অন্যরকম প্রেমানূভুতি পর্ব ১১+১২

#অন্যরকম_প্রেমানুভূতি
#অস্মিতা_রোদৌসি
#part______11
নীলা তুমি তো আমাকে ভালোবাসো।তাহলে তুমি কিভাবে রিহান কে বিয়ে করতে পারো???তাহলে কি এসব তোমার অভিনয় ছিলো?? বলো??
নীলার হাত চেপে কথা গুলো বললো মুহিত।

____ হ্যাঁ আমি আপনাকে ভালোবাসতাম কিন্তু এখন আর বাসিনা।আপনাকে কতশত বার বলেছি আপনাকে ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি।কিন্তু আপনার একটাই উওর ছিলো যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।তো যে আমাকে ভালোবাসে না তাকে ভালোবেসে আমার লাভ কি?বরং যে আমাকে ভালোবাসে আমি তাকেও ভালোবাসি।বা বাসবো।রিহান আমাকে ভালোবাসে এবং বিয়ের প্রোপজাল দিয়েছে সেটা আমি কিভাবে ফিরিয়ে দি বলেন?আর রিহান দেখতে শুনতে বেশ তাহলে তাকে রিজেক্ট করার কোনো প্রশ্নই আসেনা আমার।বলেই মুহিতের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো নীলা।

___নীলপরি তুমি এখনে?? আর আমি তোমাকে পুরো ক্যামপাস খুঁজলাম। বলেই নীলার সামনে এসে দাঁড়ালো
রিহান।

___একটু মুহিত ভাইয়ার সাথে কথা বলছিলাম আর।আর জানেন ওনি আমাদের শুভেচ্ছা জানালেন।বলেই মলিন হাসলো নীলা।

___ ধন্যবাদ মুহিত।তুই কখন এলি এখানে??ভাবি এই ভার্সিটি পড়ে নাকি হুমমম???এক চোখ টিপে দুষ্ট হেঁসে মুহিত কে উদ্দেশ্য করে বললো রিহান।

____হুম আমিও তো তাই জিজ্ঞেস করলাম ভাইয়াকে।তো ভাইয়া বলতেই চাইছেনা।বললো নীলা।

____ আচ্ছা তুই ভাবির সাথে দেখা কর।আমি আর নীলপরী সঙ্গে একটু বের হবো।বলেই নীলার হাত ধরলো রিহান।

এতক্ষণ সব চুপ করে সব শুনলেও রিহানের নীলার হাত ধরাটা একটুও পছন্দ হলো না মুহিতের।বরং ভিষন রেগে গেলো মুহিত।ইচ্ছে করছে রিহানের মাথা ফাটিয়ে দিতে।

নীলা হেসে রিহানের হাত চেপে ধরে ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে গেলো।আর এদিকে মুহিতের রাগে চোখ দুটো লালে লাল হয়ে গেছে।

____________________

রুমে শুয়ে আছি।জ্বর এসেছে।শরীর খুব দূর্বল।মাথাটা ভার ভার লাগছে। জ্বর এলেই আমার এমন অবস্থা।

___জান নাও খাবারটা খেয়ে নাও।খাবার এনে বেড সাইডের টেবিলে রেখে বললো অভ্র।

___ না খাবো না।চোখ মুখ কুঁচকে কথাটা বললাম আমি কারণ এখন খেতে একদমই ইচ্ছে করছেনা আমার।

___, আরে জান তোমার প্রিয় চিকেন ফ্রাই বানিয়েছি।তাও কি খাবেনা নাকি হুম???

___চিকেন ফ্রাইয়ের কথা শুনে মনটা ভালে হয়ে গেলো।সাথে অর্ধেক সুস্থ হয়ে গেলাম। কারণ চিকেন ফ্রাই আমার খুব পছন্দ। একেবারে জানে জিগার।

শোয়া থেকে উঠে বসে টেবিল থেকে চিকেন ফ্রাইয়ের বাটিটা হাতে নিলাম।হঠাৎ অভ্রর হাসার শব্দে চমকে উঠলাম।

____ এই তো বললে তুমি যাবেনা।কিন্তু চিকেন ফ্রাইয়ের নাম শুনে___এটুকু বলতেই আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম___ হয়েছে হয়েছে এভাবে আমাকে লজ্জা না দিলেও পারেন।নিশ্চয়ই আপনি জানেন আমার চিকেন ফ্রাই পছন্দ তাই আমাকে লোভ দেখাতে চিকেন ফ্রাই নিয়ে এসেছেন তাই।খাটাশ লোক একটা!!!

___তোমাকে লজ্জা দেওয়ার জন্য নয়।তোমাকে খাওয়ানোর জন্য নিয়ে এসেছি।আর তুমি প্রথম তোমার হাজবেন্ডের নিজের হাতের তৈরি করা চিকেন ফ্রাই খাবে।বুঝেছো??

___হু বলেই খাওয়া শুরু করলাম।চিকেনের একটা রানে কামর দিতেই আমার চোখ দুটো বড়বড় হয়ে গেলো।এত সুস্বাদু আর টেস্টি যা বলে বুঝুনো যাবে নাহ।মনটা ভরে গেলে সাথে গর্বেরও যে আমার হাজবেন্ড রান্না করতে জানে।সাথে এত সুস্বাদু চিকেন ফ্রাই।

কোনো কথা না বলে খাওয়ায় মন দিলাম।আর এদিকে অভ্র আমার দিকে এক ধান্দায় চেয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।আমি তার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেঙচালাম।

খাওয়া শেষে হঠাৎ কাশি উঠে গেলো।

____ আরে জান আস্তে খাও।তোমার ভাগের গুলা তো আর আমি খেয়ে নিচ্ছি না।বলেই আমার সামনে পানির গ্লাস ধরলো অভ্র।আমি ঢকঢকে পুরো একগ্লাস পানি খেয়ে ফেললাম।লজ্জা লাগছে খুব এখন নিজেরই।চিকেন ফ্রাই পেয়ে রাক্ষসী হয়ে গেছিলাম মনে হয়।

মেডিসিনটা খেয়ে নাও।বলেই আমার মুখের সামনে পানির গ্লাস আর ট্যাবলেট ধরলো অভ্র।মানুষটার কান্ড গুলো আমার প্রচুর পরিমাণে অবাক করছে।এই খাটাশ মানুষটার এত রুপ!!!!

বাধ্য মেয়ের মতো তার সব কথা শুনলাম।আমি শুয়ে আছি আর তিনি আমার মাথায় কাছে শুয়ে তেল মালিশ করে দিচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলাম।

অভ্র তার শুভ্রপরির মাথায় ডিপ কিস করে।আলমারি হতে একটা ডায়েরি বের করে নিয়ে ব্যালকানিতে গেলো।

ডায়েরিটায় তার মনের সব কথা লেখা আছে।
ডায়েরিটা অভ্রের খুব পছন্দের।স্বরণীয় কষ্ট দুঃখ
বা তার সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা এখানে লিখে রাখে অভ্র।তেমনি মেঘাকে প্রথম দেখে প্রমে পড়া,মেঘার প্রতি ফিলিংস সব ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করে রেখেছে অভ্র।হ্যাঁ আজও সে কিছু লিখবে তাও তার শুভ্র পরিকে নিয়ে।

________________

কড়া রোদে ছাদে দাড়িয়ে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াচ্ছে রিদ।অশান্ত হৃদয়কে বোঝাবার জন্য কতশত বাহানা কত সিগারেটের ধোয়া উড়িয়েছে। কিন্তু নাহ তার অশান্ত হৃদয় কিছুতেই শান্ত হচ্ছেনা।মেঘাকে না পাওয়ার যন্ত্রনা আরো তিব্রো হচ্ছে।কলিজায় যেন কেউ আগুন ধরিয়ে দিয়েছি।দাও দাও করে জ্বলছে তার কলিজা।

____মেঘু ফিরে আয়না প্লিজ আমার কাছে।আর একটা সুযোগ দে আমায়।আর একটা!!!বিরবির করে কথাটা বলছে রিদ।

___ রিদ ভাইয়া????

কারো ডাকে পিছন ফিরলো রিদ।সামনে চিন্তিত মুখ নিয়ে দ্বারিয়ে আছে মিঠি।একবার মিঠিকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে আগের মতো সিগারেট টানতে লাগলো রিদ।মিঠির ডাকে সাড়া না দিয়ে।

___ভাইয়া এই কড়া রোদে ছাদে দাড়িয়ে কি করছো তুমি??হ্যাঁ

___এমনি

___তুমি তো আগে সিগারেট খেতে না। বলতে সিগারেট খেলে তোমার বুক জ্বলে।এখন কেন সিগারেট খাচ্ছে হুম।বড়আম্মুকে কিন্তু বলে দিবো তোমার কথা।

____বুকটা যে পরিমাণে জ্বলছে তার কাছে সিগারেটের জ্বালা কিছুই না।তাচ্ছিল্যের স্বরে বললো রিদ।

___মেঘলা আপুকে মিস করছো খুব তাইনা??

__মিঠির কথায় শূন্য দৃষ্টিতে মিহির দিকে তাকালো রিদ।

____জানো রিদ ভাইয়া অভ্র জিজু না মেঘা আপুকে খুব ভালোবাসে খুব।আর মেঘা আপু অভ্র ভাইয়ার সাথে খুব সুখে থাকবে।একদিন না একদিন মেঘা আপুও অভ্র ভাইয়াকে পাগলের মতো ভালোবাসবে।একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠবে।

___মিহির কথায় কলিজাটা ধক করে উঠলো রিদের।হৃদয়টা ভারি হয়ে এলো।চোখদুটো ছলছল হয়ে উঠলো।সত্যিই কি মেঘা তাকে ভুলে যাবে?ভালোবাসবে
অন্যকাউকে।তার প্রেয়সি হয়ে উঠবে অন্যকারে প্রেয়সি!!

____তুমি প্লিজ আপুকে ভেবে আর কষ্ট পেওনা।যখন ছিলো তখন কেন তার মর্ম বুঝো নি।যখন সে নেই তখন তার মর্ম বুঝে লাভ কি??? বলো??

____হুম ঠিক বলেছিস তুই মিঠি।সময় থাকতে সময়ের মূল্য বুঝিনি।কাউকে ঠকানোর শাস্তি এখন আমি তিলেতিলে ভোগ করছি।হয়তো সে আমার ভাগ্যেই
ছিলো নাহ।

___হয়তো তাই।বাট তাই বলে কি তুমি তোমার ক্যারিয়ার আর নিজেকে এমন ধ্বংসের পথে ঠেলে দিবে??প্রাণ খুলে বাঁচার ইচ্ছে হয়না তোমার???ইচ্ছে হয়না আগের মতো হাসি খুশি নিশচিন্ত ক-তে বাঁচতে।

,___আগের মতো করে বাঁচতে চাইলে যে আমার মেঘুকে চাই।তাকে ছাড়া কিভাবে আগের মতে হাসি খুশি থাকবো আমি।কে আমাকে ভালোবাসবে,
পাগলামি করবে,খাওয়াই দিবে,ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বায়না করবে??রাস্তায় কে আমার হাতটা শক্ত করে ধরে চলবে।বলতে পারিস???

___কেনো ভাইয়া মেঘা আপুর জায়গাটা কি আমাকে দেয়া যায়না।জানি মেঘলা আপুর জায়গা আমি নিতে পারবোনা।তবুও যদি তুমি আমাকে তার মতো করে ভালোবাসতে??আমি যে তোমায় বড্ড ভালোবাসি!!
মিহির কথায় খুব বড়সড় ঝটকা খেলো রিদ।বড়বড় চেখ করে মিহির দিকে ঘুরে তাকালো সে।

___ কি সব আজে বাজে কথা বলছিস তুই মিঠি??দেখ আমি কিন্তু মজা করার মুডে নেই।সেটা তুই খুব ভালো করেই জানিস??

___আমি মজা করছিনা রিদ ভাইয়া।আমি সত্যি তোমাকে খুব ভালোবাসি।সেই ক্লাস নাইন থেকে তোমায় ভালোবাসি।কিন্তু বলতে পারিনি। দুপাশে এগিয়ে রিদের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো মিঠি।

___ঠাসসসসসস করে মিঠির বাম গালে একটা চর বসিয়ে দিলো রিদ।রাগে তার চোখ দুটো লাল আভায় ছেয়ে গেছে।দাঁতে দাঁত চেপে রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে।

এদিকে গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে মিঠি।

___তোর লজ্জা করেনা এসব বলতে??তুই জানিস আমি মেঘাকে ভালোবাসি শুধু মেঘাকে।আর তোকে নিজের বোনের চোখে দেখি আমি।আর তুই কিনা??ছিহহহহ!!!!বলেই হনহন করে ছাদ থেকে চলে গেলো রিদ।

ধুপ করে বসে পড়লো মিঠি।গলা ফাঠিয়ে চিৎকার করে কাঁদছে সে।আজও তার প্রিয় মানুষটা তাকে ফিরিয়ে দিলো।এক বুক কষ্টের জোয়ারে তাকে ভাসিয়ে দিয়ে চলে গেলো রিদ।কষ্টে বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে তার।একতরফা ভালোবাসায় এত কষ্ট তা হয়তো এখন বুঝতে পারছে সে।

_______________________

কিরে পেত্নী রিহান ভাইয়ার সাথে কোথায় কেথায় ঘুড়লি রে???বললাম আমি।

____হু অনেক জায়গায় ঘরেছি।

____ কেমন লাগলো রিহান ভাইয়াকে???

___বেশ ভালোই।

___কিরে এমন মন মরা হয়ে আছিস কেন হ্যাঁ???

___নাহ না তো।

____সবসময় তো বকবক করতেই থাকিস।অলওয়েজ তোর মুখে খই ফুটতেই থাকে আর আজ???নাকি রিহান ভাইয়ার কথা ভাবছিস???হুমম…!চোখ মেরে নীলাকে কথাটা বললাম আমি।

____আরে গাধী আমি রিহান নয় তোর শয়তান,খাটাশ ভাইটার কথা ভাবছি।এমন একটা খচ্চর লোককে ভালোবেসেছি যে কিনা কখনোই আমার ভালোবাসা বুঝলোনা।মনে মনে বললো নীলা।
#অন্যরকম_প্রেমানূভুতুি
#অস্মিতা_রোদৌসি
#part_______12
আপনাকে ভালোবাসি বলেই যে আপনাকে আমায় বিয়ে করতেই হবে এমন তো কোনো কথা কোথাও লেখা নেই।ভালোবাসলেও বিয়ে করতে হবে???

কোমরে হাত দিয়ে কথা গুলো বললো নীলা।তার সামনেই দাঁতে দাঁত চেপে কথা গুলো শুনে যাচ্ছে মুহিত।

____ তুমি তাহলে রিহানকেই বিয়ে করবে???

___জি অবশ্যই।কেন বিয়ে করবোনা বলেন তো???

মুহিত আর কিছু না বলেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলো।আর এদিকে নীলা খিলখিল করে হাসতে লাগলো।মুহিতকে জ্বালিয়ে তার কাটা ঘায়ে কিছুটা মলমের ছোঁয়া পেয়েছে এমন মনে হচ্ছে নীলার।

>___ কি হয়েছে এমন করছেন কেনো???ঠিক করে কি রান্নাটাও করতে দিবেন না??রেগে বললাম আমি।

___কেনো বউ আমি কি করলাম হুমমম??আমি তো তোমাকে সাহায্য করছি।বললো অভ্র।

____ আমার কোমর পেঁচিয়ে ধরে কানের কাছে বকবক
শুরু করছেন আর বলছেন আমাকে সাহায্য করছেন??
বাহ!!

____রান্না ঘরে একা একা রান্না করছো বোরিং লাগেনা বুঝি??

___না বোরিং লাগেনা।আপনি আসার ফলেই আমার বোরিং লাগছে।যান এখান থেকে যান। যবে থেকে আপনি আমার জিবনে এসেছেন তবে থেকেই খুব বোরিং ফিল করছি আমি।ইচ্ছে করে নিজেকে___এটুকু বলতে না বলতেই অভ্র আমার তার দিকে ঘুরিয়ে বুকের সাথে চেঁপে ধরলো।

___প্লিজজজ জান এমন কথা বলো না।আম সরি।আমি তোমাকে ভালোবাসি জন্যই বার বার তোমার কাছে ছুটে আসি।তোমাকে ভালোবাসি বলেই শাসন করি।ভালোবাসি বলেই তোমাকে জ্বালাইতে।ভালোবাসি বলেই অন্যকারো সাথে তোমাকে সয্য করতে পারিনা আমি।যদি আমার ভালোবাসা তোমার কাছে বিষাক্ত, বোরিং, অসহ্য লাগে তাহলে আমি আর তোমায় কাছে আসবোনা ভালোবাসার দাবি নিয়ে।আমি চাইনা আমার জন্য আমার ভালোবাসার মানুষটা কষ্ট পাক!!!
মলিন হেঁসে কথাগুলো বলেই চলে গেলো অভ্র।

তার কথাগুলো সোজা তীরের মতো আমার বুকে বিঁধেছে।তার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি।তার চোখগুলো কেনো জেনো আমায় খুব টানে তার কাছে।এমন তো কখনো রিদ ভাইয়ার জন্য আমার মনে হয়নি।কেনো জানিনা আমি মন মনে এখন খুব করেই চাই অভ্রকে।তার আশেপাশে থাকতে ভিষন ভালো লাগে আমার।প্রতিদিন তাকে ভেজা চুলে দেখলেই যেন কোনো এক ঘোরে চলে যাই।কিন্তু কেনো???আমি তো অভ্রকে ভালোবাসিনা তাহলে???

আসলেই আজকে অভ্রকে খুব হার্ড করেছি আমি।এটা করা ঠিক হয়নি আমার।একজনের রাগ আরেক জনের উপর ঝাড়া এই বদ অভ্যাস আমার মনে হয় যাবেনা।ধুত বলেই রান্নায় মন দিলাম।

____________________

এদিকে অভ্র ব্যালকানিতে দাড়িয়ে আকাশ পানে চেয়ে আছে।আজ কেনো যেন নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছে।মেঘার মন বোঝার চেষ্টা করেনি সে।মেঘলা ইচ্ছে গুলো দাম দেয়নি সে।মেঘাকে বোঝার চেষ্টা করেনি সে।
নাহ সে আর মেঘার কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করতে যাবেনা।মেঘার কাছ থেকে নিজেকে সড়িয়ে নিবে সে।
সে একাই ভালোবেসে যাবে মেঘাকে।

মনে মনে কথা গুলো ভাবতেই চোখগুলো ঋ
ছলছল হয়ে উঠলো অভ্র।রকিং চেয়ে বসে চোখ বুঝে রইলো কিছুক্ষণ।

এইযে চলুন খাবার রেডি বলেই অভ্রের দিকে তাকালাম আমি।অভ্রমের মুখটা কেমন যানি ফ্যাকাশে লাগছে।
তা দেখেই বুকটা কেঁপে উঠলো আমার।

___হুম বলেই অভ্র আমাকে পাশ কাটিয়ে নিচে চলে গেলো।

আমিও পিছে পিছে গেলাম।খাওবার টেবিলে নিলা,আমি আর অভ্র।মুহিত ভাইয়া এসেছিলো।কিছুক্ষণ থেকেই চলে গেছে।আর বাবা ব্যাবসার কাজে
বাহিরে গেছে কয়েকদিনের জন্য।

খাওয়ার সময় একটা কথাও বললো না অভ্র।এনমি হলে খাওয়ার সময় দু ভাইবোন বকবক করতো।আজ দুজনেই চুপ মেরে গেছে।

খাওয়া শেষে রুমে চলে গেলে দুজনেই রুমে চলে গেলো।আমি খালাবাটি গুছিয়ে সব পরিষ্কার করে প্রায় দেড় ঘন্টা পর রুমে ধুকলাম।কদিনের জন্য ছুটি নিয়েছে রহিমা আন্টি।তাই সব কাজ আমাকে করতে হচ্ছে।

রুমে ঢুকেই দেখি খাটের একপাশে গুটিশুটি হয়ে কপালে হাত দিয়ে শুয়ে আছে অভ্র।তা দেখে কলিজাটা মোচর দিয়ে উঠলো আমার।আসলেই অভ্র হয়তো আমার ব্যাবহারে খুব কষ্ট পেয়েছে।কিন্তু তখন আমার রাগ উঠছিলো খুব আর রাগের সময় কারো কথা আমার সয্য হয়না। তাই মিহির উপর রাগ গুলো অভ্রর উপরে ঝেড়েছি।

বিকেলে মিঠি আমাকে ফোন দিয়েই হাউমাউ করে কান্না জুড়ে দিয়েছে।অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।ভেবে ছিলাম হয়তো বাড়িতে কিছু হয়েছে তাই মিয়িকে বলছিলাম___

___কিরে মিঠি কাঁদছিস কেনো???বাড়িতে কিছু হয়েছে নাকি???

____ না।কেঁদে কেঁদেই উওর দিলো মিঠি।

____তাহলে কেনো কাঁদছিস???

____আপু ও আমাকে ভালোবাসে না। বলেই ফের কাঁদতে লাগলো মিঠি।

____কে তোকে ভালোবাসে না???

____ রি রি রিদ ভাইয়া!!!!আমি রিদ ভাইয়াকে খুব ভালোবাসি।কিন্তু সে আমায় ভালোবাসে না।

কথাটা শুনেই আমার মাথায় বাজ পড়লো বলে আমার এমন মনে হলো।

____কিহ??কি সব আবুল তাবোল কথা বলছিস তুই মিঠি]???

___আমি যা বলেছি তাই সত্যি আপু।আমি রিদ ভাইয়াকে ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি তাকে।

মিহির কথা শুনে বুকে চিনচিন করে ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো।সাথে প্রচন্ড রাগও উঠে গেলো।আমার মতো ঐ একি ভুল করলো মিঠি।ও প্রতারক, ঠক টাকে ভালোবেসে ফেললো।

_____ আপু প্লিজজজ কিছু তো বলো।তুই অন্তত আমার পাশে থাক।মিঠির এমন কথায় ঘোর কাটলো আমার।রাগ করে ফোন কলটা কেঁটে দিলাম কোনো উত্তর না দিয়েই।

রাগে মাথা ফেঁটে যাচ্ছে আমার।ইচ্ছে করছে রিদ ভাইয়াকে কাঁচা চিবিয়ে খাই।আমার জিবনটা নষ্ট করে সাধ মেটেনি এখন আমার ছোট বোনটার জিবনটা নষ্ট করার ধান্দায় আছে।আমাকে কষ্ট দিয়ে তার শান্তি হয়নি।এখন আমার বোনকে কষ্ট দিচ্ছে। নাহ এটা আমি কিছুতেই মানবো না।কিছুতেই না।কেন এমন করছে রিদ ভাইয়া তা আমায় জানতেই হবে।

সেই রাগ নিয়ে রান্না করছিলাম তখনি পিছন থেকে আমায় জড়িয়ে ধরে অভ্র।তাতে যেন আরো রাগ উঠে যায় আমার।একেবারে আগুনে ঘি ঢালার মতো।

👉 [পরের অংশ উপরে বর্ণনা করা হয়েছে]👈

রুমের দরজা লাগিয়ে লাইট অফ করে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে তার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।

নাহ আজ অভ্র জড়িয়ে ধরেনি।এর আগে প্রতিদিন তার বুকের সাথে জড়িয়ে ঘুমাতো। আজ তা করলো না।তাতে কি হয়ছে আমি তো আর অভ্রকে ভালোবাসি না।
তার বুকে মাথা না রেখে ঘুমলেও চলবে আমার।এগুলো মনে মনে বলে নিজেকে শান্তনা দিলাম।

সারাটা রাত এপাশ ওপাশ করতেই গেলো।কিছুতেই ঘুম হলো না।কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে।কয়েকদিন অভ্রের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আমি অভস্ত্য হয়ে গেছি।তা ভাবতেই অবাক হলাম আমি।রাগে এখন নিজের চুল নিজেরই ছিড়তে ইচ্ছে করছে।

__________________

সকালে উঠে নামাজ পড়ে বাগাবে গেলাম হাটতে।আমার উঠার আগেই অভ্র মসজিদতে নামাজ পড়তে চলে গেছে।

একটু পরেই আবার রুমে ফিরে আসলাম। ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে গিয়ে চা,পরোটা, আলুর দম,আর ডিম মামলেট করলাম।এগুলো অভ্রের খুব পছন্দের।তাই স্পেশালি তার জন্যই বানানো।

খাবার টেবিলে নীলা আর আমি বসে অভ্রের জন্য অপেক্ষা করছি।কিন্তু তার আশার না-মি নেই।চর নীলা কেনো জানিনা কাল রাত থেকে মন মরা হয়ে আছে।এই দুই ভাই বোন আমার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আংরা করে দিচ্ছে।

কিছুক্ষণ পর আগমন ঘটলো অভ্র মহাশয়ের।তা দেখেই নীলা বলে উঠলো___

___কিরে ভাইয়া আজ এত লেট করে বাসায় ফিরলি কেনো???

___এনমি।

___খাবি না??তারাতারি আয় আজ তোর ফেভারিট পরোটা আর আলুর দম রান্না করেছে ভাবি।

___নাহ তোরা খেয়েনে।আমি হোটেল থেকে খেয়ে এসেছি।বলতে বলতেই সিড়ি বেয়ে রুমে চলে গেলো অভ্র।

কথাটা শুনেই মন খারাপ হয়ে গেলো আমার।যার জন্য এত কিছু করলাম আর সে???

____এই মেঘা ভাইয়ার জন্য আর অপেক্ষা না করে খেয়ে নে।বলেই খাওয়া শুরু করলো নীলা।

আমিও কোনোমতে অল্প খেয়ে উঠে পড়লাম।কারণ খিদে লেগেছিলো আমার খুব।খিদে আমি একটু ও সয্য করতে পারিনা চর যাই হোক!!!

______চলবে….

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here