অবন্তর আসক্তি পর্ব ৭+৮

#অবন্তর_আসক্তি
#৭ম_পর্ব
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_________
খুবই শক্ত করে হাত চেপে ধরে ছিল। তাই হাতটা ছাড়তে হাফ ছেড়ে বাঁচল বর্ষা। সে তিক্ত মেজাজে বর্ষার পা থেকে মাথা অব্ধি লক্ষ্য করে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে, ‘ রাস্তায় এত সেজেগুজে বের হয়েছিস কেন? রাস্তায় পুরুষদের নিজের শরীর দেখাতে ভালো লাগে নাকি? ‘

উনি বলতে কি চান হুহহ, আমি রাস্তা ঘাটে শরীর দেখিয়ে বেরাই আজব। চোখমুখ লাল হয়ে গেলো, রাগী কন্ঠে চেঁচিয়ে বললাম, ‘ বলতে কি চান আপনি? আমি রাস্তায় শরীর দেখিয়ে ঘুরে বেড়াই? ‘

সে আমার দিকে কিছু টা ঝুঁকে কর্কশকন্ঠে বলল, ‘ তা না হলে তোর পেট দেখা যাচ্ছে কেন? ‘

তার কথায় মনে হলো আমি আসমান থেকে পরলাম। এটা অসম্ভব আমি শাড়ি পরলে সবসময় শাড়ির পিন সেট আপ করি, অতি যত্নে। সেখানে পেট দেখা ইম্পসিবল। তার কথায় আমি হতভম্ব হয়ে পেটের দিকে তাকালাম। সত্যি শাড়ির পিন খুলে কোথাও পরে গেছে।
তার দিকে চোখ ছোটছোট করে তাকিয়ে নিচু কন্ঠে কিছু বলতে যাবো তার আগেই পেছন থেকে চারটা হাত বর্ষাকে জড়িয়ে ধরল।

বর্ষা আতঙ্কে লাফিয়ে উঠে, সে তড়িঘড়ি করে পেছনে ফিরে চায়, পেছনে দুজন বান্দরনী দেখে সে বিস্মিত স্বরে বলল, ‘ তোরা? ‘

বৃষ্টি বলল, ‘ যেভাবে রিয়েক্ট করছিস মনে হচ্ছে তুই জানিসই না আমরা যে এসেছি?’

বর্ষা মাথা নত করে হম্বিতম্বি করে বলল, ‘ শুনেছিলাম। ‘

রিমা ভ্রু কাচুমাচু ভঙ্গি করে প্রশ্ন ছুঁড়ল, ‘ তাহলে? ‘

‘ শুনেছিলাম তোরা সবাই পার্কে যাবি তো সেখানে না গিয়ে বাজারে দেখে অবাক হলাম। ‘

‘ তোকে রেখে কি করে যাই চল গাড়িতে উঠ, ‘ এক প্রকার টেনেই গাড়িতে তুলে বসালো। গাড়িতে উঠে আরও এক জোড় শকট খেলাম। আহিতা মাহিরা দু’জনেই গাড়িতে কিভাবে সম্ভব ওরা না পালিয়ে ছিল? কোনো কিছুরই হিসাব মিলাতে পারছি না। আর এদিকে উনি ড্রাইভিং করছে আমি মুখ ফুলিয়ে ফ্রন্ট সিটে বসে আছি। সব কিছুই জেনো মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করে গাড়ি থেমে গেলো। একবার সামনে তাকিয়ে দ্বিতীয় বার পাশে থাকা ব্যক্তিটার দিকে তাকালাম। পেছনে তাকিয়ে দেখি সকলে একে একে নেমে যাচ্ছে। আমি কি একা বসে থাকবো নাকি? আমিও নেমে পরলাম। মাটিতে পা ফেলতে দ্বিতীয় বারের মতো শকট খেলায়। না না এবার শকট খেয়েছি বললে ভুল হবে। ছোটমোটো একটা হার্ট অ্যাটাক করেছি। গাড়ি থেকে নেমে গাড়ির ডোর আসতে করে লাগিয়ে দিলাম। পেছনে ঘুরে দেখতে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সামনে এক চওড়ারাস্তা তার এক পাশে বড় দিঘি সচ্ছল তার পানি। বিপরীত পাশে হচ্ছে নানান রকমের ফুল গাছ, প্রতিটি গাছে ফুল ফুটেছে আছে৷ আমার ফুল খুব প্রিয় তা তো আপনারা জানেন৷ এখানে এক সাথে এত ফুলের গার্ডেন দেখে আমি নিজেকে কোনো ভাবেই আটকে রাখতে পারছি না। ইচ্ছে করছে উড়ে গিয়ে প্রতিটা ফুল স্পর্শ করি। কিন্তু এখানে সাইনবোর্ডে বড়বড় করে লেখা আছে, ‘ দূর থেকে দেখেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করুন। ভুলেও ছুঁয়ে স্পর্শ করবেন না। একটা ফুলের গায়ে স্পর্শ করলে ৫০৫টা জরিমানা, আমরা উপরে সিসি ক্যামেরা দ্বারা আপনাদের উপর নজর রাখিতেছি। ‘

এমন সতর্ক বার্তা পড়ার পর কিভাবে ছুঁয়ে দেখবো ফুলগুলো কে হুহহ? বেলুনের মতো মুখ চুপসে গেলো আমার। কিছুটা সময় আমরা পুরো জায়গাটা ঘুরে দেখলাম খুবই সুন্দর জায়গা৷ হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন তার হাত আমার মুখের সামনে ধরল হাতে তার চিপস। কিছুটা বিস্ময় নিয়ে পেছনে ঘুরে তাকালাম, অভ্র ভাইয়া আমার পেছনে দাড়িয়ে আছে সে আমার দিকে গুরুগম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ‘তাকিয়ে থাকবি নাকি এটা ধরবি? ‘

তার চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকা মুশকিল। মায়াবী দু’টি চোখ, তাকিয়ে থাকলে মনে হয় এই চোখের অতল সাগরে ডুবে যাবো। যৎকিঞ্চিত ভ্রমণগুলোর আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছি সবাই এদিকে সন্ধ্যে গনিয়ে আসছে। আমি শাড়ি কুঞ্চিত উঁচু করে লাফ দিলাম। এ পাশ থেকে ওপাশে রাস্তার মধ্যে কোনো ড্রেন ছিল না।। তবুও ইচ্ছে করল লাফ দিতে আর নিজের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখতে নেই। সেজন্যই লাফ দেওয়া আর এটাই বর্ষার জীবনে বহু বড় কাল হয়ে দাঁড়ালো। এমন ভাবে পরেছে, যে বাগানের কন্চির সাথে লেগে পেছনে ব্লাউজ ছিড়ে যায়। ব্লাউজ ছিঁড়েছে বুঝতে পেরে মুখ কাচুমাচু করে ফেলল। এই বুঝি এখনই কেঁদে ফেলবে। তা ছাড়া এমন অবস্থায় একটা মেয়েই বুঝতে পারে তার উপর দিয়ে কি যায়। মাথা নিচু করে ঠোঁট জোড়া বাঁকা করে রেখেছে। খোলা চুলগুলো সে অনেক আগেই খোঁপা বেঁধে নিয়েছে। এখানে এত মানুষ দেখে অস্বস্তিতে পরে যায় সে কি করবে বুঝতেই পারছে না৷ এদিকে বর্ষা পরেগেছে সেটা কেউ দেখেনি। তারা অনেকটা দূরে একটা দোকানে অবস্থান করছে। এই অবস্থায় বর্ষা আগাতে পারছে না। তার চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা অশ্রু টুক করে গালের উপর গড়িয়ে এসে পরে। তখনই কেউ একজন পেছন থেকে বর্ষার গায়ে জ্যাকেট জড়িয়ে দেয়। জ্যাকেট টার দুই মাথায় ধরে পেছনে ঘুরে তাকালো। দেখার জন্য এই বিপদে কে তাকে সাহায্য করল।

‘ বাঁন্দরের মতো লাফাস কেন? ঠিক করে হাঁটতে পারিস না। ‘

কর্কশকন্ঠে কথাগুলো বলে হনহনিয়ে সামনে থেকে চলে গেলো৷ আমার আজ আর তার কথা খারাপ বা বিরক্ত লাগল না৷ উল্টো আমার অনেক ভালো লাগল তার বলা কথা মনে হচ্ছে কি মনে হচ্ছে হুদ্দাই ঘোড়ার ডিম আলু পটল৷ এত বেশি বেশি কেন ভাবছি হুহহ? বড় ভাই হিসাবে কর্তব্য পালন করেছে শুধু আর তো কিছু না৷ তারপর আর কি হেঁটে সকলকে পেছনে ফেলে আমি আগে আগে গাড়িতে উঠে বসে পরি। সবাই আসলে অভ্র ভাইয়া গাড়ি চালানো স্টার্ট দেয়। সে গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখেই সর্বপ্রথম আমার দিকে আড় চোখে তাকায়। তার এই চাহনি আমার চোখ এড়ালো না। কেনো জানি আমার উনার আড়চোখে তাকানো টা অনেক ভালো লাগল। বাড়ির সামনে এসে বেশ জোরেই ব্রেক কষলো সে। আমি সিট ছেড়ে সামনের দিকে অনেকটা এগিয়ে গেলে সে আমার হাত ধরে সিটের উপর বসায় আর দাঁতে দাঁত চেপে বলে,

‘ গাড়ির ফ্রন্ট সিটে বসলে সিট বেল্ট লাগাতে হয় এত টুকু কমন সেন্স নেই ‘

তখন তিনি কত ভালো ব্যবহার করলেন নিজের গা থেকে জ্যাকেট খুলে দিলো আর এখন কি এমন হলো এমন করে কথা বলছে কেন? ভাবতেই বুকের ভেতর চিলিক দিয়ে উঠলো। গাড়ির ডোর খুলে দিলাম দৌঁড় এক দৌঁড়ে একদম রুমে। হল রুমে বসেছিল বাড়ির সকলে আমাকে এভাবে ছুটে আসতে দেখে কয়েকবার ডেকে ছিল। কিন্তু আমি তাদের ডাক কানে নেইনি। রুমে এসে ঠাস করে দরজা চাপিয়ে দিলাম। খুবই খারাপ লাগছে আমার উনার ব্যবহারে কিন্তু কেনো? উনার এমন ব্যবহারে আমার কেন খারাপ লাগবে আজব। নিজের উপরই বিরক্তি লাগছে। ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে আসলাম ওয়াশরুমে। রুমের মধ্যে টুকটাক শব্দ শুনে ভেতর থেকেই চেচিয়ে বললাম, ‘ কে রিয়া? ‘

রুমের মধ্যে থেকে প্রতিত্তোরে সে বলল, ‘ না আমি রিমা। ‘

আমি চিন্তা মুক্ত হলাম। সম্পূর্ণ শাওয়ার কমপ্লিট করে নিলাম। একটা সাদা টাওয়াল গায়ের সাথে পেঁচিয়ে নিলাম।
পেছনে ঘুরে তাকাতেই পিছলে পরে যাওয়ার মতো অবস্থা মুখ ফসকে বলে ফেললাম, ‘ ও মোর জ্বালা জামা-ই তো আনি নাই ‘ কতক্ষণ বাথরুমে দাঁড়িয়ে কাকা করলাম। মানে কাকের মতো রিমাকে ডাকলাম কিন্তু তার কোনো শব্দ নেই, আরও কয়েকবার ডাকলাম কোনো রকম আওয়াজ না পেয়ে দরজা খুলে দিলাম। রুম পুরো ফাঁকা কোথাও রিমা নাই গেলো কোই পেত্নী টায়? বিড়বিড় করে বললাম। এক টাওয়াল গায়ে জড়িয়ে দ্বিতীয় টাওয়াল মাথায় চুলের সাথে পেঁচিয়ে বাথরুম থেকে বের হলাম। আমি কি আর তখন জানতাম আমার সাথে ওইরকম একটা বিচ ছিঁড়ি কাহিনি ঘটবে।

রুমে এসে আলমারির কাভার্ড থেকে গোলজামা, পায়জামা ও ওড়না হাতে নিয়ে আবারও বাথরুমে যাচ্ছিলাম। তখনই রুমের মধ্যে চলে আসল অভ্র ভাইয়া সে বলতে লাগল, ‘ বর্ষা তোর মোবাইল গাড়িতে ফেলে আসছিলি। ‘

উনার ভয়েস শুনে আমি চমকে তার দিকে তাকালাম। উনাকে হনুমানের মতো সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অস্ফুটস্বরে দিলাম এক চিৎকার, ‘ আহহহহহহহ ‘ সেও আমার সাথে তাল মিলিয়ে চিৎকার দিলো ‘ আহহহহ ‘

তারপর,
#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_০৮
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
_________
গরুর মতো চিৎকার করে রুম থেকে ছুটে বের হয়ে গেলো৷ আমি পরে গেলাম লজ্জায় এমন সময় রুমে চলে আসবে ভাবতেও পারিনি। আর ওই বজ্জাত রিমা দরজা খোলা রেখে চলে গেছে অসহ্য!

এক রাশ বিরক্ত নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছি। হুট করে পায়ে পা লেগে পরে যাবো, তখনই পেছন থেকে একটা হাত আমাকে ধরে নিলো। পেছনে ঘুরে রাগী গলায় কিছু বলতে যাবো তার আগেই মানুষটার মুখ দেখে চমকে উঠলাম, সে আমার দিকে ভ্রু কুঞ্চিত করে তেজি কন্ঠে বলল, ‘ সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় সাবধানে নামতে পারিস না। ফাজিল এখনই তো পরে হাত পা ভাঙতো। ‘

আমি প্রত্যত্তরে কিছুই বললাম না শুধু দু’টি চোখ দিয়ে তাকিয়ে রইলাম। তার কথা শোনানো শেষ হয়ে গেলে সামনে থেকে হনহনিয়ে চলে যায়৷ তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কাটলাম। উপর থেকে নেমে এসে রিমা বলল, ‘ কি বললো কাব্য ভাইয়া তোকে? ‘

‘ কি আর বলবে ফ্রি তে জ্ঞান বিতরণ করে গেছে ‘

বলে হাঁটতে হাঁটতে হল রুমে চলে আসলাম। পেছন পেছন রিমাও আসলো আগে থেকেই সবাই এখানে বসে গল্প করছে। আমাকে দেখতে সকলে কপাল কুঁচকালো কর্কশকন্ঠে সকলে একসাথে বলল,

‘ তুই নাকি বিকেলে পরে গিয়ে ব্লাউজ ছিঁড়ে ফেলছিস ‘

ওরে আল্লাহ কি বলে সবাই স্টক করার মতো অবস্থা হইছে, এক তো বিনা অনুমতিতে রুমে ঢুকে গিয়েছিল দ্বিতীয় যা কেউই জানতো না সেটাও সবাই কে বলে দিলো। প্রচুর কান্না পাচ্ছে এখন আমার, মাথা নিচু করে হাত কচলাচ্ছি। মাথা তুলে আঁড়চোখে অভ্র ভাইয়ার দিকে তাকালাম সে মুখে কৃত্রিম হাসি দিয়ে মোবাইল স্ক্রল করছে। ইচ্ছে করছে চুলের মুঠি ধরে গালে ঠাসস ঠাসস করে চড় মারতে, আমাকে চুপ দেখে সকলে আবারও একই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়। চোখে ছলছল করছে অশ্রু, সকলের দিকে এক নজর তাকিয়ে কান্না ভেজা কন্ঠে বললাম, ‘ আমি পরে যাইনি, ওই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফালাই দিছে। ‘

হাত দিয়ে অভ্র ভাইয়ার দিকে ইশারা করলাম। আমার আঙুলের ইশারায় সকলে তার দিকে তাকালো, সে হতভম্ব হয়ে আমার দিকে তাকালো আমার চোখে পানি দেখে সে কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে গেলো। থমথমে হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল৷ আমি সেখানে আর এক মূহুর্ত ও দাঁড়ালাম না ছুটে চলে গেলাম রুমে।
_______

রাত প্রায় ১১টা বাজে, চোখে ঘুম নেই মনে শান্তি নেই কারণ অজানা। এদিকে কারেন্ট ও নেই রুমে শুয়ে থাকাও যাচ্ছিল না চিনচিন গরম পরেছে। আমার গুনধর বোনগুলা এই গরমেও দিব্যি ঘুমাচ্ছে, ওদের কি গরমও লাগে না নাকি ‘ আল্লাহ মালুম’

তবে আমার ঘুম নেই তাই হাঁটতে হাঁটতে চলে আসি ছাঁদে, খুবই ঠান্ডা ও শীতল হাওয়া বইছে, মনকে প্রসারিত করে তুলেছে। চোখ জোড়া বন্ধ করে সে বাতাসকে অনুভব করছিলাম। তখনই পেছন থেকে কারো নির্মূল কন্ঠের আওয়াজ ভেসে আসল সে বলল, ‘ সরি ‘

আমার তার কন্ঠ চিনতে বেশি সময় লাগেনি। কিন্তু পেছনে ফিরে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। সে হেঁটে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল, ‘ সরি। আমি তখন বলতে বাধ্য হয়ে ছিলাম। আমি যখন বাড়ি আসি তখন বাড়ির সকলে আমাকে গেঁড়ো দিয়ে দাড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে, আমার জ্যাকেট তোর গায়ে কেনো? তাই আমি বলেছিলাম কিন্তু আমি বুঝিনি তাতে তুই এত হার্ট হবি। ‘

আমি অন্য দিকে তাকিয়েই বললাম, ‘ আপনার বলা শেষ হয়ে গেলে এখন আসতে পারেন। আমাকে কিছু ক্ষণ একা থাকতে দিন। ‘

সে আমার কথার কোনো তোয়াক্কা না করে বলল, ‘ আমি তোকে কিছু বলছি বর্ষা ‘

‘ আপনি বলেছেন আমি শুনেছি এখন আপনি আসতে পারেন। ‘ রাগী গলায় চেঁচিয়ে বলল বর্ষা।

সে এক বিরক্তিকর নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর তার একহাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো অন্ধকারে তেমন দেখছি না। তবুও আবছা আবছা চাঁদের আলোয় বুঝলাম একটা প্যাকেট কিন্তু কিসের মাথায় আসলো না। আমি তার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়লাম, ‘ এটা কি? ‘

সে বলল, ‘ আইসক্রিম তোর না ফেবারিট ‘

সে কেন আমাকে আইসক্রিম দিচ্ছে আজব আমি কি তার কাছে চেয়েছি নাকি হুহহ কি ভাবে টা কি আমাকে সুসি বিলাই মনে করে নাকি? যে আইসক্রিম দিলেই আমি সব ভুলে যাবো৷ কিছুতেই না আমিও তার মুখের উপর বলে দিলাম, ‘ আমি কি আপনার কাছে আইসক্রিম চেয়েছি কেন আনছেন হুহহ? তখন জুতা মেরে এখন গরু দান করতে আসছেন? চাই না আমার আইসক্রিম চলে যান এখান থেকে ‘

আমার কথায় সে চোয়াল শক্ত করে হাতের আইসক্রিম ছাঁদের উপরেই ছুড়ে ফেলে দেয়। ধুপধাপ পা ফেলে হেঁটে চলে যায়।
বুঝলাম সে চলে গেছে, পেছনে ঘুরে তাকে খুঁজলাম কোথাও দেখতে পেলাম না। তাকে দেখতে না পেয়ে অন্ধকারেই বসে পরলাম। দু-হাত দিয়ে আইসক্রিম টা খুঁজতে লাগলাম। কিছুটা দূরে গিয়ে পরেছিল। হাত ফেলে খুঁজতেই পেয়ে গেলাম। আইসক্রিম কিছুটা গলে গেছে, তাই নিয়ে দিলাম দৌঁড় রুমে এসেই সবার আগে ফ্রিজের সামনে গিয়ে আইসক্রিম টা ফ্রিজে ঢুকালাম। মনের মধ্যে এক প্রশান্তি কাজ করছে৷ জানি না তা কেনো কিন্তু এটা বুঝতে পারছি খুব ভালোলাগা থেকে এই প্রশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। মুখে কৃত্রিম হাসি দিয়ে রুমে চলে আসলাম। ততক্ষণে কারেন্ট ও চলে আসছে, রুমে এসে বেলকনির দরজা খুলে দেই সাথে জানালার বড় একটা থাই খুলে দিলাম। এতে বাহিরের সচ্ছল বাতাস সহজেই রুমে ঢুকছে। এখন জানি না কেনো আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে, চাইলেও আর চোখ খুলে রাখা সম্ভব নয়। বিছানার উপর গা এলিয়ে দিতে প্রস্থান করলাম ঘুমের রাজ্যে।
______
সকালে ঘুম ভাঙলে চরম লেভেলের হতবাক হই। বিশ্বাসই হচ্ছে না, চোখ দু’টো ছোটছোট করে তাকিয়ে রইলাম৷ দরজা তো রাতে বন্ধ ছিল তাহলে রুমে আসলো কিভাবে? আর এটাই বা রেখে গেলো কীভাবে সবকিছুই মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। আড়চোখে তাকিয়ে এতো বড় কাগজটা হাতে নিলাম তাতে বড়বড় ইংরেজি ওয়ার্ড দিয়ে লেখা আছে, ‘ .

কি লেখা আছে আগামী পর্বে বলবো।

#চলবে?

(
(কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here