অন্তরালের কথা পর্ব ৪৬

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৪৬
.
.
” এতক্ষনে আসার সময় হলো তোমার? এদিকে যে আমি তোমার পথ চেয়ে থাকতে থাকতে চোখ লাল করে ফেলছি সেই খবর নেই? ”
অতলও তানহাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
” সবুরের ফল মিষ্টি হয় জানো না? ”
” জানি, তবে মন যে অসহ্য যন্ত্রণা দেয় সেটা বুঝো না? ”
” বুঝি বলেই তো চলে এসেছি। যাতে তোমার ওই মনকে নিজের উপস্থিতি বুঝিয়ে অসহ্য ভালোবাসায় ভাসাতে পারি। ”
অতলকে জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই বুক থেকে মাথা উঠিয়ে চোখে চোখ রেখে কাঁপা গলায় বলল,
” কত রাত কেঁদে পার করেছি জানো? কত রাত না ঘুমিয়ে পার করেছি জানো? জানো না, কিচ্ছু জানো না। খুব কষ্ট হতো তোমার বুকে মাথা না রেখে ঘুমাতে। এমন কোনো রাত যায়নি যে রাতে তোমার বালিশ আমার বুকে ছিল না। এ দুটো মাস যেন তোমার মাথার ওই বালিশটিই আমার সঙ্গী হয়ে গিয়েছিল। ”
তানহার কাঁপা ঠোঁটে আলতো করে চুমু খেয়ে অতল বলল,
” ভালোবাসার অনুভূতি গুলো যে এতো মায়াময় তোমায় না ভালোবাসলে বুঝতেই পারতাম না। ”
” আর কোনোদিন আমায় ফেলে কোত্থাও যেও না প্লিজ। যেখানে যাবে আমাকেও সঙ্গে করে নিয়ে যেও। আমি আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারব না। ”
” সে আর বলতে! আমার বউকে ছাড়া যে আমারও ভীষণ কষ্ট হয়েছে। তাই এই ভুল আমি আর করছি না। আর একাকী রাত জাগার বিরহ সহ্য করতে পারব না। দুজন মিলে কাবাডি খেলতে গিয়ে রাতভর জেগে থাকলেও এক আনন্দ আছে। সেই আনন্দ থেকে আর বঞ্চিত হতে চাই না। ”
” উফফ, শুরু হয়ে গিয়েছে। ভালো কথার মাঝে কীসব আবল তাবল কথা বলে, ভালো লাগে না। ”
” ভালো লাগবে না কেন? যেখানে আল্লাহ তা’য়ালা নিজে এসব কথা স্বামী-স্ত্রীর জন্য জায়েজ করে দিয়েছে সেখানে তোমার ভালো না লাগার তো কারণ দেখছি না। ”
” কারণ থাকবে না কেন, অবশ্যই কারণ আছে। এতদিন বাদে এসেছ কই ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করবে, তা না করে ফালতু কথা বলছ। কারই বা ভালো লাগবে শুনি? ”
” ওরে, আমার বউটা দেখি রাগ করেছে। রাগ করে না বউ। আমিতো জানি তুমি ভালো আছ। মা, নিদ্রা ওরা তোমাকে কখনো খারাপ থাকতে দিতে পারেই না। ”
” তারপরও তুমিতো জিজ্ঞেস করতে পারতে। ”
” আমিতো জিজ্ঞেস করব না, আমিতো খুঁটে খুঁটে দেখব। কোথায় কী অবস্থা, আমার বাবুর কী অবস্থা, আমার বাবু কতটুকু জায়গা পেল খেলে বেড়াবার জন্য। এসব তো আমাকেই খুঁটে খুঁটে দেখতে হবে তাই না। ”
বলেই তানহাকে পাজ কোলে নিয়ে বিছানার দিকে এগুতে লাগলো অতল। তানহা পাজ কোল থেকেই বলল,
” কী করছ কী অতল! মাত্র এসেছ। এসেই কী শুরু করে দিলে তুমি? তার উপর আবার দরজাও খোলা। কেউ এসে পড়লে কী হবে ভাবতে পারছ? ”
” দরজা লাগাতে কতক্ষন! এ কয়েক সেকেন্ডের মাঝে কেউ উড়েও আসতে পারবে না। সো ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল। ”
তানহাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে পেছনে ফিরতেই অতলের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। বলল,
” নিদ্রা! তুমি কখন এলে? আর এসে আমাদের ডাকলে না কেন? ”
” কী করে ডাকব ভাইয়া, আপনিতো আপুকে বোঝাচ্ছিলেন যে, কেউ না-কি আপনাদের ঘরে উড়েও আসতে পারবে না। তাই আর কি আপনার বুঝনোর মাঝে বাম হাত ঢোকালাম না। যদি আপু না বুঝে সেজন্য। হি হি.. ”
” এমনিতেই তো পুচকি তার উপর লুকিয়ে লুকিয়ে আমাদের কথা শুনেছ, এখন আবার আমার সামনে সেই কথাগুলোর ব্যাখ্যা করছ। বেশ ভালো তো। ”
” ওমা! আমি কোথায় আপনাদের কথা লুকিয়ে শুনলাম! বরং আপনারাই তো দরজা মেলে সবকিছু করছিলেন। ”
তানহা বলল,
” কী বলছিস কী এসব নিদ্রা? লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে বসেছিস না-কি? ”
” তোমরা করলে দোষ নেই, আর অামি বললে দোষ? এটা কোন দেশের আইন আপু? ”
” তোকে কিন্তু আমি…..”
অতল বলল,
” তুমি চুপ করো তানহা। নিদ্রার সাথে আমি কথা বলছি। ”
অতল দরজার কাছে গিয়ে তানহার হাত ধরে বলল,
” তো আপুমনি বাহিরে কেন, ভেতরে এসো। ”
” না ভাইয়া আমি ভেতরে যাব না। আমি চাই না আমার জন্য কারো সময় নষ্ট হোক। ”
” কে বলেছে সময় নষ্ট হবে? আর কে-ই বা বলেছে দেখলে দোষ হয়? ”
” মানে? ”
” মানে কিছু না। দেখলে তো দোষ নেই, তাই আজ তোমাকে সামনে রেখেই তোমার আপুর সাথে…..”
অতল সম্পূর্ণ কথা বলার আগেই নিদ্রা এক ঝটকায় নিজের হাত অতলের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে দৌড় দিল। আর যেতে যেতে বলল,
” আমার কিছু দেখার শখ নেই। আর না আমি কিছু দেখতে এসেছিলাম। আমিতো কেবল মায়ের কথায় এসেছিলাম। ”
নিদ্রার দৌড়ে দৌড়ে কথা বলা দেখে অতলের হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা ধরে গিয়েছে। রুমে ফিরে বলল,
” দেখেছ মেয়ের কান্ড? ”
” দেখেছি, আর তুমি কি বলেছ সেগুলোও শুনেছি। নিদ্রা সহজে আর তোমার সামনে আসবে না। অনেক লজ্জা পেয়েছে আজকে। ও হয়তো ভাবতেও পারেনি তুমি এরকম করবে। ”
” হুম। ”
” আচ্ছা ও যেতে যেতে কী বলে গেল? ”
” ওইতো মা নাকি ও’কে আসতে বলেছিল আমার কাছে। কিন্তু কী কারণে আসতে বলেছিল সেটাইতো শোনা হলো না। ”
” ওহ্! আচ্ছা, চলো দুজন মিলে মায়ের সাথে দেখা করে আসি। তাহলে কেন নিদ্রাকে পাঠিয়েছিল সেটাও জানতে পারবে। ”
” হুম, ঠিক বলেছ। চলো যাই তাহলে। ”
.
খোলা আকাশের নিচে মাদুর বিছিয়ে জোৎস্নাবিলাস করতে ধোঁয়া উড়ানো কফির মগ সামনে নিয়ে বসে আছে তিহান। আর তার ঠিক ডান পাশে বসে আছে নিদ্রা। আজ দুজনা ঠিক করেছে এক মগে কফি খেয়েই জোৎস্নাবিলাস করবে।
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে তিহান বলল,
” কী দেখছ ওই দূর আকাশে? ”
” কেন জানেন না বুঝি? ”
” যদি জেনেও থাকি প্রশ্ন করাটা কি অপরাধ? ”
” তা হবে কেন, আমি কি সেরকম কিছু বলেছি? আমিতো কেবল..”
” তাহলে কথা না পেঁচিয়ে লক্ষী বউয়ের মত বলে দিলেই পারো। জানোই তো তোমার এই উত্তরটি শুনতে আমার বেশ লাগে। ”
” জানি তো। তাই তো কথা পেঁচিয়ে আপনাকে উদগ্রীব করছি। ”
” বড্ড পেকে গিয়েছ, পাজি মেয়ে। আমাকে উদগ্রীব করার ধরনও শিখে নিয়েছ দেখছি। ”
” দুটো মাস হয়েছে আপনাকে এতটা কাছ থেকে দেখছি, ধরন না শিখলে হবে? ”
” তাও, বটে। ”
কিছুটা সময় থেমে তিহান-ই আবার বলল,
” আচ্ছা নিদ্রা, তোমার আফসোস হয়-না, নিজের জীবনকে নিজের হাতে ধরে শেষ করছ ভেবে? ”
” আফসোস! আফসোস হবে কেন? আর আমার জীবনই বা কোথায় নিজের হাতে ধরে শেষ করছি? ”
” হাতে ধরেই তো শেষ করছ। এই যে প্রতিনিয়ত ছায়া হয়ে আমার সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে রেখেছ। আমার প্রতিটি সিদ্ধান্তে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছ এবং দিয়ে যাচ্ছো। যেখানে কি-না আমি আদৌ তোমায় স্ত্রীর মর্যাদা দিতে পারিনি আর, পারব কি-না তাও নিশ্চিত নই। সেখানে সেচ্ছায় নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেয়া তো নিজের হাতেই জীবন শেষ করার মত তাই না? আজ যদি অন্য কোথাও তোমার বিয়ে হতো আমি শিউর তুমি অনেক সুখী হতে। এটলিস্ট এই অপ্রাপ্তিময় জীবন তোমাকে ভোগ করতে হত না। ”
নিদ্রা শূন্য আকাশ থেকে মুখ ফিরিয়ে তিহানের হাত জড়িয়ে ধরে বলল,
” আমি জানি আপনি কোন অপ্রাপ্তির কথা বলছেন। আচ্ছা, শারীরিক অধিকার টাই কি একটি স্ত্রীর মর্যাদা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে? মানসিক প্রশান্তিতে স্ত্রীর অধিকার হিসেবে কোনো মর্যাদা নেই? মানে এই যে আপনি আমাকে মানসিক ভাবে এতটা প্রশান্তি দিচ্ছেন তার কোনো মূল্য নেই? এই আমি সময়ে অসময়ে আপনার হাত জড়িয়ে ধরে বসে থাকি তার কোনো মূল্য নেই? আপনি বউ বলে ডেকে বন্ধুসুলভ আচরণ করেন তার কোনো মূল্য নেই? শারীরিক বন্ধনই সব? মনের বন্ধন বলতে কোনো সম্পর্ক নেই? ”
” বিবাহ বন্ধন এমন একটি সম্পর্ক যেখানে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে বন্ধু হিসেবে জীবন সঙ্গী করতে পারে। তবে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ব্যতীত শুধু বন্ধু হিসেবে জীবন সঙ্গী করা যায় না। ”
” আপনি তো চেষ্টা করছেন তাই না? আর এমন তো না যে আমার বয়স চলে যাচ্ছে। তাহলে কেন এতো ভাবছেন? আর আমি আপনার এই হাত বুকে জড়িয়ে ধরে সারাজীবন পার করে দিতে পারব। আমাকে নিয়ে এসব আবল তাবল ভাবনা আপনার মনে না আসাই ভালো। ”
” সে বুঝলাম। কিন্তু কিছুদিন পর যখন সবাই বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের তীর ছুঁড়বে তখন কী করবে ভেবে দেখেছ? ”
নিদ্রা সামনে থাকা গরম কফির মগটি হাতে নিয়ে ছোট্ট করে একটি চুমুক দিয়ে তিহানের সামনে মগটি ধরে বলল,
” এত ভাববার কী আছে? আমি সব ভেবে রেখেছি। ”
নিদ্রার হাত থেকেই কফির মগে চুমুক দিয়ে বলল,
” তাই নাকি! তো কী ভেবে রেখেছ শুনি।”
” এ বিষয় নিয়ে কেউ কিছু প্রশ্ন করলেই সোজাসাপ্টা ভাবে বলে দিব যে, আমরা এই মুহূর্তে বেবী নিতে প্রস্তুত নই। সময় হলে নেব এর আগে নয়। ”
” বাব্বাহ্! তোমার মাথায় এত বুদ্ধি? আগে তো জানতাম না। ”
” জানার ইচ্ছে ছিল না, তাই জানেন নি। এখন ইচ্ছে আছে তাই জানতে পেরেছেন। ”
” লজিক আছে কথায়। ”
” হি হি.. জানি আমি। এবার কফিতে চুমুক দিন, ঠান্ডা তো প্রায় হয়ে গেল। ”
” তুমি পাশে থাকতে আমার কফি ঠান্ডা হবে এটাতো সম্ভবই না। ”
” তাই না-কি? ”
” অবশ্যই। আমার বউটা যে ভীষণ লক্ষী, সে কি তার বরের ফেভারিট কফি ঠান্ডা হতে দিবে! ”
নিদ্রা মুচকি হেসে তিহানের হাত টেনে নিজেকে তিহানের বাহুডোরে আবদ্ধ করে আলতো ভাবে মসৃণ লোমযুক্ত বুকে মাথা রেখে বলল,
” জানেন, এ পৃথিবীতে সুখ নামক বস্তুটি আমার ঠিক কখন অনুভূত হয়? ”
নিদ্রার চুলের ভাজে হাত গুঁজতে গুঁজতে তিহান বলল,
” না বললে জানব কী করে? ”
আঁধারের মাঝেও লজ্জা রাঙা মুখ নিয়ে নিদ্রা বলল,
” আপনি যখন হাসি মুখে আমাকে বউ বলে সম্বোধন করেন ঠিক সেসময় সুখ নামক বস্তুটি যেন আমার মনের আনাচে-কানাচেতে ছুঁয়ে যায়। ”
মায়া জড়ানো কন্ঠে নিদ্রার কথাটি শুনে তিহান কিছুটা সময় থেমে যায়। কিছুটা সময় পার হতেই বলল,
” কিছুটা সময় দাও আমায়, তোমার মনের সব কষ্ট ভুলিয়ে দিব ইনইনশাআল্লাহ। ”
” সে আমি জানি। তাইতো বিন্দু বিন্দু অধিকার জমিয়ে আপনার বাহুডোরে জায়গা করতে পেরেছি। ”
তিহান একটি কথাও আর বলল না। কেবল নিদ্রার এলোমেলো চুলের ভাজে হাতে রেখে পূর্ণ জোৎস্নার পানে তাকিয়ে রইলো।
.
অর্ধরাত্রি সজাগ থেকেও তিহানের আজ চোখে ঘুম নেই। খুব ভোরেই ঘুম ভেঙে গিয়েছে। বিছানায় পিঠ লাগিয়ে রাখতে একদম ইচ্ছে হচ্ছে না তিহানের। এদিকে নিদ্রাও তার পেটের একপাশে হাত রেখে অঘোরে ঘুমচ্ছে। কী করেই বা সে হাতটুকু সরিয়ে দিবে, যদি হাত সরাতে গিয়ে নিদ্রার ঘুম ভেঙে যায়! এসব ভাবতে ভাবতেই তিহান আস্তে করে নিদ্রার হাতটুকু সরিয়ে বিছানা থেকে উঠে গেল। ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে গায়ে একটি পাতলা গেঞ্জি পড়ে তিহান সোজা ছাদে চলে গেল।
এই ভোরবেলা ছাদে এসে বেশ ভালো লাগছে তিহানের। এর আগে এত ভোরে কখনোই ছাদে আসা হয়নি তার। তাই সে ভোরের সৌন্দর্য বলতে গেলে খুব কমই দেখেছে। সেই সুবাদে আজ যেন সবকিছুই তার কাছে নতুন নতুন লাগছে। এক আলাদা অনুভূতির সৃষ্টি হচ্ছে তার মনের মাঝে।
ছাদে কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করার পর পূর্ব আকাশে সূর্যের খোঁজ মিলতেই তিহান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো সেই পূর্ব আকাশের দিকে। তবে দৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থির রাখতে পারল না। সূর্যের আয়তন সংকীর্ণ হলেও এর তাপের প্রখরতা ব্যাপক। তিহানের চোখ যেন ধরে আসছে। তাই আর দাঁড়িয়ে না থেকে ঘরের দিকে ফেরার পথ ধরল তিহান।
ঘরে ঢুকতে নিলেই নিচ থেকে থেমে থেকে হাসির শব্দ স্পষ্ট ভেসে আসতে লাগল তিহানের কাছে। সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে ক্ষানিকটা ঘাড় কাত করে নিচে তাকাতেই দেখে তানহা ভেজা চুলগুলো ছেড়ে কাপড় শুকাতে দিচ্ছে আর অতলের দুষ্টুমি থেকে রেহাই পেতে ছটফট ছটফট করছে। তিহানের মাথা ঘুরে গেল। আর এক মুহুর্তও সেখানে না দাঁড়িয়ে সোজা নিজের ঘরে গিয়ে দরজা ভেতর থেকে লক করে দিল।
.
অতলের উপর হাসিও পাচ্ছে আবার রাগও হচ্ছে তানহার। হাসির মাঝেই সামান্য কড়া গলায় তানহা বলল,
” তুমি কি ছাড়াবে না-কি ছাড়বে না? ”
” কতবার বলব যে, ছাড়ব না। কথা কি কানে যায় না? ”
” আচ্ছা, তুমি বারান্দার মধ্যে কি শুরু করেছ বলোতো? এমনতো না যে, এটা তোমার ঘরের বারান্দা। এটা বাহিরের বারান্দা, সামনে উঠোন। সবার ঘরে যাবার জন্য এটি একটি ছোট খাটো রাস্তাও বলতে পারো। সেই জায়গা এরকম অশ্লীল আচরণ করা কি মানায়? ”
” নিজের বউকে জড়িয়ে ধরাকে যদি অশ্লীল আচরণ বলে, তাহলে অশ্লীল আচরণ কী সেটাই তুমি বুঝো না। ”
” তোমার এই জড়িয়ে ধরাকে আমি মোটেও অশ্লীল বলিনি। তুমি যে পাবলিক প্লেসে জড়িয়ে ধরেছ সেটাকে অশ্লীল বলেছি। ”
” এটা পাব্লিক প্লেস? আমার বাড়ি এখন তোমার কাছে পাব্লিক প্লেস? ”
” অবশ্যই, বাড়ি তো পাব্লিক প্লেসই। এখানে তো আর তুমি আমি একা থাকি না যে, যেখানে খুশি সেখানে রোমান্স করে বেড়াবো। আর প্রতিটি স্থানই হবে আমাদের ব্যাক্তিগত স্থান। এটা হচ্ছে একটি যৌথ পরিবার। যেখানে অনেকেই বাস করে। আর সেই জন্য নিজের ঘর ছাড়া বাহিরে এসব আচরণ করাকে যে দেখবে সেই অশ্লীল আচরণের উপাধি দিয়ে দিবে। ”
পেছন থেকে তানহার গালে একটি চুমু খেয়ে ছেড়ে দিল অতল। বলল,
” নাও দিলাম ছেড়ে, এবার খুশি তো? এবার তো আর কেউ আমায় অশ্লীল বলবে না তাই না? এবার আমি শালীন হয়ে গিয়েছি। হো হো..”
.
.
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here