অন্তর দহন পর্ব-২৩+২৪ ও শেষ

#অন্তর_দহন
#লেখনিতে_আরুহি_অহি

পর্ব___২৩

চন্দ্র স্পন্দনের পাশে বসে আছে।স্পন্দন তাকিয়ে আছে চন্দ্রের দিকে। এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে চন্দ্র বললো,

__এখন কেমন লাগছে স্পন্দন?

দূর্বল শরীর নিয়ে ক্ষীণ কন্ঠে স্পন্দন বললো,

__এই যে চোখের সামনে তুমি আছো চন্দ্র। এখন বেশ ভালো লাগছে।

__সেদিন কি হয়েছিল স্পন্দন?

__আমি গাড়ি নিয়ে ডাক্তারের এপোয়েন্ট নিতে যাচ্ছিলাম। তোমার কথা মনে মনে ভাবছিলাম।বা পাশে একটা ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি ওভারটেক করতে একটু অন্যমনষ্ক ভাবে রাস্তার মাঝে চলে এসেছিলাম। হঠাৎ মনে হলো সামনে থেকে একটা ট্রাক আমার দিকে ছুটে আসছে তীব্র গতিতে। আমি ব্রেক ঘুরিয়ে পাশে যাওয়ার আগেই পাশে থাকা ট্রাকটা আমার গাড়িকে পাশে যাওয়ার থেকে আটকে দেয়। এরপর একটা বিকট শব্দ হয়। আমার আর কিছুই মনে নেই চন্দ্র।

__আপনার গাড়িটা জায়গায় পিষে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল স্পন্দন।তবে আপনার ভাগ্য ভালো যে সিটবেল্ট বাঁধা ছিলো। না হলে অনেক বড় বিপদ হয়ে যেতো।এখনো অবশ্য কম বিপদ যায়নি আপনার উপর দিয়ে। তবুও বেঁচে আছেন। আমার কাছে এর থেকে বড় খুশির খবর আর দ্বিতীয়টি নেই স্পন্দন।

__মিশালকে আসতে বলো চন্দ্র।

__আসছে। আমি ফোন করেছি আপনার ফোন থেকে।একটা কথা জানতে চাই স্পন্দন।

__বলো চন্দ্র।

__হৃদি আপুর কোনো ছবি আছে আপনার কাছে?

__না।সব পুড়িয়ে ফেলেছি। কিন্তু কেনো?

__তাকে দেখতে কেমন বলতে পারবেন?

স্পন্দনের কাছে বর্ণনা শুনে কিছুটা বিস্মিত হয়ে গেছে চন্দ্র।ওর জানা মতে হৃদি সু’ইসাইড করেছে।তাহলে তার ফিরে আসার কথা নয়।এমনকি এই জন্য স্পন্দন জেলেও ছিলো।সে যদি বেঁচে থাকতো তাহলে তো স্পন্দনকে মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচাতে এগিয়ে আসতো।হয়তো আমিই ভুল ভাবছি। এমন কিছু তো সম্ভব নয় কখনো।

স্পন্দন চন্দ্রকে এতো গভীর চিন্তা করতে দেখে চন্দ্রের হাতের উপর হাতটা রেখে বললো,

__কি হয়েছে চন্দ্র?

__ক্ কিছু না স্পন্দন। আপনি একটু ঘুমান। আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।

স্পন্দনের শরীর তেমন ভালো না।তাই আর কথা না বাড়িয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকলো। কিন্তু চন্দ্রের ভেতরে উথাল পাতাল ঝড় চলছে। অনেক গুলো প্রশ্ন ওর সামনে অথচ একটার ও উত্তর নেই ওর কাছে। এমন সময় নার্স এসে বললো,

__ম্যাম আপনাকে ডাক্তার বাবু ডাকছেন।

চন্দ্র উঠে দাঁড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে ওর আব্বু আর বড় আম্মু বসে আছে। ওনাদের দিকে তাকিয়ে চন্দ্র বললো,

__বড় আম্মু? তুমি ভেতরে গিয়ে বসো।স্পন্দন ঘুমাচ্ছে। আমি না আসা পর্যন্ত তুমি কাউকে ভেতরে আসতে দিবে না।আর না তুমি কোথাও যাবে।

__আচ্ছা চন্দ্র আমি বসে থাকবো ওর পাশে। তুই চিন্তা করিস না মা।

__আব্বু তুমি এখানে থাকবে।চোখ কান খোলা রাখবে।কে আসছে কে যাচ্ছে খেয়াল রাখবে।

__কিছু কি বুঝতে পারছিস চন্দ্র মা?

__অনেক কিছুই বুঝতে পারছি আব্বু।তবে সবকিছু এখনো ধোঁয়া ধোঁয়া আবছা। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস স্পন্দনের বেঁচে থাকা নিয়ে অনেক জনের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।তাই বারবার ওদের আঘাত আসতে থাকবে আব্বু। আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে।

__আমি তোর সাথে আছি চন্দ্র।ভয় পাস না মা।

__বড় আম্মুকে কিছু বলো না। টেনশন করবেন উনি। আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে আসছি।

চন্দ্র করিডোর থেকে বেরিয়ে ডাক্তারের কেবিনে গিয়ে নক করলো।ডাক্তার ভেতরে ডেকে বসতে বললেন। এরপর স্পন্দনের রিপোর্ট গুলো বের করে টেবিলে রেখে শুকনো মুখে বললেন,

__দেখুন মিসেস্ স্পন্দন আমরা স্পন্দন মির্জার যে রিপোর্ট গুলো হাতে পেয়েছি তাতে কিছু ভয়ংকর কথা লেখা আছে। আমি চাইনা আপনার কাছে কোনোকিছু লুকিয়ে রাখতে। আমি চাই আপনি ও আপনার স্বামী সম্পর্কে সমস্ত বিষয়ে অবগত থাকুন।

__জ্বী বলুন আপনি কি পেয়েছেন রিপোর্টে?

__স্পন্দনের শরীরের আঘাত গুলোর মধ্যে সব থেকে বড় আঘাত ও মাথায় পেয়েছে।এতে ওর মাথার নার্ভ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত।আর ওর যে নার্ভ গুলো এখনো আছে সেখানে ব্লাড জমে গেছে।

চন্দ্র এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ডাক্তারের দিকে। চন্দ্র জানতো স্পন্দনের এই এক্সিডেন্টে ওর অনেক বড় আঘাত লেগেছে। কিন্তু এতটা আঘাত লেগেছে এটা বুঝতে পারে নি।তাই নিজেকে সামলাতে পারছে না চন্দ্র।

__আমি বলছি না যে এতে ওর বেঁচে থাকা বা সুস্থ থাকা সম্ভব নয়। আমি বলছি ওর জীবন সংশয় আছে এতে। আপনার এ বিষয়ে অবগত থাকতে হবে।ওর যে নার্ভ গুলোতে ব্লাড জমেছে সেখান থেকে ওর শারীরিক অবস্থার মাঝে মাঝেই অবনতি হবে। এগুলো আপনার খেয়াল রাখতে হবে।অন্তত ছয় মাস ওনাকে কোনো মেন্টাল প্রেসার দেওয়া যাবেনা।বড় আঘাত পেলে কিন্তু ভীষণ বড় বিপদ আসতে পারে মিসেস্ স্পন্দন।

ডাক্তারের বলা প্রতিটা কথাই চন্দ্রের মস্তিষ্কের ভেতরে মি’শাইলের মতো আঘাত করছে।ওর একটাই কাজ স্পন্দনকে বাঁচাতে হবে সেটা যেভাবেই হোক।বড় আম্মুকে এসব বললে উনি ভেঙে পড়বেন।বড় আব্বু জেলে।তাকেও খবর দেওয়া যাবেনা। চন্দ্রের এসব ভাবনার মধ্যে ডাক্তার বললেন,

__আমি জানি কথাগুলো শুনে আপনার উপর কতটা প্রভাব পড়ছে। কিন্তু ডাক্তার হিসেবে আমার দায়িত্ব আমার রুগির সমস্ত ডিটেইলস তার বাড়ির লোককে দেওয়া। আমি বুঝতে পারছি আপনার বয়স কম।স্বামীর এতো গুলো সমস্যা সম্পর্কে জানতে পেরে নিজেকে সামলে নিতে আপনার কষ্ট হচ্ছে মিসেস্ স্পন্দন। তবুও আমি বলতে বাধ্য। আমি ও নিরুপায়।তবে আমি আপনাকে এটুকু আশ্বাস দিতে পারি স্পন্দন মির্জার যেকোনো বিষয়ে আপনি আপনি আমাকে এসে বলবেন। আমি ওর ডাক্তার হিসেবে ওকে বাঁচিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।বাকিটা আল্লাহ পাক জানেন। আমার চিকিৎসার যতটুকু সাহায্য আপনাকে করা সম্ভব আমি তা করবো।

__আমি আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো ডাক্তার বাবু। আমার স্বামীর জীবন সংশয় আছে এটা আপনি আর কাউকে বলবেন না।ওর মা বাবা বয়স্ক মানুষ।তারা সামলাতে পারবে না।

__আপনি যেমন বলবেন মিসেস্ স্পন্দন।আমি ঠিক তেমনি করবো।

__আর একটা কথা ডাক্তার বাবু।

__জ্বী বলেন।

__স্পন্দন যেনো নিজের এই সমস্যা গুলো সম্পর্কে জানতে না পারে। আপনি আমাকে কথা দেন যে ওকে কিছু বলবেন না।

__কিন্তু মিসেস্ স্পন্দন আমাকে তো এটা তাকে বলতেই হবে।

__প্লিজ ডাক্তার বাবু আমার দিকটা একটু ভাবুন। আমার স্বামীর এক্সিডেন্টটা ইচ্ছে করে করানো হয়েছে। আমার স্বামীকে মেরে ফেলতে এই হাসপাতাল পর্যন্ত লোক পৌঁছে গেছে। আমি কিভাবে এখনো তাকে দেখে রেখেছি তা আমি জানি। আপনার সহযোগিতা ছাড়া বাকিটা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।প্লিজ আমাকে সহায়তা করুন ডাক্তার বাবু।

__আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন মিসেস্ স্পন্দন। আমি পূর্ণ সহযোগিতা করবো আপনার স্বামীকে বাঁচিয়ে রাখতে।

__ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করবো না ডাক্তার বাবু। আল্লাহর কাছে আপনার জন্য লাখ লাখ শুকরিয়া আদায় করি তিনি যেনো আপনার নেক হায়াত দান করেন। আমার স্বামীর জন্য দোয়া করবেন ডাক্তার বাবু।

__অবশ্যই করবো মিসেস্ স্পন্দন। আমি যতটুকু পারি আপনাকে সহায়তা করবো।

__এই খবরটা দয়া করে বাইরে না যায় ডাক্তার বাবু।

__আমি সেদিকে খেয়াল রাখবো মিসেস্ স্পন্দন।

__আমি এখন আসি ডাক্তার বাবু।

__জ্বী আসুন।

ডাক্তারের কেবিন থেকে এলোমেলো বিধ্বস্ত পায়ে বেরিয়ে এলো চন্দ্র। নিজের শরীর ও আগে থেকেই ভালো ছিলো না।তার উপর কয়েকদিন ধরে যেভাবে খাওয়া ঘুম নেই চন্দ্রের তাতে আরো ভেঙে পড়েছে ভেতরে ভেতরে। কিন্তু কাউকে বুঝতে দেওয়া যাবেনা এই সময়ে।তাই যতটা সম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে চলেছে চন্দ্র। বাইরে এসে দেখে ওর মা আর মেঝো আব্বু আম্মু আসছে। চন্দ্রকে দেখেই ওনারা এগিয়ে এলেন। চন্দ্রের কাছে জানতে চাইলেন ডাক্তার কি বলেছে। চন্দ্র বললো,

__স্পন্দন ঠিক আছে। সমস্যা নেই।আমরা কয়েকদিন পরেই ওকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবো।

সবাই একসাথে বলে উঠল,

__আলহামদুলিল্লাহ।

চন্দ্রের মাথায় ওর মা হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,

__কয়েকদিন ধরে সমানে দৌড় ঝাঁপ করছিস চন্দ্র।তোর শরীরের দিকেও তো তাকানো যাচ্ছেনা মা।

__আমি ঠিক আছি আম্মু। আমার স্পন্দন সুস্থ হয়ে গেলে আমিও সুস্থ হয়ে যাবো।তোমরা আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না আম্মু।

ওর মা চোখটা মুছে নিয়ে বললো,

__আমার সেই দিনের এতোটুকু চন্দ্র। আজকে কতটা বড় হয়ে গেছে। নিজেকে সামলে স্বামী সংসার সামলাতে শিখে গেছে রে মেঝো আপা।

__আমাদের চন্দ্র লক্ষ্মীমন্ত মেয়ে।ও পারে না এমন কোনো কাজ নেই ছোট। তুই চিন্তা করিস না ছোট।

__হুম মেঝো আপা।

__আমি বড় আম্মুকে পাঠিয়ে দিচ্ছি আম্মু। কিছু খাইয়ে দিও। আম্মুর প্রেসার আপ ডাউন করছে এতো টেনশনে।

__তুই একটু খাবি না চন্দ্র?

__আমি পরে খাবো মেঝো আম্মু।আসছি আমি।

চন্দ্র যাওয়ার সময় মিশালকে একটা টেক্সট করে দিলো। এরপর স্পন্দনর কেবিনে চলে গেলো।

#চলবে,,,,,,,,

ভুল ত্রুটি মার্জনীয়। গল্প পড়ে ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে লেখিকাকে উৎসাহিত করুন।হ্যাপি রিডিং।#অন্তর_দহন
#লেখনিতে_আরুহি_অহি

পর্ব___২৪

__চন্দ্র? কোথায় ছিলে তুমি?

__এই তো এখানেই ছিলাম স্পন্দন।কখন উঠেছেন?

__একটু আগেই।মা বললো তুমি নাকি নিজের দিকে একটুও খেয়াল রাখছো না শুধু আমাকে নিয়ে ভাবছো।

__এসব কথা বাদ দেন স্পন্দন। আমি অসুস্থ থাকলে আপনি আমার জন্য এর থেকে বেশি করেন। আমি তো সেটুকু করতে পারি না। যেটুকু আমার পক্ষে করা সম্ভব সেটুকুই করছি স্পন্দন।এসব নিয়ে আর ভাববেন না। আগে আপনি সুস্থ হয়ে উঠুন।পরে দেখা যাবে সব।

__তোমার ডাক্তার দেখানো বেশি জরুরী ছিলো চন্দ্র। আমার এক্সিডেন্টের জন্য তোমাকে নিয়ে যেতেই পারলাম না। তোমার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেছো?কতটা দূর্বল লাগছে তোমাকে।

__আমি ঠিক আছি স্পন্দন।উঠে বসুন একটু। আমি খাইয়ে দেই।

স্পন্দন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চন্দ্রের দিকে। চন্দ্রের ছেলেমানুষী আর চোখে পড়ছে না ওর। কেমন একটা দায়িত্ব দায়িত্ব বুদ্ধি এসেছে বলে মনে হচ্ছে স্পন্দনের।স্পন্দনকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে চন্দ্র বললো,

__কি দেখছেন স্পন্দন?

__আমার চন্দ্রকে দেখছি। অনেক বেশি বড় হয়ে গেছে এই কয়েক দিনে।

__আপনার কথা ও যেমন।হা করুন। খেয়ে নিন।

চন্দ্র স্পন্দনকে খাইয়ে দিয়ে সব গুছিয়ে রাখতে গেলেই স্পন্দন ব্যান্ডেজ করা হাতটা দিয়ে ওর হাতটা ধরে বললো,

__তুমি খাবে না?

__আমি একটু পরে খাবো স্পন্দন। আপনি এবার চোখ বন্ধ করে ভালো ছেলেদের মতো ঘুমাবেন।

__তুমি কিন্তু আমার পাশে থাকবে চন্দ্র।

__থাকবো। আপনি ঘুমান।

স্পন্দনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে চন্দ্র ভাবতে লাগলো,

__আমার যে অনেক কাজ আছে স্পন্দন। আপনার উপরে কার এতো রাগ সেটা আমাকে বের করতে হবে। আমাকে যে জানতে হবে ঐ মেয়েটি কে? তোমার এক্সিডেন্টে তার কোনো হাত আছে কিনা?আবরার চৌধুরী কে শাস্তি দিতে হবে।বড় আব্বুর সাথে দেখা করতে হবে। এখন এসব কিছুই আপনাকে বলতে পারবো না। আপনি সুস্থ হলেই সব বলবো স্পন্দন।

স্পন্দন ঘুমিয়ে গেলেই চন্দ্র উঠে পড়লো।বাইরে গাড়ি নিয়ে মিশাল অপেক্ষা করছে।ওর সাথে দেখা করতে হবে গোপনে।সব ইনফরমেশন দিতে হবে ওকে। চন্দ্রকে দেখেই সবাই খেতে বললো। চন্দ্র বললো,

__আমি খেয়েছি আম্মু। আমি একটু মেডিসিন আনতে যাচ্ছি।আধ ঘন্টা লাগবে। আব্বু তুমি বাইরে থাকো।বড় আম্মু তুমি স্পন্দনের কাছে থাকবে।আর মনে রেখো নার্স এলেও আমাকে না জানিয়ে ঢুকতে দিবে না।

সবাইকে বলেই বেরিয়ে গেলো চন্দ্র।দূর থেকে আরেকটি গাড়িতে বসে কেউ দেখছে চন্দ্র গাড়িতে উঠছে।সে কাউকে ফোন করে বললো,

__ম্যাম মাঠ পুরো ফাঁকা।মিসেস্ মির্জা হাসপাতাল থেকে মাত্র বেরিয়ে গেছে।

__অপেক্ষা করো আমি আসছি।

__ওকে ম্যাম।

চ‌ন্দ্র মিশালকে বললো,

__ভাইয়া তাড়াতাড়ি করে বলুন কি ইনফরমেশন পেয়েছেন। আমি নিশ্চিত এই মুহূর্তে আমি হাসপাতালে নেই খবরটা ওদের কাছে চলে গেছে। আপনি পুলিশকে এলার্ট করে দেন।

মিশাল পুলিশকে ফোন করে বলে চন্দ্রকে বললো,

__ম্যাম ঐ দিন যে ট্রাকটা স্যারকে এট্যাক করেছিলো সেখানে আবরার চৌধুরীর ডান হাত মিজান ছিলো। আমি পুলিশকে জানিয়েছি।সিসি টিভি ফুটেজ সহ।

__আবরার চৌধুরীর সাথে কি জেলে কেউ দেখা করতে গেছিলো মিশাল ভাইয়া?

__গিয়েছিলো।তবে পরিবারের বা দলের কেউই নয়।ওর উকিল গেছিলেন।

__সে কি মহিলা?

__হ্যাঁ ম্যাম। কিন্তু আপনি কি করে,,,,,

__আমার ধারণা ভুল নয় মিশাল ভাইয়া। আমি যেটা ভাবছি সেটাই যদি হয় তাহলে ঐ মেয়ে উকিল সেজে দেখা করতে গেছে।আসলে সে আবরার চৌধুরীর বোন হৃদি।

__কিন্তু ম্যাম হৃদি নামের মেয়েটি তো দুই বছর আগে সু’ইসাইড করেছে।স্যারকে তো এই জন্যই জেলে যেতে হয়েছিল।

__মিশাল ভাইয়া অনেক সময় আমরা চোখে যেটা দেখি সেটাও ভুল হতে পারে।আর এখানে তো শুধু শোনা গেছিলো হৃদি আর নেই। আমাদের কারো কাছে কোনো প্রকার প্রমাণ ও নেই এই বিষয়ে।

__না তা নেই ম্যাম। কিন্তু উনি তো স্যারকে ভালোবাসতেন।

__যে স্পন্দনকে পাওয়ার জন্য বাবা ভাইয়ের ষড়যন্ত্রের সাথে হাত মেলায় সে এখন ভাইকে বাঁচাতে স্পন্দনকে শেষ করে দিতে দুইবার ভাববে না ভাইয়া।

__আপনি এখানে বসে বসে এতো কিছু কিভাবে জানলেন না মানে,,,,

__আমি শুধু পুরো বিষয়টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত চিন্তা করে দেখলাম ভাইয়া।আর আপনার দেওয়া ইনফরমেশনের সাথে মিলিয়ে নিলাম।আর এখন পুরো ব্যপারটা আপনার সামনে ভাইয়া।

__মানতেই হবে ম্যাম।স্যারের মাথাও এতো দ্রুত চলে না যতটা আপনার চলে।

__ভাইয়া এখন আপনার প্রথম কাজ হচ্ছে জেলে কে যাচ্ছে না যাচ্ছে তার হিসাব রাখা।খতিয়ে দেখা সেগুলো।আর দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে হাসপাতালে সর্বক্ষণিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করা।কে আসছে কে বের হচ্ছে কার আচরণ সন্দেহজনক এসব দেখবেন। আমি এখন আসি ভাইয়া। ওদিকে যদি কেউ এসে থাকে তাহলে আজকে তাকে ধরা পড়তেই হবে।

চন্দ্র দ্রুত হাসপাতালের পেছনের দিক থেকে ভেতরে চলে গেলো।লিফট পাঁচ তলায় দেখে সিঁড়ি বেয়ে ছুটতে লাগলো।মন বলছে কেউ এসেছে।

এদিকে পুলিশের সাদা পোশাকের লোকের জন্য নার্স ও ভেতরে যেতে পারছেনা।এর মধ্যেই একজন মহিলা ডাক্তার এসে বললো,

__পেসেন্টের কোনো ক্ষতি হলে সে দায় কে নিবে?তার এখন চেকাপ করার সময়।মেডিসিন দেওয়ার সময়।আপনারা কারা যে এসব কাজে বাঁধা দিচ্ছেন।

__ওনারা পেসেন্টের বাড়ির লোক মিস্ হৃদি চৌধুরী।

চন্দ্র পেছন থেকে কথাটা বলে উঠলো। মহিলা ডাক্তার থমকে গেলেন হয়তো নাম শুনে নয়তো চন্দ্রকে দেখে। তবুও বললেন,

__আমি এই পেসেন্টের ডিউটি ডাক্তার মিস্টার সাহেলের এসিস্ট্যান্ট মিস্ আয়ানা। কিন্তু আপনি হৃদি চৌধুরী বললেন কেনো?

__সিরিয়াসলি মিস্ হৃদি চৌধুরী? আপনি আয়ানা?

__হ্ হ্যাঁ তাই তো বললাম।

__আপনি ঘামছেন কেনো ডাক্তার? আপনার স্যার ডাক্তার সাহেল কোথায়?

__উনি পার্সোনাল কাজে বাইরে গেছেন। কিন্তু আপনি আমাকে জেরা করে বড্ড ভুল করছেন মিসেস্ স্পন্দন।

__আসুন ডাক্তার সাহেল। আপনি তো নাকি পার্সোনাল কাজে বাইরে গেছেন।

__মিসেস্ স্পন্দন আমি আমার কেবিনেই ছিলাম।আর কাউকে আমি স্পন্দনকে দেখতে পারমিশন দেই নি।

চন্দ্র হাত তালি দিতে দিতে বললো,

__আসল পরিচয়ে আসুন মিস্ হৃদি চৌধুরী।তা আপনি নিজেই নিজের পরিচয় দিবেন না আমি দিবো?

মাথা নিচু করে রাগে ফুঁসছে হৃদি। এবার হু’ঙ্কার ছেড়ে বললো,

__করেছি বেশ করেছি।ঐ স্পন্দন আমাকে ভালোবাসার নামে আমার সাথে খেলেছে।বাবার ভয়ে শেষে আমাকে বিয়ে পর্যন্ত করেনি। এরপর ওর বাবা আমার বাবাকে মিথ্যা বলে ডেকে নিয়ে খু’ন করেছে। আমার ভাইকে জেলে পাঠিয়েছে।বেশ করেছি করেছে।

চন্দ্র পেছনে তাকিয়ে দেখে বড় আম্মু স্পন্দনকে একটা হুইল চেয়ারে বসিয়ে বাইরে নিয়ে এসেছে। আসলেই স্পন্দনের মনের ভুল ধারণা গুলো এবার ভাঙার সময় এসেছে।যাকে পাগলের মতো ভালোবেসে নিজের জীবন কে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছিলো তার আসল রূপ এবার নিজের চোখেই দেখে নিক। চন্দ্র বললো,

__আমার নির্দোষ স্পন্দনকে জেলে থাকতে হয়েছে হৃদি, দিনের পর দিন মত খেয়ে নিজেকে পাগল করে রেখেছে শুধু আপনার জন্য। আপনাকে ভালোবাসে বলে।আর আপনি?

__আমি ঘৃণা করি।এই সৈয়দ বংশের সবাইকেই ঘৃণা করি। ভালোবাসা তো দূরের কথা।

স্পন্দন বললো,

__আমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসার উপযুক্ত প্রতিদান দিয়েছেন আপনি মিস্ হৃদি চৌধুরী। বিশ্বাস করুন আপনার প্রতি আমার ঘৃণা নয় বরং করুনা হচ্ছে ভীষণ।

চন্দ্র মিশালকে ফোন দিয়ে বললো,

__ওদের ধরতে পেরেছেন ভাইয়া?

__জ্বী ম্যাম।

__এনাকে এখন নিয়ে যেতে পারেন স্যার।নিচে এর দলের সবাইকে ধরে রেখেছে মিশাল ভাইয়া। আপনি থানায় পৌঁছানোর আগেই সমস্ত প্রমাণ আপনার কাছে পৌঁছে যাবে স্যার।

সবাইকে ধরে নিয়ে চলে গেলো পুলিশ। চন্দ্র ডাক্তার সাহেলের কাছে এসে বললো,

__আপনার জন্য আজকে এতো বড় বিপদ থেকে আমার পরিবার রক্ষা পেলো ডাক্তার বাবু। আপনি সময় মতো আমাকে ফোন মেসেজ না দিলে আমি পৌঁছাতে পারতাম না। আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞ ডাক্তার বাবু।

স্পন্দনের আবার টেস্ট করানো শেষে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেলো।তবে স্পন্দনের শরীরের ব্যাপারে শুধু চন্দ্র ই জানে।স্পন্দন এখন ভালো আছে। সুস্থ আছে। শুধু চন্দ্র ইদানিং একটু বেশি দূর্বল হয়ে গেছে।

#চলবে,,,,,,,,

গল্পটি শেষের পথে। বুঝতেই পারছেন। আশাকরি শেষটায় ও সাথে থাকবেন।হ্যাপি রিডিং।#অন্তর_দহন
#লেখনিতে_আরুহি_অহি

অন্তিম_পর্ব

জেলে দেওয়া হয়েছে হৃদিকে। কিভাবে স্পন্দনকে ভালোবাসার ফাঁদে ফেলে একটু একটু করে শেষ করে দিতে চেয়েছিলো সেগুলো স্বীকার ও করেছে। চন্দ্র স্পন্দনকে বাড়িতে এনেছে। খুব করে অনুরোধ করে বড় আব্বুর জামিনের ব্যবস্থা করেছে।মিশালের কাছে যে সব প্রমাণ ছিলো তা জমা দেওয়া হয়েছে থানায়। সন্ধ্যায় চন্দ্র বেলকনিতে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই কয়দিনে ওর জীবনে কত কিছু ঘটে গেলো।স্পন্দন নিঃশব্দে এসে চন্দ্রকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ গুজে দিলো।আড়ষ্ট কন্ঠে বললো,

__আমার চন্দ্রাবতী হয়ে এভাবে আমাকে ভালোবেসো চন্দ্র । আমি তোমাকে ছাড়া কিছু না এবার বুঝতে পারলে তো। তোমাকে ছাড়া তোমার স্পন্দন অসম্পূর্ণ। ভীষণ একা তোমার স্পন্দন। কখনো আমাকে ছেড়ে কোথাও যেওনা চন্দ্র।

__আপনার সাথে এভাবে মিশে যাবো এটা কখনো ভাবিনি স্পন্দন। এখন আমার পুরো অস্তিত্ব জুড়েই শুধু আপনি আছেন স্পন্দন। আপনার সাথে এই অস্তিত্বের বন্ধন যে কখনো ছিন্ন হবার নয়।

__ভালোবাসি চন্দ্র।ভালোবাসি আমি আমার চন্দ্রাবতীকে।

__ভালোবাসি স্পন্দন। আপনার চন্দ্র আপনাকে ভীষণ ভালোবাসে।

বাইরে থেকে দরজার নক পেয়ে চন্দ্র পেছনে ঘুরতে গেলেই স্পন্দন চন্দ্রের কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো,

__বিকালে তোমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবো চন্দ্র।

চন্দ্র কিছু বলতে চেয়েও বললো না। চুপচাপ গিয়ে দরজা খুলে দিতেই কাজিন ভাই বোন গুলো হুড়মুড় করে সব রুমে ঢুকলো। ওদের একসাথে দেখে চন্দ্র অবাক হয়ে বললো,

__এই বাহিনী কোথা থেকে আগমন হলো?তাও আবার আমার আর আমার স্পন্দনের রোমান্টিক টাইমে।

ওরা সবাই একসাথে বলে উঠলো,

__ও ও ও ও। এখন ভাইয়াই সব।আমরা বুঝি কেউ না।

স্পন্দন ভেতরে এসে বললো,

__তোরা আসার আর সময় পাস না।যে পায়ে এসেছিস সেই পায়ে বেরিয়ে যা।না হলে স্পন্দন তোদের সাথে কি করবে সেটা ভাবতেও পারবি না।

__যাচ্ছি যাচ্ছি ভাইয়া।এতো ভয় দেখানোর কি আছে ভাইয়া?

সবাই চন্দ্র আর স্পন্দনের কথায় হতাশ হয়ে বললো,

__তোমাদের প্রেমের কাবাবে হাড্ডি হচ্ছি না আমরা।চল সবাই।

যেতে যেতে চিল্লিয়ে বলে গেলো,

__রাতে পার্টি হবে পার্টি।আমরা এখন চলে গেলেও তখন কিন্তু ছেড়ে দিবো না।

স্পন্দন আর চন্দ্র দু’জনেই হাসতে লাগলো।বাড়িটাতে আবার প্রাণ ফিরে এসেছে বলে মনে হচ্ছে।সবাই একসাথে আবার কতগুলো দিন পর ভাবতেই ভালো লাগছে।স্পন্দন চন্দ্রের দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চন্দ্র বুঝতে পেরে দৌড়ে চলে যাওয়ার সময় পড়ে যেতে নিলেই স্পন্দন ওকে ধরে নেয়। এরপর বললো,

__এখনো ছেলেমানুষী গেলো না চন্দ্র। এভাবে কেউ ছোটাছুটি করে বলো।

__আপনি তখন ওভাবে তাকিয়ে ছিলেন কেনো?

__আমি তাকাবো না তো কে তাকাবে চন্দ্র।যাও রেডি হয়ে নাও।বের হতে হবে আমাদের।

চন্দ্রকে নিয়ে স্পন্দন বাইরে যাওয়ার সময় সৈয়দ মির্জা বললেন,

__আমাকে মাপ করে দিস বাবা।হয়তো ক্ষমার অযোগ্য তবুও পারলে মাপ করে দিস।

স্পন্দন বললো,

__কেউ যদি ভুল করার পর অনুতপ্ত হয় মন থেকে তাহলে অবশ্যই তাকে ক্ষমা করা উচিত আব্বু। আপনার উপর আমার আর কোনো রাগ নেই।

অনেক দিন পর ছেলের মুখে আব্বু ডাক শুনে কেঁদে উঠলো সৈয়দ মির্জা।স্পন্দন বুকে জড়িয়ে ধরে বললো,

__সব ঠিক হয়ে যাবে আব্বু।এই সৈয়দ বাড়িতে আর কখনো দুঃখের ছায়া পড়বে না।

ডাক্তার চন্দ্রের রিপোর্ট নিয়ে দেখছে। চন্দ্র আর স্পন্দন দু’জনেই তাকিয়ে আছে সেদিকে।স্পন্দনের শুধু গলা শুকিয়ে আসছে। না জানি রিপোর্টে কি আসে।ডাক্তার এবার কিছুটা মুচকি হাসি দিয়ে বললেন,

__কংগ্রেচুলেশন মিস্টার এন্ড মিসেস্ স্পন্দন মির্জা।আপনারা বাবা মা হতে চলেছেন। আপনার ধারণা সঠিক মিস্টার স্পন্দন মির্জা।মিসেস্ স্পন্দন প্রেগন্যান্ট।

চন্দ্র লজ্জা ভয় দুইটাতেই মাথা নিচু করে ফেললো।স্পন্দন বললো,

__চন্দ্রের কোনো সমস্যা নেই তো এই প্রেন্যান্সিতে?

__সমস্যা তো আছেই মিস্টার স্পন্দন। আপনার ওয়াইফের বয়স কম। এখন প্রেগন্যান্সিতে উনার লাইফ রিস্ক আছে।তবে সাবধানে থাকবেন তবেই হবে।আর আমি তো আছিই। সমস্যা হলে বলবেন। আমি যথাযথ ভাবে চেষ্টা করবো মিস্টার স্পন্দন।

চন্দ্র স্পন্দনের এমন শুকনো মুখ দেখে আরো চুপচাপ হয়ে গেছে।মনে মনে ভাবছে হয়তো স্পন্দন এই খবরে খুশি হয়নি।স্পন্দন চন্দ্রকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে রেখে পানি এনে দিলো।সাথে চন্দ্রের পছন্দের খাবার। চন্দ্র সেগুলো এক পাশে রেখে স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে বললো,

__আপনি খুশি হননি স্পন্দন?

চন্দ্রের কথা শুনে স্পন্দন চন্দ্রকে জড়িয়ে ধরে বললো,

__আমি মনের কথা বুঝিয়ে বলতে পারি না চন্দ্র। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি রে। তবুও মনের মধ্যে তোমাকে হারানোর ভয়ে আমি ভীত হয়ে আছি।কোনো কিছুর পরিবর্তে তোমাকে আমি হারাতে পারবোনা চন্দ্র। কিছুতেই না।

__আপনি থাকতে আপনার চন্দ্রের কখনো কিছু হবে না স্পন্দন।এতো ভয় পাচ্ছেন কেনো?

__জানিনা চন্দ্র। তোমাকে ভালোবাসার পর আমার পুরো পৃথিবী পাল্টে গেছে। এখন আমার সমস্ত কিছু শুধু তুমি চন্দ্র।তাই তোমাকে ছাড়া একটা মুহূর্ত ও আমার থাকা সম্ভব নয় চন্দ্র।

বাড়িতে এসে সবাইকে খবরটি দিলো স্পন্দন।সবাই ভীষণ খুশি। আজকে সৈয়দ বাড়িতে খুশির বন্যা বয়ে চলেছে।দাদিমা দুহাত ভরে দোয়া করলেন চন্দ্র আর স্পন্দনকে। অনেক রাত পর্যন্ত কাজিন ভাই বোনদের সাথে মজা করে কেটেছে। আব্বু আম্মু চাচা চাচী ফুপিরা অনেক দোয়া করেছে চন্দ্রকে। সবথেকে খুশি হয়েছেন বড় আম্মু।উনি অনেক সময় চন্দ্রকে বুকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন। অনেক আদর করেছেন। এরপর বলেছেন,

__আমার আজকে থেকে সংসারের থেকে ছুটি হলো চন্দ্র। আজকে থেকে এই বাড়ির সকল কিছুর দায়িত্ব তোর।

চন্দ্র বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে। সারাদিনের দৌড় ঝাঁপ ওর শরীর আরেকটু দূর্বল করে দিয়েছে।স্পন্দন দ্রুত এসে বললো,

__কি হয়েছে চন্দ্র? কোথায় কষ্ট হচ্ছে?

__কিছু হয়নি স্পন্দন।একটু ক্লান্ত লাগছে।

স্পন্দন ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে চন্দ্রের দিকে। এখন থেকেই মেয়েটার এতটা কষ্ট হচ্ছে এরপর কি হবে।এসব ভেবেই খারাপ লাগছে স্পন্দনের। চন্দ্র স্পন্দনের বুক মাথা রেখে বললো,

__আপনি আর আমি মিলে দুজনেই নতুন অথিতির যত্ন রাখবো স্পন্দন। আপনি ভয় পাবেন না।

স্পন্দন চন্দ্রের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,

__ভালোবাসি চন্দ্র।

__ভালোবাসি স্পন্দন।

সমাপ্ত ___________:____________

গল্পটি কেমন হয়েছে জানিনা। প্রথম থেকেই চেষ্টা করেছি ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে। জানিনা কতটুকু পেরেছি। এখানেই ইতি টেনে দিলাম।ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। লেখিকার জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এতদিন পাশে ছিলেন আশাকরি সামনের দিনগুলোতে ও পাশে থাকবেন।হ্যাপি রিডিং।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here