অন্তরালের কথা পর্ব ৫

#রিপোস্ট
#অন্তরালের_কথা
লেখা – জান্নাতুল ফেরদৌস মাটি
পর্ব – ৫
.
.
অতলের যেকথা সেকাজ। তানহার পেছনে গিয়ে হুট করে তানহাকে পাজ কোলে নিয়ে নিল। তানহা পুরাই অবাক! হা হয়ে আছে কেবল মুখটা। না পারছে কিছু বলতে, না পারছে সইতে। শুধু একরাশ বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে অতলের দিকে। সেই সাথে মনে মনে নিন্দে করছে তাদের এই নিয়মকে।
এদিকে অতল তানহাকে পাজ কোলে নিতেই পুরো বাড়ি যেন মেতে উঠলো হাসির জোয়ারে। কেউ হাত তালি দিয়ে তানহাকে স্বাগতম জানাচ্ছে। তো কেউ শীষ বাজিয়ে স্বাগতম করছে। অতল সেসব দেখে কিছুটা লজ্জাবোধ করে মুচকি হাসি দিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। তবে তানহার সেসব কোনকিছুতেই মন নেই। তার মনে যে এই মুহুর্তে বিষের যন্ত্রণা ছেয়ে একাকার হয়ে গিয়েছে।
তবে এ বিষের যন্ত্রণা যে তানহার একার তা নয়। দূর থেকে আরও একজন আছে যে কি-না তানহার সাথে সাথে সে নিজেও বিষের যন্ত্রণায় ছটফট ছটফট করছে।
হ্যাঁ, সে আর অন্য কেউ নয় সে হচ্ছে তিহান। তানহার ভালোবাসার তিহান। তিহান চলে যেতে নিয়েও যে পারেনি, বাড়ির বাইরের সোরগোল শুনে। তাই সিঁড়ির এক কোণে দাঁড়িয়ে মাথা ঝুঁকে দেখছিল, কি হচ্ছে সেখানে! অতলকে ও তানহাকে নিয়ে সবার হাসি, মজা, ঠাট্টা গুলো যেন তিহানের বুকে কাটার মতো বিঁধছিল। তারউপর অতল যখন তানহাকে পাজ কোলে নিয়ে ঘরের দিকে ফিরালো, তিহান যেন নিজের সব শক্তি হারিয়ে ফেললো। হাত পা অবশ হয়ে যেন সেখানেই বসে পড়ার উপক্রম। হাত পা কাঁপুনির ফলে একবার তো তিহানের পা স্লিপ কেটে সিঁড়ি থেকে পড়ে যাবার অবস্থা হয়েছিল কিন্তু, তিহান নিজেকে কোনোমতে সামলে নিয়েছিল। অতঃপর নিজের শরীরের সাথে একপ্রকার যুদ্ধ করে নিজের ঘরে ফিরে যায়।
দরজা লাগিয়ে বিছানার কোণে খাটের পায়ার কাছে বসে পড়লো তিহান। মুখে কোনো কথা নেই। চোখের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে শুধু নোনাজল। দু’পা সোজা করে একপায়ের উপর আরেকপা দিয়ে ফ্লোরে মেলে রেখেছে। কাঁধ কিছুটা ঝুঁকে দু’হাত পিঠের পেছনে নিয়ে মেঝের উপর রেখে শরীরের সমস্ত ভর হাতের উপর ছেড়ে দিল। ঘাড় উঁচু করে মাথার উপর চলন্ত ফ্যানের দিকে তাকিয়ে চোখ বুজে ফেললো। চোখ বেয়ে জলের বিন্দু কণাগুলো কাঁধের কাছে পড়তেই তিহান চোখ মেলে তাকালো। আর মনে মনে ভাবলো,

” তার জীবনের এ মোড় টা আসা কি খুব জরুরী ছিল ! যদি এই ছিল তার কপালে তবে কেন সেদিন তানহার দেখা পেয়েছিল সে! না-ই বা পেত দেখা, আর না-ই বা বাসতো ভালো। তারপরও তো তাকে এরকম জীবিত থেকেও মৃত্যুর যন্ত্রণা পেতে হতো না। আচ্ছা, তার জীবন এখন কাকে ঘিরে? কার জন্য সে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাববে? ভবিষ্যৎ এর পেছনে দৌড়োবে! তার ভবিষ্যৎ এর যে আজই সমাপ্তি ঘটলো। না আছে প্রত্যাশা, আর না আছে চাওয়া। আচ্ছা, তানহা তো জানতো, তানহা ব্যতীত তার জীবন অন্ধকার। যে অন্ধকারের শুরু আছে তবে শেষ নেই। তারপরও কি করে পারলো তানহা, তাকে এভাবে সূর্য না উঠার দেশে পাড়ি জমাবার জন্য রাস্তা করে দিতে! সে তো বেশি সময় চায়নি তানহার কাছে। কেবল ২/৩ দিন চেয়েছিল। খুব বেশি কি চেয়ে ফেলেছিল? হয়তো বড্ড বেশি চেয়েছিল। নয়তো কি আজই বিয়ের কনে হয়ে, বরের কোল চেপে শ্বশুর বাড়ি চলে আসে! অবশ্য তানহারই বা কিসের দোষ। সে-তো আপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করেছিল তার হতে কিন্তু, সে যে পারেনি তানহাকে তার মর্যাদা দিতে। আর না পেরেছে নিজের করে বেঁধে রাখতে। কিছুই করতে পারেনি সে। এর জন্যই হয়তো টমাস মিল্টন বলেছিলেন, ‘ ভালোবাসা এমনই এক প্লাটফর্ম যেখানে সব শ্রেণীর লোকরাই দাঁড়াতে পারে।’
তবে হয়তো কেউ সফল হতে পারে, কেউ বা সফল হতে পারে না। সে হয়তো না পারার দলেই লিপিবদ্ধ হলো। কিন্তু তার হাতে একটি জিনিস এখনো আছে। ”
মনের মাঝে কথাগুলো আওরাতে আওরাতে তিহান মেঝে থেকে উঠে দাঁড়ালো। ধীর পায়ে গেল নিজের ঘরে থাকা ওয়াল কেবিনেটের সামনে। কিছুটা ঝুঁকে সবার নিচে থাকা ড্রয়ারটি খুলল। কারণ গতমাসে বাড়িতে এসে যে, এই ড্রয়ারেই তিহান ইঁদুর মারার ঔষধ তথা বিষ রেখেছিল। তিহান তো আর বাড়িতে থাকে না নিজের অফিসের জন্য। তাই রুমটিও খালি পড়ে থাকে। মাসে একবার আসে সে।সেই সুযোগেই ইঁদুরেরা তিহানের ঘরে নিজেদের বাসা বেঁধেছিল। আর সেই বাসার বিনাশ ঘটাতেই তিহান এনেছিল এই বিষ। কিন্তু তিহান যে এই বিষটি কিনার মুহূর্তেও জানতো না, এই বিষটি ইঁদুরের বাসা বিনাশ করার জন্য নয় বরং এই বিষ যে তার জীবন বিনাশ করার জন্য সে নিজের হাতে কিনেছিল।
তিহান বিষের বোতলটি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে জানালার পাশে। চোখের জল মুছে সারা মুখে একবার নিজের ডান হাত দিয়ে বুলিয়ে নিল। তারপর হাতে থাকা বোতলটির দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল,

” এই প্রাণ বেঁচে থাকতে যে তানহাকে অন্য কারো হতে দেখতে পারব না। আর না পারব অন্য কারো সাথে তানহাকে এক নির্জন রাতে ফুল দিয়ে সজ্জিত বদ্ধ ঘরে ঠেলে দিতে। যেহেতু এসকল কিছুর একটিও ঠেকাতে পারব না, তাহলে না-হয় বিকল্প রাস্তাই অবলম্বন করি। বেঁচে থাকলে তো এসকল কিছু আমাকে ফেস করতে হবে। কিন্তু মরে গেলে তো আর ফেস করতে হবে না। তাই বেঁচে থেকে ধুঁকে ধুঁকে মরে যাবার চেয়ে, এসব না দেখে একবারে মরে যাওয়াই অনেক ভালো। ”
.
মাত্রই অতল ঘরে এসে তানহাকে নিজের পাজ কোল থেকে নামিয়ে ঘরের দরজা লাগিয়েছিল। তার মাঝেই তানহা বিরক্তিকর স্বরে বলে উঠলো,
” সবকিছুর একটি সীমা আছে। আর আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে অবশ্যই তা জানেন আশা করি। ”
” তোমার কথার মানে ঠিক বুঝলাম না! ”
ভ্রু কুচকে বেশ অবাক হয়েই কথাটি বলল অতল। তানহা বলল,
” না বুঝার তো কিছু নেই! হতে পারে শত মানুষের ভিরে নতুন বউকে পাজ কোলে ঘর পর্যন্ত নিয়ে আসা আপনাদের পরিবারের রেওয়াজ। তবে আমাদের পরিবারের না। শুধু আমাদের পরিবার কেন? অনেক পরিবারই এটা পছন্দ করবে না। কারণ সেই মুহুর্তে ছোট বড় সব বয়সের মানুষই সেখানে থাকে। তাই এ ব্যাপারটা ভীষণ দৃষ্টিকুটুর দেখায়। আর মানুষের কথা বাদই দিলাম। আমার জন্য তো আপনি একজন অপরিচিত মানুষ ছিলেন। হতে পারেন স্বামী তবে , সেই সম্পর্কটা কেবল কিছুক্ষণ আগেই হলো। এর আগে তো আপনাকে চিনতাম না। তাহলে অবশ্যই আপনার করা স্পর্শ আমার মোটেও ভালো লাগার কথা না! আমাকে স্পর্শ করার আগে আপনার অন্তত একটিবার হলেও আমায় জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন ছিল। ”
এই সামান্য টুকু বিষয় নিয়ে যে তানহা এতগুলো কথা বলবে অতল বুঝতে পারেনি। তবে অতল চাইলেই তানহাকে এই মুহুর্তে অনেক কিছু শুনাতে পারে। কারণ তার সেই অধিকার আছে। তবে অতল সেরকম কিছুই করবে না। কারণ অতল যে খুব শান্ত প্রিয় মানুষ। তাই তানহার এতগুলো কথা শোনার পরেও অতল শান্ত গলায় বলল,
” আসলে এ কথাগুলো আমার মাথায় আসেনি। সত্যি বলতে, তোমাকে একবার আমার জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন ছিল। কারণ কেবলই আমাদের বিয়ে হয়েছে। কিন্তু আমরা কেউ কাউকে চিনি না, জানি না। তাই প্রথম প্রথম অস্বস্তি একটু লাগবেই। তবে কথা দিচ্ছি এরকম সিচুয়েশনে আর সৃষ্টি হবে না। তোমার অনুমতি না নিয়ে আর কোনোদিন এমনকিছু করবো না আমি। ”
তানহা আর কোনো কথা বাড়ালো না। তবে বেশ অবাক হলো অতলের বিহেভ দেখে। কারণ সে ভেবেছে তার এই কড়া কথাগুলো শুনে অতল অবশ্যই তাকে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু তার সকল ভাবনা মিথ্যে করে দিয়ে, অতল কিছুই বলল না। আর না মুখের ভঙ্গিতে বিরক্তি,রাগ কিংবা ক্ষোভের প্রকাশ করেছে।
এদিকে তানহাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অতল কিছুটা হাসি মুখ করে বলল,
” এভাবে দাঁড়িয়ে আছো যে? ক্লান্ত লাগছে না! না-কি আমার জন্য ফ্রেশ হতে পারছ না? আমাকে বললেই পারতে। আমি এখনই ঘরের বাহিরে যাচ্ছি। বেশি দূরে যাবো না, দরজার পাশেই দাঁড়িয়ে থাকবো। তুমি ফ্রেশ হয়ে কেবল দরজার ছিটকিনি খুলে দিও আমি চলে আসবো। কেমন? ”
অতল আস্তে করে দরজা খুলে রুমের বাহিরে চলে গেল। তবে যাওয়ার আগে নিজেই দরজা দিয়ে ভিড়িয়ে দিল। তানহা অবাক হয়ে শুধু অতলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো!
অতল ঘর থেকে বের হতেই তানহা পেছনে ফিরে তাকায়। পেছনে ফিরতেই তার চোখ পড়ে ঘরের মাঝখানে থাকা বিছানাটির উপর। যে বিছানায় ফুল ব্যতীত অন্যকিছুই দেখা যাচ্ছে না।এমনকি বিছানার চাদর পর্যন্তও না। তানহা ভালো করে তাকিয়ে দেখলো বালিশের কাছে তিনটি ফুলের তোড়া। আর তোড়াগুলো সাজানো ৩ রঙের ফুল দিয়ে। লাল গোলাপ, হলুদ গোলাপ, সাদা গোলাপ। প্রতিটি তোড়াই এই তিন ফুলের মিশ্রণে সাজানো। আর বিছানার মাঝখানে রয়েছে লাল গোলাপের পাপড়ি ও গাঁদাফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজানো। বিছানার চাদর থেকে প্রায় ২ ইঞ্চি পুরু করে ফুলের স্তর দেয়া হয়েছে। আর বিছানার চারিদিকে মশারির জালের মতো পড়ে রয়েছে গোলাপ ও গাঁদাফুলের লাইন। শুধু যে চারপাশে ফুলের লাইন রয়েছে তা নয়, এমনভাবে ফুলের লাইন করা হয়েছে বিছানায় শুয়ে উপরে তাকালে শুধু ফুল আর ফুল দেখা যাবে। এসব কিছু দেখে তানহা পাগল প্রায় অবস্থা হয়ে যায়। পরনের ভারী শাড়ি নিয়েই মেঝেতে বসে পড়ে। চিৎকারে করে কাঁদতে ইচ্ছে করে তার কিন্তু, সে যে পারবে না কাঁদতে। এই বাড়ির নতুন বউ সে! চিৎকার করে কাঁদলে চারিপাশের মানুষ যে নানান কথা বলবে। তাই সে নিজের সাথে নিজেই বিড়বিড় করে বলে,
” এ কেমন অদ্ভুত মিল ! এরকম মিল তো হওয়ার কথা ছিল না! দু’জন আলাদা মানুষের মনের মিল কী করে এক হয় ! তিহান একজন আলাদা মানুষ আর অতল একজন আলাদা। তবে তাদের চাওয়া যেন একেবারেই এক। যে চাওয়ার মাঝে নেই বিন্দুমাত্র কোনো পরিবর্তন। এরকম বাসর ঘরের বর্ণনা তো একমাত্র তিহান তাকে দিয়েছিল। যেটা ছিল তিহানের স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নের সঙ্গী করতে চেয়েছিল তিহান তার ভালোবাসা তানহাকে। তানহাও যে দিন দিন তিহানের দেয়া স্বপ্নগুলোকে নিজের স্বপ্ন ভেবে নিয়েছিল কিন্তু, সেই সকল স্বপ্ন যে তানহা কবুল বলার মুহূর্তেই ভেঙে চূড়মাড় করে দিয়েছে। এতোদিনের দুজনের বুনা স্বপ্ন ভেঙে খানখান করে দিয়েছিল তানহা নিজের ইচ্ছায়। তাহলে সেই সকল স্বপ্ন কেন আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো! স্বপ্নগুলো কেন তার পিছু পিছু এ বাড়ি অবধি চলে এলো! ভেঙে ফেলা সব স্বপ্ন কেন জোড়া লেগে তার সামনে হাজির হলো ? কেন কেন? ”
কথাগুলো নিজেকে নিজে বলেই কান্নায় ভেঙে পড়ল তানহা। চোখের জল নাকের জল মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তানহার সেদিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই। শুধু দু-হাত দিয়ে মুখ চেপে কেঁদেই যাচ্ছে। কান্নার মাঝেও তানহার মনে হলো তিহানের কিছু কথা। মুখের সামনে আসা চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজতে গুঁজতে মনে মনে বলল,
আচ্ছা, তিহান তো বলেছিল আজই সে তার বাড়ি ফিরে যাবে। পরিবারের সাথে কথা বলবে। যে কোন মূল্যেই হোক তার পরিবারকে রাজি করাবে। আর বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তার বাড়িতে আসবে। কিন্তু সে কি জানে, তার প্রতিটি চেষ্টাই যে আজ বৃথা যাবে! আচ্ছা, তাদের নিয়তি কেন এমন করলো? তাদের কী এমন দোষ ছিল? তাদের ভালোবাসায় কী কোনোপ্রকার কমতি ছিল ? হয়তো কমতি ছিল.. তা নাহলে কেন তারা আজীবন একে অপরের পাশে থাকার ওয়াদাটি ভেঙে, আজ জীবিত থেকেও দু’জন দু’প্রান্তে! আচ্ছা, তিহান যখন জানতে পারবে তার তানহা অন্য কারো হয়ে গিয়েছে তখন সে কী করবে? তারউপর তারই একটু একটু করে বুনা স্বপ্নের সেই বাসর ঘরেই তানহা ছিল। তবে তার পরিবর্তে তানহার সংস্পর্শে ছিল অন্য এক পুরুষ। এই স্বপ্নের বাসর ঘরে যে ভালোবাসার ছোঁয়া কিনা তিহান তার তানহাকে ভরিয়ে দিতে চেয়েছিল, সেই ছোঁয়া তানহা স্বামীর অধিকারের ভালোবাসা নামক মৃত্যুর ন্যায় যন্ত্রণা পাবে অন্য এক পুরুষ থেকে। এ কথা কি মেনে নিতে পারবে তিহান? কখনো পারবে না। কখনোই না। তানহাকে কেও বন্ধুত্ব রূপে ছুঁয়ে দিলেও যে তিহান বড্ড রেগে যায়। সে জায়গায় এসকল কিছু তিহান কিছুতেই সহ্য করতে পারবে না। নিজেকে শেষ করে দিবে তিহান। আর তিহানের কিছু হলে তার কী হবে ? ”
তানহা রাগে, ঘেন্নায় নিজের হাত মাথার দুপাশে ধরে দুহাতে মুঠের মাঝে চুল নিয়ে টানতে লাগলো। আর উপরের দিকে তাকিয়ে কিছুটা উচ্চস্বরে বলল,
” দুজনকে তো তুমি তোমার লীলায় একে অপর থেকে আলাদা করেই দিয়েছ কিন্তু পৃথিবী থেকে আলাদা করে দিওনা। এই আকাশটির নিচে অন্তত দু’জনকে থাকতে দাও যাতে, অন্তত আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি পৃথক হলেও যে পৃথক নই আমরা। এক ছাদের নিচে নাই-বা থাকলাম। এক আকাশের নিচে তো আছি। সেই বা কম কি! এতটুকু বলার সুযোগ দাও তুমি। ”
.
.
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here