অন্ধকার পল্লী পর্ব ১৪

#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:১৪
,
,
,
,
প্লেন বাংলাদেশ এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলো।আফিন প্লেন থেকে নেমে আসে।আজ প্রথমেই অবনীর বাসায় যাবে ও।এ কয়দিন থেকে মনটা বড় অস্থির হয়ে আছে জলপরীকে একনজর দেখার জন্য।থানা থেকে মাত্রই ঘরে এসে পৌছালো রহমত সাহেব।রুমাল দিয়ে কপাল মুছার নামে চোখ জোড়াও মুছে নিলো।আমেনা বেগম ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়েছে।আফসানা মায়ের মাথার কাছে এসে বসে আছে।মা কিছু তো খাও।এমন কেন করছো?আপু ফিরে আসবে তুমি দেইখো।কান্না জড়িত কন্ঠে মায়ের চুলে হাত বুলাতে বুলাতে বলল আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,আমার অবনীরে আইনা দে।আল্লাহর কসম লাগছে মাইয়াডারে আইনা দে কেউ।বলেই কাঁদতে লাগলেন আমেনা বেগম।আফসানা নিজেকে সামলাতে পারছেনা।বড় বোনটাকে ভীষন মিস করছে ও।কই আছে বোনটা কে জানে?হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে চোখ মুছে পিছনে ফিরলো আফসানা।রহমত সাহেব দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছেন।আফসানা বাবার কাছে এসে দাঁড়ালো।বাবা পুলিশ আপুকে পেয়েছে?কোথায় আপু?বলোনা বাবা।আফসানা বলতে থাকলো।
ঐ তারেক মিনহাজের বিরুদ্ধে কম্পলেইন লেটার লিখে পাঠাইছি কমিশনারের কাছে।আমার অবনীর নামে যা তা বলে।বেডার সাহস কম না।আমার মাইয়া স্বর্নের টুকরা আছিলো।কে জানি কই আছে মাইয়াডা?কথা গুলো বলে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন রহমত সাহেব।
বাবা!!! আফসানা চিৎকার করে রহমত সাহেবের পাশে বসে পড়লো।রহমত সাহেবের ফোন থেকে আমীন কে
কল দিলো আফসানা ডাক্তারকে নিয়ে আসার জন্য।
খাওয়ার পানি এনে রহমত সাহেবের মুখে ছিটালো আফসানা।রহমত সাহেব পিটপিট করে তাকালেন।আফসানা বাবার হাত ধরে খাটে এনে মায়ের পাশে শুইয়ে দিলো।বাবা শুয়ে থাকো,তোমার জন্য পানি আনছি।বলেই আফসানা পাকঘরের দিকে পা বাড়ালো।
,
,
,
,
রহমত সাহেবকে পানি দিয়ে চেয়ারে বসলো অাফসানা।হঠাৎ কলিংবেলের শব্দে দরজার কাছে দৌড়ে গেলো অাফসানা।ডাক্তার এসেছে ভেবে দরজা খুলে দিলো অবনী।আফিন তড়িঘড়ি করপ ভিতরে ঢুকে পড়লো।অবনী কই?জোরে বলল আফিন।আফিনের চেহারা দেখে অাফসানার বুঝতে দেরি হলো না এই কয়টা দিন কতোটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে কাঁটিয়েছে আফিন।আপনি বসুন সোফা দেখিয়ে বলল আফসানা।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমি বসবোনা। বলো অবনী কই?ওর ফোন বন্ধ কেন?একনাগাড়ে জিজ্ঞেস করতে থাকলো আফিন।
আফিনকে ধরে সোফায় বসালো অাফসানা।অবনীর গায়েব হওয়া থেকে রহমত সাহেবের থানায় চক্কর কাঁটা সবই আফিনকে বলল আফসানা।আফিনের মাথা কাজ করছেনা।অবনী নেই ভাবতেই পারছেনা আফিন।বুকে চিনচিনে ব্যাথা অনূভব করছে আফিনের।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আঙ্কেল আন্টি কেমন আছে?আস্তে করে প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,মা ভালো নেই।বাবা থানা থেকে এসেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।আমাদের দারোয়ান কে কল দিলাম।ডাক্তার এনে দেয়ার জন্য।বলে উঠলো আফসানা।আফিন সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে রহমত সাহেবের রুমের দিকে এগোলো।মোটা কালো মহিলাটার কাছে এসে দাঁড়ালো মামুন।আমি যেই মেয়েটাকে এনেছি।ওকে এখন যেন কেউ স্পর্শ না করে।দুদিন পর যাকে ইচ্ছা পাঠাবেন ওর কাছে।বলে উঠলো মামুন।অবনী সেন্সলেস অবস্থায় পড়ে আছে ফ্লোরে।শরীরের প্রতিটি অংশ যন্ত্রনায় ভরে আছে।এ কয়টাদিন ওকে পশুর মতো অত্যাচার করেছে।চোখ বন্ধ করতেই মা বাবা আফসানা আর যাকে মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে সেই আফিনের চেহারা ভেসে উঠছে।প্রত্যেকটা সময় মৃত্যুর রাস্তা থেকে ফিরে এসেছে অবনী।মনে মনে শুধু আফিনকে ডেকেছে অবনী।আফিন ওকে মনে নিতে পারবেনা।আর কখনো কাছে ও টানবেনা।যে মেয়েটা দিনের পর দিন এভাবে অত্যাচারিত হয়েছে সে কারোর ভালোবাসার যোগ্য না।
,
,
,
,
রহমত সাহেব পাশে তাকিয়ে আফিনকে দেখতে পেলেন।আমেনা বেগম বিছানার সাথে লেগে গেছেন।আফিন রুমে ঢুকতেই মাথা তুলে আফিনকে দেখেই ভেজা চোখ জোড়া আবার ও ভিজে গেলো আমেনা বেগমের।হুহু করে কেঁদে উঠলেন ওনি।আফিন খাটের পাশে এসে বসলো।রহমত সাহেব আফিনের হাত চেপে ধরলো।আমার মাইয়াডারে ফিরাইয়া আইনা দেও বাবা।কাঁদতে কাঁদতে বলছিলো রহমত সাহেব।আফিনের চোখ জোড়া ভিজে এলো।
আফিন কিছু বলতে যাবে তখনই ওর ফোনে ভাইবারে মেসেজের রিংটোন বেজে উঠে।আফিন ফোন বের করে মেসেজ চেক করে দেখলো আননোন নম্বর থেকে ভিডিও মেসেজ পাঠালো কে যেন।
ভিডিও অন করতেই আফিনের মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার যোগাড়।অবনীকে অত্যাচারের ভিডিও পাঠিয়েছে কে যেন।ভিডিওর ভলিউম বাড়াতেই কে যেন বলছিলো “মিঃ আফিন খান তোমার পেয়ারে অবনীকে দেখো।কতোটা কষ্ট পাচ্ছে ও?;বাঁচাবানা ওকে?এখন ও ছুই নাই ওকে আমরা।তোকে আটচল্লিশ ঘন্টার সময় দিলাম।এ সময়ের মধ্যে অবনীকে খুঁজে নে।আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে না এলে ওকে নিয়ে আমরা আনন্দ করবো তারপর বেঁচে দিবো চড়া দামে।কথা গুলো বলে ওদের মধ্যে একজন অবনীর পিঠে চাবুক দিয়ে বাড়ি মারলো।অবনী চিৎকার করে কাঁদছে।অবনীরচিৎকার শুনে রহমত সাহেব আর আমেনা বেগমের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেলো।চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন ওনারা।এরই মধ্যে আমীন ডাক্তার নিয়ে এসেছে।আফিন ড্রইং রুমে এসে বসলো।বডিগার্ডরা কোথায় ছিলো?ওদের উপস্থিতিতে অবনীকে কি করে নিয়ে গেলো?ভাবতে ভাবতে ড্রাইভার কে কল দিলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো স্যার।অপর পাশ থেকে বলে উঠলো ড্রাইভার।
,,,,,,,,,,,,,,,,বডিগার্ডরা কই?প্রশ্ন করলো আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,স্যার ওনারা হাসপাতালে ভর্তি।যেদিন অবনী ম্যাম গায়েব হইলো ঐদিনই কে জানি বডিগার্ডদের মাইরা রাস্তায় ফালায় রাখছিলো।
,
,
,
,
কান থেকে ফোন সরালো আফিন।চোখ লাল হয়ে গেছে ওর।রক্তবর্ণ চোখ জোড়া দিয়ে আগুনের ফুলকি উঠছে ওর।ডাক্তারের বিল মিটিয়ে বেরিয়ে গেলো আফিন।ভাইবারে যে নম্বর থেকে ভিডি ও এসেছিলো সে নম্বরটি বন্ধ।কই খুঁজবে আফিন এখন ওর জলপরীকে।তবে এই তারেক মিনহাজের খবর নিতে হবে।ফোন বের করে আফিন তার একজন লোককে তারেক মিনহাজের সব ডিটেইলস ওকে দেয়ার জন্য।আফিন হাসপাতালে ছুটে গেলো ওর বডিগার্ড দের কাছে।এখন যেকোন তথ্য ওর জন্য ইম্পরট্যান্ট,,,,,,,

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here