অন্ধপ্রেম পর্ব -৩৪

#অন্ধপ্রেম
Writer : Shabnaj Hossain Moon
Part :34
(গল্প না দিলে আরো অসসুস্থ ফিল করবো শান্তিতে ঘুমুতে পারবোনা তাই দিয়ে দিলাম )
.
ঢাকা শহরে চার নাম্বার বিপদ সংকেতে চলছে….
পুরো বাংলাদেশেও একই অবস্থা …এই সময় কাক পক্ষিও নেই আর রাজ এখনো রোডের মাখখানে দাড়িয়ে আছে…
.
.
.
সে এক পলকহীন ভাবে শীতলের জানালার দিকে তাকিয়ে আছে…
ভালোবাসা এতো অস্বহায় সেটা জানা ছিলোনা রাজের..
রাজের কি নেই ..
সব আছে..প্রতিপত্তি শক্তি ক্ষমা সব আছে…
তবুও সে তার ভালোবাসাকে জয় করতে পারছেনা…
এক সময় যার ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিয়ে ছিলো…
যাকে মানুষ পর্যন্ত ভাবেনি ..শুধু এক ধলা মাংসের পিন্ডের পিন্ড ভেবে প্রতিশোধ নিয়েছে…
.
.
.
গা শুকুতে শুকুতে নতুন আরেক গা যাকে দেওয়া হয়েছিলো আজকে তার জন্য নিজের শরীর বার বার ক্ষতবিকক্ষত হচ্ছে…
এতো কষ্ট কেনো জিবনে ভালোবাসার জন্য ???
কেউ কি বলতে পারো রাজকে ???
রাজের কোনো জ্ঞান নেই চারদিকে কি হচ্ছে …
সে আপন মনে শীতলকে এক পলক দেখার জন্য দাড়িয়ে আছে….
চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে…
যেটা বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে….
.
.
.
রাজের মন বলছে শীতল তাকে অনুভব করছে…
তারা যে একই দেহে দুটি প্রাণ…
রাজ জানে শীতল তার মতো জানোয়ার অমানুষ কেই ভালোবাসে…
তবে কিসের জন্য তাদের ভালোবসার জয় হচ্ছেনা…
কেনো উপর ওয়ালা বার বার পরিক্ষা নিচ্ছে তাদের..

একবার রাজকে দিয়ে পরিক্ষা আরেকবার শীতলকে দিয়ে পরিক্ষা …
.
.
.
রোদ উপর থেকে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছে আর হাসছে…
রোদ এখন বিকৃত কিটে পরিণত হয়েছে..
রোজার ছবিটা দেখে দেখে সে রাজের কষ্ট অনুভব করছে…
.
.
.
রাজ একপর্যায়ে আবারও চেষ্টা করলো মেইন ডোর ভেঙে শীতলের কাছে যাওয়ার…
প্রায় ত্রিশ জন লোকের সম্মখিন হতে হয়েছে তাকে…
সবাইকে সামনে থেকে সরাতে সরাতে তার ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার কথা অথচ সে ক্লান্ত নয়…
একি তাহলে #অন্ধপ্রেমের শক্তি …
রাজ পাগলের মতো সবাইকে আঘাতের পর আঘাত করছে…
সব কটা কে মেরে তক্তা বানাচ্ছে রাজ…
.
.
.
রোদ বিষয়টা দেখছে …
রাজ সামনে থাকা সবাইকে আঘাত করে প্রতিরোথ করলো শীতলের কাছে যাওয়ার রাস্তা….
.
.
.
চারদিকে বৃষ্টির পানি লাল হয়ে গিয়েছে…
রাজ আর শীতলের ভালোবাসার প্রমাণ স্বরুপ…
রাজ চিৎকার করে বললো…
_আরো কেউ কি আছে যে আমার ভালোবাসার পথে দাড়াবে ???
এমন সাহস আরো কারো আছে???
রাজ শীতলের নাম ধরে চিৎকার করে বললো…
_শীতল কোথায় তুমি ??
তোমার জানোয়ার অমানুষ স্বামির কাছে চলে এসো …
আমার যে আর সহ্য হচ্ছেনা ।
আমি রক্তের বন্যা বইয়ে দেবো যদি তুমি না আসো ..
শুনতে পাচ্ছো তুমি????
তোমার কাছ থেকে কেউ আমাকে আলাদা করতে পারবেনা….
মৃত্যু ছাড়া আমি আজকে তোমায় এখান থেকে না দেখে যাবোনা …
.
.
.
রাজ রাস্তার সাইডে এসে হাটু ঘেড়ে বসে মাথায় হাত দিয়ে নিচে বসে কাদছেঁ…
.
.

হঠাৎ সে মাথায় কিছু অনুভব করলো…
রাজ পেছনে ফিরে রোদকে দেখতে পায় …
রাজ আঘাত করতে চেয়েও করেনি শুধু শীতলের মুখের দিকে চেয়ে…
রাজ আবারও শীতলের বারান্দার দিকে তাকালো…
রাজ দেখতে পেলো শীতল লাল শাড়ি পড়ে রোবর্টের মতো দাড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে…
রাজের ঠোটে হাসি ফুটলো…
প্রথিবীর কোনো কিছুতে তার খেয়াল নেই…
হঠাৎ সে অনুভব করলো পিঠে ব্যাথা হচ্ছে …
তবুও তার এদিকে খেয়াল নেই…..
রোদ সেই সুযোগে ইশারা দিয়ে গার্ডের কিছু একটা বললো….রাজকে গার্ডরা পেছন দিকে চেপে ধরে একেবারে রোডের মাঝখানে ফেলে দিলো…
রাজ কিছু বোঝে উঠার আগেই একটা ট্রাক এসে তাকে ধাক্কা মেরে রোডের পাশে ফেলে দিলো…
পুরো রোড রাজের রক্তে ভেসে যাচ্ছে…
রাজের সেদিকে খেয়াল নেই…
তার ঠোটে এখনো হাসি…
শীতল এই দৃশ্য দেখার আগেই বারান্দা থেকে সরে রুমে এলো…
শীতল রোবর্টের মতো রুমের মাঝখানে এলো…
তারপর নিজেই নিজের শাড়ি খুলে ছূরে মারলো ফ্লোরে ….
শীতল ডোর লক করে সোজা বেডের নিচে বসে পড়লো…
.
.
.
শীতলের চোখ থেকে পানি পড়ছে…
বুক ফেটে কান্না আসছে তার….
শীতল : আমাকে ক্ষমা করে দিন আপনি …
আমাকে ভুলে যান আপনি…
আমরা আর কখনোই এক হতে পারবোনা…
.
.
.
শীতল কিছুদিন আগের কথা ভাবতে লাগলো..

রাজের ফোন আসা মাত্রই শীতল ফোন রিসিভের জন্য হাত বাড়ালো…
তখনি রোদ আর বাবা মা রুমে প্রবেশ করলো…
রোদ শীতলের হাত থেকে ফোন ছূরে ফেলে ভেঙে ফেললো…
শীতল অবাক হয়ে তাকালো সবার দিকে…
রোদ : দেখ শীতল সোজা কথা সোজা ভাবে বলছি আমি..
তোর আরা রাজের কথা আমি সব শুনেছি ক্লিনিকের আড়াল থেকে…
রাজ তোকে….
রোদ কিছু থেমে বললো…
_রাজ তোকে রেপ করে বিয়ে করেছে..
রোজার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছে ও …
_ভাইয়া সে সব পুরোনো কথা …
এখন উনি ভালো হয়েছে…
নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে…
_পুরোনো কথা না নতুন কথা সে সব জানিনা আমরা…
রাজ আর তোর সম্পর্ক এখানেই শেষ ….
রাজের কাছে তোকে আর পাঠাবোনা আমরা…
শীতল ভিষম খেয়ে বললো…
_কি সব যাতা বলছো ভাইয়া…
আমি ওনার স্ত্রি আর উনি আমার স্বামি…
আমার ঠিকানা উনি..
মা : রোদ যা বলছে সে সব ঠিক বলছে মা..
আমি তোকে বলেছিলাম একদিন রাজকে স্বামির মর্যাদা দিতে ..এখন আমি বলছি তুই সব ভুলে যা ..
এই মিথ্যে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আয়…
তোকে একটা রেপিষ্টের সাথে থাকতে দিতে পারিনা আমরা..

শীতল : মা কি সব বলছো ??
উনি যায় হন আমার স্বামি..
আমি উনার সাথেই থাকবো..
মনে প্রানে আমি উনাকে স্বামি হিসেবে মানি..

বাবা : দেখো মা ..
এতোদিন আমরা তোমাকে ভুল বুঝেছি …
আমরা আসল ঘটনা জানতাম না …
তোমার কোনো দোষ নেই..
এখন তোমার পাশে আমরা সবাই আছি…
তুমি ভয় পেয়োনা ..
ওকে ডিবোর্স দিয়ে দাও…
এক বছর যাবৎ ও তোমার সাথে অন্যায় করেছে ..অত্যাচার করেছে আর না ..
শীতল ডিবোর্সের কথা শুনে চমকে গেলো…
শীতল : আমি তোমাদের কোনো কথা শুনতে চাইনা…
আমার স্বামির নামে কোনো কথা শুনতে চাইনা আমি..
আমি চলে যাচ্ছি তোমাদের বাড়ি থেকে আমার স্বামির বাড়ি…
.
.
.
.
শীতল এক পা এগুতেই রোদ বললো..

_আর এক পা এগুলেই তুই রাজের ধ্বংশ দেখবি…
শীতল ফিরে তাকালো…
রোদ : জানোয়ার কে রেপের দ্বায়ে জেলে পাঠা সারা জিবনের জন্য…
ওর মান সম্মান নষ্ট হয়ে রাস্তায় গড়াগড়ি খাবে…
তুই এটাই চাস ???
শীতল : ভাইয়া চুপ করো …
এসব কি বলছো …
এমন কথা বলোনা…
উনার বিন্দু পরিনাম ক্ষতিও চাইনা আমি…
বাবা : তাহলে আমরা যা বলবো তাই করবে তুমি কথা দাও…
মা : তোর ভাই আর বাবা ঠিক বলেছে শীতল…
তোর হাতে সবকিছু..
ঐ জানোয়ারকে মাফ করে দেবো যদি তুই আমাদের কথা না শুনিস…
রোদ : এখন তুই ডিশিসন নে …কি করবি…
শীতল ফ্লোরে বসে পড়লো…
মা : আমাদের মাঝে যে সব কথা হয়েছে তা রাজকে বলবিনা খবরদার তাহলে আমাদের চেয়ে খারাপ কেউ হবেনা …
বাবা : কখনো ফিরে যাবেনা তুমি আর কিছু বলবেনা রাজকে…
আমরা যা বলবো তাই বলবে ওকে প্রোয়জনে…
.
.
.
শীতল কান্না করতে শুরু করলো…
রোদ : আরেকটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে নে …
যদি কখনো তুই রাজের কাছে ফিরে যাওয়ার চিন্তাও করিস তো আমাদের মৃত্যুর জন্য তুই দ্বায়ি থাকবি…
বাবা মা সহ আমি ফাসি দেবো গলায় খোদা তায়ালার কসম…
শীতল অবাক হয়ে তাকালো সবার দিকে…
রোদ : কথা গুলো মাথায় ঢুকিয়ে নে …
কখনো ওর কাছে যেতে বা কিছু বলতে পারবিনা নিজের ইচ্ছায়…
.
.
.
রাজের মতো জানোয়ার কে ফাসিতে ঝুলিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে…
এতো বড় সাহস ওর ও আমার একমাত্র আদরের কলিজার বোনের সাথে এমন জঘন্য কার্যাবলি করেছে…
শুধু তোর দিকে তাকিয়ে ছেড়ে দিলাম…
কিছুদিন দূরে থাকলে রাজকে ভুলে যাবি…
তোর নতুন জিবন শুরু হবে…..
.
.
.
শীতল সেদিন অনেক কান্না করে সবাইকে বুঝিয়ে ছিলো রাজের মতো পা ধরে পর্যন্ত ভিক্ষা চেয়েছিলো রাজের কাছে ফিরে যেতে…
বাট কেউ তা বোঝেনি…
শীতল তখন জ্ঞান হাড়িয়ে ছিলো…
বাস্তবে ফিরে এসেও শীতল কাদতে কাদতে জ্ঞান হাড়ালো…
.
.
.
সবাই শীতলের রুমের ডোর ভেঙে ভেতরে ডোকার চেষ্টা করছে….
.
.
.
সকালে রাজের জ্ঞান ফিরলো ক্লিনিকে…
চাচা রাস্তা থেকে রাজকে তোলে এনে ক্লিনিকে নিয়ে এসেছে…
মাথায় বেন্ডেস করা রাজের..
বুকেও বেন্ডেস করা..
জ্ঞান ফিরে রাজ চুপচাপ আধশোয়া অবস্থায় বসে আছে চোখ বন্ধ করে…
রাজ হঠাৎ স্বাভাবিক হয়ে বললো…
_চাচা শীতল এখন কোথায় ???
ঢাকাতেই আছে না পুরো গোষ্ঠি কোথাও লুকিয়ে রেখেছে…
চাচা : ওরা কেই নেই…
শীতল কে নিয়ে তোমার ভয়ে ঢাকা ছেড়ে ময়মনসিংহে গিয়েছে…
রাজ হাসতে হাসতে বললো..

_রাজকে ওদের এতো ভয়…
আমার ভালোবাসা কে আমার থেকে লুকিয়ে রেখেছে‌…
চাচা ময়মনসিংহে যায়না অনেক দিন ধরে…
ময়মনসিংহেের পাহাড় দেখিনা অনেক দিন ধরে…
মক্তোগাছার সেরা জিলেপি অমৃতি খায়না…
গেট রেডি করন ময়মনসিংহে যাবো…
.
.
.
.
শীতল তাদের ময়মনসিংহে পুরোনো বাড়িতে দাড়িয়ে আছে বারান্দায়…
বারান্দা থেকে ভ্রমপুত্র নদের রুপ দেখছে সে আর রাজকে ফিল করছে…
.
.
.
হঠাৎ সজল এসে বললো…
_ Hi শীতল What’s up
শীতল পেছন ফিরে তাকালে…
সজল বললো …
_আমাদের বিয়ের জন্য তৈরি তুমি…
_তোমাকে কিছু বলার আছে..
_কি বলবে ??
ছোট থেকে আমরা দুজন দুজনকে চিনি..
_এর বাহিরেও কিছু আছে ..
_তোমার বিয়ে হয়েছিলো তাইতো..
শীতল দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বললো…
_আমি একজনের ব্যাবহারিত‌..
তার চেয়ে বড় কথা হলো আমি ভার্জিন নয়…
সজল হেসে বললো…
_এসব ভার্জিনিটি ষোল টাকা দিয়েও পাওয়া যায় তুমি জানো ??
প্রতিদিন ইচ্ছেকৃত কত স্কুল পড়ুয়া মেয়ে তাদের বয় ফ্রেন্ডের কাছে ভার্জিনিটি হাড়ায়…
সেখানে তোমাকে জোর পূর্বক ….
যাইহোক এসব তুচ্ছ্য বিষয় নিয়ে আমি সময় নষ্ট করতে চাইনা কারন আমি তোমায় ভালোবাসি …
.
.
.
.
.
রাজ ময়মনসিংহে এসে পড়েছে দুপুরের মধ্যেই…
ময়মনসিংহে পা রেখেই বললো ….
_আমার ভালোবসাকে নিজের জন্মভূমি থেকে জয় করবো..
দুনিয়ার কোনো শক্তি আটকাতে পারবেনা…
.
.
.
চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here