয়ে আছে এই বৃষ্টিকে জুড়ে। কতদিন গিয়েছে বৃষ্টিতে ভিজে মেইন রাস্তার ধার দিয়ে হেঁটেছে। আবার কখনো হুটবিহীন খোলা রিক্সায় ঘুরে বেরিয়েছে। এরকম অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে এই বৃষ্টিকে ঘিরে তার ও তিহানের ভালোবাসার বাঁধনে। তাহলে আজ কেন এই বৃষ্টি? তাদের সম্পর্কের আরেকটি স্মরণীয় স্মৃতির সাক্ষী হতেই কি এই বৃষ্টির আগমন? তবে কি আজই তাদের সম্পর্কের ইতির টান পড়বে? আর তারই কি ইঙ্গিত দিচ্ছে এই বৃষ্টি? ”
কথাটি ভেবেই বুকের মাঝখানে ব্যাথা অনুভব হলো তানহার। পেছনে ফিরে এক দৌড়ে চলে এলো তিহানের কাছে। তিহানকে ঝাপটে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
” মানুষ যে নিঃশ্বাস ছাড়া বাঁচতে পারে না। তাহলে আমি কি করে বাঁচবো তিহান? আমার নিঃশ্বাস যে তুমি। সেই নিঃশ্বাস কে মাঝ পথে ফেলে বহুদূরে চলে যাচ্ছি। আমার কি হবে? কোথায় যাবো আমি? বলো না তিহান! তোমায় ছাড়া আমি কি করে বাঁচবো? আচ্ছা তিহান, আমাদের আল্লাহ তো জানে আমাদের ভালোবাসা মিথ্যে নয়। সেতো পারে আমাদের আলাদা না করতে। তাহলে কেন করছে না? কেন এভাবে কষ্ট দিচ্ছে? আর যদি নাই দুজনকে এক হতে দেয় তবে এখনি এই মুহুর্তে একটি বজ্রপাতে আমাদের শেষ করে দিক। তিলে তিলে শেষ না করে একবারে শেষ করে দিক। তারপরও তো শান্তি পাবো যে, আমরা একে অপরের বাহুডোরে মৃত্যু বরণ করেছি আলাদা নয়। কি পারে না বলো? পারেতো আমি জানি। আল্লাহ সবকিছু পারে।”
” আমিতো তাই চাই তানহা। তাই চাই। আল্লাহ যে আমাদের সহায় হচ্ছে না। আমি যে পারবো না তানহা তোমায় ছেড়ে থাকতে। পারবো না তোমায় অন্য কারো হতে দিতে। তোমায় অন্য কারো হতে দেয়ার আগে মৃত্যু বরণ করবো। সেটাও আমার কাছে সুখময়। ”
তানহাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিল তিহান।
তানহা কিছু বলতে যাবে, এমন সময় পেছন থেকে কেউ চিৎকার করে তানহার নাম ধরে ডাকতে থাকে। তিহান ও তানহা পেছনে ফিরতেই দেখে তানহার বান্ধুবী চারু বৃষ্টির মাঝে ভিজতে ভিজতে দৌড়িয়ে এদিকে আসছে।
তানহার সামনে এসে শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত ফেলে হাপাতে হাপাতে বলল,
” ভাগ্যিস তুই আসার আগে আমায় বলেছিলি এখানে আসবি। নাহলে তো… নাহলে তো আজকে একটা অঘটন ঘটে যেত। ”
” কি হয়েছে? কিসের অঘটন? কি রে কথা বলছিস না কেন? ”
” তুই বাসায় চল আগে। ”
” চারু প্লিজ, আগে আমায় বল কি হয়েছে? আমার হাত পা ভেঙে আসছে।”
তানহার অস্থিরতা দেখে তিহানও অস্থির হয়ে যায়। তানহার কষ্ট যে তার কখনোই সহ্য হয় না। তাই আতংক পূর্ণ গলায় তিহান চারুর দিকে তাকিয়ে বলল,
” চারু প্লিজ তুমি শান্ত হও। তুমি এরকম করলে যে তানহা ভয় পেয়ে যাবে। দেখছ না কিরকম অস্থির হয়ে গিয়েছে তানহা। ”
” ভুল বলেছেন ভাইয়া। আমিতো দেখতে পাচ্ছি তানহার চেয়ে বেশি কষ্ট আপনি পাচ্ছেন। ”
” সে যাই হোক চারু। তুমি ওকে বুঝিয়ে বলো ব্যাপারটা। ”
” না ভাইয়া, হয় না। এখন থেকে যদি নিজেকে সামলাতে না পারেন পরে কি হবে? নিজেকে তো ঠিক রাখতে পারবেন না। তাই তানহার এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় গুলো নিজের পেইন হিসেবে দেখা বাদ দিন। তাতে আপনারও ভালো, তানহারও ভালো। সেই সাথে তানহার কষ্টগুলো নিজের ঘাড়ে না নিয়ে তানহাকে পেতে দিন। ”
চারু কথাগুলো বলে তিহানের উত্তরের জন্য অপেক্ষা করলো না। অপেক্ষা করলে যে তানহা, তিহানের সাথে তারও নাকের পানি চোখের পানি এক করতে হবে। তাই তানহার হাত ধরে সোজা পার্ক থেকে বেরিয়ে গেল। তানহাও চুপটি করে বেরিয়ে গেল। পেছনে ফিরে একবার তাকিয়ে ছিল তবে পরক্ষণেই চোখ ফিরিয়ে নিয়ে আসে। যে মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে তাকে শেষ মুহুর্ত দেখলে কী হবে? আর তাকে দেখার জন্য যে সামনে পেতে হবে মানুষটিকে তাতো নয়। মানুষটির প্রতিচ্ছবি যে তার মনেই গেঁথে রয়েছে। যেখান থেকে কখনোই মুছবার নয়।
.
মাত্রই বরযাত্রী বেসে গাড়ি থেকে নামলো অতল। মনটা একদিক থেকে খারাপ লাগলেও অন্যদিক দিয়ে বেশ ভালোই লাগছে। কোনো প্ল্যান প্রোগ্রাম ছাড়া হুট করে বরের বেশে বিয়ের করতে আসাটা যে কারো জন্যই দুঃখজনক। কারণ প্রতিটি মানুষের নিজের বিয়ে নিয়ে হাজারো স্বপ্ন থাকে।থাকে কিছু আশা। সে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে। তেমনি অতলেরও মনের গহীনে লুকোনো ছিল হাজারো স্বপ্ন। সে সব স্বপ্ন আজ তাকে বিসর্জন দিতে হচ্ছে তার হবু শ্বশুরের কথা ভেবে। হঠাৎ করেই যে তার হবু শ্বশুর ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আর তাই তার পরিবার অনুষ্ঠানের জন্য বিয়েটা দেরি করতে চায় না। যত দ্রুত সম্ভব বিয়েটা দিয়ে কনের বাবাকে চিন্তামুক্ত করতে চায়। একমাত্র মেয়ে বলে কথা চিন্তা তো হবেই। তবে এতকিছুর মাঝেও অতলের মনের কোনো এক কোণে প্রশান্তির বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আজ যে সে নতুন এক সম্পর্কের বাঁধনে বাঁধা পড়বে। যে বাঁধনে বাঁধা পড়বার জন্য সে গত ২৮ বছর ধরে অপেক্ষিত। তার ২৮ বছরের একাকিত্ব দূর করবে এই বাঁধন।
কথাগুলো ভেবেই মুচকি হাসলো অতল। এমন সময় তার সামনে হাজির হলো একদল অল্প বয়সী মেয়ে। তাদের মাঝে একজন অতলের হাসি দেখে সামনে থেকে বলল,
” কী ব্যাপার হবু দুলাই! ঘরে না গিয়ে গেইটে দাঁড়িয়ে হাসছেন যে! বিয়ের আগেই পাগল হয়ে গেলেন নাকি? ”
” না না, তেমন কিছু না। ”
” বুঝি বুঝি, সবই বুঝি দুলাই। আমাকে আপনার বুঝাতে হবে না। ”
” তাই নাকি! ”
” জ্বি দুলাই। ” হাসতে হাসতে বলল।
” আচ্ছা, দুলাই মানে কী? মানে আমি বুঝতে পারছি না তো তাই জিজ্ঞেস করলাম। কিছু মনে করবেন না প্লিজ। ”
” এ মা কী বলেন! আপনি দুলাই মানে বুঝেন না? ”
” উহুম। ”
” না-ই বুঝতে পারেন। আপনারা যে আগের জেনারেশনের। আমাদের জেনারেশনের হলে ঠিকই বুঝতেন। ”
” তাই বুঝি! ”
” হুম তাই তো। আমার বয়স ১৬ আর আপনার ২৮। আপনি তো আমার থেকে ১২ বছরের বড়। তাহলে হলেন তো আগের যুগের। হাহা….”
” শুধু কি হেসেই যাবেন? নাকি বাড়ির ভেতরেও নিবেন? ”
নতুন হবু বরের মুখের কথা শুনে কনের পক্ষ থেকে আসা মেয়েটি জিহবায় কামড় দিয়ে বসলো। আর বলল,
” সরি দুলাই। ভীষণ ভুল হয়ে গিয়েছে। আসুন আসুন ভেতরে আসুন। ”
” ভেতরে তো আসবো তবে আমি কিন্তু এখনো আমার প্রশ্নের উত্তর পাইনি। ”
” বলব তো, সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে সবকিছুই আপনাকে ক্লিয়ার করে বুঝিয়ে বলবো। ”
” হুম বলুন। ”
” বলুন না, বলো হবে। কারণ আমরা সবাই আপনার ছোট। আর সম্পর্কের দিক থেকে ছোট শালিকা। ”
” শালিকা! আমার জানামতে কনের তো কোনো বোন নেই। আর না আছে ভাই। কনে তো একাই তার পরিবারে। ”
” আপনার জানাটা একেবারে সঠিক। তবে কনের যে কাজিনেরাও থাকতে পারে সেটা কি ভুলে গিয়েছেন? ”
” ওহ্ হো! আসলেই ভুল হয়ে গিয়েছে। ”
” হিহি…। এবার শুনুন দুলাই মানে কি! দুলাই হচ্ছে দুলাভাইয়ের সর্ট ফর্ম। দুলাভাই ডাকটা তো বেশ বড় তাই ছোট্ট করে দুলাই ডাকলাম। ”
” ওহ্ আচ্ছা। বেশ ভালোই সর্ট করে ফেলেছ। তো তোমাদের নাম কী শুনি? ”
” জ্বি বলছি। আমার নাম পিউ। কনের মামাতো বোন।আর আমার পাশে যে দাঁড়িয়ে আছে ওর নাম হচ্ছে….”
পিউর কথার মাঝে পিউর বাবা অর্থাৎ কনের মামা বলে উঠলো,
” তোদের কোনো কান্ড জ্ঞান আছে ? নতুন জামাইকে কেউ এতক্ষণ বাহিরে দাঁড় করিয়ে রাখে? তাও আবার এই বৃষ্টিতে ভেজা কাদায় ভরপুর রাস্তায়। কবে বড় হবি তোরা? ”
” আসলে আব্বু….”
” আসল টাসল কিচ্ছু না, সব জানি আমি। সাইড দেয় এবার। ”
পিউকে পাশ কেটে কনের মামা এসে অতলকে বলল,
” বাবা অতল, এদের হয়ে আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এভাবে গেইটে তোমাকে দাঁড় করিয়ে রাখাটা মোটেও ভালো করেনি ওরা। ”
” না না, আংকেল এটা তেমন কোনো ব্যাপারই না। এরকম একটু আধটু দুষ্টুমি তো শালিকারা করবেই। ”
” হুম বাবা। এসো ভেতরে এসো। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।”
” জ্বি আংকেল। ”
.
চারুর মুখে বাবার অসুস্থতার কথা শুনে তানহা যেন তার নিজের যন্ত্রণার কথা ভুলে গিয়েছিল। ছুটে চলে এসে ছিল বাবার কাছে। বাবার বুকের উপর পড়ে চোখের জলে ভাসিয়ে দেয় নিজের বুকের জমানো যন্ত্রণা। আর গ্রহণ করে নেয় বাবার দেয়া প্রতিটি আদেশ। তাই তো আজ এই মুহুর্তে সে কনে সেজে ঘরে চুপটি করে বসে আছে। যেখানে কি-না বিচ্ছেদের তাড়নায় তার চোখের জলে ভাসবার কথা সেখানে সে কনে বেশে বসে সৌন্দর্যের প্রশংসায় মানুষের মনে ভেসে যাচ্ছে।
হুট করে বিয়ে হলেও তানহাকে দেখলে কেউ বলবে না, এ বিয়ে বিনা নোটিশের বিয়ে। না আছে গয়নার কমতি আর না আছে দামী জামা কাপড়ের কমতি। মাথা থেকে পা অবধি স্বর্ন ও দামী শাড়ী দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছে তানহাকে। আর দিবে নাই বা কেন, বর যে ব্যবসায়ী। তাও আবার এক্সপোর্ট ব্যবসায়ী। তার কি টাকার কমতি আছে নাকি!
ভারী শাড়ী ও গা ভর্তি গহনা পড়ে বসেছিল তানহা। এমন সময় ঘরে ঢুকলো তানহার প্রাণপ্রিয় বান্ধুবী চারু। তানহার হাতে হাত রেখে চারু বলল,
” পারবি সব মেনে নিতে? নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিতে? বিয়ে কোনো খেলা না তানহা। বিয়ে সারাজীবনের ব্যাপারে। ভাইয়া তোকে যেভাবে আগলে রেখেছে এই লোক সেভাবে নাও রাখতে পারে। তখন কি এই না পাওয়া অভাব পূরণ করতে পারবি? পারবি না। শুধু আফসোসই করে যেতে পারবি। তাই বলছি কী এখনো সময় আছে। সারাজীবন আফসোস করার চেয়ে এখনি ভাইয়ার কথা মেনে নেয়। আর এখান থেকে পালিয়ে যা। তখন ভাইয়ার সামনে থেকে তোকে টেনে নিয়ে এসেছিলাম আংকেলের কথা ভেবে। কিন্তু এখন…এখন আর পারছি না নিজের চোখের সামনে এসব দেখতে।”
চারুর কথা শুনে নীরবে চোখের জল ফেলছে তানহা। জোরে কাঁদলে যে ঘর ভর্তি মানুষ শুনে ফেলবে। তাই মুখ চেপে চেপে কাঁদছে।
চোখের জল মুছে যেই চারুর দিকে ফিরে কিছু কথা বলার জন্য মুখ খুলবে ওমনি কয়েকজন মুরুব্বি ঘরে প্রবেশ করলো। সেই সাথে একজন মৌলভীও। দু’জন বয়স্ক মহিলা তানহার পাশে বসলো। একজন বসতে বসতে বলল,
” দেখিতো মা মুখটা। মাশাল্লাহ! এ যেন সৃষ্টিকর্তার নিজের হাতে গড়া এক জীবন্ত পুতুল। আমাদের ছেলের সাথে বেশ মানাবে এই পুতুলটিকে। যেমন সোনার টুকরো ছেলে তেমনি সোনার টুকরো বউ আমাদের। ”
আশেপাশে থাকা সকলেই মহিলাটির কথা শুনে হেসে দিল। পাশে থাকা আরেকটি মহিলা বলল,
” আচ্ছা মা, আমাদের ছেলেকে তোমার কেমন লেগেছে? পছন্দ হয়েছে কি?”
তানহা মুখে কিছু না বলে মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বোধক সম্মতি জানালো। পাশে থাকা মহিলাটি আলহামদুলিল্লাহ বলে এক হাসি দিল। তারপর তানহা কে বলল,
” তাহলে মা, তুমি যদি রাজি থাকো দেরি না করে বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলি? এমনিতেই অনেক রাত হয়ে গিয়েছে। ”
তানহা কিছু বলতে যাবে তার আগেই চারু অস্থির হয়ে উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
” না….. মানে এত তাড়াতাড়ি কেন? আরও কিছুক্ষণ পরে করলে ভালো হতো। আসলে আমাদের কিছু ফ্রেন্ডস আসা বাকী তো তাই আর কি বলছিলাম। ”
তোতলিয়ে তোতলিয়ে যা মনে আসলো তাই বলল চারু। কে কি মনে করলো বা, কি মনে করবে সেসব কিছুই ভাবেনি। তার মাথায় শুধু একটি চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছে। কি করে সে তানহা কে এই জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে পারবে!
চারুর কথা শুনে আশেপাশে থাকা মুরুব্বি সকলে ভ্রু কুচকে ফেললো। হয়তো মনে নানা কথার সমাহারও খুলে ফেলেছে। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে তানহা কনে হয়েও নিজে বলল,
” না, আপনাদের কারো জন্য দেরি করতে হবে না। আপনারা চাইলে এখনি বিয়ের সকল কাজ আরম্ভ করতে পারেন। আমি তার জন্য প্রস্তুত। ”
তানহার মুখের কথা শুনে রুমে থাকা সকলের যেন প্রাণ ফিরে এলো। একত্রে সবাই মুচকি হেসে আলহামদুলিল্লাহ বলে সঙ্গে আনা মৌলভীকে বিয়ের কাজ শুরু করতে বলল। মৌলভীও তাদের কথা মতো তানহার সামনে বসে ইসলামিক নিয়মানুসারে সকল কার্য সম্পাদন করতে লাগলো। একে একে সকল কথা বলা শেষে মৌলভী অর্থাৎ কাজী বললেন,
” বলুন, আলহামদুলিল্লাহ কবুল। ”

.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here