অপেক্ষার শেষে পর্ব -০৯+১০

#অপেক্ষার_শেষে
#পর্ব_৯
#লেখিকা_কে_এ_শিমলা

যতো দ্রুত সম্ভব বলে দিতে হবে এই সদ্য জ’ন্মা’নো অনুভূতি’র কথা। সেই মানুষটাও একটা নিঃশ্বাস ত্যাগ করে প্রস্থান নেয় এই জায়গা থেকে।”

সুন্দর স্বাভাবিক ভাবেই ইরিনে’র হলুদ অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। মেহেদী পড়ানো অনেকটাই শেষে’র পথে। আরিয়া এবং পার্লার থেকে নিয়ে আসা দু’টো মেয়ে ইরিন কে মেহেদী পড়িয়ে দিচ্ছে।” আরিশা,দিশা সহ বাকি সবাই ওদের কে ঘিরে বসে আছে।”

আরিশা খেয়াল করে দেখলো! তখনকার সেই ছেলেটা ওকে বার কয়েক তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। আরিশা বুঝতে পারছেনা এভাবে তাকানো’র মানে টা কী?”
সে আর ছেলেটা’র এসবে ঘাটলো না।”
এদিকে আরিয়ান দেখছে আরিশা কে। আরিয়ান ভেবেছিল আরিশা ওকে দেখবে, চিনতে পারবে। কিন্তু কিসের কী!” আরিশা দু’একবার ওর দিকে তাকালেও এখন আর তাকাচ্ছে না।”

লাবিব আরিশা কে দেখে ওর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ও ভাবছে এতোটাও সুন্দর হয় মানুষ!”
যদিও আরিশা’র মুখ আর হাত ব্যতীত আর কিছুই দেখা যাচ্ছে না।” সুন্দর ভাবে শাড়ি ওড়না দ্বারা যথেষ্ট ঢেকে রেখেছে সে নিজেকে। ব্লাউজে’র হাতটাও কব্জি পর্যন্ত লম্বা।”
লাবিব ওর সামনে দিয়ে হৃদি কে যেতে দেখে প্রশ্ন করলো!” এই মেয়েটা কে রে হৃদি?’
লাবিবে’র কথা অনুযায়ী হৃদি সেদিকে তাকিয়ে আরিশা কে দেখলো। তারপর লাবিব কে বললো- ও তো ইরিনে’র বেস্ট ফ্রেন্ড আরিশা! ওই যে ঢাকা থেকে দু’বোন আসলো না, আরিয়া আর আরিশা। ওই যে ইরিন কে মেহেদী পড়াচ্ছে ও আরিয়া, আর ও আরিশা।
কথা গুলো বলে হৃদি চলে যায়।

লাবিব বলে উঠে এই তাহলে আরিশা। সে আরিশা’র দিক থেকে চোখ সরিয়ে আরিয়া’র দিকে তাকায়। বাঁকা হেঁসে লাবিব বললো- তোমাকে আমার চাই আরু পাখি।”
লাবিবে’র পাশে ওর মা এসে বসেন। তিনি সামনে তাকাতে দেখতে পেলেন আরিশা কে। মুহুর্তেই সকালে’র ঘটনা মনে পড়লো উনার।
তিনি ছেলে কে বললেন- ওই যে ওই মেয়েটা কে দেখছিস না বাবা ওই মেয়েটাই সকালে আমার সাথে ঝ’গ’ড়া করেছে। আমাকে মা ইচ্ছা তাই বলেছে। ”
লাবিব মায়ের দেখানো মেয়ে’র দিকে তাকাতেই আরিশা কে দেখলো। ওকে দেখে লাবিব বলে- কীহ! এই মেয়েটা তোমার সাথে ঝ’গ’ড়া করেছে।”
লাইলি জামান বললেন- হ্যাঁ!”

মুহূর্তেই লাবিবে’র রা’গ উঠে যায় সে তার মাকে বললো- এই মেয়ের এমন হা’ল করবো মা দেখে নিও। কত বড় সাহস আমার মা কে অ’প’মা’ন করে।”

লাবিব ওর মা কে আবার বললো- আচ্ছা আম্মু ওই যে ইরিনে’র হাতে মেহেদী পড়িয়ে দিচ্ছে!” ওই মেয়ে কে তোমার কেমন লাগে?”
লাবিবে’র মা বললেন- কেন?”
লাবিব মাথা চুল’কে ব’শ’র’মে’র মতো বলে দেয়- ওকে আমার পছন্দ হয়েছে মা।” আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।” লাবিবে’র কথা শুনে তিনি কপাল কুঁচ’কে আরিয়া’র দিকে তাকান!’ মেয়েতো দেখতে মন্দ না। তিনি মনে মনে ভাবেন! আরিয়া কে ছেলে’র বউ করে এনে এই অ’প’মা’নে’র বদলা নিতে পারবেন। কথা টা ভেবেই তিনি বাঁকা হাঁসি দেন।” লাবিব কে বললেন- আচ্ছা আমি তোর চাচি কে নিয়ে কথা বলবো এই বিষয়ে। শুনেছি এই মেয়ের ভাই ওদের সাথে এসেছে! মা বাবা বোধহয় কাল বিয়েতে আসবে, তখন কথা বলবো।
লাবিব মাকে জড়িয়ে ধরে বললো- “ওহ মাই ডিয়ার সুইট মম!” আই লাভ ইউ।” লাবিবে’র মা ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যান।

আরিশা নিজের রুমে এসে বলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়। চাঁদের জোছনায় আলোকিত পুরো বেলকনি। আরিশা হাতে থাকা ফোনে’র কভার থেকে একটা ফটো বের করলো। ফটো টা সাইজে বড় নয় বেশ, আবার ততটা ছোটও নয়। ” আরিশা ফটো’র দিকে তাকিয়ে মনে মনে অনেক কিছু ভাবে। সে খেয়াল করলো ফটো তে থাকা ছেলেটা’র এক গালের এক পাশে একটা তিল। ফটোতে বড় দেখালেও আরিশা কখনো দেখেনি বাস্তবে। তবে এখন মনে হচ্ছে এরকম তিল কয়েক মূহুর্ত আগেও কারো’র গালে দেখেছে। কিন্তু আরিশা ঠিক ঠা’হ’র করতে পারছে না এখন।”
আরিশা’র মনে হলো কেউ ওর কক্ষে প্রবেশ করেছে। ও হাতে’র ফটো টা দ্রুত ফোনে’র কভারে রেখে দিল।
রুম থেকে দিশা’র গলার সুর শুনা গেল। আরিশা আপু কোথায় তুমি?”
আরিশা ওর কথার জবাবে বললো- এই তো আমি কিছু বলবে দিশা?”
দিশা বললো- তোমাকে নিচে ডাকছেন খালামনি! আমার সাথে এসো।
তারপর দু’জন চলে যায় রুম থেকে।”

এতো আনন্দ! এতো স’রগোল। এতো এতো মানুষে’র আনাগোনা’র মধ্যে ইরফান থাকতে পারলো না। ইরফান নিজের রুমে চলে আসে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ফোনের গ্যালারিতে প্রবেশ করে। খুব যত্ন করে রাখা তিনটা ফটো বের করে একটা ফোল্ডার থেকে।” ইরফান তাকিয়ে আছে অপলক দৃষ্টিতে সেই মিষ্টি চেহারা’র অধিকারীনি’র দিকে। মনে মনে বললো- এই মিষ্টি একবার আমার বাসায় আসলে তোর কী এমন ক্ষতি হতো!” মন ভরে একবার স্বচক্ষে দেখার সুযোগ করে দিলে কী এমন হতো।”
আচ্ছা তুই আমার হবি তো।” একবার দেখা দিলে ওতো পারতি মিষ্টি রাণী।
টোল পড়া গালে’র হাঁসি, ঘন দীর্ঘ কেশ কালো চুল, ডাগর ডাগর চোখ গুলো’র অধিকারী এই মিষ্টি মেয়েটি একান্তই আমার।” ইরফান যেনো তার মিষ্টি রাণী’র দিকে তাকিয়ে অন্য জগতে চলে গেলো।”

আরিয়া ইরিনে’র হাতে মেহেদী দেওয়া শেষ করে উঠে দাঁড়ায়। পা বাড়ায় ওয়াশরুমের উদ্দেশ্যে। সব কিছু দেখছিল লাবিব। আরিয়া যাওয়া’র কিছুক্ষন পর সেও পা বাড়ায় ওয়াশরুমে’র উদ্দেশ্যে।”
লাবিব ওয়াশরুমের পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই কারেন্ট চলে যায়। তবুও অ’ন্ধ’কা’রে সে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রয়। ওয়াশরুমে’র দরজা খোলা’র শব্দ পেতেই লাবিব হাত বাড়িয়ে যে বের হয়েছে তার একটা হাত আঁকড়ে ধরে নিয়ে যেতে লাগলো।”
মেয়েটা বলে উঠে- কে কে! এইভাবে হাত ধরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?”
লাবিব বললো- আমি লাবিব,তোমার সাথে কথা হয় না অনেক্ষন, এখানে তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম। চলো এখন তোমার সাথে অনেক কথা বলবো আরিয়া।
মেয়েটি বললো- আমি আ…
লাবিব মেয়েটা’র কোনো কথা না শুনে বললো- এতো কথা বলো না তো আরিয়া.”

মেয়েটা এখন জোরেই বলে উঠলো- এই অ’স’ভ্য ছেলে’ আমার হাত ছাড়েন। আপনার সাথে আমি কেন কথা বলবো কেন গল্প করবো। আর আমি তো….

তখন সেখানে ইরফান আর আরাফ উপস্থিত হয়। ওদের হাতে থাকা লাইটে’র আলোয় স্থান টা মুহুর্তেই আলোকিত হয়।
ওরা লাবিবদে’র দিকে এগিয়ে এসে বললো লাবিব সোহা! তোমরা অ’ন্ধ’কা’রে কী করো?”
আর সোহা বোন তুই এতো জোরে কথা বলছিস কেন?” কোনো সমস্যা।”
সোহা ইরফানে’র কথা শুনে কেঁদে দেয়। তার পর কান্না’র মধ্যেই বলে উঠে- ভাইয়া আমি ওয়াশরুম থেকে বের হতেই এই ছেলেটা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।” এবং বললো আমি নাকি আরিয়া আমার সাথে নাকি গল্প করবে।” আমি বলতে চাচ্ছিলাম আমি আরিয়া নই কিন্তু সে আমার কোনো কথাই শুনলো না।”

সোহার কথা শুনে ইরফান ঠা’স করে একটা থাপ্পর বসিয়ে দেয় লাবিবে’র গালে। এবং বলে উঠে- তোকে এই নিয়ে আমি দু’দু’বার থাপ্পর দিলাম লাবিব। শুধুমাত্র এসবের জন্য!” তুই এতো বে’হা’য়া, অ’স’ভ্য কেন রে?”
তোকে আমাদের বাড়িতে দাওয়াত দেওয়াটাই ভু’ল হয়েছে।”
লাবিব গালে হাত দিয়ে বললো- আমি তোর আত্মীয় ইরফান। তুই ভুলে যাস না তোর ফুপি আমার চাচি।” আর আমি জানতাম নাকি এই মেয়েটা আরিয়া নয়। আমি তো দেখেছিলাম আরিয়া এইদিকে এসেছে। তাই ভাবলাম এ-ই হয়তো আরিয়া।”

লাবিবের কথা শুনে আরাফ বললো- ওহ আচ্ছা। তাহলে তুমি আরিয়া’র দিকে নজরদারি করছো লাবিব!” ওর সাথে তোমার কী কথা?”
লাবিব মাথা নিচু করে বললো-…….
#অপেক্ষার_শেষে
#পর্ব_১০
#লেখিকা_কে_এ_শিমলা

লাবিব মাথা নিচু করে বললো- আরিয়া বলতে গেলে আমার হবু বউই ভাইয়া। আমার আম্মু বলেছেন আপনার সাথে এবং আপনার আব্বু আম্মু’র সাথে কথা বলবেন আমাদের বিষয় নিয়ে।তাই আমি আরিয়া কে এটা বলতে চেয়েছিলাম।
লাবিবে’র কথা শুনে আরাফে’র হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে এলো। সে নিজিকে সামলে বললো- বিয়ে! আরিয়া জনে তুমি আমাদের সাথে বিয়ের কথা বলবে?”
লাবিব: না ভাইয়া! এটাই বলতে যাচ্ছিলাম আরিয়া কে। ও কী বলে দেখতে চেয়েছিলাম।” আমি আপনার বোন কে ভালোবাসি ভাইয়া। ওকে আমার হাতে তুলে দিন, রাজরাণী হয়ে থাকবে।”
আরাফ যেনো ওর ধৈর্য হারি’য়ে ফেলছে।”

ইরফান সোহা কে জিজ্ঞেস করলো- সোহা তুই এখানে তাহলে আরিয়া কোথায়?”
সোহা জবাবে বললো- ভাইয়া আপু যখন ওয়াশরুম থেকে বাহিরে আসেন তখন আমি উনার হাতে ফোন দেই। উনার আম্মু কল করেছিলেন। কথা বলতে বলতে আরিয়া আপু এদিকে চলে গিয়েছেন।” আমি আমার হাতের মেহেদী ধু’য়ার জন্য ওয়াশরুমে ঢু’কে ছিলাম। তখন কারেন্ট চলে যায়, বের হতেই এই ছেলে আমাকে নিয়ে যেতে লাগলো।”

আরাফ লাবিব কে বললো- আরিয়া’র থেকে দূরে থেকো।”
সোহা সেখান থেকে চলে যায়, এবং আরাফ, ইরফান।
লাবিব আরাফে’র কথায় পাত্তা দিল না। সে যখন একবার বলেছে আরিয়া কে ওর চাই! তার মানে চাইই।”

আরিশা আরিয়ান কে দেখিয়ে আরিয়া কে বললো- আরিয়া এই ছেলেটা না সেই কখন থেকে শুধু আমার দিকে তাকাচ্ছে। আমাকে মনে হয় ফলো করছে, এই ছেলেটা’র সাথেই আমার এয়ারপোর্টে ধা’ক্কা লেগেছিল। আচ্ছা এই ছেলে এখানে কেনো?” আমাদের ফলো করে এখানে এসেছে নাকি, ইরিনে’র কোনো আত্মীয়?”

আরিয়া আরিশা’র কথা বুঝতে পারলো, আরিশা সত্যিই আরিয়ান কে চিনতে পারছে না।
আরিয়া আরিশা কে বললো- দেখ চিনতে পারিস কী না।”
আর কিছু বলার আগেই আরাফ আরিয়া কে ডেঁকে নিয়ে যায়।”
আরিশা বোকা’র মতো আরিয়া’র যাওয়া’র পানে তাকিয়ে রইলো।
একপলক আরিয়ানে’র দিকে দৃষ্টিপাত করে আবার ফিরিয়ে নিল। সে তো এই ছেলে’র দিকে তাকাতেই পারে না। ভালো ভাবে কী আর দেখবে, যে চিনতে পারবে। আরিশা নিজের কক্ষে চলে গেলো রাত হয়েছে প্রচুর। ঘুমের প্রয়োজন, কাল তো আবার বিয়ে।”

আরিয়া আরাফে’র রুমে আসতেই, আরাফ বললো- আরিয়া তুই কী আবার লাবিবে’র সাথে কথা বলেছিস?”
আরিয়া অবাক হয়ে প্রতিউত্তরে বললো- কী বলো ভাইয়া!” আমি তো ওর দিকে তাকাই-ইনি কথা বলবো কীভাবে?”
আরাফ আরিয়া’র দিকে তাকিয়ে বললো- জানিস ও আমাকে কী বলেছে?”
আরিয়া: কী বলেছে?”
আরাফ: তুই নাকি ওর হবু বউ! বললো ও নাকি তোকে ভালোবাসে। তার হাতে তুলে দিলে তুই নাকি রাজ রাণী হয়ে থাকবি।” তা তোর পছন্দ হয়েছে এই রাজা কে?”
আরিয়া অবাক চোখে তাকিয়ে বললো- এতো কিছু হয়ে গেছে আমাকে নিয়ে!” কথাটা বলে ও থেমে গেলো। আরিয়া’র মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে যায়!” আরাফে’র দিকে তাকিয়ে বললো- তুমি যখন বলছো ভেবে দেখবো! আর এমনিতেই কথা বললে দু’একদিনে পছন্দ হয়ে যাবে। বলেই একটা দুষ্টু হাসি দিলো।”
আরাফ আরিয়া’র দিকে তাকালো রা’গি চোখে।” দূরে থাকবি ওর থেকে একদম দূরে। ওর সাহস কী করে হলো তোকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া’র!” তাও আমাকে বলে ভালোবাসে।”
আরিয়া বললো- আজ’ব, বিয়ে তো আমাকে তোমাদের দিতে হবে তাই না।” যখন ও আমাকে ভালোবাসে,তখন ওর সাথে বিয়ে হলেই ভালো হবে।”

আরাফ দাঁতে দাঁত চে’পে বললো- তুই বাসায় চল দেখবি বিয়ে কাকে বলে আর তা কত প্রকার ও কী কী!” এখন আমার সামনে থেকে যা, দূর হো।”
আরিয়া একটা ভেং’চি কে’টে চলে যায়।”

আরিয়ান রুমে শুয়ে আছে। ওর মধ্যে এক অজানা অনুভূতি কাজ করছে, কেমন অস্থির লাগছে। আজ কতটা বছর পর তার “মায়াপ’রি কে সে দেখতে পারলো স্বচ’ক্ষে। কিন্তু তার “মায়াপ’রি তাকে চিনতেই পারলো না।
আরিয়ান ভাবে- আচ্ছা আমি যদি ওকে ফটো তে না দেখতাম তাহলে কী আজ এতো বছর পর ওকে চিনতে পারতাম। নাহ! ফটো দেখেছি বলেই চিনতে পেরেছি।”
কিন্তু আমার মায়াপরি তো আমাকে কখনোই দেখেনি। এমনকি আজ আমি ওকে কয়েকবার দেখেছি কিন্তু ও তো এক পলক তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিলো।”

আরিয়ান এসব ভাবছে আবার বলছে- আচ্ছা আমি যেভাবে ওকে লুকিয়ে দেখেছি, ও কী আমাকে একবারও দেখে না এভাবে সত্যিই।”
তাহলে কী মায়াপ’রি” তার কথা সে রেখেছে।” আরিয়ানে’র মনে অল্প অভিমানের উদয় হলো। সে তো তার মায়া পরি’র ভালো’র জন্যই দূরে থেকেছে। ভালোবাসা দেখায়নি, দূর থেকে ভালোবেসেছে অপেক্ষা করেছে, নিজেকে আরিশা’র যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে।”
সে তো তার মায়াপরি’র জন্য অপেক্ষা করেছিল। এই #অপেক্ষার_শেষে সে তার মায়াপ’রি” কে আপন করে নেবে।”
আরিয়ান এসব ভেবে বললো- তোমাকে খুব শীঘ্রই নিজের করে নেবো মায়া পরি!” ভাবনা’র এক পর্যায়ে আরিয়ান ঘুমের দেশে পাড়ি জমায়।”

সকালে মিষ্টি রোধে’র হালকা তেজে ঘুম ভাঙ্গে আরিয়ানে’র। সূর্যে’র আলো’র র’শ্মি জানালা ভে’দ করে ওর চোখে মুখে আছ’ড়ে পড়ছে।” পিট পিট করে চোখ খুলে আরিয়ান। জানালা খোলা থাকার কারণে এভাবে আলো আসছে, কাল রাতে শুয়ে পড়েছিল ওপাশ ফিরে। জানালা খোলা চোখে পড়েনি ওর। আরিয়ান বিছানা ছেড়ে উঠে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ায়।তার চোখ যায় আরো একটা বেলকনিতে। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে আরিয়ান সেদিকে।”

আরিশা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে নিজের চুল ঝাড়ছে টাওয়াল দিয়ে। কোমর পেরিয়ে গেছে ঘন লম্বা কেশ কালো চুল গুলো।”

আরিয়ান কপাল চুলকে, নিজেকে নিজে প্রশ্ন করলো- এতো সকালে ও গোসল কেনো করলো?” তাও আবার শীতের সকাল।এই মেয়ের কী শীত বলতে কিছু নেই নাকি!” আরিয়ান দু’পা পিছিয়ে গিয়ে, রুমের দেয়াল ঘড়িতে তাকায়। ঘড়িতে সময় দেখে ওর চোখ কপালে উঠা’র উপক্র’ম।” এতো বেলা হয়েছে কেউ ওকে ডাকেনি কেন!” ইরফান, আরাফ,দিয়ান, মাহিন ওরা কেউ উঠেনি নাকি।” আরিয়ান আবার আরিশা’র দিকে দৃষ্টি দিল এসব ভাবতে ভাবতে।”

আরিশা আরিয়ানে’র দিকেই তাকিয়ে ছিল বিদায় তাদের চো’খা’চো’খি হয়। আরিশা তাড়াতাড়ি চোখ নামিয়ে রুমে’র ভেতরে চলে যায়।” আরিয়ান আরিশা’র যাওয়ার পানে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে সেও ভেতরে চলে যায়।”

আরিয়া উঠে ফ্রেশ হয় সাথে গোসলটাও সেড়ে নেয়। বাহিরে এসে এদিক সেদিক তাকিয়ে যাকে খুঁজছিল তাকে পায়না। তাই রুমে’র উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়।”
আরাফে’র রুমের সামনে এসে দরজায় হাত রাখতেই দরজা একটু নড়ে উঠে। আরিয়া ভ্রু” কুঁচ’কে তাকায় দরজার দিকে। হাত দিয়ে ধা’ক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। মানে! আরাফে:রং রুমের দরজা খোলা, আদৌ স’ম্ভ’ব এটা।” আরিয়া ভাবলো হয়তো আরাফ উঠে পড়েছে।”
আরিয়া রুমে ঢু’কে দেখলো রুম এখনো কিছুটা অ’ন্ধ’কা’রা’চ্ছ’ন্ন! ও কিছু টা অবাক হয়। যখন উঠেই পড়েছে দরজা জানালা খুলেনি কেনো?”

আরিয়া দরজা, জানালা খুলে দেয়, মুহুর্তেই আলোকিত হয় কক্ষটা। বিছানায় তাকিয়ে দেখলো আরাফ এখনো শুয়ে আছে, ভ্রূ” কুঁচ’কে। বুঝতে পারলো হঠাৎ আলো চোখে পড়ায় এমন হয়েছে।”
আরিয়া আরাফ কে ডাক দিলো- ভাইয়া উঠবেনা।”
আরাফে’র ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে,তবে সে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল।” আরিয়া’র কথায় চোখ খুলে তাকায় ওর দিকে। তারপর বললো- হুম উঠেছি! কিছু বলবি?”
আরিয়া: নাহ! কিছু বলবোনা। পুরো বাসায় দেখলাম তুমি নেই, তাই ভাবলাম হয়তো এখনো ঘুমিয়ে আছো। তাই ডাকতে আসলাম, এখন উঠে পড়েছো আমি যাই।”
আরিয়া চলে যায়, আরাফ ফ্রেশ হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে চলে যায়।”

সবাই সকালে’র নাস্তা সেরে নেয়। আরিশা, ঈশিকা খানম এবং ঈশিতা খানমে’র সাথে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে।

চলবে!
চলবে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here