অন্ধকার পল্লী পর্ব ১৫

#অন্ধকার_পল্লী
#Tabassum_Riana
Part:১৫
,
,
,
,
রক্তাক্ত অবস্থায় বসে আছে তারেক মিনহাজ।তার চোখজোড়া ভয়ে ছেয়ে গেছে।ঠোঁটের কোনা বেয়ে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।গাল দুটো লাল হয়ে আছে।ইউনিফর্ম এর কলারের আর হাতার অংশটুকু ছিড়ে গেছে।ভয়ে ঢোক গিলো দুবার। আমি করিয়েছি ওকে কিডন্যাপ আমি করিয়েছি।কাঁপা কাঁপা গলায় বলল তাডেক মিনহাজ।সাথে সাথে তার বুকে জোরে লাথি এসে পড়লো।তারেক মিনহাজ নিচে পড়ে গেলেন।আফিন তারেকের সামনে এসে দাঁড়ালো।শুয়োরের বাচ্চা তোদের জনগনের কল্যানে যোগ দেওয়া হয়েছে। আর তোরা এসব করে বেড়াস?নিজের মা বোনের সাথে এমন করতে পারবি?চিৎকার করে বলল আফিন।তারেকের শার্টের কলার ধরে আরো দুতিনটে ঘুষি লাগালো আফিন ওর মুখে।
,
,
,
তোদের জন্য একটা মেয়ে কতোটা নির্যাতিত হচ্ছে।নিজেদের কিভাবে পুলিশ বলিস? তোদের মতো অমানুষদের জন্য মেয়েরা স্বাধীন জীবন যাপন করতে পারেনা।কেন করলি এসব?অবনী কি দোষ করেছিলো?চিৎকার করে বলতে লাগলো আফিন আর সেই সাথে ঘুষি মারলো তারেক মিনহাজ কে।
,
,
,
,
কয়েকঘন্টা আগে
বডিগার্ড দের কাছে ছুটে এসেছে আফিন।ওদের কারোর হাত ভাঙ্গা আর কারোর পা ভাঙ্গা।আফিনকে দেখে তারা ভয়ে চুপসে গেলো।স্যরি স্যার ম্যামকে বাঁচাতে পারলামনা।বলে উঠলো বডিগার্ডরা।সরি বলতে হবেনা, শুধু বল কি হয়েছিলো আমার অবনী কই?প্রশ্ন করলো আফিন।ঐদিনের পুরো কাহিমী আফিনকে খুলে বলল বডিগার্ড রা।আফিন যেন নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছে।ওদের পাশের একটা চেয়ারে বসে পড়লো আফিন।স্যার আমরা খবর পেয়েছিলাম এখানে শুধু বখাটেরা না অন্য একজনের হাত ও আছে।বলে উঠলো বডিগার্ডরা।
অশ্রু ভরা রক্তবর্ন চোখজোড়া দিয়ে তাকালো আফিন।কে সে?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলো আফিন
,
,
,
,,,,,,,,,,,,,,,,স্যার সে তারেক মিনহাজ পুলিশ সুপার।
,
,
,
,
হাত মুঠ করে আফিন।চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।নিজেদের খেয়াল রাখবি।বলে আর একমিনিট ও দাঁড়ায় না।বাহিরে বের হয়ে আসে।হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে ফোন বের করে একটা নম্বরে কল দেয় আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো স্যার!!!আসিফ (আফিনের পিএ)
,,,,,,,,,,,,,,একটা কাজ করতে হবে।রাগী গলায় বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,জি স্যার কি কাজ?
,,,,,,,,,,,,,,,,,তারেক মিনহাজ।পুলিশ সুপার সে।তাকে নিয়ে আমার বনানীর পোড়া বাড়িতে চলে আয়।গম্ভীর গলায় বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,প প পোড়া বাড়ি!!!!কে ক কেন স্যার?পোড়া বাড়ির কথা খানিকটা ভয় পেয়ে গেলো আসিফ।
,,,,,,,,,,,,,,Don’t Question me.Its urgent.Do that quickly. I need him right now.(চিৎকার করে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,ok sir.
,
,
,
,
ফোন কেঁটে পকেটে রাখলো আফিন।
গাড়ি নিয়ে রওনা হলো পোড়া বাড়ির উদ্দেশ্যে।পোড়া বাড়ির সামনে আসতেই আসিফের গাড়ি দেখতে পেলো আফিন।ঠোঁটের কোনায় হিংস্রতা ফুঁটে উঠলো আফিনের।পোড়া বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই আসিফ সামনে এলো আফিনের।
,,,,,,,,,,, স্যার এনেছি।বলে উঠলো আসিফ।
হুম।আসিফের কথায় পাত্তা না দিয়ে তারেকের সামনে এসে দাঁড়ায় আফিন।প্যান্টের বেল্ট খুলে খানিকটা হাতে পেচিয়ে নিলো আফিন।আমাকে তুলে আনিয়েছেন কেন?জানেন কে আমি?পুলিশ সুপার।এক্ষুনি তোকে এ্যারেস্ট করাতে পারি।চিনিস আমাকে?এক্ষুনি ছেড়ে দে।চেঁচাতে লাগলো তারেক মিনহাজ।
অবনী কই?তারেক মিনহাজের সামনে টেবিলে জোরে হাত রেখে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,,,,কে অবনী?চিনিনা তাকে।ছেড়ে দে আমাকে।একজন পুলিশের সাথে দুর্ব্যাবহার করার পরিনাম ভয়াবহ হয়।বলে উঠলো তারেক।
,,,,,,,,,,আমি ভদ্রভাবে কথা বলছি এখনো।জলদি বল অবনী কে কই রেখেছিস?চিৎকার করে বলল আফিন।
,,,,,,,,,,,,আরে সেই কতক্ষণ ধরে অবনী অবনী লাগিয়ে রেখেছিস। আমি কি করে জানবো তোর অবনী কই?চেঁচিয়ে উঠলো তারেক।
,,,,,,,,,,,,,আর সহ্য হলো না আফিনের বেধড়ম মারতে লাগলো তারেককে বেল্ট দিয়ে।
,
,
,
ব্যাথায় চিৎকার করছে তারেক।জানটা যেন কেউ টেনে ছিড়ে নিচ্ছে।আফিনের প্রত্যেকটা আঘাতে বাবা গো মাগো বলে চিৎকার করছে তারেক মিনহাজ।
,
,
,
,
ভবিষ্যৎ মার থেকে নিজেকে বাঁচাতে তারেক মিনহাজ সত্য টা বলে দিলো।অবনীকে কই রেখেছিস তোরা?রাগী গলায় বলল আফিন।
স্যার জানিনা।বলে উঠলো তারেক।আফিন আবার মারতে আসলে তারেক বলল স্যার জানিনা সত্যি।ওদের কাউকে কল দিয়ে জান কই ওরা।বলে উঠলো আফিন।তারেক মামুনের নম্বরে কল দিলো।
স্যার নম্বর তো বন্ধ।বলে উঠলো তারেক।এতো সতো বুঝিনা আমি।কল দিয়ে জানা আমাকে। চিৎকার করে বলল আফিন।তারেক একে একে সবার নম্বরে কল দিলো।শেষমেষ নাহিদ কল উঠালো।
,,,,,,,,,বস তোরে কল করতে মানা করছিলো না?অপর পাশ থেকে বলল নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,,,,হ করছিলো তো।আমি একখান কামে কল দিছিলাম।

,,,,,,,,,,,,,,,,কি কাম?ভ্রু কুঁচকালো নাহিদ।

,,,,,,,,,,, নতুন দুইডা মাইয়া পাইছি।বসের পছন্দ হইবো।তোরা কই জানলে পাঠাইতে পারতাম।বলে আফিনের দিয়ে ভয়ার্ত চোখে তাকালো তারেক।

,,,,,,,,,কাউরে কইয়া দেস নাই তো?কিছুটা সন্দেহ নিয়ে বলল নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,আরে না না কারে কমু?

,,,,,,,,,,,,,,,,আমরা আছি গাজীপুরের পতিতা পল্লী।বলেই হালকা কাশলো নাহিদ।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,নাম কি পতিতা পল্লীর?তারেকের মুখে পতিতা পল্লীর নাম শুনে মুখ শুকিয়ে গেলো আফিনের।ওর জলপরীর কতোটা নির্যাতন হচ্ছে ভাবতেই বুক ফেঁটে যাচ্ছে আফিনের।

,,,,,,,,,,,,,,অন্ধকার পল্লী।বলে উঠলো নাহিদ।
,
,
,
,
তারেকের হাত থেকে ফোন নিলো আফিন।কই আমার অবনী?প্রশ্ন করলো আফিন।
গাজীপুরের অন্ধকার পল্লী পতিতাপল্লীতে।বলে উঠলো তারেক।আসিফ!!!! চিৎকার করে উঠলো আফিন।
জি স্যার!!!আফিনের পাশে এসে দাঁড়ালো আসিফ।ওকে তোর সাথে রাখ।যেন কোন চালাকি করতে না পারে।দাঁতে দাঁত চেপে বলল আফিন।ওকে স্যার বলে উঠলো আসিফ।
আফিন তৎখনাৎ বেরিয়ে পড়লো অন্ধকার পল্লীর উদ্দেশ্যে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here