অস্তিত্বে_তুমি পর্ব ২২

#অস্তিত্বে_তুমি
#পর্ব_২২
#সুলতানা_পারভীন

হাসপাতাল থেকে ফেরার পর থেকে কেমন চুপ করে গেছে নীলা। জিহান ব্যাপারটা লক্ষ্য করে সারাদিন বহুবার বহুভাবে চেষ্টা করেছে নীলার মনে কি চলছে জানার। মেয়েটার কাছে কোনো সদুত্তর না পেয়ে শেষে নীলার নিজে থেকে বলারই অপেক্ষায় রইলো।জিহান। সারাটা দিন কেটে গেল এভাবেই। নীলার চুপচাপ রাজ্যের ভাবনায় ডুবে কাজ করছে, জিশান টুকটুক করে নীলার পাশে পাশেই ঘুরে বেড়াচ্ছে আর এদের দুজনের এমন হাজার খানেক পাগলামি দেখতে দেখতেই নিজের অফিসের কাজ করছে জিহান। জানে এই মূহুর্তে এই মেয়ের কাছ থেকে কোনো উত্তরই পাবে না। তাই সঠিক সময়ের অপেক্ষায় রইলো বেচারা। দেখতে দেখতেই রাত নেমেছে চারদিক নিস্তব্ধতার সাগরে ডুবিয়ে। জিশান বেশ কিছুক্ষণ আগেই খাইয়ে দেয়ার পর লক্ষী ছেলের মতো ঘুমিয়ে পড়েছে। জিশানকে রুমে শুইয়ে দিয়ে নিজেরাও খেয়ে নিয়েছে জিহান আর নীলা। খাওয়া শেষ করে প্লেটে হাত ধুয়েই নীলাকে হুট করে টেনে নিজের কোলে বসিয়ে নিল জিহান। নীলা সবে খাওয়া শেষ করে প্লেট গুছিয়ে নিয়ে রান্নাঘরে যাওয়ার জন্য চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছিল। এর মধ্যে ভদ্রলোকের হঠাৎ করে টেনে নেয়ায় নীলা একটু চমকেই উঠেছে। নীলাকে এমন চমকে উঠতে দেখে জিহান হেসে নীলার শাড়ির আঁচলে নিজের ভিজে হাতটা মোছায় মন দিল। জিহান কি করছে বুঝতে পেরে নীলা ধড়ফড় করে সরে আসার চেষ্টা করতেই জিহান দু হাতের শক্ত বাঁধনে নীলার কোমড় জড়িয়ে ধরে নীলার দিকে ভ্রু নাচালো।

-এই যে নীলপাখি? এতো ছটফট করছ কেন বলো তো? সারাদিন কোন ভাবনার দুনিয়ায় ডুবে থাকো। এর চেয়ে বিয়ের আগে হাজার গুণে ভালো ছিলে বুঝলে? চুটিয়ে প্রেম করেছি। বিয়ের পর বউটা কেমন কিপ্টে হয়ে গেছে। আগের মতো ভালোবাসতে চায়ও না, আমাকেও ভালোবাসতে দেয় না।

-আমার শাড়ি! আপনি আঁচলে হাত মুছছেন কেন? আপনার জন্য টাওয়াল নেই?! টেবিলে তো টিস্যুও রাখা আছে। ইশ! আমার শাড়িটার কি করেছে লোকটা?

-এই যে ম্যাডাম? বহু ছটফটান্তি হয়েছে বুঝলেন? শাড়ি একটা নষ্ট হলে আরো দশটা কিনে দিবো, নো প্রবলেম। তবু এভাবেই প্রতিদিন দু বেলা করে আপনার শাড়ির আঁচলে হাত মুছবো। বউয়ের আঁচল থাকতে টাওয়াল আর টিস্যুর দরকার কি?

-দশটা শাড়িও লাগবে না, আর শাড়িতেও হাত মোছা লাগবে না। আর ছাড়ুন তো? জিশান রুমে একা আছে। ঘুম ভেঙ্গে গেলে কান্না শুরু করবে।

-উঁহু। একবার ঘুমিয়ে গেলে জিশানের ঘুম ভোরের আগে ভাঙে না বুঝলেন ম্যাডাম? আমার পিচ্চু তো। আমি জানি। রাত তিনটে চারটের দিকে একবার ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য ডেকে তুললেও ঘুমের ঘোরেই থাকে। হা হা হা। সো জিশানকে নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে আপনাী কাহিনীটা কি বলুন তো?

-কাহিনী? কিসের কাহিনী?

-মনটা খারাপ কেন ম্যাডামের হুম? হসপিটালে মন খারাপ ছিল কায়রাকে দেখে, জানি আমি। কিন্তু বাসায় আসার পর থেকে এমন গুম হয়ে আছো কেন? কি ভাবছ এতো? না বললে আমি বুঝবো কি করে বলো তো বউপাখি?

নীলা মুখ তুলে কিছুক্ষণ জিহানের জিজ্ঞাসু মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে আবার জিহানের কাঁধে মাথা রাখলো। মেয়েটা আবার ভাবনার রাজ্যে ডুব দেয়ার আগেই জিহান আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিল ঘাড়ে। নীলা একটু সরে আসার চেষ্টা করতেই জিহান নীলাকে নিজের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে ধরলো যেন মেয়েটা পালাতে না পারে। জিহানের স্পর্শগুলো আরো গভীর হয়ে কাঁপিয়ে দিতে শুরু করেছে নীলাকে। নীলাও কিছুক্ষণ শান্ত হয়ে জিহানের আদুরে ছোঁয়াগুলো গায়ে মেখে আবার জিহানের কাঁধ থেকে মুখ সরিয়ে চোখে চোখ রাখলো। নীলার এমন হুট করে সোজা হয়ে বসায় জিহানও একটু কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকালো নীলার মুখের দিকে। এক হাতে নীলার কোমড় জড়িয়ে অন্য হাতটা দিয়ে আলতো করে নীলার গালে আঙুলের পরশ বুলিয়ে নিয়ে ভ্রু নাচিয়ে প্রশ্ন করলো নীলার উদ্দেশ্যে।

-কি ম্যাডাম?

-হসপিটাল থেকে বাসায় এসে ভাইয়াকে কল করেছিলাম কায়রা আপুর কথাটা জিজ্ঞেস করার জন্য।

-হুম। তারপর?

-ভাইয়া বাড়িতে ছিল না। কলটা রিসিভ করেছে ভাবি। ভাইয়া কোথাও একটা গেছে। আম নট শিওর।

-আচ্ছা। আরে বাবা? হয়েছেটা কি নীল? তুমি কাঁদছ কেন? এই নীলা?

-ভাবি—ভাবি প্রেগনেন্ট জিহান। এখনও ডাক্তার কনফার্ম করে নি, বাট ভাবি নিজে প্রেগনেন্সি কিট দিয়ে কনফার্ম হয়েছে।

কথাগুলো বলতে গিয়ে নীলার গলাটা ধরে এসেছিল। এবারে শেষের কথাগুলো বলতে গিয়ে আর নিজেকে সামলাতে পারলো না নীলা। ছোট বাচ্চা মেয়ের মতো ফুঁপিয়ে উঠে জিহানের বুকেই মুখ ডুবিয়ে নিল। জিহানও এক মূহুর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। একটু পরেই নিজেকে সামলে নিয়ে নীলার চুলে আলতো হাতে বিলি কেটে দিল কিছুক্ষণ। নীলা ওর বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদছে বুঝতে পেরে এবারে জিহান নীলার মুখটা তুলে ধরে ছোট্ট একটা চুমো এঁকে দিল নীলার কপালে।

-পাগলি মেয়েটা? কাঁদছ কেন এভাবে নীল? এমন খুশির খবর শুনে বুঝি কেউ কাঁদে বোকা মেয়ে? সেই কোন সকালে খুশির খবরটা পেয়েছ, আর তুমি আমাকে এখন বলছ? তাও আবার এতো কান্নাকাটি করে? চোখ মোছো, চোখ মোছো? কোথায় ফুপি হবে সে এই খুশিতে বাড়িতে মিষ্টি আনার জন্য বলবে, তা না করে কিসব ভেবে কেঁদে কূল পাচ্ছে না ম্যাডাম। পাগলি বউ একটা আমার! দাঁড়াও ভাবিকে কল করে কনগ্রাচুলেশনস জানাই। ওহো! রাত হয়েছে গেছে। উমমমম। কাল সকালে কল করবো নাহয়। সকাল সকাল উঠে মিষ্টি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে যেতে হবে তো নাকি?

-আপনার একটুও কষ্ট হচ্ছে না জিহান? রাগ হচ্ছে না একটুও?

-তা হচ্ছে একটু। আবরার আর নিহার প্রেমে পড়ার কত আগে থেকে আমরা প্রেমে পড়েছি। লুকিয়ে বিয়ে করেছি ঠিকই, বউকে আদরে রাঙিয়ে দেয়ার সুযোগটাও পাই নি। যাও এতোদিনে বউকে নিজের কাছে নিয়ে এলাম তবু যুদ্ধ চলছে দুজনের। অথচ এদের দুজনকে দেখো? তলে তলে ছক্কা মেরে দিলো. এটা কিছু হলো বলো তো নীল? হিসেবে আমাদের বাবুর আগে আসার কথা না বলো?

জিহানের কথা শুনে বেচারি নীলা কান্না ভুলে লজ্জায় লাল হয়ে গেল। লোকটা কিসব বলে মাঝেমাঝে কে জানে! নীলা এবারে কান্না থামিয়ে জিহানের হাতে একটু জোরেই খামচি বসিয়ে দিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল।

-মাঝেমাঝে কিসের ভূত চাপে হ্যাঁ আপনার ঘাড়ে? এসব অদ্ভুত অদ্ভুত কথা বলেন কেন সবসময়? আমাদের বাবু আগে আসবে কার সাথে কথা হয়েছে হ্যাঁ?

-কার সাথে আর কথা হবে? তুমি নিজেই ক্যালকুলেশন করে দেখো? তুমি রাগ করে বিয়ে ক্যানসেল করে দিলে যে, তখনও চুপিচুপি তোমাকে আদর করতে চলে যেতাম তোমার বাড়িতে। তখনও কিন্তু তোমার ভাই নিহার ভাবির কাছ থেকে গুনে গুনে ১০০ হাত দূরত্ব বজায় রাখতো। আর এই ক’টা দিন যেতে না যেতেই গুড নিউজটা ওরা দিয়ে দিল? এটা কোনো কথা হলো বলো তো? এসব একদম মানবো না ধ্যাত। এভাবে তোমার ভাইয়ার কাছে কিনা হেরে যাবো? নো ওয়ে। বলছি কি নীলা শোনো না—-?

জিহানের আর কথাটা শেষ করা হলো না। এর আগেই নীলার ডান হাতের তালুটা জিহানের মুখের উপরে চেপে বসেছে। নীলার লজ্জারাঙা মুখটা দেখে জিহান মিটিমিটি হাসতে হাসতেই নীলাকে কোলে তুলে নিয়েই চেয়ার ছেড়ে উঠে হাঁটা শুরু করলো জিহান। নীলা চমকে উঠে জিহানের কোল থেকে নামার জন্য ছটফট করছে দেখেও জিহান থামলো না। নীলাকে নিয়েই পা বাড়ালো একটা রুমের দিকে।

-আরে আরে আরে জিহান? কি করছেন? এদিকে কোথায় যাচ্ছেন? নামান নামান নামান?

-শশশশ। আস্তে চেঁচাও নীলপাখি। এমন করছ যেন আমি কোথাকার কে তোমাকে নিয়ে চলে যাচ্ছি। এদিকে কোথায় যাচ্ছি যাওয়ার পরে দেখতে পাবে।

-জিশান একা আছে রুমে। জিহান? কি শুরু করেছে লোকটা? ছাড়ুন না? নামান আমাকে?

-নো ওয়ে। আজ থেকে কোনো ছাড়াছাড়ি হবে না ম্যাডাম। তোমার ভাইয়ের কাছে হার মানবো আমি? জিহান চৌধূরী? নো ওয়ে, উঁহু। আর এই যে ম্যাডাম। জিশান একা আছে বলেই তো আরো বেশি করে আদর দিতে হবে তোমাকে। ওর জন্য একটা পুঁচকে পার্টনার আনতে হবে না?

-অসভ্য লোক একটা! এই পিচ্চির আবার কিসের পার্টনার হ্যাঁ? এমনিতেই ওর ভাই বা বোন চলে আসবে শীগ্রিই। আপনাকে এতো টেনশন নিতে হবে না।

-ভাই বোন আর পার্টনার কি এক হলো নাকি? তোমাকে দিয়ে কিস্সু হবে না বুঝলাম। যা করার আমাকেই করতে হবে।

-জিহান? আপনি থাকুন, আমি গেলাম রুমে। জিশানের সাথে থাকবো আজকে। আপনি এই রুমেই থাকুন আর প্ল্যানিং করতে থাকুন।

জিহান নীলাকে ওদের বেডরুমের পাশের গেস্ট রুমটাতে নিয়ে নামিয়ে দিতেই নীলা ফ্লোরে পা রাখতেই পালানোর জন্য ছুট লাগালো। জিহান ততক্ষণে আবার নীলার কোমড় জড়িয়ে ধরে নীলাকে টেনে নিয়ে সোজা বিছানায় গা এলিয়ে দিল। নীলা বেচারি আর কি করবে? আরো কিছুক্ষণ পালানোর জন্য ছটফট করলো। জিহানও সুযোগ পেয়ে নীলার হাত দুটো বিছানার সাথে চেপে ধরে নীলার মুখের দিকে অপলকে তাকিয়ে রইলো বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে।

-প্ল্যানিং তো একা একা করা পসিবল না ম্যাডাম। আর এই রুম থেকে বের হওয়ার কথা আপাতত ভুলে যান। কাউকে আদর করার মাঝে জিশান জেগে উঠলে কি রকম লজ্জায় পড়বেন ম্যাডাম সেটা মাথায় আছে?

-চুপ চুপ চুপ।

-ওলে লজ্জাবতী বউটা। এখন লজ্জায় লাল হও কেন হ্যাঁ? জানো কতদিন ধরে এই দিনটার অপেক্ষা করছি আমি? কখন তুমি লজ্জার চাদরে জড়িয়ে লাজুক মুখে আমার সামনে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ আমাকে কথাটা বলবে।

-কি কথা?

নীলার টুকটুকে রক্তিম লাল ঠোঁটের কোণে ছোট্ট একটা চুমো এঁকে দিয়ে নীলার লাজুক রঙা মুখটার দিকে তাকিয়ে জিহানের বুকের ভিতরটাও একবার ধুকপুক করে উঠলো। জিহানের গভীর আদুরে ঘোর লাগে কণ্ঠটা একটু পরেই নীলার কানে এসে বাজলো।

-বলবে আমিও বাবা হতে চলেছি। এই একটা কথা শোনার অপেক্ষায় আর কতগুলো দিন গুনবো নীল? এবার কি আমার অপেক্ষার পালা শেষ হবে না?

অন্যদিকে, চৌধূরী বাড়িতে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে মুগ্ধা আর সামনে দাঁড়ানো মানুষটার মধ্যে। এতো সহজে থাপ্পড় হজম করার মেয়ে মুগ্ধা নয়। লোকটার সাথে জিতবে না জেনেও রাগে লোকটার চুল টেনে, খামচে, আঁচড়ে ইচ্ছেমতো শোধ তুলতে লাগলো। ততক্ষণে দিলারা জামান এসে এই অবস্থা দেখে মুগ্ধাকে টেনে সরালো লোকটার কাছ থেকে। ২৭/২৮ বছরের এক যুবক। দিলারা জামান মমতার হাতে যুবকের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন মুগ্ধার কারণে কোনো আঘাত লাগে নি তো তার গায়ে। মুগ্ধা এবারে আরো রেগে গিয়ে দিলারা জামানকে টেনে সরিয়ে আনলো নিজের দিকে।

-ছেলে এতোদিন পরে বাড়িতে এলো বলে সোহাগ দেখানো হচ্ছে না মা? ওকে বারণ করেছিলাম না আমার গায়ে হাত তুলতে? ওর সাহস হয় কি করে আমাকে মারার? আর যদি আমাকে মারতে আসে তাহলে খুন করে ফেলবো বলে দিলাম কিন্তু মা। এমনিতেই ওই ফকিন্নি মেয়েটার জন্য জিহান আমাকে আজও —–। তার উপরে এই গাধাটা? সব হয়েছে তোর কারণে। আহহহহহ। ওকে সামনে থেকে যেতে বলো তো মা? যেতে বলো এই বাড়ি থেকে।

-আরো দুটো চড় কষানো উচিত তোর গালে মুগ্ধা। ৭ বছর, লিটারেলি ৭ টা বছরেও এক জিহানকে হাতের মুঠোয় পুরতে পারলি না, আবার এসেছিস আমাকে বেরিয়ে যেতে বলতে? হাহ! বাড়িটা কি তোর একার? আর গাধার মতো কাজ করলে আরো মার খাবি তুই। তোর এইটুকু কমনসেন্স নেই না যে জিশান আমাদের দাবার গুটি, ওকে নিজেদের হাতের মুঠোয় রাখতে হবে? এটা বোঝার মতো বুদ্ধি হয়নি আজো তোর? কি করলেন মহারাণী? সোজা বাচ্চাটাকে জিহান আর নীলার কোলে বসিয়ে দিয়ে আসলি। বাহ! নোবেল দেয়া উচিত তোকে এতো বুদ্ধির জন্য। গর্ধব কোথাকার!

-নিজে তো খুব চালাক না? তাহলে জিহান আর নীলার বিয়েটা আটকাতে পারলি না কেন? তুই নীলাকে বিয়ে করে নিতি, আমিও তাহলে আমার জিহানকে পেয়ে যেতাম। এতো গন্ডগোল হতোই না। সব হয়েছে তোর গাফিলতির কারণে।

-আরেকজনের বিয়ে করা বউকে আমি বিয়ে করতাম! করেও নিতাম নাহয়। তারপর? আমার জিহান যে করছিস দু পয়সার দাম দিয়েছে তোকে? নিজের বাবা মায়ের খুনি, বোনের জীবন নষ্ট করেছে মেয়েটার ভাই, জানার পরও তো ওর সঙ্গেই সংসার করছে। আর তোরা কি করলি? ওদের সম্পর্কটা আরো মাখোমাখো করার জন্য নিজেরাই ভিলেন হয়ে গেলি! ওয়াও ওয়াও ওয়াও! এতো টেলেন্টেড ফ্যামেলি আমার! এবার যদি জিহান বা নীলা একবার সত্যিটা জানতে পারে কি হবে ভাবতে পারছিস? সামান্য একটা অফিস স্টাফকে টাচ করেছিলাম বলে জিহানের বাবা আমাকে এই পরিবার থেকে কুকুরের মতো তাড়িয়ে দিয়েছে, তারপর তোমরা যা করেছ সেটা জানার পর জিহান যা যা হারিয়েছে, সবটা জানার পর কি হবে একবার চোখ বন্ধ করে কল্পনা করার চেষ্টা করো তো? মনে হয় জিহান তোমাদের কাউকে জীবিত ছেড়ে দিবে? আমি তো সেইফ থাকবো, কজ জিহান জানেও না ওর মামাতো ভাই আধো বেঁচে আছে কি না, বাট তোমাদের কি হবে মা? মুগ্ধা? তোমাদেরকে তো জিহান, আবরার আর আফসান খন্দকার জিন্দা মাটিতে পুঁতে ফেলবে? পালাবে কি করে? হুম?

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here