অপ্রিয় পর্ব ৬+৭

৬+৭
#অপ্রিয়।
#তিতিশ্মা_মুসাররাত_কুহু।
#পর্ব_৬

বিয়ে তো করলাম কোন রকম,কিন্তু এখন তো ভয়ে আমার সারা শরীর কাঁপছে।
কি করবে ও সবাই সরলে?
মেরে তো ফেলবেনা আবার আমাকে?
ভয়ে তো আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।

-এক গ্লাস পানি হবে প্লিজ?

-দিচ্ছি ভাবী।

দীনা আমাকে এক গ্লাস পানি দেয় আর আমি ঢকঢক করে সব টুকু পানি পান করে নেই।

আন্টি ও না সরি,আমার শাশুমা সবার জন্য রান্না করেন আর সবাইকে খাওয়া দাওয়া করে যেতে বলেন।

তাই বাসার সবাই খাওয়াদাওয়া করেই তারপর বাসায় যান।

আমার বাসার লোক জন এখনো এটাই ভাবে আমি দিহানের সাথে পালিয়ে এসেছি।ওকে ভালবাসি বলে।

বাসায় যাবার আগে আম্মু জিজ্ঞেস করে,
-কেন করলি এমন বলতো?ওকে যদি তোর পছন্দই ছিলো আমাকে বলতি,
আমি বিয়ে দিয়ে দিতাম।
কেন এভাবে পালালি?

আমি কিছু বলার আগেই দিহান এসে উপস্থিত।কিছু বলতেও দিলোনা আমায়।

সারাদিন শুধু একটা কথাই চিন্তা করছি।কি হবে আজ আমার।
আমাকে একা পেলে কি মেরেই ফেলবে নাকি।

দীনার বান্ধবীরা আশেপাশের সবাই এসে আমাকে দেখছে।সবাই বলছে,দিহানের মা!বউ তো অনেক সুন্দর।এমন একটা বউ ঘরে থাকলে আর কি লাগে!

শাশুমাও অনেক খুশি আমাকে পেয়ে।

সন্ধ্যায় প্রতিবেশী রা সবাই চলে গেছে।
আমি তো ভয়ে দিহানের সামনেই যাইনা।

এদিকে দীনা ওর বান্ধবোদের নিয়ে অনেক গুলো ফুল এনে ফুল দিয়ে বাসর ঘর সাজায়।দিহানের রুম আজ ফুল দিয়ে পরিপূর্ণ।

আমাকে ঘর সাজানোর সময় দীনার রুমে এনে বসিয়েছে।
আমি দীনার রুমে বসে আছি।রাত হতেই শাশুমা আমাদের খেতে ডাকেন সবাইকে।
খাওয়াদাওয়া করে এসে আমি দীনার রুমে শুয়ে পড়ি।
যাতে আমাকে কেউ আর দিহানের রুমে না পাঠায়।

এসেই ঘুমের ভান করে শুয়ে পড়ি।
-ভাবী,ওই ভাবী উঠো।তুমি এখানে শুলে কেন?

আমি আর চোখ খুলছিনা।

এদিকে দীনার সব বান্ধবীরা মিলে ডাকাডাকি শুরু করেছে।

শাশুমা এসে বললেন,
-তোরা ডাকিস না ওকে।বেচারির ওপর কত ধকল গেছে।
একটু রেস্ট নিক।

মনে মনে বললাম,উম্মাহ শাশুমা।এই না হলে আমার শাশুমা?

সবাই চুপ হলো।

রাত ১২টা।
-ভাবী কি এখনো এখানেই শুয়ে থাকবে?
ভাইয়ার কাছ থেকে বাসর ঘরের টাকা তো নিতে হবে।
ভাবীকে রুমে না নিয়ে গেলে ভাইয়া তো টাকাও দিবেনা।
-হুম চল আবার ডাকি।

আবার সবাই মিলে ডাকাডাকি শুরু।

-ওই ভাবী তুমি তোমাদের রুমে যাও।আমরা বান্ধবীরা ঘুমাবো এখন।

আমি মরার মত পড়ে আছি।
সব শুনেও যেন কিছুই শুনছিনা।

রাত ১২.৩০ দিহান দীনার রুমে ঢুকলো।
ঢুকেই বল্লো,
তোরা সর তো।
সবাই মনে হয় সরলো।
কারণ আমি তো ঘুমে,আই মিন চোখ বন্ধ আমার।
সব শুনলেও চোখে তো কিছুই দেখিনা।

আর এসেই আমাকে কোলে তুলে নিয়ে হনহন করে চলে গেলো তার রুমে।

মনে মনে বলছি,আজ মনে হয় আমি শেষ।

নিয়েই আমাকে ধুম করে খাটের উপর ফেল্লো।

-ও মাগো,এই ভাবে কেউ আছাড় মেরে ফেলে?ফাজিল কোথাকার।
-আমার কোমড় টা বোধয় শেষ।ও মা!

আল্লাহ্‌ আমি দেখি কথা বলে ফেলেছি।

-এই ভাবে আছাড় না মারলে কি মুখ দিয়ে কথা বের হতো?
আর এমন অভিনয়ের ঘুম ভাঙতো?

আমি চুপ হয়ে গেলাম।

তারপর কিছু ক্ষণ চুপ করে থেকে বললাম,
আমাকে মারবেন না প্লিজ।
প্লিজ আমাকে প্রাণে মারবেন না।
আমার মাত্র বয়সই বা কত।আরো কত বছর বাঁচার ইচ্ছে আমার।কত স্বপ্ন আমার।আমাকে মেরে ফেললে সব মিশে যাবে মাটির সাথে।
প্লিজ আমাকে মারবেন না।
ভ্যাএ্যাএ্যা।

-চুপ।একদম চুপ,কাঁদবিনা।
কাঁদলেই এখন গলা টিপে ধরবো।

-নায়ায়ায়া।আমি আর কাঁদবোনা ভাইয়া
প্লিজ আমাকে মারবেন না।
-মন চাচ্ছে তোকে মাথায় নিয়ে জোরে একটা আছাড় দেই।
-কোলে নিয়ে না দিলেন আছাড়?তাতেও মন ভরেনি?
-চুপ,কথা বলবিনা একদম।

তুই জানিস আজ তোর জন্য কি হয়েছে?
-কি হয়েছে?
-তোর জন্য আমার রত্না আমায় আবারো ভুল বুঝেছে।
ও রাব্বিকে(বন্ধু) ফোন দিয়ে কত কান্না কাটি করেছে জানিস?

বলেছে আমি ওকে আজো ঠকালাম।ও সব ছেড়ে আমার জন্য চলে এসেছিলো।আর আমি যাইনি।ও আমাকে কোন দিন মাফ করবেনা।

আর ভুল বুঝবেই বা না কেন,
আমার মোবাইল টাও যে বন্ধ করে রেখেছি ভেবে নিয়েছে ও।
অথচ মোবাইল টা তো তোর চাচা ভেঙে ফেলেছে সেটা ওকে কিভাবে বোঝাবো আমি?
-আমার চাচা কেন বলেন?বলুন ওর বাবা ভেঙে ফেলেছে।
-এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দেবো।আর যদি একটা কথাও বলিস।

এদিকে হঠাৎ ফোনের আওয়াজ।

-কার ফোন বাজে?
আমাদের কারোই তো এখন ফোন নেই।

রাব্বির ফোন এটা।

-হ্যালো।
-তুমি আমার সাথে এমন টা করতে পারলা?
কিভাবে পারলা তুমি মুসাররাত কে বিয়ে করতে?
আমার কথা কি তোমার একটুও মনে পড়েনি?
ছিঃ তুমি আমার সাথে বেঈমানি করতে পারলে দিহান?

-শোনো রত্না,
আমি তোমার ছিলাম আর তোমারই আছি।
আর চিরদিন তোমারই থাকবো।কেউ আমাকে তোমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবেনা।

আর আমরা দুজন অতি শীঘ্রই এক হবো।

-সত্যি বলছো?
-হুম সত্যি।
-আচ্ছা আমি তাহলে এখন রাখছি।
-আচ্ছা।সাবধানে থেকো।
-হুম আছি।এই হনুমান টা খুব ভালো।আমার অনুমতি ছাড়া আমার সামনেও আসেনা।
আর আমাকে ছুবে তো দূরের কথা।
-হয়েছে হয়েছে এত গুণগান গাইতে হবেনা।
-আচ্ছা লাভিউ।
-লাভ ইউ টু।

-শোনো মুসাররাত,
-জ্বী বলুন।
-তুমি আর আমি কোন দিনও এক হতে পারবোনা।এটা কোন দিনও সম্ভব না।
কারণ আমার মন জুড়ে শুধু রত্না।
আর অতিশীঘ্র আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি।

তাই আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার আশা ছেড়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।

-আপনাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবো আমি?আয়নায় নিজের চেহারা দেখেছেন?
এটা জীবনেও সম্ভব না আমার দ্বারা।
বরং আপনি নিজেই সাবধানে থাকুন।
কখন না আবার আমার প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া শুরু করে দেন।

-নো ওয়ে।জেগে জেগে স্বপ্ন দেখো।

-হুহ,আপনিও রত্না আপুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখুন।

এই বলে খাট থেকে নিয়ে ছুড়ে মারলাম একটা বালিশ তার উপর।

দিহান বালিশ টা ক্যাচ ধরতেই আবার ফোন টা বেজে উঠলো।

-আমি আগামীকাল হনুমান কে নিয়ে আমাদের বাসায় যাচ্ছি।
তুমিও মুসাররাত কে নিয়ে চলে এসো।
এখন তো আর কেউ তোমাকে বাসা থেকে বের করে দিবেনা।
কারণ তুমি ওই বাসার জামাই হয়ে গেছো।

আর যা করার আমরা ওই বাসায় থেকেই করবো।

-ইয়াহ তাই হবে।আমি সকাল বেলা ই হাজির হচ্ছি আমার বউ নিয়ে শশুড় বাড়ী।
-কিইই?কি নিয়ে?
-না মানে মুসাররাতকে নিয়ে।
-ওকে ওকে রাখছি।

দিহান আমাকে বউ বল্লো?
অপ্রিয় মানুষ টার মুখ থেকে উচ্চারিত হওয়া বউ শব্দ টা এত সুন্দর শোনাচ্ছে কেন?

চলবে…

#অপ্রিয়
#তিতিশ্মা_মুসাররাত_কুহু।
#পর্ব_৭

রত্না আপু ফোন রেখে দেয়ার সাথে সাথে দিহান বালিশ নিয়ে খাটের উপর চলে আসে।
-এই এই আপনি খাটে আসছেন কেন?
নামুন এক্ষুণি।এক্ষুণি নামুন।
-আমি তোমাকে ছোঁবো না ওকে?
-তবুও নামুন।
-নাকি নিজের উপর ভরসা নেই হুম?
-কিই?আমার উপর ভরসা নেই?আপনার মত অপ্রিয় মানুষের আঙুল ধরারও ইচ্ছে নেই আমার।

-তাহলে চুপচাপ শুয়ে পড়ো।আমার দিক থেকে নিশ্চিন্ত থাকো।
গুড নাইট।

দিহান কোল বালিশ নিয়ে এক পাশ হয়ে শুয়ে পড়ে কোল বালিশটা মাঝ খানে রেখে।
আমি কি করবো এখন?শুয়ে পড়বো?নাকি নিজেকে পাহারা দিবো সারারাত?
এই ছেলেকে কি বিশ্বাস করা যায়?

যাবেনা কেন?সে তো রত্না আপুকে ভালবাসে।অন্তত রত্না আপুর সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করবেনা।

অনেক রাত হয়ে গেছে।গত রাত তো ঘুমই হয়নি।তাই আমিও শুয়ে পড়লাম এক পাশে।দিহানের দিকে তাকাতেই দেখি ও ঘুমে আচ্ছন্ন।ঘুমন্ত দিহানকে এত সুন্দর দেখায় কেন?
কেন ইচ্ছে করে ওর মাথার এলোমেলো চুল গুলো ছুঁয়ে দিতে?

সকালেও এমন দেখাচ্ছিলো,যখন ও ঘুমাচ্ছিলো।
আর এখনো সেরকমই লাগছে।ঘুমালে কি অদ্ভুত মায়া লাগে ওর জন্য।আর জাগন্ত দিহানকে তো ইচ্ছে করে ধরে ধরে পিটাই।

অনেক রাত হয়েছে ঘুমাই এবার।

আমি ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে ঘুম ভাঙে আমার দিহানের ডাকে।

-ওরে মহারাণী রে,কত বেলা হয়েছে খেয়াল আছে?এত বেলা পর্যন্ত কেউ ঘুমায়?
-উম্ম আরেকটু ঘুমাই না।
-না, একটুও না।
উঠো।
উঠো,উঠো,উঠো।
-উঠছি তো।

যাও উঠে এক্ষুণি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে এসো।নাস্তা করেই আমরা এখন তোমার বাসায় যাবো।

-সকালেই?আর কাউকে না বলেই?
-বলতে হবে কেন?আর সকালে গেলে কি হবে?
তাছাড়া এখন আমি ওই বাড়ীর জামাই।আমাকে বাসা থেকে বের তো আর করে দিবেনা।
-কি আপনি ওই বাড়ীর?
-কি আবার,জা
-থেমে গেলেন যে?
-না কিছু না।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে এসো।
-আপনি যান,আমি আসছি।

ফ্রেশ হয়ে গেলাম নাস্তা করতে।

-ভাবী,ভাইয়া কাল আমাদের বাসর ঘরের টাকা দেয়নি।
তোমাকে কোলে করে নিয়ে গিয়েই দরজা আটকে দিয়েছে।
আজ দিতে বলো টাকা।
-কি শুরু করলি সকাল সকাল?দিবেনে পরে।আর আমার সামনে এসব কি শুরু করলি?
-না আমার এখনই লাগবে,নইলে তোমার ছেলে আর দিবেনা।
-দিহান,দিয়ে দে তো কিছু টাকা ওদের।
-না,একটাও পাবেনা ওরা।
যা এবার কি করবি কর।
আমি নাস্তা করেই মুসাররাত কে নিয়ে ওদের বাসায় যাচ্ছি,এক সপ্তাহ ঘুরে আসবো।তত দিনে টাকার কথা ভুলেও যাবো।
-দেখেছো আম্মু তোমার ছেলে কি বলে?আমার টাকা দিয়ে আমি ফুল কিনেছি।কত কষ্ট করে সাজিয়েছি।
আর তোমার ছেলে কিনা এক টাকাও দিবেনা আমায়।
-এমন করছেন কেন?দিয়ে দিন না ওদের কিছু টাকা।
এটা তো একটা শখের বিষয়।
-এই নে যা, এবার খুশি?

আমি অবাক হয়ে গেলাম।যেই ছেলে এত ক্ষণ বল্লো এক টাকাও দিবেনা।
সেই ছেলে আমি বলা মাত্রই ওমনি টাকা বের করে দিয়ে দিলো?

-দেখেছো মা,তোমার ছেলে আজই বউ এর বাধ্য বর হয়ে গেছে।
-চুপ করলি তুই?

আর দিহান,তুই যে বউমাকে নিয়ে ওদের বাসায় যেতে চাচ্ছিস।ওরা যদি তোদের বাসায় ঢুকতে না দেয়?

-আজব তো,কেন দিবেনা ঢুকতে?
আমি কি এখন আর বাইরের ছেলে নাকি?
আমি এখন ওই বাড়ীর জামাই।

-দেখ বাবা,কোন ঝামেলা করিস না।
আর মুসাররাতকে কোন কষ্ট দিস না।
আর রত্না এলে রত্নার কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবি।মনে রাখিস,এখন থেকে মুসাররাত তোর জিম্মাদারি।তোর বউ।

-হুম মনে রাখলাম।

নাস্তা করা শেষ।
আমরা কিছু ক্ষণ পর আমাদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

যদিও আজ আমার একটুও যেতে ইচ্ছে করছিলোনা।
এ বাড়ীটাই কেন যেন এখন আপন মনে হচ্ছে।

আর বাসায় গেলেই আবার রত্না আপু আর দিহান মিলে কি না কি প্ল্যান করে আবার।
ভালো লাগছেনা এসব আর।

এসে গেছি বাসায়।
কলিং বেল বাজছে।
মনে মনে চিন্তা করছি কি যে হবে আজ বাসায়।

গেইট খুলে দিলেন আমার খালামণি।দেখি কি হয় এখন।

-ও!আম্মা যে,আসসালামু আলাইকুম।আম্মা কেমন আছেন?
-সকাল সকাল তোমরা?কি মনে করে?
আর আমাকে কেন আম্মা আম্মা করছো?
তোমার আম্মা মুসাররাতের মা।আমি না।
-উঁহু,একদম না।আপনি আমার আম্মা।
আর এই যে ইনি আমার আম্মু।কেমন আছেন আম্মু?
-এই তো ভালো আছি বাবা।
এসো এসো ভেতরে এসো।

-ও হো আব্বাজান,আসসালামু আলাইকুম আব্বাজান!কেমন আছেন আপনি আব্বাজান?

আমি দিহানের আচরণ দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি।
কি করছে ও এসব।

-কিসের আব্বাজান?আংকেল বলো আংকেল।
ভালো আছি।তুমি?কি মনে করে?
-আপনারা তো আর দাওয়াত করবেন না তাই আমিই আমার বউ নিয়ে চলে আসলাম।

আমি দিহানের মুখ থেকে বউ শব্দটা শুনলেই আঁতকে উঠছি।

-এসেই যখন পড়েছো যাও ভেতরে যাও।
মুসাররাতের রুমে গিয়ে বসো।

আর তোমরা কই?
ওদের নাস্তা পানি দাও।

:
আব্বু,আমি এসে গেছি।
-কি রে কেমন আছিস?
-কেমন আছেন আব্বু?
-ভালো আছি বাবা ভালো আছি।
আসো পরিচয় করিয়ে দেই,
ও হচ্ছে আমাদের মুসাররাতের হাজবেন্ড।
আর ও রত্নার হাজবেন্ড।

দুজন ওরা হাত মেলালো,
মনে মনে বললাম,

মেয়ে হলে দুই সতীন বলা যেতো।
কিন্তু এখন কি বলবো?

-যা রত্না জামাইকে নিয়ে বস।
ফ্রেশ হয়ে নে।

-কই তোমরা?ওদের এক সাথে নাস্তা দাও।

আমাদের সবাইকে খালামণি আর আম্মু নাস্তা দিলেন।

রত্না আপু আর দিহান দেখছি নাস্তা খাচ্ছে আর চোখাচোখি করছে।

কেন জানি এসব আমার খুব বিরক্ত লাগছে।

তাই আমি ওখান থেকে উঠে চলে গেলাম আমার রুমে।

কিছু ক্ষণ পর দিহানও এলো।

-উফফ রেস্ট নেই একটু,
বিকেলে আবার বের হতে হবে।
-কোথায় বের হবেন?
-রত্না তুমি, আমি আর হনুমান টা ঘুরতে বের হবো।
-না আমি যাবোনা।
-কেন যাবেনা?
-আপনি রত্না আপুকে নিয়েই যান।
-তুমি না গেলে ওকে নিয়ে যেতে পারছিনা বলেই তো তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি।
নইলে কি নিয়ে যেতাম নাকি?
-ওহ।
-হুম তাই রেডি থেকো বিকেলে।
আমি যাবোনা যাবোনা যাবোনা।
-তুমি যাবে।
-আমি শুনবোনা আপনার কথা।
-শুনতে হবে।
-কেন শুনবো আমি আপনার কথা?
-কারণ আমি তোমার স্বামী।
-কি আপনি আমার?
-না মানে,
রেডি থেকো বিকেলে,
আমি একটু আসছি।

দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে দিহান সবার সামনে বল্লো আমরা চার জন চলুন ঘুরতে যাই,রেডি হয়ে নিন।

আর রত্না আপুর বরও রাজি হয়ে গেলেন।
রত্না আপুতো দুই পায়ে খাড়া যাবার জন্য।

রত্না আপুর বর যেতে রাজি হয়েছেন বলে বাসার কেউ না ও করতে পারলেন না।

আমি রুমে এসে নীল রঙের একটা শাড়ী পরলাম।

দিহান আমাকে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকছিলো,
আর হঠাৎ আমাকে দেখে ও চুপ হয়ে গেলো।
আমি ওকে দেখেই উলটো দিকে মুখ ফিরিয়ে ঘুরে দাঁড়ালাম।

ভাবলাম এবার বুঝি আমাকে দেখে এত্ত গুলা প্রশংসা করবে।

কিন্তু সে যা বল্লো তা শুনে ইচ্ছে করছিলো শাড়ীটা তখনই খুলে ফেলি।

সে পেছন থেকে আদুরে গলায় ঝাড়ি দিয়ে আমাকে বলে উঠলো,

-শাড়ী পরেছো কেন?শাড়ী যদি সামলাতেই না পারো,আর
পড়ে যাওয়া আঁচল যদি সব সময় আমারই তুলে দেয়া লাগে।

মেজাজ টা এখন কেমন লাগে আপনারাই বলুন?

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here