#অবশেষে_তুমি (পর্ব ১৪)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
আমি বললাম
নিসাঃ আপনি বলছেন সরি আমাকে!! এখন তো মনে হচ্ছে আমি সজাগ অবস্থায় স্বপ্ন দেখছি!!
অর্ণবঃ কেনো আমি কি তোমাকে সরি বলতে পারি না!!
নিসাঃ না আপনি যেমন মানুষ!! আপনার তো ভাবই আলাদা।।
অর্ণবঃ কেনো আমি কেমন মানুষ!!
নিসাঃ না কিছু না।।
অর্ণবঃ দেখো আমাকে যতোটা খারাপ ভাবো আমি কিন্তু ততোটাও খারাপ না।। আমি যথেষ্ট ভালো আছি।।
নিসাঃ হুম।। তা তো দেখতেই পাচ্ছি।।
অর্ণবঃ কি দেখতে পারছো!! (গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞাসা করলাম)
নিসাঃ না না কিছু না।।
অর্ণবঃ আচ্ছা আমরা কি ভালো ফ্রেন্ড হতে পারি!!
নিসাঃ আমার সাথে আপনার আবার কিসের ফ্রেন্ডশিপ!!
অর্ণবঃ না মানে…….. আমাদের এই ঝগড়ার সম্পর্কটাকে কি বন্ধুত্তে পরিণত করতে পারিনা!!
নিসাঃ দেখা যাক।।
অর্ণবঃ Thank you.
নিসাঃ হুম।। তাহলে আমি আসি।।
অর্ণবঃ ঠিক আছে।।
কথা শেষ করে আমি চলে এলাম ফারিয়ার কাছে।। ফারিয়ার কাছে আসার পরই ফারিয়া আগ্রহের সাথে জিজ্ঞাসা করা শুরু করলো
ফারিয়াঃ দোস্ত কি হয়েছে!! তোকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলো!! আর কি বলেছে!! (কথাগুলো এক শ্বাসেই বললো)
নিসাঃ আরে থাম থাম।। আগে তুই নিঃশ্বাস নে।।
ফারিয়াঃ বলনা কি হয়েছে!!
নিসাঃ কি আর হবে।। গিয়ে দেখি অর্ণব ভাইয়া দাড়িয়ে আছে।। আর ফারহান ভাইয়া উনার সাথে কথা বলার জন্যই নিয়ে গিয়েছে।।
ফারিয়াঃ কি বললো অর্ণব ভাইয়া!!
নিসাঃ আমাকে সরি বলেছে।। আর আমার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে চায়।।
ফারিয়াঃ কি!!! সত্যি!!! ভাইয়া তোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে চায়!! সব মেয়ের ক্রাশ নাকি যে ছেলে।। যে নাকি কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না…………. পাত্তা দেয় না সে তোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করতে চায়!! আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছে না।।
নিসাঃ আরে কি শুরু করেছিস বাদ দে তো।।
ফারিয়াঃ এখন আমি বাদ দিবো!! ঢং যত্তসব।।
এদিকে অর্ণব অনেক খুশি।। ও নিসাকে সরি বলতে পেরেছে।। ফারহানকে বলছে
অর্ণবঃ দোস্ত thank you. তোর কারনে আজকে নিসাকে সরি বলতে পেরেছি।। তুই না থাকলে হয়তো বলাই হতো না।।
ফারহানঃ আরে ফ্রেন্ড হয়ে যদি কোনো উপকারেই না আসি তাহলে ফ্রেন্ড হলাম কেনো।।
অর্ণবঃ এই জন্যই তো তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।।
ফারহানঃ হা হা হা।। এখন তুই ওরে কিভাবে বলবি যে তুই ওকে পছন্দ করিস সেইটা ভাব।। যেমন হাইপার টাইপের মেয়েরে বাবা!! দেখলেই ভয় লাগে।।
অর্ণবঃ হুম।। ফ্রেন্ডশিপের অফার তো দিলাম।। দেখা যাক কি হয়।। আগে ভালো ফ্রেন্ড হয়ে নেই তারপর বলবো।।
ফারহানঃ ok.
.
.
.
.
.
.
কলেজ শেষে রিকশার জন্য দাড়িয়ে আছি কিন্তু কোনো রিকশাই পাচ্ছিনা।। আজকে ফারিয়াও আসেনি কলেজে।। এখন একা একা এখানে দাড়িয়ে কি করবো।। হঠাৎ দেখি একটা গাড়ি সামনে এসে দাড়ালো।। ভালো করে খেয়াল করে দেখি অর্ণব।। অর্ণব বলছে
অর্ণবঃ এখানে একা একা দাড়িয়ে না থেকে আমার সাথে আসো।। আমি তোমাকে পৌঁছে দিচ্ছি।।
নিসাঃ না না।। আমি একাই যেতে পারবো।। আপনার কষ্ট করতে হবেনা।।
অর্ণবঃ অনেক্ষন থেকে তো দাড়িয়ে আছো।। একটা রিকশাও তো পেলেনা।। কখন পাবে তার নিশ্চয়তা নেই তার চেয়ে বরং আমার সাথেই চলো।।
নিসাঃ আসলেই কখন যে রিকশা পাবো তার কোনো গ্যারান্টি নেই।। উনার সাথে চলে যাওয়াটাই ভালো হবে।। (মনে মনে)
অর্ণবঃ কি হলো কি এতো ভাবছো।। আসো।।
আর কিছু না ভেবে গাড়িতে উঠে গেলাম।।
অর্ণব নিসাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে চলে গেলো।।
.
.
.
.
.
.
অর্ণব আর নিসার সম্পর্কটা এখন ভালোই চলছে।। দুজন এখন আর ঝগড়া করে না।। দুজন এখন ভালো ফ্রেন্ড হয়ে গিয়েছে।। একসাথে বসে গল্প করে…….ঘুরাঘুরি করে।। এখন ওদের ফোনেও যোগাযোগ হয়।। দুজন দুজনের খেয়াল রাখে।। অর্ণব নিসাকে প্রতিদিন বাসায় পৌঁছে দেয়।।
একদিন অর্ণব নিসাকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার সময় বললো
অর্ণবঃ আচ্ছা আমরা তো এখন অনেক ভালো ফ্রেন্ড।। আর ফ্রেন্ডকে কি কেউ আপনি বলে!! তুমি আমাকে তুমি বলে ডাকবে।। কেমন!!
নিসাঃ ঠিক আছে।। আচ্ছা তোমার কি কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।।
অর্ণবঃ না নেই।।
নিসাঃ কাউকে পছন্দ করো নাকি??
অর্ণবঃ করি একজনকে কিন্তু সে বুঝে না।।
নিসাঃ কে সেই ব্যক্তি!!
অর্ণবঃ আমার সাথে যে বসে আছে সে।। (আস্তে করে বললাম)
নিসাঃ কিছু বললে!!
অর্ণবঃ না কিছু না।। সময় হলে বলবো।।
নিসাঃ ok.
দুইদিন পর নবীণবরণ অনুষ্ঠান।। আমি ফারিয়া অর্ণব আর ফারহান ভাইয়া একসাথে বসে গল্প করছিলাম।। হঠাৎ করে ফারিয়া বলে উঠলো
ফারিয়াঃ দোস্ত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সবাই শাড়ি পরে আসবে।। আমিও পরবো তুইও কিন্তু শাড়ি পরে আসবি।।
নিসাঃ না বাবা আমি শাড়ি পরবো না।। আমি এমনিতেই শাড়ি পরতে পারিনা।। আর শাড়ি পরে সামলাতেও পারিনা।।
ফারিয়াঃ আমি কিছু শুনতে চাই না।। তুই শাড়ি পরে আসবি।। এটাই শেষ কথা।।
নিসাঃ দোস্ত এমন করিস না প্লিজ।।
অর্ণবঃ মানা করছো কেনো।। শাড়ি পরে আসবা প্লিজ।।
নিসাঃ আচ্ছা বাবা ঠিক আছে।।
ফারিয়াঃ Thank you দোস্ত।।
নবীনবরণ অনুষ্ঠানের দিন নিসা মেরুন কালারের শাড়ি পরে কলেজে এসেছে।। ফারিয়া আর নিসা একসাথে দাড়িয়ে কথা বলছিলো এমন সময় অর্ণবের চোখ যায় নিসার দিকে।। নিসার দিকে তাকিয়েই অর্ণবের চোখ আটকে যায়।। মেরুন কালারের শাড়ি আর এই হালকা সাজে যেনো মেয়েটাকে অপ্সরীর মতো লাগছে।। চোখ ধাঁধানো সুন্দর লাগছে।।মেয়েটাকে এতো সুন্দর লাগছে যা বলার বাহিরে।। মেয়েটা এতো সুন্দর কেনো!! আচ্ছা ও যে এতো সুন্দর সেটা কি ও জানে।। (মনে মনে ভাবছে অর্ণব)
এদিকে নিসা অর্ণবকে খুজেই যাচ্ছে কিন্তু পাচ্ছেনা।। অর্ণব যে ওকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে সেটা নিসা জানে না।।
এক সময় নিসা অর্ণবকে খুঁজতে খুঁজতে এক জায়গায় পেলো।। নিসা অর্ণবকে দেখে রাগ করে বললো
নিসাঃ আপনি এখানে!! আর আপনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন?? আমি আপনাকে সেই কখন থেকে খুঁজছি।।
·
·
·
চলবে…………………….
#অবশেষে_তুমি (পর্ব ১৫)
#Mohua_Afrin_Mim
·
·
·
অর্ণব বললো
অর্ণবঃ ছিলাম এদিকেই।। কেনো কোনো সমস্যা!! আমাকে খুঁজছিলে কেনো!!
নিসাঃ কেনো তোমাকে খুঁজতে গেলে কি কোনো কারণ থাকা লাগবে নাকি!! আমি কি তোমাকে খুঁজতে পারিনা!! আর তুমি আমার সাথে দেখা করোনি কেনো!! আমি সেই কখন এসেছিল।। তুমি তো আমার কাছে একবারো এলেনা!!
অর্ণবঃ আমি তো তোমায় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলাম।। সামনে থাকলে তো আর ভালো মতো দেখতে পারতাম না।। সামনে থাকলে তো নিজেকে কন্ট্রোলও করতে পারতাম না আর তোমার থেকে দূরে সরে থাকতে পারতাম না।। যদি তুমি বুঝতে তোমাকে আমি কতোটা চাই………..যদি তুমি জানতে তোমাকে আমি কতোটা ভালোবাসি।। (মনে মনে)
নিসাঃ কি এতো ভাবছো সেই কখন থেকে!! আমি যে তোমার সামনে আছি সেটার কোনো গুরুত্বই নেই তোমার।। ব্যাপারটা কি বলো তো!!
অর্ণবঃ না কিছু না।।
নিসাঃ আমাকে কেমন লাগছে সেটাও বললে না………….আমি এতো কষ্ট করে শাড়ি পরে এসেছি।।
অর্ণবঃ হুম সুন্দর লাগছে।।
নিসাঃ শুধু সুন্দর বললো তাও আবার এমন শুকনো মুখ করে।। (মনে মনে)
অর্ণবঃ তুমি থাকো আমি আসছি।।
অর্ণব চলে গেলো।। এভাবে চলে গেলো কেনো!! আজব তো!! আজকে এমন করছে কেনো!! এইরকম অদ্ভুত ব্যবহার করছে কেনো!!
হঠাৎ করে ফারিয়া এসে বললো
ফারিয়াঃ দোস্ত তুই এখানে কি করছিস!! তোকে আমি খুঁজছি।।
নিসাঃ দেখনা অর্ণব কেমন করছে!! আজকে কলেজে আসার পর থেকে আমার কাছে একবারো আসেনি।। খুঁজেও পাচ্ছিলাম না।। এখন যখন পেলাম ও ভালো করে কথা না বলেই চললে গেলো।।
ফারিয়াঃ দোস্ত একটা কথা বলবো কিছু মনে করিস না।। আমার কেনো যেনো মনে হয় ভাইয়া তোকে পছন্দ করে।।
নিসাঃ কি যাতা বলছিস!! মাথা ঠিক আছে তোর!! ও কেনো আমাকে পছন্দ করতে যাবে!! আমরা অনেক ভালো ফ্রেন্ড……. that’s it.
ফারিয়াঃ আমি বললেই দোষ।। আমি সিউর ভাইয়া তোকে পছন্দ করে।। আর তুই একটা বলদ তাই এখনো বুঝিস না।। আর নইতো তুই ভাব কলেজে আরো কতো মেয়ে আছে আর ভাইয়ার জন্য কতো মেয়ে পাগল ভাইয়া ওদেরকে পাত্তা দেয়না অথচ তোর সাথে এতো ভালো ব্যবহার করে তোকে এতো কেয়ার করে তোকে ফ্রেন্ড বানিয়েছে।। আর তুই কিনা এখনো বুঝিস না।।
নিসাঃ বাদদে তো।।
ফারিয়াঃ তুই আমার কথা মিলিয়ে নিস।। আমার কথাই সত্যি হবে।।
কলেজে এখন সব মেয়েই নিসাকে দেখে হিংসা করে।। নিসাকে অর্ণবের সাথে দেখলে সবার হিংসা হয়।। সবাই বলাবলি করে—- ” এই মেয়ের মদ্ধে এমন কি আছে যে আমাদের পাত্তা না দিয়ে এই মেয়ের সাথে অর্ণব এইভাবে মিশে চলাফেরা করে।।”
এদিকে অর্ণব ফারহানের কাছে গিয়ে ফারহানকে বলছে
অর্ণবঃ দোস্ত আমি আর এইভাবে নিসার থেকে দূরে থাকতে পারছিনা।। আমি যে এতো কিছু করি ওর জন্য ও কি তাও বুঝেনা!! ওকে আমি কবে বলতে পারবো যে আমি ওকে ভালোবাসি।।
ফারহানঃ দোস্ত আমি বলি কি যে আজকেই তুই নিসাকে বলে দে যে তুই ওকে ভালোবাসিস।। এটাই সবচেয়ে ভালো সুযোগ।।
অর্ণবঃ নিসা রাজি হবে তো!! ও আমাকে ভুল বুঝবেনা তো আবার!!
ফারহানঃ তুই বলেই তো দেখ।। না বললে বুঝবি কি করে।। আর আমি সব ব্যবস্থা করেছি।। তুই চিন্তা করিস না।।কেমন!!
অর্ণবঃ ঠিক আছে।।
কিছুক্ষণ পরে ফারহান ফারিয়ার কাছে এসে বললো
ফারহানঃ ফারিয়া এইদিকে আসো তো!!
ফারিয়াঃ জ্বী ভাইয়া বলেন।।
ফারহানঃ নিসাকে গিয়ে বলো অর্ণব ওকে ডাকছে।। যেখানে ওকে সরি বলার জন্য ডেকেছিলো সেখানে।।
ফারিয়াঃ ঠিক আছে।।
ফারিয়া নিসার কাছে গিয়ে বললো
ফারিয়াঃ নিসা অর্ণব ভাইয়া তোকে ডাকছে।।
নিসাঃ আমাকে ডাকছে!! কোথায়!!
ফারিয়াঃ যেখানে তোকে সরি বলার জন্য ডেকেছিলো ওইখানে।।
নিসাঃ ওই জায়গায় কেনো ডাকলো!! এখানে কি কথা বলতে পারতো না!! আর কি এমন কথা বলবে যে ওইখানে যেতে বললো!!
ফারিয়াঃ আমি কিভাবে বলবো!! ডেকেছে হয়তো কোনো কাজে।। গিয়েই দেখ কি বলে।। গেলেই তো বুঝতে পারবি।।
নিসাঃ আচ্ছা তাহলে আমি যাচ্ছি।।
সেই জায়গায় গিয়ে দেখি অর্ণব দাড়িয়ে আছে উল্টাদিকে মুখ করে।। আমি গিয়ে পিছন থেকে ডাক দিলে সে আমার সামনে ফিরে।। ওকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে ও কিছু একটা নিয়ে খুবই টেনশনে আছে।। আমি বললাম
নিসাঃ আমাকে ডেকেছিলে??
অর্ণবঃ হুম।।
নিসাঃ এখানে কেনো ডেকেছো!! কোনো কাজ আছে!! আর তোমাকে এতো চিন্তিত লাগছে কেনো!! কিছু হয়েছে!!
অর্ণবঃ দেখো তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।।
নিসাঃ হ্যা বলো।।
অর্ণবঃ কিভাবে বলবো বুঝতে পারছিনা।।
নিসাঃ কি এমন কথা!! তুমি আগে শান্ত হও তারপর বলো।।
অর্ণব একটা জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলা শুরু করলো
অর্ণবঃ দেখো নিসা তোমাকে আমি ভালোবাসি।। তোমাকে যেদিন আমি কলেজে প্রথম দেখি সেদিনই আমি তোমাকে পছন্দ করে ফেলি আর আস্তে আস্তে সেটা ভালোবাসায় পরিণত হয়।। আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।। আমি তোমাকে এতোটাই বেশি ভালোবাসি যেটা আমি কখনো কাউকে বলে বুঝাতে পারবো না।। তুমিই আমার প্রথম ভালোবাসা।। আমি এর আগে কাউকে কখনো ভালবাসিনি।। তোমাকে প্রথমবার দেখে যেমনটা ফিল হয়েছিলো বিশ্বাস করো এর আগে কখনো কাউকে দেখে এমনটা ফিল হয়নি।। আজ পর্যন্ত আমি কোনো মেয়ের দিকে ভালো করে তাকাইনি।। তুমি আমাকে ভুল বুঝোনা।। আমি জানিনা তুমি আমার সম্পর্কে কি ভাবো।। আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বলতে চাইনি।। আমার কথায় যদি তুমি কষ্ট পেয়ে থাকো তাহলে I’m sorry.
নিসাঃ তুমি আমাকে ভালোবাসো!! তুমি আমার সম্পর্কে এসব ভাবো আমি কখনো কল্পনাও করতে পারিনি।। আমি তো জানতাম তুমি আমার ভালো ফ্রেন্ড।। আর আমি তোমাকে একজন ফ্রেন্ড ছাড়া কখনোই অন্য কিছু ভাবিনি।। আমি তোমার সাথে আর কখনো কোনো কথা বলতে চাইনা।। আর তোমার সামনেও আসতে চাইনা।।
কথাটা বলেই নিসা চলে যাচ্ছে আর অর্ণব হা করে তাকিয়ে আছে।। কিছুক্ষণ পরে অর্ণব নিসাকে ডাকতে থাকে কিন্তু নিসা আর পিছনে না তাকিয়ে কোনো উত্তর না দিয়ে চলে গেলো।।
অর্ণব অনেক্ষন ধরে সেখানেই দাড়িয়ে আছে।। আর ভাবছে কি থেকে কি হয়ে গেলো।। নিসা ওকে ভুল বুঝে চলে গেলো।। ওর ভালোবাসাটা বুঝলো না।।
এদিকে নিসা ফারিয়ার কাছে গিয়ে ফারিয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো।। ফারিয়ে নিসাকে জিজ্ঞাসা করলো
ফারিয়াঃ কি হয়েছে!! কান্না করছিস কেনো!! অার অর্ণব ভাইয়া ডেকে তোকে কি বললো!!
নিসাঃ অর্ণব আমাকে বলেছে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে।।
ফারিয়াঃ সত্যি!! ভাইয়া তোকে ভালোবাসে।। এটাতো ভালো কথা।। তো তুই কান্না করছিস কেনো!!
নিসাঃ তুই এটাকে ভালো কথা বলছিস!! আমি ওকে এতো ভালো ফ্রেন্ড ভাবতাম আর ও কিনা আমাকে অন্য নজরে দেখে।।
ফারিয়াঃ দেখেছিস আমার কথাই সত্যি হলো।।আমি তোকে বলেছিলাম না ভাইয়া তোকে পছন্দ করে আর আমার কথা মিলিয়ে নিস।। এখন মিলাতে পারছিস তো আমার কথা।।
নিসাঃ তুই চুপ থাকবি??
নিসা কান্নাকাটি করে ওয়াশরুমে গেলো ফ্রেশ হতে।। নিসা ফ্রেশ হচ্ছিলো এমন সময় মনে হলো কেউ ওর পিছিনে আছে আর ওকে দেখছে।। নিসা পিছনে তাকিয়ে দেখে অর্ণব দাড়িয়ে আছে।। নিসা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো
নিসাঃ তুমি এখানে!! তুমি এখানে কি করছো!!
নিসা রেগে গিয়ে চলে যেতে নিলে অর্ণব ওর হাত চেপে ধরে।। নিসা পিছনের দিকে তাকিয়ে বললো
নিসাঃ আমার হাত ধরেছো কেনো!!
অর্ণব কথার উত্তর না দিয়ে একটানে নিসাকে ওর কাছে নিয়ে এলো। নিসা ওর থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা।। অর্ণব নিসাকে এতো কাছে নিয়ে এসেছে যে অর্ণবের নিঃশ্বাস নিসার মুখে পরছে।। অর্ণব দুই হাত দিয়ে নিসার গাল ধরে নিসার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো…….. নিসা হালকা কেপে উঠলো।। তারপর অর্ণব বললো
অর্ণবঃ দেখো নিসা আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালোবাসি।।
নিসা অর্ণবের থেকে একটু ছাড়া পাওয়া মাত্রই অর্ণবকে এক ধাক্কা মেরে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েই দৌড় দিলো।। আর অর্ণব একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো পালিয়ে যাবে কোথায়……… আমার কাছেই ফিরে আসতে হবে।।
·
·
·
চলবে……………………..