অবশেষে পর্ব শেষ

অবশেষে–শেষ পর্ব।

বেশ কিছু দিন পর আপা আসলো।আপা প্রতিবার আসার সময় সবার জন্য উপহার নিয়ে আসে।মায়ের জন্য দামী একটা কাপড় এনেছে।মা খুশিতে গদ গদ অবস্থা। আমার জন্য এনেছে বিদেশি মেক-আপ বক্স।সাজতে আমার আমার এমনিতেই ভালো লাগেনা।বিদেশি পণ্য আমার মোটেই পছন্দ না।কসমেটিকস তৈরী হয় প্রতিটি দেশের আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে।নানা দেশে নানা রকম কসমেটিকস। এখন আমি যদি ইউরোপের কসমেটিকস ব্যবহার করি।এটা আমার দেহের জন্য উপযোগী নয়।এটা আপাদের মতো মানুষেরা বুঝতে চায় না।এদের ধারনা বিদেশি মানে ভালো দেশীয় পণ্য সব বাজে। এটা সত্য আমাদের দেশে কিছু অতি লোভী মানুষ নষ্ট হয়ে গেছে,তারা নকল পণ্য বাজারে ছেড়ে দেয়। এসবের মধ্যেও দেশীয় ভালো মানের পণ্য আছে,আমাদের অবহেলায় সেসব পণ্য মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেনা।আপা আমার রুমে এসে বসেছে।আমার রুম বলতে আপা আসলে আমরা একসাথেই থাকি।দুলাভাই সচারাচর আপার সাথে আসেনা তার সময়ের বড় অভাব।

মনি তোর পড়াশোনা কেমন চলছে?

ভালো আপা।তুমি কেমন আছো?

ভালো,তোর জন্য বাবা যে ছেলে এনেছিলো।সেটাকে নাকচ করে ভালোই করেছোস।তোর জন্য তোর দুলা ভাই একটা ছেলে ঠিক করেছে।ছেলেরা অনেক ধনী।সপরিবারে আমেরিকা থাকে।

আপা শোনো আমি বিদেশী ছেলে বিয়ে করবো না।

আগে দেখ পরে বলিস।ছেলে দেখতে রাজপুত্রের মতো।কম্পিউটার ইন্জিনিয়ার।ছেলের একটা মাত্র বোন তার বিয়ে হয়ে গেছে। একাবারে ঝামেলা ছাড়া পরিবার।একটু সমস্যা তোকে আমেরিকায় থাকতে হবে।তুই চাইলে যখন ইচ্ছে দেশে আসবি বেড়িয়ে যাবি।কোন সমস্যা নাই।
ছেলে তোর ছবি দেখেছে, তোর সাথে দেখা করতে দেশে এসেছে।

তোমরা এতো কিছু করেছো? আমায় জানাওনি!

আমার একটা দায়িত্ব আছেনা! তোর দুলা ভাইয়ের সবদিকে নজর আছে,বুঝলি শুধু মানুষটা ব্যবাসা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।কি করবে বল? এতো বড় ব্যবসা সব ওকে একহাতে সামলাতে হয়।তারপরও দেখ তোর জন্য ঠিক এমন একটা ভালো ছেলের সন্ধান বের করেছে।

মা এসে উপস্থিত, কি নিয়ে? এতো গল্প হচ্ছে দুবোনে।

আপা বললো,মা তোমাকে ছেলেটার কথা বলেছিলাম না।ওই ছেলেটা গতকাল দেশে এসেছে। মনির সাথে দেখা করতে চায়।

বলিস কি! এতো দারুণ খবর।তুই আমাকে এতক্ষণে বললি।

তোমার জামাই আমাকে ফোনে জানালো কিছুক্ষণ আগে।

মা,আমি কোন বিদেশি ছেলেকে বিয়ে করে তোমাদের ছেড়ে ভিনদেশে থাকতে পারবোনা।

শোনো মেয়ের কথা,এখন আবার ভিন দেশ কিরে? সারাদুনিয়া এখন মানুষের হাতের মুঠোয়।তুই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসতে যে সময় লাগবে।
তার আগেই আমেরিকা থেকে ঢাকা আসতে পারবি।

আমি বলিকি মা, মনি প্রথমে ছেলেকে দেখুক তারপরে দেখা যাবে।

ছেলেকে বল আমাদের বাসায় আসতে।

তুমিনা মা! সেকালে রয়ে গেলে।আজকালকার ছেলেরা বুঝি বাসায় এসে দেখা করবে।ওরা বাহিরে কোথাও দেখা করুক।দুজন দুজনকে জানুক।
তারপর ভালো লাগলে তখন আমরা কথা আগাবো।

তোরা যা ভালো মনে করিস।আমাদের সময় তোদের মতো এতো সুযোগ ছিলনা।মুরুব্বিরা সব ঠিক করে দিতো।আমিতো তোর বাবাকে দেখেছি। সব কথা ঠিক হওয়ার পর।আমাদের মতামত কেউ জিজ্ঞেস করতোনা।
বড়রা সব ঠিক করে বলতো তোর বিয়ে।মনি তুই দেখা কর, কথা বল।কেমন বুঝতে চেষ্টা কর।

মা, আমি তাহলে তোমার জামাই কে জানিয়ে দেই।ওরা দেখা করুক।ছেলেকে মনির নাম্বার দিয়ে দিব।ওরা কথা বলে দেখাসাক্ষাৎ করুক।

সেটাই ভালো হবে।ঠিক আছে তোরা ঘুমিয়ে পড়।আমি যাই।

আপা তোমরা কি বলছো!

আরে বোকা দেখা করলেতো বিয়ে হয়ে গেলোনা। দেখা কর ভালো না লাগলে বাদ।দেখা করতেতো সমস্যা নাই।চিন্তা করে দেখ, তুই আমেরিকা থাকবি কত উন্নত দেশ।আমাদের মতো এতো সমস্যায় ঘেরা নয়।বড় দেশ বড় সুবিধা। তোর ছেলে মেয়ে হবে আমেরিকার নাগরিক। চাইলে তুই ওখানে ভালো করে পড়তে পারবি।নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারবি।

ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে দেখি।একটি ছেলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।নোমান দূর থেকে আসার আগেই ছেলেটি আমার সামনে।

হ্যালো আমি কায়েস।চিনতে পারেননি? শিমু আপা আমার কথা বলেনি বুঝি!

ও,আপনি! নোমান আমাদের কথা বলতে দেখে সামনে আগায়নি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে।

চলুন কোথাও বসা যাক,অবশ্য যদি আপনার সময় ও ইচ্ছে দুটোই থাকে।

চমৎকার উচ্চারণ ভঙ্গিতে কথা বলছে কায়েস।কোন জড়তা নেই।
অনেক আত্মবিশ্বাসী লাগছে। আমরা দুজন হেটে রাস্তায় আসলাম।
কায়েসের গাড়ী দাড়ান।গাড়ীতে উঠার আগে নোমানের দিকে তাকিয়ে দেখলাম।মুখখানা কেমন মলিন একরাশ মেঘ জমেছে। আমার বুকের মধ্যে কেমন ধুক করে উঠলো।নোমান কে ফেলে গাড়ী এগিয়ে চলছে।
আমি পাশের গ্লাসে দেখছি নোমান অসহায়ের মতো চলে যাওয়া গাড়ির পানে তাকিয়ে আছে।

আমরা এখন বসে আছি, নাম করাই বলা যায় চায়নিজ রেষ্টুরেন্টে।কায়েস খুবই ভদ্র, ম্যানার জানা ছেলে,কথা বলে গুছিয়ে।সব মিলিয়ে দারুণ স্মার্ট।আমরা সামনা সামনি বসে আছি।কায়েস বলা শুরু করলো।

আপনার ইউনিভার্সিটিতে যাওয়ার আগে একটু ভয়ে ছিলাম।আপনি কেমন ভাবে নিবেন।আপা বলে ছিলো,কল দিয়ে যেতে।আমি একটু সারপ্রাইজ দিতে চাইলাম।আপনাকে এতোটা চমকে দিতে পারিনি।

তারপর কি খাবেন? আগে বলেনি আমি ভালো জানিনা এখানে কোনটা ভালো।কাজেই আপনার হাতে সব তুলে দিলাম।এখানে অনেক জায়গাও ভালো চিনিনা।আপনার ইউনিভার্সিটি চিনতেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। আমি কি একটু বেশি বলছি?

না ঠিক আছে,এটা হওয়ার কথা।আপনি এখানে থাকেন না, অচেনা লাগবেই। কতদিন পর আসলেন?

প্রায় ছয় বছর।আমার জন্ম আমেরিকায়।এটা আমার জন্মভূমি না।

এটা জন্মভূমি না কথাটা খুব খারাপ লাগলো।কেন লাগলো জানিনা।হয়তো খুব ভালোবাসার বলে।খুব কাছের কিছুকে অন্য কেউ ছোট করলে খারাপ লাগা কাজ করে।আপনি দেশে বিয়ে করতে চান কেন?

এই আপনি কি আমাকে বিদেশি ভাবেন! আমি মোটেও তানয়। আপনি কি আমার বাংলায় কোন সমস্যা পেয়েছেন?

না, তানয়।বিদেশে জন্ম ওখানে বেড়ে উঠা।দেশের প্রতি টান কম থাকাটা স্বাভাবিক নয়কি?

না, একবারে ভুল।আমরা যারা বাহিরে থাকি তাদের দেশের প্রতি টান প্রচন্ড। এদেশটাকে ভালোবাসি বলেইতো বারবার ছুটে আসি।বাহিরে থাকলেও আমরা দেশীয় সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি।তাই দেশের প্রতি আলাদা একটা টান আছে।বাবা মায়ের ইচ্ছে এখানেই বিয়ে করতে হবে।আমার নিজেরও বিদেশি মেয়ে ভালোলাগেনা,সব মিলিয়ে এমন সিদ্ধান্ত।

ঘন্টাখানিক আমরা একসাথে ছিলাম।কায়েস কথা বলে চোখে চোখে খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে। আমাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। এবং গাড়ী থেকে নামার সময় নিজে নেমে গেট খুলে দিয়েছে। বাসায় যাওয়ার অনুরোধ করলেও যায়নি।বললো সুযোগ পেলে বহুবার যাওয়া হবে।
আমাকে ওর খুব ভালোলেগেছে কথায় প্রকাশ পায়।আমার সামনে এখন নোমান ও কায়েস।কায়েস হলো দামী রেষ্টুরেন্টের মতো সব সাজানো গুছানো সুন্দর পরিবেশ, চমৎকার পরিবেশন। আর নোমান?
গ্রামের মাটির চুলোয় রান্না করা কিছুটা অপরিষ্কার, পরিবেশন অতোটা ভালোনা কিন্তু মায়ায় জড়ানো। আমি মায়ার টানে বাঁধা পড়বো, না
সৌন্দর্যে?

বাসায় এসে দেখি আপু রেডি হয়ে বসে আছে। ব্যাপার কি আপু কোথায় যাও?

তোর দুলাভাই কল দিয়েছে যেতে হবে,কি জরুরি দরকার।তা তোর কায়েস কে কেমন মনে হলো?

এমনিতে ভালোই, তবে এতটুকু সময়ে মানুষ কে বুঝা যায় বলো?

তা বুঝা যায় না।মানুষকে কি কখনোই পুরোপুরি বুঝা যায়! তুই যত লম্বা সময় ধরে দেখিসনা কেন? কোনদিন কাউকে বুঝতে পারবিনা।আমি পেরেছি এতোবছরে তোর দুলাভাই কে চিনতে? পারিনি! কেউই পারেনা তবুও ঘর বাঁধে। একসাথে থাকে হয়তো জানা হবে,না জানলেও দোষ নেই।
অল্প জানা, না জানার রহস্যের মধ্যেই কেটে যায় জীবনটা।যদি লোকটা অসহ্য না হয়, একসময় অভ্যস্ত হয়ে যাবি।জীবনে মানিয়ে নিতে হয়রে! না হলে সংসার হয়না।মানিয়ে নেয়াটা আমাদের মেয়েদের করতে হয় বেশি।
আমাদের জীবনটাতো স্বর্নলতার মতো অন্যের উপর ভর করে কাটাতে হয়।তোর জীবন তুই বেছে নে।

আচ্ছা আপা তুমি কি দুলাভাইয়ের সাথে সুখী?

সুখ আবার কি! তোর দুলাভাই মানুষ খারাপ না।কখনও রেগে যায় না।কথা বলে আন্তরিকতায়।হ্যা একটু ব্যস্ত থাকে।আমায় সময় দিতে পারেনা।
তবে আমায় ছাড়া একদিন থাকলেই হাঁপিয়ে উঠে।দেখ কল দিয়ে বললো খুব জরুরি কাজ আছে এখনি চলে যেতে।যেয়ে দেখবো কিছুই হয়নি।আমায় দেখেনি বা বুয়ার রান্না খেতে ভালো লাগছে না।তাই যেতে হবে।এর মাঝেই সুখ খুঁজে নিতে হয়।

মা, কিরে শিমু! তুই সব গুছিয়ে কোথায় যাস?

মা,তোমার জামাই কল দিছে।আমাকে যেতে হবে।

দেখো মেয়ের কান্ড! দুদিন হয়নি এসেছে এখনি চলে যাবে।তা ওকে বলবিনা আসতে।জামাইটা আমার এদিকে আসতেই চায়না।একটু আদর যত্ন করবো তার সুযোগ হয়না।

ওর সময় কোথায় মা? ওতো খাওয়ার সময় পায় না।তোমার ছোট জামাই কে ভালো যত্ন করে সখ মিটিও।

সে কবে হবে।আর যদি মনির বিয়ে এখানে হয়, তাহলে জামাইকে পাবো কোথায়!

ঠিক আছে মা আমি যাই।শিমুর বিয়ে ঠিক হলে, আবার চলে আসবো।

সাবধানে যাবি, পৌছিয়ে কল দিবি।

আমি, মা আপুর সাথে নিচে নেমে এলাম।আপু গাড়িতে উঠে বসেছে।
যাইরে মনি।তুই কল দিস।চলে আসবি সময় পেলে।মা যাই।মা তাকিয়ে আছে ছুটে যাওয়া গাড়ির দিকে।মায়ের চোখের কোনায় জল!

মা চলো, এভাবে কতক্ষণ দাড়িঁয়ে থাকবা!

কেমন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে চল।

রাতে বাবার কোলে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে আচ্ছা বাবা, আমি এখন কি করবো?

তোর মনের কথা শুনবি।আমরা অনেক কিছু না বুঝলেও মন সব বুঝতে পারে।মন সবসময় সঠিক পথ দেখায়।

আচ্ছা বাবা সুখ কি?

মারে,এটা একেক মানুষের কাছে একেকরকম।মানুষ যা চায়, তা পেলেই যে সুখী হয় তা নয়।আসলে সুখ হলো বুঝতে পারা।জীবন বুঝতে পারা।নিজেকে বুঝতে পারা।নিজেকে যখন বুঝতে পারবি তখন অন্যকে বুঝতে পারবি।

আর ভালোবাসা?

ভালোবাসাও বুঝা।দুজন মানুষ যখন একে অন্যকে পুরোপুরি বুঝতে পারে, সেটাই প্রকৃত ভালোবাসা।দেখ তোর মা কথায় কথায় রেগে যায়।তাতে আমার খারাপ লাগেনা।এমন না আমি এটা মানিয়ে নিয়েছি।আমি ওকে বুঝতে পারি।আমি বুঝি ও রাগলেও ওর ভীতরটা ভালোসায় পূর্ণ তাই আমার কষ্ট হয় না।আমি ওর রাগের মাঝে ভালোবাসা দেখতে পাই।যদি না বুঝে মানিয়ে নিতাম প্রথম প্রথম পারলেও একসময় বিরক্তি এসে যেতো।অধিকাংশ মানুষ বুঝে না,মানিয়ে নেয়ার চেষ্টায় ছাড় দেয়।ছাড় দিতে দিতে একসময় হাঁপিয়ে উঠে,তখন আর কিছুই অবশিস্ট থাকেনা।নিজেকে বুঝার চেষ্টা কর।দেখবি সব কিছু পরিস্কার হয়ে গেছে।
এখন ঘুমা মা।আমি যাই।

বাবার কথাগুলো আমার মাথায় ঘুরছে।সত্যি কি চাই?আমি বুঝতে পেরেছি,আমি আপার মতো অন্যের পায়ে চলতে পারবো না।মেয়ে বলে নিজস্বতা হারিয়ে যাবে! মেয়েরা শুধু মানিয়ে নেয়। মেয়েদের নিজের বলতে কি আছে? গুটিকয়েক বর্ণের সমষ্টি একটা নাম।আর সবইতো অন্য কে ঘিরে।এমন মেয়ে হয়ে জীবন কাটাতে পারবো না। আমি নিজের কিছু গড়বো তারপর অন্যচিন্তা।
আমার নিজের একটা পরিচয় থাকবেনা?শুধু মেয়ে বলে এমন হবে না।

কায়েসের সাথে দেখা করে বলেছি, আমি প্রথমে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই, তারপর বিয়ের কথা ভাববো।পারবে অপেক্ষায় থাকতে আমার পথ চেয়ে।

আপনি ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করছেন।সেটাতো আমেরিকায় ভালোভাবে করতে পারবেন।

পারবো সেটা হবে আপনার অবদান। আমার নিজের না।আমি নিজের প্রচেষ্টায় গড়তে চাই।

ওকে,আপনি যা ভালো মনে করেন,অপেক্ষায় থাকবো।

খুব ভালো লেগেছে কায়েসের কথা।আর বোকাটা কি বলেছে?
শুনে খুব খুশি হলো।

তুমি নিজের পায়ে দাঁড়াবে।এতো আনন্দের খবর।কয়জন মেয়ে এমন চিন্তা করে।আর শুনো আমি তোমাকে চাঁদের মতো ভালোবাসি। চাঁদকে আমরা ভালোবেসে কখনো বেধে রাখতে চাইনা,কারন আমরা জানি চাঁদ আমাবস্যায় হারিয়ে গেলেও।আমাদের অঢেল বিশ্বাস থাকে, আমাবস্যা কাটিয়ে ঠিক আবার এসে যাবে।যে ভালোবাসায় বিশ্বাস কম থাকে সেখানে বেঁধে রাখার চেষ্টা থাকে।আমার ভালোবাসায় বিশ্বাসের কমতি নেই।ভালোবাসা সত্যি হলে তোমাকে পাবোই।

আমার সিদ্ধান্তে মা প্রথম প্রথম গাইগুই করলেও আমার অনড় অবস্থার কাছে নত হতে বাধ্য হয়েছে। বাবা আমার সিদ্ধান্তে চরম খুশি।

বিন্দু বিন্দু ঘাম সঞ্চিত করে, ধুলোর পাহাড় পেড়িয়ে আমি গড়েছি ছোট একটা নদী, আমার নিজস্ব একটা নদী।আজ আমায় ডাকতে কিছু বর্ণের সমষ্টির সাথে জুড়ে দিতে হয় থানা শিক্ষা অফিসার। তিনটি বসন্ত কাটিয়ে
অক্লান্ত পরিশ্রমে আমি নিজের পরিচয় গড়ে তুলেছি।

সৌন্দর্যের স্থায়িত্ব যেমন ক্ষনস্থায়ী তেমন কায়েসও কথা রাখেনি।এক বছর নানা চেষ্টা করে শেষমেশ এক রূপসীর সাথে ঘর বেঁধেছে।বোকাটাকে মায়ার বাঁধন আঁকড়ে ধরেছে,মায়া কি কাটানো যায়!নোমান আমায় সত্যি চাঁদের মতো ভালোবেসেছে, আমার আলোয় নিজেকে আলোকিত করে।
বোকাটার মায়ার টান আমিও কাটাতে পারিনি। তাইতো আমাদের বিয়ে আগামী মাসের ষোল তারিখ। জী,১৬ ডিসেম্বর। বিজয় দিবস।
এটাও বোকাটার বুদ্ধি বলেকিনা আমি তোমাকে বিজয়ের দিনে জয় করবো।তাছাড়া আমাদের বিবাহ বার্ষিকিতে আজীবন ছুটি থাকবে।বিবাহ বার্ষিকিতে অফিস করলে চলবে।বোকাটার কত দিকে খেয়াল!

আপনারা সবাই নিমন্ত্রিত। মাস্ক পড়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে
আমাদের দোয়া করে যাবেন।

সমাপ্ত

® নাবিল মাহমুদ
১২-১১-২০২০

@ নাবিল মাহমুদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here