অবুঝ বেলার তুমি পর্ব শেষ

#অবুঝ বেলার তুমি
নিলান্তিকা ইসলাম
পর্ব ১০
গায়ে হলুদ আর স্নানের পর্ব শেষে গুঞ্জনকে সাজানো হয় বধূ বেশে।ঠিক যেনো লাল রঙা এক টুকটুকে পরী বসে আছে।হাতে সিদূর কৌটো লাল রঙা বেনারশী পরণে সাজ। তুলতুলে মুখটা শুকিয়ে যেনো এতখানি হয়ে গেছে।অনেকেই প্রশ্ন করে যাচ্ছে গুঞ্জন এমন শুকিয়ে গেছে কেনো মুখটা ও কেমন মরা মরা দেখাচ্ছে।তখন চারুলতা গুঞ্জনকে একপ্রকার শাষাচ্ছে হাসিখুশি মুখ করে রাখ গুঞ্জন দেখছিস তো লোকে কি বলছে।গুঞ্জনেরর খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে।

“মানুষের জন্য মুখে হাসি রাখাটা বুঝি খুব জরুরি হয়ে গেছে মা?তবে কি নিজের মেয়ের হাসিটা তোমার জরুরি মনে হচ্ছে না।একবারো মনে হচ্ছে না আমার মেয়েটা সত্যিই ভালো থাকবে তো।এক বারো জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে না গুঞ্জন তুই এই বিয়েতে রাজি তো?”
আবার ও বাধভাঙা কান্না আসতে চাইছে, কিন্তু না সবাই খারাপ ভাববে তো, কান্নাটাও করা বারণ।

বরপক্ষ আসার পরেই বরণ করে নেয়া হলো।গুঞ্জনের কানে খবরটা পৌছানোর পর পর ই কেমন যেনো অস্থিরতা ফিল করছে সে।একদিকে বাবুন দার ভাইয়ের বউ হয়ে থাকবে বলে অন্যদিকে বাবুন দা কে একবার দেখবে বলে।বাবুন দার বউ আর বাচ্ছাকে দেখবে বলে।আচ্ছা! বাবুন দা তার বউকে কেমন ভালোবাসে!নিশ্চয়ই খুব বেশি।গুঞ্জনের ও তো কত্ত খেয়াল নিতো তার মানে নিজের বউয়ের তো আরো বেশিই রাখবে তাই না!

গুঞ্জনের চোখ বারবার আশে পাশে তাকাচ্ছে।কাউকে হন্য হয়ে খুজছে ও দুটি চোখের নজর কিন্তু চুপিসারে।মন্ডপে আনার পরই একে একে মালা বদল শুভ দৃষ্টি সব হলো।কিন্তু দুজনের চোখ সেই শুভ দৃষ্টিতে একবার ও মিললো না।যখন মালা বদল হচ্ছিলো কারো কারো মুখে বাবুন ডাকটা শুনতে পেয়েছে গুঞ্জন কিন্তু চোখ তুলে একবার ও তাকিয়ে দেখতে পারলো না।যতবার ই ঐ নামটা গুঞ্জনের কানে এসে বেজেছে ততবারই গুঞ্জনের মনে কড়া নেড়েছে।যেনো কেউ হাতুড়ি পেটা করে জানান দিচ্ছে।বাবুন দার উপস্থিতিটা।

এক পর্যায়ে সিদুর দানের পর সাত পাকে ঘোরা ও হয়ে গেছে।গুঞ্জন জানে না প্রতিটা পাকে বলা এক একটা অঙ্গিকার সে কি করে নিভাবে।কিন্তু তাকে যে পারতেই হবে।যেখানে বেঁধা বেঁধের দেয়াল টাকে টপকানো যায় না সেখানে সামজ্জস্যতাই কাম্য।সে জীবনের সাথে সামজ্জস্যতা করে নিয়েছে
শুধু মনের টাই বাকি রইলো।হয়তো বা আস্তে আস্তে সব ঠিক ও হয়ে যাবে।

গুঞ্জনের বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এলো।গুঞ্জনের বাবা মা খুব করে কাঁদছে।কিন্তু কেনো জানিনা গুঞ্জনের একটু কান্না এখন আর পাচ্ছে না।যেনো মুহুর্তেই নিজেকে শক্ত করে নিয়েছে সে।না আর ভাঙা যাবে না যা ছিলো কপালে তাই হবে।
অভিক রায় ঠিক বুঝে নিয়েছেন গুঞ্জনের অভিমান টা কিন্তু মনে মনে এ ও বলছেন,
“তুই দেখিস গুঞ্জন তোর জন্য তোর বাবা বেস্ট একটা জীবন সঙ্গি খুজে দিয়েছে।পরে ঠিক বুঝতে পারবি সব।”

ও বাড়িতে যাওয়ার পর গুঞ্জন চোখ মেলে চারিদিক খুজতে লাগল শুধু একবার বাবুন দা কে দেখার প্রতিক্ষায়।আসতেই অঙ্কুরের মা তাকে বরন করে নিলো।গুঞ্জন তাকে দেখেই চিনতে পারলো “আন্টি!”
খুব করে জড়িয়ে ধরে বলতে ইচ্ছে করছে,
___আন্টি তুমি আমাকে চিনতে পেরেছো আমিই তোমাদের গুঞ্জন মানে তুলতুল।কান্নায় চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসতে চাইলে ও গুঞ্জন আটকে নিলো।

অঙ্কুরের মা গুঞ্জনের থুতনিতে হাত দিয়ে চুমু খেয়ে বললেন,
____কত্ত অপেক্ষা করালি বলতো।সেই ছোটবেলায় দেখেছি।তারপর যখন বিয়ের কথা চলছিলো সেদিন ছবিতে দেখলাম শুধু।নিজের চোখে দেখবো দেখবো করে ও দেখা হলো না।খালি পালিয়েছিস।বড্ড দুষ্ট হয়েছিস।এবার কোথায় পালাবি! চোখের সামনেই তো থাকবি।
____গুঞ্জন ঢোক গিলে নিয়ে মনে মনে বললো,
তোমরা তাহলে আগে থেকেই সব জানতে শুধু আমি ছাড়া!কিন্তু যার নজরে থাকতে চেয়েছি এখন তার নজর এড়িয়ে কি করে থাকবো আমি!

অঙ্কুর তখন গুঞ্জনের জন্য প্ল্যানিং করা নিয়ে ব্যাস্ত।সবাই গুঞ্জনকে ঘিরে বসে আছে।কিন্তু অঙ্কুর ই মিসিং।বারবার বাবুন বাবুন বলে ডাকা হচ্ছে,
____বাবুন! বাবুন!কোথায় তুই নিচে নেমে আয় এভাবে বউকে রেখে কেউ উপরে বসে থাকে।
___গুঞ্জনের কেনো জানিনা খুব রাগ হচ্ছে।বউতো আর নতুন না যে বউয়ের পাশে থাকা লাগবেই।কি এক আদিক্ষ্যেতা।বাচ্ছা ও তো হয়ে গেছে।

চারিদিকে নজর বোলাতেই গুঞ্জন দুটো টুইন বেবি দেখতে পেলো তা ও বিহানের সাথে কেমন হাসছে।বিহান ও ওদের সাথে মজা করে যাচ্ছে।বেবি দুটোকে দেখলেই কেমন গুলুগুলু করে দিতে ইচ্ছে করে।কিউট অনেক।কিন্তু তবুও কোথাও গুঞ্জনের মন হাহাকার করে উঠছে,
ইশ!আজ যদি বাবুন দার সাথে ওর বিয়ে হতো তাহলে নিশ্চয়ই এরকম দুটো বেবি ওর ও হতো।আর আরো কিউট হতো।
উফফ!কি সব ভেবে যাচ্ছে গুজন কখন থেকে।না না এ বাড়িতে আসার পর থেকে কেমন হিংসে কাজ করছে মনে।কই গুঞ্জন তো আগে এমন ছিলো না।বাকি দিন গুলোতে কিভাবে কন্ট্রোল করে রাখবে সে নিজেকে!সবে তো শুরু!

সব কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর গুঞ্জন কে সাজানো গোছানো ফুল দিয়ে মোড়ানো একটা রুমে নিয়ে গেলো সবাই।তারপর আবার দুটো মেয়ে এসে আগের সব চেঞ্জ করে নতুন ভাবে সাজিয়ে দিলো ওকে।সবাই রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই বিহান এলো।বিহান এসে বললো,
____তুমি তো সত্যিই আমার তুলতুল দি।আজ জানতে পারলাম।তাহলে আমার ভাবনাটা ভুল ছিলো না।ইশ! কেমন দৌড়িয়েছিলো সেদিন।গুঞ্জনের মুখে না চাইতে ও হাসি ফুটে উঠে।

আমি ও সেদিন ই বুঝতে পারলাম বিহান!কিন্তু!
___কিন্তু কি গুঞ্জন দি।আমিতো তোমাকে কত্ত খুজেছি জানো?অনেক মিস করেছিলাম তাই তো সেদিন তোমার পিছু নিয়েছিলাম।আমিতো তোমাকে গুন্ডি ভেবে নিয়েছিলাম।সাথে নারী তিন চক্ষু ওয়ালি মা কালি!বলেই বিহান হাসতে লাগলো।তোমার ওই পুচকে ভাইটা কোথায় আজ তো আসেনি বলে বেচে গেলো পরে ঠিক খবর নেবো বলে দিলাম।খুব জ্বালিয়েছে আমায়।

এই মুহুর্তে গুঞ্জনের কানে কিছুই ডুকছে না।শুধু বাবুন দা ছাড়া।
____আর তোমার দা ভাই! সে বুঝি খুজেনি?
___সেটা তো জানি না।তোমরা যাওয়ার পর ও ঢাকাতেই শিফট হয়ে যায়।তারপর বৌদির সাথে প্রেম আর এরপর তো জানোই।
এরমধ্যেই বাচ্ছা দুটোর সাথে একটা মেয়ে ও ঢুকলো রুমে।গুঞ্জনকে কনগ্রেটস জানিয়ে একটা ফুলের তোড়া দিলো।আর সাথে বললো,
____হ্যাপি ন্যাপচুয়াল নাইট।সাথে সাথে মেয়ে দুটো ও বললো, হ্যাপি ন্যাপচুয়াল নাইট আন্টি।

ইশ! কি ভাগ্য গুঞ্জনের যার সাথে ওর নিজের বাসরের কল্পনা করতো রাত দিন আজ তার বাচ্ছার মুখেই শুনতে হচ্ছে এসব।তার বউ বাচ্ছা সবার দেখাইতো মিললো কিন্তু তাকেই তো এখনো দেখল না।গুঞ্জন জোর পূর্বক মুখে হাসি টেনে রেখেছে।যেমন টা মোনালিসার ফটো টাতে কেউ ফেইক হাসি একে দিতো আজ নিজেকে ঠিক তেমন টাই মনে হচ্ছে।

এরপর একে একে সবাই বেরিয়ে গেলো।গুঞ্জনের কেমন গলাটা শুকিয়ে আসছে।এখন তো অঙ্কুর স্যার আসবে।সে সত্যিটা বলে দেবে।খুব নার্ভাস ফিল করছে।সত্যিটা জানার পর অঙ্কুর স্যার কি ভাববে!আর যদি শুনে তার নিজের বিয়ে করা বউয়ের প্রেমিক তার ই নিজের ভাই তাহলে ব্যাপারটা ঠিক কেমন চোখে দেখবে। প্রচুর ঘামাতে লাগলো গুঞ্জন।পানির গ্লাস টা নিতেই সেখানে একটা চিরকুট দেখতে পেলো।পানিটা খেয়েই চিরকুট টা হাতে নিলো গুঞ্জন।এখানে ঠিক কি লিখা থাকতে পারে আর কেই বা রেখে গেল এটা।নিশ্চয়ই জেনে বুঝেই কেউ করেছে।

গুঞ্জন খুলতেই দেখতে পেলো অঙ্কুর স্যারের হ্যান্ড রাইটিং।আর সেখানে লিখা
____একটু ছাদে আসবে প্লিজ।কিছু কথা ছিলো।গুঞ্জন বসে পড়লো।কি কথা থাকতে পারে অঙ্কুর স্যারের!আবার ভাবছে যাক তাহলে সে ও একটা সুযোগ পাবে অঙ্কুর স্যার কে বাবুন দার ব্যাপার টা বলার।

গুটি গুটো পায়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো।সবাই সুয়ে পড়েছে কেমন চুপচাপ চারিপাশ।পুরো ঘরজুড়েই এখনো আলোকিত পারিপাশ।একটু উপরে উঠতেই আরেকটা চিরকুট পেলো গুঞ্জন,
___কনগ্রেচুলেশান ফর কামিং মাই লাইফ।আমার জীবন টাকে পরিপূর্ণ করে দিলে আজ যেটার অপেক্ষায় রোজ পুড়েছিলাম।

গুঞ্জনের হাত পা কাঁপতে লাগলো।অঙ্কুর স্যার তো অন্যকিছুর প্ল্যান করলো।এখন গুঞ্জন কি করে বলবে এসব!
আরেকটু যেতেই কামিনী ফুলে ভর্তি একটা বুকে ফেলো।সেটাতে ও চিঠি,
____বলেছিলাম অল্পতেই ঝরে যেও না।কথা রেখেছিলে ঝরতে দাওনি নিজেকে শক্ত করে রেখেছিলে বলেই তো আজ আবার অঙ্কুরের বুকে ফিরে এলে,সদ্য ফোঁটা কলি হয়ে।

গুঞ্জন এবার শকড খেলো। সব যেনো কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।বাবুন দা!এটা বাবুন দা নয়তো!তা নাহলে কি করে জানবে অঙ্কুর স্যার এসব।কিন্তু সেটা জানতে তো তাকে এগোতে হবে।থরথর করছে গা এভাবে হলে কিভাবে এগোবে সে।

তারপরের সিড়িতে তুলে ফেলা একটা হাসনাহেনা গাছ।আর সাথে অনেকগুকো হাসনাহেনা ফুল।
____বলে ছিলাম কোন ও বিপদ তোমাকে ছুতে পারবে না তুলতুল।প্রয়োজনে সব উপড়ে ফেলে দেবো।আর দিয়ে ও ছিলাম।এভাবেই সারা জীবন তোমার পথে কাটা হয়ে দাড়ানো এক একটা কাটা আর বিপদকে আমি উপড়ে ফেলে দেবো।আর কোন ও ভয় নেই তুলতুল আমি এসে গেছি তো!

গুঞ্জন ধপ করে সিড়িতে বসে পড়লো।কি হচ্ছে তার সাথে তার কি এতোরাতে উপরে যাওয়া ঠিক হচ্ছে।কে হবে সে বানুব দাই তো।অঙ্কুর স্যার তো এসব কিছুই জানে না।
হঠাৎ করেই ছাদের সব লাইটিং অফ হয়ে গেলো।গুঞ্জনের এবার ভয় হতে লাগলো।আর কারো আসার আভাস পেলো।কিছু বলতে যাওয়ার আগেই কেউ একজন তাকে কোলে উঠিয়ে নিয়ে উপরে হাটা ধরলো।গুঞ্জন চেয়ে ও আওয়াজ করতে পারছে না।মুখ দিয়ে যেনো কথাই বেরোচ্ছে না।কিন্তু সে চাইছে চিৎকার করতে।অথচ পারছেই না।

গুজনকে নামিয়ে দিয়ে আলতো করে জড়িয়ে ধরলো ওই লোকটা যাকে নিয়ে এখনো কনফিউজড গুঞ্জন সেকি বাবুন দা! নাকি অঙ্কুর স্যার!কিন্তু কেমন যেনো মাদকতায় নিজেকে হারিয়ে ফেলছে সে।হঠাৎ করে ভয় গুলো সব উবে যেতে লাগলো।অদ্ভুদ এক প্রশান্তিতে মন টা ছেয়ে যেতে লাগলো।আস্তে আস্তে সে ও ওই বুকের আরো গভীরে ঢুকে যেতে লাগলো।আলতো করে কপালে কারো উষ্ণ ঠোঁটের পরশ ও পেলো।কেমন যেনো একটা শীতল বাতাস এসে তার শরীর টাকে হিমেল করে দিলো।গা টা শিউরে উঠলো।

তারপর হাটু গেড়ে বসেই একটা আংটি নিয়ে প্রপোজ করলো,
____আমার অবুঝবেলার সেই তুমি টা,আজ কত্ত বড় হয়ে গেলে।জানো কত অপেক্ষা করেছি এক একটা দিন। প্রতিটা বছর প্রতীক্ষায় থেকেছি সেই বছর টায় যে বছরে তুমি কলেজে পা রাখবে।আর অপেক্ষা করলাম কবে তুমি আমার কলেজে এসে ভর্তি হবে।কি হাস্যকর তাই না।পুরো দেশে কত শত কলেজ অথচ আমি কিনা ভেবে বসে আছি তুমি এখানেই আসবে।আর ঠিক তাই এলে ও তুমি।কিন্তু চিনতে চিনতে ই এতোটা সময় চলে গেলো অথচ চিনলামই না।
বিধাতা বোধ হয় আমাদের সাথেই ছিলেন।মানুষ বলে না মন থেকে কিছু চাইলে বিধাতা তা ফিরিয়ে দেয়না।আর যদি সেটা অবুঝভাবে চায় তো কথাই নেই।আর আমি না বুঝেও সেদিন অবুঝের মতোই চেয়েছিলাম তোমায়।তাই হয়তো বিধাতা ফিরিয়ে দেন নি আমায়।

জানো তো যেদিন প্রথম তোমায় কলেজে দেখেছিলাম আমি এক মুহুর্তের জন্য হলেও ভেবে নিয়েছিলাম যে তুমিই আমার তুলতুল।তখন তো গুঞ্জন নামে চিনি।এরপর এক এক করে সব বলতে লাগলো অঙ্কুর কিভাবে তার বাড়িতে গিয়েছিলো সব।
গুঞ্জন ও কাঁদতে কাঁদতে বসে পড়ে।সে ও জানায় কিভাবে সে এতটা বছর আগলে রেখেছিলো তার অবুঝমনের চাওয়া গুলো।সে বলে,
____আমি ও বাবুন দা!আমি ও সেদিন আপনাকে দেখে বাবুন দাই ভেবে নিয়েছিলাম।সেই হাসি সেই চোখ রাগলে যেগুল সব চাইতে ভয়ংকর দেখাতো,আর সেই লাল চুল আর কাটা দাগ টা ও কিভাবে মিলে যেতে পারে সব!
কিন্তু তুমি তো ফুল খুব ভালোবাসতে বাবুন দা! পরে যখন জানলাম তুমি ফুল ই ভালোবাসানা।আমি আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম।কারণ আমি তো জানি আমার বাবুন দা ফুল কতটা ভালোবাসে।
____আই অ্যাম স্যরি বাবুন দা!রাগ করে তোমার সব ফুল গাছ ছিড়তাম বলে।তুমি জানো তোমার জন্য ফুলের বাগান করেছি আমি।অনেক গুলো হাসনাহেনা ফুল গাছ ও লাগিয়েছি যেগুলো তোমার সবচাইতে পছন্দের অথচ আমার সাপে ভয় বলে তুমি উপড়ে ফেলে দিলে!

আজ সব গাছ তোমার বাবুন দা।তুমি পাশে থাকলে আমার আর কিচ্ছুতে ভয় নেই।কিচ্ছুতে না
তোমার তুলতুল অনেক স্ট্রং একদমই কামিনী ফুলের মত অল্পতে ঝরে পড়ে না।

অঙ্কুর দাড়িয়ে আবারো ভালোবাসার চাদরে জড়িয়ে নিলো তুলতলকে।তারপর বিহান এসে অনেকগুলো জোনাকি পোকা ছেড়েদিলো চারিপাশ টা জোনাকির মিটি মিটি আলোতে এতটাই রোমাঞ্চকর দেখাচ্ছিলো যে গুঞ্জন এবার খুশিতে কাঁদতে লাগলো।সত্যিই এমন একটা সারপ্রাইজ যে তার জন্য অপেক্ষা করছিলো সে ভাবতেই পারেনি।
বিহান পেছন থেকে গোলাপের পাপড়ি ছেটাতে ছেটাতে এগিয়ে এলো আর তারপরেই লাইটিং এ আবার চারিপাশ আলোকিত হয়ে উঠলো।গুঞ্জনের বুঝতে আর বাকি রইলো না এই সব ওদেরই করা প্ল্যান ছিলো।গুঞ্জন শাড়িটা একটু দুহাতে একটু উপরে তুলে বিহান কে দৌড়াতে লাগলো।
_____শয়তান ছেলে কি বলেছিলি আমাকে! বাবুন দার বিয়ে হয়ে গেছে।আবার দুটো বাচ্ছা ও আছে।ওই কার মেয়ে আর বউকে দেখিয়ে আমাকে হিংসে লাগিয়েছিলি বল।বিহান দৌড়াতে গিয়ে হাপিয়ে উঠে তারপর কান ধরে বসে পড়ে।তারপর বলে
__সব সুদে আসলে মিটে গেছে।বরং আমার ভাগেই কষ্ট টা বেশি পড়েছে।কয়বার করে রাম দৌড় দৌড়াতে হয়েছে আর তারপর সেইদিন যে কিকটা দিলে না।জীবনে ও ভুলার মত না।আমিতো আমার ফিউচার নিয়ে চিন্তিত আছি এখনো। ভবিষ্যৎ বাতি যদি ফিউজ হয়ে যায় তবে কে বিয়ে করবে আমায়!

গুঞ্জন হো হো করে হেসে উঠে সাথে অঙ্কুর আর বিহান ও।এভাবেই চলতে লাগলো তাদের জীবন।সত্যিই অবুঝ ভাবে চেয়েছিলো দুজন দুজনকে আর তাইতো বিধাতাও তাদের সঙ্গেই ছিলো।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here