অবুঝ_পাখি পর্ব ১৯+২০

#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:১৯
রিফাত: পরি তোমার কি হইছে আমাকে বলবা। তুমি আজকেই আমার সাথে ডাক্তারের কাছে যাবা।
পরি: আমি পুরো সুস্থ আছি শুধু একটু মাথা ব্যাথা।
রিফাত: আমি কিছুই শুনতে চাই না বিকালে তুমি আমার সাথে ডাক্তারের কাছে যাবা এটাই ফাইনাল বলে রিফাত অফিসে চলে গেল।
পরি: এখন আমি কি করবো দাভাই আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো তো দাভাই জেনে যাবে যে আমার পেটে বাচ্চা আছে আর তাও ৩ মাসের দাভাই এটা জানার পর আর আমার সাথে থাকবে না। নাহ এটা হতে পারে না আমি দাভাইকে ছাড়া কিছুতেই থাকতে পারবো না। সব সমস্যার একটাই সমাধান একটাই সমাধান আমি এই বাচ্চাকে মেরে ফেলবো। এই বাচ্চা যদি না থাকে তাহলে আর দাভাই আমাকে ছেড়েও যাবে না। কিন্তু আজকে দাভাইয়ের সাথে ডাক্তারের কাছে যাওয়া থাকে বাঁচবো কিভাবে। আহহ আইডিয়া আব্বুর রুমে গিয়ে আব্বুর সাথে আড্ডা দিবো। দাভাই আব্বুর উপর কথা বলতে পারে না। তাই এখন আমার ম্যান টাগেট আব্বুকে আমার পক্ষে করা।
বিকালে রিফাত বাসায় আসে
রিফাত: পরি পরি কোথায় তুমি?
পরি: এই যে আমি আব্বুর সাথে আছি।
রিফাত: তুমি এখানে কি করো তোমাকে না বলছি রেডি হয়ে থাকতে আমি আসলেই বের হবো।
পরি: আমি যাবো না।
রিফাত: পরি কোনো কোথা না রেডি হও।
পরি: আব্বু আমি যাবো না। তোমার ছেলেরে বোঝাও না।
আব্বু: রিফাত মেয়েটারে জ্বালাইতাছোস কেন?
রিফাত: আব্বু কয়েকদিন ধরেই ওর শরীরটা ভালো না ঠিক মতো খায় না শরীর দূবল করে ফেলছে। ডাক্তার দেখানোটা জরুরী।
আব্বু: পরি মা ডাক্তার দেখানোটা দরকার রিফাত তো ঠিকই বলছে।
পরি: আমি পুরো সুস্থ যাবো না।
আব্বু: রিফাত পরি যখন যেতে চাইতাছেনা তাহলে থাক জোর করিছ না।
রিফাত: ঠিক আছে আব্বু। পাখি তুমি শুধু আজকে রুমে আসো তারপর তোমার ব্যবস্থা করতেছি রিফাত কথাগুলো মনে মনে বলে তার রুমে চলে গেলো।
পরি বাকিটা দিন সবার সাথে আড্ডা দিয়ে কাটায়। রাতে সবাই ডিনার করে যে যার রুমে চলে যায়। পরি রিফাতের রুমের সামনে ঘুরঘুর করতেছৈ। ভিতরে যাইতে পরির ভয় করতেছে। পরি খুব ভালো করেই জানে রিফাত বিকালের বদলা এখন নিবে। পরি এসব ভাবনায় বিভোর এরকম সময় হটাৎ দরজা খুলে রিফাত পরিকে টান দিয়ে রুমের ভিতরে নিয়ে আসে।
রিফাত: রুমের বাহিরে ঘুরতেছিলা কেনো?
পরি: কই ঘুরতেছিলাম আমি এখনি রুমে আসতাম আর তুমি তার আগেই হাত ধরে টান দিলে।
রিফাত: ওহ তাই
পরি: জ্বীহ এখন ঘুমাবো চাপো।
রিফাত: হুম চলো ঘুমাই।
পরি: কি হলো বিকালের জন্য কিছু বললো নাতো মনে হয় ভুলে গেছে উফফ বাঁচছি।
রিফাত: কি হলো কি ভাবতেছো আসো ঘুমাবা না।
পরি: হুম বলে পরি বিছানায় শুয়ে পড়লো।
রিফাত পরিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে পরিকে তার দিকে ঘুরিয়ে পরির ঠৌঁটের মাঝে তার ঠৌঁট ডুবিয়ে দেয়। ঠৌঁট পরির গলায় নামিয়ে নিয়ে আসে। পরি উঠে নিজের জামা খুলে টেনে রিফাতের শাট খুলে রিফাতের বুকে একের পর এক কিস করতে থাকে। রিফাত পরিকে আদর করতে করতে হটাৎ পরিকে ধাক্কা দিয়ে শুয়ে দিলো।
পরি: কি হলো ধাক্কা দিলা কেনো?
রিফাত: এটা তোমার বিকালের শাস্তি বলেই পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।
পরি: এটা চিটিং আমার এখন পুরো আদর চাই তুমি এরকম করতে পারো না বলে রিফাতকে টানতে লাগলো। রিফাতের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে পরি রিফাতকে বকতে বকতে জামা পড়ে নিলো।
রিফাত: বকা হলে এখন ঘুমাও
পরি: কুত্তা সয়তান আমার সাথে কথা বলবি না।
রিফাত: পরিকে টান দিয়ে তার বুকে নিয়ে আসলো এখন ঘুমাও আর একটা কথা না।
পরি আর কিছু না বলে রিফাতকে জোরে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেলো।
সকালে আগে পরির ঘুম ভাঙ্গে উঠে দেখে সে রিফাতের বুকে শুয়ে আছে। পরি রিফাতের চুলের মধ্যে হাত বুলাতে লাগলো। তোমার জন্য আমি সব ছাড়তে পারি। বাচ্চাও ছাড়তে পারি আমার শুধু তোমাকে চাই দাভাই শুধু তোমাকে বলে রিফাতের কপালে একটা কিস করে উঠে যায় পরি।
রিফাত উঠে নাস্তা করে অফিসে চলে যায়।
পরি: আম্মু আমি একটু বাহিরে যাবো।
আম্মু: এখন তুই কোথায় যাবি?
পরি: আম্মু একটু কাজ আছে যাবো আর আসবো।
আম্মু: বাহিরে একা যাবি রিফাত আসলে যাস।
পরি: বেশিক্ষন লাগবে না আমি যাবো আর আসবো রিফাত সারাদিন অফিসে বেস্ত থাকে।
আম্মু: আচ্ছা সাবধানে যাস।
পরি হাসতাপালের জন্য চলে গেলো।পরি কিছুক্ষনের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে গেলো।
ডাক্তার: আপনি আজকে? আপনার কি কোনো সমস্যা হচ্ছে এই সময় মেয়েদের অনেক সমস্যাই হয়ে থাকে। আর আপনার স্বামী কোথায়? কেমন স্বামি আপনার এই অবস্থায় আপনাকে একা আসতে দিছে।
পরি: আমার কোনো সমস্যা নেই আর আমার স্বামি আমার অনেক যত্ন নেয় তাকে নিয়ে কিছু বলবেন না।
ডাক্তার: সমস্যা হচ্ছে না তাহলে এখানে আসার কারনটা কী?
পরি: আমি বাচ্চা নষ্ট করতে চাই বলেই মাথা নিচু করে ফেললো।
ডাক্তার: কিন্তু কেনো? আপনার স্বামি আপনাকে বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দিচ্ছে। আপনি আমাকে বলুন আমি আপনার হয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবো।
পরি: আমার স্বামি এসবের কিছুই জানে না তাকে কেনো বার বার এসবের মাঝে টানেন। সে আমাকে খুব ভালোবাসে।
ডাক্তার: তাহলে বাচ্চা নষ্ট করবেন কেনো?
পরি: মাথা নিচু করে ফেললো।
ডাক্তার: ওয়েট ওয়েট আপনার পেটের বাচ্চাটা আপনার স্বামীর?
পরি: মাথা নিচু করে নীরবে চোখের পানি ফেলছে।
ডাক্তার: নষ্টামি করে এখন সেই বাচ্চা নষ্ট করতে আসছেন বলে পরীর দিকে ঘৃনার চোখে তাকালো।
পরি: দাভাইও কি আমাকে এভাবে ঘৃনা করবে এখন যেভাবে ডাক্তার ম্যাডাম করতেছে কিন্তু আমি তো কারোর সাথে কিছু করি নাই। আমি বাচ্চা নষ্ট করতে চাই আপনি তার ব্যবস্থা করুন
ডাক্তার: আপনি আগামিকাল আসেন হয়ে যাবে আর পেমেন্টের কথা রিসিপশনে জেনে জায়েন।
পরি: আচ্ছা বলে ডাক্তারের রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। পরির মাথায় হাজারটা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে এটা কার বাচ্চা হতে পারে। আমার পেটে অন্য কারোর বাচ্চা জানার পর দাভাই আর আমার মুখ দেখবে? একটা বাচ্চাকে হত্যা করা ঠিক হবে। কিন্তু এটা না করলে যে দাভাই আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। না না এ হতে পারে না দাভাইকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না। দাভাই কিছুতেই আমাকে ছেড়ে যাবে না। দাভাইয়ের জন্য আমি সব করতে পারি।

(আমি পুরাই কনফিইসনে আছি গল্পটা হ্যাপি এন্ডিং দিবো নাকি স্যাড এন্ডিং কমেন্টে জানাবেন)
#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:২০
পরি টেনশনে সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। একবার ভাবে রিফাতকে জানিয়ে দিবে সন্তানের কথা। আরেকবার ভাবে রিফাত যদি সন্তানের কথা শুনে তাকে ছেড়ে চলে যায়। সন্তান নষ্ট করার সিদ্ধান্ত কি ঠিক হবে এরকম নানান ভাবনায় পরি সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। অবশেষে পরি একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।
রিফাত প্রতিদিনের মতো নাস্তা করে অফিসে চলে যায়।
পরি: আম্মু আমি একটু ডাক্তারের কাছে যাবো ঐ দিন কিছু টেষ্ট দিছিলো সেগুলোর রিপোট আনতে।
আম্মু: একা যেতে পারবি নাহলে রিফাত আসলে ওর সাথে যায়ো।
পরি: না আম্মু আমি একা যেতে পারবো।
আম্মু: তোর কাছে টাকা আছে রিফাতকে তো কিছু জানাসও নাই যে ও টাকা দিবে। দাড়া আমি টাকা নিয়ে আসতেছি।
পরি: লাগবেনা আম্মু আমার কাছে আছে।
আম্মু: আছে থাকুক কখন কোনটা লাগে বলা যায়না বলে আম্মু টাকা এনে পরিকে দিলো। সাবধানে যাস দিন-কালের যে অবস্থা।
পরি: আম্মু তুমি চিন্তা করো না। আমি সাবধানেই যাবো আর আসতে একটু দেড়ি হতে পারে।
আম্মু: দেড়ি হলে রিফাতকে ফোন দিয়ে জানিয়ে দিস।
পরি: আচ্ছা বলে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে গেলো। পরির পা জেনো চলেতেই চাইতাছে না। এত বড় একটা কাজ করতে হবে পরি কখনো কল্পনাও করেনি।
কিছুক্ষনের মধ্যে পরি হাসপাতালে পৌঁছে যায়।
পরি: ম্যাডাম সব টাকা দিয়ে এসেছে বাচ্চাটা নষ্ট কখন করবেন।
ডাক্তার: আপনি একটু বসেন আমি আসতেছি।
পরি: আচ্ছা বলে বসে ছিল হটাৎ কেউ একজন এসে পরিকে বসা থেকে উঠিয়ে ঠাসসসসস ঠাসসসসস ঠাসসসসস করে ৩টা থাপ্পড় দিলো।
পরি: সামনে তাকিয়ে অবাক পরির মাথায় জেনো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। পরির এত কষ্ট এত কিছু সব বেকার গেলো। হ্যাঁ আর কেউ না রিফাত পরিকে থাপ্পড়গুলা মারে।
রিফাত: তুই এখানে কি করতাছোছ?
পরি: চুপ করে মাথা নিচু করে শুধু কান্না করেই চলছে।
রিফাত: কি হলো কথা বল খুব সাহস না তোর। তোর সাহস হয় কি করে তুই আমার বাচ্চাকে নষ্ট করতে চাস।
পরি: রিফাতের বাচ্চা শুনে অবাখ হয়ে রিফাতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাস করে আপনার বাচ্চা মানে?
রিফাত: তোর পেটে আমার বাচ্চা। তুই ভাবলি কি করে তোর পেটে আমার ছাড়া অন্য কারোর বাচ্চা হবে।
পরি: কিন্তু ডাক্তার যে বললো বাচ্চার বয়স ৩ মাস। কিন্তু আপনার সাথে আমার বাচ্চা হওয়ার সম্পক আড়াই মাসের তাহলে কিভাবে কি?
রিফাত: তোর মনে পড়ে একদিন তুই ছাদে ভিজতে গেছিলি পরে রাতে তোর জ্বর আসে। সেই দিন আমাদের মিলন হয়। তোর সেই রাতের কথা মন নাই তাই আমি আর কিছু বলি নাই কিন্তু তুই আজকে কি করে এটা করতে পারলি।
পরি: আ আ আমি জানতাম না তো যে ঐ দিন আমাদের মাঝে কিছু হ হয় আআপনিও তো আমাকে কিছু বলেন নাই। তাই আমি ভাবছি যে বাচ্চাটা হয়তো আপনার না তাই
রিফাত: তোরে যদি বলতাম সেইদিন তোর হুস না থাকা সত্ত্বেও আমি তোর সাথে শারিরীক সম্পক করছি। তখন তো তুই আমাকে ভুল বুঝতি তাই কিছু বলি নাই আর তুই কি করে পারলি একটা নিশ্পাপ শিশুকে হত্যা করতে তোর একবারও ভয় হলো না।
পরি: আমি তোমার জন্য নিজের জীবন দিতেও দুইবার ভাববো না।
রিফাত: এখানে আর কোনো সিনক্রেট করিস না।
পরি: মাথা নিচু করে ফেললো।
রিফাত পরিকে আর রুকুকে নিয়ে বাসায় চলে আসে। সবাইকে বলে ৩ মাসের প্রেগনেন্ট।
পরি: দাভাই তুমি জানলা কি করে যে আমি হসপিটালে গেছি।
রিফাত: তুই যে হসপিটালে গেছোছ ঐ হসপিটালে রুকু পড়ে। রুকু একটা ফাইলে তোর ছবি আর নাম দেখে পরে সেই ডাক্তারকে তোর সম্পকে জিজ্ঞাস করে সব জানতে পারে। আর ও জানা মাত্রই আমাকে বলে আমি প্রথমে বিশ্বাস করতে চাই নাই। তাই ও বললো হসপিটালে গিয়ে দেখতে তাই আমিও হসপিটালে চলে গেলাম। আর সরাসরি তো দেখতেই পেলাম। আমি যদি আরেকটু দেড়ি করে আসতাম তাহলে তো তুই বাচ্চাটাকে নষ্ট করে দিতি। কি করে পারলি এরকম একটা জগন্য কাজ করতে।
পরি: আমার ভিতরে তোমায় হারানোর ভয় জেগে গেছিলো যদি তুমি এটা জানার পর আমাকে ছেড়ে চলে যাও আমি কি করে তোমাকে ছাড়া থাকবো বলে রিফাতকে জড়িয়ে কান্না করতে লাগলো।
রিফাত: সারাদিন অনেক ধকল গেছে এই অবস্থায় বেশি রাত জাগা ঠিক হবে না এখন ঘুমাও
পরি: হুম বলে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আর রিফাত ব্যালকোনিতে চলে গেলো।
পরি: দাভাই তুমিও শুয়ে পড়ো।
রিফাত: তুই ঘুমা আমার কাজ আছে।
পরি সারাদিনের ক্লান্তে আর কিছু না বলে ঘুমিয়ে পড়ে।
রিফাত: পরি ঘুমানোর পর চুপিচুপি পরির পাশে গিয়ে বসে। পরি তোমার পেটে আমার বাচ্চা একজন স্বামীর জন্য এযা বেষ্ট উপহার কিন্তু তুমি যা করতে গেছিলা তার শাস্তি তোমায় পেতে হবে।

চলবে……
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here